#রোদহীন_বিকালে_তুমি✨
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_২
৩.
সূর্যের আলো চো’খে পরতেই পিটপিট করে চোখ খুললো আনিশা।চো’খ খুলে নিজেকে বেলকনিতে আবিষ্কার করলো।নিজের এই অবস্থা দেখে তা’চ্ছি’ল্য হাসলো।তার এগুলো সবেতেই অ’ভ্যা’স আছে!বেলকনির দরজায় টো’কা দিলো।কেউ খুললো না!হয়তো আলভি এখনো ঘুমাচ্ছেন।কিছু সময় পর হুট করে কেউ বেলকনির দরজা খুলে দিলো।দরজাটা খুলেছে আলভির বোন আহা।আমাকে বলল,,,
“ভাবি তুমি কি সারারাত এখানে ছিলে”
আনিশা কিছু বললো না।কি আর বলবে ও।কিছুই বলার নেই ওর।চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে।আহা হয়তো বুঝতে পারলো তাই বললো,,,,
“ভাবি রুমে আসো মামনি তোমাকে শাড়ি পরে নিচে যেতে বলেছে”
আনিশা রুমে এসে দেখলাম রুমে আলভি নেই।হয়তো কোথাও গিয়েছে।আহার কাছ থেকে শাড়িটা নিয়ে ওয়াশরুম থেকে পরে বের হলো।আহা এখনো আছে।আনিশাকে দেখে বলল,,,
“ভাবি তুমি বসো আমি তোমায় একটু সাজিয়ে দেই আলভি ভাইয়া বিয়ে করেছে শুনে মামা ফুফি সবাই আসছে।”
আনিশা আহাকে বললাম,,,”আহা আমার সাজতে ভালো লাগে না তো”
আহা মুচকি হেসে বলল,,,
“ভাবি আমি তোমায় একেবারে হালকা সাজিয়ে দেবো।”
আনিশা সম্মতি দিতেই ওকে হালকা সাজিয়ে দিলো।সাজানো শে’ষ হতে বলল আহা বললো,,,
“মাশাআল্লাহ তোমাকে লা’ল শাড়ির সাথে হালকা সাজে অনেক সুন্দর লাগছে।”
আনিশা ম’লি’ন হাসলো।আহা আনিশাকে নিয়ে নিচে নামলো।আলভির আম্মু মিসেস নাফিয়া আনিশাকে দেখে তার পাশে বসিয়ে বলল,,,
“শোন তোমাদের বিয়েটা যেভাবেই হোক না কেনো হয়েছে তাই ডি’ভো’র্সের কথা ভু*লে যাও।এ বাড়িতে ডি’ভো’র্সের কোনো নিয়ম নেই।”
আনিশা মা*থা নাড়ালো। উনি আনিশার হাতে চুড়ি পরিয়ে দিয়ে বললেন,,,
“এটা আমাদের বাড়ির বউয়েরা পেয়ে থাকে শাশুড়ীদের কাছ থেকে এতোদিন আমার ছিলো এখন তুমি আলভির বউ তাই এগুলো তোমার”
আনিশা ভাবছে চুড়িগুলোর উপর যে আমার না ফারিহার অ’ধি’কা’র ছিলো।এগুলো যে ওর। আমি কোথা থেকে উড়ে এসে ওর জায়গায় বসে পরলাম।চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরলো।আলভির আম্মু দেখে বললেন,,,
“আমি জানি তোমার ফারিহার জন্য অনেক ক*ষ্ট হচ্ছে। কিন্তু দেখো আল্লাহ হয়তো আলভির সাথে তোমার জুটি বেঁ’ধে রেখেছিলো তাই তো ওরা দু’জন দু’জনকে ভালোবেসেও পেলো না”
চোখের পানি মুছে বললো,,,
“আমি তো চাইনি আন্টি নিজের বেস্টফ্রেন্ডের ভালোবাসাকে কে*ড়ে নিতে। ও আমাকে যেমন ভালোবাসে তেমনই উনাকেও প্রচন্ড ভালোবাসে।মেয়েটার কি অবস্থা কে জানে”
মিসেস নাফিয়া আনিশার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,,,
“ক*ষ্ট পেও না।আর আন্টি কি হা মামনি বলো”
আমি মা*থা নাড়িয়ে বললাম,,,”হুম”
আনিশা ভবছে,,,
মামনি অনেক ভালো মনের মানুষ নাহলে কি আমার মতো এ’তি’ম মেয়েকে কেউ মেনে নেয়।আমার বাবা-মা আদেও আছে কিনা আমি তাও জানি না!
