আমায় রেখো প্রিয় প্রহরে পর্ব -৪৮+৪৯

#আমায়_রেখো_প্রিয়_প্রহরে
#পর্ব_৪৮
Writer #পুষ্পিতা_প্রিমা

অভিক এসে মায়ের পাশে গিয়ে বসলো। সালমা বেগম ঘাড় ফেরাতেই ছেলেকে দেখে বলে উঠলেন

তোর এতক্ষণে আসার সময় হলো? সিজান কোথায়?

ও ফোনকলে আছে। বাইরে।

সুজানা মাথার উপর থেকে শাড়িটা নামিয়ে রাখতে রাখতে অভিকের দিকে তাকালো। অভিক ভুরু নাচিয়ে জানতে চাইলো

কি?

সুজানা দুপাশে মাথা নাড়ালো। সালমা বেগম তা পরখ করে বললেন

ও কোনগুলো পছন্দ করেছে দেখ তো। বিয়ের শাড়িটা ওদিকে। যাহ একটু দেখ।

অভিক মায়ের পাশ উঠে গিয়ে বলল,

ওকে।

সুজানার দিকে যাওয়ার সময় জিনিয়ার মাথা চাপড়ে দিয়ে যেতে যেতে বলল

এ কি করছে এখানে?

জিনিয়া মাথার পেছনে চেপে ধরে বলল

আহ মারলে কেন?

এটাকে মাইর বলে জানতাম না।

সালমা বেগম ডাক দিলেন।

অভি হচ্ছেটা কি? এখানেও মশকরা করবি?

অভিক নিজের বাম কান টেনে বলল,

সরি সরি। আর করব না। কি জ*ল্লাদ মেয়েরে বাবা!

জিনিয়া বলল

মামি দেখেছ দেখেছ কি বললো? আপু তুমি শুনেছ? সুজানা আপনি শুনেছেন ?

আনিকা আর সুজানা হাসলো।

অভিক সুজানার পাশে গিয়ে বসলো। বলল

এটা পছন্দ?

আপনার পছন্দ হয়েছে?

অভিক শাড়িটা উল্টেপাল্টে দেখলো। জিনিয়া বলল

এটা জোস। আমি অলরেডি মা আর ভাবিকে ছবি পাঠিয়ে দিয়েছি। তারা পছন্দ করেছে। স্পেশালি নানুও এটা পছন্দ করেছে। যদি সুজানার পছন্দ হয় তাহলে এটা নিতে বলেছে।

অভিক সুজানার দিকে তাকালো। সুজানা মাথা নাড়ালো। অভিক বলল

মা এটা সুজানার পছন্দ হয়েছে।

সালমা বেগম বললেন

তোরও পছন্দ হয়েছে?

আমার মায়ের পছন্দ বলে কথা। অপছন্দ হওয়ার প্রশ্নই উঠেনা।

সালমা বেগম একগাল হাসলেন। সুজানা বোধহয় এই প্রথম উনার হাসি দেখলো। সুজানাকে দেখার সাথে সাথে উনি হাসি থামিয়ে দিলেন। বললেন

সত্যি কথা বলবে মেয়ে। আবার পরে মনে হবে আমার পছন্দ তোমার উপর চাপিয়ে দিয়েছি।

সুজানা দু’পাশে মাথা নেড়ে বলল

নাহ।

অভিক তাকে নকল করে বলল

নাহহহ।

সুজানা কপাল কুঞ্চন করলো।

বাকিরা হেসে উঠলো।

_____

সবার বাজার সাজার শেষ করতে করতে গভীর রাত নেমে এল। আজীম সাহেব অফিস থেকে ফিরে সবাইকে দেখতে চলে এলেন। এসেই দেখলেন বিশাল কারবার। সালমা বেগম আনিকাকে সাথে নিয়ে ঘর সাজানোর অনেক জিনিসপত্রও কিনে নিলেন ফাঁকেফাঁকে। ঘরের মাঝে ঝুলিয়ে দেয়ার জন্য একটা বড় সাইজের ঝুলানো দোলনাও কিনলেন। আনিকার ঘরে একটা আছে। আরও কত কিছু কিনলেন তার হিসেব নেই। নিজের হাতে ছেলের সংসারটা সাজিয়ে দেয়ার মতো এত আনন্দ আর কোনোটিতে উনি পাননি । এই ছেলেটাকে নিয়ে কতই চিন্তায় না ছিলেন উনি। যতই প্রতিষ্ঠিত আর বিলেত পাস হোক উনার কাছে ছেলেটা সেই সাদাসিধা বোকাসোকা হাবাগোবা। যদি কোনো বাজে মেয়ের পাল্লায় পড়তো তখন কি হতো? ভাগ্যিস সুজানার দিকে তার মন গেঁথেছিল। মায়ের মতো ছেলেটাও মেয়েটাকে ওই বাড়ির একজন করে চেয়েছিল!

