#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_১৫ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu
শুভ্রঃ তানিশাআআ (অবাক হয়ে) কতো খুঁজেছি তোমাকে,,কিন্তু কোথাও পায়নি আর আমার দেওয়া ফোনটাও নিয়ে যাওনি যে যোগাযোগ করবো,,,আমার যে কোন অন্যায় ছিলোনা সেটাও তোমাকে বলতে পারিনি(মনে মনে)
শুভ্র যেই যেতে গেলো তখনি তানিশার ডাক পরলো,,তানিশা ডাক্তারের চেম্বারে চলে গেলেন।
ডাক্তার আল্টাসনো করে বললেন,,আপনার ছেলে বেবি হবে,,
তানিশাঃ আমার ছেলে হবে কিনা মেয়ে সেটা জানতে চায়না,,আমার বেবি হেলদি আছে তো আর পজিশন কেমন
ডাক্তারঃ হুম বেবির ওয়েট ঠিক আছে আর পজিশন নরমাল,,,আর একমাস পরেই আপনার সন্তান আপনার কোলে থাকবে
তানিশাঃ থ্যাংকিউ ডাক্তার(খুশি হয়ে)
ডাক্তারঃ ওয়েলকাম,, মিসেস তানিশা
মিসেস শুনেই কেমন জানি বুকের মাঝে চিন করে উঠলো,, সেদিকে পাত্তা না দিয়ে তানিশা ঠিকঠাক করে বাইরে চলে আসলো,,আর পেটে হাত দিয়ে বলতে থাকলো,,
তানিশাঃ কি রে দুষ্টু,, আর কয়েকদিন পরেই তো আমার কোলে আসবি,,,খুব ক্লান্ত হয়ে গেছিস তাইনা আর একমাস ওয়েট কর,,তারপরেই তুই এই পৃথিবীর আলো দেখতে পারবি
শুভ্রঃ তানিশা (পেছন থেকে)
তানিশার কাছে কন্ঠটা পরিচিত লাগলো তাই পেছনে তাকিয়ে একটা বড় শকড খেলো,,,চোখ বড় বড় করে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শুভ্রের দিকে,,,
শুভ্রঃ কোনো খোজ নেই তোমার,,,কতো খুঁজেছি জানো,,মোবাইলটাও তো নেওনি
তানিশাঃ নিশ্চুপ
শুভ্রঃ কি হলো কিছু বলছোনা কেনো,,
যেই তানিশাকে ছুতে যাবে তখনি তানিশা সামনে হাত দিয়ে বুঝিয়ে দিলো আমাকে ছুবেননা।শুভ্র কিছুটা দূরে সরে যায়,,
শুভ্রঃ তুমি কি নতুন জীবন শুরু করেছো(পেটের দিকে তাকিয়ে)
তানিশাঃ আপনিও তো নতুন জীবন শুরু করেছেন তাই আমি কেনো বাদ থাকবো
শুভ্রঃ শোনওও,,,,
শুভ্র যেই কিছু বলতে যাবে তখনি আদি চলে আসলো,,আদি তানিশা থেকে বড় ছিলো তাই নাম ধরেই ডাকতো,,,,
আদিঃ তানিশা ডাক্তার দেখানো হয়ছে
তানিশাঃ হুম
আদিঃ চলো তাহলে
তানিশা আর একবারও শুভ্রের দিকে তাকালো না আদির সাথে গাড়িতে উঠে পরলো,,,
শুভ্রঃ তুমি অনেক বদলে গেছো,,নতুন জীবন আবার এখন তুমি অন্যের বাচ্চার মা,, এখন আমাকেও পাল্টাতে হবে,,ভুলে যাব এখন থেকে, সব আশা নষ্ট হয়ে গেলো,,তাতে তোমার কোন দোষ নেই হয়তো অন্য কাউকে বিয়ে করতে তুমি বাধ্য(মনে মনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে)
অন্যদিকে,,
আদিঃ তানিশা ওই লোকটা কে ছিলো??