৪.
ফারিহা আর ইয়ামিন ক্যাম্পাসে বসে আছে।ফারিহার চোখ মুখ ফো’লা যা ইয়ামিনের দেখতে মোটেও ভালো লাগছে না।তারা তিনজন মিলে সারাটা সময় মজা করে আর এখন কেমন হয়ে গেলো সবকিছু।একদিনের ব্যবধানে কি হয়ে গেলো।ইয়ামিনের ভাবনার মা’ঝেই আলভি এসে ফারিহাকে টেনে বসা থেকে দাঁড় করালো। আলভিকে দেখে ফারিহার চোখে পানি আসলো।নিজেকে সামলে নিলো।তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা আর তার না ভাবতেই বুক কেঁ’পে উঠছে ফারিহার।
আলভি ফারিহার ভাবনার মা’ঝে বলল,,,
“ফারুপাখি আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।রাতের সব কথা ভু*লে যাও আমি আনিশাকে বুঝিয়ে ডি’ভো’র্স দিয়ে তোমাকে বিয়ে করবো আমি তোমাকে প্রচন্ড ভালোবাসি বি’শ্বা’স করো না”
ফারিহার বুকে চি’ন’চি’ন ব্যা’থা করছে।ভেতরে যত ভেঙে যাক না কেনো উপরে উপরে সে চোখ মুখ শক্ত করেই দাঁড়িয়ে আছে।আলভি ফারিহার এমন নিরবতা দেখে কাঁধ ঝাঁ’কি’য়ে নরম কন্ঠে বলে,,,,
“ফারুপাখি কথা বলছো না কেনো?”
ফারিহা এবার চিল্লিয়ে বলল,,,
“বে*হা*য়া র্নি’ল’জ্জ লোক কোথাকার কালকে বিয়ে করে নতুন বউকে রেখে এখন প্রা’ক্তন প্রেমিকার কাছে আসছে।তোমাকে আমি কালকে রাতেই সব বলে দিয়েছি তাও তুমি এখানে কেনো এসেছো”
আলভি মে’জা’জ ঠান্ডা করল।এখন মা*থা গ’র’ম করলে কোনো কিছুই হবে না।সে জানে ফারিহার রা*গ জে*দ সম্পর্কে!তাই ঠান্ডা গলায় বলল,,,
“আমি আবারও বলছি ফারিহা তুমি আরেকবার ভাবো।”
ফারিহা আগের বারের থেকে দি’গু’ণ জো*ড়ে চি’ল্লি’য়ে বলল,,,
“বললাম না তোমায় কালকে তো সব বলেই দিয়েছি তাহলে কেনো এসেছো!আনিশার কাছে যাও ওকে সময় দাও”
আলভি আর নিজেকে ক*ন্ট্রো*ল করতে পারলো না।সেও চিল্লিয়ে বলল,,,
“তুই আনিশা আনিশা করেই যাচ্ছিস।আরে তুই তোর নিজের দিকটাও তো ভাব।আর আমি বুঝে গিয়েছি তোকে বোঝালেও লা’ভ নেই ঠিক আছে আমিও তোর আনিশাকে ঠিকমতো বাঁচতে দিবো না”
ফারিহাও চি*ল্লি*য়ে বলে,,,,
“আনিশার যদি কিছু হয় আমি তোমায় ছা’ড়বো না আলভি এইটা মা*থায় রেখো”
ভার্সিটির সবাই হা করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।কারণ সবাই জানে যে ওরা এমন কাপল যে ওদের ভেতর ঝ*গ*ড়াও হয় না আর আজকে আনিশাকে নিয়ে এদের ঝ’গ’ড়া হচ্ছে।আনিশা মেয়েটা যে প্রচুর শান্ত তা সবাই খুব ভালো করে জানে।সবাই খুব অবাক হলো আনিশা আলভির বিয়ের কথা শুনে!!আলভি হ’ন’হ’ন করে চলে গেলো।
ফারিহার কাছে ইয়ামিন এসে বলল,,,
“হয়েছেটা কি তাই তো বল!সকাল থেকে তোকে জিজ্ঞেস করেই যাচ্ছি।আর তুই এ’ড়ি’য়ে যাচ্ছিস ওদের বিয়েটা কিভাবে হলো।”
