#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..6
মারু জোর করে অয়নকে রুমে নিয়ে গিয়ে বসায়।অয়ন মারুকে জরিয়ে ধরে। মারু ছাড়াতে চাইলে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে।
আমাকে আস্টে পিস্টে জড়িয়ে ধরে বলছে,,,,,আজ তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি কি নিয়ে বেঁচে থাকতাম। তোমার কিছু হয়ে গেলে আমি শেষ হয়ে যেতাম। আল্লাহ শত শত শুকরিয়া তোমার কিছু হয়নি।
আমি চুপচাপ বসে থাকি, কেনো জানি না, তবে অয়নকে আমার বাঁধা দিতে ইচ্ছে করছে না। মনে চাচ্ছে ওর বুকের গভীরে লুকিয়ে যেতাম। নিজের অজান্তেই আমার চোখ বন্ধ হয়ে যায়।
কিছু ক্ষন পর অয়ন এক প্রকার তাড়াহুড়ো করেই আমাকে ছেড়ে দিয়ে সরি বলে। আমিও আমার হুশে চলে আসি। আমি অয়নকে ঠিক ভাবে শুয়িয়ে দিয়ে, উপরে কম্বল দিয়ে দিয়। আমি ফাস্টেট বক্স আনতে যেতে নিয়, অয়ন উঠে তাড়াতাড়ি বলে,,,,,কোথায় যাও।
আমি পিছনে তাকিয়ে দেখি উনার চেহেরায় ভয়ের ছাপ। আমি শান্ত স্বরে বলি,,,,,, ফাস্টেট বক্স আনতে যাচ্ছি, জ্বরটা তো মাপতে হবে নাকি। আপনি চুপচাপ শুয়ে থাকেন।
উনি শুয়ে বললেন,,,,, হুমম।
আমি গিয়ে বক্সটা নিয়ে আসি। উনার জ্বরটা মাপি, ১০২ জ্বর। আমি অভাক হয়ে বললাম,,,,, এতো জ্বর নিয়ে আপনি কাজে গেছেন কি করে।
অয়ন মুখটা ভার করে বললো,,, আমি বুঝতে পারিনি যে এতো জ্বর।
আমি ব্রু কুঁচকিয়ে বললাম,,,,, একটা সত্যি কথা বলেন তো, আপনি ডক্টরি পাশ করেছেন তো নাকি নকল করে পাশ করেছেন।
অয়ন কপাল কুঁচকিয়ে বললো,,,,, মানেহহ
,,,মানেটা হলো এই যে, আপনার এতো জ্বর আর আপনি বুঝতে পারেন নি। নিজের শরীরেরটা বুঝতে পারেন না তাহলে অন্য জনেরটা কিভাবে বুঝবেন আর ঠিক করবেন।
অয়ন অন্য দিকে তাকিয়ে একটু আস্তে করে বললো,,,,, মাথায় সারা ক্ষণ তোমার চলে যাওয়া ঘুরতে থাকলে অন্য কিছু মনে থাকবে কি করে।
,,,,কি বললেন।
,,, নাহহ কিছু না।
,,,,হুমম শুনে ফেলেছি আমি,, আপনাকে আর ঐ চিন্তা করা লাগবে না।
অয়ন তাড়াতাড়ি শুয়া থেকে উঠে বসে বলে,,,,, মানে।
,,,মানেটাও এখন আমাকে বুঝিয়ে দিতে হবে, আপনি বুঝে নিন না৷
অয়ন আমার হাত ধরে বলে,,,না পিল্জ, যা বলবে স্পষ্ট করে বলো, না হলে তোমার কথার মানে খুঁজতে খুঁজতে আমি হার্ট অ্যাটাক করবো নিশ্চিত।
,,,হয়েছে আর হার্ট অ্যাটাক করা লাগবে না,, আমি ভাবছি।
অয়ন আতংক নিয়ে বলে,,,, কি ভাবছো।
,,,ভাবছি আপনাকে একটা সুযোগ দেওয়ায় যায়।
,,,,, মানে।
,,,,,অফফ সব একদম বুঝিয়ে বলতে হবে,, মানে আমাদের বিয়েটাকে আমি একটা সুযোগ দিতে চাই।
এ কথা শুনার সাথে সাথে অয়ন খুশিতে কি করবে না করবে বুঝে উঠতে পারছে না, আমাকে জরিয়ে ধরতে চেয়েও ধরেনি। উনার চেহেরার খুশি দেখে আমার মুখে হাসি চলে আসে৷
উনি খুশিতে বলেন,,,,,,উফফ আমি যে কি খুশি আজকে তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না৷ মনে হচ্ছে আমার বুকের উপর থেকে কেও পাথর সরিয়ে নিয়েছে।
,, হয়েছে এতো খুশি হয়ে লাভ নেয়, আপনি শুয়ে থাকেন, আমি আপনার জন্য কিছু নিয়ে আসছি। দেখে তো মনে হচ্ছে কিছুই খাননি।
আমি উঠে যেতে নিয় অয়ন আমার হাত ধরে টান দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়। আমিও অয়নকে জরিয়ে ধরি। তখনি দরজায় টুকা পড়লে আমরা সরে যায়। সায়ন আসে রুমের ভিতরে। আমি চলে যায় অয়নের জন্য খাবার আনতে।
