স্বপ্নময় ভালোবাসা
পর্ব-০৩
রোকসানা আক্তার
” ইন্টারভিউটা না দিয়ে চলে আসলি এটা মোটেও ঠিক করিস নি!এগোরাতে ইন্টারভিউ দেওয়ার সুযোগ যখনতখন আসে না!যদি একবার টিকে যেতিস তাহলে লাইফ একদম সেটেল হয়ে যেত!কী করলি তুই এটা?উফফ!”
বলেই টোয়া রাগে কপাল চাপড়াতে থাকে।
আজ এগোরা কোম্পানিতে “মোটিভেটর” -পদে আমার যে ইন্টারভিউটা ছিল ওটা আমি দিই নি।ওই তুরাব নামের লোকটির সামনে থেকে তখনই চলে আসি।একটা ছোটখাটো চাকরি করবো তারপরও এই অমানুষটার সামনে এসে কখনোই দাড়াবো না।জানি ইন্টারভিউ স্পটে কাজটা করা আমার একদমই ঠিক হয়নি।এছাড়া আমার উপায় ছিলনা। আর এ নিয়েই টোয়া আমার উপর অগ্নিশর্মা।আমি টোয়ার কাঁধে হাত রেখে নরম গলায় বললাম,
“কোম্পানিতে আমি জব করবো না!”
টোয়া চোখ বড় করে আমার দিকে তাকায়। গম্ভীর মুখ করে বললো,
“তাহলে সরকারি চাকরি করবি?আরেহ সরকারি চাকরি করতে হলে লাখ লাখ টাকা ঘুষ আর পেছনে মামা-খালুরা থাকা লাগে।আমাদের ত তাও নাই!”
আমি খানিক হেসে বললাম,
“পৃথিবীতে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।নিজের ইচ্ছে আর চেষ্টা থাকলে সবই সম্ভব।”
“তাহলে আজ ইন্টারভিউয়ের সময় তোর সেই ইচ্ছে আর চেষ্টা কই ছিল?ভয়ে ত ইন্টারভিউটা না দিয়েই চলে আসলি।বলাটা খুবই সহজ কিন্তু করাটা তারচেয়েও কঠিন।”
টোয়ার এহেন কথায় আমি জোরপূর্বক হাসার চেষ্টা করলাম।তবে উত্তর দেবার মতো শব্দ খুঁজে পাইনি।আমার চুপ থাকা দেখে টোয়া অভিমানী বিলাপে ফোঁড়ন কেঁটে আবার বললো,
“তোকে আবার এসব বলছি কেন।তোর স্বামী আছে। স্বামীর বড় চাকরি আছে।ক’দিন পর স্বামীর বাড়ি উঠলে আর চাকরির করা লাগবে না।যত সমস্যা ত আমার!বাড়িতে অসুস্থ বাবা আছে এবং ছোটবোন। তাদের দেখাশুনা করতে একটা চাকরি আমার খুবই দরকার!”
বলেই টোয়া একটা আক্ষেপ নিঃশ্বাস ছাড়ে।আমি ছলছল চোখে তারদিকে তাকিয়ে থাকি।চাহনিটা একদম নিষ্পাপ,নিষ্পলক,নিঃস্বার্থ।মুখ না বললে এই চোখজোড়া ঠিকই বলছে,টোয়া আমার অবস্থাও তোরই মতো!হয়তো সামনে ফকফকে সাদা আকাশ আর ভেতরে ক্ষয়িষ্ণু কালো মেঘ!আমারও যে একটা চাকরি খুবই দরকার!