ফারিহা বলল,,,,”ওদের জো*ড় করে বিয়ে দিয়েছে লোকজন”
ইয়ামিন অবাক হলো কে আবার ওদের জো*ড় করবে।
“কারা”
ফারিহা বলল,,,
“আমি সিয়র জানি না। আনির কাছ থেকে জানতে হবে।”
ইয়ামিন বলে,,,
“ফারু চল আমরা আনির কাছ থেকে ঘুরে আসি”
“ইয়ামিন এটা ঠিক হবে বল।ওটা আমার হবু শ্বশুড়বাড়ি হতে চলেছিল আমি কিভাবে যাই বল”
“তুই এগুলো ভাবলে থাক আমি যাচ্ছি মেয়েটার সাথে একদিন হয়ে গেলো কথা হয় না আর ওখানে সবাই ওর সাথে কেমন আ’চ’র’ণ করছে তাও তো দেখতে হবে”
ইয়ামিন চলে যাচ্ছিল ফারিহা ওকে থামিয়ে দিয়ে বলে,,,”আমিও যাবো চল”
৫.
আনিশা ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।আলভির ফুফিরা মাত্র এসেছে।এসেই আলভির ফুফি আনিশাকে দেখে বলল,,,
“ভাবি আগে যার সাথে বিয়ে ঠিক করেছিলেন তার থেকে এই মেয়ে দেখতে সুন্দর গায়ের রং মাশাআল্লাহ। কিন্তু আলভি যাকে ভালোবাসতো তার গায়ের রংটা তো বেশি উজ্জল না।যাক এই মেয়েটাকে আমার ভালোই লেগেছে”
আনিশার প্রচন্ড রা*গ লাগছে এদের কথা শুনে।হতেই পারে ফারিহার গায়ের রং টা একটু চা’পা তাই বলে কি সে সুন্দর না।ফারিহাকে আনিশার কাছে খুব মায়াবী লাগে।যে কেউ দেখলেই বলবে মায়াবতী।তার মধ্যে এই মহিলা বেশি বেশি বলছে।আনিশাকে আশেপাশের বাড়ি থেকে মহিলারা এসে দেখে যাচ্ছে।খুব বি*র*ক্ত লাগছে।
আলভির মামা মামি মামাতো বোন আসলো।এসেই আনিশাকে দেখে আলভির মামি বলল,,,
“মেয়েতো মাশাআল্লাহ সুন্দর কিন্তু বং’শ পরিচয় কি মেয়ের”
মিসেস নাফিয়া বললেন,,,
“ও এ’তি’ম কিন্তু তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না।”
আলভির মামি বলল,,,
“কিন্তু আপু বংশ পরিচয় না জানা একটা মেয়েকে আলভির বউ করে রাখবেন”
“তো কি হয়েছে বংশ পরিচয় না থাকলে কি কোনো মেয়েকে কেউ বিয়ে করে না”
ফারিহা আনিশার পাশে বসতে বসতে কথাগুলো বলল।আনিশা অবাক হলো।ও ভাবতেই পারেনি ফারিহা কখনো আসবে।অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো ফারিহার দিকে।
আলভির মামি কিছুটা রু*ক্ষ কন্ঠে বলল,,,
“তুমি তো ভারি অসভ্য মেয়ে কোন মু’খ নিয়ে এখানে এসেছো”
“আমি কোনো অ’প’রা’ধ করেছি যে এখানে আসতে পারবো না এটা আমার বেস্টফ্রেন্ড বা বোন যাই বলেন না কেনো তার শ্বশুড়বাড়ি তো আমি আসতেই পারি”
আলভির মামি আর কথা বললো না।ফারিহা হাসলো।আলভির মাকে বলল,,,
“আন্টি ভালো আছো”
নাফিয়া মা*থা না’ড়ালো।নাফিয়া ভেবে পেলো না এই মেয়েটা কিভাবে এতো স্বাভাবিক রয়েছে।ফারিহা আবার হেসে বলল,,,
“আন্টি তুমি যদি কিছু মনে না করো তাহলে আমি আর ইয়ামিন আনিকে নিয়ে একটু ওদের রুমে গেলাম”
মিসেস নাফিয়া বললেন,,,”হুম যেতে পারো স’ম’স্যা নেই”
