লেডি ডন পর্ব ৩

#লেডি_ডন
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_৩

–আল্লাহ তুমি আমার হাত থেকে ওদেরকে রক্ষা করো!
তখনি কোথা থেকে জানি কয়েক শতাধিক ছেলে পেলে সেখানে চলে আসে গাড়ি করে!সবার মুখে কাপড় বাঁধা।কারোর চেহারা দেখা যাচ্ছে না।এসেই মায়ার লোকদের ইচ্ছে মতন মারতে শুরু করলো।মারতে মারতে রক্তের নহর বানিয়ে বানিয়ে ফেলেছে সেখানে।
আর আমি তাদের কান্ড দেখে”থ হয়ে তাকিয়ে আছি তাদের দিকে”!

মায়ার লোকজন মা’র খেয়ে সবাই মাটির সাথে গড়াগড়ি করছে।কে এরা,আর কেনোই বা এমন করে মারছে মায়ার লোকেদের।আবার আমায় চারপাশ থেকে প্রটেক্ট করে রেখেছে!হাজারটা প্রশ্ন মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে!তখনি দেখি গতকালের সেই পিন্টু গাড়ি থেকে নামছে।যারা প্রান্তকে মারতে এসেছিলো।
ওহ এতক্ষণে বুঝতে পারলাম এরা কার ছেলেপেলে।
তবে ও হটাৎ এখানে কেনো!তখনি পিন্টু এসে আমায় চমকে দিলো..

–ভাই আপনি আমায় মাফ করে দেন।গতকালের জন্য আমি আপনার পা ধরে ক্ষমা চাইছি।ভাই প্লিজ আপনি আমায় মাফ করে দেন।আর কোনোদিন ওমন ধারা ভুল হবে না।

–আরেহ ভাই তুমি কে?আর কেনোই বা আমার কাছে মাফ চাইছো?

–ভাই আমি আপনার সামনে ছোট খাটো একটা মশা-মাছি।আর কাল আমার ছেলেপেলেরা যা করেছে,সেটার জন্য আমি লজ্জিত ভাই!

–আরেহ ভাই,আমি একজন সাধারণ মানুষ।আমার কাছে এভাবে মাফ চাওয়ার কি আছে?
তোমার কত লোকজন,আর কত পাওয়ার,তাও আমার মতন মানুষের কাছে এভাবে মাফ চাচ্ছো কেনো?

–ভাই আমি জানি,আপনি সাধারণ কি অসাধারণ!
সবাই আপনাকে চিনতে ভুল করলেও আমি আপনাকে চিনে ফেলছি।আপনি যদি চান,তাহলে আমার মতন কয়েক হাজার সাঙ্গুপাঙ্গু তৈরী করতে পারবেন।আপনাকে চিনতে আমি ভুল করিনি ভাই।কোনো এক রাতে আমি পালিয়ে এসেছিলাম প্রাণ হাতে নিয়ে।সেই রাতে কিছু সংখ্যক ছেলে নিয়ে কয়েক শতাধিক ছেলেপেলেকে চিরতরে নিদ্রায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।আপনি সেই ভয়ংকর মনস্টার!সেদিন রক্তের স্রোতে আপনার চেহারা ভালো করে দেখতে পারিনি।তবে আপনার আগুনের মতন জ্বলজ্বল করা চোখ গুলো আমি দেখেছিলাম!

–চুপচাপ সব কিছু ভুলে যা।আর আমি কে সেটা যখন জেনেই গেছিস,তাহলে মুখে তালা লাগিয়ে ফেল।
আর তোরা মায়ার লোক কে মারলি কেনো?
মায়ার বাবা কে,সেটা কি তোরা জানিস না?
ওর বাবার কানে যদি এসব খবর যায়,তাহলে তুই পিন্টুকে তো জীবিত কবর দিয়ে দিবে!

–ভাই আপনি কে,সেটা আমার মুখ থেকে কেউ জানতে পারবে না।আর মায়ার বাবা যত বড় নেতা হোক না কেনো,আপনি তার বাপেরো বাপ।আপনার গায়ে হাত দিবে এমন বুকেরপাটা কারোর নাই এই শহরে।এই শহরে কেনো,পুরো দেশে একটা মানুষ পাওয়া যাবে না।
আর হা আমি জানি,মায়ার বাবা অনেক পাওয়ারফুল মানুষ,তবে আপনি থাকতে মায়ার বাবা আমাদের একটা লোম ও বাকা করতে পারবে না।আর তাছাড়া আমরা তো মুখ ঢেকে এসেছি।কেউ আমাদের চিনতেও পারবে না।

–হয়েছে এবার থাক তোরা,আমি কলেজে যাবো।

তারপর তাদের বিদায় করে কলেজে চলে এলাম।
কলেজে আসার পর মায়া আমায় দেখে তো চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে!

