মরিচাধরা মনের খাঁচা পর্ব -১০

#মরিচাধরা_মনের_খাঁচা
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
পর্বঃ ১০

মুহূর্তেই নয়নার মাঝেও নিঝুমের মুখটা ভেসে উঠলো অয়নের চোখে।

অয়ন বিড়বিড় করে বলে উঠলো, নিঝুম ?

অয়ন কবুল বলছিলো না তাই চারদিকে সবাই একদম চুপ হয়ে ছিলো। তাই অয়নের মুখে নিঝুম শব্দটা শুনতে একদমই অসুবিধা হলো না নয়নার। টলমলে চোখে তাকিয়ে নয়না হাত ছেড়ে দিলো অয়নের।

ব্যাথিত গলায় নয়না বললো, অয়ন আমি নয়না।

অয়নের যেনো ঘোর কেটে গেলো। নয়নার দিকে একবার তাকিয়ে উঠে দাঁড়ালো।

বেশ আওয়াজ করেই বললো, আমাকে মাফ করে দিও নয়না। আমি জানি, যা করেছি তার মাফ হয় না। তবে এখন বিয়েটা করলে তার থেকেও বড় অন্যায় করা হবে তোমার সাথে, আমার নিঝুমের সাথে। আবেগ আর ভালোবাসা বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলেছি আমি। প্লিজ মাফ করে দিও আমাকে, আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।

কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই অয়ন কথাগুলো বলে বিয়ের আসর থেকে বের হয়ে গেলো দ্রুত। চারদিকে হইচই শুরু হয়ে গেলো, নয়নার বাবা রেগে আগুন হয়ে গেছে অয়নের কথা শুনে।

নয়নার দুবাহু ধরে দাঁড় করিয়ে রেগে বললো, নিঝুম কে, কার জন্য অয়ন তোকে এভাবে ফেলে চলে গেলো ?

নয়না কাঁপা গলায় বললো, অয়নের স্ত্রী ?

বিকট আওয়াজে ঠাস করে একটা শব্দ হতেই চারদিকে মানুষের গুঞ্জন বন্ধ হয়ে গেলো।

নয়নার বাবা রাগে কাঁপতে কাঁপতে বললো, আমার মেয়ে হয়ে এমন জঘন্য কাজ করতে তোর একবার বুক কাঁপলো না ? এক মেয়ের সংসার ভেঙে নিজের সংসার সাজাতে চেয়েছিলি তুই। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হয়েছে তোকে পড়াশোনা করার জন্য ঐ পশ্চিমা বিশ্বে পাঠানো। সেখানে থেকে নিজের দেশের কালচার ভুলে একটা অমানুষ হয়ে ফিরে এসেছিস তুই। তার জন্যই নিজে মেয়ে হয়ে অন্য একটা মেয়ের সংসার ভাঙতে তোর বুক কাঁপেনি।

নয়না মাথা নিচু করে কান্না করে যাচ্ছে। চারদিকে মানুষ নানা কথা বলছে।

নয়নার বাবা এবার গম্ভীর গলায় বললো, তোর যা নাটক করার করেছিস। আমার মানসম্মান যতটা নষ্ট করার করেছিস। তবে এবার তোর শুরু করা নাটকের শেষ আমিই করবো।

নয়না ভেজা চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে বললো, বাবা ?

নয়নার বাবা নিজের বন্ধুর দিকে তাকিয়ে বললো, জামাল এবার আমার সম্মান তোর হাতে।

এদিকে পাগলের মতো ড্রাইভ করে বাড়ি ফিরলো অয়ন। আজ মেইন ডোর আগে থেকেই খোলা ছিলো। নিঝুম চলে যাওয়ার পর সেটা আর কেউ বন্ধ করেনি। অয়ন সোজা চলে গেলো নিঝুমের রুমে।

নিঝুম আমাকে মাফ করে দাও। আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি। জানি অনেক অন্যায় করেছি, প্লিজ মাফ করে দাও আমাকে,,,,

রুমের দিকে খেয়াল করতেই অয়নের আওয়াজ এমনই থেমে গেলো। চারদিকে কেবল শূন্যতা বিরাজ করছে, কেবলই শূন্যতা। নিঝুমের ব্যবহৃত একটা জিনিসও নেই রুমে। রুমটা দেখে মনে হচ্ছে কেউ কখনো থাকেনি এখানে। অয়নের বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠলো। এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে চলে গেলো মায়ের রুমে। অহনা তখনো সেই একইভাবে ইজি চেয়ারে বসে আছে। নিঝুম চলে গেছে প্রায় ঘণ্টা তিনেক হবে। অহনা তখন থেকে ওভাবেই বসে আছে। চোখের পানি শুকিয়ে দাগ পরে গেছে গালে।

অয়ন মায়ের কাছে গিয়ে ব্যস্ত গলায় বললো, মা নিঝুম কোথায় ?