ফারিহা আনিশার হাত ধরে টেনে উপরে আলভির রুমে নিয়ে আসে।ইয়ামিন ওদের পিছনে পিছনে চলে আসে।রুমটায় ঢু’কতেই বুক কেঁ’পে উঠে ফারিহার কারণ এই রুমটা তার আর আলভির হওয়ার কথা ছিলো।ফারিহা তাকিয়ে দেখলো তার আর আলভির একটা ছবি বেডের পাশের টেবিলে রাখা।সে ছবিটা নিজের ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেলল।
আনিশা অবাক হয়ে বলল,,,
“তুই এইটা কি করলি ফারু তুই ছবিটা ওখানেই রেখে দে প্লিজ”
ফারিহা আনিশার হাত ধরে বিছানায় বসিয়ে হেসে বলল,,,”ওইসব বাদ দে আলভি তোকে কিছু বলেছে”
আনিশা জো*ড়পূ’র্বক হেসে বলল,,,
“না না উনি কি বলবে।!কিছুই বলেননি”
আনিশা ফারিহাকে জড়িয়ে ধরলো।বলল,,,”তুই এতো শা’ন্ত কিভাবে আছিস ফারু। ফারু তুই চাইলে আমি আলভিকে ডি’ভো’র্স দিয়ে দিবো”
আনিশার গলা কাঁ’পছিলো ডি’ভো’র্সের কথাটা বলার সময়।যতই হোক ভালোবাসে তো সে আলভিকে।
#রোদহীন_বিকালে_তুমি✨
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_৩
আনিশা ফারিহাকে জড়িয়ে ধরলো।বলল,,,”তুই এতো শা’ন্ত কিভাবে আছিস ফারু। ফারু তুই চাইলে আমি আলভিকে ডি’ভো’র্স দিয়ে দিবো”
আনিশার গলা কাঁ’পছিলো ডি’ভো’র্সের কথাটা বলার সময়।যতই হোক ভালোবাসে তো সে আলভিকে।ফারিহা হেসে বলল,,,,
“তুই কি পা*গ*ল আনি হয়তো আমি ভালোবাসি আলভিকে কিন্তু আলভির আগে তুই আমার জীবনে এসেছিস তুই সবার আগে আমার কাছে।আর তার থেকে বড় কথা এখন তোরা বিবাহিত। যদি বিয়ে না হতো তাহলে কিন্তু আমি কখনোই আলভিকে তোকে দিতাম নাহ”
শে’ষের কথাটা বলে জোড়ে হেসে দিলো ফারিহা।আনিশার চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো।সে জানে এই হাসির পেছনে লুকিয়ে আছে একরা’শ ক*ষ্ট। ফারিহা আনিশার চো’খের পানি মুছে দিয়ে বলে,,,
“আনি এমন চুপচাপ সব স*য্য করলে হবে না বুঝেছিস তোকে এবার শ’ক্ত হতে হবে আর আমি তোকে শিখিয়ে দেবো কিভাবে তুই আলভিকে ই’ম’প্রে’স করবি”
আনিশা এবার জো’ড়ে কেঁদে দিলো।কাঁদতে কাঁদতে বলল,,,
“কেনো কেনো এমন করছিস ফারু তোর এই স্বাভাবিক আ’চরণ যে আমি মেনে’ নিতে পারছি না।তুই তুই কেনো করছিস এমন!আমার ক*ষ্ট হচ্ছে ফারু তুই বল না একবার আমি ডি’ভো’র্স দিয়ে দিচ্ছি শুধু একবার বল”
ফারিহা ধ’ম’কে বলল,,,”চুপ একদম চুপ কাঁ’দবি না মোটেও কাঁ’দবি না তোকে বলেছি না শ’ক্ত হবি এখন থেকে।আর আমি এখন কাঁ’দবো কেঁ’দে সা’গর বানিয়ে ফেললেও কি আমি আলভিকে পাবো।আর আমি কখনো একটা সং’সা’র ভা’ঙ্গ’তে চাই না”
আনিশা তা’চ্ছি’ল্য হেসে বলল,,,”আদেও সং’সার হয়েছে ফারু তুই বুঝছিস না কেনো আলভি তোকে অনেক ভালোবাসে আমাকে কখনো মা’নবে না!”
