সন্ধ্যে নামার পরে পর্ব -১২+১৩+১৪

#সন্ধ্যে_নামার_পরে 🔞
ফাতেমা তুজ জোহরা
পর্ব-১২

জিনিয়াকে মুক্ত অবস্থায় এক বিছানার উপর বসিয়ে রেখেছে। সারা রাত ভয়ে ঘুমায়নি। ঘুমায়নি বলতে ঘুম আসেনি। জিনিয়ার চোখ ভর্তি ঘুম যেন উপচে পড়ছে এখন। সামনে বসে আছে দুজন যুবক। জিনিয়া বুঝতে পারছে না ঠিক কি হতে চলেছে তার সাথে। সামনে অবস্থানরত যুবকদের মধ্যে একজনকে জিনিয়ার চেনা চেনা লাগছে, কিন্তু বড়সড় মাস্ক পড়ে থাকায় ঠিক চিনতে পারছিল না। জিনিয়া ফাহাদের সাথে ফোনে যেই কথাগুলো বলেছিল তা সম্পূর্ণ মিথ্যে ছিল। জিনিয়াকে অত্যাচার করা তো দুরের কথা, তাকে অপ্রয়োজনে কেউ স্পর্শও করেনি। উড়না ছিনিয়ে নেয়ার কথাটা নিছকই মিথ্যে একটা উক্তি ছিল মাত্র। আগন্তুক যুবক দুজন জিনিয়াকে ভয় দেখিকে ফাহাদকে এসব বলিয়েছে। যাতে ফাহাদের একটু হলেও সম্বেদন হয় যে, কোনো মেয়ের সম্মান কুলোষিত হওয়ার ভয় যে কতটা মর্মান্তিক হতে পারে এটা একটু হলেও যেন ফাহাদের মস্তিষ্কে নাড়া দেয়।

জিনিয়া ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো,

“আপনারা কারা ? আমাকে কেন ধরে আনলেন ?”

জিনিয়ার কাছে যাকে পরিচিত মনে হচ্ছিলো যেই আগন্তুক জিনির প্রশ্নের জবাবে বলল,

“মাথায় কি গোবর আছে কিছু ? গোবর থাকলে অন্তত জৈব সার হতো প্লাস ঘিলুও কাজ করতো। তোমাকে এতক্ষণ যা বলানো হয়েছে এবং যা বুঝানো হয়েছে সেসব থেকে যে কেউই বুঝবে। কিন্তু তোমার মাথাতো খালি কলসির মতো ফাঁকা, সেইজন্য এখনো বুঝতে পারছো না আর প্রশ্ন করছো। একটা বাচ্চাও তোমার থেকে ভালো বুদ্ধি রাখে মাথায়। এসব বুদ্ধি নিয়ে প্রেম করে বেড়াও।”

জিনিয়া কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,

“আমার প্রেমিক আছে সেটা আপনি কিভাবে জানেন ?”

যুবকটি বলল,

“সেটা তোমার না জানলেও চলবে। চুপচাপ বসে থাকো। আর হ্যা এখান থেকে যাওয়ার পর প্রেমিকের সাথে সম্পর্ক চুকিয়ে নিও। নয়তো যেই ছেলের সাথে প্রেম করছো, সে তোমাকে নিংড়ে খেয়ে ছেড়ে দেবে। নিজের ভালো চাও তো পিছিয়ে পড়ো।”

জিনিয়া কিছুটা রাগি স্বরে বলল,

“আপনি আপনার লিমিটের মধ্যে থাকুন। এত যে আমার প্রেমিকের চরিত্রের দিকে আঙ্গুল তুলছেন তো আপনারা কোন সাধু পুরুষ ? এতই সাধু হলে একটা মেয়েকে কিভাবে কিডন্যাপ করতে পারলেন ?”

দ্বিতীয় আগন্তুকটি ফোনে কিছু একটা করছিলো। জিনিয়ার কথা শুনে বেশ জোরেই একটা ধমক দেয় জিনিয়াকে। ধমক দেয়ার পর বলল,

“আমরা তোমাকে কিডন্যাপ করেছি ঠিকই কিন্তু তোমার ভাইয়ের মতো চরিত্রহীন পশু নই। তোমাকে আমাদের দুজনের কেউ কি ছুঁয়েছে বলতে পারবে ? পারবেন না। তোমাকে মেয়ের সহযোগিতায় কিড-ন্যাপ করে এখানে এনেছি, তবুও আমরা স্পর্শ করিনি। আমরা শুধু নির্দেশনা দিয়েছি, বাকি সব করেছে মেয়েরা। একটা কথা পরিষ্কার করে জেনে রাখো, আমাদের কাছে মেয়ে হচ্ছে এমন একটা দামী জিনিস ; যা সহজে স্পর্শ করা যায়না। এই জিনিসটাকে সম্মানের সহিত আগলে রাখতে হয়। তোমার ভাইয়ের মতো কারো পরিবারের সযত্নে আগলে রাখা জিনিসটায় নোংরা হাত বাড়াইনি। আমাদের পরিবার আমাদের যথেষ্ট শিক্ষা দিয়েছে।”

