#হলুদ_খাম
লেখিকাঃ #তানজীমা_ইসলাম_রিয়া
__________________[৩]________________
|
|
|
|
|
তনিমা মেয়েকে ধমক দিয়ে বলল, ” আমরা যাবো মানে!? তোকে একা বাসায় রেখে আমরা বেড়াতে যাবো!? তখন বলতি, তোর এইচএসসি পরীক্ষা শেষে যাবি, এইচএসসি শেষ হলে বললি এডমিশন দিয়ে যাবি, এডমিশন শেষ এখন অনার্সে উঠেছিস। পড়াশোনার চাপও কম!! তাহলে কেন যাবি না তুই!!? আর তোকে বাসায় রেখে গেলে সবাই যখন জিজ্ঞেস করবে তনু আসেনি কেন!!? কি বলবো তখন!!?
তনু বিড়বিড় করে বলল, ” আমি না গেলে কারও কিচ্ছু এসে যায় না!
তনিমা ধৈর্য্য হারিয়ে বলল, ” আমি আর কোনো অযুহাত শুনবো না তনু, তুই যাবি মানে যাবি।
বলেই গটগট করে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল তনিমা, তনু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ” আড়াইটা বছর আপনার থেকে কোনো চিঠি পাইনি! আচ্ছা আপনি কি আমাকে ভুলে গেছেন সায়ন ভাইয়া!!? ভুলেই গেছেন হয়তো!! আমিও ভুলে গেছি আপনাকে!! আমি যাবো নানুবাসায়, গিয়ে দেখিয়ে দেবো আপনাকে আমার একদম মনে নেই!!!
__________________________________
তনুর সারাটা সকাল অস্থিরতা নিয়েই কেটেছে, ব্রেকফাস্ট করে বই নিয়ে বসেছিলো।
কিন্ত সেখানেও মনোযোগ দিতে পারলো না, ফোন আর হেডফোন নিয়ে ছাদে চলে গেল।
কিন্ত প্রখর রোদে সেখানেও দাড়াতে পারলো না, ছাদের মেঝে দিয়ে যেন আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত ঘটছে!
ছাদ থেকে দ্রুত পায়ে নেমে নিজের ঘরে চলে গেলো সে, একটুখানি ছাদে গিয়ে দাড়াতেই পারলো না অমনি তনুর মাথা ঝিমঝিম করছে।
ফ্যান ছেড়ে তনু বেডে শুয়ে পড়ল, তনিমা মেয়ের ঘরে ঢুকে সেদিকে না তাকিয়ে কাঠের আলমারির ভেতর থেকে ছোট লাগেজটা বের করল।
তনু চোখ বুজেই বুঝতে পারছে তার মা ঘরে ঢুকেছে, কিন্ত কি করছে তা চোখ মেলে দেখার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে নেই তার।
আজকাল সে বড্ড বেশি অলস হয়ে গেছে। চুলও ঠিকমতো আচড়ায় না সে।
বাইরে গেলে চুল গুলো উচু করে হাত খোপা বেধে নেয়। তার ওপর দিয়ে হিজাব বেধে বেরিয়ে পড়ে।
তনিমা লাগেজটা তনুর বেডে এনে ফেলতেই, তনুর ভ্রু জোড়া কুচকে গেলো।
মেয়ের কাপর-চোপর বের করে বেডে রাখছে তনিমা, এবার তনু চোখ না মেলে থাকতে পারলো না।
চোখ মেলতেই বিস্ময়ে তার চোখ জোড়া বড়বড় হয়ে গেলো, তনিমার সেদিকে খেয়াল নেই।
সে বেছে বেছে কাপড়চোপড় বের করার পর আলমারি আর কাবার্ড লক করে দিল।
তনু কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই তনিমা লাগেজ দেখিয়ে বলল, ” কি কি ড্রেস নিবি আমি সব বের করেছি, কাপড়চোপড় গুলো লাগেজে ঢুকিয়ে তাড়াতাড়ি গোসলে যা।
এইটুকু বলে তনিমা ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই তনু জিজ্ঞেস করল, ” কিন্ত কেন!?