ভাবনার মাঝেই টোয়া টপকে বলে উঠলো,
“আচ্ছা,আমাকে একটা কথা বল ত ইদানীং তোর এত চাকরি প্রয়োজন হলো কেন?ক’দিন পর স্বামীর ঘরে যাবি।তুরাব না কি যেন তোর স্বামীর নাম, শুনলাম সেই ত ভালো বেতনের চাকরি করে।”
টোয়ার এহেন কথায় আমার ভেতরটায় মুচড়ে উঠে।তুরাবের সাথে আমার যে ঝামেলা সত্যটা ত আর টোয়া জানে না।ভেবেই নিজেকে যথেষ্ট আগলে স্বাভাবিকভাবে জবাব দিই,
“পুরুষের পাশাপাশি মেয়েরাও সাবলম্বী হলে ভুল কী।বরঞ্চ প্রতি মাসে মাসে ত আর পুরুষের কাছে টাকার জন্যে নারীর হাত পাততে হয় না।”
“মন্দ বলিস নি।আচ্ছা,একটা ত কাজ করতে পারিস।”
“কী কাজ?”ভ্রু কুঁচকে।
” তোর স্বামীকে বললেই ত সে তোকে ভালো একটা চাকরি দিয়ে দিবে।আর চাকরির জন্যে এত দৌড়াতে হবে না।”
এবার আমার মস্তিষ্ক নড়েচড়ে উঠে।রাগে পুরো মাথা ঝি ঝি করতে থাকে।সেই প্রথম থেকে মুখে একই কথা তোর স্বামী,তোর স্বামী!আরেহ বাবা ও আমার কীসের স্বামী?ও আমার কোনে স্বামী নয়!কিন্তু টোয়া কে ত এসব আর বলা যাবে না।এতদিন যে মুখে যার গুণগাণ শুনতে শুনতে কানঠাসা হয়ে যেত,এখন সেই মুখে তার ব্যাপারে ওমন খাপছাড়া কথা শুনলে বিষয়টা বেমানান দেখাবে।হাজারো প্রশ্ন, হাজারো কারণ,হাজার কিছু জানতে চাইবে।কিন্তু এই ভারাক্রান্ত মনে ওসব কথার উত্তর কি দিতে পারবো আমি?মোটেও নয়।বরং কষ্টটা আরো দ্বিগুণ হবে।এখন কিছুতেই কষ্ট পেতে চাচ্ছি না আমি।ভালো থাকতে চাচ্ছি।খুব ভালো।
আমি বললাম,
“অন্যের দায়ধারে চাকরি নিতে গেলে পরে খোঁটার ভাগিদার হওয়া লাগে!!”
“ওমা এটা আমার কেমন কথা বললি।নিজের স্বামীর থেকে খোঁটা শুনার সময় একটা রোমান্টিক ব্যাপারও আছে,ইয়ার।” চোখ টিপে।
“প্লিজ,একটু চুপ কর।এসব কথা শুনতে আমার একদম ভালো লাগছে না।অন্যকিছু বল!”
“আচ্ছা, বল অন্যকিছু কি?”
“আকাশের নাম্বারটা তোর কাছে আছে?বা আইডিতে তোর সাথে এড আছে?”
“কোন আকাশ রে?”
“আমাদের কলেজে সাইন্স গ্রুপের স্টুডেন্ট ছিল।ভুলে গেলি?”
“ওহ হ্যাঁ,হ্যাঁ মনে পড়ছে। সে ত এখন অনেক বড় একজন মেডিসিন ডাক্তার।
” জানি।”
” তোর প্রতি বেচারীর সেই কি ভালোবাসা ছিল!তুই ত স্বামী আছে বলে বলে বেচারীকে পাত্তাই দিলি না! হা হা হা হা।তা আজ হঠাৎ প্রাক্তনের কথা মনে পড়লো কেন ?ব্যাপার কী?”
“ও আমার কোন জন্মের প্রাক্তন রে।এক্কেরে দেয়ালের সাথে গাড়মু তোরে,হারামী!”
“হা হা হা হা।মজা করলাম।আচ্ছা শোন নাম্বার নেই।তবে আইডিতে এড আছে।”
“মেসেজ দে একটা তাহলে।”
টোয়া মুখটা থুবড়ে ফোনের স্ক্রিন আমার সামনে তুলে ধরে।বললো,
“দ্যাখ,ওরে কতবার মেসেজ দিলাম।এন্সার ত দূরে থাক,সিনই করে নি!ডাক্তার হইয়া এখন ভাব দেখায়!”
