#ল্যাম্পপোস্ট ( ২ )
চিন্তিত মুখে দাঁড়িয়ে আছে থিওডোর। আর অপেক্ষা করা সম্ভব নয়। উপায় না পেয়ে কল করল। ফোন রিসিভ হতেই ফরাসি ভাষায় বলল “এতটা জ্ঞাপহীন কেন তুমি? তোমাকে বলেছিলাম আমার সাথে সন্ধ্যা সাত টার মধ্যে দেখা করতে। এখন নয় টা বাজে। তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো না? অ্যাড! ”
“আম স্যরি ব্রো। আমি আসলে একটা কাজে আটকে গেছি। তোমাকে তো বললাম ই সিরিয়াস কেইস এটা। তুমি বাসায় ব্যাক করতে পারো। আমি না হয় কিছু দিন পরে যাবো।”
“অ্যাড! তোমার সাহস দেখে অবাক হচ্ছি আমি। তুমি প্রচন্ড রকমের বেয়াদব হয়ে গেছ। ড্যাড অত্যন্ত রেগে আছেন। মম তো কথাই বলছে না। আমি আর মানাতে পারছি না ওদের কে। কালকের মধ্যে ই কানাডার যে কোনো ফ্লাইটে উঠব আমরা। এন্ড এটা ফাইনাল।”
“ব্রো আমার কথা শোনো। আমি একটা…।”
কথা শেষ করতে পারে না অ্যাড। ওপাশ থেকে টুট টুট শব্দ তুলে কল কেঁটে যায়। ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে শ্বাস ফেলে সে। থিওডোর নিজে ও রেগে আছে। কালকেই কানাডা ব্যাক করতে হবে।
কাঁচের দেয়ালের বাইরে তাকিয়ে ছিল অ্যাড। হালকা শীত পড়েছে। কানাডায় নিশ্চয়ই খুব ঠান্ডা এখন। তুষার পাত শুরু হলে ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাবে। অ্যাড সিদ্ধান্ত নেয় কালকেই ব্যাক করবে। ঠিক তখনি নার্স এসে বলল,
“মিস্টার অ্যাড আপনার প্রেসেন্টের জ্ঞান ফিরেছে।”
“অল রাইট।”
নার্স চলে যায়। অ্যাডের খেয়াল হয় ভিনদেশীর কথা। কাল ফিরে গেলে ভিনদেশীর কি হবে? ভিনদেশীর রিপোর্ট এখনো হাতে আসে নি। এখন অবধি ঠিক ঠাক বোঝা যাচ্ছে না ভিনদেশী আদৌ প্রস্টিটিউট কি না।
মাথায় হাত চেপে বসে আছে ভিনদেশী সেই মেয়েটি। ডোর খোলার শব্দ পেয়ে তাকায় সে।
মৃদু হাসার চেষ্টা করে অ্যাড। তবে সে হাসি কর্পূরের মতো উড়ে যায় হঠাৎ। কারণ ভিনদেশী মেয়েটি ভয়ে গুটি শুটি মেরে নিয়েছে।
খ্যাক খ্যাক করে কাশে অ্যাড। গলা টা কেমন যেন লাগছে। শুকনো ফ্যাচ ফ্যাচে কণ্ঠে বলে
“হ্যালো। হোয়াটস ইউর নেম?”
ভিনদেশী উত্তর দেয় না। চোখ দুটো কেমন ছলছল করছে। অ্যাড সামান্য কাছে আসতেই হুরমুরিয়ে উঠে যায় মেয়েটি। প্রচন্ড অবাক হয় অ্যাড। মেয়েটি সিক্ত নয়নে তাকিয়ে বলে,
“আমার কাছে আসবে না। আমি কিন্ত নিজেকে শেষ করে দিব একদম কাছে আসবে না।”
ভিনদেশীর কথায় ভ্রু কুটি করে তাকায় অ্যাড। সামান্য ভেবে বলে,”হোয়াট কাইন্ড অফ ল্যাঙ্গুয়েজ ইজ দিজ! আই ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড হোয়াট ইউ আর সেইং?”