অয়ন,,,,,,, কে করেছে এমন কিছু জানতে পেরেছিস।
সায়ন,,,,,, না ভাইয়া কিছুই জানা যায়নি,, তবে মনে হচ্ছে আমাদের কাছের কেও করেছে।
,,,কাছের কেও মানে,,, তোর হঠাৎ এমন মনে হলো কেনো।
,,, কারন সবাই যার যার কাজ করছিলো, আর তার প্রমানও পাওয়া গেছে,শুধু বাড়ির লোকদের ছাড়া। কিন্তু বাড়ির লোকেরা কেও এমন কেনোই বা করবে।
,,, বাড়ির লোক,,, বাবা মারতে চাই না তো আবার নীরকে।
,,, বাবা কেনে মারতে যাবে ভাবীকে অদ্ভুত।
,,,,উনার আমাদের খুশি সহ্য হয় নাকি। আমরা খুশি থাকি এটা উনি চান না।
,,, তুমি সব সময় বাবাকে দোষারোপ কেনো করো আমি এটাই বুঝতে পারি না। আচ্ছা যাই হোক এটা যেই করে থাকোক আমি তাকে খুঁজে বের করবোইন,তুমি কোনো টেনশন নিয়ো না।
,,,হুমম।
বলে সায়ন চলে যায়। মারু নিচে যায় খাবার আনতে। কিচেনে যেতেই প্রহর ও কিচেনে ডুকে বলে,,,,, মারু তুমি ঠিক আছো তো, তোমার কোথাও লাগেনি তো।
,,, আরে না, আমার কিছু হয়নি, আমি একদম ঠিক আছি।
,,,এতো বড়ো ঝুমুর পড়লো আর কোথাও লাগেনি।
,,কেনো আপনি চান নাকি যে, আমার লাগোক।
,,, আমি এটা কেনো চাবো, আমি চাই যেনো কোনো দিন তোমার কোনো কিছু না হোক, সব সময় ভালো আর সুস্থ থাকো।
আমি খাবার বাড়তে বাড়তে বললাম,,,,,, হুমম জানি, আমি এমনি মজা করছিলাম৷ আচ্ছা একটা কথা জিজ্ঞেস করি।
,,,, হুমম করো৷
,,,আচ্ছা আপনার সাথে বা অয়নের সাথে আমার কি আগে কোনো দিন দেখা হয়েছিলো।
প্রহর মারুর সামনে এসে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,, কেনো, তোমার হঠাৎ এমন মনে হলো কেনো।
মারু একটা ট্রেতে খাবার নিয়ে প্রহরের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,, জানি না, আপনাদের চেহেরা গুলো আমার চিনা কিছু মানুষের সাথে মিলে যায়।
,,,কার সাথে।
,,, সেটা তোহহ আমিও জানি না, তবে মনে হলো এমন।
আচ্ছা এখন আমি যায়, পড়ে আবার কথা হবে।
,,হুমম ঠিক আছে।
আমি খাবার নিয়ে এসে দেখি উনার চোখ বন্ধ। খাবারটা টেবিলে রেখে আস্তে করে কয়েকটা ডাক দিলাম, কিন্তু কোনো সারা নেয়৷ আমি ভাবলাম হয়তো ঘুমিয়ে গেছে। আমি ওনার একটু কাছে গিয়ে বসি।
আমার মাথাটা একটু কাছে নিয়ে গেলাম ওনার চেহেরার দিকে। মনে মনে ভাবলাম, আমার হাসবেন্ড দেখতে তো মাশাল্লাহ। এতো জ্বরের মধ্যেও কিউট লাগছে, আর আমার জ্বর উঠে ভালোও হয়ে গেছে তাও মনে হচ্ছে মরে গেছি।
আমি অয়নের গালে হাত রাখি, নাহ জ্বরটা একটু বেশিই বেড়েছে দেখা যায়। আমি একটা বড় রুমাল ভিজিয়ে আনি। ঐটা দিয়ে ওনার মুখ মুছিয়ে দিয়। শার্টের তিনটা বোতাম খুলতেই চোখ আটকে গেলো, নিজের কাছেই নিজেকে লুচু লুচু মনে হচ্ছে। তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ওনার বুকটা মুছে দিতে থাকি।
তারপর রুমালটা ওনার কপালে রেখে বোতাম গুলো লাগাতে থাকি, হঠাৎ করে চেয়ে দেখি ওনি আমার দিকে চেয়ে আছে, আমি তাড়াতাড়ি শার্ট থেকে হাত সরিয়ে বলি,,,, দেখুন আপনি যেমন ভাবছেন ওমন কিন্তু আমি কিছু করছিলাম না।
ওনি মুশকি হেঁসে বললো,,,, আমি এখনো তেমন কিছুই ভাবিনি। তুমি চাইলে ভাবতে পারি।
,,,না না, কিছু ভাববেন না, আমি তো জাস্ট মুছিয়ে দিচ্ছিলাম।
,, হুমম এতো কেয়ার হঠাৎ।
