#ভালোবাসার_স্পর্শানুভূতি
#রাইমা_মিমি
#পর্ব_২৭
সামনে থাকা ব্যক্তিটা দেখেই চমকে গেল তারা। সামনে আর কেউ নেই। সামনে একহাতে হেলান দিয়ে খাটে আধশোয়া হয়ে বাকা হাসছে রাত।
রাতকে দেখে তারা কপাট রাগ দেখিয়ে বলল।
তারা- এটা কোন ধরনের অসভ্যতা হ্যা?
রাত- আরে এখানে অসভ্যতার কি আছে?
তারা- অসভ্যতা কি আছে মানে? এখানে তো পুরোটাই অসভ্যতা।
রাত- কোথায় আমি তো কিছু দেখতে পাচ্ছি না।(আশেপাশে তাকিয়ে)
তারা এখন খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে রাত তার সাথে ঠাট্টা করছে। তাই সে বিরক্তিতে মুখটা ঘুড়িয়ে নিল।
রাত বিছানা থেকে উঠে আলমারির কাছে গেল। তারপর আলমারি থেকে একটা নীলরঙা জামদানী শাড়ি নিয়ে এসে দাড়াল তারার সামনে।
তারা ভ্রু কুচকে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। কারণ সে জানে এখন যদি আবার যাওয়ার কথা বলে তবে রাত আবার রেগে যাবে। আরো শুধু তার এনার্জি লস হবে। কারণ রাত তাকে যেতে দিবে না।
রাত- নাও এটা পরে এসো আমরা ডিনার করতে যাবো বাইরে।(শাড়িটা তারার হাতে দিয়ে)
তারা শাড়ি হাতে একই ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। যে সে রাতের কথা শুনতেই পায় নি।
তারার এমন রিয়েকশন দেখে রাত ভ্রু কুচকাল।
রাত- কি হলো শুনতে পাচ্ছো না কি বলছি?
তারা চুপ।
রাত- যাও তাড়াতাড়ি শাড়িটা পড়ে আসো। অনেক রাত হয়ে গেছে। তাছাড়া তুমি দুপুর থেকে কিছু খাও নি। যাও তাড়াতাড়ি।
এবারেও তারা চুপ।
তারার এমন রিয়েকশনে তারার বিরক্তি আর রাগ দুটোই লাগছে। আস্তে আস্তে তার কপালের রগ ফুলতে থাকে। চোখ লাল হতে থাকে। রাতের চেহারার এমন পরিবর্তন দেখে তারা ভয়ে একটা ঢুক গিলল।
কিন্তু পরক্ষণেই রাতের ঠোঁটে বাকা হাসি দিল দেখে ভ্রু কুচকাল তারা।
তারা- এর আবার কি হলো? এমন নিটকাচ্ছে কেন? ভূতে টূতে ধরল না তো?(মনে মনে)
তারার ভাবনার সুতো কাটল রাতের কথায়। আর তারপর যা শুনলো তাতে তার চোখ বেড়িয়ে যাওয়ার উপক্রম।
রাত- আচ্ছা বুঝতে পারছি। তুমি আমার হাতে শাড়ি পড়তে চাইছো তো? ওকে নো প্রবলেম। আমি এখনি পড়িয়ে দিচ্ছে। এতে অবশ্য আমারও……..(বাকা হেসে)
তারা রাতকে তার কথা শেষ করতে না দিয়ে বলল।
তারা- স্টপ। ক কি যা তা বলছে আ আপনি? প পাগল হয়ে গেছে নাকি?(লজ্জায় মাথা নিচু করে)
তারার এ লজ্জা রাঙা মুখ রাতের ভিষণ ভালো লাগছে। এক অবাধ্য অনুভূতি কাজ করছে তার মাঝে। তারার লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া গাল দুটো ভিষণ টানছে তাকে। দেখে মনে হচ্ছে পাকা লাল স্টবেরি। ইচ্ছা করছে কামড়ে খেয়ে ফেলতে। কিন্তু তাও নিজেকে কন্ট্রোল করে তারাকে আরেকটু লজ্জা দেওয়ার জন্য বলল।
রাত- কেন চুপ করবো? তুমি তো আমার কথা শুনছো না এখানেই দাঁড়িয়ে আছো। দেখে মনে হচ্ছে তুমি নিজে পড়তে চাইছো। তা তুমি যখন পড়তে চাইছো না তখন তো আমাকেই পড়িয়ে দিতে হবে। এতে কিন্তু আমার কোনো সমস্যা নেই। আই এম অলওয়েজ রেডি ফর ইউ বেবি।(চোখ টিপ দিয়ে)
