#হঠাৎ_হাওয়া (১৫)
মায়া বাকি কথা বলার আগেই ওর বাবা এসে ডেকে বলল,
—আমি তো চলে যাচ্ছি মায়া তুমি কি থাকবে?
—না, আমিও যাবো চলো যাই।
হিমালয় মায়ার হাত মুঠোর মধ্যে নিয়ে ধীরে বলল
—পারলে যাও,
মায়ার আর যাওয়া হলো না হিমালয়ের বন্ধুরা আজ কেউই বাড়ি যাবে না তাই ওরা মায়াকেও যেতে দিল না বড়রা সবাই চলে গেলো,হিমালয় মায়া আর ধ্রুব বাহির পর্যন্ত এলো ওদের আব্বু আম্মুকে এগিয়ে দিতে, মায়ার বাবা গাড়ি রেখে যেতে চাইলে হিমালয় জানালো ওর সাথে বাইক আছে মায়াকে বাইকেই ড্রপ করে দিয়ে আসবে।ধ্রুব ঢোক গিলে বলল
—তুই বাইক বের করছিস কেন?মনে নাই একবার কি হইলো, আন্টি তোরে বাইক আনতে দিল?এই মায়া তুমি ওর সাথে বাইকে উঠবা না
মায়া উৎসুক হয়ে চাইলো,
—আরে বাবার গাড়িতে কিছু কাজ ছিল গ্যারেজে নিছে বাবা আর মা আমার গাড়িতে আসছে,আর তুই তো জানিস সেদিন আমি আবিরের উপর কত্ত রাগ ছিলাম এইজন্যই এত বাজেভাবে এক্সিডেন্ট টা হইছিল
—হ্যা আর তোর ওই এক্সিডেন্ট এর পরই তো আবিরও ড্রাগ নেওয়া ছাড়লো তোরা দুইজন একসাথে সুস্থ হইলি,
—থাক ধ্রুব ওইসব কথা এখন দেখ আমাদের আবির কত্ত হ্যাপি!আমি কোনোদিন ভাবি নাই যে ও এত তাড়াতাড়ি মিষ্টির সাথে স্বাভাবিক হবে,ওহ মায়া তুমি বললে না তো কি করে হলো?
মায়া আর ধ্রুব চোখাচোখি হতেই চোখ ফিরয়ে নিলো, মায়ার হঠাৎ করেই ভয় হতে শুরু করলো,ওর হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে,মায়া ধ্রুবর দিকে তাকাতেই হিমালয় ভ্রু কুচকে তাকালো,
—কি হয়েছে মায়া তুমি কি আমাকে কিছু বলবে?
অনেক্ষণ হলো ওদের তিনজনকে দেখতে না পেয়ে নিরব পুষ্প আর দিহানও বাইরের দিকে এসে দেখলো ওরা তিনজন এক জায়গায়,
মায়া ভয়ে ভয়ে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে বলল,
—আসলে,
ধ্রুব ওমনি বাধা দিয়ে বলল,
—আরে যেভাবেই হোক হয়েছে তো এখন এসব বলার সময়? সব গেস্ট চলে গেছে মিষ্টি আর আবির একা হয়ে গেছে চল আমরা ভেতরে যাই অনেক ঠান্ডাও পড়তে শুরু করেছে আর…
হিমালয় ধ্রুব কে থামিয়ে বলল,
—তোরা আমার থেকে কিছু আড়াল করছিস,ধ্রুব আগামী পাচ মিনিট তুই কোনো কথা বলবি না,মায়া তুমি বলো আবির কেন এত তাড়াতাড়ি রাজি হয়ে গেলো?
মায়া হিমালয়ের হাত ধরে বলল,
—প্লিজ মহারাজ আপনি রাগ করবেন না, আমি জানি আবির ভাই একজনকে মনে প্রাণে খুব ভালোবাসতো আর কোনো কারণে সে অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে মারা গেছেন আর এরপর আবির ভাই পাগলপ্রায় হয়ে যান, তিনি প্রচুর ড্রাগ নেন তার স্বাভাবিক লাইফ স্থির হয়ে যায়,তখন আপনিই আবির ভাই কে সামলান,
মায়া খেয়াল করলো হিমালয়ের চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে ওর কপালের রগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তবুও যথেষ্ট শান্ত কণ্ঠে বলল,
—মায়া এসব কথা তো তোমার জানার কথা না তাই না? এগুলো আমাদের বন্ধুদের মধ্যেকার ব্যাপার এসব তুমি কিভাবে জানলে আর এর সাথে আজকের সম্পর্ক টা কোথায়?