আমার মেরুদণ্ড বরাবর একটা শীতল হীম বয়ে যায়। আকাশ টোয়ার মেসেজের একটা উত্তরও করেনি।টোয়া ত একসময় তার ক্লাসমেট ছিল।মানুষ যতই ভালো পজিশন,ভালো স্থান এ্যাচিভ করুক স্কুল,কলেজ,ভার্সিটি লাইফের বন্ধুদের ভুলে যায় না।আচ্ছা,ভুলে যেতেও অস্বাভাবিক কি!তুরাব ভাইয়ার আজ গাড়ি,বাড়ি,জব সব থাকাই ত আমাদের মতো মেয়েদের উনার মানুষই মনে হয়নি!হয়তো আকাশেরও সেরকম পরিবর্তন হয়েছে।
তবে সত্যিই কি আকাশ অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে?বিশ্বাস হয় না।
কিছুক্ষণ মাথার ভেতর এধরনের ভাবনা কুটকুট করতে থাকে।পরক্ষনে টোয়ার হাত চাপড়ে ফোনটা আমি হাতে নিই।টোয়া হা হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে।আকাশের মেসেজ বক্সের উপর নীল বিন্দুটাা টুপটাপ করছে।তারমানে সে এখন লাইনেই আছে।আমি টুপ করে একটা মেসেজ পাঠিয়ে দিই,
“হ্যালো,আকাশ?আমি সানা বলছি।ব্যস্ত না থাকলে কলটা রিসিভ করতে আশা করি অত্যুক্তি হবি না।”
সেন্ড করে দিয়ে ফোন হাতে বসে থাকি।অপেক্ষা করি ফিডব্যাক পেতে।এক মিনিট,দশ মিনিট,একঘন্টা কেটে গেল তারপরও আকাশের থেকে ফিডব্যাক এলো না।আমার মনটা আচমকা খারাপ হয়ে গেল।খারাপ হওয়ার কারণ নেই,অথচ খারাপ হয়ে গেল।
তারপর নিরিবিলি বারান্দার চেয়ারে অনেক্ষণ বসে থাকি আর সন্ধেমাখা আঁবছা আঁধারের শহরটা দেখি।রাস্তার এপাশে-ওপাশে নিয়ন আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে,কিন্তু দিনের মলীন আলোয় এখনো সেই আলোগুলো ফুঁটে ওঠেনি।
জনমানুষ কুট কুট পায়ে ফুটপাত দিয়ে যাচ্ছে-আসছে।গাড়িগুলো হর্ণ বেঁজে বেঁজে একে-অন্যকে পাশ কেটে ছুটে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর টোয়া এসে আমার সামনে দাড়ায়।তার ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বললো,
“আকাশ কল করেছে!”
মুহূর্তে কেনজানি আমি মনের অজান্তে হেসে দিই।টোয়ার থেকে ফোনটা নিয়ে আকাশের কল রিসিভ করি।রিসিভ হতেই ওপাশ থেকে আকাশ বলে উঠলো,
“সানা,আমি খুবই ব্যস্ত ছিলাম রে তাই তোর মেসেজ সিন করতে পারিনি।হঠাৎ কি করে আমার কথা তোর মনে পড়লো?আচ্ছা কোথায় তুই এখন?”
“ঢাকায়।”
“কাল দেখা করতে পারবি আমার সাথে?”
“কোথায়?”
“তুই এখন আছিস কোথায়?”
“ফার্মগেট।”
“আচ্ছা, আমি কাল ফার্মগেট আসছি।”
“আচ্ছা।”
“তাহলে রাখলাম।সব কথা কাল বলবো।কিছুক্ষণ পর আবার রোগী দেখতে হবে।মাত্র একটু ব্রেক পেলাম।তাই এরফাঁকে তোর সাথে কথা বলার সুযোগ পেলাম।ধন্যবাদ,সানা আমি খুবই খুশি হয়েছি তুই কল দিয়েছিস।”
“আচ্ছা,রাখ।কাল কথা হবে।”
“বায়, টেক কেয়ার।”
“টেক কেয়ার।”
কলটা রেখেই গোল গোল চোখে টোয়ার দিকে তাকায়।চেয়ার থেকে দাড়িয়ে টোয়ার মাথায় একটা চাটি মেরে বললাম
“কিরে,আকাশ নাকি ভাবের জম।এখন দেখলি ত?”
