#স্বামীর অত্যাচার !!
#Part_11
খুশিতে তৌহিদ আহমেদের লাফাতে ইচ্ছে করছে।।এতবছর পর তার স্বপ্ন যে পূরণ হতে যাচ্ছে।।কতই না অপেক্ষা করেছিল এই দিনটার জন্য।।আর আজ সেটা পূরণ হবে।।ইশ নাদিয়ার কি অবস্থা হবে কি জানি খবরটা জানতে পারলে…সেই তো মনে হয় খুশিতে মহাপাগল হয়ে যাবে।।ও তো সবথেকে বেশি চেয়েছিল বাবার সম্পত্তি গুলা নিয়ে সায়ানের নামে ট্রান্সফার করে দেওয়ার জন্য…আজ যে ওর ও স্বপ্নটা পূরণ হতে চলেছে…কিন্তু খবরটা।। না না এখন যে ওকে খবরটা দেওয়া যাবে না আগে কাজটা হোক তারপর নায় হয় জানাব..মনে মনে খুশির জোয়ারে ভেসে কথাগুলো ভেবে যাচ্ছে তৌহিদ আহমেদ….তবে জোয়ারপর পর যে ভাটা ও বয় সে কথা ভুলে গেছে তৌহিদ আহমেদ।।তাহিন কাঁপা কাঁপা হাতে সাইন করতে হঠাৎ করে তৌহিদ আহমেদের ফোটটা বেজে উঠল…এ মুহূর্ত রিসিভ করার মত কোনো মানসিকতা নেই।তবু ও বারবার বেজে উঠাততে রিসিভ করল….রিসিভ করতেই চমকে গেল তৌহিদ আহমেদ।।
নিলয়ের পাটা যেন কাঁপছে…..এমনটা আগে কখনো হয়নি।।চোখের কোণায় এক ফোঁটা পানি জমে আছে।চেয়ারের সাথে পেচানো দঁড়িটার মধ্যে রক্ত দেখে….চেয়ারটা খালি পরে আছে…কিন্তু একটু আগেই যেন এই চেয়ারের সাথে তাহিন বাঁধা ছিল।।।
চোখের পলকে কি করে পালিয়ে গেল বুঝতে পারছে না নিলয়…..
রাগে গা জ্বলছে নিলয়ের….তৌহিদ আহমেদের ডেরাকে তছতছ করে বন্দুকটা বের করে লাগাতার উপরের দিকে স্যুট করে যাচ্ছে।।কেন ঠিক সময় এসে তাহিনকে উদ্ধার করতে পারল না?আফসোস করতে করতে বন্দুকটা ছুড়ে ফেলে দেওয়ালের সাথে আঘাত করল নিজেকে…হাত বেয়ে রক্ত পরছে…কিন্তু এই আঘাতটা যে খুবিই সামান্য।।সিসিটিভি ফুটেজ চেক না করলে তো তাহিনের কিডন্যাপ করার কথা জানতেই পারত না…আজ সবকিছু ওর ভুলের জন্যই হয়েছে।।কিন্তু এখন আফসোস করে যে কোনো লাভ হবে না..
আগে তৌহিদ আহমেদকে খুৃঁজে বের করতে হবে।।এখন ও বেশি দূর যেতে পারেনি….সায়ানের মাধ্যামে এই জায়গাটার সন্ধান পেয়েছে….কিন্তু খবরটা যে কি করে তৌহিদ আহমেদ কানে চলে আসল বুঝতে পারছে না নিলয়?নিশ্চয় সায়ান…সবাইকে ফাঁকি দিয়ে খবরটা তৌহিদ আহমেদ কানে তুলে দিয়েছে… এমনটা হতে কি…তা না হলে কি করে এত তাড়াতাড়ি পালিয়ে গেল…..
দ্রুতগতিতে ছুটার চেষ্টা করছে তাহিন…পায়ে একটু ও জোর নেই তবু ছুটছে…..যে করে হোক ওকে এই জায়গা থেকে পালাতে হবে।এখন শুধু এই চিন্তটায় মাথায় মধ্যে ভর করে আছে কোনদিকে ছুটছে কোথায় যাচ্ছে তা জানে না।।।পথঘাট সব অচেনা অজানা….তবু ও যে পালাতে হবে…অনেক কষ্টে তৌহিদ আহমেদ এর কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছে….কিছুতেুই আর ধরা দিবে না…..ছুটতে ছুটতে ক্লান্ত তাহিন…..চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে….পথটা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না….পাটা ও যে আর চলছে না……চারদিক অন্ধকার সাহায্য করার মত কোনো মানুষ নেই….তবু ও মনে জোর নিয়ে কিছুটা পথ যেতেই বড় একটা রাস্তায় উঠে যায় তাহিন।।কিন্তু সেদিটায় খেয়াল নেই হঠাৎ করে একটা গাড়ী এসে তাহিনকে ধাক্কা মারে……….