বউয়ের কেনাকাটা শেষ হওয়ায় সবাই দম ছাড়লো। যদিও আরও অনেক কেনাকাটা বাকি পড়ে রয়েছে।
কিন্তু বউয়ের কেনাকাটা শেষ হয়েছে মানে অনেক বেশি কিছু। গায়ে হলুদের শাড়ি থেকে শুরু করে বিয়ে, ওয়ালিমা আর অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য কেনা শাড়ি, গহনা, সাজগোজের জিনিসপত্র সবকিছু বাড়িতে বসে সবাই রেডি করে তারপর বউয়ের বাসায় পাঠিয়ে দেবেন। শপিংমল থেকে বের হয়ে সবাই রেস্টুরেন্টে খাওয়াদাওয়া করলো বেশ। জ্বর থাকায় সুজানা বেশি খাওয়াদাওয়া করতে পারলো না। সবাই তা দেখে তাকে বেশি জোরাজোরি করলো না।

অভিক সাজিয়া বেগম আর সায়েমের জন্য করা বাজার-সদাইগুলো নিয়ে সুজানাকে বাসায় দিয়ে আসলো। বাকিরা নবকুঠিরে ফিরে গেল।

গায়ে হলুদের আগের দিনই সুজানাদের বাসায় তার সব জিনিসপত্র দিয়ে গেল আহনাফ আর আজীম সাহেব। হুট করে বিয়ে নামানোতে মেহমান দাওয়াত করা নিয়ে তারা বেশ দৌড়াদৌড়ির উপর ছিল। তাই স্যুটকেসগুলো বাসায় ঢুকিয়ে দিয়ে চা খেয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন উনারা।

গায়ে হলুদের দিন সকালে সুজানা দাদার বাড়ি থেকে তার বৃদ্ধা দাদিমা, চাচী আর চাচাতো ভাই-বোনরা এল। মামার বাড়ি থেকে মামা মামী, আর ছোট খালাম্মার পরিবার। তার বড় ফুপু আর ছোট ফুপুরাও এসেছে। ভেতরকার মনোমালিন্য থাকলেও বিয়েতে দাওয়াত করায় কেউ না এসে থাকতে পারেনি। সাজিয়া বেগমও মেয়ে বিয়ের সবকিছু একা হাতে সামলাতে গিয়ে কেমন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাই সবাইকে ডেকে নিয়েছেন।

মেয়েটাকে ছেড়ে কেমন দশা হবে ভেবেই উনি কূল পাচ্ছেন না। এতদিন বিয়ে বিয়ে করে নিজেই অস্থির হচ্ছিলেন। আর এখন মেয়েটা পাশে নেই ভাবতেই গেলেই দমবন্ধ লাগছে। কি করে থাকবেন মেয়েটাকে ছেড়ে? যদিও সান্ত্বনা পান এই ভেবে একটা মানিকের মতো ছেলে পেয়েছেন মেয়ে জামাই হিসেবে। আর কোনো দুঃখ থাকার কথা নয়।

_______

নবকুঠিরের সম্মুখ পথ থেকে শুরু পুরো বিল্ডিংটা লাইটিং দিয়ে সাজানো হয়েছে। লাইটিংয়ের আলোয় ঝলমল করছে দ্বিতল ভবনটি। বাড়ির গেইট থেকে শুরু করে বাড়ির ভেতরেও অসম্ভব রকমের সুন্দর করে ডেকোরেশন করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে দলে দলে মেহমান আসা শুরু হয়েছে। অভিক দুপুরের দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল বিশেষ বিশেষ কাজে। সাথে তার বন্ধুরা ছিল। যখন ফিরলো তখন আত্মীয় স্বজনের সাথে কুশল বিনিময় করতে গিয়ে সে অস্থির। যার বিয়ে সে এতক্ষণ পর বাড়ি ফিরছে কেন, কোথায় গিয়েছে এতসব প্রশ্ন তার সম্মুখে। সে সবার প্রশ্নের উপর দিয়ে ব্যাপারটা সেখানে মিটিয়ে নিল।

আজীম সাহেব এসে জানতে চাইলে

কি ব্যাপার বৎস? সব ভালো লাগছে? অভিক ফারদিনের বিয়ে বলে কথা। ঝাক্কাস করে সাজিয়েছি।

অভিক চারপাশে চোখ বুলিয়ে বলল

দারুণ। আমার একটা প্রশ্ন ছিল।

বলে ফেলো।

মায়ের পছন্দ হয়েছে সবটা?

