#ভালোবেসে_থাকবো_পাশে💝
#পর্ব_০৬
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_ইমা
ছেলেটা আরিয়ার দিকে কিছুটা ঝুকে বললো,, এই যে ম্যাম মন কোথায় থাকে? এইবার তো একটু নিজের মতো করে বাঁচতে শিখুন। নিজের জন্য না হলেও অন্যের জন্য নিজের একটু খেয়াল রাখুন। কেউ তো আছে যে আপনাকে তার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে। সো নিজের প্রতি খেয়াল রাখুন। বাই আরুপাখি।
ছেলেটার প্রতিটা কথা আর ভারী নিঃশ্বাসে যেন আরিয়ার বুকের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। আরিয়া এখনও যেন ঘোরের মধ্যে আছে।
ছোঁয়া আরিয়া এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হাল্কা ধাক্কা দিয়ে জিজ্ঞেস করল, এই আরু কই হারিয়ে গেলি? আর এই ছেলে তোকে কানে কানে কী বলে গেলো?
কো…কোন ছেলে?
তুই এভাবে তুতলিয়ে কথা কেন বলছিস? আর ছেলেটা তোকে কী বলে গেলো?
কথা গুলা মনে পড়তেই আরিয়ার গাল লজ্জায় লাল হয়ে গেলো!
এই আরু এখন আবার লজ্জা পাচ্ছিস কেন?(অন্তু)
আরিয়া ওদের সব টা খুলে বলল।
সব শুনে ছোঁয়া বলল,, আচ্ছা ছেলেটার সব কথায় নরমাল লাগলো। বাট আরু পাখি কেন বলল? এই ছেলেটা কে রে বল!
আমি কেমনে বলব! আমি তো ছেলেটার ফেইস-ও ভালো করে দেখি নি।
আরু সত্যি করে বল কে এই ছেলে।
আরে আজব আমি কেমনে জানবো।
আহিল সবার আড়ালে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল,, গায়েস এটা রাস্তা ভুলে যাস না। আর ছেলেটা যেই হোক সেটা নিয়ে পড়ে থাকলে তো আর হবে না। এখন বাসায় চল। এমনিই অনেক সময় পার হয়ে গেছে।
হুম চল। আগে কিছু খেয়ে তারপর যাবো।(অন্তু)
তুই খাওয়া ছাড়া আর কী জানিস কাইন্ডলি একটু বলবি প্লিজ!(আহিল)
অন্তু কিছুটা ভাব নিয়ে বলল,, ডান্স করতে জানি আমি।
যেই না ডান্স করছ! পারস তো খালি গরুর মতো লাফাইতে।(আহিল)
কী এত বড় কথা। আমার রুমে যখন ডান্স করতে দেখবি তখন বুঝবি কত ভালো ডান্স পারি হুহ্।
ওহ্ তার মানে তোর ডান্স দেখতে আমাদের সবাইকে তোর রুম পর্যন্ত যেতে হবে?(আহিল)
ধ্যাত এইডা কই নি। তিনদিন পরে তো ডান্স কমপিটিশন আছে তখন দেখিস।(ছোঁয়া)
হ দেখমু নে। এখন চল খেয়ে বাসায় যায়।
রেস্টুরেন্টে গিয়ে সবাই খাবার অর্ডার দিলো।
খাবার খেয়ে সবাই বিদায় নিয়ে চলে গেলো।
বাসায় এসে আরিয়া শাওয়ার নিয়ে শুয়ে পড়ল। আর ভাবতে লাগলো সত্যিই তো কে এই ছেলে। আমাকে আরু পাখিই বা কেন ডাকলো।
______________🌻
তিনদিন পর_____
আরু এই আরু উঠ না!
এই আরুরুরু…..
আরিয়া লাফ দিয়ে উঠে বসলো। সামনে থাকা ব্যত্তিদের দেখে ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো আরিয়া।
এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন আরু?
আরিয়া টেবিলের উপর থেকে ফোনটা নিয়ে অন করে দেখে ৭টা বেজে ৪ মিনিট।
কি রে কথা বলা ভুলে গেলি নাকি? তোরে ভুতে ধরলো না তো!
কী আবোল-তাবোল বলছিস। আগে ক তোরা দুই ফকিন্নি এত সকালে আমাগোর বাসায় কেন? আন্টিরা কী খাইতে দেয় নি নাকি বাসা থেকে বের করে দিছি যার ফলে ভিক্ষা করতে করতে এখানে চলে আসলি!