এই লাগাম ছাড়া লোকটার কথা শুনে তারার মরে যেতে ইচ্ছা করছে। এই লোক এভাবে কেনো বলছে? ইচ্ছা করে লজ্জা দিচ্ছে তাকে সে জানে। তাই সে চাইছে না মুখশ্রীতে লজ্জা ভাব ফুটাতে। কিন্তু চাইলেই কি নিজের উপর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব? না সম্ভব নয়। তাই সেও পারছে না। বারবার তার মুখশ্রীতে লজ্জাভাবটা ফুটে উঠছে। যা তাকে আরো লজ্জায় ফেলছে।
রাত- জানো তোমার গালগুলো না একদম স্টবেরি হয়ে গেছে। ইচ্ছা করছে কামড়ে খেয়ে ফেলি।(বাকা হেসে)
তারা- চ চুপ করবেন আ আপনি? প প্লিজ চুপ ক করুন।(আরো লজ্জা পেয়ে)
রাত- ওকে চুপ করতে পারি। তার আগে তো তোমাকে শাড়িটা পড়ে আসতে হবে বেইব।
তারার কাছে এখন রাতের এসব লজ্জাজনক কথা থেকে শাড়ি পড়াটাই শ্রেয় বলে মনে হচ্ছে। তাই সে তাড়াতাড়ি শাড়িটা নিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেল।
তারার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রাত একটা বাকা হাসি দিয়ে বেড়িয়ে গেল। সাথে বেড়িয়ে এলো একটা দীর্ঘশ্বাস।
রাতের এখন সবার আগে এটা জানতে হবে যে তারা তার সাথে কেন এমন করছে? কি কারণ এর পিছনে? এর আসল কারণ জানতে পারলেই সে তারাকে আবার নিজের করে পাওয়ার মিশনে নামতে পারবে। এখন শুধু তারার থেকে কারণটা জানার অপেক্ষা।
মাহমুদ ভিলা,
রায়হান আর অনিমা ভিতরে গিয়ে দেখে এহসান মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। পাশে সামির ফোন হাতে পায়চারী করছে। সাথে সামিরের পরিবারে লোক নানারকম কথা বলছে। সাথে আরো অনেক মানুষ আছে। তবে শুধু তানিয়াকে দেখা যাচ্ছে না।
রায়হান আর অনিমা এহসানকে এভাবে বসে থাকতে দেখে তাড়াতাড়ি এসে এহসানের পাশে দাড়ায়।
রায়হান- কি হয়েছে এহসান? এমন করে বসে আছিস কেন? কি হয়েছে?(উদ্ভিগ্ন হয়ে)
অনিমা- কি হয়েছে ভাইয়া? বলুন না কি হয়েছে? আপনাকে এমন লাগছে কেন? আর তানিয়া কোথায়? তারা! আর তারাই বা কোথায় ভাইয়া?(হন্তদন্ত হয়ে)
এহসান এখনো চুপ। সে মাথা নিচু করে বসে আছে কপালে দুই হাত ঠেকিয়ে।
রায়হান- কি হলো বলছিস না কেন? কি হয়েছে? আর এতো রাতে আমাদের বা কেন এতো জরুরী ডেকে পাঠালি? কি হলো বল?(এহসানের কাধে হাত দিয়ে ঝাকিয়ে)
অনিমা- ভাই বলুন না কি হয়েছে? আমার চিন্তা হচ্ছে খুব ভাই। বলুন না। তানিয়া কোথায়? তারা মা কোথায়? ভাই বলুন না প্লিজ।(অনেক চিন্তিত হয়ে)
এবার এহসান আর নিজেকে আটকে রাখতে পারল না। এতোবছর পর প্রাণ প্রিয় বন্ধুকে পেয়ে নিজের কষ্টটাকে আর পারছে না সে নিজের মধ্যে আটকে রাখতে। কিছুতেই পারছে না। তাই ওঠে দাঁড়িয়ে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে রায়হানকে। আর হু হু করে কেদে দেয়।
এহসানের আকস্মিক এমন ব্যবহারে রায়হান ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। সাথে সবাইও। কিন্তু তাও নিজেকে কন্ট্রোল করে সে নিজেও জড়িয়ে ধরল এহসানকে। এতোক্ষণে যেন একটা সাথীর দরকার ছিল এহসানের তা পূরণ হয়ে গেছে। রায়হানকে জড়িয়ে ধরে মনে হচ্ছে তার নিজেকে হালকা লাগছে। যেমনটা লাগল আগে। অনেক আগে। বহু বছর আগে।
হুট করেই রায়হান অনুভব করল তার কাধের অংশটা অনেকটা ভিজে গেছে। রায়হান তৎক্ষণাৎ বুঝে গেল এহসান কাদছে। সে আবার বিচলিত হয়ে গেল।