“আমাদের সাথে ভাব নেওয়াটা স্বাভাবিক। তোর সাথে কেন নিবে?কারণ,তোকে ত একসময় বেচারী ভালোবাসতো।”
“ভালোবাসতো মানলাম।কিন্তু, মেসেজ সিন করলো কেন?আইডি টা ত তোর,আমার নয়।”
টোয়া এ কথার আর জবাব দিতে পারেনি।কাচুমাচু দেয় একটা।আমি হেসে ফেলি।বললাম,
“কারো ব্যাপারে ভালোভাবে না জেনে কিছু আন্দাজ করা ঠিক না।”
সে এবার কথার পিঠে জবাব না দিয়ে পারে নি।বললো,
“হইছে হইছে কালই দেখবি।কথায় ত আর ভাব বুঝা যায় না,বুঝা যায় মানুষের ভাবভঙ্গি তে।”
পরদিন সকালে আমার আকাশের সাথে ফার্মগেট “ক্যাফেটেরিয়া”- তে দেখা হয়।সাথে টোয়া এবং রিনতিও ছিল।আকাশকে আমি প্রথম দেখায় চিনতে পারিনি।আগ থেকে কেমন লম্বা,সুন্দর,সুস্থ -সবল দীর্ঘকায় দেহের এক পুরুষের অধিকারী হয়ে গেছে।কলেজে থাকতে পোলাপানরা ওকে দেখলে “পাতলু ভাই” বলে খেপাতো অথচ এখন দেখে মনে হল ওরা তার তখন ভুল বর্ণনা করেছিল!টোয়া ত দেখামাত্রই বলে ফেললো,
“কিরে বিলাই,আগের থেকে এতটা সুন্দর হয়ে গেলি কা?কি ক্রিম মাখোস আবার?আমারে একটু ক।আমিও মাইখা তোর মতো সুন্দর হমু!”
ওর কথা শুনে আমি এবং রিনতি খিলখিল হেসে দিই।আকাশও হাসে।তবে,নিঃশব্দে। তারপর আমরা চেয়ারে বসে পড়ি।চেয়ারে বসতে গিয়েই টোয়া আরেকটা ঝামেলা বাঁধিয়ে দেয়।সেটা আকাশকে নিয়ে।আকাশকে আঙ্গুল উঁচিয়ে বললো,
“এই গর্দভ,কলেজ লাইফের পোলাপান রে মানুষ ভুইলা যায়, ক ত?”
আকাশ সামান্য থতমত খায়।আমতা আমতা করে ভার গলায় বললো,
“নাহ।”
“তাইলে তুই আমারে ভুললি কা?”
“কই ভুললাম?”
টোয়া তার ফোনটা আকাশের সামনে তুলে ধরে।আর খরখর গলায় বলতে থাকে,
“দ্যাখ,কত্তগুলা তোরে মেসেজ দিলাম,এমনকি তোর পোস্টে ও কমেন্ট করেছি তারপরও তুই রিপ্লাই দেস নি।ডাক্তার হইয়া ত আমাগোরে একেবারে ভুইলাই গেলি!”
“নাহ নাহ এ্যাঁ কেমন কথা!কাউকে ভুলি নি।”
আমি আকাশের দিকে তাকাই। টোয়ার বলা উক্তিগুলো আকাশের সাথে সম্পূর্ণ মিলে নি।আকাশের কোনো অহংকার নেই।সে আগের মতোই সহজ-সাবলীল।তবে আগ থেকে খানিক গম্ভীর হয়ে গেছে।কথা কম বলে।
আর কথা কম বলতে প্রত্যেক ডাক্তারই চেষ্টা করে।
কথা কম বললে মস্তিষ্ক সুস্থ থাকে।আর ঠান্ডা-শীতল মস্তিষ্ক রোগীদের সেবার জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট।এতে রোগীদের খুব ধৈর্য্য সহকারে ভালো সেবা দেওয়া সম্ভব হয়।
খাওয়া দাওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হলে আকাশ নিজ থেকে বলে উঠলো,
“টোয়া,তোরা একটু সাইডে যেতে পারবি?আমি সানার সাথে একান্ত পার্সোনাল একটু কথা বলতে চাচ্ছি।”
“পার্সোনাল কথা” এই দুটো শব্দ শুনার সাথে সাথে আমার ভেতরটা জমে আসে।এই দুটো শব্দ যেন আমার অতি চিরল পরিচিত শব্দ।এই দুটো শব্দে মিশে আছে আমার কত কলেজ লাইফের স্মৃতি।
কলেজে থাকতেও আকাশ সবার মাঝখানে আমাকে দেখলে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠতো,
“এই তোরা একটু সর না আমি সানার সাথে একটু কথা বলব!”