তৌহিদ আহমেদের মাথায় বন্দুক ধরে দাঁড়িয়ে নিলয়ের গার্ডরা…..তাহিনকে যেভাবে বেঁধে রাখা হয়েছে ঠিক সেভাবে বেধে রাখা হয়েছে তৌহিদ আহমেদকে ও।।চাইলে এক্ষুণি একটার পরে একটা গুলি মেরে লোকটাকে শেষ করে দিতে।।কিন্তু নিলয় সেটা করছে না….
এতদিন অনেক জগন্য কাজ করছে।এখন আরো জগন্য হতে চাইনা তৌহিদ আহমেদ নামক নিকৃষ্ট একজন মানুষকে হত্য করে।।তবে শাস্তি তো তাকেই
পেতেই হবে।।গুলি করে মারলে হয়ত এতবছর করে আসা অন্যায়টা উপলব্ধি করতে পারবে না…..যেটা ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার আগে একটু হলে উপলব্ধি করতে পারবে….কিন্তু এখন যে তৌহিদ আহমেদকে নিয়ে ভাবার সময় নেই।।তার ব্যবস্থা না হয় পরে করবে আগে মেয়েটাকে খুঁজতে হবে।।এখানের পথ ঘাট সব যে অচেনা ওর…. তৌহিদ আহমেদকে আটকে রেখে বের হয়ে গেল নিলয়……
চোখ খোলতে নিজেকে হসপিটালের বেডে আবিষ্কার করল তাহিন…একটু আগেই মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে অনুভব করছে কিন্তু এখানে কি করে এল বুঝতে পারছেনা..?মাথায় বেন্ডজ মোড়ানো.. হাতে পায়ে ছিলে যাওয়া স্থানে ও বেন্ডজ করা…. আশেপাশে কাউকে দেখতে না পেয়ে আস্তে করে উঠে বসার চেষ্টার করতে একজন নার্স এসে….
-আরে কি করছেন ম্যাম আপনি শুয়ে থাকুন আমি আপনার পরিবারের লোকদের ডেকে আনছি….
চমকে উঠল তাহিন পরিবারের কথা শুনে….সেই লোক তৌহিদ আহমেদ নয়তো ভয়ে হাত পা কাঁপছে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল
-আমার পরিবারের লোক মানে….
-আপনার আম্মু আর আপনার হাসবেন্ড…ওনার তো তিনদিন ধরে এখানে আছে আসলে তিনদিন ধরে সেন্সলেন্স অবস্থায় ছিলেন বলে হয়ত কিছু জানেন না….
তিনদিন ধরে এখানে আছে বিশ্বাসীয় হচ্ছে না মনে হচ্ছে একটু আগেই যেন ওর সাথে এত কিছু ঘটল কিন্তু নিলয় ওর খবর কি করে পেল সেটায় ভাবছে….
নার্স বের হতে
-প্লিজ ওনাদের এখন ডাকবেন না….
-কি বলছেন ম্যাম ওনারা আপনাকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে আছে আর আপনি বলছেন..
তাহিন চুপ করে আছে….নার্স আর বিলম্ব না করে খবরটা দিয়ে আসল….খবরটা শুনো তনিমা দ্রুত গতিতে রুমে প্রবেশ করল….তাহিন অন্যপাশ হয়ে চোখের পানি ফেলছে কি করে তনিমা ওর থেকে এত কিছু গোপন করে রাখতে পারল…যদি না সেদিন তনিমাকে কেউ একজন বাঁচিয়ে নিয়ে গেছে কথাটা না শুনত তাহলে তো তৌহিদ আহমেদের থেকে পালানোর কথা মাথায় ও আনতে পারত না…খুব অভিমান হচ্ছে তনিমার উপর…..
তনিমা জানে তাহিন অভিমান করলে তনিমার থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্যপাশ হয়ে কান্না করে….তাহিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে..নিজের হাতের মধ্যে তাহিনের একটা হাত মুষ্টিবদ্ধ করে…
-কথা বলবি না তাইতো..বলবি বা কেন তোর আম্মু যে অনেক খারাপ..