,,, আপনি ও আমার অনেক খেয়াল রেখেছেন আর আমি কারো উদার রাখি না, আপনার পাওনা দিয়ে দিচ্ছি।
,,,তাই নাকি,, তাহলে আরেকটা পাওনা বাকি আছে সেটাও মিটিয়ে দাও।
,,,কি।
,,,,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি, সেটা আমাকে সুদে আসলে ফিরিয়ে দাও।
,,,,, সেটা আমি কিভাবে ফিরিয়ে দিবো অদ্ভুত।
,,,,,, আমাকে ভালোবেসে।
আমি কিছু ক্ষন তাকিয়ে থেকে বললাম,,,,, এসব উল্টো পাল্টা কথা মাথা থেকে বের করে খেয়ে নিন।
,,আমি একা একা কিভাবে খাবো, আমার হাত ব্যাথা করছে।
,,,জ্বর উঠলে আবার হাত ব্যাথা করে নাকি।
,,,,আমার করে, আমার তো পুরো শরীর ব্যাথা করছে। আমি তো নিজে নিজে খেতে পারবো না,এখন কি করি, না খেয়ে থাকতে হবে মনে হয়।
,, এতো রচনা না বলে,, বললেই হয় খায়িয়ে দিতে।
,,,বুঝেছো যখন দাও।
,, আমি কাওকে খায়িয়ে দিতে পারি না, কোনো দিন দেয়নি।
,,মিথ্যাুক আমাকে তো কতো বার,, বলে অয়ন থেমে যায়।
,,, থেমে গেলেন যে, কতো বার কি।
,,,, আরে মানে হলো কয়েকবার খায়িয়ে দিলেই অভ্যাস হয়ে যাবে।
আমি আর বেশি কিছু না ভেবে রুটির সাথে মাংস খায়িয়ে দিচ্ছি। উনার ঠোঁট বার বার আমার হাত স্পর্শ করছে, জানি না কেমন লাগছে। এই স্পর্শ আমার অনেক চিনা লাগছে। অয়ন আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে খাচ্ছে, আমি উনার চোখের দিকে তাকাতে পারছি না, না জানি কেনো অনেক লজ্জা করছে উনার এমন ভাবে তাকানোতে।
খাওয়া শেষ করে ওনি ফাস্টেট বক্সটা নিয়ে একটা ইনজেকশনটা বের করে নিজের হাতে নিজে পুশ করছে। আমি অন্য দিকে তাকিয়ে উনার পা শক্ত করে চেপে ধরেছি। একটু পরে বলে,,,,, এই যে মিস আমার পাটা ছেড়ে দিন, হয়ে গেছে।
আমি তাড়াতাড়ি ছেড়ে দিয়।
অয়ন ভালো হয়ে শুয়ে বলে,,,,,, এখন তুমি কি করবা।
,,,,কি করবো মানে।
,,, আমি তো যে কোনো সময় ঘুমিয়ে যেতে পারি, তখন তুমি কি করবে।
,,,জানি না, দেখি কি করা যায়।
,,,তোমার শরীরটাও বেশি ভালো না, তুমিও আমার সাথে চুপচাপ শুয়ে থাকো।
,,, আমার ঘুম আসছে না।
,,, চোখ বন্ধ করে থাকলে ঠিক ঘুম এসে যাবে।
,,, না আমি ঘুমাবো না।
,,,তুমি ঘুমাবে নাকি ঘুমের ইনজেকশন দিতে হবে আবার।
,,,, না,,, ঘুমাবো।
,,হুমম গুড গার্ল।
আমিও অয়নের পাশে শুয়ে পড়ি। আমি সোজা হয়ে শুয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আছি। কারন অয়ন আমার দিকে ফিরে তাকিয়ে আছে। কিছু ক্ষন পর তাকিয়ে দেখি অয়নের চোখ প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে।
সে আমার দিকে এগিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে, আমি তো সোজা হয়েই শুয়ে আছি। আমি উঠতে নিয়ে কিন্তু পারি না, অয়ন শক্ত করে ধরে ঘুম ঘুম চোখে বলে,,, পিল্জ ঘুমাতে দাও না। এভাবে ঘুমাতে আমার ভালো লাগছে। বলেই আরেকটু কাছে এসে চেপে ধরে।
আমি কিছু বলিনি, হয়তো বলতে পারিনি, অয়নে মুখ আমার গলার খুব কাছে, উনার নাক স্পর্শ করছে আমার গলা। উনার নিশ্বাস আমার গলায় পড়ায় নিজেকে বেশামাল লাগছে। আমিও চুপচাপ চোখ বন্ধ করে এসব ভাবা থেকে নিজেকে আটকানোর চেষ্টা করি। একটু পর আমিও ঘুমিয়ে পড়ি।
বেশ অনেক ক্ষন পরে কারো পায়ের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়, উঠে আশে পাশে তাকিয়ে কাওকেই দেখতে পায় না। অয়ন আমাকে ঠিক একি ভাবে জরিয়ে ধরে আছে, খুব কষ্টে আস্তে আস্তে উনার হাত ছাড়িয়ে আমি উঠে বসি।