আরিয়ার কথা শুনে ছোঁয়া রাগে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরিয়ার কানে কেউ টেনে ধরলো।
আহ্ আম্মু কী করছো লাগছে তো আমার। ছাড়ো প্লিজ!
মেয়ে গুলা কতদিন পর বাসায় আসছে তাদের বসতে না বলে অপমান করে যাচ্ছিস।
আরিয়া বিরবির করে বলল,, আমার এত আরামের ঘুমটা ভেঙে দিছে তাদের নাকি আবার বসতে বলব।
কী বিরবির করছিস?
কিছু না আম্মু।
তোমরা বসো। আরিয়া তুইও ফ্রেশ হয়ে আয় আমি তোদের জন্য খাবার আনছি।
না আন্টি আমরা খেয়েই এসেছি। আপনি বরং আরিয়ার জন্য খাবার নিয়ে আসুন।(ছোঁয়া)
আরে মা তোমরা বস আমি আসছি বলেই আরিয়ার মা চলে গেলো।
এই ফকিন্নির দল এখন বল কেন আসছিস?
তখনি ছোঁয়া কিছুটা হতাশ সুরে বলল,, আর বলিস না দোস্ত এই অন্তুর বাইচ্ছা আমারে তো সকাল সাড়ে ছয়টায় ঘুম থেকে তুইল্লা নিয়া আইছে৷ তার নাকি একা একা সাজতে ভাল্লাগে না। আর এমনিও তো ঢিলা কোম্পানি।
সবসময় আমারে অপমান না করলে হয় না তোর ফকিন্নি?
নাহ্!
এই তোরা থাম আগে ক তোরা সাজবি কেন?
আজ যে ভার্সিটিতে ফাংশন আছে ভুইলা গেছেস তুই?
ওহ্ হ্যাঁ সরি।😒
হয়ছে এখন তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়া আয়।
হুম বলেই আরিয়া ফ্রেশ হতে চলে গেলো।
আরিয়া আর ছোঁয়ার সাজ কমপ্লিট। আরিয়া হাল্কা মেকআপ করছে, লাল পাড়ের সবুজ শাড়ি, কাজল, হাল্কা লিপস্টিক, চুল গুলা কুপা করা আর চুলে বেলি ফুলের মালা । আর ছোঁয়া হাল্কা গর্জিয়াস মেকআপ করছে। দু’জন কেই সুন্দর লাগছে।
এই অন্তুর বাইচ্ছা আর কতক্ষণ লাগবো তোর?
দোস্ত দাঁড়া একটু কাজল টা দিয়া নিই তাহলেই শেষ।
আরিয়া কিছুটা রাগি গলায় বলল,, এই নিয়া কতবার কইলি শেষ শেষ?
এমন করস ক্যা? ডেইলি কি আর সাজতে বসি নাকি!
কথা অফ কর আর তাড়াতাড়ি কর।
এই নে শেষ আর দেখ কেমন লাগছে!
আরিয়া ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,, দোস্ত আমরা কী কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছি?
না তো! কেনো?
আরে দেখিস না এই কুত্তী কত গর্জিয়াস মেকআপ করছে।
ছোঁয়া বলল,, তবে খারাপও লাগছে না।
হুম। এইবার চল, সাজতে সাজতেই তো টাইম শেষ।
সবাই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। যাওয়ার আগে আরিয়ার আম্মু জোর করে সবাইকে খাইয়ে দিলো। যদিও অন্তু খাইতে চাইনি ওর সাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে।
ভার্সিটিতে অনেকেই আরিয়া, ছোঁয়া, আর অন্তুর দিকে তাকিয়ে আছে। তিনজনকেই অসম্ভব সুন্দর লাগছে। ড্রেসআপও সেইম।
আহিল এসে ওদের দেখে বলল,, দেখলি সবাই কেমনে তাকিয়ে আছে। আমার কথা মতো সেজেছিস বলেই এত সুন্দর লাগছে হুহ্।
হয়ছে নিজের প্রশংসা অফ কর আর চল।
ছোঁয়া উৎফুল্ল হয়ে বলল,, আরু রে এটা কী সত্যিই আমাদের ভার্সিটি নাকি রে? আমি তো চিনতেই পারছি না।
আরিয়া কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল,, এই যে মিস ন্যাকার ন্যাকামো শুরু।
কী বললি আমি ন্যাকা?