জিনিয়া মাথা নিচে করে চুপ হয়ে রইলো। চুপ করে থাকা ছাড়া যে কোনো উপায় নেই। কোনো উত্তর যে নেই এসব কথার জন্য। জিনিয়া এখন নিজেই চাচ্ছে শাস্তি হোক ফাহাদের। শেষ হোক এই ঘৃনীত এক অধ্যায়।

ফাহাদ এক চায়ের দোকানের টুলে বসে রাশিদা বেগমকে কল দিলো। দোকানদার ফাহাদকে দেখে কপাল কুঁচকালো। অপ্রসন্ন হওয়ার কারণ হচ্ছে ; ফাহাদকে সে চেনে এবং সাথে এও জেনে গিয়েছে যে, সে এক নর্দমার কীট যে কিনা অন্ধকার জগতের আলো-বাতাসে ভোগ বিলাশে মত্ত থেকে বেড়ে উঠেছে। এসব কীটের জন্ম পরিবারের বিনা শাসনের মুক্ত মঞ্চে। বেড়ে ওঠা নির্জন কোনো রাস্তায়।

বেশ কয়েকবার কল করার পর রিসিভ করলেন রাশিদা বেগম। মেয়ের চিন্তায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ফাহাদ বলল,

“তোমার পুলিশ মা…চো…দের বলো আমার পিছনে কু-ত্তা-র মতো না ঘুরতে। এরকম যদি করতে থাকে তাহলে তোমার মেয়েকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দাও। কু-ত্তা গুলারে বলো ওদের গর্তেই বসে থাকতে। এতদিন যেমন আমাদের ব্যাপারে মাথা ঘামায় নাই, তেমন যেন এখনো মাথা না ঘামায়। পা চাটা কু-ত্তা সব।”

রাশিদা বেগম কিছু বললেন না। চুপচাপ কল লাইন কেটে গিয়ে ফোন দিলেন পুলিশ অফিসার শাহিনের নম্বরে। শোনালেন কতেক খাস বানী। ফাহাদ বসে আছে মাথাভর্তি অভিশাপের শব্দ নিয়ে। চোখের সামনে অত্যাচার করে সম্মান লুট করে নেয়া মেয়েদের আর্তনাদ আর মাথা ভর্তি তাদের দেয়া অভিশাপের শব্দের ছুটাছুটি। কিছুই করার নেই এখন।

হঠাৎ করেই কল আসে ফাহাদের নম্বরে। তাকে বলে দেয়া হয় কোথায় যেতে হবে। সেই পরিচিত জায়গা, যেখানে ওরা নোংরামির আতুরঘর বানিয়ে নিয়েছিল। যেই ঘরে সবসময় আনন্দ উল্লাসে বুদ হয়ে থাকতো, সেই ঘরেই বুঝি আজ শেষ পরিনতি ঘটবে।

_______

পাঁচ মাসের গর্ভবতী কোহিনূর খড়ির চুলায় রান্না করতে করতে বেশ ক্লান্ত। চুলার ধোয়ায় যেন মাথা ঘুরাচ্ছে এখন তার। রান্নায় আগুনের আঁচ কিছুটা কমিয়ে দিয়ে ঘরে গেলো হাত পাখা নিতে। শরীরের এই অবস্থায় সব কিছুতেই যেন ধৈর্য কমে আসে হবু মায়েদের। না বেশি গরম সহ্য হয় আর না বেশি ঠান্ডা সহ্য হয়। কোহিনূর এখন বাড়িতে একা। স্বামী লতিফ এই মুহুর্তে তার বাবা-মায়ের সাথে লতিফের মামা বাড়িরে আছেন। লতিফ তার বয়স্ক মা-বাবাকে তাদের ইচ্ছানুযায়ী মামা বাড়িতে রেখে আসতে যায়। তাদের পৌঁছে দিয়ে যত তারাতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাচ্ছে লতিফ। কারণ আদরিনী বউ কোহিনূর গর্ভবতী। কোনো সমস্যায় পড়লে কেউ দেখবে না। কারণ আশেপাশে বাড়িঘর নেই তেমন একটা। কখন কোন বিপদ আসে তা বলে কয়ে আসে না।