ফারিহা হেসে বলল,,,,”চি’ন্তা করিস না আমার কথামতো কাজ করবি তাহলে আ’স্তে আ’স্তে আলভিও মে’নে নিবে”
“আমি চাই না তোর ভালোবাসা কে*ড়ে নিয়ে সুখে থাকতে আর না আমাকে কোনোদিন আলভি আমায় ভালোবাসবে বা মেনে নিবে”
ফারিহা হাসলো।আনিশার অনেক অ’দ্ভু’ত লাগছে সবকিছু।ফারিহা কিছু সময় গল্প করে ইয়ামিনকে নিয়ে চলে গেলো!
৬.
আনিশার ঘুমের মাঝেই তাকে কেউ ফ্লোরে ছুঁ*ড়ে মারলো।চোখ খুলে দেখলো সে ফ্লোরে পরে আছে।দুপুরে খেয়ে একটু ঘুমিয়েছিলো।সারা রাত না ঘুমানোর ফলে দ্রুত ঘুমিয়ে পরেছিল।আলভিকে দেখে বুঝলো সেই তাকে ফ্লোরে ফেলে দিয়েছে।কোমরে অনেক ব্যা’থা পেয়েছে।আলভি হুট করে এসে আনিশার চুলের মু’ঠি ধরে বলল,,,
“ওখান থেকে আমার আর আমার ফারুর ছবিটা কে সরিয়েছে।নিশ্চয়ই তুই!তোর সা’হ’স কি করে হলো আমাদের ছবি সরানোর”
“আমি তো সরাইনি ফারু সকালে এসেছিল ওই নিয়েছে”
“এই তুই মি*থ্যা কেনো বলছিস আমার ফারু এখানে কেনো আসবে তুই সত্যি করে বল ছবিটা কোথায় না হলে কিন্তু তোকে আমি কি করবো নিজেও জানি না”
আলভি চুলের মু’ঠি আরো শ’ক্ত করে ধরে।ব্যা’থার জন্য আনিশার চোখ দিয়ে পানি পরতে থাকে।আনিশা বলল,,,
“ছাড়ুন ব্যা’থা লাগছে প্র’চুর!আর আপনি আমাকে বি’শ্বা’স না করলে ফারুকে ফোন দিয়েই শুনে নিন”
“না’ট’ক বা’দ দে এই চো’খের পানি দিয়ে ফারুকে গ’লাতে পারলেও আমাকে পারবি না তোর এগুলো সব না’ট’ক তা আমি খুব ভালো করে বুঝতে পারছি”
কথাটা বলেই আলভি ছেড়ে দিলো আনিশাকে।আনিশা হাঁটুতে মুখ গুঁ’জে কাঁ’দতে লাগলো।তার সাথে কেনো এমন হলো।তার ক’পা’লে কি সুখ নেই নাকি।হয়তো নিজের ভালোবাসার মানুষকে পেয়েছে কিন্তু পেয়েও যে সে তার হবে না।আলভি ফারিহাকে ফোন দিলো।ফারিহা রিসিভ করলো না।তাই আনিশার ফোন নিয়ে ওর ফোন দিয়ে ফোন করলো।
ফারিহা রিসিভ করতেই আলভি বলল,,,
“ফারু তুমি আমার ফোন কেনো রিসিভ করোনি!থাক তা বাদ দাও তুমি কি আমাদের বাসায় আসছিলে সকালে”
“তুমি আনির ফোন দিয়ে কেনো আমাকে ফোন দিয়েছো।আর হ্যা সকালে তোমাদের বাসায় ও গিয়েছিলাম”
“তুমি কি আমার রুম থেকে তোমার আর আমার ছবিটা নিয়েছো”
ফারিহা সো’জাসা’প্টা উত্তর দিলো,,”হ্যা আমিই নিয়েছি তো কি হইছে”
আলভি বলল,,,”ছবিটা কেনো নিয়েছো ফারুপাখি”
“আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই নিয়েছি।আর ফারদার আমাকে ফোন দিবে না”