আমি যাহাই করি তোমার মায়ের তাহাই অপছন্দ। আমাকে বলে গেল সে নাকি সদর দরজার বাইরে চোখ দিতেই চোখগুলো ঝলসে গেল। লাইটফাইটগুলো এমন ঝিকঝিক করছে, যেমন মানুষ তেমন তার রুচি। এখন আমার রুচি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।

অভিক সশব্দে হেসে উঠলো। বলল

সুজানা এভাবে আমাকে বললে দারুণ শোনাবে কিন্তু।

আফসোস সুজানা এভাবে কখনোই বলবে না। সুজানা ভারী মিষ্টি মেয়ে। তোমার মা কপাল করে এমন ছেলের বউ পাচ্ছে। আনফরচুনেটলি সুজানার সাথে ঝগড়া করে তোমার মা কোনো মজাই পাবে না।

তাহলে মা ঝগড়া করাটাই বন্ধ করে দেবে।

এটাতে আবার আমার লস। তোমার মায়ের সাথে ঝগড়া না করলে আমার দিনটাই ভালো যায় না।

অভিক হেসে ফেলল আবার।

আহনাফ এসে বলল

চাচ্চু ছোটমা তোমাকে এক্ষুণি ডাকছে। কি নিয়ে কথা হচ্ছে এখানে?

অভিক হাসতে হাসতে বলল

তোমার ছোটমাকে নিয়েই কথা হচ্ছে।

আহনাফ হাসলো। বলল,

চাচ্চু দ্রুত যাও। নাহলে..

আমি জানি কি হবে। যাইহোক অল দ্য বেস্ট অভিক। ওদিকের কি অবস্থা ফোন করে জেনে নিও।

ওকে।

______________

সুজানার বন্ধুরা সবাই মাগরিবের পরেই চলে এল। সুজানা পুরোটা দিন কাজে ব্যস্ত ছিল। নিজের বিয়েতে সে নিজেই কূল পাচ্ছে না এত কাজ করে। চাবির তোড়াটা তার ওড়নার কোণায় ঝুলছে সেই সকাল থেকে। মাকে হঠাৎ করে কেমন নরম দেখাচ্ছে। শরীরটা খারাপ লাগছে কিনা তাও বুঝা যাচ্ছে না। সুজানা কতবার জিজ্ঞেস করেছে উনি এড়িয়ে গেলেন প্রত্যেকবার। সুজানা মনটা কেমন আকুপাকু করছে সেই সকাল থেকে। এত তাড়াতাড়ি জীবনের মোড়টা কেমন ঘুরে গেল। মা ভাইকে নিয়ে ছিল তার পৃথিবীটা। তারপর মাস্টারমশাইয়ের আগমন। আগে তার লড়াইটা একার ছিল এখন পাশে একজন আছে। কিন্তু তারপরও মনটা কাঁদছে খুব। আজকে বাবা নামক মানুষটাকে একটু বেশি করেই মনে পড়ছে তার।
বাবা থাকলে হয়ত মা ভাইকে নিয়ে চিন্তাটা তার একটু কম হতো। আম্মা আর ভাইকে ছেড়ে সে থাকবে কি করে? বারবার তার চোখ ভিজলো সবার আড়ালে। এত চিন্তা ব্যাথা সে কোথায় লুকোবে?

পার্লারের মানুষ এসে সুজানাকে সাজিয়ে গেল। আনিকা ঠিক করে দিয়েছে সব। সেখানে আরও অনেকজন সাজলো। মেহুল আর শান্তা থেকে শুরু করে রোজা আর সুজানার খালাতো, চালাতো বোনগুলো সব। সবার গায়ে হলুদ শাড়ি।

ছাদে স্টেজ সাজানো হয়েছে। সেখানে বেশ সুন্দর করে ডেকোরেশন করা হয়েছে। সবগুলো সাইফ করেছে দায়িত্ব নিয়ে। সায়েম তার বন্ধু বান্ধবের সাথে ওখানে ক্যামেরা সেটআপের কাজে ব্যস্ত। আপার বিয়ে নিয়ে তার আনন্দের শেষ নেই।

সুজানাকে সাজিয়ে ছাদে নিয়ে যাওয়ার সময় সাজিয়া বেগমকে ডেকে নিয়ে এল সবাই। তার দাদিমা বলল মাকে সালাম করে তারপর স্টেজে যা বোন। বড় বউ তুমি ওকে দোয়া করে দাও। সাজিয়া বেগম আগে তার দাদিমাকে সালাম করার জন্য ইশারা করলো। সুজানা দাদুকে সালাম করতে যেতেই উনি মাথায় হাত বুলাতে গিয়ে কাঁদলেন। তার বড় নাতিন। তার বড় ছেলের বড় মেয়ে। ছেলেটা যাওয়ার পর নাতি নাতনি দুটো আর ছেলে বউয়ের সাথে কত দূরত্ব বেড়ে গেল হুট করে।
সুজানা দাদিমাকে জড়িয়ে ধরে বলল

আব্বা তোমাকে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিল আম্মাকে দেখে রাখার। তুমি দেখে রাখোনি কেন?