লতিফের মনটা ভিষণ খচখচ করছে। লতিফ বাড়ি ফেরার জন্য তারাহুরো করলে লতিফের মা বললেন,

“কিরে বাজান, এত তাড়া দিতাছোস কেন ? দুনিয়াতে কি তোর বউ একাই বাচ্চা পয়দা করবো নাকি। আমরা কি আর পেটে কাউরে ধরি নাই ? কই তোর বাপে তো আমার জন্য এত কিছু করে নাই। তাই বইলা কি তুই কি ঠিকঠাক জন্ম নেস নাই ? তুইতো এক্কেবারে কসের লাহান বউডার লাইগা থাকোস লাইগা। এহন এইহানে আমার লগে বইয়া থাক। আরো বাদে বাইর হবি বাড়ি যাওনের লাইগা।”

লতিফ তার মাকে তেমন কিছু বলতে পারে না। কিছু বুঝাতে নিলে উল্টো উনি যাচ্ছেতাই বলা শুরু করবে। মায়ের কান্নাকাটির ভাব দেখে লতিফ আর তখন বের হলো না। মায়ের কথা অমান্য করা এত সহজ নয়।

হুট করে সন্ধ্যায় লতিফ পালিয়ে বের হয়ে সোজা নিজ বাড়িতে চলে আসে। বাড়িতে এসে অস্থিরতা আরো বাড়লো যখন কোহিনূর লতিফের ডাকে কোনো সাড়া দিলো না। ঘরের দরজা দেখতে পেলো কিছুটা খোলা। লতিফ দৌড়ে ভেতরে গেলো। ভেতরে গিয়ে যা দেখলো তাতে লফিতের জান যাওয়ার উপয়া। লতিফ দেখলো কোহিনূর র-ক্তা-ক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে না। জ্ঞান হারিয়েছে নাকি মারা গিয়েছে তা দেখার সময় নেই লতিফের। কোহিনূরকে একটা বড় কাপড় দিয়ে পেচিয়ে পাজাকোলে করে মেইন রোডের দিকে ছুটলো লতিফ। কেননা মেইন রোড ছাড়া এদিকে কোনো অটো বা ভ্যান পাওয়া যাবেনা। লতিফ ছুটছে কোহিনূরকে নিয়ে। কি যে করুণ সময় এটা। যার সাথে না ঘটেছে সে বুঝবে না। কি হলো কোহিনূর এর ? কি ঘটেছিলো তার সাথে ?
#সন্ধ্যে_নামার_পরে 🔞
ফাতেমা তুজ জোহরা
পর্ব-১৩

কোহিনূরকে হাসপাতালে ইমার্জেন্সি বিভাগে ভর্তি করায় লতিফ। কোহিনূরের অবস্থা দেখে লতিফের প্রাণ যেন ওষ্ঠাগত। ডাক্তাররা যথাসাধ্য চেষ্টা করছে কোহিনূরের অবস্থা উন্নতি করার জন্য। ডাক্তার মিজান কোহিনূরকে চেক আপ করে লতিফকে তার চেম্বারে ডাকলেন। লতিফ ভিত অবস্থায় ছিল। বারবার আল্লাহকে ডাকছিল আর বলছিল যেন বউ-বাচ্চা তিনি যেন দুজনকেই সুস্থ রাখেন। ডাক্তার মিজানের চেম্বার এ গিয়ে বসলো লতিফ। অশ্রুসিক্ত আধ ভেজা নয়নে চেয়ে কম্পিত স্বরে ডাক্তার মিজানকে জিজ্ঞেস করলো কোহিনূরের কথা। ডাক্তার মিজান বুঝতে পারছিল লতিফের অবস্থা। তবুও কোহিনূরের অবস্থাতো তাকে জানাতেই হবে। ডাক্তার মিজান বললেন,

“নিজেকে শক্ত করুন। আপনি ভেঙে পড়লে আপনার আশেপাশের মানুষগুলোও ভেঙে পড়বে। যাইহোক, এখন কাজের কথায় আসি। আচ্ছা আপনার বউয়ের সাথে এমন অবস্থা কিভাবে হয়েছে বলতে পারেন ?”