কথাটা বলেই ফারিহা খ’ট করে ফোনটা কে’টে দিলো।আলভি ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো।ওয়ালপেপারে দেখল আনিশা আর ফারিহার একটা ছবি যখানে দুজন দু’জনকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।ফোনটা বিছানার উপর ফেলে দিলো।মা*থার চুলগুলো টেনে বিছানায় বসে পরলো।আলভি বুঝে গিয়েছে ফারিহা আর তার কাছে ফিরবে না কিন্তু এই মেয়েটাকে সে কিভাবে মে’নে নিবে!
ফারিহার উপর এখন প্র’চন্ড রা*গ হচ্ছে আলভির। কেনো ফারিহা তার কথা বোঝার চে’ষ্টা করছে না।সকালে ফারিহার সাথে রা*গ করে সি’গারেট খেয়েছে অনেক।যে কোনো দিন সি’গারেট ছুঁ’য়েও দেখিনি সে আজকে ৫-৬ টা সি’গারেট খেয়েছে।
আলভি শুয়ে পরলো বিছানায় টা’ন টা’ন হয়ে।কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।কিন্তু সে যে এই মেয়েটাকে মা’নবে না তা সে সিয়র।
৭.
“ভাইয়া দরজা খোল মামনি খেতে ডাকছে”
আহা দরজা ধা’ক্কা দিতে দিতে কথাটা বলল।দরজা ধা’ক্কানোর শব্দে আনিশার ঘুম ভাঙে।নিজেকে ফ্লোরে আবিষ্কার করে।আহা আবারও বলল,,,
“ভাবি দরজাটা খোলো মামনি খেতে ডাকছে।”
আনিশা নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল,,,
“আহা তুমি যাও আমরা আসছি”
আহা আনিশার গলা শুনে বুঝতে পারলো আনিশা কেঁ’দেছে।দী’র্ঘ’শ্বা’স ফেলল আহা।সে জানে তার ভাই এমন না কিন্তু পরিস্থিতির চাপে এমন হয়েছে।আহা বলল,,,,
“আচ্ছা ভাবি তুমি ভাইয়াকে নিয়ে তাড়াতাড়ি আসো।”
আনিশা উঠে লাইট জ্বালালো।বিছানায় তাকিয়ে দেখলো এ’লো’মে’লো হয়ে আলভি ঘুমিয়ে আছে।আনিশা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আগে নিজে ঠিক হলো।তারপর আলভির কাছে গিয়ে বলল,,,,
“এই যে শুনছেন উঠুন মামনি খেতে ডাকছে”
আলভি ন’ড়ে’চ’ড়ে উঠে আবারও ঘুমিয়ে পরলো।আনিশা আবারও ডাকলো।তবুও আলভি উঠলো না।এবার একটু জো’ড়েই বলল,,,
“এই যে শুনছেন খেতে ডাকছে উঠুন”
আলভি চোখ খুলল।চোখ খুলে আনিশাকে নিজের দিকে ঝুঁ’কে থাকতে দেখে রে*গে বলল,,,
“বেহায়া মেয়ে ঘুমিয়ে আছি বলে সুযোগ নিচ্ছো।র্নি’ল’জ্জ মেয়ে এমনিতেও নিজের বেস্টফ্রেন্ডের ফিওন্সে কে বিয়ে করেছ”
আনিশা ঠিকমতো দাঁড়িয়ে বলল,,,”মামনি খেতে ডাকছে চলুন”
আলভি বিরক্তি নিয়ে বলল,,,”তুমি যেতে পারো আমি ফ্রেশ হয়ে যাচ্ছি”
আলভি ফ্রেশ হতে চলে গেলো।আনিশা দী’র্ঘশ্বা’স ফেলল।তার যে আর ভালো লাগছে না।দুজন তার জন্য ক*ষ্ট পেয়ে যাচ্ছে।সে যদি চলেও যায় তাহলে যে ফারিহা ফিরে আসবে এমন না।ফারিহার রা*গ জে*দ সম্পর্কে সবাই কম বেশি জানে।একবার যা না বলে তা কখনো হ্যা বানানো যায় না।তাই চলে গিয়ে লা’ভ নেই!