অহনা চেয়ার দোলানো বন্ধ করে দিলো। তবে চোখ খোলে ছেলের মুখ দেখার ইচ্ছে হলো না। উত্তর না দিয়ে আবার চেয়ার দোলাতে লাগলো।

অয়ন আবার বললো, মা নিঝুম কোথায় ?

অহনা ভাঙা গলায় বললো, তোমাকে নিঝুমের ব্যাপারে মাথা ঘামাতে মানা করেছিলাম আমি। এতো তাড়াতাড়ি বউ নিয়ে ফিরে এলে যে ?

মা আমি জানতে চেয়েছি নিঝুম কোথায় ?

কেনো নতুন বউ বরণ করাবে নিঝুমকে দিয়ে ? সেটা আমি বা নিঝুম কেউ করতে পারবো না। নিজের বউ নিজেই বরণ করে ঘরে তোলো।

অয়ন এবার রেগে বললো, আমি জানতে চেয়েছি নিঝুম কোথায় ?

অহনা চোখ খোলে ঠোঁটের উপর আঙ্গুল রেখে বললো, হুসসস, আমার সাথে একদম উঁচু গলায় কথা বলার সাহস করবে না অয়ন। কী জানতে চাইছো নিঝুম কোথায় ? নিঝুম চলে গেছে তোমার জীবন থেকে, এই বাড়ি থেকে,,,,,,,,,,,, হয়তো এই শহর থেকেও।

অয়ন শেষের কথা না শুনেই দৌড়ে বের হয়ে গেলো অহনার রুম থেকে। অহনা সেদিকে কিছুটা সময় তাকিয়ে থেকে আবার মাথা এলিয়ে বসলো। রাত নেমে অনেক সময় পেরিয়ে গেছে। অয়ন ফুল স্প্রিডে গাড়ি চালিয়ে নিঝুমদের বাসার দিকে যাচ্ছে। আশপাশের বড় বড় ভবনের মাঝে দুতলা ছোট বাড়িটায় আজ আঁধার বাস করছে। অন্ধকারে ডুবে আছে বাড়িটা, কোথায়ও একটু আলোর ছোঁয়া নেই। নিঝুমের দাদার তৈরি এই বাড়ি, এখানকার পুরনো বাসিন্দা তারা। অয়নের গাড়ি দেখেই দারোয়ান গেইট খোলে দিলো। দারোয়ান কিছু বলতে চাইলে অয়ন না শুনেই ভেতরে চলে গেলো। কোনোদিকে না তাকিয়ে একনাগাড়ে কলিংবেল বাজিয়ে যাচ্ছে।

পেছন থেকে দারোয়ান বললো, বাড়িতে তো কেউ নাই।

চমকে পেছনে ফিরে তাকালো অয়ন আর বিস্ফোরিত গলায় বললো, কেউ নেই মানে ?

তিনদিন আগে স্যার চলে গেছে। আজ ম্যাডাম গেছে নতুন আপা মণি আর তার মেয়েকে নিয়ে।

অয়ন কাঁপা গলায় বললো, কোথায় গেছে ?

সেটা তো বলতে পারবো না। স্যারের বদলি হইছে শুনছি, সেখানেই গেছে।

ন,,নিঝুম কোথায় ?

বড় আপামণি তো গতকাল আসছিলো তবে আজ আসে নাই। আপা মণির কথা আমি বলতে পারবো না।

অয়ন ধপ করে বসে পড়লো দরজার সামনে আর চিৎকার করে বললো, কোথায় তুমি নিঝুম ?

দারোয়ান অয়নকে ধরে বললো, কী হইছে ভাইজান ?

অয়ন দারোয়ান মফিজকে জড়িয়ে ধরে বললো, আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি মফিজ ভাই। আমার নিঝুমকে কোথায় পাবো আমি এখন ?

১৯.
সিলেট, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এক জেলা, সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি। দেশের অন্যতম এক পর্যটন এলাকা। সিলেটের পাশেই ভারতের মেঘালয় রাজ্য। টিলার উপর ছোট কিন্তু অসম্ভব সুন্দর একটা বাংলো। পুরো টিলাজুড়ে সবুজ চা বাগানের সমারোহ। সকালে শীত বেশ ভালোই লাগছে এখানে, ফজরের নামাজ পড়ে সবুজ চা বাগানের মাঝ দিয়ে একটা হলুদাভ চাদর গায়ে জড়িয়ে হাঁটছে নিঝুম। শিশির ভেজা ঘাসে খালি পা রাখতেই বারংবার গা শিরশির করে উঠছে আর সকালের সতেজ বাতাসে মনটা সতেজ হয়ে উঠেছে নিঝুমের। সারারাত চোখের পাতা এক করতে পারেনি নিঝুম। গতরাত ছিলো অয়ন আর নয়নার জীবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ রাত আর নিঝুমের ছিলো জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ রাত। প্রতিটা মুহূর্ত যেনো কেউ ছুরির আঘাত করেছে বুকে। দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে সামনে তাকাতেই দেখলো দুটো প্রজাপতি উঠে বেড়াচ্ছে একে অপরের পিছু পিছু। দেখে মনে হচ্ছে একটা আরেকটার রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করছে খুব করে। কিন্তু অন্যটা মানতে নারাজ। তাদের খুনসুটি দেখে মুচকি হাসলো নিঝুম। তারপর আবার সামনের দিকে আগাতে লাগলো।