ধ্রুব ভয় পেয়ে গেলো ওর মনে হলো এখানে আবিরের থাকা দরকার হিমালয় রেগে যাবে এক্ষুনি, ধ্রুব ছোট করে আবিরকে মেসেজ করলো ইমিডিয়েট বাইরে আসার জন্য।পুষ্প আর নিরবও মুখ চাওয়াচাওয়ি করে এগিয়ে এসেছে,
—মহারাজ আমি জানি এতে হিতের বিপরীত হতে পারতো, আবির ভাই তার কোনো কাছের মানুষের কাছে ঘুমের ওষুধ দেখলে সহ্য করতে পারেন না তিনি রিয়েক্ট করে ফেলেন,সেদিন রাতে আমি মিষ্টি আর আপনার কথা শুনে ফেলেছিলাম আমার মনে হলো মিষ্টি খুবই ডিপ্রেসড,আমি মিষ্টি কে বলেছিলাম যাতে এক পাতা ঘুমের ওষুধ এনে ওর বেডসাইডের টেবিলে রাখে, এতে যদি আবির ভাই ওর প্রতি কিছু ফিল…
হিমালয় মায়ার হাত ছাড়িয়ে ফেললো মায়া আরো কিছু বলার জন্য হিমালয়ের হাত ধরতে গেলে হিমালয় ছিটকে দূরে সরে যায়,এক প্রকার চেচিয়েই বলে
—আর ইউ ম্যাড মায়া! মানে তোমার কি নূন্যতম কোনো কমনসেন্স আছে যে যদি এর উলটো কিছু হতো?যদি স্নিগ্ধার কথা আবিরের মনে পড়ে যেত? তুমি জানো স্নিগ্ধা কে ও পাগলের মত ভালোবাসত! যদি ও আবার আবোল তাবোল কিছু করত! তুমি জানো ওর সেসব দিনগুলো কিভাবে কেটেছে? তুমি জানো না আমি জানি আমি কাছে থেকে ওকে দেখেছি আরেহ! এখনো আবির কাউকে ভালোবাসতে ভয় পায়,ওর বাবা মায়ের কি অবস্থা ছিল তুমি জানো! এখনো আবির তাদের সাথে ঠিক মত কথা বলে না! তুমি সবসময় এরকম করো কেন মায়া! সবই কি ছেলে মানুষি!
মায়া কেদে ফেললো,ও বারবার হিমালয়কে ধরে বোঝাতে চেষ্টা করতে লাগলো কিন্তু হিমালয় কিছুই শুনতে নারাজ, ধ্রুব নিরব পুষ্প সবাই অনেক চেষ্টা করলো ওকে বোঝাবার,আবির সবটা বোঝার চেষ্টা করছিল একটু দূরে দাঁড়িয়ে
—ধ্রুব তুই আমার সামনে থেকে প্লিজ সর আমি কিন্তু কিছু করে ফেলব তুই প্লিজ সর আমি জানি এসব তুই মায়াকে বলেছিস
—ধ্রুবর কোনো দোষ নেই
—ইউ শাট আপ, তোমার কাছে আমি কোনো এক্সপ্লেইনেশন চাই না, যাস্ট গেট লস্ট ফ্রম হেয়ার।তুমি কি ভাবো সব তোমার ইচ্ছে মতো? আমি তোমার সব কথা শুনি মানে কি? তুমি যা ইচ্ছে করবে? আরে এটা আবির আর মিষ্টির মধ্যেকার ব্যাপার একটা সময় ওরা ঠিক সামলে নিত তোমাকে কেউ বলেছে মাথা ঘামাতে?আমি তোমার সাথে কথা বলছিই বা কেন, আমি বুঝলাম না নিরব তুমি কেন এভাবে আমাকে ধরে রেখেছো? এই পুষ্প সর প্লিজ।
দিহান এগিয়ে এসে হিমালয় কে ধরে বলল,
—হিমালয় প্লিজ শান্ত হও আমি জানি হয়তো খারাপ কিছু হতে পারতো কিন্তু কিছু তো হয় নি তাই না?
হিমালয় চুপ করে রইলো ও কারো কথা শুনছে বলে মনে হচ্ছে না, আবির এগিয়ে এসে বলল,
—কি ব্যাপার এত চেচামেচি কিসের,মায়া তুমি কাদছ কেন?