লতিফ বলল,

“আমি কিছু জানিনা ডাক্তার সাহেব। আমি আমার মামার বাড়ি গেছিলাম আম্মা-আব্বারে নিয়া। তাগো দিয়া যহন বাড়িতে আহি তহন দেহি আমার বউয়ের এই অবস্থা। খালি বাড়িতে কেমনে কি হইলো আমি জানিনা। যদি পইরা গিয়া ব্যথা পায় তাইলে এমন খারাপ অবস্থায় ক্যান থাকবো। আমি জানিনা কিছু ডাক্তার সাহেব। আমার মন কুডাক ডাকতাছে। কি হইছে আমারে খুইলা কন।”

ডাক্তার মিজান বলল,

“দুঃখজনক হলেও বলতে হচ্ছে যে আমরা আশঙ্কা করছি আপনার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমরা পুরোপুরি রেজাল্ট হাতে পাওয়ার পরেই এ ব্যাপারে শিওর হবো। আপনার স্ত্রীর অবস্থা শোচনীয়। মা এবং বাচ্চা একসাথে বাঁচানো আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তবুও আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। আপনি ধৈর্য রাখুন আর রেজাল্ট যদি পজিটিভ হয় তাহলে আপনাকে থানায় জানানোর জন্য সাজেস্ট করবো।”

লতিফের মাথা যেন ভনভন করছে। এই মুহুর্তে তার কি করা উচিৎ সে বুঝতে পারছে না। চেঁচিয়ে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে লতিফের,

“কারা তোরা ? কেন করলি এই ক্ষতি ? তোদের এত লালসা কেন ? তোরা কি মানুষ ? তোদেরকে পশু বললে বনের পশুরাই লজ্জা পাবে। তবুও তোদের লজ্জা লাগবে না। তোদের অন্তরাত্মা বলে কিছু নেই। কিভাবে পারলি একজন গর্ভবর্তীর সাথে এমনটা করতে ?”

লফিত ডাক্তার মিজানের চেম্বার থেকে বের হয়ে আসে। বাহিরে বের হয়ে এলে তামিম ছুটে আসে লতিফের দিকে। লতিফকে জড়িয়ে ধরে চেয়ারে নিয়ে বসায়। তামিম হচ্ছে লতিফের শ্যালক। লতিফ হাসপাতালে আসতে আসতে তামিমকে কল করে জানায় কোহিনূরের অবস্থার কথা। তামিমকে না করে দেয় আপাতত অন্য কাউকে জানানোর জন্য। পরিস্থিতি বুঝে তারপর অন্যদের জানাবে। বোনের ঠিক কি হয়েছে সেটা জানার জন্য তামিম ছটফট করছিলো। কিন্তু লতিফের চেহারায় দুঃখবিলাস দেখে আর কিছু জিজ্ঞেস করার সাহস পাচ্ছে না। তামিম লতিফের পাশে বসতেই লতিফ তামিনকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে। লতিফের কান্না যেন তামিমের হৃদয়ে জানান দিয়ে দিলো যে, বোনটা ভালো নেই।

____________

ফাহাদ হাজির হলো নদীর পাড়ের সেই ঘরটাতে। আশেপাশে জনমানবশূন্য। কেউ নেই কোথাও। অদূরের ঘাটতাতেও কাউকে দেখা যাচ্ছে না। ঘরের ভেতর পা রাখতেই ফাহাদের যেন অনুশোচনা গিলে নিলো। যেই মেয়েগুলোর সম্মানের সাথে টি টুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে সেই মেয়েগুলোর চেহারার জায়গায় যেন নিজের বোন জিনিয়ার প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠছে। ফাহাদ একা একাই চেঁচিয়ে উঠে। এমন সময় ফাহাদের ফোন কল আসে। কল রিসিভ করে কানে তুলতেই অপাশ থেকে মেয়েলি কণ্ঠের কথা ভেসে আসে,

“নিজের চোখ দুটো কি নিজেই তুলে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছে ? বেশ মন্দ না, তুলে ফেল। নাকি আমি এই কাজে সাহায্য করবো তোকে ? না থাক, তোর মতো পাপীর আলকাতরায় নিজের হাত ছোঁয়াতে আমি মোটেও ইচ্ছুক নই। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে নে। তোদের গল্পের শেষ পর্ব তুই। তোর নাম মুছে দেয়ার মাধ্যবেই ইতি ঘটবে তোদের হাতে তৈরি হওয়া গল্পের।”

ফাহাদ দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

“গল্প শেষ করবি তুই ? বেশ, শেষ করিস এই গল্প। গল্প শেষ হওয়ার আগে সাহস থাকে তো আমার সামনে আয়। আড়ালে থেকেই তো এতদিন সব করলি। পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য চুরের মতো লুকিয়ে আছিস। সাহস থাকে তো আমার মুখোমুখি এসে দাঁড়া। তোর শিরদাঁড়া কতটা সোজা সেটা আমি দেখবো।”

মেয়েটা বলল,

“কুকুর কে ভয় পায় বলতো ? ভয় পায় তো কুকুরের ঘ্যাও ঘ্যাও চেঁচানোকে। কিন্তু যারা কুকুরের থাবায় পড়ার পর একবার বেঁচে ফেরে তারা আর এসব কুকুরকে ভয় পায় না। আমিও এখন তোকে ভয় পাচ্ছি না।”

