‘মেঘাচ্ছন্ন আকাশ’
-জান্নাত
পর্ব-পাচঁ|
[১৮+ এলার্ট!গল্প লিখতে যেয়ে অপ্রাসঙ্গিক শব্দ বা প্রেমের মুহুর্ত ফুটাতে যেয়ে যদি চটি নামে আখ্যায়িত করা হয়,তাই আগে থেকে সতর্কতা বানী দেয়া হলো।’]
.
হসপিটাল থেকে বাড়ি এনেছে রাগিব প্রিশাকে দিন সাতেক হলো।বাবা-মেয়ের সংসার দিব্যি চলছে।
প্রিশার চুল দুইদিকে দুটো ঝুটি করে বেধে দিচ্ছে রাগিব।প্রিশার হাতে বার্বি একটা টয় আছে,যা নিয়ে আপাতত খেলছে।
প্রিশা খেলতে খেলতে জিজ্ঞেস করছে,
-‘বাবা আমার পুতুলের বিয়ে দিব না?’
রাগিব বললো,
-‘হ্যা দিব তো মা।পুতুল আরেকটু বড় হোক।’
প্রিশা বললো,
-‘আমাকেও তো তুমি পুতুল ডাকো।তাহলে আমার কখন বিয়ে দিবা বাবা।’
প্রিশার মুখ থেকে বিয়ে নামক শব্দ শুনে এক মুহূর্তের জন্য থমকে গেছে রাগিব।কিছুক্ষন থেমে প্রিশার চুল বেধে দিয়ে প্রিশাকে নিজের দিকে ঘুরায় রাগিব।
রাগিব তারপর বললো,
-‘আমার রানী মায়ের জন্য রাজা ছেলে আসবে।ওই যে আমাদের আল্লাহ আছে না?আর তোমার বেষ্টফ্রেন্ড তুমি যাকে বলো।সেই তোমার জন্য রাজা পাঠাবে।’
প্রিশা খুশিতে বললো,
-‘সত্যি বাবা?’
রাগিব মেয়েকে বুকের সাথে আগলে রেখে বললো,
-‘সত্যি তাই মা।দেখো একদিন কেও আসবে ইতিহাসে নতুন প্রেমিকে নিজের নাম স্বর্নাক্ষরে তুলতে।’
প্রিশা কি বুঝে হি হি করে জাসলো।রাগিব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।রাগিব আর প্রিশা বসে এটা সেটা খেলনা নিয়ে খেলছে।ওই মুহূর্তে একটা সার্ভেন্ট এসে বললো,
-‘স্যার আপনাদের ডিনারের টাইম হয়ে গেছে।’
রাগিব বললো,
-‘যাও আসছি।’
সার্ভেন্ট গেলো না।কেমন বিশ্রি চোখে প্রিশাকে স্ক্যান করছে।প্রিশার পরনে থ্রী কোয়াটার প্যান্ট আর ফতুয়া ছিলো।তাকে সালোয়ার-কামিজের মানে এখনো বুঝাতে চায় না রাগিব।কেন জানি সে ওড়না সামলাতে পারে না।হয়তো ছোট বাচ্চাদের ব্রেইন হয়ে গেছে তাই।
রাগিব পিছনে ঘুরে বললো,
-‘কি হলো এলেক্স তুমি এখনো যাও নি।’
রাগিবের কথায় এলেক্স হকচকিয়ে গেছে।সে কিছুক্ষন থেমে বললো,
-‘যাচ্ছি।’
রাগিব বললো,
-‘হুম।’
এলেক্স রুম থেকে বেরিয়ে গেলো কিন্তু পিছন ফিরে আবারো প্রিশাকে দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেলো।তার পায়ের রানের দিকে বারবার চেক আউট করছে সে।কেমন লোভনীয় দৃষ্টিতে চেয়ে রয়েছে প্রিশার দিকে।
.
রাগিব আর প্রিশা নিচে নামলো ডিনার করতে।প্রিশাকে বসিয়ে তার বুকে কাপড় দিয়ে দিলো রাগিব যেন খেতে বসে সে ফেলে দিয়ে জামা না নষ্ট করে।পাশে এলেক্স দাড়িয়ে।আরো কয়েকজন সার্ভেন্ট দাড়িয়ে আছে।
প্রিশা বুকে রাখা রুমালটা খুলে দিতে চাইলে রাগিব বাধা দিয়ে বলে,
-‘এটা কেনো খুলছো মা।তুমি জানো না?তুমি খেতে যাওয়ার সময় ফেলে দাও জামাতে।’
প্রিশা বললো,
-‘আই প্রমিস বাবা,আজকে ফেলবো না।এইটা দিও না।এইটা দিলে কেমন কুট কুট করে আমার স্কিন।’
অবশেষে প্রিশার কাছে হার মানতে হলো রাগিবের।রাগিব বাধ্য হয়ে প্রিশার বুক থেকে রুমালটা সরিয়ে নিলো।প্রিশা চুপচাপ স্যুপ খাচ্ছে,রাগিব খাইয়ে দিতে চাইলো কিন্তু খেলো না।সে নিজেই খাবে এখন।কয়েক চামচ খেতে না খেতে প্রিশার বুকের উপর স্যুপ ফেলে দিব।ব্যস ফতুয়া ভিজে একাকার। এলেক্সে চোখ চিক চিক করে উঠলো প্রিশার ভেজা জামা দেখে।
রাগিব বললো,
-‘শিট!তোমাকে আমি বারবার বললাম আমি খাইয়ে দি।কিন্তু না,তুমি নিজেই খাবা এখন।গেলো তো পরে।’
প্রিশা মুখ কাচুমাচু মুখ করে বললো,
-সরি তো বাবা।তুমি বকো না প্লিজ।’
প্রিশার এমন মাসুম কথাবার্তা শুনে রাগিব নিজেকে শান্ত করলো।তারপর বললো,
-‘স্যুপ কি গরম ছিলো মা?পুড়েছে কি না দেখি।’
প্রিশা ঠোট উল্টিয়ে বললো,
-‘না বাবা।তুমি তো ঠান্ডা করেই দিয়েছিলে।’
প্রিশার কথা শুনতে শুনতে রাগিবের চোখ গেলো এলেক্সের দিকে।এলেক্সের চাহনী বিশ্রিভাবে নিক্ষেপ করছে প্রিশার দিকে।রাগিবের কাছে কেমন যেন নেগেটিভ ভাইব আসছে।মনে একটা আলাদা খচখচ করছে।
রাগিব প্রিশাকে চেয়ার থেকে উঠাতে উঠাতে বললো,
-‘উঠো।জামা চেঞ্জ করে হবে।’
প্রিশাকে তাড়াহুড়ো করে রাগিব নিয়ে চলে গেলো নিজের রুমে।আর এদিকে এলেক্স বিশ্রি হাসি ঠোটে নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
.
রাগিব ওয়াশরুমের বাহিরে দাড়িয়ে আছে।আয়া জামা চেঞ্জ করিয়ে দিচ্ছে প্রিশাকে।একদম রাতের পোষাক পরে বের হলো প্রিশা।
রাগিব বললো,
-‘মার্টিল আমাদের ডিনার টা রুমে নিয়ে এসো।’
মার্টিল মাথা ঝাকিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।প্রিশাকে বেডে বসিয়ে রাগিব বললো,
-‘আমি ছাড়া অর্থাৎ তোমার বাবা ছাড়া কেও যদি কখনো স্পর্শ করতে আসে তবে তাহলে তাকে একটা পাওয়ারফুল ঘুষি মেরে দিবা।ওকে আম্মা?’
প্রিশা গোল গোল চোখে বললো,
-‘কিন্তু বাবা তুমি তো বলেছিলা কারো সাথে মারামারি করা ব্যাড ম্যানার্স।’
রাগিব বললো,
-‘হুম মা।কিন্তু কেও বাজেভাবে তোমাকে স্পর্শ করলে তাকে মারবে।’
প্রিশা বললো,
-‘কেমন স্পর্শ বাবা।’
রাগিব কিছুক্ষন থেমে বললো,
-‘আমি স্পর্শ করলে তুমি কি রাগো?’
প্রিশা বললো,
-‘উহুম।তুমি স্পর্শ করলে বাবা গন্ধ আসে তোমার থেকে।’
প্রিশার কথায় চোখে জল ভরে আসলো রাগিবের।রাগিব সেটা আড়াল।করে বললো,
-‘ইয়েস মাই প্রিন্সেস।আমি ছাড়া কেও তোমাকে স্পর্শ করলে তো তুমি রেগে যাও তাই না?’
প্রিশা গম্ভীরমুখে বললো,
-‘হুম।’
রাগিব বললো,
-‘তাহলে?কেও তোমাকে স্পর্শ করলে তাকে তোমার ঘুষি দিয়ে দিবা।এতো ভেজিটেবলস খাও,শক্তি তো হচ্ছে আমার মাম্মামের তাই না?’
প্রিশা চোখ চকচক করে বললো,
-‘হ্যা বাবা।’
রাগিব বললো,
-‘তাহলে বাবার কথা শুনবে তো আমার মা?’
প্রিশা বললো,
-‘হ্যা বাবা।’
রাগিব প্রিশার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
-‘আমার লক্ষী মা।’
রাগিব প্রিশার ঘরে ক্যারাটে চ্যানেল দিয়ে দিলো।প্রিশাকে বললো মনোযোগ দিয়ে দেখতে।এদিকে ডিনার ও চলে আসছে।খাওয়াচ্ছে প্রিশাকে আর বিভিন্ন কিছু বুঝছে।প্রিশা বুঝতে পারছে কি না কে জানে।হুম হুম করছে।
.
ড্রিমলাইট জ্বালিয়ে প্রিশা ছোট টেডি ধরে শুয়ে আছে।প্রিশার ঘরে দুটো বেড।একটাতে রাগিব ঘুমায়,আরেকটাতে প্রিশা।প্রিশাকে নিয়ে সে কোন প্রকার রিস্ক নিতে চায় না।মাঝরাতে রাগিবের ঘুম ভাঙ্গায় সে উঠে পানি খেতে চাইলে দেখে জগে পানি নেই।তাই উঠে পানি খেতে গেলো নিচে।
প্রিশার দিকে একবার তাকালো রাগিব।কয়দিনের আসা মেয়ে তার জীবন হয়ে দাড়িয়েছে।প্রিশার তার জীবন,তার কিছু হয়ে গেলে রাগিব মরে যাবে।প্রিশার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে নিচে নামছে রাগিব।
রাগিবকে নিচে নামতে দেখে এলেক্স আড়াল হলো।সে ইচ্ছা করে রাগিবের জগে আজকে পানি রাখে নি।সে জানে রাগিবের রাতে পানি উঠে খাওয়ার অভ্যাস।এলেক্স যেয়ে বাড়ির মেইন সুইচ অফ করে দিলো।হুট করে লাইট অফ হওয়ায় রাগিব ভড়কে গেলো।মাথায় আসলো প্রিশার কথা।অন্ধকারে সে থাকতে পারে না একদমই,দ্রুত পদে উপরে উঠতে যেয়ে চেয়ারের সাথে বারি খেয়ে পায়ে আঘাত পেলো প্রচুর রাগিব।পা ধরে নিচে বসে গেলো সে।চাইলেও উঠতে পারছে না।
এদিকে এলেক্স আসলো প্রিশার রুমে।ঘুমন্ত প্রিশাকে দেখে তার চোখ লোভে চিকচিক করছে। সে দুম করে প্রিশাকে চেপে ধরলো।হুট করে করে এমন চেপে ধরায় প্রিশার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।ঝট করে চোখ খুলে অপরিচিত কাওকে দেখতে পেয়ে তার জানটা ভয়ে শুকিয়ে কাঠ।
প্রিশা মনে মনে ভাবছে,
-‘এটা তো বাবার স্পর্শ না।’
প্রিশার ছুটাছুটি করার চেষ্টা করছে কিন্ত পারছে না।তার হাত দুটো ধরে আছে এক হাতে।পা দুটোকে কেমনে লক করেছে এলেক্স নিজের পা দিয়ে।
প্রিশার ঝটপটানো বেড়ে যাচ্ছে।এলেক্স রেগে প্রিশার গালে এক থাপ্পড় মেরে বললো,
-‘শাট আপ ইউ বিচ!’
প্রিশা বললো,
-‘ছাড়ো ইউ ব্যাড বয়।আমি বাবাকে বলে দিবো।’
এলেক্স বললো,
-‘আজ তুই ঠিক থাকলে তো বলবি।’
এলেক্স এই কথা বলে প্রিশার জামা খুলতে আরম্ভ করলো।প্রিশা যত জোরে চিৎকার দিয়ে পারছে কাদঁছে।
প্রিশা বলছে,
-‘আবারো তোমরা আমাকে স্পর্শ করছো।পায়ে ধরছি কেও আমাকে স্পর্শ করো না।আমার শরীর ক্লান্ত ব্যাথাতে!’
চলবে