তুইও অভিযোগ শোনাচ্ছিস বোন? আমার কি করার ছিল।

আমার আম্মা অনেক কষ্ট পেয়েছে। অনেক কষ্ট করেছে। আজও করছে। তার বিনিময়ে আম্মা কিচ্ছু পাইনি। কিচ্ছু না। তোমরা সবাই স্বার্থপর।

সুজানাকে মেহুল ছাড়িয়ে নিল। বলল

গাধী এখন কেঁদেকেটে ভাসাচ্ছিস। আন্টিকে সালাম করে চল।

সুজানা মাকে সালাম করতেই উনি উনি মেয়ের মুখে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। বললেন,

মাথায় ব্যাথা লাগছিল। চা নিয়েছিলাম। ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে বোধহয়। যাই।

সুজানা যেতে দিল না মাকে। ঝাপটে জড়িয়ে ধরে ডাকলো

আম্মারে আমিও তোমাকে কিছু দিতে পারিনি।

সাজিয়া বেগম চোখের জলে হেসে মেয়ের চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন

তুই সুখী হ। ভালো থাক। এটাই আমি চাই। আমাকে আর কিছু দিতে হবে না।

সুজানা ডুকরে ডুকরে উঠলো। বলল

আমি একটা ঘর বেঁধে সেখানে তোমাকে নিয়ে যাব আম্মা। তোমাকে একা রাখব না। আমি তোমাকে একা রেখে শান্তিতে থাকতে পারব না আম্মা। আমি কি করে থাকব তোমাকে আর ভাইকে ছাড়া।

মা হেসে মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে বললেন

আমিও তোকে ছাড়া কি করে ভালো থাকব সোনা? নবকুঠির আর কতদূর? রোজ গিয়ে তোকে দেখে আসব। তোর মাস্টারমশাই আছে তো। কাল আমায় বলেছে সুজানা যখন চায় তখন সে নিয়ে আসবে আমার কাছে।

সুজানা ফুঁপিয়ে উঠলো আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। উপস্থিত সকলের চোখ ভিজিয়ে দিল মা মেয়ের এই ব্যাথাতুর কথোপকথন। অনেক কষ্টে মা মেয়েকে ছাড়িয়ে নিল সবাই।

ছাদের স্টেজে গিয়ে বসামাত্রই সুজানার ফোন নিয়ে শান্তা ছুটে এল। বলল

দেখি দেখি স্বাভাবিক হ। স্যারের বাড়ি থেকে ফোন এসেছে।

সুজানা ফোনটা নিল। ভিডিও কলের স্ক্রীনে আনিকাকে দেখা গেল। বলল

সাজ খুব সুন্দর হয়েছে। ছোটমা তাড়াতাড়ি এসো। সুজানাকে দেখতে চাইলে না।

কিছুসময় পর সালমা বেগম ফোনের ওপাশে এলেন। সুজানা সালাম দিতেই উনি সালাম নিয়ে বললেন

তোমার গলা বসে গেছে কেন? কেঁদেছ নাকি? এত কাঁদাকাটির কি আছে? তোমার শ্বশুরবাড়ি কি লন্ডনে?

সুজানাকে কিছু বলতে না দিয়ে উনি একাই বকবক করে থামলেন। তারপর আনিকাকে ফোন দিয়ে চলে গেলেন। জিনিয়া আর তরীদের সাথে টুকটাক কথা বলছিল সুজানা। অভিক এসে ফোনটা কেড়ে নিয়ে ঘরে থেকে বেরিয়ে গেল। সে গতকাল থেকে সুজানার সাথে একটা কথাও বলেনি। সুজানাও সময় পায়নি, সেও না। এখন একটু কথা বলবে। তাই ফোনটা নিয়ে তার ঘরের দিকে চলে গেল। ওখানে জিনিসপত্র নিয়ে এসে গাদাগাদি করে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। অভিক দরজা খুলে আবার বন্ধ করে দিয়ে চেয়ার টেনে বসলো। সুজানা ফোনের ওপাশে এখনো চেয়ে আছে। অভিক ক্যামেরা তার দিকে ঘুরিয়ে নিল। সুজানা তাকে দেখে মৃদু হাসার চেষ্টা করলো। গায়ের রঙে আকাশী রঙের পাঞ্জাবি তাকে বেশ মানিয়েছে। অভিক তাকে ভালো করে পরখ করে প্রশ্ন করলো

ওখানে সব ঠিকঠাক?