ফাহাদ বলল,

“বাঘের থাবায় পড়ে দেখ, বুঝবি কত ধানে কত চাল হয়।”

মেয়েটা বলল,

“নিজেকে বাঘের কাতারে ফেলে বাঘ জাতির সম্মান ক্ষুন্ন করিস না। নিজেকে বিড়াল বলে পরিচয় দিস। কেননা তোর বোন এখনো আমার কাছে।”

কল কেটে দেয় মেয়েটি। তারপর ফাহাদ বেশ কয়েকবার চেষ্টা করে সেই নম্বরে ডায়াল করতে কিন্তু ফোন অফ বলছিল। দুদিন প্রায় হতে চলল কিছু খায়নি ফাহাদ। চিন্তায় যেন ক্ষুধার অনুভূতি হারিয়ে গিয়েছে। কিন্তু শরীর দুর্বলতার এলার্ম দিয়ে জানিয়ে দেয় বারবার যে, তুমি ক্ষুদার্ত। প্রায় সন্ধ্যে নেমে এলো কিন্তু কারো কোনো হদিস নেই। ফাহাদের মনে হচ্ছে তার সাথে কোনো প্র‍্যাংক করা হচ্ছে।

ঠিক সন্ধ্যে নামার পরে ফাহাদ কিডন্যাপারদের নম্বরে ডায়াল করতে যাবে এমন সময় কেরোসিনের গন্ধ আসে তার নাকে। ঘরে কেরোসিন দেয়া হচ্ছে এই সন্দেহে দ্রুত পা বাড়ায় ঘরের দরজার দিকে। দরজা খুলতেই কেরো-সিন ছুড়ে মারা হয় ফাহাদের গায়ে। ছুড়ে মারাটা এতটাই গতিতে ছিল যে, ফাহাদ গতির ফলে কয়েক পা পিছিয়ে পড়ে। এরকম হঠাৎ তার উপর আক্রমণ আসবে এটা সে কিছুটা আন্দাজ করেছিলো। কিন্তু এতটা হতে পারে এটা ভাবেনি। নিজের মূর্খামির জন্য নিজের উপরেই রাগ হচ্ছে। বাঁচার ফন্দি এটেও শেষ এ এসে যেন আর বেঁচে থাকা হলো না। চোখ মুছে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলো একজন দাঁড়িয়ে আছে ঘরের বাইরে। আতঙ্ক যেন ফাহাদের প্রতি রক্ত কণিকায় বয়ে গেলো। পা দুটো পিছিয়ে গেলো আপনাআপনি। এ যে ফাইজা ! দিয়াশলাই বারুদ জ্বলজ্বল করে জ্বলছে তার হাতে। অদ্ভুত এক হাসি মেয়েটার চোখেমুখে।

ফাইজা হেসে হেসে বলল,

“সাহস দেখতে চেয়েছিলি না আমার। এই নে, ভালো করে দেখ। এই যে, আমি সামনেই দাঁড়িয়ে আছি।”

ফাইজা হাসতে হাসতে জ্বলন্ত দিয়াশলাই এর কাঠি ছুড়ে দিলো ঘরের দিকে। সেকেন্ডের মধ্যেই আগুনের ফুলকি নেচে উঠলো ফাহাদের সামনে। ঘরের সাথে গ্রাস করে নিলো ফাহাদকেও। ফাইজার চোখে মুখে খুশির ঝলক। কিন্তু ফাইজার আত্মতৃপ্তি এখনো মিটেনি। বাকি রইলো পুলিশ অফিসার শাহিন। গল্প যেন শেষ হয়েও হলো না। যতক্ষণ না এই পুলিশ অফিসারের নাম মুছে দেয়া হবে।

রহিম ল্যাংড়া কাঠখড়ি সংগ্রহের জন্য এই বনের ভেতরে এসেছিল। দুই দুইটা খুনের পর ভয়ে এই বনে কেউ আসে না। জীবিকার তাগিদে রহিম এসেছে এখানে। এক পর্যায়ে এই ঘরটার দিকে এগোতেই ফাইজাকে আগুন জ্বালাতে দেখে ফেলে। লোকটা ফাইজাদের প্রতিবেশী। ফাইজা এক পলক দেখেই সে ফাইজাকে চিনে ফেলে। কিন্তু এই চিনে ফেলা যেন তার ভয়ের কারণ হলো। ফাইজাও তাকে দেখেছিল। ফাইজা রহিমের দিকে এক পা বাড়াইতেই রহিম সংগ্রহীত কাঠখড়ি সব ফেলে “আল্লাহ গো… ভূত” বলে খুড়াতে খুড়াতে দৌড়ে পালালো। এক দৌড়ে ফাইজাদের উঠোনে গিয়ে হুরমুরিয়ে পড়ে গেলো। ফিরোজ উঠানেই বসে ছিল। রহিম পড়ে যাওয়াতে ফিরোজ দৌড়ে এসে তাকে তুলে বসায়। বসানোর পর রহিম আতঙ্কিত কণ্ঠে ফিরোজকে বলে,