রায়হান- এহসান! এহসান কি হয়েছে তোর? আমাকে বল কি হয়েছে? কি হয়েছে তোর? বল কি হয়েছে? কাদছিস কেন তুই? তানিয়া আর তারা কোথায়?(বিচলিত হয়ে)
অনিমা- ভাই চুপ করে থাকবেন না। প্লিজ বলুন না কি হয়েছে? তানিয়া আর তারা কোথায়?(কেদে)
এহসান- ত তারাকে তারাকে খুজে পাওয়া য যাচ্ছে না রে এহসান। আমি কোথাও খ খুজে পাচ্ছি না রে আমার প্রন্সেস কে। ক কোথায় গেল আমার প্রিন্সেস? বল না এহসান কোথায় গেল?(কেদে)
রায়হান- কিহ! তারাকে খুজে পাচ্ছিস না মানে?(অবাক হয়ে)
এহসান- হ্যা রে কোথাও খুজে পাচ্ছি না।(কেদে)
অনিমা- কি বলছেন কি ভাই?(অশ্রুসিক্ত নয়নে অবাক হয়ে)
রায়হান- কি বলছিস কি তুই? কি করে কি হলো? খুজে পাচ্ছিস না মানে কি? মেয়েটা কোথায় যাবে? কিছু বুঝতে পারছি না আমি। খুলে বল আমাকে সব।
এর মধ্যে তানিয়া দৌড়ে এসে এহসানের পাঞ্জাবি ধরে কেদে কেদে হিচকি তুলে বলতে লাগল।
তানিয়া- এহসানন আমার মেয়েকে পেলে? পেলে আমার মেয়েকে? কোথায় আমার মেয়ে? বল না কোথায় আমার মেয়ে? কোথায় আছে বলছো না কেন? আমার মেয়ে এখনো আমার কাছে আসে নি কেন? এহসান এহসান বলো না আমার মেয়ে কোথায়? কোথায় আমার তারায়ায়ায়ায়ায়া। বলো প্লিজ বলো কোথায়?(কেদে এহসানের উপর ঢলে পড়ে)
তখনি তাড়াতাড়ি এসে তানিয়াকে ধরে সামলে নেয় অনিমা। তানিয়া অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকে ধরা ব্যক্তিটা দেখে কিছু অবাক হলেও পরে জড়িয়ে ধরে কেদে দেয়।
তানিয়া- অনি তুই এসেছিস? দেখ না আমার মেয়েটাকে না পাওয়া যাচ্ছে না। আমার এতোটুকু মেয়ে কোথায় আছে বল তো? কি করছে? কি খাচ্ছে? এই এই আমার মেয়ে দুপুরের কিছু খায় নি। এখন তো রাত হয়ে গেছে আমার মেয়েটার মনে হয় ক্ষিধে পেয়েছে। যাই আমি গিয়ে খাবার খাইয়ে দিয়ে আসি। যাই।(পাগলামি করে)
কিন্তু যেতে পারল না। কারণ অনিমা তখনো তানিয়াকে জড়িয়ে ধরে ছিল। প্রিয় বান্ধবীর এমন অবস্থা সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। সেই সমান তালে কেদে চলে তানিয়ার সাথে।
অনিমা- তানি সামলা নিজেকে। তারা নেই এখানে।(কেদে)
তানিয়া- নেই মানে? কোথায় গেছে?(কিছুক্ষণ চুপ থেকে) এহসাননন তুমি এখনো আমার মেয়েকে পেলে না? কেমন বাবা হলে তুমি এখনো মেয়েকে খুজে বের করতে পারছো না। আমার মেয়েটার তো কষ্ট হচ্ছে এহসান। নিয়ে এসো না। প্লিজ। প্লিজজজ।(বলতে বলতে আবার ঢলে পড়ল। এবার অজ্ঞানই হয়ে গেল)
তানিয়াকে শুয়ে দেওয়া হলো ঘরে। পাশে বসে কাদছে অনিমা। সোফায় বসে আছে এহসান। সাথে রায়হান। তখনি প্রবেশ করল সামির।
এহসান হন্তদন্ত হয়ে সামিরের কাছে গেল।
এহসান- পেলে বাবা? আমার তারাকে পেলে?(বিচলিত হয়ে)
সামির মাথা নিচু করে জবাব দিল।
সামির- না আংকেল।
এহসান আবার ধপ করে বসে পড়ল সোফায়।
এহসান- না জানি কোথায় আর কেমন আছে আমার মেয়েটা?(মুখে হাত দিয়ে)
রায়হান- কি করে হলো এসব?
তারপর এহসান কিছুক্ষণ চুপ থেকে সবটা বলল রায়হানকে। তারার বিয়ের কথা শুনে রায়হান রেগে যায়। তারার অন্যকোথাও বিয়ে কি করে সম্ভব?