রাত হয়ে গেছে, অয়নের জ্বরটাও কমে গেছে। আমি ফ্রেশ হয়ে দুলনায় বসে বসে চোখ বন্ধ করে গুন গুন করছি। একটু পর কারো মাথা নিজের কাঁধে অনুভব করে চোখ খুলে দেখি অয়ন আমার পাশে কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে।
,,,ওহহ সরি, আমার কারনে আপনার ঘুমটা ভেঙে গেলো।
,,,,, প্রতিদিন এভাবে ঘুম ভাঙলে আমার কোনো আপত্তি নেয়। জানো আমি কি স্বপ্নে দেখেছি।
,,,, কি দেখেছেন।
,,,,দেখেছি আমি আর তুমি সমুদ্রে ঘুরতে গেছি, যাবে আমার সাথে।
,,,,,ওয়াও সমুদ্রে,, নিয়ে গেলে যাবো, তাছাড়া কক্সবাজারে গেলে তো মন্দ হয়না।
,,,, কক্সবাজারে না আমরা অন্য কোথাও যাবো।
,,,, আপনি যে বললেন সমুদ্রে যাবেন।
,,,,,, কক্সবাজার ছাড়া কি আর কোনো দেশে সমুদ্র নেয়।
,,,, আচ্ছা দেশে বাহিরে নিয়ে যাবেন বুঝি, কোথায় নিয়ে যাবেন।
,,,এটা সারপ্রাইজ থাক। আচ্ছা তুমি কোনো স্বপ্ন দেখো না।
,,,,হুমম দেখি তো।
,,,, কি স্বপ্ন।
,,,,সেটা ঠিক আমিও জানি না, আমার স্বপ্ন আপনার স্বপ্নের মতো ঠিক স্পষ্ট না, সব কিছু গুলসে, স্পষ্ট কিছুই না। অনেক গুলো মানুষের কতা শুধু কানে বাঝে। শুধু প্রতিদিন এটা বুঝতে পারি, কেও ভালোবেসে তাড়া করে, কেও বা মারার জন্য।
অয়ন মাথা উঠিয়ে মারুর দিকে তাকিয়ে বলে,,,, নীর এটা শুধু স্বপ্ন, আমি তোমার বাস্তবটা এতোটা রঙিন করে দিবো যে স্বপ্ন ও রঙিন হবে।
,,,,,সত্যি
অয়ন মুশকি হেঁসে বলে,,,, সত্যি।
তখনি একজন সার্ভেন্ট খাওয়ার জন্য ডাকতে আসে।
অয়ন,,,,, তুমি যাও, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি ওকে।
,,,হুমম ঠিক আছে।
আমি রুম থেকে বের হয়ে যেতে থাকি, তখনি গিটার আর গানের আওয়াজ আসতে থাকে। আমি সেই আওয়াজের পিছনে পিছনে যায়। আওয়াজটা সায়ন এর রুম থেকে আসে। আমি একটু ধাক্কা দিতেই দরজাটা খুলে যায়৷
সায়ন নিচে বসে গান গাইছিলো, সামনে একটা মেয়ের ছবি রাখা সেদিকে তাকিয়ে তাকিয়ে। আমাকে দেখে গান গাওয়া বন্ধ করে বলে,,,, আরে ভাবী তুমি।
ছবিটা লুকানোর চেষ্টা করে, কিন্তু আমি বলে দিয়,,,, ঐটা লুকিয়ে লাভ নেয়, আমি দেখে ফেলেছি, মেয়েটা কে শুনি।
সায়ন ছবিটা হাতে নিয়ে বললো,,,, আমার জান।
,,,তা তোমার জানের নামটা কি শুনি।
,,, দিয়া,, ওর নাম দিয়া,, আমার কাছে গান শুনার বায়না করছিলো, তাই গান গাইছিলাম।
সায়নের কানে ব্লুটুথ ইয়ার ফোন দেখে বলি,,,, ও আচ্ছা। তা খেতে আসবে না।
,,, দিয়া আমার সাথে রাগ করেছে, ওর রাগ না ভাঙা পর্যন্ত আমি খেতে পারবো না, আপনি জান, আমি পরে ঠিক খেয়ে নিবো।
,,তাহলে আমি এক কাজ করি তোমার জন্য খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।
,,,থেংক্স ভাবী।
বলে আমি চলে আসি। সবাই আমরা খেতে বসি। অয়ন ও চলে আসে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমরা যার যার রুমে চলে আসি। রাত অনেক হয়েছে কিন্তু ঘুম নেয় কারো চোখে।
অয়ন,,,,ঘুমাও না কেনো।
,,আমার ঘুম আসছে না, আপনি ঘুমান না কেনো।
,,,আমারো ঘুম আসছে না। আচ্ছা চলো তাহলে ছাদে যায়।
আমি লাফ মেরে উঠে বসে বলি,, হুমম চলেন যায়। এমনিতেও আমার ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করছিলো, কতো দিন হলো রুমেই বসে আছি।