শাড়ির আচল টেনে ঘোমটা দিয়ে নিচে নামলো।টেবিলে আহা মিসেস নাফিয়াসহ আলভির বাবা আশরাফ শাহরিয়ারও বসে আছে।আনিশার ভ*য় লাগছে।এই লোকটা যদি কিছু বলে দেয় তাকে উ’ল্টাপা’ল্টা।লোকটাকে সে আগে দেখেছে।যতবারই দেখা হয়েছে ততবারই আশরাফকে গ’ম্ভী’র দেখেছে।আনিশা *ভয়ে ভ*য়ে টেবিলের সামনে গেলো।মিসেস নাফিয়া আনিশাকে দেখে বলল,,,,
“আনিশা চলে এসেছো বসে পরো খেয়ে নেও আর আলভি কোথায়”
আশরাফ শাহরিয়ার গ’ম্ভী’র মুখে একবার আনিশাকে দেখলেন।তারপর নিজের খাওয়ায় ম’ন দিলেন।আনিশা ভ*য় নিয়ে বসলো।আর বলল,,,,
“আসলে মামনি উনি ঘুমিয়ে ছিলেন এতো সময় ফ্রেশ হয়ে আসছেন।”
আনিশা আশরাফের দিকে তাকিয়ে ভ*য়ে ভ*য়ে বলল,,,
“আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল ভালো আছেন?”
আশরাফ আরো একবার আনিশাকে দেখে নিয়ে গ’ম্ভী’র ক’ন্ঠে বলল,,,
“ওয়ালাইকুম আসসালাম আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি তুমি”
আনিশা আ’স্তে আ’স্তে বলল,,,”জী জী আঙ্কেল আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি”
নাফিয়া আনিশাকে খাবার বেড়ে দিয়ে খেতে বললেন।আনিশা না খেয়ে খাবার না’ড়ছিলো।আশরাফ দেখে ধমক দিয়ে বলল,,,
“না খেয়ে ভাত না’ড়ছো কেনো?”