রায়হান- তুই কি পাগল হয়ে গেছিস এহসান? তারার অন্যকোথাও বিয়ে কি করে সম্ভব?(রেগে)
এহসান- কেন সম্ভব নয়। একশোবার সম্ভব।
রায়হান- তুই হয়ত কিছু ভুলে যাচ্ছিস এহসান।
এহসান- আমি কিছুই ভুলি নি। তবে ওটা যা হয়েছিল তার কোনো ভিত্তি নেই। তাই এটা অবশ্যই সম্ভব।
রায়হান- কিছুতেই সম্ভব না। তুই এটা অন্যায় করতে যাচ্ছিলিস।
এহসান- দেখ রায়হান তুই এককথা বারবার বলছিস কেন?
রায়হান- যা সত্যি আমি তাই বলছি।
সামির এতোক্ষণ নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছিল। কারণ সে বুঝতে পারছে না এরা কি কথা বলছে। আর সে এটাও বুঝতে পারছে না এরা এমন ভাবে কথা বলছে কেন? যেন দেখে মনে হচ্ছে যুগ যুগের চিনা। সব তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এবার সে নিজের কৌতুহলটা আটকাতে না পেরে জিজ্ঞেস করেই নিল।
সামির- আপনারা কিসের কথা বলছেন?
এহসানের এতোক্ষণে খেয়াল হলো এখানে সামিরও আছে। সে তো সামিরকে দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল।
রায়হান- তুমি?
সামির- আমি সামির। আমার সাথেই তারার বিয়ে হবে।
রায়হান- আগে হয়ে নিক।(নিচু স্বরে)
সামির- জি?
রায়হান কিছু বলতে যাবে তার আগেই এহসান বলল।
এহসান- ও কিছু না।
সামির- আপনাদের কি বিজনেস ছাড়াও আরো কোনো সম্পর্ক আছে? না মানে দেখে মনে হচ্ছে না যে আপনারা শুধু বিজনেসের জন্যই একে অপরকে চিনেন।
#ভালোবাসার_স্পর্শানুভূতি
#রাইমা_মিমি
#পর্ব_২৮
এহসান- ও কিছু না।
সামির- আপনাদের কি বিজনেস ছাড়াও আরো কোনো সম্পর্ক আছে? না মানে দেখে মনে হচ্ছে না যে আপনারা শুধু বিজনেসের জন্যই একে অপরকে চিনেন।
রায়হান- হ্যা৷ আমরা একসময় খুব ভালো বন্ধু আছিলাম আর………..
রায়হানকে আর কিছু বলতে না দিয়ে এহসান বলল।
এহসান- আমরা একসময় খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। সাথে তোমার আন্টিরাও। কিন্তু কালের ব্যবধানে বন্ধুত্বটা কিছুটা ফিকে হয়ে গেছে এই আর কি।
সামির- মানে? আমি কিছু বুঝতে পারছি না আংকেল। আপনাদের যদি বেশি ব্যক্তিগত হয় তাহলে বলা লাগবে না ইটস ওকে।
এহসান- ন না বাবা। তেমন কিছু না।
সামির- আচ্ছা ঠিক আছে। তাহলে আপনারা বসুন আমি আরেকবার ফোন করে দেখি কোনো ইনফরমেশন পেয়েছে না কি তারার।
এহসান- আচ্ছা বাবা। একটু দেখো।
সামির চলে গেল রুম থেকে। অনিমা এতোক্ষণ শুধু বন্ধবীর মাথা কাছে বসে সব শুনেছে। কিছু বলে নি। আর তানিয়া তো অচেতনই।
রায়হান- এটা তুই একদম ঠিক করছিস না এহসান।
এহসান- কি ঠিক করছি না আমি? হ্যা কি ঠিক করছি না? যা করছি একদম ঠিক করছি। আর প্লিজ এসব কথা বন্ধ কর।
অনিমা- তা বললে তো হবে না ভাই। আপনি খুব ভালো করেই জানেন যে কাজটা আপনি করছেন তা অন্যায়। আপনি শরিয়তের বিরুদ্ধে কিছুতেই যেতে পারেন না।
রায়হান- তুই কিছুতেই ভুলে যেতে পারিস না তারা আমাদের আমানত। তাকে শুধু তোর কাছে গচ্ছিত রেখে গিয়ে ছিলাম। কারণ ও ছোট ছিল বলে।
এহসান- এটাই এটাই আমি বলছি। তারা ছোট ছিল। যার জন্য ওই কাজটার কোনো ভিত্তি নেই। আর না আছে তোদের কাছে কোনো প্রমাণ। আছে কি কোনো প্রমাণ তোদের কাছে?