আরে না আমি কী আমার কিউট বান্ধবীটারে ন্যাকা কইতে পারি তোরাই বল।
আরিয়ার কথার জবাবে আহিল আর ছোঁয়া একসাথে মাথা নাড়িয়ে বলল না না।
তখনি সায়ান ভাইয়া আমাদের কাছে এসে কুশলাদি বিনিময় করল।
আরু তোদের কে আজ খুব সুন্দর লাগছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ছোঁয়াকে উদ্দেশ্য করে সায়ান ভাইয়া বলল,, কিন্তু তোর বান্ববী টাকে শাঁকচুন্নির মতো লাগছে।
ছোঁয়া সায়ান ভাইয়ার দিকে রাগি লুক দিলে আর বললো আপানারে কে বলছে এই শাঁকচুন্নির দিকে তাকাতে।
এভাবে তাকিয়ো না গো প্রেয়সী মরেই যাবো।
সায়নের মুখে মরার কথা শুনে ছোঁয়ার বুকটা ধ্বক করে উঠলো। সে আর কাউকে কিছু না বলেই হাঁটা শুরু করলো।
কেউ একজন আরিয়াকে দেখেই বলে উঠলো মাশাল্লাহ.!!
আজকের প্রতিযোগিতায় স্পেশাল গেস্ট শিশির আহমেদ তূর্য। দেখতে মাশাল্লাহ। গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামলা। হাইট ৫ ফুট ৮। তিনি একজন singer. পাশাপাশি বাবার ব্যবস্থা সামলায়।
প্রতিযোগিতা শুরু হলো। প্রথমে কবিতা আবৃত্তি, তারপর নাচ, নাটক। ছোঁয়া আর অন্তু অনেক ভালোই ডান্স করছে। সায়ান, রাতুল আর কয়েকটা ছেলে স্টেজে নাটক প্রদর্শন করলো তা দেখে হাসতে হাসতে সবাই কাহিল। এর পর এলো গানের প্রতিযোগিতা। আরিয়া আর আহিল সবার শেষে গাইবে এর আগে হলো ফারিয়া ও জয়। মাঝে আরো তিনটা পারফরম্যান্স। ফারিয়া আর জয় স্টেজে আসতেই তালির বর্ষণ শুরু হলো। তারা গান গাইলো।
❝তোর মন খারাপের দেশে যাবো প্রেমের খেয়ায় ভেসে,, তোর মনটা ভালো করে দিবো অনেক ভালোবেসে।৷(২ বার)
ডাকলে কাছে আসিস পারলে একটু বাসিস মুখটা পেতে রাখিস ভালোবাসা দিতে। সব অভিমান ভেঙে দিবে তোর কাছে এসে….❞
ছোঁয়া আর অন্তু অবাক হয়ে আরিয়া আর আহিলকে বললো,
দোস্ত এটা তো তোদের গান।
আহিল বললো,
“হ্যাঁ।”
তাহলে ওরা কেন গাচ্ছে? নিশ্চয়ই চুরি করেছে। আমি এখনই যেয়ে দেখছি।
আরিয়া বাঁধা দিয়ে বললো,
কি বলবি? আমরা যে এটা গাইতাম তার প্রমাণ কি?
তাহলে এখন কি করবি?
দেখতে থাক কী কী হয়।
আরিয়া আহিলের দিকে তাকিয়ে হাসি দিলো। আহিলও উওরে হাসি দিলো।
আর এদিকে আরিয়া আর আহিলকে দেখে কেউ একজন বাঁকা হাসি দিল। সে কখন থেকেই আরিয়াকে দেখে যাচ্ছে। একদম নিজের মনের মতো সেজেছে আরিয়া।
পরপর তিনটা গান হওয়ার পর আরিয়া আর আহিল গান গাওয়ার জন্য স্টেজে গেলো।
করতে লাগলো। এরই মাঝে আরিয়া আর আহিল গান ধরলো_____
“”কত টা হাত বাড়িয়ে দিলে তোমার মন ধরা যায়
কতটা পথ পাড়ি দিলে তোমার প্রেম ছোঁয়া যায়।
পাবো কী পাবো না জানি না, তোমাকে তো বুঝি না।
#ভালোবেসে_থাকবো_পাশে💝
#পর্ব_০৭
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_ইমা
পরপর তিনটা গান হওয়ার পর আরিয়া আর আহিল গান গাওয়ার জন্য স্টেজে গেলো। এরই মাঝে আরিয়া আর আহিল গান ধরলো_____
কতটা হাত বাড়িয়ে দিলে
তোমার মন ধরা যায়
কতটা পথ পাড়ি দিলে
তোমার প্রেম ছোঁয়া যায়(২ বার)
পাব কি পাব না জানি না
তোমাকে তো বুঝিনা(২ বার)
তবু তোমার প্রেমে আমি পড়েছি
বেচেঁ থেকেও যেন মরেছি
তোমার নামে বাজি ধরেছি,ধরেছি(২ বার)
মনযে কেন মানে না
তুমি ছাড়া কিছু বুঝেনা
আর যাতনা সহে না সহে না(২ বার)
তবু তোমার প্রেমে আমি পড়েছি
বেচেঁ থেকেও যেন মরেছি
তোমার নামে বাজি ধরেছি,ধরেছি(২ বার)
মেলেছি ইচ্ছেডানা
ভালোবাসতে নেই মানা
শেষ ঠিকানা জানি না,জানি না(২ বার)
তবু তোমার প্রেমে আমি পড়েছি
বেচেঁ থেকেও যেন মরেছি
তোমার নামে বাজি ধরেছি,ধরেছি(২ বার)
কতটা হাত বাড়িয়ে দিলে
তোমার মন ধরা যায়
কতটা পথ পাড়ি দিলে
তোমার প্রেম ছোয়াঁ যায়
পাব কি পাব না জানি না
তোমাকে তো বুঝিনা(২ বার)
তবু তোমার প্রেমে আমি পড়েছি
বেচেঁ থেকেও যেন মরেছি
তোমার নামে বাজি ধরেছি,ধরেছি(২ বার)
গান শেষ হতেই তালির বর্ষণ শুরু হলো। আশেপাশে আরিয়া আর আহিলের নাম গুজতে শুরু করলো। আরিয়া ও আহিল এসে অপরের দিকে তাকিয়ে হাই-ফাইভ দিলো। ছোঁয়া আর অন্তু তো লাফাতে লাফাতে অস্থির। নিচে নামতেই অন্তু, ছোঁয়া আর সায়ান এসে ওদের জড়িয়ে ধরলো। প্রতিযোগিতার শেষমেশ আরিয়া আর আহিল জয়ী হয়!
আরিয়া রাতুল, ছোঁয়ার আর জয়ের দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিলো।
রাতুল, ছোঁয়া, জয় তো অবাক ওরা জানলো কী করে এসব!
আর কেউ একজন তো তার প্রেয়সীকেই দেখতে ব্যস্ত। সে জানতো আরিয়া গান গাইতে পারে কিন্তু এতো ভালো গাইতে পারে সেটা সে ভাবতেও পারেনি।
কিছুক্ষণ পর আরিয়া আর আহিলের স্টেজে ডাক পড়লো।
মাইকে এনাউন্সমেন্ট করা হলো আজকের বিজয়ী আরিয়া আর আহিলের হাতে প্রাইজ তুলে দিবে আমাদের বিশেষ অতিথি শিশির আহমেদ তূর্য।
স্টেজে ওঠার পর আহিল ও তূর্য একে অপরের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।
প্রাইজ নিয়ে নিচে এসে দাঁড়াতেই কেউ একজন আরিয়ার কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলে গেলো কংগ্রাচুলেশনস আরুপাখি।
আরিয়া তাড়াতাড়ি করে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিল। কিন্তু সে হতাশ তেমন কাউকেই দেখতে পেল না। আজকেও কেউ একজন আরুপাখি বলল! কিন্তু কে সে? আর কী চাই!
__এই ফারিয়া আরু আর আহুকে কংগ্রেস জানাবি নাহ্?(ছোঁয়া)
অপমান করতে আসছিস এখানে?
না না অপমান কেন করব! এত বড় একটা শিল্পীরে কী আমরা অপমান করতে পারি এই তোরাই বল!
