#ইংলিশ_টিচার
পর্ব-৭
সুমনা হক
মিলির চিরকুট টা দেখে শুভ বুঝতে পারছিলো আজ হয়তো বেশিই বলে ফেলেছে এভাবে না বললে ও পারতো সে কিন্তু এখন মিলি কোথায় গেলো তাই বুঝতে পারছেনা শুভ। মিলি চিরকুট এ স্পষ্ট উল্লেখ করেছে তার বাসায় না বলতে এসব কথা।
শুভ তার বাবা, মা সবাইকে আমার ডেকে নিয়ে আসলো রুমে, সবাই বলতে শুরু করলো আবার কি হয়েছে!
তখন শুভ তাদের বলে
-বাবা মিলি বাসা ছেড়ে চলে গেছে।
-কি বলছিস?
-হ্যাঁ বাবা, তুই কোথায় ছিলি? আটকাতে পারলিনা?
-আমি রুমে ছিলাম না।
-তখন বার বার বলেছিলাম শুভ চুপ কর,শুভ চুপ কর কিন্তু তুই আর তোর মা তো আমার কথায় শুনলি না।
-বাবা আমার জায়গাতে তুমি থাকলে রাগ করতে না??
-করতাম কিন্তু বাড়াবাড়ি না।
-আমি বাড়াবাড়ি করেছি কোথায়?
-শুভ মিলিকে আমি তোর সাথে বিয়ে দিয়ে নিয়ে এসেছি, মিলি জোর করে কিন্তু বিয়ে করেনি।সবার কি সব গুন থাকে??
তুই যেমন বিসিএস ক্যাডার কিন্তু তোরে যদি নাচতে বলি তুই পারতিস নাচতে??আরে সবাইকে তোর মতো বিসিএস ক্যাডার হতেই হবে? না হলে তোর যোগ্য হবে না?
আজকে একটা শিক্ষিত মেয়ে আসলেই তোরে সুখী করতে পারবে??
তোর মার পাড়াপড়শির সাথে যদি ভালো ব্যবহার না করে শুধুমাত্র শিক্ষিত হলেই হয়ে যাবে?
বাহ বাহ শুভ।
-বাবা তাই বলে এইচএসসি পাশ ও করতে পারবেনা?
আমার মান সম্মান থাকবে তুমি বলো?
-আরে শুভ তোর চেয়ে বেশি চিনি আমি এই দুনিয়ার মানুষদের।শিক্ষিত এক মেয়ে যখন দিনের পর দিন তুর সাথে ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে ঝগড়া করবে তখন তুই লোকদেখানো সেই সম্মান দিয়ে কি করবি?আমার কথাগুলো সিনেমার ডায়লগ মনে হলেও এইটাই সত্যিই যে শিক্ষিত বা যোগ্যতাসম্পন্ন মেয়ে হলেই তার সাথে সুখে শান্তিতে সংসার করা যায় না।
এই মেয়েটার স্বভাব শিশুদের মতো তাই এত্ত কিছু ভেবে কথা বলতো না কিন্তু কখনো আমাদের কাউকে কষ্ট দেয়নি।তুই ভুল করছিস অনেক বড় ভুল, শুভ তুই তা বুঝবি আস্তে আস্তে।
-বাবা এখন আর এত্ত কিছু শুনতে পারবোনা। চলো মিলিকে খুঁজি এখনো বেশিদূর যায়নি হয়তো।
-আমি মিলিকে খুঁজবো না, আমার আজ আর খুঁজতে যাওয়ার মতো মুখ তুই রাখিস নি।
তোর যা ইচ্ছে হয় তুই তাই কর শুভ।
শুভ আর কোনো কথা না শুনে বাসা থেকে বের হয়ে মিলিকে খুঁজতে লাগলো।মিলির ফোন সুইচ অফ আর ফেইসবুক আইডি ও ডিয়েক্টিভ।
এই মেয়েটা যে কিনা শুভকে সারাক্ষণ জ্বালাতো এখন থেকে সে আর জ্বালাবে না তাই ভেবে অস্থির প্রায় শুভ।
শুভ মিলিকে এমন ভাবে খুঁজছিলো মনে হচ্ছিল কাছের কাউকে সে হারিয়ে ফেলেছে।
মিলি মিলি বলে মাঝ রাস্তায় চিৎকার করছে কিন্তু মিলির কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছেনা।
সকাল হয়ে গেছে কিন্তু মিলিকে শুভ খুঁজে পাচ্ছেনা, তাই ৮ টার দিকে বাসায় গেলো। শুভকে একা দেখেই বাসার সব লোক বুঝে গেছে মিলিকে শুভ খুঁজে পায়নি।
শুভর মা বললো শুভকে তার রুম যেতে আর মুখ টা ভালো করে ধুয়ে নিতে, সেই রাত থেকে তো শুভ কিছু খাইনি।
শুভ রুমে আসছে ঠিকি কিন্তু সারা রুম জুড়ে কেমন মিলির সব স্মৃতি।
মিলি না থেকেও মিলির অস্তিত্ব খুঁজে পাচ্ছে শুভ,মিলির দুধের ক্লাস থেকে দুধ ঢেলে দেওয়া,ভুতের গল্প বলা,পড়তে না চাওয়া,বই এর গন্ধ পাওয়া সব একে একে মনে পড়ছে শুভর।
মিলির পাগলামি গুলা মনে পড়লে শুভ একা একাই হাসতো।
শুভ ঠিক তখনি সিদ্ধান্ত নেয় এই রুমে আর থাকবেনা সে গেস্ট রুম এ থাকবে।
এভাবেই ১ মাস যাওয়ার পর একদিন সকালে বাসায় কেউ আসে,শুভ যখন সবাইকে দেখে তার কাছে যেতে শুভ গিয়ে দেখে রিমি এসেছে যে কিনা মিলির বড় বোন।
রিমি কি মনে করে এসেছে তাই বুঝতেছে না শুভ,
চলবে,,,