মায়ার কান্নার বেগ বেড়ে গেল ওর এবার ভয় হতে লাগলো, মায়া শব্দ করে কাদতে লাগলেই হিমালয় এবার সশব্দে ধমক দিয়ে উঠলো ও এত জোড়ে ধমক দিলো যে সবাই হচকচিয়ে গেলো মায়া কেপে উঠলো আবির হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো।মায়া চুপ করে গেলো ও আর দাড়িয়ে থাকতে পারছে না, হিমালয় নিরবের হাত ঝাকুনি দিয়ে ছাড়িয়ে বাইকের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো এবার আবির ভয় পেয়ে গেলো আগের বারের কথা ওর খুব ভালো মনে আছে আবির চেচিয়ে উঠলো
—তুই যদি বাইকে উঠিস আমি সত্যি কথা তোর সাথে আর কোনোদিন কথা বলব না
হিমালয় কারো কথা শুনছে বলে মনে হলো না, ও বাইক স্টার্ট দিতেই বুঝলো কেউ একজন উঠে বসেছে পেছন থেকে কেউ ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে, হিমালয় যথেষ্ট শান্ত কণ্ঠে রাগ নিয়ে বলল,
—এমনিতেই অনেক বড় অন্যায় তুমি করে ফেলেছো মায়া প্লিজ এখন নেমে যাও আমি একা থাকতে চাই,আমি তোমাকে অনেক খারাপ কথা বলে ফেলেছি এখানে থাকলে আরো বাজে কথা বলে ফেলব যা তুমি সহ্য করতে পারবে না আর না আমি সহ্য করতে পারব,
আবির আর এগিয়ে গেল না ওরা একটু তফাতেই দাঁড়িয়ে রইলো,মায়া হিমালয়ের কথা শুনলো না ও খুব শক্ত করে হিমালয় কে জড়িয়ে ওর পিঠে মুখ লুকিয়ে অঝোরে কেদে চলেছে
—মায়া নামো,
—আমি আপনার সাথে যাবো
—তোমাকে নিয়ে আমি এই মুহুর্তে বাইক চালাতে পারব না
মায়া আরো শক্ত করে পেছন থেকে মুঠো ভরে হিমালয়ের ব্লেজারের কলার চেপে ধরে কান্নার বেগ বাড়িয়ে বলল,
—আপনি আমাকে বকুন আরো বকুন দরকার হলে আপনি আমাকে মেরে ফেলুন,কিন্তু আপনি এখান থেকে কোথাও যেতে পারবেন না কোথাও না, আমি ভুল করেছি ছেলে মানুষি করেছি সব আমার দোষ আপনি আমাকে শাস্তি দিন কিন্তু আপনাকে আমি ছাড়ব না আমাকে ছাড়িয়ে আপনি কোথাও যেতে পারবেন না। কোত্থাও না।আমি কিন্তু মরে যাবো সত্যি মরে যাবো…
হিমালয়ের হঠাৎ মনে হলো মায়ার হাত আলগা হয়ে আসছে… ও এক হাতে মায়ার হাত ছুটে যাওয়ার আগেই চেপে ধরলো মায়া ওর শরীর হিমালয়ের উপর ছেড়ে দিলো হিমালয় চেচিয়ে আবিরকে ডাকলো এবার সবাই দৌড়ে এলো হিমালয় ধ্রুব কে বলল,
—বাইক টা ধর,ও অজ্ঞান হয়ে গেছে।
হিমালয় আবিরদের বাড়ির একটা ঘরে সোফায় বসে আছে মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে, ওর খুবই অনুশোচনা হতে লাগলো বারবার ও মায়াকে কষ্ট দিয়ে ফেলে, কথাগুলো ও মায়াকে বুঝিয়েও বলতে পারতো যেখানে মায়ার বাবা ই কখনো ওকে কিচ্ছুটি বলে না সেখানে হিমালয় কতবার মায়াকে বকে ফেলেছে, অথচ এই মেয়েটা একটু জোরে কথা সহ্য করতে পারে না,হিমালয় ওর পাশের দেয়ালে মুঠো পাকিয়ে জোড়ে আঘাত করলো,পাশে খুলে রাখা ব্লেজারটা ছুড়ে ফেলল,নিজের চুল নিজেই টানতে লাগলো,নিজের ওপরই এবার ওর নিজের রাগ হতে লাগলো।এমন সময় হিমালয় দেখলো মিষ্টি দরজায় নক করছে, হিমালয় মিষ্টির দিকেও তাকাতে পারলো না, মিষ্টি ভেতরে এসে মায়াকে দেখে হিমালয় কে জিজ্ঞেস করলো
—ওর কতক্ষণ নাগাদ জ্ঞান আসতে পারে কিছু জানেন ভাইয়া?
হিমালয় উঠে দাড়িয়ে বলল,
—কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরে আসবে, তুমি চিন্তা করো না আসলে…
—আমার চিন্তা কখনোই আপনার থেকে বেশি না,আমি আমার একটা নরমাল ড্রেস নিয়ে আসছি ওকে চেঞ্জ করিয়ে দেবো এত ভারী ড্রেস পড়ে আছে,
—আমি একটু বেশি রিয়েক্ট করে ফেলেছি মিষ্টি আসলে আমার কাছে আবির যে কি আমি তোমাকে বোঝাতে পারব না
—হয়তো এজন্যই মায়া চেয়েছিলো আপনার বন্ধু আবির ভালো থাকুক
হিমালয় আর কিছু বলতে পারলো না,মিষ্টি বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর আবির আসলো,
—নিরব পুষ্প ওরা সবাই তো চলে যেতে চাচ্ছে কি বলব?