তারা কেউ সরতো না।উল্টো উপহাস করে বলতো,
“অন্যের বউয়ের সাথে আলাদা কিসের কথা,হু?যা বলবি সামনাসামনি বলবি।আমরাও একটু শুনবো।আমরা কেউই এখান থেকে সরবো না।”
তখন আকাশ লজ্জা পেয়ে চলে যেত।আর আমার সাথে পার্সোনাল কথা বলা হয়ে উঠতো না।অথচ,আজ এতটা বছর পর সেই একই আবদার!
অবশ্য টোয়া এবং রিনতি কোনে প্রতিক্রিয়া দেখালো না।তারা দুজন খানিক দূরে গিয়ে বসলো।
ওরা দূরে বসতেই আকাশ আমার দিকে ক্ষীণ চোখে তাকালো।সিরিয়াস মুড করে বললো,
“হঠাৎ কি ভেবে এতগুলো বছর পর তোর আমার কথা মনে পড়লো?আমি ত ভাবলাম আমাকে ভুলেই গিয়েছিস!”
“আরেহ নাহ,ভুলবো কেন।ক্লাসমেটদের কেউ ভুলে নাকি?”
আকাশ হেসে ফেলে।বললো,
“খুশি হলাম।এই বেহায়ার কথা যে মনে রেখেছিস।”
“বেহায়া!?”
আকাশ চুপ হয়ে যায়।প্রসঙ্গে পাল্টে বললো,
“বায় দ্য ওয়ে তোর হাসবেন্ড কেমন আছে?সংসার ত শুরু করেছিস,না?”
আমি ছলছল চোখে আকাশের মুখখানে তাকাই। কোনোমতে উদাসভাবে জবাব দিই,
“হ্যাঁ এইতো।”
“আচ্ছা।”
“আকাশ?”
“হু?”
“একটা কথা বলবো যদি কিছু মনে না করিস!”
“অফকোর্স, বল।”
“আমাকে একটা চাকরি ম্যানেজ করে দিতে পারবি? এই যেমন ধর- স্কুলে অথবা কলেজের শিক্ষকতা পেশায় হলেও চলবে।জানিস ই ত গোড়ার লোক ছাড়া এসব চাকরিতে জয়েনিং হওয়া আকাশকুসুম।তুই ত আমার পরিচিত।তোর সাথে অনেকেরই হয়তো হাত আছে তুই চেষ্টা করলে আমাকে….।”
আকাশ আমার কথা শুনে কেমন বোধ করলো তা জানি না।তবে খুব সহজ-সাবলীল ভাবে বললো,
“সত্যিই চাকরি করবি?”
“হ্যাঁ,আকাশ।এইজন্যেই তোর সাথে দেখা করতে এসেছি।”
“আচ্ছা,আমি দেখছি কি করা যায়।তুই টেনশন নিস না।”
“ধন্যবাদ,আকাশ।”
“বন্ধুদের ধন্যবাদ দেওয়া লাগে না।তা আর কি অবস্থা তোর?বল।”
তারপর আকাশের সাথে অনেক কথা হয়। কলেজ নিয়ে।ব্যাচমেটদের দুষ্টমি নিয়ে আরে অনেক কিছু।এতশত কথা বলার ফাঁকে আকাশ আমায় একটিবারও জিজ্ঞেস করেনি “হঠাৎ আমার চাকরির প্রয়োজন কেন!”অন্যকেউ হলে এমন প্রশ্ন নির্ঘাত করে আসতো।কিন্তু আকাশ তা করেনি।আকাশের এই গাম্ভীর্য্য গুণটা আমার খুবই ভালো লাগে।ওর এই গুণের জন্যে আজও আমি ওকে ভুলতে পারিনি।
তারপর কথাবার্তা শেষ হলে আমরা বাসায় ব্যাক করি।
চলবে….