রায়হান- ভুলে যাস না ওরা ছোট ছিল। তাই আইনি ভাবে কিছু করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু শরিয়ত মতে যা হয়েছে তা তো মিথ্যা নয়।
অনিমা- ভুলে যাবেন না ভাই ও কে। আপনি চাইলেই ওর বিয়ে অন্য কোথাও কিছুতেই দিতে পারেন না।
এহসান- কেনো পারব না? যেটার কোনো ভিত্তি নেই সেটাকে নিয়ে বসে থাকলে তো চলবে না। আমাকে তো আমার মেয়ের ভবিষ্যতের কথাটা ভাবতে হবে তাই না?
রায়হান- ভুলে যাস না ওর একটা ভবিষ্যত। আর সেটা হলো রাত। তারা রাতের স্ত্রী। সে আহমেদ বাড়ির একমাত্র পুএবধু। মিসেস তারা রাত আহমেদ। ডোন্ট ফরগেট দ্যাট ডোড।
এহসান- মানি না মানি না মানি না। আমি কিছুতেই মানি না। আমার ভুলের জন্য আমি আমার মেয়েকে নরকে কিছুতেই যেতে দিব না। কিছুতেই যেতে দিব না।
অনিমা- ভাই আপনি তো আমাদের আগে থেকেই চিনেন। আমাদের কি আপনার দজ্জাল শ্বশুর শাশুড়ী মনে হয়?
এহসান- ছি ছি অনিমা এসব কি বলছো তুমি। তা হতে যাবে কেন? তোমাদের থেকে ভালো শ্বশুর শাশুড়ী আমার পেয়ে আমার মেয়ের জীবন ধন্য হয়ে যাবে।
অনিমা- তাহলে?
এহসান- অনিমা তুমি কিছুতেই ভুলে যেতে পারো না তোমার ছেলের ব্যবহার। ওর তারাকে নিয়ে ওভার পজেটিভন্যাস। ওর রাগ, ইগো। তুমি ভুলে গেলেও আমি ভুলতে পারবো না। তুমি তো সবই জানো। তাহলে তুমিই বলো এতোকিছু হওয়ার পর আমি কি করে আমার মেয়েকে তোমার ছেলের হাতে দিবো? তুমিই বলো।
অনিমা- মানছি ভাই আমার ছেলের রাগ, ইগো বেশি। রাগের বশে সে কি করে মাথায় থাকে। কিন্তু ভাই আপনি তো এটাও জানেন সে তারাকে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসত। সব সময় আগলে রাখতো। কখনো কোনো আঁচড় আসতে দিতো না।
এহসান- এর পরিনাম কি হয়েছি সেটাও নিশ্চয় তুমি ভুলে যাও নি অনিমা?
অনিমা- না ভুলি নি।
অতীত,
আজ থেকে উনিশ বছর আগে এহসান আর তানিয়ার ঘর আলো করে যখন একটা বাচ্চা পরী আসে তখন রাতের থেকে এতো খুশি মনে হয় কেউ হয় নি।
এতোটাই জড়িয়ে ছিল তারা সাথে যে তাকে কখনো তারার থেকে আলাদা করা যেতো না। যার জন্য রায়হান বাসা চেঞ্জ করে এহসানদের উপরের ফ্ল্যাটে শিফট করে যায়। আর সারাদিন তারার সাথে থাকতো।
আস্তে আস্তে তারা বড় হতে থাকে। রাত তারা ছাড়া কিছুই বুঝতো না। তারাই ছিল তার একমাত্র খেলার সাথী। কারণ সে আর কারোর সাথেই মিশত না। আর না তারাকে মিশতে দিতো। তাই অগত্যা রাতও ছিল তারার একমাত্র সাথী। তাদের মধ্যে ছিল সেই রকম বন্ধুত্ব। যা দেখে মুগ্ধ হতো তাদের মা বাবারা।
তারা আগেই তারার জন্মের সময়ই তাদের বিয়ের কথা ঠিক করে রাখে। বলা হয় বড় হলে তাদের বিয়ে হবে। কথাটা রায়হানের তরফ থেকে ছিল আর এহসানও তাতে রাজি হয়। এতোবছরের বন্ধুত্বকে নতুন করে আরেকটা সম্পর্কে ফেলে সম্পর্ককে দৃঢ় করার সুযোগ সেও ছাড়তে চায় নি। তাই রাজি হয়ে যায়।