—জানি না।
—আচ্ছা
—আবির…
—হুম বল,
—তুইও কি আমার উপর রেগে আছিস?
—জানিস হিমালয় যখন আমি আমার বেডসাইডের টেবিলে এক পাতা ঘুমের ওষুধ দেখলাম আমার ভেতরে তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো কারণ তার কিছুক্ষণ আগেই আমি মিষ্টির সাথে খুবই দুর্ব্যবহার করেছি,মিষ্টি কখনোই আমাকে বলে নি ওকে বিয়ে করতে যা করার আমি করেছি আমি শুধু ওকে কষ্টই দিয়েছি যা ওর কখনোই প্রাপ্য না, আমি ওষুধ গুলো দেখে যখনই মিষ্টি কে জিজ্ঞেস করলাম ওগুলোনকার আর মিষ্টি বলল ওষুধ গুলো ওর আমার কি হলো আমি জানিনা আমি শক্ত করে মিষ্টি কে জড়িয়ে ধরে কেদে ফেললাম অশান্ত হয়ে গেলাম, আমাকে শান্ত করলো মিষ্টি। তখন বুঝলাম ভালোবাসা হুটহাট ই হয়ে যায় কিছু কিছু শূন্যতার মধ্যে দিয়েই ভালোবাসা আসে…
এপর্যন্ত বলেই আবির মায়ার দিকে তাকালো মায়া স্থির চোখে তাকিয়ে আছে দেখে আবির আর কিছু বললো না ও খেয়াল করলো মায়ার চোখ টলটল করছে, মায়া ওর মুখের ওপর কম্বল টেনে নিলো অন্যপাশে মুখ ঘুরিয়ে ফেললো,আবির হেসে ফেললো হিমালয়কে ইশারায় মায়ার দিকে দেখিয়ে ও ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।হিমালয় ছোট করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে মায়ার বিছানায় গিয়ে বসলো,
—এইদিকে ঘোরো মায়া
—আমার এখনো জ্ঞান ফেরে নি
হিমালয় হেসে ফেলল,
ওর মুখের উপর থেকে কম্বল টা সরিয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,
—কখন ফিরবে?
মায়া চোখ বন্ধ করে আহ্লাদে কেদে ফেললো নিচের ঠোট কামড়ে কান্না আটকে বলল,
—আমি চাই কোনোদিন যাতে না ফেরে,
হিমালয় বুঝলো অভিমানের পাল্লা অনেক বেশি ভারী হয়ে গেছে, তাতে কি পুরো রাত পরে আছে মহারানীর এই অভিমান মহারাজ ঠিক ভাঙিয়ে নেবে।মায়া হিমালয়ের হাত ছাড়িয়ে উঠে বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে মাথা নিচু করে রইলো হিমালয় মায়ার সামনে মেঝেতে দুই হাটু গেড়ে বসে মায়ার মুখ দুহাতে আজলা ভরে নিয়ে বলল,
—কতবার ভুল করে দেখেছো, দ্যা গ্রেট হিমালয়কে কতবার তোমার সামনে সরি বলতে হয়?এর পর থেকে কাউন্ট করে রাখবে ঠিক আছে?
মায়া কান্নার বেগ বাড়িয়ে দিল তবে শব্দ করল না,এমন সময় মায়ার ফোন বেজে উঠলো,মায়া দেখলো ওর বাবা কল করেছে মায়া রিসিভ করে বেলকনিতে চলে গেলো,বাবা কে কিছু বুঝতে দিল না কথা শেষ করে ও আর রুমে আসলো না হিমালয় ই বারান্দায় গিয়ে দেখলো মায়া ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেদে চলেছে,হিমালয়ের নিজের কাছে নিজেকে খুব বেশি ছোট লাগছিলো কতটা কষ্ট ও মায়াকে দিয়ে ফেলেছে কতটা! হিমালয় মায়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো মায়া কিছুক্ষণ চেষ্টা করেও ছাড়িয়ে নিতে পারল না হিমালয় শক্ত করে মায়ার হাত ধরে বলল,
—ছাড়িয়ে চলে যেতে চাও
মায়া আর নড়লো না,শব্দ করে কেদে ফেললো আহ্লাদী কন্ঠে বলল,
—আপনি আবার আমকে বকেছেন,সবার সামনে বকেছেন, আপ্নি জানেন আপনার ধমক শুনে আমার গা কেপে উঠেছিল?আমার কত কষ্ট হচ্ছিল?, আবার আপনি বাইকে উঠে চলে যাচ্ছিলেন আমাকে ফেলে? একবার এক্সিডেন্ট করে তো সবাইকে ভয় ধরিয়ে দিয়েছেন এখন আবার যাচ্ছিলেন আমার কত ভয় লাগছিল আপনি জানেন?আপনার এত রাগ এর আগে আমি কোনোদিন দেখি নি।আপনার ভালোবাসার মত আপনার রাগও ভয়ংকর।
হিমালয়ের ভালোই লাগছিলো মায়ার বাচ্চা বাচ্চা কথা গুলো,মায়ার মুখের সাথে গাল ঘষে আদুরে গলায় বলতে লাগলো
—আমার মহারানী কি খুব রেগে আছে? খুব? তাকে কি সরি বলতে হবে? নাকি সে কষ্ট পেয়েছে অনেকখানি আদর করে দিলে হবে?