-আমার মাকে একদম খারাপ বলবে না…
কান্না করতে কথাটা বলল
-তাই নয়তো কি…সব দোষ আমার।।শুধুমাত্র আমার জন্য আজ তোর এই অবস্থা…নিলয়ের গার্ডরা রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সময় মত হসপিটালে নিয়ে এসেছেিল…সময় মত যদি নিয়ে না পেত তাহলে তোর অবস্থা নাকি অারো ক্রিটিকাল দিকে যেত….এমন হলে নিজেকে কক্ষনো ক্ষমা করতে পারতাম না…সব দোষ আমার যদি তুকে বা নিলয়কে কথাগুলো বলতাম তাহলে তোরা সাবধান হয়ে যেতে পারতি…আজ এই অবস্থা হতো না।।।এমন জগন্য কাজ করার সাহস পেত না….
সব কিছু ছেড়ে চলেই তো এসেছিলাম তবু ও যে পিছু ছাড়বেনা কে জানত….তাই তুকে কথাগুলো কখনো বলে নি.. জড়াতে চাইনি এসব কিছুর মধ্যে.. আর সেটাই ছিল আমার বড় ভুল….আমার জন্য তুই কষ্ট পেলি শান্তি তো আমার পাওয়া উচিত।। না হলে তোর এই অবস্থাটা হতো না…..
তাহিন নিজেকে আর আটকে রাখতে পারলনা….উঠে তনিমাকে ঝাপটে ধরে কান্না করে যাচ্ছে…তনিমা তাহিনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে
-সব ঠিক হয়ে যাবে ও লোকটা খুব তাড়াতাড়ি তার কৃতকর্মের ফল ভোগ করবে…..
বাইরে লুকিং গ্লাস ধরে দাঁড়িয়ে আছে নিলয়…..চুল গুলো উশখানো।। চোখে মুখে যে চিন্তার চাপটা ছিল সেটা যেন একটু কমেছে…..আগে তাহিনের প্রতি একটু একটু টান সৃষ্টি হলে ও এখন যেন পুরোটা জুড়ে শুধু ওকে অনুভব করতে পারছে…এ তিনদিন ওকে যেন সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিয়েছে….
একদিন পর তাহিনকে রিলিজ দেওয়া হল…নিলয় সব ফর্মালিটি পূরণ করে ওদের নিয়ে হসপিটাল থেকে বের হতে মুখোমুখি হলো দুজন… কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলল না নিলয় আড়চোখে বারবার তাকালে ও তাহিন একবার ভুলে ও তাকায়নি নিলয়ের দিকে……তাহিনকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিন্তু সেটা নিলয়ের বাড়ী না আজ নিজের বাড়ী যাবে তনিমা নিলয়কে বলতে নিলয় বাধা দেয়নি….গাড়ী উঠার আগে তাহিন নিলয়কে আস্তে করে শুধু একটায় কথা বলল
-আপনার যাওয়ার প্রয়োজন নেই…অনেক করছেন আমাদের জন্য আর কিছু করতে হবে না…যা করেছেন চাইলে ও কোনোদিন হয়ত ভুল পারবনা…..বলেছিলাম পালিয়ে যাব না যদি যেতে হয় আপনার সামনেই দিয়েই যাব……আশা করি বুঝতে পেরেছেন আমি কি বলতে চাচ্ছি।।।।
নিলয় ওদের যাওয়ার পথে চেয়ে আছে…হুম নিলয় যাইনি তনিমা জোর করার পর ও….আপাতত তাহিনকে একা ছাড়া ঠিক মনে হয়েছে…..আর অন্যদিকে নিলয়ের গাড়ীতে যেতে না চাওয়ার স্বত্বে ও যেতে হল তাহিনকে….তনিমা সব কিছু জানলে ও এখন ও ওদের মাঝের সম্পর্কটা কেমন সেটা জানেনা…যার জন্য তনিমার সামনে একটু অভিনয় তো করতে হচ্ছে.. তনিমার সামনে নিলয়ের করাটা অভিনয়টা তাহিনের কাছে বেশ অদ্ভুত লাগেছে…….
অনেকদিন পর নিজের বাড়ীতে পা রাখতে পেরে খুশিতে মনটা নেচে উঠল তাহিনের….আজ যেন সেই মুক্ত…বাঁধ ভাঙা পাখির মত উড়তে ইচ্ছে করছে……
-তোর আর নিলয়ের মধ্যে কি হয়েছে?