তানিশাঃ শুভ্র
আদি ব্রেক করে তানিশার দিকে তাকালো,,,,
আদিঃ তুমি ওকে আটকালে না কেনো
তানিশাঃ সে নতুন জীবন শুরু করেছে,,আর সে ভেবেছে আমার বাচ্চাটা অন্য কারোর আমিও আর এই ভুল ভাঙ্গাতে চাইনা
আদিঃ কিন্তু তানিশা,, তুমি কিভাবে বাঁচবে কিভাবে কাটাবে জীবন
তানিশাঃ সিঙ্গেল মার্দার হিসেবে
আদি আর কিছু বললো না গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বাড়িতে চলে আসলো,,,আয়ুশি কখন থেকে তানিশার জন্য অপেক্ষা করছে,,,
আয়ুশিঃ বেবি ঠিক আছে তো তানিশা
তানিশাঃ হুম,,,তো তোরা বিয়ে করছিস কবে??
আয়ুশিঃ আদি যখন চাই
আদিঃ আমার একটু সময় লাগবে
তানিশাঃ হারিয়ে ফেলার পরে আপসোস করবেন
আদিঃ হারাবো মানে??
তানিশাঃ কোন এক্সিডেন্টে
এই বলে তানিশা চলে গেলো,,আয়ুশি আর আদি একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে।
কিছুক্ষণ পর,,,
আয়ুশিঃ আমাদের বিয়েটা করা উচিত
আদিঃ তানিশার বেবি হওয়ার পর করলে কেমন হয়
আয়ুশিঃ তানিশা যদি জানতে পারে ওর জন্য আমরা বিয়ে করছিনা এই বাড়ি থেকে চলে যাবে
আদিঃ তাহলে এই মাসের ২৭ তারিখে করলে কেমন হয়,,দু দিন পরে আমার পরিবার চলে আসবে
আয়ুশিঃ আমার আপত্তি নেই,,,তুমি তোমার ফ্যামিলির সাথে কথা বলে দেখ
আদিঃ আচ্ছা আর একটা কথা বলতে ভুলে গেছি,,আজ তানিশার সাথে শুভ্র ভাইয়ার দেখা হয়েছিলো
আয়ুশিঃ শুভ্র ভাইয়া,,কোথায় কিভাবে??
আদি আয়ুশিকে সব খুলে বলে,,আয়ুশিও আজ অবাক হয়ে যায়,,এতোদিন পর শুভ্রের নামটা শুনতে পারলো,,তানিশা আর কখনোই শুভ্রের নাম নি নাই মুখে,,হয়তো মনে তারই প্রতিচ্ছবি নিয়ে বেঁচে ছিলো মেয়েটা,,,
আয়ুশিঃ এই জন্যই ওর মুডটা এমন হয়ে আছে,,আচ্ছা তুমি কি এখন থাকবে??
আদিঃ নাহহ,,আর আমি সব রাতে বলবোনে
আয়ুশিঃ আচ্ছা
আদি এই বলে চলে গেলো,,,তানিশা রুমে গিয়ে কান্না করতে করতে বেলকনিতে এসে বসেছে,,এই বেলকনিই ছিলো তানিশার মন ভালো করার একটা জায়গা এই পাঁচ মাসে…..