মায়ার গা শিরশির করে উঠলো ও আর কোনো কথা বলতে পারলো না, হিমালয় মায়াকে বলল,
—তুমি কিন্তু আমায় যেতে দাও নি মায়া কি এক বাধনে তুমি আমায় বেধে ফেলেছো তুমি নিজেও জানো না কারো কথা না শোনা আমি তোমাকে কিছুতেই উপেক্ষা করতে পারি না এত রাগের মধ্যেও আমি ভাবছিলাম তোমাকে যাতে আমি কষ্ট না দিয়ে ফেলি তাই সেখান থেকে চলে যাচ্ছিলাম বিশ্বাস কর তখন চলে গেলে আমার ঠিক কিছু একটা হয়ে যেত কিন্তু তোমাকে অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা হয়তো সৃষ্টিকর্তা আমাকে দেননি।
হিমালয় মায়ার ঘাড়ে একটা চুমু খেতেই মায়া কেপে উঠলো হিমালয় স্পষ্ট তা বুঝতে পারলো,হালকা হেসে বলল,
—এখন শুধু তখন দেওয়া ধমকটা শোধ করলাম বাকিটা খুব শীঘ্রই শোধ করে দেবো বিয়েটা হোক।তোমার সব কষ্ট আমি আদর দিয়ে বিলীন করে দেব,আমি বাইরে যাচ্ছি তুমি চেঞ্জ করে ঘুমিয়ে পড়ো তোমার রেস্ট প্রয়োজন এখন বাসায় গেলে আঙ্কেল বুঝে যাবেন আমি সকালে এসে তোমাকে বাসায় পৌঁছে দেবো,
মায়া হিমালয়ের হাত ধরে বলল,
—আপনি চলে যাবেন!
হিমালয় হালকা হেসে বলল
—চিন্তা করো না আমি অন্য রুমে আছি তুমি দরজা লক করে দাও।কোনো অসুবিধা হলে আমায় কল করো
হিমালয় বেরিয়ে গেলো, মায়া তারপরেও অনেক্ষণ সেখানে দাড়িয়ে রইলো মনে মনে বললো আপনি দূরে গেলেই আমার অসুবিধা হয় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি এ কেমন অসুখ মহারাজ আপনি এ কেমন ওষুধ বলুনতো!
চলবে…
সামিয়া খান মায়া
#হঠাৎ_হাওয়া (১৬)
গতরাত থেকে মায়া ফোন রিসিভ করছে না এদিকে হিমালয় হসপিটাল,পাসপোর্ট, ভিসা সবকিছু মিলিয়ে ভীষণ ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে,হিমালয় চেম্বারে বসে বেশ কয়েকবার মায়াকে ফোন করেও পেলো না,এমন সময় পুষ্প এসে নক করলো,ওর পিছুপিছু ধ্রুবও এলো, ধ্রুব এলো বলতে পুষ্পই ওকে জোর করে নিয়ে এসেছে
—কিরে ব্যাস্ত নাকি তুই
—আরেহ না আয়,মায়াকে কল দেই ও তো রিসিভই করে না,
বলে ধ্রুবের দিকে তাকাতেই ধ্রুব হিমালয় কে একটা মুখ ভেংচি দিল, হিমালয় উঠে একহাতে কুনুই দিয়ে ধ্রুবের গলা পেচিয়ে ধরে বলল,
—এমনিই মায়ার ঢং এর জ্বালায় আমি বাচি না এখন ওর সাথে মিশে তুইও ঢং শুরু করছস না?আমার সাথে এই কয়দিন কথা বলিস নাই ক্যান
—তুইও তো এক্কেরে মাথা মোটা, কি খাইয়ে তুই টপ রেজাল্ট করতি আমি বুঝলাম না আমি যে তোর উপর রাগ করছি এইডাও তো বুঝস না আমারই আসা লাগলো তোর কাছে,আর তুই যে মায়ারে ঢঙ্গী কইছস এইডাও আমি ওরে বলব
—মহারানী ফোন রিসিভ করলে তো বলবি
—সে তো তোর ফোন রিসিভ করে না,আমার সাথে তো একটু আগেও কথা হইছে,
পুষ্প পেপার ওয়েট দিয়ে খেলতে খেলতে বলল,
—আমার সাথেও তো সকালেই কথা হলো
হিমালয় অবাক হয়ে বলল
—মানে কি! আমার সাথে কাল রাত থেকে কথা হয় না!