আনিশা কথা না বলে খেতে লাগলো।আনিশার খাওয়ার মাঝে আলভি আসলো।এসেই নিজের চেয়ারে বসে চুপচাপ খেতে লাগলো।আশরাফ খাওয়া শে’ষ করে আলভি আর আনিশার উদ্দেশ্য বলল,,,
“খাওয়া শেষ করে দু’জনে আমার রুমে আসো।”
আশরাফ সাহেব চলে গেলেন।আনিশা ভ*য় পেলো।আলভি বি*র*ক্ত হলো।সে জানে তার বাবা বলবে দুজনে মে’নে নেওয়ার চে’ষ্টা করো।তার এখন মোটেও এইসব ফালতু কথা শুনতে ইচ্ছে করছে না তাও যেতে হবে।খাওয়া শে’ষ হতেই নাফিয়া বলল,,,
“আলভি আনিশাকে নিয়ে যাও”
আলভি বি’র’ক্তি নিয়ে আগে আগে হেঁটে যেতে লাগলো।আনিশা মা*থায় ঘো মটাটা ভালোভাবে দিয়ে আলভির পেছনে যেতে লাগলো।আলভি রুমের ভিতরে গিয়ে বলল,,
“কি বলবে বাবা তাড়াতাড়ি বলো”
আশরাফ সাহেব বললেন,,,,”কেনো তোমার কি তা’ড়া আছে”
“না তেমন কিছু না কিন্তু দ্রুত বললে ভালো হতো”
আশরাফ আনিশাকে ই’শা’রায় নিজের পাশে বসতে বলল।আনিশার ভ*য় লাগছে এখনো তাই সে বসলো পাশের সোফায়।আশরাফ বলল,,,
“তোমার হাতটা দাও”
আনিশা হাতটা এগিয়ে দিতেই আশরাফ সাহেব আনিশার হাতে একটা জুয়েলারি বক্স দিয়ে বলল,,,
“এটা আমাদের বাড়ির নিয়ম। নতুন বউয়ের মু’খ দেখে তাকে কিছু দিতে হয়।”
আনিশা অবাক হয়েছে। সে কখনো ভাবেনি আশরাফ সাহেব এইগুলো দিবে।সে বলল,,,
“আঙ্কেল আমার এগুলো দরকার নেই”
আশরাফ ধমক দিয়ে বলল,,,”চুপ করো মেয়ে আমি শুনেছি কি তোমার দরকার আছে কিনা আমার ইচ্ছে হয়েছে দিয়েছি তারপর তুমি কি করবে জানি না।আর আঙ্কেল কি শ্বশুরকে কি কেউ আঙ্কেল বলে বাবা বলো”
আনিশা অবাক হলো।সে ভাবেনি আশরাফ সাহেব এমন কিছু বলবে।সে বলল,,,”ঠিক আছে বাবা”
আলভির এই সবকিছু নে’কা’মো ছাড়া কিছু ম’নে হচ্ছে না।সে বি’র’ক্ত হয়ে বলল,,,
“তুমি কেনো ডেকেছো আমায় তাড়াতাড়ি বলো”
“ওহ হ্যা তোমাদের যার জন্য ডাকা।আমি নাফিয়ার কাছ থেকে সবকিছুই শুনেছি।বিয়েটা যেভাবেই হোক মে’নে নেও।আর আলভি তুমি তো জানোই আমাদের বংশে ডি’ভো’র্স দেওয়া হয় না। কেউ দেয়ওনি আর ভ’বিষ্যৎতে দিবে না।তাই বলছি যা হয়েছে মেনে নেও আর ফারিহার জন্য আমারও খারাপ লাগছে তাই বলে কি একটা বিয়ে ভা’ঙ’বে তোমরা।মা*থায় রেখো আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।”
আলভি রে*গে হনহন করে বেরিয়ে গেলো।আলভি বের হতেই আশরাফ সাহেব আনিশাকে নিজের কাছে ডেকে বললেন,,,,
“সময় দেও ওকে একটু তারপর নিজেই ঠিক হয়ে যাবে।আর ওর খেয়াল রেখো মা।”
আনিশা মা*থা না’ড়িয়ে চলে আসলো।রুমে এসে দেখে আলভি নেই।গাড়ির শব্দ শুনে বেলকনিতে এসে দেখে আলভি গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।আনিশা দী’র্ঘ’শ্বা’স ফেলল।তার কোনো অ’ধি’কার নেই লোকটাকে আ’টকানোর।
৮.
অস্টেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা শহরের একটা বিশাল এপার্টমেন্টে দাঁড়িয়ে আছে একটা লোক।লোকটা একটা মেয়ের ছবি নিয়ে বিড়বিড় করে বলল,,,,
“আমি আসছি জান খুব তাড়াতাড়ি। আ’ম কা’মিং সু’ন মা’ই জান”
চলবে,,,,,,,?
চলবে,,,,,?