,,,তাহলে ছাদে না, চলো বাইকে তোমাকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।
,,,তাহলে তো আরে ভালো চলেন যাই।
দুজনে বাড়ি থেকে বের হয়। অয়ন তার বাইক নিয়ে আসে, আমি অয়নের পিছনে বসি।অয়ন বলে,,এই যে মিস ভালো করে ধরে বসুন আমি কিন্তু বাইক আস্তে চালাই না।
আমি কোনো কিছু না ভেবে অয়নকে শক্ত করে ধরে বসি, জরিয়ে ধরে ঘুমাতে পারলে বাইকে উনাকে ধরে বসতে পারবো না।
উনি বাইক স্টাট দিয়ে নিয়ে যায়।ইশশ অনেক ভালো লাগছে কতোদিন পরে বের হয়েছি তাও আবার রাতে।
#আগুনের_তৃষ্ণা
#Maishara_Jahan
Part………..7
আমি কোনো কিছু না ভেবে অয়নকে শক্ত করে ধরে বসি, জরিয়ে ধরে ঘুমাতে পারলে বাইকে উনাকে ধরে বসতে পারবো না।
উনি বাইক স্টাট দিয়ে নিয়ে যায়।ইশশ অনেক ভালো লাগছে কতোদিন পরে বের হয়েছি তাও আবার রাতে।
খুব জোরে বাতাস এসে নাক মুখ ছুয়ে যাচ্ছে। অয়ন খুব জোরে বাইক চালাচ্ছে, অন্য কেও হলে হয়তো ভয়ে নেমে যেতাম কিন্তু উনার সাথে সত্যি বলতে অনেক ভালো লাগছে। এই রাস্তায় আগেও ঘুরেছি কিন্তু এতো ভালো কোনো দিন লাগেনি।
যেতে যেতে একটা ব্রিজ এর মাঝখানে বাইক থামায়। দেখতে বেশ সুন্দর, ব্রিজের চারপাশে লাইট লাগানো। নিচে দেখলে সব অন্ধকার লাগে ভালোভাবে নদীর পানি দেখা যায় না। মন ছুঁয়ে দেওয়ার মতো বাতাস বয়ছে।
আমি বাইক থেকে নেমে বললাম,,, এখানে থামালেন কেনো।
ওনিও বাইক থেকে নেমে বললো,,,,, কেনো জায়গাটা ভালো লাগেনি, অন্য জায়গা নিয়ে যাবো।
আমি হাঁটতে হাঁটতে বললাম,,,,,, না, জায়গাটা মন্দ না।
উনিও আমার সাথে হাঁটতে হাঁটতে বললো,,,,,, যাক পছন্দ হয়েছে তাহলে।
,,, আমি এই প্রথম বাইকে উঠলাম, কিন্তু মনে হচ্ছে এর আগেও অনেক বার বাইকে উঠেছি, আর ঠিক এভাবেই লুকিয়ে ঘুরতে গিয়েছি।
,,হুমম আর কি কি মনে হচ্ছে।
,,,, উমম ঠিক মনে পড়ছে না, সব কিছু ঝাপসা।
সাথে চলতে চলতে অয়ন আমার হাত ধরে, আমি একবার উনার দিকে তাকিয়ে আবার সামনের দিকে ফিরে হাঁটতে থাকি।
দুজন চুপচাপ দুজনের হাত ধরে হাঁটছি, আমাদের মাঝে কোনো কথা হচ্ছে না, কতো দূর পর্যন্ত হাঁটছি কেও খেয়াল করছি কিনা সন্দেহ। শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে দুজনের হাত ধরে হাঁটছি। যে ফিলটা হচ্ছে সেটা অনুভব করছি। এই নিরবতার মাঝে যেনো অনেক ভালোবাসা লুকিয়ে আছে।
কিছু ক্ষন পর আমিই আস্তে বলে দিলাম,,,, কিছু বলেন না কেনো।
উনি সোজাসুজি বলে দিলেন,,, আই লাভ ইউ।
এক মূহুর্তের জন্য যেনো আমার হার্ট বিড থেমে গেছিলো। আমি উনার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিয়ে শুধু হুমম বলি।
উনি হাঁটা থামিয়ে বললেন,,,, শুধু হুমম।
,,,,তো আর কি বলবো।
,,, যেটা বলা দরকার সেটা তোমাকে বলে দিলেও তুমি বলবে না, তাই শুধু শুধু বলে লাভ নেয়। আজকের জন্য শুধু হুমম টাই চলবে।
,,,আচ্ছা আজকে একটা কথা বলবেন আমাকে।
,,,হুমম জিজ্ঞেস করো।
,,আপনি আমাকে কেনো ভালোবাসে, কবে থেকে ভালোবাসেন, মানে আমি তো আপনাকে চিনিও না।
,,, ভালো তো তোমাকে অনেক আগে থেকেই বাসি, কিন্তু কোনো এক কারনে আমার ভালোবাসা নিয়ে তোমার সামনে আসতে পারিনি। কারনটা অন্য একদিন বললো। আর বাকি রইলো কেনো ভালোবাসি, ভালো না বাসার কারন থাকে কিন্তু ভালোবাসার কি কারন থাকতে পারে তুমিই বলো। তোমাকে ভালোবাসার কোনো কারন লাগবে না আমার।