পুষ্প এবার বলল,
—বিয়ে নিয়ে আবার ঝামেলা করছিস নাকি
—কই না তো! আমি তো বলেছি যাওয়ার আগে আকদ হবে আমি ফিরলে অনুষ্ঠান, ইভেন বাসায়ও তো সেভাবেই সব ঠিকঠাক
—তাহলে দেখ তোর সাথে দেখা করার বাহানা, মেয়েটা তোকে পাগলের মত ভালোবাসে, তোকে ছাড়া থাকার কথা ও ভাবতেই পারে না,
হিমালয় মিটমিটি হাসলো, ধ্রুব চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল,
—আমার তো ভয় করছে হিমালয় চলে গেলে ও কান্নাকাটি করে ভয়ংকর পরিস্থিতি না তৈরি করে, আর মায়াকে বিশ্বাস নেই দেখা গেলো ও আবার না তোর কাছে চলেই যায় দুদিন পর,দেখা গেলো একদিন খুব ঠান্ডায় দরজা খুলে তুই দেখলি বরফ পড়ছে আর মায়া কেপে কেপে বলছে,মহারাজ আমায় জড়িয়ে ধরুন তো আমি ঠান্ডায় জমে যাচ্ছি!
তিনজনেই সশব্দে হেসে উঠলো, আবির আর নিরবও এসে যোগ দিলো,পুষ্প এবার গম্ভীর হয়ে বলল,
—শোন, মজা পরে হবে যে কথা আমি বলতে চাচ্ছি,তা হলো আমরা কিন্তু কথার সাথে খুবই অন্যায় করছি,
হিমালয় চেয়ারে বসতে বসতে বলল,
—কি রকম?
পুষ্প নিজের চেয়ারটা সামনে টেনে হিমালয়ের দিকে একটু ঝুকে বসে বলল,
—দেখ হিমালয় এটা তো তুইও জানিস যে কথার তোর প্রতি যে ফিলিংস সেটা কখনোই শুধু বন্ধুত্ব না, হ্যা এটা ঠিক যে তুই কখনো ওকে প্রশ্রয় দিস নি বা তোর তরফ থেকে সরাসরি সেটা না ই ছিল কিন্তু ইদানীং স্পেশালি মায়া তোর লাইফে আসার পর থেকে কিন্তু তুই টোটালি ওকে ইগনোর করছিস,
হিমালয় টেবিলের উপর ভর করে উঠে দাঁড়িয়ে সবার উদ্দেশ্যে বলল,
—তোদের সবারই কি সেম ধারণা
কেউ কোনো কথা বলল না হিমালয় এবার বলল,
—ওকে দেন আমি ধরে নিচ্ছি মৌনতা সম্মতির লক্ষণ, তাহলে তোরা আমাকে বল আমি কি একাই কথা কে ইগ্নোর করছি না তোরা সবাই লাস্ট তোদের কার কবে কথার সাথে যোগাযোগ হয়েছে একটু মনে করে বলতো,
সবাই এবার খেই হারিয়ে ফেলল,যে অভিযোগ নিয়ে ওরা সবাই হিমালয়ের কাছে এসেছিলো সেম দোষে যে ওরাও দোষী হিমালয় ওদের তা বুঝিয়ে দিলো, হিমালয় এবার টেবিলের উপর ভর দিয়ে পুষ্পের দিকে ঝুকে শান্ত চোখে তাকালো,
—আচ্ছা চল বাদ দিলাম তাও এবার আসি কথা আর আমার বন্ধুত্ব বা বন্ধুত্বের বেশি কিছু সম্পর্কে এবং তার সাথে মায়া,কথা বরাবর খুব বুঝদার মেয়ে খুব গোছালো খুবই হেল্পফুল কোনো কথা ওকে বোঝাতে হয় না যথেষ্ট বুদ্ধিমতী কথাও কম বলে মোট কথা একটা বাড়ির বউ হিসেবে একজন স্ত্রী হিসেবে ও পার্ফেক্ট, বাট আমি কখনোই ওকে সেভাবে দেখি নি ও বরাবরই আমার খুব ভালো একজন বন্ধু ছিলো মায়া যদি আমার লাইফে নাও আসতো তাহলেও ওর সাথে আমার কিছু হবার কোনো সম্ভাবনা ছিল না যতই আমার বাড়ির লোক যাই বলুক শেষ পর্যন্ত হয় কিন্তু সেটাই যেটা আমি বলি,আমি নিজে খুব গোছানো একজন মানুষ, আমাকে গুছিয়ে দেবার কারো দরকার নেই আমার দরকার এমন কেউ যে আমাকে এলোমেলো করে দেবে যাকে আমি গুছিয়ে দেবো, যার জন্য আমারও পাগলামি করতে ইচ্ছে হবে যে কথায় কথায় কষ্ট পাবে যার রাগ হবে অভিমান হবে, ঠিক যেমন টা মায়া।