“ওরে ভাইরে, তোর মাইয়ার ভূত আমি ওই জঙ্গলে দেইখা আইছি রে ভাই। তারাতাড়ি হুজুর ডাইকা মিল্লাদ ফড়া। মরা মাইয়ার আত্মা ওই জঙ্গলে ঘুইরা বেড়াইতাছে। কয়দিন পর দেখুম বাড়িতে ঘুরঘুর করতাছে। এহন বুজ্জি, ওই পোলাগুলারে ওর আত্মাই মাইরা ফালাইছে। ওরে ফিরোজ ভাই, তুমি মাইয়ার চল্লিশা না দেওয়ায় এই অবস্থা অইছে। তারাতাড়ি মাইয়াডার কুলখানি পড়াও। নয়তো আরো কতজনরে জানি মাইরা দেয়।”

ফিরোজ কিছু না বলে চুপচাপ রহিমের কথা শোনে। কিসের চল্লিশা আর কিসেরই বা কুলখানি ? জীবিত মেয়ের জন্য এসব কেন করতে যাবে ? মেয়েকে সুস্থ একটা জীবন দেয়ার জন্যই ফাইজাকে মৃত বলে কবর দেয়া হয়েছে। এছাড়া যে এই সমাজে ফাইজার মতো মেয়েদের জন্য কোনো সুস্থ জীবন নেই। ফিরোজ মনে প্রাণে সবসময় আলালকে ধন্যবাদ দেয় ফাইজার সুন্দর জীবনের জন্য। কবরে শায়িত মেয়েটার নাম ফাইজা হলেও দেহটা ভিন্ন।
#সন্ধ্যে_নামার_পরে 🔞
ফাতেমা তুজ জোহরা
পর্ব-১৪

জ্বলন্ত ঘরের ধোঁয়া আসেপাশে ছড়িয়ে যায় খুব দ্রুত। অনেক দূর থেকেও এই ধোঁয়া দেখেছে অনেকেই। রাশিদা বেগম জিনিয়াকে জড়িয়ে ধরে উঠোনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হ্যা জিনিয়াকে মুক্ত করে দেয়া হয়। তাকে অক্ষত অবস্থায় স্বসম্মানে বাড়ির রাস্তায় নামিয়ে দেয়া হয়। একদিকে ফাহাদের গল্পের ইতি টানা হয় আর অপরদিকে তার বোনকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। জিনিয়াকে পেয়ে যতটা খুশি হয়েছিলেন রাশিদা বেগম, তার চেয়ে বেশি দুঃখ তার হৃদয় দখল করে ফেলেছিল। দুঃখ প্রকাশ না করলেও তার মুখমন্ডলে তা স্পষ্টই ছাপ ছিল। রাশিদা বেগম নিশ্চিত ছিলেন যে, তার আদরের ছত্রছায়ায় বড় করে তোলা ছেলেটাকে সে আর ফিরে পাবে না। হঠাৎ আবছা অন্ধকারে ধোঁয়ার মেঘ তার চোখে পড়ে। ধোঁয়া ঠিক কোন দিয়ে আসছিল তা রাশিদা বেগম স্পষ্টই বুঝলেন। মায়ের মন জানান দিলো, তোর ছেলের নাম এই ধোঁলায় মিলিয়ে গিয়েছে। তার মস্তিষ্ক যেন তাকে বলছিল ; ভুলে যা যে, তোর এক ছেলে ছিল। রাশিদা বেগম মনে মনে নিজেকে নিজে শান্তানা দেয়ার বৃথা চেষ্টা করলো। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়ে পাকা উঠোনটাতে।

_________

রাত প্রায় দশটার কাটা ছুঁইছুঁই। এমন সময় বাসার কলিং বেল বাজালো ফাইজা। বেল বাজানোর প্রায় সাথে সাথেই দরজা খুলে দেয়া হয়। ফাইজা বেশ অবাক হয়। কিছুটা অটোমেটিক ডোরের মতো, বাটন ক্লিক করার সাথে সাথেই দরজা খুলে যায় যেমন। ফাইজার অবাক হওয়া একটু বেশিই ছিল। কারণ দরজাটা রায়হান খুলে দেয়। ফাইজা মনে মনে ভাবছিল, বাবা-মা হয়তো শুয়ে পড়েছেন। তাই রায়হান হয়তো ফাইজার ফিরে আসার অপেক্ষা করছিল।

এই ভাবনার পর মুহুর্তেই ফাইজা ভেবে নিলো যে, রায়হান হয়তো বাহিরে বের হতে নিচ্ছিলো। যে কারণে সে দরজা খুলে, ভাগ্যক্রমে ফাইজা উপস্থিত হয়ে যায় আরকি।

রায়হান ফাইজার স্থির চাহনী দেখে বলল,

“ভেতরে আসছো না কেন ?”