ভিনদেশীর বলা বাংলা ভাষা বুঝতে পারে নি অ্যাড। মেয়েটি বুঝতে পারে যে তার কথা বুঝতে পারছে না ছেলেটা। তাই কাঁপা স্বরে ইংরেজি তে বলল,
“তুমি কোনো বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছ তাই না?”
“হোয়াট! আমি কেন বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে আসব। যাই হোক তোমার নাম কি বলো?”
“বিভা,তানমীর বিভা।”
“কি বললে তুমি?”
“তানমীর বিভা।”
“ওহ টারমীর বিইভা।”
“নো ইটস তানমীর বিভা।”
“টার্নমীর বেইভা।”
“তানমীর বিভা।”
পর পর কয়েক বার নিজের নাম বলে ও অ্যাড কে বোঝাতে পারে না বিভা। ছেলেটা বার বার তার নাম কে টার্নমীর বিইভা না হয় টারমীর বিইভা উচ্চারণ করছে। নিজের নাম বোঝাতে অক্ষম হয়ে সে মাথা ঝাঁকায়। ছেলেটা সামান্য হেসে বলে,
“ওকে বিইভা। তুমি কোন দেশ থেকে এসেছ? আই মিন তোমার মাদারল্যান্ড।”
“বাংলাদেশ।”
“বেংলাদেশ?”
“নো ইটস বাংলাদেশ।”
“এনি ওয়ে বেংলাদেশ টা কোথায়?”
অ্যাডের কথা শুনে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকায় বিভা। বাংলাদেশ কে বেংলাদেশ উচ্চারণ করছে আবার বাংলাদেশ কোথায় তা জিজ্ঞাসা করছে। নিজের দেশের নামের বিকৃতি ভালো লাগে না শুনতে। এক মুহূর্ত থম মেরে যায় সে। তারপর হতচকিয়ে বলে
“এটা কোন দেশ?”
“দ্যাটস হোয়াট ইট সেস? প্লিজ যাই বলো ইংরেজি ল্যাঙ্গুয়েজ এ বলো। আমি তোমার কথা বুঝতে পারছি না।”
নিজ আচরণে লজ্জিত হয় বিভা। চোখের সামনে বিদেশী দাঁড়িয়ে আছে। সে নিশ্চয়ই বাংলা ভাষা বুঝতে পারবে না। পর পর শ্বাস ফেলে ইংরেজি তে বলল
“আমি এখন কোন দেশে আছি?”
“আয়ারল্যান্ড। তুমি জানো না তুমি কোন দেশে এসেছ? ইটস ভেরি পেইনফুল গার্ল!”
দু দিকে মাথা কাত করে ‘না’বলে বিভা। ছেলেটা চমকায়িত হয়ে বলে,
“এটা কি করে সম্ভব। তুমি কোথায় আছ তুমি সত্যিই জানো না?”
বিভা কিছু বলবে তার আগেই নার্স কেবিনে প্রবেশ করে। অ্যাড নার্স এর সাথে কথা বলে চলে যায়। বিভা প্রচন্ড অবাক হয়ে অ্যাডের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকে। ভাবনা মিলাতে পারে না কোনো ভাবেই।
“রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী মেয়েটা সম্পূর্ণ ভার্জিন। এর অর্থ একটাই হয় মেয়েটা পতিতা নয় আর না ওনার সাথে কোনো খারাপ কিছু ঘটেছে। আপনি আমার কথা বুঝতে পেরেছেন হাডসন অ্যাড?”
“আর ইউ সিউর? এক্সচুয়ালি আমি মেয়েটিকে ব্রোথেল থেকে আই মিন ঘটনা স্পর্ট থেকে পেয়েছি। যদি ও মেয়েটি একটি বদ্ধ রুমে জ্ঞান শূন্য হয়ে ছিল।”
“ইয়েস মিস্টার হাডসন। এদিকে আসুন, দেখুন মেয়েটির হাতে পায়ে কাঁটা দাগ। যার ফলে এটা পরিষ্কার মেয়েটির সাথে ধস্তাধস্তি হয়েছে। রিপোর্ট বলছে সী ইজ ওকে। বাট কি করে কি হয়েছে সেটা তো শুধু মাত্র পেশেন্ট ই বলতে পারবেন।”
ফাইল টা অফ করে দেয় অ্যাড। ডাক্তারের সাথে হাত মিলিয়ে বলে,”থ্যাংকস মিস্টার প্যাটেল। আমি কি পেশেন্ট কে নিয়ে যেতে পারি?”
“অবশ্যই। বাট ওনার প্রতি এক্সট্রা কেয়ার রাখতে হবে। ভয় আর মানসিক চাপ মিলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।”
“ইয়াহ,আমি নজর রাখব।”
ডাক্তারের কেবিন থেকে বেরিয়ে আসে অ্যাড। বিভাকে কানাডা নেওয়া যাবে না। সেটার জন্য কয়েক দিন সময় লাগবে। তাছাড়া কালকেই ওকে কানাডায় যেতে হবে। মেয়েটি যখন পতিতার কোনো অংশ নয় সে অনুযায়ী কেয়ার করা একটা দায়িত্ব। আপন মনে হাঁটতে হাঁটতে গ্রাউন্ড ফ্লোরের করিডোরে চলে আসে। পেছন থেকে বিকট এক শব্দ ভেসে আসতেই হতচকিয়ে যায় ছেলেটা। কিছু বোঝার পূর্বেই বিভা এসে অ্যাড কে খামচে ধরে। বিভার র ক্ত লাল চক্ষু দুটো গভীর দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে। নিজের বাহুর দিকে এক পলক তাকিয়ে অ্যাড বলে,”বিইভা হোয়াট হ্যাপেন? উম্মাদের মতো দৌড়াচ্ছিলে কেন?”
“হেল্প। প্লিজ আমাকে হেল্প করো। ওরা আমাকে নিয়ে যাবে। আমি যাব না ওদের সাথে। প্লিজ হেল্প করো আমায়।”
অ্যাডের চোখে মুখে বিস্ময়। বিভার বাহু ঝাঁকিয়ে অ্যাড বলল,”রিলাক্স। কেউ তোমাকে নিয়ে যাবে না। তুমি নিজে কে শান্ত করো।”
কাঁপতে থাকে মেয়েটা। অ্যাডের দিকে সিক্ত নয়নে তাকায়। অ্যাডের দৃষ্টির সাথে চোখাচোখি হয়। চোখ বুজে আসে হঠাৎ। হাজারো চেষ্টা করে ও পারে না চোখ মেলে তাকাতে। যেন হারিয়ে যাচ্ছে কোথাও। অচেনা পথে সব এলোমেলো। মুখ দিয়ে ‘ওরা আমাকে নিয়ে যাবে’ কথাটি উচ্চারণ করতে করতেই লুটিয়ে পড়ে। হঠাৎ জ্ঞান হারানোয় অবাক হয় অ্যাড। তবে সামলে নেয়। একটুর জন্য পড়ে যাচ্ছিল মেয়েটা। হন্তদন্ত হয়ে আসে নার্স। বিভা কে এক হাতে জড়িয়ে অ্যাড বলে,”আপনাকে রেখে এসেছিলাম ওর কাছে। ও বের হলো কি করে?”
“আম স্যরি স্যার। ম্যাম আমার কোনো কথাই শুনেন নি। ওনি তো ঘুমিয়েই ছিলেন। তবে হঠাৎ করেই জেগে উঠলেন। আর পাগলামি শুরু করলেন। আমি বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করায় আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।”
নার্সের হাতের কুনুই তে র ক্ত লেগে আছে। যা দেখতে পেয়ে রাগ দমে গেল ওর। সাথে বেশ খারাপ লাগল। নার্সের দিকে এক পলক তাকিয়ে বিভার দিকে তাকায়। হঠাৎ করে মেয়েটা এমন আচরণ কেন করল? কারাই বা নিয়ে যাবে ওকে? এত গড়মিলে আচানাক বিরক্ত হয়ে পড়ল সে। জীবনে এত কেস সমাধান করেছে তবে আজ একটু বেশিই জটিল লাগছে। সবটা কেমন যেন বি ষা ক্ত!
নার্সের সহায়তা বিভা কে কেবিনের বেডে শুয়ে দিয়েছে অ্যাড। হসপিটালের এলোমেলো পোশাকে মেয়েটা কে কেমন কেমন লাগছে। রুগ্ন শরীর টা নেতিয়ে গেছে বেশ। যা দেখতে ভালো লাগে না। একটু ভাবল অ্যাড। তারপর ই নার্স কে উদ্দেশ্যে করে বলল,”দ্রুত ওনার পোশাক বদলে দিন। আমি আধ ঘন্টার মধ্যে ওনাকে নিয়ে বের হবো।”
খাবারের প্লেট নিয়ে আসে অ্যাড। বিভা নাক ফুলিয়ে আছে। সে দৃশ্য দেখে ধমক দেয় সে। আচমকা এমন করাতে কেঁপে উঠে মেয়েটা। প্রায় ভরকে গিয়ে পিছিয়ে এল দু হাত। অ্যাড রাগি দৃষ্টি দিয়ে বলে,”একটা কথা ও নয়। এবার খাবার ফেললে খারাপ কিছু হয়ে যাবে। তুমি উইক, যত্নের প্রয়োজন। রাগিও না আমায়। না হলে…।”
চট করেই বোম ফাটায় বিভা। “অচেনা কারো থেকে কিছু খাই না আমি।”
“আমি তোমার চেনা।”
“সে তো কয়েক ঘন্টার।”
‘বিইভা প্লিজ বোঝার চেষ্টা করো আমি তোমার উপর রাগ দেখাতে চাচ্ছি না। তবে তুমি আমায় রেগে যাওয়ার জন্য ফোর্স করছ।”
“আমি ফোর্স করছি না। আর তুমি সেই বাজে লোকদের কেউ নও সেসবের ই বা প্রমান কি? আছে প্রমাণ?”
ফোঁস করে দম ফেলে অ্যাড। বিভার দিকে খাবারের প্লেট এগিয়ে দেয়। প্রচন্ড ক্ষিধে থাকলে ও খাবারের প্লেটটা অবিলম্বে নাকোচ করে বিভা। অ্যাডের ইচ্ছে হয় মেয়েটার মাথা ফাঁ টি য়ে দিতে। নেহাত ই অসুস্থ, না হলে কষিয়ে থা প্প ড় লাগিয়ে দিত। পকেট থেকে কার্ড বের করে বিভার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বেশ আত্মগরিমা ফুটিয়ে তুলে মুখচ্ছটায়।
“দেখে নাও। আমি আর নিতে পারছি না।”
“ল্যাম্পপোস্ট!”
“ইয়েস। ইউরোপের প্রতি টা দেশে আলো ছড়িয়ে দেওয়া আমার কাজ। রাত,দিন,সময়, লাইফ এসবের কোনো টাই আর ম্যাটার করে না। আমি শুধুই একজন কর্মী।”
“মানে?”
“এটা একটা শান্তি প্রিয় সংস্থা। ইন্টারন্যাশনাল সংস্থা যা ইউরোপের মধ্য সীমাবদ্ধ। প্রয়োজন হলে অন্য মহাদেশে ও যাওয়া যাবে। মূলত অন্যায় কে প্রতিরোধ করে আলো ছড়ানোই এই সংস্থার প্রধান লক্ষ্য। আর আমি এটার চিপ মডারেটর।”
ভ্রু কুটি করে তাকায় বিভা। অ্যাড কে মাথা থেকে পা অবধি দেখে নেয়। অস্বস্তি ভরা নয়ন তৈরি করে দুষ্টুমি কণ্ঠে ছেলেটা বলল,” প্লিজ এভাবে দেখ না, আমার লজ্জা করে ভীষণ।”
কথা টা শুনেই ফিক করে হেসে দেয় বিভা। অ্যাড সে হাসি তে দৃষ্টি দেয় না। খাবার টা টেবিলে রেখে বলে,”খেয়ে নাও আমাদের বের হতে হবে।”
“আমি তোমাকে বিশ্বাস করব কি করে? কার্ড টা মিথ্যে ও তো হতে পারে।”
নাকের পাটা লাল করে ফেলে অ্যাড। এই মেয়েটা কোনো সমস্যা নয় বরং বড় সড় এক সমস্যা! পকেট থেকে চট জলদি ফোন বের করে ভিডিও অন করে। কিয়ৎক্ষণ পর বিভার দিকে বাড়িয়ে দেয় ফোন। বিভা দেখতে পায় আন্তজার্তিক ব্যাচ লাগানো হচ্ছে অ্যাড কে। কিছু বলবে তার আগেই সে বলে,”কোনো কথা নয়। এখন আমার সাথে যাবে তুমি। আমি কয়েক দিন পর তোমাকে নিতে আসব। এখানের ই একটা বাসা তে তোমাকে রেখে যাব। চিন্তা করো না সমস্ত ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো অসুবিধা হবে না। ফিরে এসে তোমার সমস্ত কথা শুনব। এখন সময় নেই।”
বিভা কোনো কথা বলার সুযোগ ই পায় না। খাওয়া হয়ে গেলেই অ্যাডের সাথে বেরিয়ে যায়। অ্যাড ই হলো এক মাত্র ভরসা। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
গাড়ি চালাচ্ছে অ্যাড। পরনে কালো জ্যাকেট , মাথায় ক্যাপ লাগানো। বাদামি চুল গুলো হালকা নড়ছে। চোখে সানগ্লাস, গায়ের পোশাক টা ঢিলে ঢালা হওয়াতে কতটুকু মোটা বা চিকন ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। আরাজের কথা ভাবতেই কান্না চলে আসছে। ছেলেটার মৃ ত্যু সংবাদ শোনা হয়েছে আজ মাস খানেক এর কম নয়। অথচ অস্ট্রিয়াতে পৌছাতে পারল না সে। গত এক মাসে ঘটে যাওয়া কাহিনী গুলো শরীরে কাঁটার মতো লাগছে। ঝম ঝম করে উঠে শরীর। গা গুলিয়ে বমি আসে হঠাৎ। হাতের তালু দিয়ে অ্যাডের বাহু তে স্পর্শ করে। গাড়ি ড্রাইভ বন্ধ করে বিভার বাহু টেনে ধরে ছেলেটা। তবে মেয়েটার চোখ মুখ কেমন ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছে দেখে অ্যাড বেশ কিছু টা চিন্তিত বোধ করে। গাড়ি থেকে নেমে বমি করে বিভা। দ্রুত পানি নিয়ে আসে অ্যাড। বিভার শরীর ক্রমশ দূর্বল হয়ে যাচ্ছে। পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিয়ে অ্যাড কে বলল,”আমি আরাজের কাছে যাব। প্লিজ আমাকে নিয়ে চলো। আমার আর সহ্য হয় না। আমি বোধহয় আর বাঁচব না।”
“বিইভা কি সব বলে যাচ্ছ! কি সব ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করো আমি কিছুই বুঝতে পারি না। ইংরেজি তে বলবে প্লিজ?”
সচকিত হয়ে সে। অ্যাডের কাছে সব কথা বলা যাবে না। কে জানে অ্যাড নামক বিদেশী অপরিচিত ছেলেটার মন কেমন। উপরে ভালো অথচ ভেতরে ভেতরে খুব বাজে স্বভাব হওয়া টা অস্বাভাবিক তো নয়। মৃদু হাসার চেষ্টা করে সে। অ্যাড কর্কশ কণ্ঠে বলে, ” আমার কাছে এত সময় নেই। দ্রুত তোমাকে পৌছে দিতে হবে।”
সারি সারি গাছের সমাহারের মাঝে লম্বা রাস্তা যেন অসাধারন সৌন্দর্য ফুঁটিয়ে তুলেছে। তবে এ সৌন্দর্য বিভার মন কে মানাতে পারে না। আরাজের ভাবনা গুলো এক দলা কান্না হয়ে আটকে আছে বুকের মধ্য ভাগে। কি করে হলো এমন?
আরাজের মৃত্যু যেন মেয়েটার জীবন কে বি ষা ক্ত করে দিয়েছে। অনিশ্চিয়তার মাঝে হাত বুলিয়ে চলেছে বিভা। একটাই আশা , নিউজ টা যেন কোনো ভাবে মিথ্যে, বানোয়াট হয়।
চলবে…..
কলমে ~ ফাতেমা তুজ নৌশি