সুজানা মাথা নাড়ালো।

সকালে ডালিম গাছে একটা সুন্দর হলুদ পাখি দেখেছিলাম। আপনাকে তার মতো দেখাচ্ছে।

পরোক্ষ প্রশংসায় সুজানা নির্মল হাসলো। অভিক বলল,

কাল দেখা হচ্ছে। কালকের পর আর কাঁদা যাবে না ম্যাডাম।

সুজানা কিছুটা বিস্ময় নিয়ে চোখ নামিয়ে নিল দ্রুত।

কোথায় কেঁদেছি?

সেটার প্রমাণ দিতে চাই না। কিন্তু কালকের পর আর কাঁদা যাবে না। কাল থেকে আপনার সব সুখদুঃখের ভাগীদার আমি। এই সবকিছুতে আপনি খুশি?

ছোট্ট প্রশ্নটি সুজানাকে ভড়কে দিল। সে একটু করে ভেবে নিল অভিক ফারদিন নামের কেউ তাকে চেনেনা সেও ওই নামের কাউকে চেনেনা। তখন এই মস্ত বড় পৃথিবীটাতে নিজেকে বড়ই অসহায় মনে হলো।

সে উত্তর দিতে পারলো না। শুধু আবদার করলো..

ফোনের ওপাশে আপনি আর কিছুক্ষণ থাকুন।

উত্তর এল..

আমি আছি।

চলবে…..#আমায়_রেখো_প্রিয়_প্রহরে
#পর্ব_৪৯
Writer #পুষ্পিতা_প্রিমা

তারপর অনুষ্ঠান শুরু হওয়ায় তাদের আর বেশিক্ষণ কথা বলা হয়নি।
খুব সুন্দর ভাবে মেহেদী সন্ধ্যা কেটে গেল। সুজানার দুহাত রাঙানো হলো মেহেদীর লাল রঙে। “এ এফ” লেটারদুটোর জায়গা পেল তার দু’হাতের মেহেদীর ফাঁকে ফাঁকে। সকালে ঘুম থেকে উঠে শুকনো মেহেদীর উপর হাত ছোঁয়াতেই সুজানার কেমন যেন অনুভূতি হলো। মাস্টারমশাইয়ের নাম তার হাতে। সে তা ছুঁতে পারছে। এক অন্যরকম সুখানুভূতি হলো তার।

নবকুঠিরে গতরাতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে প্রায় ফজরের কিছু আগে। অভিককে দু’হাতের মেহেদী শুকানোর আগ অব্ধি কেউ ঘুমাতে দিতে রাজী ছিল না। কখনো এভাবে রাত জাগেনি বলে তার চোখ দুটোর অবস্থা দেখার মতো হয়েছিল। তারপর যেই সুযোগ পেল হাত মুখ ধুঁয়ে সোজা ঘুমাতে চলে গেল। ঘুমাতে পারলো কই? তিন ঘন্টার ঘুম পুরোপুরি না হতেই মায়ের ডাকাডাকি। বাচ্চাদের হৈহৈ ছোটাছুটি। মেহমানদের হাঁক-ডাক। আর বিচ্ছু কাজিনগুলো তো আছেই। মাথা নষ্ট অবস্থা।

পরেই দু হাতের মেহেদীতে সুজানা নামটা দেখে ক্লান্তি আর বিরক্তিগুলো দূরে সরে পড়লো । মনে পড়লো অন্য দশটা দিনের মতো নয় আজকের দিনটি। এটা তার জীবনের অন্যরকম একটা পূর্ণতার দিন। জীবনের এতগুলো বছরে সে কি পেয়েছে কি পায়নি তার হিসেব রাখেনি তবে আজকের এই পাওয়াটা তার চিরদিন মনে থাকার মতো। একটা নিজের মনের মতো মানুষ পাওয়ার দিনটা স্মরণীয় করে না রাখাটাই তো বড় ভুল।

ইংরেজি লেটারে সুজানার নামটার উপর সে আঙুল ছোঁয়ালো আরও একবার । এই নামটা আর সেই মেয়েটা তার জীবনে এক অন্যরকম প্রশান্তির। ভাবলেই কেমন যেন মনটা শান্ত হয়।

অতঃপর নির্ঘুম রাতটা সুজানার নামেই বিসর্জন দিয়ে দিল সে। এ আর এমন কি। এমন অনেক রাত সুজানার সহজ সরল চাহনিটা তাকে ঘুমাতে দেয়নি। ভালো করে খেতে দেয়নি। স্টুডেন্টদের পড়ায় মনোযোগ দিতে দেয়নি। বাবার কাজের ফাইলে ভুলচুকের একমাত্র সাক্ষী। এসব কোনো ব্যাপারই না।

______

ঘুমঘুম চোখে ব্রাশ হাতে নিয়ে সে রান্নাঘরের উদ্দেশ্য এগিয়ে গেল। পুরো বাড়িতে গাঁদাফুল, রজনীগন্ধা আর গোলাপের পাপড়ির ছড়াছড়ি। বাচ্চারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যা অবস্থা করেছে।

অভিক কিচেনে উঁকি দিতেই দেখলো সেখানে অনেক মুরুব্বি আছেন। গল্পগুজব করছে সালমা বেগম আর আনজুমা বেগমের সাথে। অভিক দাদুকেও দেখতে পেল।

তিনি সর্বপ্রথম নাতিকে দেখে বললেন

ঘুম ভেঙেছে আমার ভাইয়ের? আহারে চোখদুটো বসে গেছে কেমন।

সবাই ঘাড় ফিরিয়ে চাইলো। অভিক বলল

সবাই ঘুমাতে দিল কই? মা ঘরটা ওইরকমই থাকবে? অতগুলো জিনিস! কেমন দেখাচ্ছে।

শোনো ছেলের কথা। তোর বউ ঘরে ঢুকার আগেই সব গোছানো হয়ে যাবে। অতগুলো গিফটবক্স আমি রাখার জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলাম না তাই ওখানে রেখেছি। এখনি সরিয়ে ফেলব।

আনিকা বলে উঠলো

ইশশশ কি চিন্তা তার! তোর বউকে ওই গুদামঘরেই রাখবো। হুম।

অভিক ভুরু কুঁচকে চাইলো। সবাই হাসলো। আনজুমা বেগম বললেন

আহা মজা করছে অভি। আমরা ক্লাবে যাওয়ার আগে সব ঠিকঠাক করেই যাব।

অভিক মাথা দুলিয়ে বলল

তাহলে ঠিক আছে।

_______

ক্লাবে খাওয়াদাওয়ার আয়োজনের দায়িত্বে গতকাল থেকে সুজানার বড় মামা, ছোট মামা আর চাচা আছেন। সাথে খালু আর ফুপারাও দেখাশোনা করছেন। এসব নিয়ে সাজিয়া বেগমের তেমন মাথা ঘামাতে হয়নি। তিনি অনেকগুলো বছর পর শ্বশুর বাড়ির মানুষদের এত কাছাকাছি আছেন। শ্বাশুড়ি যিনি একসময় সেই স্কুল পড়ুয়া সাজিয়া বেগমকে নিজের বড় ছেলের জন্য পছন্দ করে বাড়ির বউ করে তুলেছিলেন সেই শ্বাশুড়ির সাথেও দূরত্ব বেড়ে গিয়েছিল কিছু ভুল বুঝাবুঝি আর মান অভিমানের কারণে। অল্প বয়সে বিধবা হওয়ায় মা বাবা আর ভাইদের সাথে সাথে শ্বাশুড়িও যে উনাকে আবারও বিয়ের কথা বলবেন সেটা তিনি কুক্ষণেও ভাবেননি। মা ভাই নাহয় তার কথা ভেবেছিল। কিন্তু শ্বাশুড়ি? ছেলের রেখে যাওয়া দুটো সোনামানিকের মুখের দিকে চেয়ে কি করে অমন কথা তিনি মুখে আনতে পারলেন?

কথা-কাটাকাটি, নিজের সন্তানদের প্রতি অবহেলিত আচরণে সবার প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে তিনি গ্রাম থেকে শহরে পাড়ি দিলেন একা । বহুকষ্টে তিলে তিলে দু সন্তানকে সুশিক্ষা দিতে গিয়ে পিতৃহীন হওয়ায় বহুবার পিছিয়ে পড়েছেন, শত বাঁধাবিপত্তি এসেছে। তবুও হার মানেননি। নিজের সবটুকু দিয়ে আগলে রেখেছেন। উনি উনার মাস্টারমশাইয়ের রেখে যাওয়া আমানতগুলোকে পরম যত্নে আগলে রেখেছেন। মানুষটা না-ই বা থাকুক, সেই সহজ সরল প্রাণখোলা হাসির মানুষটার চেহারা চোখে ভাসলেই আজও উনি শক্তি পান, ভরসা পান।
ভালোবাসা যে মরেনা কভু। মরণ তো ঘটেছিল একসাথে পথচলার সেই স্বপ্নগুলোর।

___

পার্লারে যাওয়ার আগে সুজানাকে ঘুম থেকে তুলে আজ নিজের হাতে খাওয়ালেন সাজিয়া বেগম। পরম যত্নে। সেই ছোট্ট সুজানাকে যেভাবে খাওয়াতেন।
খেতে খেতে সুজানার চোখজোড়া যে কতবার ভিজলো নোনাজলে!
মায়ের হাতে মাখা ভাতের ঝালে নয় মায়ের পরম মমতায় আপ্লূত হয়ে। মায়েরা এত ত্যাগ করতে কিভাবে পারে?