রাতে,,,
শুভ্র সাবরিনাকে কল করার সাথে সাথেই সাবরিনা ফোন রিসিভ করলো,,
শুভ্রঃ আমি আপনাকে বিয়ে করতে রাজি(শক্ত ভাবে)
সাবরিনাঃ আমি জানতাম তুমি খুব তারাতারিই আমাকে কল করবে,,,তো কবে বিয়ে করবে সামনে বছরে বাপি বলেছে
শুভ্রঃ আমি এই বছরের মধ্যেই বিয়ে করতে চায়,,, না হলে আর কখনোই বিয়ে করবো না
সাবরিনাঃ আমি বাপির সাথে কথা বলে দেখছি
শুভ্র কল কেটে দিলো,,গভীর রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আন-মনে তানিশারই ছবি একে যাচ্ছে কিন্তু একটা ভুল করতে যাচ্ছে নিজের সাথে
”
”
”
”
”
সাবরিনাঃ অবশেষে আমার প্লান সাকসেসফুল,,, খুব তারাতারিই আমি তোমাকে পেতে চলেছি শুভ্র।আমার জীবনের প্রথম ক্রাস তোমাকে কিভাবে হাত ছাড়া করতে পারি আমি(খুশি হয়ে)
অন্যদিকে,,,
তানিশাঃ আমার সন্তানের জন্য আমি বেঁচে থাকতে চায়,,সবাই মরে গেছে আমার কাছে। আর কারোর সাথে নতুন করে জীবন শুরু করার মতো শক্তি আমার নেই(চোখ থেকে পানি পরছে শুধু)
সকালে,,,
তানিশা তখন ও ঘুমিয়ে ছিলো,,আয়ুশি হেলথ-ড্রিংকস বানিয়ে তানিশাকে ডাক দিলো।তানিশা চোখ কচলাতে কচলাতে উঠে পরলো,,,,
আয়ুশিঃ গুড নিউজ আছে
তানিশাঃ কিসের??
আয়ুশিঃ আমার আর আদির বিয়ে এই মাসের ২৭ তারিখে ঠিক হয়ে গেছে,,ওর আম্মুরাও রাজি।
তানিশাঃ সত্যি (খুশি হয়ে)
আয়ুশিঃ হুম সত্যি
তানিশাঃ আজ তো ২০ তারিখ আর মাএ ৭ দিন ,,, শপিং করতে হবে আজ থেকে(উত্তেজিত হয়ে)
আয়ুশিঃ হুম তার সাথে তোর বেবিরও শপিং করতে হবে
তানিশাঃ আজকেই বের হতে হবে
আয়ুশিঃ হুম আদি আসবে আমাদের নিতে
তানিশাঃ ওও আচ্ছা
এই বলে হেলথ ড্রিংকসে এক চুমুক দিলো,,,তানিশাকে খুশি দেখে আয়ুশিও খুশি হয়ে গেলো,,
আয়ুশিঃ অনেক দিন ওর তোর মুখে একটু হাসি দেখতে পারলাম,,ধন্যবাদ আদি,,তুমি আমার লাইফে না এলে এমন কখনোই হতো না(মনে মনে)
এই পাঁচটা মাস তানিশাকে আগলে রেখেছে আয়ুশি,,,তানিশার সাথে থাকলে আয়ুশি ডিপ্রেশন ভুলে যেতো,,তানিশাও কিছুটা ভালো থাকতো।সবাই বলতো তানিশা আর আয়ুশি দুই বোন ইভেন আদিও প্রথমে তাই মনে করেছিলো।বন্ধুত্ব এমনই হওয়া উচিত যেখানে একজনের জন্য আরেকজনের জীবন ও হাসি মুখে উৎসর্গ করা যায়,,,
বিকেলে,,,
আদি গাড়ি করে তানিশা আর আয়ুশিকে নিয়ে গেলো,,,তানিশার চয়েজ অনেক সুন্দর তাই বিয়ের কাপড় কিনতে বেশি ছোটাছুটি করা লাগেনি।সব কেনাকাটার পর তানিশা তার বেবির জন্য দরকারী জিনিসপত্র কিনতে লাগলো কারণ আর একটা মাস পরেই সে পৃথিবীতে আলো করে আসবে,,,,
সব কেনাকাটা শেষ করে একবারে ডিনার করে ফিরলো তিনজনে,,,আদি তানিশা আর আয়ুশিকে বাড়িতে পৌছে দিয়ে নিজের বাড়িতে চলে গেলো,,,
তানিশা কেবলি রুমে এসে শুয়ে পরলো এমন সময় আয়ুশি আসলো,,,
আয়ুশিঃ তানিশা তোর সাথে কিছু কথা ছিলো আমার
তানিশাঃ হুম বল কি বলবি
আয়ুশিঃ আমার বিয়ের আর ছয়দিন আছে,,,আমি না থাকলে তুই একা হয়ে যাবি,,প্লিজ আরেকবার নিজের জীবন নতুন ভাবে শুরু কর
তানিশাঃ আমি তো নতুন করেই শুরু করবো,,আমার বেবি আছে তো।