কিন্তু কথা এসব কিছুর উর্ধ্বে।আর বেশ কিছুদিন আঙ্কেল অসুস্থ তাই কথা ছুটিতে ছিল আমাদের রেগুলার কথা হয়েছে হ্যা ইদানীং আমি খুব ব্যস্ত থাকি কারো সাথেই আমার কথা হয় না তোদের সাথেও না ইভেন দেখ মায়াও আমার উপর আপসেট।আর কথা নিজেই আমাকে ইগনোর করে আর আমি যাস্ট ওকে স্পেস দিচ্ছি যাতে আমাদের বন্ধুত্বটা ভালো থাকে।এম আই ক্লিয়ার মিস পুষ্প হায়দার?
পুষ্প ছোট একটা নিঃশ্বাস ফেললো ও জানে এটাই হিমালয় যে সহজে কথা বলে না আর যে কথা বললে তার কথার উপর বলার কিছুই থাকে না।
সন্ধ্যায় মায়া ড্রয়িং রুমে সোফার উপর সটান হয়ে শুয়ে কোলের মধ্যে কুসন নিয়ে মোবাইলে হিমালয়ের সাথে ওর ছবিগুলো দেখে নিজেই বিড়বিড় করছিলো, এমন সময় কলিংবেল বাজলে মায়া খুব বিরক্ত হলো এখনই তো বাবার আসার কথা না কে এলো? মায়া বিরক্ত হয়ে ডাকলো
—ওসমান চাচা দেখো তো কে
ওসমান চাচা দরজা খুলতেই হিমালয় ইশারায় না করলো কে এসেছে জানাতে, ওসমান চাচাও একগাল হেসে দরজা বন্ধ করে ভেতরে চলে গেলেন
—কে এসেছে চাচা?
মায়া কোনো সাড়া পেলো না, নিজের ভ্রু কুচকে ব্যাপারটা পাত্তা না দিয়েই ও হিমালয়ের সাথে নিজের একটা ছবি ছবি দেখতে পেলো মিষ্টির বৌভাতের দিন তোলা যেখানে হিমালয় এক হাত মায়ার পিঠে অন্য হাত পকেটে ঢুকিয়ে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে আর মায়া এক হাতে হিমালয়ের ব্লেজারের কলার চেপে ধরে হিমালয়ের দিকে তাকিয়ে আছে,হিমালয় সোফার পেছনে দাঁড়িয়ে মায়ার দিকে উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে,মায়া কপাল কুচকে ছবিটা জুম করে বলতে থাকলো
—কিই ক্যামেরা ম্যানের কি রূপ জ্বালাইছে?এই যে,আমি এত সুন্দরী একটা মেয়ে যে লজ্জার মাথা খেয়ে আপনার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকায় আছি সেইটা খেয়াল করছেন!আহারে! কি পোজ নিছে মনে হয় এইটারে সিভিতে দিয়ে উনি মেয়ের বাড়ি পাঠাবে হেহ! একটুও ভাল্লাগতেছে না আরে ক্যাবলা লাগতেছে ক্যাবলা,ফালতু লোক একটা,
বলে মায়া নিজেই মুখ ভেংচি দিয়ে মুখ ফেরাতেই ভূত দেখার মত চমকে উঠলো! হিমালয় এক ভ্রু উচিয়ে জিজ্ঞেস করলো
—কাকে ফালতু বলছো মায়া?
মায়া খেয়াল করলো সাদা শার্ট কুনুই পর্যন্ত ফোল্ড করে এক হাতে ভাজ করা এপ্রোনটা নিয়ে পাশের দেয়ালে হ্যালান দিয়ে হিমালয়ই দাঁড়িয়ে আছে!