ফাইজার ধ্যান ভাঙে। কিছু না বলেই সে চুপচাপ ভেতরে প্রবেশ করে। রায়হান দরজা বন্ধ করে দিয়ে ফাইজার পিছু পিছু চলে আসে। ফাইজা রায়হানকে শান্ত স্বরে জিজ্ঞেস করলো,

“আম্মু-আব্বু কোথায় ? ওনারা কি আজ তারাতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছেন ?”

রায়হান বলল,

“আব্বু-আম্মু দুজনেই আম্মুর বান্ধুবীর বাড়িতে ডিনার ইনভাইটেশন এ জয়েন হতে গিয়েছে। রাতে বেশি দেরি হয়ে গেলে আগামীকাল সকালে ফিরবেন।”

কথাগুলো রায়হান ড্রয়িংরুমের সোফায় বসতে বসতে বলল। রায়হানের কথা শুনে ফাইজা স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রায়হানের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। বোঝার চেষ্টা করলো রায়হানের মুড। দেখে খুব স্বাভাবিকই মনে হলো তাকে। ফাইজা আর দেরি না করে নিজের ঘরে চলে গেলো। ঘরে এখন বাবা-মা কেউই নেই, আছে শুধু রায়হান আর কাজের মেয়ে সুইটি। সুইটি এই বাসাতেই থাকে। প্রতি মাসে দুদিনের ছুটি নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে ঘুরে আসে। ফাইজার কিছুটা অস্বস্তি হচ্ছে। হাজার হোক, রায়হান একজন ছেলে। সবচেয়ে বড় কথা রায়হান নিজের ভাই নয়। রায়হানের সাথে তেমন কথাও হয়নি ফাইজার। তাই তার মনে এই অস্বস্তির সৃষ্টি।

রাতে খাবার খেতে বসলো ফাইজা। সুইটি ফাইজাকে খাবার দিতে দিতে নিচু গলায় বলল,

“আফা, ভাইয়াও কিন্তু খায় নাই এখনো।”

ফাইজা কেবল মুখের সামনে খাবারটা নিয়েছিল, সুইটির কথা শুনে প্লেটে পুনরায় রেখে দিলো। খাবার রেখে সুইটিকে জিজ্ঞেস করলো,

“উনি কেন খায়নি ? পেটে কি কোনো সমস্যা হয়েছে ?”

সুইটি এবারো আস্তে করেই বলল,

“ভাইয়া কইলো আফনে আইলে খাইবো। আফনি সবসময় খালা নয়তো খালুর লগে বইসা খান। আজকে তারা বাড়িতে নাই। আফনার একলা খাইতে খারাপ লাগতে পারে। হেইডা ভাইবা আফনার পথ চাইয়া বইয়া আছিলো। একটু পরপর আইয়া খালি পানি খাইছে।”

সুইটির কাছ থেকে রায়হান সম্পর্কে এমন কথা শুনে ফাইজার মনে কেমন শান্তি অনুভব হলো। সাথে নিজের প্রতি একটু রাগও হলো বোকামির জন্য। খেতে বসার আগে রায়হান খেয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করা প্রয়োজন ছিল। খাবার যেহেতু এখনো শুরু করেনি সেহেতু উঠে গিয়ে রায়হানকে খেতে ডাকা উচিৎ। যেই ভাবা যেই কাজ, ফাইজা উঠে গেলো রায়হানকে ডাকতে।

রায়হানকে ডাকতে গিয়ে দেখলো রায়হান বসে বসে টিভিতে খেলা দেখছে। ফাইজা রায়হানকে বলল,

“ভাইয়া খেতে চলুন।”

রায়হান খেলা দেখাতে মনোযোগী ছিল বিধায় ফাইজা আবারো একই কথা বলে। এবার একটু জোরে বলাতে রায়হানের খেয়াল হয় সেই ডাকে। ফাইজা বলল,

“খাবেন চলুন।”

রায়হান বলল,

“খেলাটা শেষ হোক, একটু পর খাবো।”

ফাইজা এবার একটু ভিন্ন কথা ট্রাই করলো। রায়হান কতটা গুরুত্ব দিবে সেটা জানার চেষ্টা করবে। ফাইজা বলল,