আয়ুশিঃ আমি ওই শুরু কথা বলিনি আমার কথার মানে লাইফ পার্টনার নিয়ে জীবন শুরু কর
তানিশাঃ আর সম্ভব না (মাথা নিচু করে)
আয়ুশিঃ শুভ্র ভাইয়া তো নতুন করে সব শুরু করেছে,,সে পারলে তুই কেনো পারবিনা
তানিশাঃ আমি কাউকে ধোকা দি নাই,,, ধোকা পেয়েছি,,আর কাউকে বিশ্বাস করার মতো আমার পরিস্থিতি নাই
আয়ুশিঃ আমিও তো ধোকা পেয়েছি,,,তবুও দেখ আমি আদিকে এখন অনেক বেশি ভালোবাসি
তানিশাঃ তোর কাহিনী আর আমার কাহিনী সেম না,,আমার বিয়ে একজনের সাথেই দুইবার হয়েছে,,আর আমি তাকে এতোটাই ভালোবাসি যে অন্য কাউকে ভাবাও ই সম্ভব না
আয়ুশি আর তানিশার সাথে পেরে উঠলো না তাই নিজের রুমে চলে আসলো,,,
আয়ুশিঃ আমি যে তোকে কিভাবে বোঝাবো,,,উফফ(মাথায় হাত দিয়ে)
তানিশা দিনে হাসিখুশি থাকলেও রাতে তার বিপরীত,,,রাত কারোর কাছে মধুর মতো আর কারোর কাছে বিষের ছুরির মতো,,যা আঘাত করলে মৃত্যুর মতো যন্ত্রণা শুরু হয়,,,,,
এইভাবেই আদি আর আয়ুশির বিয়ের তারিখ এগিয়ে আসছে,,আর আয়ুশির চিন্তু বাড়তেই আছে তানিশার জন্য।
অন্যদিকে,,
শুভ্র এখানে তার কাজিনের বাসায় রয়ে গেছে একপলক প্রতিদিন তানিশাকে দেখার জন্য।
শুভ্রঃ জীবন শেষ হয়েই তো গেছে একদম শেষ করে দিবো,, আমার আর সাবরিনার বিয়ের দিন।এ জীবনে তানিশা ছাড়া অন্য কাউকে ভাবা ইম্পসিবল,, আমি বেঁচে না থাকলে সাবরিনা কাকে বিয়ে করবে আর তানিশাকেই বা ক্ষতি করবে কিভাবে।এই বছরই হবে আমার জীবনের শেষ বছর,,তানিশা আমার বউ ছিলো,,আছে এবং থাকবেও(মনে মনে,, আকাশের দিকে তাকিয়ে)
অবশেষে আদি আর আয়ুশির গায়ে হলুদের দিন,,,
বাড়িটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে,,,বিভিন্ন কালারের ফুল দিয়ে সাজানো।তানিশাও আজ সব দিকে নজর রাখতে গিয়ে ক্লান্ত এই শরীর নিয়ে।আজ আয়ুশিকে খুব সুন্দর লাগছে।বিয়েটা অনেক বড় করে হচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর,,
সবাই মিলে আয়ুশিকে হলুদ মাখানো শুরু করলো,,,তানিশাও আয়ুশিকে হলুদ মাখিয়ে দিলো,,আয়ুশি তানিশাকে।অনেক লাউডে বক্স বাজছে আত্নীয় -স্বজনে ভরপুর।
”
”
”
”
“#যদি_দেখা_না_হতো
#পর্ব_১৬ (#Season_02)
#Writer_Tanisha_Esu
★
সব নিয়ম মেনে কাজ করে আয়ুশির গায়ে হলুদ সমাপ্ত হলো,,,,আজ রাত আয়ুশি আদির সাথে কথা বলেই পার করেই দিবে এমন ভাব,,,
তানিশা নিজের রুমে এসে খোলা চুলগুলো বেনুনী করলো তারপর আয়নার সামনে তাকিয়েই আছে,,নিজেকে নিজেই চিনে উঠতে পারছে না বাকি যা আছে সেখানে শুধু শুভ্রের স্মৃতি মাখা,,চাইলেও যে সে কখনোই শুভ্রের কাছে যেতে পারবে না।
তানিশাঃ কাল বিয়ে,সকাল সকাল উঠতে হবে ঘুমিয়ে পরি
তানিশা এসে শুয়ে পরে।কি আজব পৃথিবী কোথাও খুশি.. কোথাও দুঃখ,,কেউ ভালো না থেকেও হাসি নিয়ে বেঁচে থাকে আবার কেউ ভালো খবরের জন্য হাসতে থাকে,,কারোর সংসার ভাঙছে আবার কারোর সংসার শুরু হচ্ছে,, কেউ প্রিয় মানুষটার সাথে সারারাত কথা বলছে আবার কেউ প্রিয় মানুষটার সাথে কথা বলার জন্য ছটফট করছে,,,,সুখ ৩০% বাকি ৭০% কষ্ট……..