মায়া ছোট একটা নিঃশ্বাস ফেলে ভাবলো এটাও নিশ্চয়ই কল্পনা ও কদিনে এরকম হাজার বার হিমালয় ওর কল্পনায় এসেছে আর হাজার বার মায়ার মন খারাপ করিয়ে চলে গেছে, মায়া নির্বিকার ভাবে সোফা থেকে উঠে নিজের ঘরের দিকে যেতে লাগলো হিমালয় অবাক হয়ে গেলো, মায়াকে কত ক্লান্ত লাগছে!
—মায়া?
মায়া এবার চমকে পেছন ফিরে তাকালো!বিস্মিত হয়ে বলল,
—আপনি কি সত্যি এসেছেন মহারাজ!
হিমালয় চরম বিস্ময় নিয়ে বলল,
—মিথ্যে করে আবার আসা যায় নাকি?!
মায়া দৌড়ে হিমালয়ের বুকের উপর আছড়ে পড়লো হিমালয় টাল সামলে দাড়ালো! মায়া হাউমাউ করে কেদে ফেললো,হিমালয় এক হাত মায়ার মাথায় রাখলো,ও বিস্ময়ের চরম সীমা কাটিয়ে উঠতে পারছিলো না এই মেয়েটা ওকে কতখানি ভালোবাসে! ফোন রিসিভ না করার জন্য যতখানি রাগ অভিমান, সারাদিনের যত ক্লান্তি নিয়ে হিমালয় এসেছিলো সব হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে লাগলো!হিমালয়ের নিজের বুকের মধ্যেই চিনিচিনি করে উঠলো এই মেয়েটাকে ছেড়ে ও কি করে থাকবে! ও তো নিজেই পাগল হয়ে যাবে!মায়া বরফের মত ঠান্ডা হাতে হিমালয়ের গাল স্পর্শ করে বলল,
—আমার একটুও ভালোলাগে না আপনাকে না দেখলে, সারাদিন মনে হয় কি যেন নেই কিচ্ছু নেই! আমি একা একাই আপনার ওপর অভিমান করে বসে থাকি আমার কি অসুখ হলো বলুনতো!আমি কি এই অসুখে মরেই যাবো!
হিমালয় মায়ার এক হাত মায়ার ঠোটের উপর চেপে হাতের অপর পৃষ্ঠে একটা চুমু খেয়ে বললো
—এত সহজেই তুমি মরে যাবে মায়া?আমার ট্রিটমেন্ট নেবে না?
মায়া অসহায়ের মত তাকিয়ে রইলো…..শান্ত কন্ঠে বলল,
—একবার চোখের আড়াল হলেই আপনার আর খোজ থাকে না আপনি ব্যস্ত মহা ব্যস্ত হয়ে পড়েন আমার ভালোলাগে না একটুও না, মহারাজ আপনি চাকরিটা ছেড়ে দিন তো, আপনার কোনো ডিগ্রী ফিগ্রী আনতে হবে না
হিমালয় অবাক হয়ে মায়ার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো,
—তোমার কি হয়েছে মায়া?এরকম করছ কেন! তোমার শরীর কি খারাপ কই এসো তো দেখি,
মায়া হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
—কোনো শরীর খারাপ নেই আমার, আমার শুধু মনে হয় আপনাকে আমি পাব না, আপনার খুব কাছে এসে আমি আপনাকে ছুতে পারব না, আমার গলা শুকিয়ে আসে আপনি আমার না হলে আমি কি করব!
মায়া খুব জোড়ে হিমালয় কে জড়িয়ে ধরে বলে,
—আমার মনে হয় এত ছোট জীবন এত কম সময় আমি আপনাকে কাছে পাই! যদি আমি আপনাকে হারিয়ে ফেলি!আপনি কিন্তু আমার মহারাজ আপনি শুধুই আমার,
হিমালয় মায়ার বাহু ধরে ওকে শান্তু করে বলল,
—কি হয়েছে মায়া?
মায়া অসহায়ের মত হিমালয়ের বুকে ঢলে পড়লো খুব ক্লান্ত হয়ে পড়লোএক হাতে হিমালয়ের শার্টের বোতাম নাড়তে নাড়তে বলল,
—কিচ্ছু না খুব খিদে পেয়েছে, আমাকে খাইয়ে দিন তো,
হিমালয়ের কেমন মায়া হলো,মেয়েটা যে কেমন করে ওর সবটা তোলপাড় করে দেয় যত নিজেকে পরিপাটি করে হিমালয় ওর সামনে আসে ঠিক ততটাই ভেঙে গুড়িয়ে দেয় মেয়েটা ওকে ওর সবটা এলোমেলো করে দেয়।বাবাকে বলতে হবে বিয়ের ডেট টা এগোতে এই মেয়ে এভাবে অসুস্থ হয়ে যাবে।
চলবে…
সামিয়া খান মায়া