অকারনেই ভালোবাসি তোমাকে, কারন কাওকে ভালোবাসতে হলে যদি কারন থাকে তাহলে সেটাকে ঠিক ভালোবাসা বলে না। কিছু একটা বলা যায় তবে ভালোবাসা বলা যায় না। ভালোবাসা তো কোনো কারন ছাড়াই হয়ে যায়।
,,, হুমম সব কিছুই বুঝেছি, তবে তাও আমার প্রশ্নের উত্তরটা কিন্তু অপষ্ট রয়ে গেলো।
,,কিছু কিছু কথা গোপন রাখাই সবার জন্য ভালো বুঝতে পেরেছো নীর।
,,,আচ্ছা এই কথাটা তো বলেন নীর মানে কি, আর আপনি আমাকে নীর বলে কেনো ডাকেন।
অয়ন আমার হাত ছেড়ে দিয়ে ব্রীজের কিনারে দাঁড়িয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে বললো,,, নীর মানে হলো পানি, নদী। আর অয়ন মানে হলো আগুন। আর এই অগুন নিভানোর ক্ষমতা শুধু পানির মধ্যে আছে। তুমি আমার সেই পানি নীর। যার কাছে আমাকে শান্ত করার ক্ষমতা আছে আর কারো নেয়। তাই তুমি আমার নীর।
আমি মুখ বেঁকিয়ে বললাম,,,,, আমার কাছে আপনাকে শান্ত করার ক্ষমতা আছে, কই আমি তো দেখি না, সবচেয়ে বেশি রাগ তো আপনি আমার সাথেই করেন। আর আপনার যে রাগরে বাবাহহ এটাকে শান্ত করবো কিভাবে।
,,,ভালোবেসে,, আমাকে একটু ভালোবেসে তো দেখো, আমার রাগ কেনো আমার হাসিটাও তোমার কন্ট্রোলে দিয়ে দিবো।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি, কিছু বলতে না শুধু শুনতে ইচ্ছে করছে। অয়ন আবারো বললো,,,, যা বললাম বুঝতে পারলে তো নীর।
,,,হুমম বুঝলাম।
,,,কি বুঝলে।
,,,(এটাই যে, আপনি আমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসেন) যাই বুঝে থাকি সেটা আমি আপনাকে কেনো বলবো।
বলে আমি উল্টো দিকে হাঁটা শুরু করে দিয়। অয়ন আমার পিছনে পিছনে আসতে আসতে বলছে,,,, কোথায় যাচ্ছো।
,,, কেনো, বাইকের দিকে, আজ বাড়ি ফিরার ইচ্ছে নেই নাকি।
,,,, সত্যি কথা বলতে গেলে, একটুও ইচ্ছে করছে না। তুমি চাইলে আমরা এখানেই থেকে যেতে পারি, কি বলো।
আমি হেঁটে মুশকি হেঁসে বলি,,,, চলেন চলেন, চুপচাপ বাসায় চলেন, বাসা থাকতে রাস্তায় কেনো থাকবো অদ্ভুত।
অয়ন দৌড়ে এসে আমার হাত ধরে বলে,,, এতো রাতে রাস্তায় একা চলা নিরাপদ না বুঝলে, আমার হাত ধরে চলো তাহলে কিছু হবে না।
,,,,তাই বুঝি হুমম।
,,,,,হুমম।
আমরা হাঁটতে হাঁটতে বাইকের কাছে এসে পড়ি। অয়ন নিজের জেকেটটা খুলে আমাকে পড়িয়ে দিয়ে বাইকে উঠে। আমিও বাইকে উঠি। অয়ন আবার বাইক স্টাট দেয়। এখন তো আগের থেকে ভালো লাগাটা একটু বেশিই হচ্ছে। হালকা হালকা ঠান্ডা লাগছে। আমি আর কিছু না ভেবে অয়নকে জরিয়ে ধরে ওর পিঠে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে রাখি।
অয়ন মুশকি হেঁসে বাইকের গ্লাসে মারুকে দেখছে। আমার আরেকটু শক্ত করে ধরতে ইচ্ছে করছে অয়নকে, অন্য কিছু ভাবতে আমার ইচ্ছে করছে না, আমি আরেকটু শক্ত করে ধরি অয়নকে।
তখন হঠাৎ করেই অয়ন বাইক থামিয়ে বলে,, এমন করলে যে কোনো মুহূর্তে এক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারে।
আমি অয়নের কথা কানে না নিয়ে আমার মতো করেই জরিয়ে ধরে থাকি অয়নকে। অয়ন পিছনে একটু মাতাটা গুড়িয়ে মারুকে দেখে হেঁসে আবার বাইক স্টাট করে দেয়।