অন্যদিকে,,,
আরিয়ানঃ ভাই কাল একটা বিয়ের দাওয়াত আছে তুই আমার সাথে যাবি ওকে
শুভ্রঃ ভালো লাগছেনা তুই যা
আরিয়ানঃ প্লিজ চল না তুই না গেলে ভালো লাগবে না
শুভ্রঃ বললাম না আমি কোথাও যাবনা(মোবাইলের দিকে তাকিয়ে)
আরিয়ানঃ ওকে আমিও যাব না
শুভ্রঃ তুই কেনো যাবি না??
আরিয়ানঃ তুই না গেলে আমিও যাব না
শুভ্রঃ বিয়েটা কার???
আরিয়ানঃ আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড আদির
শুভ্রঃ ওও আচ্ছা,, ওকে যাবোনে
আরিয়ানঃ প্রমিস (খুশি হয়ে)
শুভ্রঃ ওকে প্রমিস,, এখন যা ঘুমিয়ে পর
আরিয়ান রুমে এসে শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো,,,
আরিয়ানঃ আমি চাই ভাইয়া তোর সব সত্যি তানিশা ভাবি জানুক,,,আদি না থাকলে তো সব জানতেও পারতাম না,,আর আয়ুশি ভাবিও সত্যিই জেনে খুব খুশি হয়েছিলো ,,, শুধু কালকের দিনের অপেক্ষা (মনে মনে)
কিছুদিন আগে,,,,
আরিয়ান,,, আদি আর আয়ুশি ঘুরতে এসেছিলো,,এমন সময় আরিয়ানের গ্যালারি ঘাটতে ঘাটতে হঠাৎ শুভ্রের পিক দেখে আদি ও আয়ুশি চমকে উঠে,,
আদিঃ আরিয়ান এই ছেলেটা কে??
আরিয়ানঃ এটা আমার মামাতো ভাই শুভ্র
আদিঃ তাহলে তানিশা তোর ভাবি হয়
আরিয়ানঃ হুম কিন্তু তুই তানিশা ভাবিকে কিভাবে জানলি(অবাক হয়ে)
আয়ুশি সব খুলে বললো আরিয়ানকে,,,,,,,,,,,,
আরিয়ানঃ তোমরা শুভ্র ভাইয়াকে ভুল বুঝছো,,আমি ছাড়া এই সত্যিটা কেউ জানেনা,,,কেনো তানিশা ভাবিকে দূরে সরিয়ে দেয় শুভ্র ভাইয়া…
আয়ুশিঃ কেনো??
আরিয়ান সব সত্যি আদি আর আয়ুশিকে বললো,,আয়ুশি কেঁদে ফেলছিলো সব শুনে,,
আদিঃ মানে,, এরা একে অপরকে ভুল বুঝে দূরে সরে আছে,, আবার দুজনই কষ্ট পাচ্ছে,,,এদের মিল করাতেই হবে যে করেই হোক না কেনো,,আর সাবরিনাকে যে করেই হোক দূরে সরাতে হবে
তারপর তিনজনে মিলে প্লান করলো,,কিভাবে তানিশা আর শুভ্রকে মিল করা যায়….