“রায়হান ভাইয়া, ক্ষুধায় পেট ব্যথা করছে। এমনিতেই দেরিতে খেতে যাচ্ছি তার উপর আপনার অপেক্ষায় দেরি হচ্ছে।”

ফাইজার কথা শেষ হওয়ার আগেই রায়হান টিভি অফ করে দ্রুত খাবার টেবিলের দিকে পা বাড়ালো। লোকটা কিছুই বলল না। ফাইজার কেন যেন হাসি পেলো। ফাইজাও চলে গেলো খাবার খেতে। খাওয়া শেষ হলে যখন ফাইজা রায়হানকে শুভ রাত্রি বলে চলে যাচ্ছিলো তখন রায়হান ফাইজাকে জিজ্ঞেস করলো,

“তোমার কি এখনো পেটে ব্যথা হচ্ছে ?”

ফাইজা শান্তভাবে একটা হাসি দিয়ে বলল,

“না ভাইয়া ব্যথা নেই। ওটা ক্ষুধার জন্য এমন লেগেছে।”

ফাইজা ঘরে চলে গেলে রায়হান চলে যায় বাগানে। ফাইজা শোবার আগে একবার জানালার কাছে যাবে। এটা তার প্রতিদিনের রুটিন বলা চলে। বাগানের ফুটন্ত ফুলগুলোর হালকা মিষ্টি একটা ঘ্রাণ ফাইজার মনে প্রশান্তি জোগায়। এতে তার রাতের ঘুম ভালো হয়। প্রথম প্রথম যখন এ বাড়ি আসে তখন ফাইজার ঘুম হতো না। ঘুমাতে নিলে কলঙ্কিত এক অধ্যায়ের স্বপ্ন ফাইজাকে তাড়া করে বেড়াত। যখন এই নিশীথে ফোটা ফুলের ঘ্রাণের সাথে পরিচয় হয়, তখন থেকে ঘুম যেন ফাইজার বাধ্যগত হয়ে উঠে। সেই যে শুরু, তা এখনো আছে। জানালা খুলে ফাইজা চোখ বন্ধ করে ঘ্রাণ নিচ্ছিলো। বাহিরের ঝিরিঝিরি বাতাস যখন আরেকটু জোরে বইতে শুরু করে তখন ফাইজার নাকে সিগারেটের গন্ধ আসে। বাহিরে তাকিয়ে দেখলো রায়হান সিগারেট খাচ্ছে। অদ্ভুত, এই লোকটা এত সিগারেট কেন খায় রাতের বেলা ?

__________

তামিম আর লতিফ পাশাপাশি দুটো চেয়ারে বসা। থানায় কোহিনূরের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার চাইতে এসেছে। কোহিনূরকে যে রেপ করা হয় সেই রিপোর্ট দেখিয়েই কেইস ফাইল করা হয়। কেইস ফাইল করা শেষ হলে ইনভেস্টিগেটর অফিসার আয়মান হাসপাতালে সরেজমিনে দেখতে গেলো ভিক্টিমকে। কোহিনূরের এখনো জ্ঞান ফিরে আসেনি। জ্ঞান ফিরলে যেন দ্রুত আয়মানকে জানানো হয় সেইজন্য নিজের একটা ভিজিটিং কার্ড তামিমের হাতে ধরিয়ে দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসলো। এখন সে বাড়ি ফিরবে। কিছু কাজ আছে সেগুলো সেরে নিবে রাতেই। আগামীকাল সকালে সিভিল বেশে বের হয়ে যাবে লতিফদের এলাকায়। খেলার মাঠে চূড়ান্ত পর্যায়ে নামার আগে মাঠ সম্পর্কে জেনে নিলে ভালো হয়। আয়মান এখন ঠিক এই কাজটাই করবে।

আয়মান বাড়ি পৌঁছে কলিং বেল বাজালে আয়মানের স্ত্রী তোহা দৌঁড়ে এসে হাসি মুখে দরজা খুলে দেয়। আয়মান ঘরে প্রবেশ করে নিজেই দরজা লাগিয়ে দেয়। আয়মান ফ্রেশ হতে বলে তোহা দ্রুত রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায়। অনেক রাত করেছে আজ আয়মান বাড়ি ফিরতে। তোহা খাবার সাজিয়ে অপেক্ষা করছে আয়মানের জন্য। আয়মান জানে, সে না ফেরা অব্ধি তোহা খাবে না। দুপুরের খাবার একা একাই খেয়ে নেয়। কিন্তু সকাল আর রাতে একসাথে বসে খেতেই হবে। নয়তো আদরিনী বউ অভিমানে গাল ফুলিয়ে বসে থাকবে।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here