খাওয়ার পর আজ মুখটা মায়ের শাড়ির আঁচলেই মুছা হলো। তারপরের দশ মিনিটের বেশি সময় মেয়ে মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে কেঁদেছিল। মায়ের কথা “নবকুঠির আর কতদূর!
আর মেয়ের কথা “ততটাই দূর আম্মা যতটা দূর থেকে চাওয়ামাত্রই তোমার কাছে ছুটে এসে কোলে মাথা রাখা যাবেনা। মায়ের কাছে মেয়েদের থেকে যাওয়ার মতো অনিয়ম গুলো একবারের জন্য হলেও নিয়ম হোক।

মা আদরে আদরে বললেন

এ হয় না। হয় না।

________

ব্লুমিংপার্ক ক্লাবে বিয়ের যাবতীয় আয়োজন। ক্লাবটা সুজানার খালু পছন্দ করেছেন। বেশ দারুণ দেখতে সেটি। খরচও নেহাত কম নয়। সব খরচ উনি বহন করেছেন বিধায় সাজিয়া বেগম আর কোনো উল্টো প্রশ্ন করেননি। তাছাড়া একটা ভালো ক্লাব দরকারই ছিল।

সুজানার গাড়ি এসে থামলো বেলা তিনটের দিকে। তার সাথে তার বান্ধবীরা আছে। আহির, নিখিল আর জায়িনরা তাদের ক্যামেরা নিয়ে ছোটাছুটিতে ব্যস্ত। আজ স্যারের কাছ থেকে ফিতা কাটার দরুন মোটা টাকার উসুলের ধান্ধায় আছে তারা। সুজানার সাথে পার্লার থেকে ফিরলো শান্তা, মেহুল আর নিহাত। নিহাত ক্লাবে না এসে পার্লারেই চলে গিয়েছিল। সুজানা তাকে দেখে খুব খুশি। তাদের বন্ধুমহলে মেয়েটাকে কেন ভাবওয়ালী বলা হয় সেটার উত্তর সুজানা আজও পায়নি। মেয়েটা কথা বলতে শুরু করলে থামেই না। সুজানার তো তাকে দারুণ লাগে।

তারা ক্লাবে পৌঁছার পরপরেই বরপক্ষের অনেকে তার দেখা করার জন্য ছুটলো। বরের পরিবার থেকে যদিও তখনও কেউ আসেনি।
সুজানার ফটোশেসন চললো অনেক। বন্ধুদের ফাইজলামির সাথে পেরে না উঠে সে বড়ই ক্লান্ত। তাদের বন্ধুমহলের ছবি তুলতে তুলতে বরপক্ষের ক্যামেরাম্যান হাঁপিয়ে উঠেছে। এমন বিচ্ছু বন্ধুও মানুষের থাকে?

বরের গাড়ির সাথে পরপর অনেকগুলো গাড়ি এসে থামলো তারও ঘন্টাখানেক পরে। সবার হৈচৈ বেড়ে গেল। মিষ্টি আর ফুল নিয়ে বড়রা ছুটলো নতুন বেয়াই বেয়াইন অভ্যর্থনা জানাতে। আর যুবক যুবতীরা বর সাদর সম্ভাষণের মাধ্যমে ক্লাবে প্রবেশাধিকার দিতে।

মজার কথা এটাই, বর তাদের বেশিরভাগেরই স্যার হওয়ায় সবাই তথাকথিত বর আর বরের বন্ধুদের সাথে তর্কে যেতে লজ্জায় মরি মরি অবস্থা। মেহুল তো সামনেই গেল না। নিহাত আর শান্তার পেছনে দাঁড়িয়েছিল। নিহাত খুব সুন্দর করে ব্যাপারগুলো মিটিয়ে নিল।

অভিক সব বন্ধুদের উপর ছেড়ে দিয়েছে। তার তো এসবে হেলদোল নেই। ভেতরে যাওয়ার তার ভীষণ তাড়া।

অতঃপর ফিতা কাটা আর মিষ্টিমুখ করানো শেষে বরপক্ষের লোকজন ভেতরে গেল।

সালমা বেগম তো একটু মিষ্টিমুখ করেই সোজা সুজানার কাছে গিয়ে স্টেজে পাশাপাশি গিয়ে বসে আছেন। সবাই বউ শ্বাশুড়িকে দেখছে। ক্যামেরা ম্যান এসে ছবি নিতেই উনি মহাবিরক্ত হয়ে বললেন

আহা টাকা দিছে বলে এভাবে উসুল করে নিতে হবে? কাল সারারাত ছবি তুলেও শান্তি হওনি বাপু?

ক্যামেরা ম্যান হেসে জবাব দিল।

বউ শ্বাশুড়ির এমন ছবি না নিলে আমি আর কিসের ক্যামেরা ম্যান হলাম আন্টি!