সবাই একসাথে মাথা নেড়ে বলে উঠলো না না।
তখন আরিয়া বলে উঠলো,, দেখলি ফারু তোর নিজের প্রতিই কোন বিশ্বাস নাই। কী হলো আমাদের গান টা চুরি করে? সেই আমরাই জয়ী হলাম। সবসময় যে অশুভ শক্তি জিতে যাবে সেটা ভাবিস না।
হুম ফারিয়া তোদের লাগি এক বালতি সমবেদনা!(অন্তু)
তোদের অপমান করা শেষ হয়ছে?
গায়েস তোরাই বল আমরা এখানে অপমান করলাম কখন এরে। সে যদি এমন টা ভাবে আমরা কী বলব বল! কিছুটা হতাশ ভঙ্গিতে বলল ছোঁয়া।
ধ্যাত তোদের সাথে কথা বলাই ভুল বলেই ফারিয়া চলে গেলো।
এদিকে সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা।
অনেক হয়ছে আরু এখন বলতো তোরা কেমনে জানলি তোদের গানটা ওরা চুরি করে গাইবে?(ছোঁয়া)
আমি কিছু জানি না আহু আমাকে পরশু রাতে ফোন দিয়া বললো যে আমাদের গান নাকি ফারিয়ারা গাইবে।
হুম আমিই আরুকে ফোন দিয়া বলছিলাম। তারপর আরুই আমাদের জন্য এই গানটা সিলেক্ট করে তোদের সারপ্রাইজ দিবে বলে।(আহিল)
বুঝলাম। কিন্তু আহু তুই কেমনে জানলি এটা?
আমাকে ভাইয়া বলল!
সবাই একসাথে চিল্লিয়ে বললো,, তোর ভাইয়া? কবে কোথা থেকে আসলো? তুই তো আমাদের বললি না তোর ভাইয়া আসছে!
আরে রিলাক্স। সবাই একসাথে এতো প্রশ্ন করলে কারে রেখে কারে আনসার দিমু তোরাই ক!(আহিল)
আচ্ছা দোস্ত এটা বল তোর ভাইয়া কবে আসছে দেশে?(ছোঁয়া)
ভাইয়া আসছে ১ মাস হবে।
তো আমাদের লগে দেখা করাস নি কেন? আমরা কী তোর ভাইয়ারে খেয়ে ফেলতাম নাকি?(অন্তু)
আরে পেটুক আগে তো জানতাম তুই শুধু অতিরিক্ত খাবার খাস এখন তো দেখি মানুষও খাইতে পারস!(আহিল)
আরে আজব আমি কখন কইলাম আমি মানুষ খাইতে পারি? আর তুই আমারে পেটুক কইলি কেন?
তুই তো পেটুক-ই!
দেখ একদম ফালতু কথা কইবি না।
আরে থাম তোরা। দুইটা একসাথে হলেই ঝগড়া শুরু করস। এখন বল ভাইয়ার সাথে মিট করাস নি কেন? আর তুই তো বললি ও না যে ভাইয়া আসছে।
মিট করায় নি কারণ ভাইয়া ব্যবসা নিয়া বিজি ছিল। আর আমি বলতে পারি নি সময় ছিলো না।
সময় ছিলো না নাকি মনে ছিলো না কোনটা?
আহিল চুল চুলকিয়ে বলল,, দুইটাই।
ভাইয়াকে তো দেখাইলি না অত্যন্ত তার পিক তো দেখা!(ছোঁয়া)
কাছে থাকতে পিক দেখাবো কেন?(আহিল)
কী আমাদের কাছেই আছে? কই সে? (আরিয়া)
আহিল হাত দিয়ে ইশারা করতেই সবাই পেছনে তাকিয়ে অবাক! সেখানে তূর্য প্যান্টের পকেটে হাত দিয়া স্টাইল মেরে তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে।
ছোঁয়া কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলল,, কী এই শিশির আহমেদ তূর্য তোর ভাই?😱
হুম মেরা ভাই। এটাও তোদের সবার লাগি একটা সারপ্রাইজ ছিলো৷ তো বল কেমন লাগলো আমার সারপ্রাইজ!
আরিয়া বিরবির করে বলল,, জঘন্য! সেই কখন থেকেই লক্ষ করছি আমার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে জীবনে মনে হয় মেয়ে দেখে নি। লুচু বেডা একটা!
কী বিরবির করছিস আরু?