পরের দিন,,,
আজ আয়ুশি আর আদির বিয়ে,,আয়ুশি সাজাতে পার্লারের মেয়েরা এসেছে খুব সুন্দর করে সাজাচ্ছে।
আয়ুশিঃ আপনারা একটু তানিশাকে সাজিয়ে দিন
তানিশাঃ আমার ভালো লাগছেনা না
আয়ুশিঃ তুই কি আমার শেষ ইচ্ছেটা ও রাখবি না(মন খারাপ করে)
তানিশাঃ শেষ ইচ্ছে মানে
আয়ুশিঃ আমার তো বিয়ে হয়ে গেলে তোর থেকে দূরে সরে যাব,,প্লিজ আমার রিকুয়েষ্ট টা রাখ
তানিশাঃ আচ্ছা
পার্লারের মেয়েরা তানিশাকে সাজাতে লাগলো,,তানিশার সেই পুরোনো কথা মনে পরতে লাগলো,,মোটেও ভালো লাগছেনা কিন্তু আয়ুশির জন্য কিছু বলতেও পারছেনা
আয়ুশিঃ তোকে আজ সাজালে অতীত মনে পরবে ,,,সরি বোন তোর কষ্ট হলেও তোদের মিল করতে হলে এতোটুকু কষ্ট দিতে হবে (মনে মনে)
বেশ কিছুক্ষণ পর বর পক্ষ চলে আসলো আর আয়ুশিকে আদির পাশে বসানো হলো,,আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব আসতে লাগলো আর আয়ুশির সাথে পরিচয় হতে লাগলো,,,আর ক্যামেরা ম্যান তো আছেই দুজন এবং বাকিদের ছবি তোলার জন্য…
হঠাৎ,,
শুভ্র আর আরিয়ান আসলো এবং আয়ুশি আর আদির সামনে দাড়ালো,,আরিয়ান আদির হাতে গিফ্ট দিলো,,,
আরিয়ানঃ তো দোস্ত তোর সিঙ্গেল নাম একেবারে ঘুচে গেলো
আদি হাসতে লাগলো,,
শুভ্রঃ এই আদির সাথে তানিশার বান্ধবী আয়ুশির বিয়ে কিন্তু আমি তো ভেবে ছিলাম এই ছেলেটা তানিশার হাজবেন্ড,, তাহলে তানিশা কি এখনো বিয়ে করেনি আর তাহলে ওর পেটে যে বেবি সেটা কি আমার???(কিছুই হিসাব মিলাতে পারছে না)
আদিঃ আপনাকে স্টেচ লাগছে ঠিক আছেন তো
শুভ্রঃ হুম( শান্ত হয়ে)
তানিশা আয়ুশিকে ডাকতে এমন সময় শুভ্রকে দেখে থমকে যায়,,,,
আয়ুশিঃ মাশা-আল্লাহ,, তানিশা তোকে তো অনেক সুন্দর লাগছে
তানিশাঃ তোরা ওই রুমে চল কাজি সাহেব সব রেডি করে রেখেছে( নিচের দিকে তাকিয়ে)
সবাই এখন অন্য রুমে গেলো আয়ুশি আর আদি সামনা- সামনি বসে আছে।আর একটু পরই বিয়ে পড়ানো শুরু হবে তানিশার খুব খারাপ লাগছে তাই সেখান থেকে নিরিবিলি রুমে চলে আসলো।অতীতের সব যেন চোখের সামনে ভাসছে।
শুভ্র তানিশার পিছু করে রুমে এসে রুম লক করে দেয়,,গেট লাগানোর আওয়াজ পেয়ে তাকিয়ে দেখে শুভ্র অবাক নয়নে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে থাকে,,,
তানিশাঃ কি করছেন আপনি,,গেট লাগাচ্ছেন কেন??
শুভ্রঃ এই বেবির বাবা কে??
তানিশাঃ কে আবার আমার সাজবেন্ড
শুভ্রঃ তুমি এখনো বিয়ে করোনি তাহলে হাজবেন্ড আসলো কোথা থেকে বলো,,এর বাবা কে??