চমকে উঠল তাহিন তনিমার এমন প্রশ্নে…..
-না মানে কেন কি হবে….
-তাহলে তোরা একজন আরেকজন থেকে এভাবে আলাদা থাকছিস কেন…ওকে এত করে আসতে বলার পর ও আসল না৷হসপিটাকে তুদের কাউকে ভাল করে কথা বলতে দেখলাম না…
তাহিন ফ্যলফ্যল চোখে চেয়ে আছে তনিমার দিকে কি বলবে বুঝতে পারছে না….তনিমা মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে..
-তুই কি সত্যি সুখী আছিস নিলয়ের সাথে ….?
তনিমার কথায় ভাবনার মাঝে ডুব দিল তাহিন…
জানি না আগে সুখী ছিলাম কিনা কিন্তু আজ থেকে তো বেশ সুখেই আছি….কথাগুলো শুনলে তুমি হয়ত সহ্য করতে পারবে না…কারণ আমার জীবনটা ও অনেকটা তোমার জীবনের মত হয়ে যাচ্ছে…আর এই নিয়ে তুমি নিজেকে দোষারোপ করবে…এমনিতে অনেক টেনশনে আছো…কথাগুলো শুনলে তোমার টেনশনের মাত্রাটা আরো বেড়ে যাবে…একদিন না একদিন হয়ত বলতেই নিলয়ের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার কিন্তু এই মুহূর্তে না বলাটায় শ্রেয়…তুমি অযতা আরো কষ্ট পাবে.. তাছাড়া আর আমি এটা নিয়ে ভাবতে চাইনা দুঃস্বপ্নের মনে করে সব ভুলতে থাকতে চাই যদি ও দুঃস্বপ্ন গুলা মাঝে মাঝে মনে পড়ে খুব প্যারা দেই তবু ও সেটাকে ভুলতে চাই।।।ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে মুখে একরাশ হাসি নিয়ে…..
-ওপপ আম্মু তুমি না বাড়ীতে আস্তে আস্তে কি শুরু করে দিলা….আমাকে দেখে তোমার কি মনে হচ্ছে…দেখতেছ না আজ আমি কত খুশি……
অনকে ধরে তোমার হাতের রান্না খায়নি…এবার কিছু খেতে দাও তো প্রচন্ড ক্ষিদা পেয়েছে…
তাহিন কথা ঘোরানোর চেষ্টা করলে ও তনিমার মন থেকে সন্দেহটা যায় নি….মায়ের মন কোনো কিছু না বললে ও যায়…….এতদিন ধরে এই বাড়ীতে আসতে বললে কাজের অজুহাত ফোন করলে অদ্ভুত ভাবে কথা বলে রেখে দিত….আর নিলয় তো প্রায় সময় নেটওয়ার্ক
ইস্যু দেখাত ওরা এই জায়গায় আছে না হয় ও জায়গায় আছে…..
চোখের পলক পড়তে না পড়তে একদিন কিভাবে কেটে গেল বুঝেই উঠতে পারলনা তাহিন….নিলয়ের দেওয়া আঘাতগুলা ভুলতে না পারলে ও বেশ ভালই আছে এই বাড়ীতে…চাইলে ও যে সেই আঘাতগুলা এত সহজে ভুলা সম্ভব না….
বিকেলের দিকে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তাহিন..হঠাৎ করে তনিমার ডাকে ঘুম ভেঙে গেল…..
-মামুনি যলদি উঠ…..
-হুম আরেকটু পর
-যলদি উঠতে বলছি না….
তাহিন চোখ কচলাতে কচলাতে
-ওপপ আম্মু তুমি এমন কে….
বলতেই লাফ দিয়ে উঠে বসে তনিমার পিছনে নিলয়কে দেখে….
-আ..আপনি
নিলয় ভ্রুকুচকে বলল
-এত অবাক হওয়ার কি আছে বিনা নিমন্ত্রণে শাশুড়ীর বাড়ী বুঝি আসা যায় না…
তনিমা মুচকি হেসে
-তোরা কথা বল আমি আসতেছে……
তনিমা যেতে তাহিন দাঁতে দাঁত চেপে…..
-কেন এসছেন এখনে?কি চাই আর..এখন তো নীলিমা আন্টি সেপ আছে তাহলে আরো কোনো প্রয়োজন থাকতে পারে না…..ডির্বোস পেপার পাটিয়ে দিবেন সাইন করে দিব……
-বউয়ের কাছে আসতে প্রয়োজন লাগে নাকি….