তনিমা ভাবলেশহীন ভাবে তাকিয়ে বলল, ” কেন আবার!? আজ বিকালে আমি আর তুই আমতলী যাবো, কাল তোর বাবা আর রোহান যাবে।
তনু কিছুটা বিরক্ত হয়ে বলল, ” কিন্ত প্রোগ্রাম তো পরশুদিন! এতো আগে গিয়ে কি করবো!?
তনিমা অবাক হয়ে বলল, ” এতো আগে কই রে! কাল বাদে পরশু অনুষ্ঠান! আজ না গেলে সেখানে সব সামলাবে কে শুনি!! এতগুলো মানুষ গিয়ে থাকবো, সেখানে একটা গোছগাছের ব্যাপার আছে না!!
তনু আবার বেডে শুয়ে বলল,” কেন! মামা মামিরা গিয়ে গোছগাছ করুক, কেয়ারটেকার আংকেলও তো আছে!!
তনিমা তনুকে টেনে ওঠাতে ওঠাতে বলল,” স্নেহারা আজ যাচ্ছে, সাথে ভাবিরাও! ভাইয়ারা কাল যাবে!! নে উঠে এগুলো গুছিয়ে গোসলে যা!!!
তনু না চাইতেও কাপড়চোপড় গুলো লাগেজে ঢুকিয়ে নিল।
তনিমা দুপুরের রান্না করছে, দুপুরে খেয়েই বেরিয়ে পড়বে তারা।
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
ভ্যাপসা গরম পড়ছে আজ, তনু টিস্যু দিয়ে বারবার চোখমুখ মুছছে।
যদিও সিটে বসে যাচ্ছে, কিন্ত গরম একেবারেই সহ্য করতে পারছেনা সে।
বাসে একের পর এক যাত্রী উঠছে নামছে, তনুকে জানালার ধারে দিয়ে ভেতরের সিটে বসে আছে তনিমা।
এতো গরমেও তার চোখেমুখে বিন্দুমাত্র বিরক্ত দেখতে পাচ্ছেনা তনু। হয়তো এতো বছর পর বাপেরবড়ি যাচ্ছে বলে!
তনু এর আগেও অনেকবার খেয়াল করেছে, তার মা যতবারই বাপেরবাড়ি যাওয়ার জন্য রওনা হয় তার চোখেমুখে অদ্ভুত আনন্দের ঝলকানি দেখা যায়।
মেয়েরা এমনই, বাপেরবড়ি যাওয়ার প্রসঙ্গ উঠলেই এদের চেহারায় স্পষ্ট আবেগ ফুটে ওঠে।
বাস জোরে চলতেই ভ্যাপসা ভাবটা বেশ কমে গেছে, জানালা দিয়ে ঠান্ডা হাওয়া আসছে।
তনু জানালার দিকে হালকা কাত হয়ে সিটে হেলান দিয়ে বসে আছে।
স্নেহার মেয়েকে ফোনে তোলা ছবিতে দেখেছে তনু, বেবি হওয়ার আগে স্নেহা বীরগঞ্জে বাপেরবাড়িতে এসেছিলো, প্রথম বাচ্চা! কিভাবে কি করবে!! কি খাবে না খাবে!!! এসব কিছুই জানতো না সে।
শ্বশুর শ্বাশুড়িও বেচে নেই যে তার খেয়াল রাখবে, স্নেহার স্বামী ইমরান সারাদিন অফিসে ব্যস্ত থাকে।
তাই কোনোরকম রিস্ক না নিয়ে স্নেহাকে বাপেরবাড়িতে রেখে গেছিলো ইমরান।
গত সপ্তাহে স্নেহার ডেলিভারি ছিলো, সবাই গেলেও সেদিন তনু ইচ্ছে করেই পা মচকে গেছে বলে হসপিটালে যায়নি।
কিভাবে যাবে সে!? গেলেই তো তার দেখা হয়ে যাবে সায়নের সাথে!!