তারার যখন ৭বছর আর রাতের ১২। তখন হুট করেই রায়হানের মনে হয় তাদের ছেলে মেয়েদের শরিয়তের মোতাবেক বিয়ে করিয়ে রাখা উচিৎ। যাতে তারা ভবিষ্যতে অন্য কাউকে নিয়ে না ভাবতে পারে। এহসানকেও সে কথা জানালে এহসানও রাজি হয়ে যায়। যেহেতু ছোট ছোট বাচ্চা তাই আইনি ভাবে বিয়ে কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই শরিয়তের মোতাবেক বিয়ে করিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিল। পরে তারা আর রাত বড় হলে আইনি ভাবে আবার বিয়ে দিয়ে ধুমধাম করে ঘরে বউ তুলবে বলে ঠিক করে। যেই কথা সেই কাজ। চুপেচাপে হয়ে যায় ৭বছরের তারা আর ১২ বছরের রাতের বিয়ে।
ভালোই দিন কাটছিল সবার কিন্তু হুট করেই একটা ঝড়ে এলোমেলো হয়ে গেল সব। সাথে ছিন্ন হয়ে গেল এতোবছরের বন্ধুত্বগুলোও।
সেদিন ছিল শুক্রবার। বাবা আর আংকেলের সাথে জুমার নামাজ পড়ে তারাদের বাড়িতে এলো সবাই। কারণ আজ সেখানে রাতদের দাওয়াত। অনিমা আগে থেকেই ছিল এখানে। তানিয়াকে কাজে সাহায্য করেছে।
নামাজ পড়ে এসে সবাই একসাথে খাওয়াদাওয়া করে আড্ডা দিতে বসে যায়। আর রাত আর তারা যায় বাইরে খেলতে।
তারা দুজন বল নিয়ে খেলছিল। হুট করেই বলটা চলে যায় পাশে থাকা বিশাল জংগলের মতো ঝোপের মধ্যে। তারা দুজনের কেউই বলটা কোথায় গেছে তা বুঝতে না পেরে আশে পাশেই খুজতে থাকে। হুট করেই তারা নজর যায় জংগলের একটু ভিতরে বলটা আছে।
জংগলটা ভালো নয়। এখানে প্রায়ই বাজে ব্যক্তিগণ মদ্যপান আর নেশাজাতীয় জিনিস গ্রহণ করে পড়ে থাকে। তাই তানিয়া সবসময় তারাকে এদিকটায় আসতে মানা করেছে। কিন্তু আজ সে বলের জন্য বেমালুম সব মানা ভুলে চলে গেল ভিতরে।
বলটা হাতে নিয়ে যেই পিছনে ঘুরল দেখল একটা লোক কেমন ঢুলে ঢুলে দাঁড়িয়ে আছে। আর কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। ছোট বাচ্চা তারা কিছু বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করল।
তারা- আপনারও কিছু কি হারিয়ে গেছে আংকেল?
লোকটা চুপ করে নেশাভরা দৃষ্টিতে তারার মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখছে।
তারা তখন একটা হাফ হাতা ফ্রক পড়ে ছিল। হাটু থেকে কিছুটা নিচ পর্যন্ত ফ্রকটা। তাই একটু ঠেং সহ পা দেখা যাচ্ছে।
লোকটা আস্তে আস্তে তারার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। বাচ্চা তারা কিছু না বুঝে সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। সে যদি জানতে পারতো তার সাথে কি হতে চলেছে তাহলে সে কখনোই এখানে দাড়িয়ে থাকতো না।
তারা- কি হলো আংকেল? কিছু বলছো না কেন?
লোকটা এসে তারা একদম কাছে দাঁড়িয়ে বাজে ভাবে তারাকে স্পর্শ করতে লাগল। বাচ্চা মানুষ সব না বুঝতে পারলেও ব্যথা অনুভব আর অস্বস্তি লাগতে লাগল।
তারা- আমাকে এভাবে স্পর্শ করছো কেন আংকেল? ছাড়ো আমাকে ছাড়ো।(বলেই ছোটাছুটি করতে লাগল)
লোকটা- এই চুপ কর। কোনো কথা বলবি না। আমি যা করতে চাইছি আমাকে করতে দে। না হলে মেরে এখানে পুতে দিব বলে দিলাম।(ধমক দিয়ে)
লোকটার ধমকে আর মারার কথার শুনে তারা ভয় পেয়ে গেল। আর ভয়ে জোরে কান্না করে দিল।
এদিকে,
রাত যখন পাশ ফিরে তারাকে কিছু বলতে যাবে ওমনি দেখে পাশে তারা নেই। রাত তারা তারা বলে ডাকতে থাকে। না পেয়ে আরো জোরে ডাকতে থাকে। রাতের গলার শব্দ পেয়ে অনিমা রায়হান এহসান আর তানিয়া দৌড়ে আসে। এসে যখন শুনে তারাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন সবাই মিলে তারাকে খুজতে থাকে। এদিকে তানিয়া কাদতে কাদতে পাগল হয়ে যাচ্ছে। মায়ের মন যে কিছুতেই মানে।