অনেক ক্ষন পরে অয়ন বাসার সামনে এসে বাইক থামায়, তখন প্রায় ৩ টা বাঝবে বাঝবে। অয়ন কয়েকবার বলার পরেও আমি উঠি না। ঘুম ঘুম ভাবের মধ্যে উঠে যাওয়ার শক্তি পাচ্ছি না। তবে শুনতে পারছি একটু একটু অয়ন উঠার জন্য বলছে।
পরে অয়ন তার এক হাত দিয়ে মারুর মাথায় ধরে কোনো রকমে বাইক থেকে নামে। নেমে মারুরু হেলমেটটা খুলে রেখে ওকে কোলে করে নিয়ে যায় রুমে।
এদিকে ওদের এভাবে দেখে একজন রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে জোরে জালানার কাচ বন্ধ করে দেয়।
অয়ন মারুকে বিছানায় শুয়িয়ে দেওয়ার আগে জেকেটটা খুলে রেখে শুয়িয়ে দেয়। পরে নিজেও শুয়ে পড়ে। অয়ন আমাকে জরিয়ে ধরে আমিও অয়নকে জরিয়ে ধরে ওর উপর পা উঠিয়ে আস্টে পিস্টে জড়িয়ে শুয়ে থাকি।
অয়ন কয়েকটা ডোগ গিলে বলে,,,, এমন করলে কবে জেনো নিজের কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলি কে জানে। না না এমন কিছু ভাবা যাবে না, কন্ট্রোল অয়ন।
সকালে,,,
আস্তে আস্তে নিজের চোখ খুলে দেখি অয়ন আমার একদম সামনে। তাড়াতাড়ি করে উঠতে নিয়েও উঠতে পারি না। দুজন দুজনকে এমন ভাবে জরিয়ে ধরে আছি, দেখে কিছুটা লজ্জায় অয়নকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে বসি।
অয়ন ও আস্তে আস্তে করে উঠে বসে, ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে বলে,,,, কি হয়েছে, এভাবে কেও উঠায়।
,,,, এভাবে জরিয়ে ধরে আছি দেখে কি করবো।
,,,, তোমারি ভালো,রাতে ইচ্ছে করলে জরিয়ে ধরবে আর সকালে ধাক্কা মেরে ফেলে দিবে।
,,,,,কিহহ আমি জরিয়ে ধরেছি, হতেই পারে না।
,,,কেনো হতে পারে না, তোমার কি হাত নেয়, নাকি পা নেয়। হাত দিয়ে ধরেছে তো ধরেছো পা ও উঠিয়ে দিয়েছো আবার।
আমি তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠে বললাম,,,, ঘুমের ঘোরে এমন হতেই পারে।
বলেই ওয়াশ রুমে চলে গেলাম। অয়ন ও উল্টো হয়ে আবার শুয়ে পড়লো। কিছু ক্ষন পরে দুজনে ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়। নিচে অলরেডি অনেক মানুষ ঘর সাজাঁনোর কাজ করছে। অয়ন টেবিলে বসতে বসতে বলে,,,,, কি হলো বাড়ি কেনো সাজানো হচ্ছে,কোনো অনুষ্ঠান আছে নাকি।
সায়ন,,,,, হুমম ভাইয়া, তোমাদের বিয়ের খুশিতে আজকে আমরা সবাই মিলে পার্টি করবো। ভুলে গেলে নাকি।
,,,,ওহহ আচ্ছা,, ভালোই তো তাহলে।
,,,,, আজ কাল দেখি তোমার কোনো দিকেই খেয়াল নেয়। তোমাদের নিয়ে এখন আমার চিন্তে হয় অনেক।
অয়ন,,, আমাদের নিয়ে আপনাকে কোনো চিন্তা করতে হবে না। আর আমাকে নিয়ে তো একদমি না, তাছাড়া আপনি আমাদের নিয়ে চিন্তা না করলেই আমরা সুখে থাকতে পারবো।
বাবা,,,,,, আমি তো তোমাদের ভালোর জন্য বলছি।
,,, আপনাকে আমাদের ভালো ভাবতে হবে না, আপনি যে ঠিক কতোটা ভালো ভাবেন আমাদের জন্য সেটা আমার জানা আছে। দয়া করে করো ভালো ভাবতে যাবেন না।
মা,,,,, অয়ন,, এভাবে কথা কেনো বলছিস, তোর বাবা হয় ওনি।
সায়ন,,,,,,তোমরা চুপ করো তো, তোমাদের সমস্যাটাই আমি বুঝি না। তাছাড়া এমন করছো ভাবী কি মনে করবে বলোতো।
মারু,,, ইটস ওকে,,,(বাবা ছেলের মধ্যে কিছু তো একটা হয়েছে, কিন্তু কি)
প্রহর,,,আচ্ছা এতো কিছু না ভেবে আজকের পার্টির বিষয়ে ভাবা যাক।
অয়ন,,,,আমি একটু পরেই বেরিয়ে যাবো, আমার হসপিটালে কাজ আছে।
মা,,,,,, সারা ক্ষণ শুধু কাজ আর কাজ,, মারুকে একটু শপিং এ নিয়ে যা।