–কিরে তুই এখনো স্বাভাবিক কি করে?
তোকে ওরা মারেনি?

–হা,হা,আমায় মারবে কি,বিপরীত পক্ষ এসে তোমার লোকদের মেরে গেছে।

–এই কি বললি তুই?আমায় তুমি করে বলার সাহস কে দিয়েছে তোকে?

–কেউ দেয় নাই।

–তাহলে বললি কেনো?

–ইচ্ছে হয়েছে তাই বলেছি।

–দ্বারা তোর ইচ্ছে বের করছি,এটা বলে ঠাসস করে আকাশের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দেয়!

–থাপ্পড় খেয়ে লজ্জায় পড়ে গেলাম!তবে ভাগ্যিস,তেমন কেউ দেখেনি।ইচ্ছে করছে মায়াকে থাপ্পড় মেরে এখানেই ফেলে রাখি।শুধু মেয়ে বলে বেঁচে গেলো।

–কিরে এখন কেমন লাগছে?আর কোনোদিন আমায় আপনি ছাড়া তুমি বলার চেষ্টা করবি তো সোজা জুতা মেরে দিব গালে!কোথা থেকে যে আসে ছোটলোকের দল।

–এই যে গায়ে হাত দিছেন কিছু বলি নাই।বংশ নিয়ে ভুলেও কথা বলবেন না।তাহলে কিন্তু ইজ্জৎ রাখবো না।

–কি করবি তুই আমার হ্যাঁ?

–ইজ্জৎ এর বারোটা বাজিয়ে দিব।

–দেখি তোর কত বড় সাহস,তুই আমার ইজ্জৎ এর বারোটা বাজা!

–কোনো কিছু ভাবা ছাড়াই মায়াকে জোর করে নিজের কাছে নিয়ে আসলাম।পরে মায়ার ঠোঁট জোড়ায় চুমু বসিয়ে দিলাম।একদম পাক্কা পাঁচ মিনিট চুমু খেয়েছি।
সে অনেক জোড়াজুড়ি করেছে ছাড় পাওয়ার জন্য।কিন্তু ছাড়ে টা কে ওকে।পাঁচ মিনিট পর মায়াকে ছেড়ে দিলাম।খুব হাঁপাচ্ছে সে!চোখে মুখে পানি চলে এসেছে তার!

–কুত্তার বাচ্চা,তোর কত বড় কলিজা,যে তুই আমায় কিস করিস?তোর তো আজ আমি বারোটা বাজিয়ে দিব।তোর মরার সময় হয়ে এসেছে।তুই খালি একটু অপেক্ষা কর।আমি পাপাকে ফোন দিচ্ছি।

–ওকে দাও দাও,যাকে ফোন দেওয়ার দাও।
আমি ভয় পাই না।সে মোবাইল ফোন নিয়ে ওর পাপাকে ফোন দিতে যাবে,তখনি ওর ফোনে একট ফোন আসে..

–ম্যাম হুট করে কোথা থেকে জানি কয়েক শতাধিক ছেলেপেলে চলে আসে।পরে তারা আমাদের বেরেহেম ভাবে মারতে শুরু করে।তার জন্য আমরা মালটার কিছু করতে পারিনি।

–কিহহহ,এসব কি হচ্ছে টা কি?তোরা এত ছেলেপেলে থেকে কি করেছিস তাহলে?

–ম্যাম সরি,আমরা বুঝতেই পারছি না কি ঘটেছে আমাদের সাথে।

–রাখ তুই ফোন।

–মায়া ফোন রেখে দিয়ে আমার দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে!

–কি আরো চুমু খেতে ইচ্ছে করছে?
তাহলে কাছে আসো,আবার জড়িয়ে ধরে চুমু দেই।

–তোকে আমি শায়েস্তা করেই ছাড়বো।একে তো তোর এই আচরণের জন্য।দুই তোর কারনে আমার ছেলেপেলেরা মা’র খেয়েছে সেই জন্য।কতদিন কাকতালীয় ভাবে বেঁচে যাবি?মনে রাখিস আমি একটা বাঘের মেয়ে!যে এক ডাক দিলে পুরো শহর কাপে!
আর তার মেয়ের সাথেই পাঙ্গা!পাখনা কেটে দিব তোর,ওয়েট কর খালি!এই শহরে সবাই এক নামে চিনে আময় লেডি ডন।তুই সেই লেডি ডনের সাথে বেয়াদবি করেছিস,এটার ফল তুই পেয়ে যাবি।

তারপর হনহনিয়ে আকাশের সামনে থেকে চলে গেলো।

–মায়ার কথা শুনে খুব জোর হাসি পাচ্ছিলো!কিন্তু সাইলেন্ট ছিলাম।কারন না হয় আরো রেগে যাবে মহারানী!সালার পাওয়া রেহ,কি আর বলবো,সে একটা বাঘের মেয়ে।তার বাবা বাঘ,আর আমি এলাকার পোষা কুত্তা!সবই কপাল!
দুনিয়ার মানুষ এমন এই!শক্তের ভক্ত নরমের জম।
সালার এখন যদি নিজের রূপটা ধারন করি না,তাহলে তোর বাবা এসে আমার জুতা পরিষ্কার করার জন্য সিরিয়াল ধরবে।আর তার মেয়ে হয়ে এসে পার্ট নেয় আমার সামনে!যাক বাপ আর কিছুই বলবো না।
দুনিয়া তোদের,রাজত্ব তোরাই কর।

ক্লাস করতে চলে গেলাম।
মায়া ক্লাস না করে কলেজ থেকে চলে গেছে।
তবে মেয়েটার ঠোঁটটা না সেই মহিষ ছিলো।পাঁচ মিনিট চুমু খেয়েও যেনো কম মনে হচ্ছে আমার কাছে।সেসব নিয়ে ভাবছিলাম,তখনি স্যার ক্লাসে আসে।ক্লাস করায় মন দিলাম।

স্যার ক্লাস করাচ্ছে।আমি স্যারের লেকচার গুলো মন দিয়ে শুনছিলাম।তখনি কয়েকজন পুলিশ ক্লাস রুমে ঢুলে পড়ে!সাথে কয়েকটা দানব ও আছে ছয় ফুট ওয়ালা!পুলিশ এসে আমার কলার চেপে ধরে টানতে টানতে ক্লাস রুম থেকে বাহিরে নিয়ে গেলো!
স্যার আমি কি করেছি,আপনারা আমায় এভাবে ধরে নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?

–জমের বাড়ি,আলিফ সাহেবের মেয়েকে কিস করিস হ্যাঁ?এবার মজা বুঝবি তুই!

–ওহ এই ব্যাপার!তার মানে মায়া পুলিশে পাঠিয়েছে আমায় ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য!মেয়েটার যে এত রাগ,তা বুঝতেই পারিনি।আমি জানতাম সে আমার উপরে প্রচন্ড ক্ষেপা!কিন্তু এত তাড়াতাড়ি আমার বারোটা বাজাবে,সেটা আমি বুঝতে পারিনি।
পুলিশ গুলো আমায় টেনে হেঁচড়ে কলেজ মাঠে নিয়ে গেলো।সেখানে গিয়ে দেখি মায়া আর তার সাথে একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে!মায়া আমায় দেখতে পেয়ে..

–বাবা এই ছোটলোকটা আমার সাথে বেয়াদবি করছে,ওরে আজকে আমি ছাড়বো না।

মায়া এসে আকাশের গালের মধ্যে কয়েকটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়।তখনি পিছন থেকে মায়ার সাথে থাকা লোকটা মায়াকে আটকায়!

–মায়া তুই ঘরে যা,আমি ওকে দেখছি।আমার মেয়ের সাথে বেয়াদবি করার ফল ওকে আমি বুঝিয়ে দিব।

–লোকটার কথা শুনে বুঝতে বাকি রইলো না,যে তিনি মায়ার বাবা!

মায়া চলে গেলো।
আর মায়ার বাবা এসে আকাশের কলার চেপে ধরে..

–এই শুয়োরের বাচ্চা,তোর কত বড় সাহস,যে তুই আমার মেয়ের সাথে অসভ্যতা করিস?
তুই কি জানিস না মায়া কার মেয়ে?

–স্যার আমি কিছুই করিনি।মায়া নিজেই আমার সাহসের পরিচয় দিতে বলেছে।তাই আমি তাকে কিস করেছি।

–জানোয়ারের বাচ্চা,তুই আবার আমার মুখে মুখে তর্ক করছিস,তোকে তো আজ আমি…

তখনি পুলিশ আলিফ সাহেবকে আটকে ফেলে..

–স্যার আপনি প্লিজ শান্ত হোন!আমরা বেটাকে থানায় নিয়ে মজা দেখাচ্ছি।

–নাহ অফিসার,আপনারা চলে যান।আমার লোকেরা ওকে এখানে মজা বুঝাবে।পুরো কলেজে দেখুক সে কার মেয়ের সাথে অসভ্যতা করেছে।না হয় আজ বাদে কাল অন্য কেউ সেই ভুল করবে।

–ওকেহ স্যার আমরা তাহলে তাকে ছেড়ে দিলাম।আপনার যা ইচ্ছে হয় আপনি তার সাথে করুন।

–এই গাড়ি থেকে হকি বের করে উদুম কেলানি কেলা বেটাকে এখানে।

–আলিফ সাহেবের কথা অনুযায়ী তার রক্ষিতারা আমাকে মারতে শুরু করে।মারতে মারতে মাটিতে ফেলে দেয়।আমি টু শব্দ ও করিনি।তখনি হুট করে কোথা থেকে জানি পিন্টু চলে আসে।

–স্যার আপনি প্লিজ আপনার লোকেদর মানা করুন,যাতে ছেলেটাকে না মারে।

–এই পিন্টু,হটাৎ তুই এই ছেলের হয়ে উকালতি করতে কোথা থেকে চলে এসেছিস?তুই কি জানিস সে আমার মেয়ের সাথে কি করেছে?

–স্যার প্লিজ আপনি বুঝার চেষ্টা করেন।যাকে আপনারা মারছেন,সে কে আপনারা তা কেউ জানেন না।

–এই পিন্টু,বেশি বকবক করিস না।তাহলে কিন্তু তোর ও বারোটা বাজিয়ে দিব।

–স্যার আপনার দরকার হলে আমায় মারেন,তাও প্লিজ ছেলেটাকে ছেড়ে দিন।না হয় তো কাল সকালে কেউ আর দুনিয়ার আলো দেখতে পাবেন না।যাকে আপনারা মারছেন,সে একটা ঘুমন্ত হায়েনা।একবার চোটে গেলে সব কয়টার রক্ত পান করা ছাড়া থামবে না!

–পিন্টু,তুই পাগল হয়ে গেছিস,হসপিটালে গিয়ে ডক্টর দেখা!

–স্যার আপনার পায়ে পড়ি ছেলেটাকে ছেড়ে দেন।
পিন্টু আলিফ সাহেবের পায়ে পড়ে যায়।
তখনি আকাশ পিন্টুকে ইশারা করে বলে চুপ থাকতে।

–ওকেহ স্যার আমি চললাম,আপনাদের যা ইচ্ছে হয় করুন।আমার আর কিছু বলার নেই।জানের মায়া যার নেই,তাকে হাজার বলেও বুঝানো যাবে না।

পিন্টু সেখান থেকে চলে যায়।
আলিফ সাহেবের লোক আকাশকে মারতে মারতে আধমরা করে ফেলেছে।আকাশ মাটিতে পড়ে আছে!
তখনি কলেজের গেইট দিয়ে এগারোটা হায়েনা প্রবেশ করে হাতে বিশাল বড় বড় অস্ত্র নিয়ে।আলিফ সাহেব হায়েনা গুলোকে দেখে থরথর করে কাপতে শুরু করে!

–হায়েনা একটা চেঁচিয়ে বলে উঠে,আজ রক্তের বন্যা বওয়াবো এই কলেজ মাঠে।

হায়েনার গলার শব্দ শুনে আকাশ মাটিতে শুয়েই সজোড়ে হাসতে আরম্ভ করে!

–মেনে বোলা থা,মেরা দেমাগ হাটি তো দূর্ঘট না ঘাটি!
এখন কার বাপের সাধ্য আছে দেখি,পারলে তোরা আমায় রক্ত খাওয়া থেকে আটকা!
চলবে..?

ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here