আড়াইটা বছর ধরে পালিয়ে পালিয়ে অবশেষে সায়নের সামনাসামনি হতে চলেছে তনু।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তনু অতীতে ডুব দিল, স্নেহা আপুর বিয়ের প্রায় দশ দিন আগেই সায়ন ভাইয়া তাকে আর রোহানকে নিতে এসেছিলো।
তখন তনু ক্লাস টেনে উঠেছে, সামনেই এসএসসি, পড়াশোনার চাপ মোটামুটি বেড়েছে।
স্যারদের কাছে ব্যাচে পড়তো সে, কিন্ত টানা দশ বারো দিন ব্যাচ মিস দিলে তনুর পড়াশোনায় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো।
তবুও সে পাত্তা দিলো না, তার কাছে তার বোনের বিয়ে আগে!
বীরগঞ্জ যাবে বলে সকাল থেকে সেজেগুজে বসে আছে তনু।
সায়ন রেডি হয়ে তনুর ঘরে ঢুকে দেখল নীল রঙের লং ফ্রক পরে মাথায় স্কার্ফ পেচিয়ে তনু বসে আছে।
ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় তাকিয়ে সায়ন তার ঝাকড়া চুলগুলো দু’হাতে ওল্টাতে ওল্টাতে জিজ্ঞেস করল, ” সবকিছু গুছিয়ে নিছিস তো!? পরে গিয়ে আবার বলিস না, এটা আনিনি সেটা আনিনি!!
তনু ওপর নিচ মাথা নাড়িয়ে সায় দিয়ে জানালো সে সব গুছিয়ে নিয়েছে।।
সায়ন আয়না থেকে দৃষ্টি সরিয়ে তনুর দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, ” আর বই খাতা!?
বই খাতা নেওয়ার কথা শুনে তনু অবাক হয়ে বলল, ” বই খাতা নিয়ে কি করবো ভাইয়া!? বিয়ে বাড়ি গিয়ে আমি বইয়ে মুখ গুজে বসে থাকবো নাকি!!?
সায়ন একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলল, ” একদম ঠিক ধরেছেন ম্যাম!
তনু আকাশ থেকে পড়ে বলল, ” আশ্চর্য! বিয়ে বাড়িতে সবাই আনন্দ করবে!! আর আমি বই পড়বো!!!? নো ওয়ে!!!!!
সায়ন তার কথায় পাত্তা না দিয়ে টেবিল থেকে একে বই নিয়ে বেডে রাখল।
লাগেজের চেইন খুলতে যাবে অমনি তনু ছুটে এসে লাগেজের ওপর উঠে বসল।
সায়ন সরু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ” তুই কি চাস তনু!? তোকেও লাগেজের মধ্যে ঢুকিয়ে দিই!!?
তনু রেগেমেগে কিছু বলার আগেই সায়ন হেসে বলল, ” অবশ্য তোর যে ওজন! বেচারা লাগেজ তোকে সহ্য করতে পারবে কি না কে জানে!!
তনু মুখ ভেংচি কেটে বলল,” আমি যাবো না! আপনি যদি বই খাতা এরমধ্যে ঢোকান তাহলে আমি বিয়েতে যাবো না।
সায়ন কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো তনুর দিকে, তনু মুখ ঘুরিয়ে রেখেছে।
সায়ন আস্তে আস্তে তনুর কাছে এসে বলল, ” লাগেজের মধ্যে আমিও ঢুকলে তখন যাবি!?
চমকে ফিরে তাকালো তনু, সায়নের নেশা লাগা চোখে তাকাতেই থমকে গেল সে।
সায়নের গভীর কালো চোখ জোড়ায় তনু অন্যকিছু দেখতে পেলো।
সায়ন একবার তনুর ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে হাসল, এক হাতে তনুর কোমর জড়িয়ে লাগেজের ওপর থেকে সরিয়ে তাকে বেডে বসিয়ে দিল।
কোমরে সায়নের হাতের ছোয়া পেয়ে তনুর সম্বিৎ ফিরল।
সায়নের দিকে তাকিয়ে দেখল, সায়ন বেশ ব্যস্ততার সাথে বই গুলো লাগেজে ঢোকাচ্ছে।
সায়ন লাগেজের চেইন লাগিয়ে সামনে তাকাতেই তনুর সাথে চোখাচোখি হয়ে গেলো।
তনু সাথেসাথেই দৃষ্টি সরিয়ে নিল, লজ্জায় সংকোচে সায়নের দিকে তাকাতে পারছেনা সে।
সায়ন স্মিত হেসে বলল, ” সবকিছু রেডি, চল এবার বেরিয়ে পড়ি।
ঘর থেকে বেরিয়ে সায়ন ডাকতে লাগল, ” রোহান! এই রোহান তোর হল!!?