তানিশাঃ যেই হোক না কেনো আপনার কি
শুভ্রঃ আমাকে রাগিও না তানিশা,,বলো কে এই বেবির বাবা আমি তাইতো,,একবারও বলার প্রয়োজন করলে না
তানিশাঃ আপনি শোনার ইচ্ছে করেছেন কখনো
শুভ্রঃ মানে??
তানিশাঃ সেদিন আপনাকে বলেছিলাম আমার কিছু বলার আছে আপনাকে তারাতারি বাড়িতে ফিরবেন,,, আসলেন ঠিকি কিন্তু আপনি আমাকে কি কি বলেছিলেন মনে নেই আপনার?? এখন আপনার আর আমার পথ আলাদা,,আমার থেকে দূরে থাকবেন( এক নিশ্বাসে)
শুভ্র ধপ করে বেডে বসে পরলো,,,সে যে একটা বড় ভুল করে ফেলেছে,,যার কোন কুল কিনারা পাচ্ছে না….
শুভ্রঃ তানিশা আমার একটা কথা শুনবা প্লিজ
তানিশাঃ আপনার কোন কথা শোনার মতো ইচ্ছে নাই আমার,,
শুভ্রঃ প্লিজ তানিশা( চোখ থেকে অনবরত পানি পরছে)
তানিশাঃ আপনি তো ওই সাবরিনার সাথে জীবন শুরু করেছেন,, কেন আবার আমার কাছে আসতে চাচ্ছেন ,, আমাকে না মেরে ফেললে আপনার হচ্ছে না
শুভ্রঃ Shut up,,just shut up Tanisha… আমি কারোর সাথে কোন সম্পর্কে জড়াইনি,,,ইভেন সেদিন যা যা বলেছিলাম সব মিথ্যে
তানিশাঃ মিথ্যে মানে???
এইবার শুভ্র সব সত্যি বলে দিলো,,আর একটা কথাও গোপন করলো না,,তানিশা সব শুনে কাঁপতে লাগলো,,
তানিশাঃ আপনি কেনো আমাকে সেইদিন বলেননি
শুভ্রঃ আমার কাছে তোমার জীবন বেশি মুল্য ছিলো তানিশা,,আমার মাথায় কোন কাজ করছিলো না
তানিশাঃ যাই হোক আপনার আর আমার ডিভোর্স হয়ে গেছে,,এখন আমি আর চাইনা আপনার হতে।আর, আপনি সাবরিনাকে বিয়ে করে নিন..
শুভ্রঃ একটা থাপ্পড় দিয়ে তোমার দাঁত ফেলাই দিবো বেয়াদব মেয়ে
শুভ্রের ধমক শুনে তানিশা বেশ অবাক হয়ে উঠলো,,হঠাৎ কেনো বকলো এটাই বুঝে উঠতে পারছে না তানিশা??
তানিশাঃ এই আপনি আমার সাথে এমন করে কথা বললেন কেনো?? আমি কি আপনার বউ নাকি
শুভ্রঃ হুম তুমি আমার বউ
তানিশাঃ কিভাবে??(রেগে)
শুভ্রঃ আমাদের ডিভোর্স ই হয়নি
তানিশাঃ মানে??