সুজানা মৃদু হাসলো।

আনিকা আর জিনিয়া, তরী, খড়ি আরও অনেকে অন্য গাড়িতে করে এল। অনা আবিদ তো সুজানাকে বধূবেশে দেখে তার পাশ ছাড়লো না। বারবার সুজানার দিকে তাকালো। আর জানতে চাইলো

সুজান বউ? লাল বউ?

——

বর এসেছে শুনে সাজিয়া বেগম দোতলায় নেমে গেলেন। ওখানে বরের অনেক বন্ধু আর বাবা, জেঠু আর উনাদের গণ্যমান্য বন্ধুবান্ধব থাকায় উনি সেদিকে আর এগোলেন না। তবে একপলক দেখলেন মেয়ে জামাইকে।
আজকে “উনি” থাকলে দুটো মাস্টারমশাইয়ের কেমিস্ট্রি পুরো জমে যেত। কত খুশি হতো সুজানার আব্বা!
হঠাৎ অভিকের চোখ উনার দিকে পড়ায় উনি বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেলেন। অভিক কপালে পাঁচ আঙুল স্পর্শ করে সালাম জানাতেই উনি দূরে দাঁড়িয়ে হাসলেন। ইশারায় বুঝালেন ” আদর “।

___________

বিয়ের শুরুর দিকে আয়না দেখা পর্ব শুরু হলো। অভিকের দিকে আয়না ঘুরাতেই অভিক আয়নায় চোখ রাখলো।
সুশোভিত, সজ্জিত প্রিয় মুখশ্রীটি দেখে
তার এতক্ষণের ধৈর্যের অবসান ঘটলো । আনিকা জানতে চাইলো

অভি কি দেখছিস?

সময় চলে যেতেই যখন উত্তর এল না। পাশ থেকে এমন আরও প্রশ্ন এল।

অভিক ধীরেসুস্থে ছোট্ট একটা উত্তর দিল।

সুন্দর।

সবাই হো হো করে আওয়াজ করে উঠলো। সুজানার কান দিয়ে গরম গরম ধোঁয়াটে বের হলো। ইশশ কি লজ্জা!
তারপর আয়নাটা তার দিকে দিয়ে জানতে চাওয়া হলো

সুজানা আয়নায় কাকে দেখছ?

সুজানা কৌতূহল বশত চোখ রাখলো। যদিও বুকের ভেতর অসম্ভব রকম তোলপাড় হচ্ছে। আয়নায় চোখ দিতেই সেখানের মানুষটা ভুরু নাচালো। সুজানা চোখ বন্ধ করে নিতেই আবারও প্রশ্ন ভেসে এল।

কাকে দেখতে পাচ্ছ সুজানা?

সুজানা ছোট্ট করে উত্তর দিল…

মাস্টারমশাই।

সবাই করজোড়ে তালি দিয়ে উঠলো একসাথে। তাদের দুজনের সাথে হাসিঠাট্টা শেষে সাজিয়া বেগম এসে মেয়েজামাইকে মিষ্টিমুখ করালেন। বললেন

পাঞ্জাবিতে করিমকে দারুণ মানায়। আর শেরওয়ানিতে একদম রাজার মতো দেখাচ্ছে। আমার জামাই রাজা।

অভিক হাসলো। বলল

দিজ ইজ দ্যা বেস্ট কমপ্লিমেন্ট এভার । করিমের আন্টি আর মাস্টারের শ্বাশুড়ি মা খুবই জিনিয়াস।

সাজিয়া বেগম চুলে হাত বুলিয়ে বললেন…..

আর এটা মানিক রতন।

_____

তারপর সবশেষে,

কাজী আসার পরেই আকদ পড়া শেষে বিয়ে পড়ানো শুরু হলো। এক আকাশ চিন্তা, ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে হাজারটা ভয়, মা ভাইয়ের ভবিষ্যৎ, পুরোপুরি অন্য একটা মানুষের সাথে জড়িয়ে যাওয়ার সেই কাঙ্খিত সময়ে সেই বৃষ্টি ভেজা ভরদুপুরে প্রথম দেখা অভিক ফারদিনকে সুজানার কবুল করে নেয়ার সাক্ষী হলো তার চোখ থেকে খসে পড়া বিরতিহীন অশ্রুজল, আর অনেকগুলো মানুষ।
আর অভিক ফারদিন। সে তো কবেই কবুল করে নিয়েছে সুজানা আফরিদাকে। আজ জনসম্মুখে কবুল করে নিল সম্পূর্ণ পবিত্র সম্পর্কের বন্ধনে। এই বন্ধন উপরওয়ালা না চাইলে কভু ছিঁড়বে না।

চলবে………

এত অপেক্ষায় রাখার পরেও যারা গল্পটার প্রতি আসক্ত তাদের প্রতি মন থেকে ভালোবাসা ❤️
আর আমার অপারগতার জন্য দুঃখীত🙏

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here