অয়ন,,,,,,, মা আমি এখন পারবো না, আমার একটা গুরুত্বপূর্ণ সার্জারী আছে। সরি নীর।
,,, কোনো সমস্যা নেয়, আমি বুঝতে পেরেছি।
প্রহর একটু নার্ভাস হয়ে বললো,,, আআ তাহলে আমি নিয়ে যায় নীরকে শপিং এ।
অয়ন কিছু বলার আগেই সায়ন বলে,,,, প্রহর ভাইয়া মনে হয় না তোমার এতো কষ্ট করা লাগবে, অয়ন ভাইয়া টাইম বের করে ঠিক কিছু একটা কিনে আনতে পারবে। তাছাড়া তুমি একটা নতুন বই ও লিখছো।
অয়ন,,,,, সায়ন ঠিক কথা বলেছে, আমি নীরের জন্য একটা ড্রেস কিনে নিয়ে আসবো, ওকে নীর।
,,হুমম ঠিক আছে।
প্রহর মন খারাপ করে বলে,,,, হুমম তাহলে তো ভালোই
নাস্তা শেষ করে, সবাই সবার রুমে চলে যায়,অয়ন সায়নকে আটকিয়ে বলে,,, কি ব্যাপার তুই প্রহরের সাথে এমন ভাবে কেনো বলেছিস, ও আমার বন্ধু হয়, আর কোনো দিন যাতে না দেখি ওর সাথে এভাবে কথা বলতে।
সায়ন,,,, ভাইয়া আমি ভালো ভাবেই বলেছি, তাছাড়া আমি প্রহর ভাইয়াকে তোমার মতোই ভালোবাসি, কিন্তু আমার মনে হয় প্রহর ভাইয়া হয়তো এখনো ভাবীকে ভালোবাসে। ভুলতে পারে নি
অয়ন,,,,,, এটা তোর ভুল ধারণা, আর কাওকে ভালোবাসা কি অপরাধ নাকি। আমি প্রহরকে ভালো করে জানি, আর এটাও জানি যে প্রহর হয়তো নীরকে ভুলতে পারেনি কিন্তু ও আমার সাথে প্রতারণ কোনো দিন ও করবে না। ও বন্ধু না আমার ভাই হয়, আর ও এটা ভালো করেই জানে যে, আমি নীরকে ছাড়া বেঁচে থাকতে পারবে না।
সায়ন,,,, আমার যেটা মনে হলো বললাম। আচ্ছা আমি এখন যায় আমার অনেক কাজ আছে।
সায়ন চলে যায়, অয়ন ও তার রুমে যায়। অয়ন রেডি হয়ে বলে,,,, নীর আমি যাচ্ছি তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো, নিজের খেয়াল রেখো কিন্তু।
,,,হুমম ঠিক আছে, আপনিও সাবধানে যাবেন কিন্তু।
অয়ন,,,,, হুমম,, বাই।
অয়ন যাওয়ার সময় প্রহরের রুমে যায় ওর সাথে দেখা করার জন্য, প্রহর অয়নকে দেখে ওর হাতে কিছু একটা ছিলো সেটা লুকিয়ে ফেলে তাড়াতাড়ি, অয়ন সেটা খেয়াল করে বলে,,,,, অসময় এসে পড়লাম নাকি।
প্রহর হেসে বলে,,,, তোর জন্য আমার সময় সব সময় ঠিক থাকবে,, বল কি বলতে এসেছিস।
অয়ন,,,, এটাই বলতে এসেছি যে, আমি না থাকলে তুই একটু নীরের খেয়াল রাখিস, এই বাড়িতেও আমি নীরের নিরাপত্তা দেখছি না, আমি কিছু গার্ড বাড়িয়ে দিয়েছি, তুই ও একটু খেয়াল রাখিস।
,,,তুই নিশ্চিতে যা, আমি পুরো খেয়াল রাখবো।
,,,হুমম,, আর আজকে পার্টিতে অনেক সুন্দর সুন্দর মেয়ে আসবে তোর সাথে এক জনকে মিলিয়ে দেওয়ার প্লেন ও আছে আমার।
প্রহর শুধু মুশকি হেঁসে বলে,,,, আমাকে কেনো এসব ঝামেলায় ফেলতে চাইছিস।
,,,আমি পড়েছি তাই তোকেও ফালাবো।
প্রহর মুশকি হেঁসে বলে,,, চেষ্টা করে দেখতে পারিস
অয়ন হুমম বলে চলে যায়।
এক জন ফোনে বলছে,,,, আজকেই যেনো মারু নামের মেয়ে এই দুনিয়া থেকে সরে যায়,আজ যেনো বাঁচতে না পারে, যতো টাকা লাগে আমি দিবো, আর হ্যাঁ শুধু যার ছবি পাঠিয়েছি তাকেই শেষ করবে, অন্য কারো ক্ষতি করলে তোদের ঐখানেই শেষ করে দিবো।আর মারুকে বেশি কষ্ট দিয়ে মারলেও তোদের খবর আছে।
চলবে,,,,,,,,,
ভালে লাগলে লাইক, কমেন্ট করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।
চলবে,,,,,,,,,
ভালে লাগলে লাইক, কমেন্ট করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ।