❝মোহ মেঘের আলাপন ❞
লেখিকা: “নূরজাহান আক্তার আলো”
[০২]
-”আপনি আমার চাহিদার বিরুদ্ধে আদিত্য ভাই।”
একথা বলে মেধা স্থান ত্যাগ করল। আদিত্য তার যাওয়ার দিকে ভুলেও দৃষ্টি তুলে তাকাল না।বরং সামনে থাকা ফাইলে সাইন করে পা বাড়াল মায়ের রুমের দিকে। সে শুনেছে তার মায়ের অসুস্থতার কথা। তবে এখানে আমান জড়িত একথা কেউ বলার সাহস করে নি। নয়তো আমান তার অবস্থা দফা রফা করে ছাড়ত। তাছাড়া আদিত্যকে জানানো হয়েছে সীমা বেগমের শুধু প্রেশার বেড়েছে। যেটা সচারাচর হয়েই থাকে। ঠিকঠাক ওষুধ আর একটু বিশ্রাম নিলেই ঠিক হয়ে যায়। সে
ফিরেই দেখা করতে চেয়েছিল তার মায়ের সঙ্গে কিন্তু বাবার থেকে শুনেছে মা ঘুমাচ্ছে। তাই বিরক্ত করে নি। আদিত্য ওর মায়ের রুমে গিয়ে উনার কপালে ব্যান্ডেজ দেখে ভ্রুঁ কুঁচকে ফেললো। এগিয়ে গিয়ে ক্ষতস্থানে আলতো করে হাত বুলিয়ে ভীষণ কষ্টও পেলো মায়ের ব্যথাতুর মুখখানা দেখে। ইস, না জানি কতখানি কেটেছে। অফিসে ব্যস্ত বেড়েছে তাই আগের মতো মাকে সময় দিতে পারে, গল্প করতে পারে না।নিজহাতে
হাতে রান্না মাকে খাওয়ানোও হয় না। অনেকদিন হলো মাকে নিয়ে ঘুরতেও যায় নি। এসব ভেবে আদিত্য মায়ের কপালে চুমু করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। নিচে মেধারা বসে আছে। তার গলার স্বর শোনা যাচ্ছে। সে কিছু একটা নিয়ে হাসছে, আদিত্যের বাবার থেকে কিছু নেও আবদার করছে। মেধাকে রাগাতে উনিও দুষ্টুমি করছেন। তখন আদিত্যকে নিচে যেতে দেখে মেধা হাসি থামিয়ে ভদ্র মেয়ের মতো ওর বাবার পাশে বসল। একমনে খেতে লাগল হাতে থাকা অর্ধেক খাওয়ার কমলাটি। ভাবখানা এমন আদিত্যকে চেনেই না, কোনোদিন
দেখেই নি। আদিত্য দাম্ভিকতার সাথে হেঁটে এসে বড় মামার
পাশে বসে সরাসরি প্রশ্ন ছুঁড়ল,
-”আম্মু ব্যথা পেলো কীভাবে বাবা?”
ছেলের কথা শুনে আদিত্যের বাবা সামিউল সাহেব দ্বিধাতে পড়ে গেলেন। কারণ উনি অবগত আদিত্যকে সত্যিটা বলা মানে ওদের দুই ভাইয়ের বিরোধ বাড়ানো। এমনিতে আদিত্য আমানের সঙ্গে কথা বলে না। আমান বলতে গেলে আদিত্যই নিঁখুতভাবে এড়িয়ে যায়। যদিও এর কারণটা স্বয়ং আমানও
জানে না। আদিত্যের জবাবে আশায় তাকিয়ে আছে বাবার দিকে। তখন তার বাবা আমানের কথা এড়িয়ে গিয়ে প্রেশার বেড়ে ওয়াশরুমে পড়ে যাওয়ার কথাটা জানালেন। সব শুনে আদিত্য ঘড়িতে দৃষ্টি বুলিয়ে মেধার বাবাকে বললে,
-”আঙ্কেল আজকের রাতটা এখানে থেকে যান।”
একথা শুনে মেধা চট করে উঠে তার বাবার হাত ধরে টেনে উঠাতে লাগল। বার বার বলতে লাগল কালকে তার কলেজ যেতেই হবে। নয়তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। মেয়ের চালাকি বুঝে রেজাউল হকও জানালেন আগামীকাল উনার মিটিং আছে।
তাছাড়া আজকে রাতে দু’টো ফাইল রেডি করে রাখতে হবে।
আজ থাকবেন না আগামী কোনো এক দিন এসে থাকবেন।
উনাদের কথা শুনে বড় মামা একসঙ্গে যাওয়ার জন্য উঠতে গেলে আদিত্য উনাকে আর একটু থেমে যেতে বলল। একটু পর নিজে গিয়েই নাহয় রেখে আসবে। আদিত্য কিছু বলবে বুঝতে পেরে বড় মামা থেকে গেলেন। আর মেধা তার বাবার হাত ধরে বাইরে চলে গেল। আদিত্যকে আজকাল অসহ্যই হয় না তার। আগে যতটুকু গ্রাহ্য করতো বিয়ের প্রস্তাব শুনে আর সহ্য করতে পারে না। এর বিশেষ কারণ’ও আছে। এই রোবট মানব তাকে কিছুক্ষণ আগে একটা মেসেজ করেছে,
-”নিজেকে যতটা সুন্দরী ভাবো তা কিন্তু নয়। আর আদিত্য তোমাকে বিয়ে করার জন্য মরে যাচ্ছে না।”
এমন ধারার মেসেজ দেখে মেধার রাগ সপ্তম আসমানে। সে তবুও রাগ সামলে হাসি মুখে নিজেকে ধরে রেখেছে। নয়তো মন তো চাচ্ছিল আদিত্যের চুল টেনে ছিঁড়ে টাক করে দিতে।
নয়তো খামচি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে আসতে। দম্ভ যেনো তার সারে না, হুম! এই রোবট মানবের জীবনে কখনো প্রেমপ্রণয় আসবে না। তাছাড়া তার মন আছে নাকি? থাকলেও কারো মন এতটা পাষাণ হয় না। তাছাড়া সে না জানে ভালোবাসতে আর না পারে কারো ভালোবাসা গ্রহন করতে জানে না।পারে
শুধু অফিসের ফাইল দেখতে আর যার তার উপরে তদারকি করতে। তবে আজ অথবা কাল তার জমানো রাগ তুলবেই তুলবে।গাড়িতে বসে জানালার বাইরে তাকিয়ে এসব কিছুই ভাবছিলো মেধা। তখন গলা খাঁকারি শুনে মেধা দৃষ্টি সরিয়ে
বাবার দিকে তাকাল। ওর বাবার মেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরে বললেন,
-”তিনদিন বাদে আদিত্যের জন্মদিন। ছেলেটাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম সে কি নিবে আমার থেকে। সে বলেছে আমার সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটা নিবে।”
-”ওহ, দিয়ে দাও।”
-”সত্যি মা?”
-“হুম।”
-”আমার প্রিয় জিনিস তো তুমি মা। ”
একথা শুনে মেধা তার বাবার দিকে বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইল। তবে আর একটা টু শব্দও করল না। সে সিটে হেলান দিয়ে চুপ করে বসে রইল। নেত্রজোড়া বন্ধ করে স্মরণ করল সেদিনের ঘটনা। যদিও সেই ঘটনার প্রায় দুই বছর পেরিয়েও গেছে। তারপরেও সে ভুলতে পারে না। আদিত্যকে দেখলেই তার মনে পড়ে যায় সেই কথা। একটা মেয়ে আদিত্যকে খুব পছন্দ করতো, ভালোবাসতে। কিন্তু আদিত্য তাকে অপমান করে ফিরিয়ে দিয়েছে। মেয়েটা দৌড়ে যেতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করে এক পা হারায় তখনই। পরে একটা বছর পর, একজন হৃদয়বান ব্যাক্তি তাকে বিয়ে করে। সুন্দর একটা জীবন দান করেন তাকে। সেই মেয়েটির বর তাকে ভালোবাসায় মুড়িয়ে দেয়। সে কতটা সুখী তাকে দেখলেই বোঝা যায়। তার মধ্যে একটা খুঁত থাকলেও তার সঙ্গীর ভালোবাসা একদম নিঁখুত, নিঃস্বার্থ। আর এই ঘটনা সাক্ষী সে নিজে। সেই থেকেই তার
মনে হয় ‘আদিত্য ভাই জীবন্ত রোবট। ভালোবাসা তার জন্য নয়।’
পরেরদিন সকালে মেধা কলেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছে।কিন্তু মাঝপথে হঠাৎই মনে হলো মামনির খোঁজ নেয় নি সে। এটা অ/ন্যায়। কারণ সীমা তার আরেকজন মা। যিনি বিনাস্বার্থেই তাকে প্রচন্ড ভালোবেসে। ছেলের রাগ মায়ের উপর দেখানো ঠিক হচ্ছে না। বরং তাকে মামনির সঙ্গে সরাসরিই কথা বলা উচিত। জানিয়ে দেওয়া উচিত আদিত্য ভাই হিসেবেই থাকুক বর হিসেবে সে বড্ড বেমানান। এসব ভেবে ফোন বের করতে যাবে তখন একটা গাড়ি তার সামনে এসে দাঁড়াল। সে ভয়ে দুই পা পিছিয়েও গেল। আচানক এমন হওয়াতে ভীষণভাবে চমকে উঠেছে। তাছাড়া এত জায়গা থাকতে ওকেই মার/তে আসছে নাকি এই গাড়িটার ড্রাইভার। তখন মেধা রেগে কিছু বলতে গিয়ে দেখে ড্রাইভিং সিটে আদিত্য বসে আছে। পূর্বেই মতোই অবিচল তার মুখশ্রী। গম্ভীর চির চেনা সেই দৃষ্টি। তবে এ সময় আদিত্যকে দেখে অবাক হলেও সে প্রকাশ না করে তেড়ে গেল গাড়ির দিকে। জানালার গ্লাসে টোকা দিয়ে রেগে চেঁচিয়ে বলল,
-”আপনার সমস্যা কি বলবেন আমায়?”
-“উঠে এসো।”
-”কেন?”
-”পাল্টা প্রশ্ন না করে যা বলছি করো।
-“আমি মরে গেলেও আপনার সঙ্গে যাবো না, না, না।”
-”বেশি কথা বলাবে না মেধা। জলদি এসো বলছি।”
-”পারব না। আপনি যেখানে যাচ্ছিলেন যান।”
আদিত্য কথা না বাড়িয়ে নেমে মেধাকে টেনে গাড়িতে বসিয়ে দরজা লক করে দিলো। মেধা চেঁচিয়েও লাভের লাভ কিছুই হলো না। তারপর আদিত্য ড্রাইভিং সিটে বসে চলল বাসার পথে। সীমা বেগমই আদেশ করেছে মেধাকে নিয়ে যাওয়ার।
আর এই মেয়ে তো একটা ত্যাদড়। সহজ জিনিস বাঁকা ভাবে গ্রহন করা তার অভ্যাস। কিছুক্ষণ চুপ থেকে তখন আদিত্যই তাচ্ছিল্যভরা কন্ঠে বলল,
-”আমি নাহয় চাহিদার বিরুদ্ধ। ইমরান চাহিদা মতো তো?”
-”মানে?”
-” ভালো সাজছো, হা হা। ভাবতাম মিনিমাম লজ্জাবোধটুকু হয়তো তোমার আছে। কিন্তু না তুমি চরম লেভেলের ফালতু। সেই সঙ্গে মাথায় এটা গেঁথে নাও আমি তোমাকে বিয়ে করার জন্য মরে যাচ্ছি না। তাই বিয়ে বিয়ে করে অহেতুক বকা বন্ধ করো। তাছাড়া তোমার নাটক দেখার সময়ও আমার নেই।”
-”আপনি আসলেই জ’ ঘ’ ন্য একজন মানুষ আদিত্য ভাই।”
একথা শুনে আদিত্য দ্রুত গাড়ি সাইডে দাঁড় করিয়ে তড়িৎ গতিতে চেপে ধরল মেধার দুটো গাল। পূর্বের যত রাগ আছে উগড়ে দিতে আরো শক্ত করে ধরল চুলের বেনুনি। এ মুহূর্তে
আদিত্যের চোখ বলছে অন্য কথা। আচরণে প্রকাশ ক্ষোভ। মেধা তাকে ধাক্কা দিয়েও সরাতে পারল না। চুলে গালে প্রচন্ড ব্যথা পেয়ে অবশেষে কেঁদে ফেললো। তখন তার অশ্রুফোঁটা ঝরে গিয়ে পড়ল আদিত্যের হাতে। আদিত্য সেটা দেখে গাল ছেড়ে পূর্বের ন্যায় দম্ভভরা কন্ঠে বলল,
-”প্রেমের ভূত মাথা থেকে নামাও নয়তো…. ।”
-”আমি ইমরানকে ভালোবাসবো, জড়িয়ে ধরবো, প্রয়োজনে চুমুও খাবো, তার বাচ্চার মাও হবো, তাতে আপনার কি হ্যাঁ? কোন অধিকারে বারবার এমন করেন আপনি? লজ্জা নেই আপনার? না নিজে কাউকে ভালোবাসতে পারবেন আর না কারো ভালোবাসাকে সন্মান করতে জানেন। আপনাকে সহ্য হয় না আমার, প্রচন্ড ঘৃণা করি আপনাকে।
মেধার একথা শুনে আদিত্য ঝপপট তার থেকে সরে এলো।
তারপর গাড়ি স্টার্ট করে দ্রুত গতিতে ড্রাইভ করতে লাগল।
মিনিট দশেক পরেই বাসায় পৌঁছে কোনোদিকে না তাকিয়ে আদিত্য তার রুমে চলে গেল। মেধা চোখ মুখ মুছে নিজেকে সামলে তারপর ভেতরে প্রবেশ করল। ড্রয়িংরুমেই বাকিরা
উপস্থিত ছিলেন। আমান মেধাকে দেখে মাত্রই হেসে বলল,
-” কি রে তুই নাকি ইমরানের সঙ্গে প্রেম করছিস?”
-“তোমাকে কে বলল?”
-”ইমরানের মা লুবানার বিয়েতে ইনভাইট করতে এসে বলে গেল। আর আদিত্য ভাইয়ার থেকে তোর বাবার নাম্বার নিয়ে গেল বোধহয় প্রস্তাব পাঠাবে তাই।”
একথা শুনে মেধা ব্যাগটা সোফায় ছুঁড়ে বেরিয়ে গেল। সীমা বেগম ডাকলেও শুনলো না। আমান হাসতে হাসতে সোফায় বসে পড়ল। আজ ইমরানের খবর আছে। বাঘিনীটা এতদিন শান্ত থাকলেও আজকে রেগে গেছে। এবার খেলাটা জমবে।
আর ইমরান হচ্ছে আমানের বন্ধু। সে অনেক আগে থেকেই মেধাকে ভীষণ পছন্দ করে।কয়েকবার প্রোপোজও করেছে।
আদিত্যের ধমকি শুনে এ বাসায় না আসলেও মেধার জন্য
কলেজের পাশে দাঁড়িয়ে লুকিয়ে থাকে। তবে ওর উপহারটা ঠিকই পৌঁছে যায় মেধার কাছে। আর মেধা সেটা নিয়ে পথ শিশুদের দেয় কখনো বা বান্ধবীদের দেয়। একবার আদিত্য
এসব শুনে মেধাকে বলেছিল ইমরানকে মামা ডাকতে। দুষ্ট মেধাও ইমরানকে যেখানে দেখে মামা মামা করে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলে। আর মামা ডাক শোনার ভয় ইমরানও লুকিয়ে থাকে। মেধাকে ওভাবে বেরিয়ে যেতে দেখে সীমা বেগম পিছু ছুটেছিলেন। অনেক কষ্টে মেধাকে জোর করে টেনে বাসাতে ফিরিয়ে আনলেন।তারপর অনেক কষ্ট বুঝিয়ে শান্ত করলেন তাকে। তারপর ঠিক করা হলো আজ বাসায় পিকনিক করা হবে। মেধাও সায় দিলো তাতে। পিকনিকের আয়োজন করা হলো বাগানে। সকালে বাসায় ফিরে আদিত্য আর রুম থেকে বের হয় নি। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে একেবারেই দুপুরের খাবার খেতে নামল নিচে। তবে বাসায় কাউকে না দেখে বের হয়ে দেখে সবাই বাগানে মজা করছে। মেধা আমানকে মেরে খিলখিল করে হাসছে। এসব দেখে বিরক্ত হয়ে সে সেদিকেই এগিয়ে গিয়ে বলল,
-”খেতে দাও আম্মু।”
ওকে দেখে মেধা ঘুরে বসল। সে শশা কাটছে মাঝে মাঝে দু একপিচ মুখেও চালান করছে। রান্নাও প্রায় শেষের দিকে।
আদিত্যের মা ছেলেকে বাগানে ঘাসের উপর বিছানো মাদুরে বসল বললেন। আদিত্য তাকে ডায়নিংয়ে খেতে দিতে বলে
সোজা বাসায় ঢুকে গেল।তা দেখে মেধা মুখ ভেংচিয়ে কাজে
মন দিলো। এর লোকটা আসলেই শুধরানোর না। সবসময়ই
এমন করে। তারপর সীমা বেগম খাবার বেড়ে মেধাকে বলল দিয়ে আসতে। আজকে উনারা খোলা আকাশের নিচে বসে খাবে। মেধা টুকটাক হাতের কাজ সেরে মুখভর্তি হাসি নিয়ে আদিত্যকে খাবার দিয়ে আসল। আদিত্য খাবারের প্লেট ওর সামনে থেকে সরিয়ে গটগট করে উঠে চলে গেল। তা দেখে মেধা বলল,
-”যাচ্ছেন কেন, খাবেন না?”
-”যে আমাকে ঘৃণা করে। তার স্পর্শের খাবার খাওয়া আমার চাহিদা বিরুদ্ধ।”
”আমার লেখা ‘অর্ধভেজা প্রহর ‘ বইটির প্রি অর্ডার চলছে।
প্রি অর্ডারের সময় আছে আর মাত্র তিনদিন। গল্পের পোকা হয়ে আপনিও নিজের সংগ্রহে বইটি রাখতে পারেন।”
To be continue…….!!