এদিকে,
লোকটা- এই চুপ। কাদছি কেন? এখনো তো কিছু করলামি না। চুপ কর। (ধমকে)
লোকটা ধমক শুনে তারা আরো জোরে কেদে দেয়। লোকটা না পেরে কানে হাত দিয়ে বসে থাকে।
রাত খুজতে খুজতে হুট করেই কান্নার আওয়াজ পায়। ভালো করে লক্ষ্য করে দেখে জংগল থেকে। আসছে। পাশে তাকিয়ে সবাই ডাক দিতে যাবে। কিন্তু পাশে তাকিয়ে দেখে সবাই অনেক দূরে। ডাক দিলে কেউ শুনবে না। আর গিয়ে বলে আসলে হয়ত অনেক দেরি হয়ে যাবে।
কোনো উপায় না পেয়ে সেই দৌড় লাগায়। কিন্তু ওখানে গিয়ে যা দেখে তাতে তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। কারণ লোকটা তারা মাটির উপর শুয়ে চেপে ধরে আছে আর তারা শরীরে বাজে ভাবে স্পর্শ করার চেষ্টা করছে।
হুট করে তারার কান্নায় রাতের ধ্যান ভাঙে।
সে দৌড়ে গিয়ে লোকটা তারার উপর থেকে সরাতে চেষ্টা করছে। কিন্তু একটা বাচ্চা কি একটা প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের সাথে পেরে উঠে? লোকটা রাতকে একটা ধাক্কা দিয়ে ছুড়ে ফেলে। বাচ্চা ছেলে তাল সামলাতে না পেরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে ব্যথা পায়। ব্যথায় আহ করে আর্তনাদ করে উঠে।
কিন্তু তারার কান্নার শব্দ পেয়ে নিজের ব্যথা ভুলে আবার উঠে দাড়ায়। তারপর আশে পাশে কিছু খুজতে থাকে। পেয়েও যায় কিছু।
একটা মোটা কাঠ হাতে নিয়ে স্বজোরে বাড়ি মারে লোকটার মাথার পিছনের অংশে। মাথা না ফাটলেও ব্যথায় আহ করে মাথায় হাত দিয়ে তারার থেকে সরে যায় লোকটা।
এই ফাকে রাত তারাকে তাড়াতাড়ি সরিয়ে নিয়ে আসে নিয়ে আসে নিজের কাছে। তারপর তারাকে একটা জায়গায় দাড় করিয়ে লোকটা সামনে গিয়ে দেয় উড়াধুড়া মাইর।
এতোক্ষণে রাতের চিল্লানি আর তারার কান্নার আওয়াজ পেয়ে দৌড়ে আসে সবাই। এসে দেখে এলাহী কাণ্ড।
রাত লোকটাকে মেরে আধমরা করে দিয়েছে। রক্তে লাল হয়ে লোকটার শরীর ঢেকে গেছে। এমন অবস্থা যে কেউ দেখলে আঁতকে উঠবে।
তারা এ অবস্থা দেখে ভয়ে এক জায়গায় জড়োসড়ো হয়ে কেদে কেদে ফুপিয়ে উঠছে। জামার অনেকটা অংশ ছিড়ে গেছে লোকটার সাথে ধস্তাধস্তির সময়।
তানিয়া তারাকে দেখে দৌড়ে এসে মেয়ে জড়িয়ে ধরে কেদে দেয়। আর সারা মুখে চুমুতে ভরিয়ে দেয়। তারাও মাকে পেয়ে জড়িয়ে ধরে কেদে দেয়।
তারা কাদতে কাদতে একসময় তানিয়ার কোলে ঢলে পড়ে। তানিয়া তারা বলে জুড়ে চিতকার দিতেই অনিমা আর এহসান এগিয়ে আসে।
এদিকে রাতকে থামানো দরকার বলে মনে করছে রায়হান। কারণ লোকটার যে অবস্থা আর মারলে এখানেই মরে যাবে। অবশ্য এদের মরে যাওয়াই উচিত। কিন্তু ফলে এই বয়সে ফেসে যাবে তার ছেলেটা তাই তাড়াতাড়ি রাতকে ছাড়িয়ে আনে। রাত এখনো রাগে গজগজ করছে আর বাবাকে বলছে ছেড়ে দিতে। মেরে ফেলবে সে এই জানোয়ারটাকে।
রাতের চোখ রাগে লাল হয়ে গেছে। মুখশ্রীও লাল হয়ে গেছে। কপালের রগ ফুলে উঠেছে। যে কেউ দেখলে ভয় পেয়ে যাবে। এতোটুকু বাচ্চা ছেলের এতো রাগ কেউ ভাবতেই পারবে না।