কথাটা শুনে বীষম খেল গেল তাহিন…নিলয় পাগল হয়ে গেছে কিনা ভাবছে…..নিলয় তাহিনের পাশে বসে মাথায় আস্তে করে চাপরে দিয়ে…
-আসার পিছনে কোনো প্রয়োজন নেই সেটা বলব না…না বলব তোমার জন্য এসেছি…আজ ও এসেছি নিজের প্রয়োজনে….
কি এমন প্রয়োজনে থাকতে পারে? এখন কি বিছানার সঙ্গী হিসেবে প্রয়োজন….কিন্তু সেই ইচ্ছেটা ও যে কবে পূরন করে নিয়েছে।।তাছাড়া ভাত ছড়ালে কাকের অভাব হয়ে না….তাহলে….
-এসব নাটকীয় কথার মানে কি….?
-কিসব…..?
-যা বলছেন তা….
এখন আর কোনো প্রয়োজন থাকতে পারে না।।।
ডির্বোস লেটার পাঠিয়ে দিবেন সই করে দিব..এর বাইরে আর কোনো প্রয়োজন থাকতে পারে না…
-প্রয়োজন নেই কে বলেছে…আসলে তোমার হাতের কপিটাকে এখন আমার প্রয়োজন…….
মেজজটা বিগরে গেল নিলয়ের কথা শুনে বিছানা থেকে উঠতে গেল নিলয় তাহিনের হাত ধরে নিলয়ের মুখ সোজা বসাল…তারপর নিলয় মাথা নিচু করে বলল
-ক্ষমা চেয়ে তোমাকে ছোট করব না……যা করেছি তার কাছে ক্ষমা শব্দটা খুব ছোট এর ক্ষমা ও হয়না।। তাই বলবনা ক্ষমা করে দিতে…..তোমাকে যা কষ্ট দিয়েছি এর যদি দ্বিগুন শাস্তি ও পাই না তবু ও কম হবে….তবু ও আমি চাই তুমি আমাকে শাস্তি দাও…..
নিলয়ের থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিয়ে….
-ক্ষমা চাওয়ার ও কোনো প্রয়োজন ছিল না…আমি আপনার এমন কেউ না যে ক্ষমা চাইতে হবে….বা আমি আপনাকে তার জন্য শাস্তি দিব…যা হয়েছে সেটা আমার কাছে একটা দুঃস্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই ছিল না…সেটা আমি এখন ভুলতে চাই….
ঠিক সময় ডির্বোস পেপার চলে যাবে…এবার আপনি যেতে পারেন…
-কে যাবে হুম।।না তুমি আমাকে ডির্বোস দিচ্ছ না আমি….. যদি আরেকবার ডির্বোসের নাম মুখে আন…
এইটুকু বলে পাশে থেকে একটা গ্লাস নিয়ে উপর করতে তাহিন তড়িগড়ি করে নিলয়ের হাত থেকে গ্লাস টা নিয়ে নেয়… যদি রাগে ছুটে গ্লাসটা ছুড়ে মারে এই ভয়…তখন আবার তনিমা এসে হাজার প্রশ্ন করবে…নিলয় তাহিনের এমন কান্ডে হাসতে হাসতে…
-আমি পাগল নাকি যে গ্লাসটা ছুড়ে মারব আমি তো আমি খাওয়ার জন্য নিচ্ছিলাম….শ্বাশুড়ির বাড়ী থেকে বউকে তুলে নিয়ে যাওয়া তো আর সহজ কথা না…তাই এটা বলার আগে একটু পানি খেতে চেয়েছিলাম…..
তাহিনের নিজেরই এখন ইচ্ছে করছে হাতের গ্লাসটা ছুড়ে মারতে তবে সেটা ফ্লোরে নই নিলয়ের মাথায়….এটা করাই ও যে বেকার.রাগ হনহন করে রুম থেকে বের হয়ে গেল…নিলয় এই এবার কোন নতুন নাটক শুরু করছে বুঝতে পারছেনা…
নিলয় তাহিনের রাগ দেখে মুচকি হাসছে…সে ও যে হাল ছাড়ার পাত্র নই….তাহিনের থেকে শাস্তি আদায় করেই ছাড়বে……
চলবে……
[ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন]
পেইজ _ #Update_কাহিনী