বিড়বিড় করে বললো, আচ্ছা আজ নিশ্চয়ই অয়ন খুব খুশি। তার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় জিনিস পেয়ে গেছে সে। ঘুম ভাঙতেই ভালোবাসার মানুষের মিষ্টি মুখ দেখতে পাবে। আমার বিরক্তিকর মুখটা আর কোনোদিন দেখতে হবে না তাকে। আচ্ছা অয়ন কী আমাকে একবারও খোঁজেনি ? আমিও না কী ভাবছি এসব ? যার থেকে মুক্তি পেতে দেড়টা বছর ছটফট করেছে আবার তার কথাই মনে করবে ? কিন্তু মা, সে তো আমার কথা নিশ্চয়ই চিন্তা করছে। এখনো কী কান্না করছে ?

অহনার কথা চিন্তা করতেই চোখ ভড়ে উঠলো নিঝুমের। অন্যের মেয়েকেও কেউ নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসতে পারে, শাশুড়ীও মায়ের জায়গা নিতে পারে সেটা অহনাকে না দেখলে বুঝতে পারতো না।

আপু,,,

সাথীর ডাক শুনে নিঝুম ঘুরে তাকালো। সাথীকে দেখে কেউ বুঝতেই পারবে না মেয়েটা মাত্র কয়েকটা দিন আগেই ফুল বিক্রেতা ছিলো। গায়ে দামী পোশাক আর কয়েকদিনের আদর যত্নে চেহারায় অনেকটা লাবণ্য ফোটে উঠেছে।

নিঝুম ভ্রু কুঁচকে বললো, তুই এখানে কী করছিস ?

মা তোমাকে ডাকতে বললো।

এতো ঠান্ডায় বাইরে আসবি না, তিথির ঠান্ডা লেগে যাবে।

সাথী মাথা নাড়িয়ে বললো, আচ্ছা এখন চলো।

একটু নিরব থেকে আবার বললো, আপু জানো কোনোদিন ভাবি নাই ঢাকা শহরের বাইরে আসুম। ঐ বস্তি আর শহরের মানুষের সকাল সন্ধ্যা ছুটে চলার বাইরে আরো একটা দুনিয়া আছে জানা ছিলো না আমার। এখানে কতো সুন্দর সবুজ আর সবুজ।

সাথীর কথা শুনে মুচকি হাসলো নিঝুম। ধীরে ধীরে বাংলোর দিকে এগিয়ে গেলো। বারান্দায় বসে চায়ের চাপ হাতে খবরের কাগজ পড়ছিলো নিয়াজ চৌধুরী।

মেয়েকে দেখে নিয়াজ চৌধুরী বললেন, বাংলো কেমন লাগলো নিঝুম মামণি ?

নিঝুম বাবার পাশে বসে বললো, অনেক সুন্দর জায়গা।

এটা অফিসের কাছে তাই এটা নিলাম। তবে তোমার ভার্সিটি একটু দূরে হয়ে গেছে এখান থেকে।

সমস্যা নেই আমার অসুবিধা হবে না।

নিয়াজ চৌধুরী দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, অতীত ভুলে নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করো মা। কোনো কিছুর জন্য জীবন থেমে থাকে না।

নিঝুম কিছু না বলে চুপচাপ বসে রইলো। নিয়াজ মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।

সেলিনা ভেতর থেকে হাক ছেড়ে বললো, ঝুম তোকে কখন থেকে ডাকছি আমি।

হ্যাঁ মা, আসছি আমি।

নিয়াজ মেয়ের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে আবার পত্রিকা পড়ায় মনোযোগ দিলো।

২০.
সকালের আলো ফুটতেই বাড়ি ফিরলো অয়ন। উসকো-খুসকো মাথার চুল, গায়ে এখনো বিয়ের শেরওয়ানী, একরাতে চেহারার হাল বেহাল হয়ে গেছে। কলিংবেলের শব্দে দৌড়ে গিয়ে দরজা খোলে দিলো খুশি।

অয়নকে দেখে চিৎকার করে বললো, খালাম্মা ভাইজান চলে আসছে।

অহনা প্রায় দৌড়ে নিজের রুম থেকে বের হয়ে এলো। বাতের ব্যাথার জন্য সিড়ি উঠানামা কষ্ট হয় তাই নিচে নিঝুমের পাশের রুমেই থাকে অহনা। বাইরে এসে অয়নকে দেখে বুক ধক করে উঠলো অহনার।

অয়নকে জড়িয়ে ধরে বললো, সারারাত তুই কোথায় ছিলি বাবা ?

অহনাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো অয়ন। শরীরের সব শক্তি যেনো তার ফুরিয়ে গেছে, অহনার উপর ভড় ছেড়ে দিলো। এতবড় ছেলের ভাড় সামলে উঠতে পারলো না অহনা। ওভাবেই বসে পড়লো অয়নের মাথা কোলে নিয়ে।

অহনা মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, শান্ত হও অয়ন।

অয়ন কাঁদতে কাঁদতে বললো, মা আমার নিঝুমকে তুমি এনে দাও। আমি কথা দিচ্ছি আর কখনো এক বিন্দু পরিমাণ কষ্টও দিবো না ওকে। আমি জানি তোমাকে বলে গেছে ও কোথায় গেছে।

অয়নের বিয়ে ভেঙে চলে আসার খবর তার বন্ধুরা সব বলে গেছে অহনার কাছে। অয়ন বের হয়ে যাওয়ার একটু পরই তারা এসেছিলো। সারারাত ছেলের পথ চেয়ে বসে ছিল অহনা।

দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, তুমি বাচ্চা ছেলের মতো কোনো খেলনা চাইছো না। যে আমি দোকান থেকে তোমাকে কিনে এনে দিবো।

অয়ন অহনার কোলে মাথা রেখে কান্না করছিলো। এবার উঠে বসে অহনার গালে দু’হাত রেখে বললো, তুমি তো জানো নিঝুম কোথায় গেছে। আমাকে শুধু একবার বলো ও কোথায় আছে, আমি নিয়ে আসবো ওকে।

কেনো আনবে ওকে ?

মা আমি নিঝুমকে খুব ভালোবাসি। সেটা বুঝতে অনেক বেশি দেরি হয়ে গেছে।

অয়ন সময়টা খেয়াল করেছো ? গতকাল সকালে ঠিক এই সময়ে আমি তোমাকে বলেছিলাম তুমি খুঁজবে নিঝুমকে। ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই আমার কথা সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। গতকাল এই সময়ে নিঝুম তোমার একদম হাতের কাছে ছিলো আর এখন তোমার থেকে অনেক দূরে, তোমার নাগালের বাইরে।

মা প্লিজ, তুমি বলো নিঝুম কোথায় ?

আমি জানি না ওরা কোথায়। ওদের সাথে কথা বলার মতো মুখ তুমি আমার রাখনি।

অয়ন কষ্ট করে উঠে দাঁড়িয়ে বললো, বলবে না তো ? ঠিক আছে, আমি নিজেই খোঁজে বের করতে পারবো। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক আমি খোঁজে বের করবো।

অয়ন এলোমেলো পা ফেলে নিজের রুমের দিকে আগালে অহনা পেছন থেকে বললো, ওকে খোঁজে লাভ নেই। খোঁজে পেলেও ও তোমার জীবনে আর কখনো ফিরবে না।

অয়ন বললো, আমার উপর রাগ করেছে তো ? আমি ঠিক রাগ ভাঙিয়ে ফিরিয়ে আনবো।

রাগ করে চলে যাওয়ার হলো আরো অনেক আগেই চলে যেতো। দেড় বছর বসে বসে তোমার অবহেলা সহ্য করতো না কখনো।

অয়ন অবাক হয়ে বললো, মানে ?

তোমার মনে কখনো প্রশ্ন জাগেনি ? কখনো না যাওয়ার প্রতিজ্ঞা করা মেয়েটা হঠাৎ করেই কেনো হার মেনে নিলো ?

অয়ন প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো অহনার দিকে ফ্যালফ্যাল করে।

অহনা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, নিঝুম চায়নি কোনো অপূর্ণতা নিয়ে তোমার জীবনে থাকতে। তার জন্য তোমার জীবনে কোনো অপূর্ণতা থাকুক সেটা চায়নি, আর চায়নি তোমার চোখে অপরাধী হতে।

অয়ন বিস্ময় নিয়ে বললো, মানে কী এসবের ? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।

অহনা কাঠ কাঠ গলায় বললো, নিঝুম কখনো মা হতে পারবে না আর না কখনো পারবে, তোমাকে বাবা ডাক শোনার স্বাদ দিতে।

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here