____________________________________
|
|
|
|
|
সায়নদের দোতলা বাড়িটার একপাশে দেশি-বিদেশি ফুল আর অর্কিডের সমাহার।
অন্যপাশে বসার জন্য বেতের তৈরি চেয়ার টেবিল পাতা আছে।
বিয়ের আমেজ লেগেছে বাড়িটাতে, আত্নীয়স্বজন তেমন কেউ এখনও আসেনি।
কিন্ত তাদের থাকার জন্য বাড়ির গেস্টরুম থেকে শুরু করে সবকিছু পরিষ্কার করা শুরু হয়ে গেছে।
এদিকে ড্রাইভার ইকবালের তো দিশেহারা অবস্থা, একবার সায়নের বাবা তাকে পানির লাইন ঠিক করতে পাঠাচ্ছে।
একবার সায়নের মা তার হাতে বাজারের লিস্ট ধরিয়ে দিচ্ছে।
তো আবার স্নেহা বলছে গাড়ি বের করতে। পার্লার থেকে নাকি তার কল রিসিভ করছেনা।
আগে থেকে পার্লারে বুকিং না দিলে তাকে হয়তো না সেজেই বিয়ে করতে হবে!
যা ভাবলেই স্নেহার ছোট খাটো এক একটা হার্ট অ্যাটাক হয়ে যাচ্ছে!!
ইকবাল পানির লাইন ঠিক করতে মিস্ত্রি ডেকে এনেছে। বাজারের ব্যাগটা হাতে নিয়ে ছুটতে ছুটতে স্নেহার কাছে গেলো সে।
স্নেহা রেডি হয়ে বেরিয়েছে মাত্র, ইকবালকে আসতে দেখে বলল,” আরে ভাই আপনি এখানে কি করছেন!? আপনাকে না বললাম গাড়ি বের করতে!!
ইকবাল আমতা-আমতা করে বলল, ” বাজারের ব্যাগটা ম্যামকে দিতে এসেছি।
স্নেহা বিরক্ত হয়ে বলল,” তাহলে দাঁড়িয়ে আছেন কেন!? যান ব্যাগটা দিয়ে তাড়াতাড়ি আসুন!
বলেই দ্রুত পায়ে গেটের দিকে এগিয়ে গেলো সে, ইকবাল আর দেরি না করে এক ছুটে কিচেনে এসে দাড়ালো।
সায়নের মা সেলিনা মুখে রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে গ্যাসের সিলিন্ডারের দিকে তাকিয়ে আছে।
রাইস কুকারে ভাত বসিয়ে তরকারি রান্না করতে করতে দেখে গ্যাস শেষ!
এখন এই আধসিদ্ধ তরকারি নিয়ে তাকে আবার কাঠের চুলায় ছুটতে হবে ভেবেই মেজাজ খারাপ লাগছে তার!!
ইকবালকে দেখে তার মেজাজে যেন ঘি পড়েছে, সেলিনা দাতে দাত পিষে বলল, ” তোকে বাজার আনতে বলেছি কখন!? এই বেলা দুপুরে তোর আসার সময় হল!!!
ইকবাল কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা, ওদিকা স্নেহা ম্যাম হয়তো গাড়িতে উঠে বসে আছে।
বাজারের ব্যাগটা কিচেনে রাখতে রাখতে ইকবাল বলল,” বাজার করে তাড়াতাড়ি আসছিলাম, তখনই ব্যাগটার একসাইড ছিড়ে গেলো! ভেতর থেকে কিছু পড়ে যায় কি সেই ভয়ে আরেকটা ব্যাগ কিনতে গেলাম। সেখানেই দেরি হয়ে গেছে ম্যাম!