এহসান মেয়েকে কোলে নিয়ে দৌড়ে গেল বাসায়। পিছনে পাগলে মতো ছুটছে তানিয়া। সাথে অনিমা।রায়হান পুলিশে ফোন করে এখানে আসতে বলে চলে গেল রাতকে নিয়ে। কিন্তু রাতের রাগ কিছুতেই কমছে। রায়হান কোনো কোলে তুলে নিয়ে গেল।
তারার জামা চেঞ্জ করে বিছানায় শুয়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মাথার একপাশে বসে মাথা বুলিয়ে দিচ্ছে তানিয়া। আর অনিমা হাত পা তেল দিয়ে ঘসে উত্তাপ দিচ্ছে। ডাক্তার বলে গেছে অতিরিক্ত ভয়ে এমন হয়েছে । আর ক্ষতস্থানের জন্য মলম দেওয়া হয়েছে।
রায়হান আর এহসান যেহেতু ব্যবসার দিক দিয়ে ভালো নাম করেছে তাই পুলিশ আর এ বিষয়ে ঘাটাঘাটি করল না। আসামিকে নিয়ে চলে গেল।
আর রাত সোফার বসে রাগ নিয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তারার দিকে৷ রাগে ফেটে যাচ্ছে তার মাথা।
আস্তে আস্তে তারা কিছুটা সুস্থ হলো। কিন্তু রাতকে দেখতে পারে না। রাতকে দেখলেই ভয়ে পালিয়ে যায়। রাত বাসায় গেলে ঘরে দরজা বন্ধ করে রাখে। কারণ রাতের লোকটাকে মেরে রক্তাক্ত করে দেওয়াটা তারার মাথায় একদম গেথে গেছে। তাই যখনি রাতকে দেখে ভয়ে পালিয়ে বেড়ায়।
এদিকে রাত বারবার তারার সাথে কথা বলতে যায়। আগের মতো খেলতে যায়। কিন্তু তারা তার সামনে আসে না। কখনো যদি সামনে পড়ে তো ভয়ে কুকড়ে থাকে।
এভাবে ব্যথিত মন নিয়ে আরো কেটে যায় কয়েকদিন। এখন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ।
তারা আবার স্কুলে যায়। সবার সাথে মিশে। শুধু রাত ছাড়া। রাতকে সে এখনো ভয় পায়। কিন্তু রাত আড়াল দেখে তারাকে দেখে যায়। সকল বিপদ থেকে রক্ষা করে।
একদিন, একটা ছেলে তারাকে চড় মারে। সেদিন তারা কাদতে কাদতে বাড়ি চলে যায়। তাকে কেন মারল এই ছেলে সে বুঝতে পারছে না। শান্তস্বভাবের বাচ্চা বলে কিছু না বলে কাদতে কাদতে বেড়িয়ে যায়। যা সম্পূর্ণটা রাত দেখে আর রেগে যায়। রেগে গিয়ে ইচ্ছামতো মারে ছেলেটাকে। যা আড়াল থেকে তারা ঠিকই দেখেছে। আর রাত ভেবেছিল দেখেনি।
তারা বাসায় গিয়ে কেদে সব বলে। আর বলে রাতের সাথে সে কখনোই মিশবে না। রাতকে দূরে সরিয়ে দিতে বলে। যাতে রাতকে আর দেখতে না হয়। মেয়ের ভয় দূর করতে এহসানও রায়হানকে সব বলে। রায়হান তার ছেলের কোনো দোষ দেখতে না পেয়ে এহসানের কথায় রেগে যায়।
যেখানে কিনা তার ছেলে এতো কিছু করল আর তারাই বলছে দূরে সরে যেতে। রাগে রায়হান এহসানকে অনেক কথা বলে চলে যায়। পরেরদিন জানা যায় রায়হানরা নাকি লন্ডন চলে গেছে।
রাতকে আর দেখতে হবে না ভেবে তারার খুশি তো আর ধরে না।
কিন্তু আড়াল থেকে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে গেল এহসান আর রায়হানের। যার ফলে আলাদা হয়ে গেল তানিয়া আর অনিমাও।
রাত বিদেশ গেলেও তার মন পড়েছি তারাতে।
দেখতে দেখতে বড় হতে থাকে তারা দুজন। এদিকে রাত তার মনে তারাকে তার ভালোবাসার জায়গাতে বসায়। ভালোলাগার অনুভূতি গুলোকে নাম দেয়।
তার আরো কিছু বছর পর ফিরে আসে দেশের মাটিতে তাও রাতের জেদের কাছে হার মেনে রাজি হতে হয় রায়হানকে।
(বাকিটা প্রথম পর্ব থেকে)
বর্তমানে,
আজকে আর না বাকিটা কালকে।
চলবে?