কিছু না।
তাদের কথার মাঝেই তূর্য এগিয়ে আসলো।
হেই গায়েস আমি শিশির আহমেদ তূর্য। আহিলের বড় ভাই। আরিয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,, কংগ্রেস আরিয়া।
আরিয়াও সৌজন্যতা বজায় রাখতে তূর্যের হাতের সাথে হাত মিলিয়ে দিয়ে বলল,, ধন্যবাদ ভাইয়া।
দু’মিনিট হয়ে গেলো এখনো আরিয়ার হাত ছাড়ার নাম নেই। একধ্যানে তাকিয়ে আছে। আশেপাশে যে কেউ তাদের দেখছে সেই খেয়াল টাই নেই তার।
আরিয়া মনে মনে বলছে, এ তো আস্ত একটা ফাজিল, অসভ্য, সবথেকে বড় লুচু। কখন থেকে হাত ধরে আছে এখনো ছাড়ছে না। আর কেমন করে তাকিয়ে আছে জীবনে কখনো মনে হয় মেয়ে দেখেনি!
আরিয়া কিছুটা বিরক্ত হয়ে চেচিয়ে বলল,, ভাইয়া হাত টা ছাড়ুন।
তূর্য হুশে ফিরে এলো! সাথে সাথেই আরিয়ার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,, আমি তোমার কোন জন্মের ভাই হই?
আহিল যেহেতু আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তাই আহিলের ভাই মানে তো আমারো ভাই। আর এতে এমন রিয়েক্ট করার কি আছে?
আসলে কী বলো তো সুন্দরী মেয়েরা ভাইয়া ডাকলে বুক টা ফেটে যায়। আর তোমার মুখে তো একদম মানায় না।
আরিয়া মুখ ফসকে বলেই উঠলো আপনি আসলেই একটা লুচু।
কী বললে?
ক….কই কিছু না। এই তোরা যাবি নাকি আমি একাই চলে যাবো।
যাবি মানে? আজ ট্রিট না দিয়া কোথাও যাইতে পারবি না।(অন্তু)
তোরে এমনে কী আর পেটুক কয়?
আহুর বাইচ্ছা!
বিয়ে করলাম না আবার বাচ্ছা কই পামু?
আহিল থাম! আজ আমিই তোদের ট্রিট দিমু চল!(তূর্য)
হঠাৎ আরিয়ার চোখ গেলো সামনের দিকে। ফারিয়া আর রাতুল দু’জন হাত ধরে বেরিয়ে যাচ্ছে।
আজ হয়তো আমিই থাকতাম ফারিয়ার জায়গায়। আমার ভাগ্য টা এমন কেন? ভাবতেই আরিয়ার চোখ ঘোলাটে হয়ে গেলো।
এই আমি যাবো না তোরাই যা। আমার ভালো লাগছে না!(আরিয়া)
ছোঁয়া কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলল,, আরু কী হয়ছে তোর? শরীল খারাপ লাগছে?
না দোস্ত!
তাহলে যাবি না কেন?
এমনি ভালো লাগছে না।
কিছু জানি না তোকে যেতেই হবে। না হলে ভাইয়া কিন্তু কষ্ট পাবে।
আরিয়া এবার আর কিছু না ভেবে রাজি হয়ে যায়।
কেউ লক্ষ না করলেও একজন আরিয়ার চোখে পানি দেখেছে। তার কারণ টাও সে দেখেছে। কী করে মেনে নেবে তার প্রেয়সীর চোখে অন্য কারো জন্য পানি।
এবার বলো কী খাবে তোমরা?
ফুসকা খাওয়ালেই হবে!
শুধু ফুসকা?
আরিয়া বলল,, হুম।
তূর্য মনে মনে ভাবছে মেয়ে গুলা এত্ত ফুসকা পাগল কেন হয়?
আচ্ছা চলো।
সবাই ফুসকা খাওয়ায় ব্যস্ত। অন্য জন তার প্রেয়সী কে দেখতে ব্যস্ত। ছোট ছোট জিনিস নিয়েই সে কত্ত খুশি৷ আর তার মনেই কি না এত কষ্ট ভেবেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
ফুসকায় আরিয়া আর ছোঁয়া একটু বেশিই ঝাল নিয়েছিল। ছোঁয়া ঠিক থাকলেও আরিয়ার ঝালে অবস্থা খারাপ। নাক মুখ লাল হয়ে গেছে।
আরিয়ার এই অবস্থা দেখে কেউ একজন তাড়াতাড়ি আরিয়ার কাছে গিয়ে তার….
!