শুভ্রঃ আবুল মেয়ে ডিভোর্সের পেপারটা কি ভালো ভাবে পড়েছো কখনো?? আমি সাইন করেছি মানেই আমি ডিভোর্স দিয়ে দিছি,,,ওটা রেজিট্রি পেপার ছিলো আমি এক্সচেঞ্জ করে দিছিলাম,,মানে বুঝো তোমার আর আমার ৩ বার বিয়ে হয়ছে
তানিশা এবার পুরোই অবাক হয়ে গেলো,,আর কিছু ভাবতে পারছেনা শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলো।
শুভ্রঃ i am sorry Jan,,,অনেক কষ্ট দিছি তোমাকে,,বিশ্বাস কর তোমার থেকে আমি অনেক গুণ কষ্ট পেয়েছি।আমি প্রমিস করছি তোমার আর আমার বেবিকে কষ্ট দিবো না,,ভালো বাবা হইয়ে দেখাবো
তারপর দুজন স্বাভাবিক হয়ে এসে দেখে আয়ুশি আর আদির বিয়ে সম্পূর্ণ হয়ে গেছে।
আয়ুশি আদি,,আরিয়ান,,শুভ্র আর তানিশা একটা রুমে আসে আয়ুশির কথা মতো,,
আয়ুশিঃ কি মিল হয়ছে আপনাদের
আয়ুশির কথা শুনে তানিশা আর শুভ্র বেশ অবাক হয়ে উঠলো,,,একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে
আদিঃ আরে আর লজ্জা পেতে হবেনা
তানিশাঃ তোমরা সব জানতে
আরিয়ানঃ আরে তোমাদের মিল করাতে আমরা তিনজন প্লান করে করেছি
শুভ্রঃ😳😳😳😳😳
আরিয়ান সব বলে,, সব শুনে শুভ্র আর তানিশা আরেকটা শকড খায়।
আদিঃ আর আরিয়ান সবাই তো বিয়ে করে নিলো,,তানিশা আর শুভ্র ভাইয়ার মিল হয়ে গেলো আবার আমার আর তোর ভাবির বিয়েও হয়ে গেলো তুই কি সিঙ্গেলই থাকবি
আরিয়ানঃ কে বললো আমি সিঙ্গেল,,আমার তো জিএফ আছে আর তানিশা ভাবি রাজি থাকলেই বিয়ে করবো
তানিশাঃ আমার রাজি মানে??
আরিয়ানঃ মানে,,আপনার বোন মেহেন্তা আমার জিএফ (মাথা নিচু করে)
শুভ্রঃ তুই কি মেহেন্তার সম্পর্কে সব জানিস
আরিয়ানঃ হুম সব বলেছে ও আমাকে,,আমার মনে হয় ওকে বাঁচার জন্য আরেকটা সুযোগ দেওয়া উচিত,, আমিও ওকে অনেক ভালোবাসি,,সেও
তানিশাঃ আমার কোন আপত্তি নেই তোমার আছে নাকি??
শুভ্রঃ আরে নাহহ,,, আর মেহেন্তা অনেক লাকি বুঝলা,,এতো কিছু হয়ে গেলেও সব মেনে নিয়ে একজন ভালোবাসার মানুষ পেয়েছে
আদিঃ বুঝলে সবাই,, আরিয়ান পাগল সেজে সন্দেশ খাই
আদির কথা শুনে সবাই হাসতে লাগলো মন খুলে,,,
অন্যদিকে,,
সাবরিনাঃ এই শুভ্রের লোকেশন ট্রাক কর,,, আজ কেনো ফোন ধরলোনা।ও যেখানে আছে আমি সেখানে যাব
সাবরিনার বাবাঃ চিন্তা করিস না ওই শুভ্র তোর পায়ে এসে পরবে।
——-
আয়ুশির বিদায়ের সময় আয়ুশি তানিশাকে জড়িয়ে অনেক কান্না করে,,,,,,,,,,,
তানিশাঃ আরে পাগলি এতো কাঁদছিস কেনো হুমম,,তুই তো সারা জীবনের জন্য যাচ্ছিস না
আয়ুশিঃ তুই থাকবি তো আমার পাশে সারা-জীবন
তানিশাঃ হুম অবশ্যয়
বেশ কিছুক্ষণ পর আয়ুশি বিদায় হয়ে গেলো,,একে একে সবাই চলে গেলো,,আয়ুশির পরিবার ও রওনা দিলো নিজের বাড়িতে।বাড়িতে আজ শুধু শুভ্র আর তানিশা,,আরিয়ান অনেক আগেই চলে গেছে,, কারণ তানিশা আর শুভ্রকে একটু টাইম স্পেন্ড করতে দিতে হবে,,,,,,,,,,,,,,,
”
”
”
”
”
”
”
”
”
”
”
”
”
”
চলবে….
(তারপর বলো আজকের পর্ব কেমন লাগলো সবার😁🤐🙃)
”
”
”
”
”
”
”
চলবে……