এইটুকু বলে ইকবাল একটা ক্লান্তি মাখা হাসি দিল, তার এই ব্যাগ ছেড়া কাহিনি সেলিনার খুব একটা বিশ্বাস হল না।
কিন্ত সেসব নিয়ে এখন ভাবার সময় নেই তার, গ্যাস সিলিন্ডার দেখিয়ে থমথমে গলায় বলল,” গ্যাস শেষ, তোর স্যারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সিলিন্ডার নিয়ে আয় যা।
ইকবালের এবার কেদে ফেলার মতো অবস্থা হয়েছে, কিন্ত সে কাদবে না।
সকাল থেকে এরা দৌড়ের ওপরেই রেখেছে তাকে, এখন কাদতে বসলে এই মা মেয়ে মিলে তাকে সিলিন্ডারে ঢুকিয়ে মারবে শিওর!!
অগত্যা গ্যাস সিলিন্ডারটা কাধে তুলে দ্রুত পায়ে কিচেন থেকে বেরিয়ে এলো ইকবাল।
গাড়ির পেছনে সিলিন্ডার রেখে স্নেহাকে নিয়ে পার্লারের উদ্দেশ্যে রওনা দিল সে।
__________________________________
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
কলিংবেলের শব্দ পেয়ে সায়নের মা সেলিনা দরজা খুলে দিল, তনু আর রোহানকে নিয়ে এসেছে সায়ন।
সেলিনা স্মিত হেসে বলল, ” যাক, এতক্ষণে তোদের আসার সময় হল। যা ফ্রেশ হয়ে নে, আমি ডাইনিং এ খাবার দিচ্ছি।
আধসিদ্ধ তরকারি নিয়ে ছাদের চিলেকোঠার কাঠের চুলা থেকে রান্না করে এনেছে সেলিনা।
সে জানে ইকবাল গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে আসতে আসতে আজকের দিন পার করে দেবে! তাই সে আগেভাগেই রান্নার কাজটা সেরে ফেলেছে।
রোহানকে সাথে নিয়ে ওপরে গেছে সায়ন, তনু ওপরে উঠতে উঠতে জিজ্ঞেস করল, ” স্নেহা আপু কোথায় মামি!? রুমে আছে!!?
সেলিনা দরজা লক করে বলল, ” না, ও তো একটু বাইরে গেছে। তুই যা, ওর রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে।
তনু লাগেজ নিয়ে স্নেহার রুমে এলো, লাগেজ খুলে একটা আকাশী নীল রঙের থ্রিপিস বের করে ওয়াশরুমে ঢুকল সে।
স্নেহা আর সায়ন একই বয়সী, তনুর থেকে বয়সে বেশ বড় হলেও স্নেহার সাথে তনুর বেশ ভালই জমে।
গোসল করে বেরিয়ে চুল মুছতে মুছতে স্নেহার ব্যালকনিতে এসে বসল তনু।
স্নেহার ব্যালকনিটা একদম সাধারণ, কোনো ফুলগাছ নেই, বসার জন্য দোলনা নেই।
তনুর এমন ব্যালকনি ভালো লাগে না, তার ব্যালকনিতে সুন্দর একটা দোলনা আছে। অনেক ধরনের ফুল গাছ আছে।
স্নেহার বাবার আবার গাছপালা ভিষণ পছন্দ, সেই সূত্রে বোধহয় সায়নও গাছপালা, ফুল পছন্দ করে।
বাড়ির একপাশের বাগানটা তো বাপ ছেলে মিলেই সাজিয়ে তুলেছে!
স্নেহার আবার বইয়ের নেশা, সে বাগানবিলাস না করলেও বাগানে বসে বই পড়তে ভালবাসে।
তার ঘরে যে বুকশেলফটা আছে, তার অর্ধেকই শুধু দেশি-বিদেশি লেখকদের উপন্যাসে ভরা।
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
(চলবে)