এক খণ্ড কালো মেঘ পর্ব -২৭

#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_২৭
#নিশাত_জাহান_নিশি

“অনিক মা’র্ডার”র হয়েছে রাফায়াত!”

মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল রাফায়াতের। মুহূর্তেই সমস্ত শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল তার। শান্ত মুখশ্রীটি যেন ক্ষণিকের মধ্যেই বিবর্ণ রূপ ধারণ করল। চোখ দুটিতে অসম্ভব আতঙ্কের ছাপ ফুটে উঠল। গলায় যেন শব্দরা তার জড়িয়ে আসছিল। শ্বাস-প্রশ্বাস ফেলতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যেন এক্ষণি শরীর থেকে তার প্রাণবায়ুটা বের হয়ে যাবে! হঠাৎ করেই অনিকের এই ম’র্মা’ন্তিক মৃ’ত্যু’র খবর পাবে তা কস্মিনকালে ও আশা করেনি রাফায়াত! তাই তার বর্তমান অবস্থা খুবই সূচনীয়। রাফায়াতের এহেন বিভৎস রূপ দেখে অয়ন্তীর বাবা রফিকুল ইসলাম বেশ চিন্তিত হয়ে উঠলেন। রাফায়াতকে কিছু জিজ্ঞেস করার উদ্দেশ্যে গলা ঝাঁকালেন। কৌতূহলী গলায় প্রশ্ন ছুড়লেন,,

“কী হয়েছে রাফায়াত? তোমাকে এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?”

সম্বিত ফিরে পেল যেন রাফায়াত। রফিকুল ইসলামের দিকে একবার অস্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। পুনরায় দৃষ্টি ফিরিয়ে সে পিছু ঘুরে আচমকা দৌঁড়াতে লাগল। রাফায়াতের এই উদ্ভট আচরণে ব্যাপক আশ্চর্যিত হলেন রফিকুল ইসলাম। মনের মধ্যে হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খেলেও তিনি রাফায়াতকে এই মুহূর্তে পিছু ডাকতে চাইলেন না। হয়ত বিশেষ কোনো কাজ পড়ে গেছে এই ভেবে বিষয়টা তিনি আমলে নিলেন না! দৌঁড়োতে দৌঁড়োতে রাফায়াত ফোনের ঐ প্রান্তে থাকা চঞ্চলকে উদ্দেশ্য করে আর্ত গলায় বলল,,

“লা’শ কোথায় এখন?”

“বাকলিয়ার কাছে। ফাঁকা একটি ফ্লাটে।”

“আমি আসছি। তুই কোথায় এখন?”

“আমি স্পটেই আছি। তুই তাড়াতাড়ি আয়।”

কীসের উপর দিয়ে যে রাফায়াত ফ্লাট থেকে দৌঁড়ে বের হলো তার কোনো নাজার আন্দাজ করতে পারলনা! বাইকটা কোনো রকমে ছেড়ে সে বাকলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। পাল্লা দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস ভারী হতে লাগল তার। চোখের কোণে অবাধ্য জলেরা চিকচিক করে উঠল! ঝাপসা হয়ে আসছে তার আশাপাশ। বাইকটা সুস্থভাবে চালিয়ে সে বাকলিয়া অবধি পৌঁছাতে পারবে কী-না সেই সম্ভাবনাও নেই। অনিক তার সাথে অনেক বড়ো বড়ো অন্যায় করা সত্ত্বেও মৃ’ত্যু’র মত এত কঠিন শাস্তি তার পাওনা ছিলনা! পাঁচ থেকে ছয় বছরের ফ্রেন্ডশিপ তাদের। অনিকের সাথে থেকে সে যেমন অনেক খারাপ মুহূর্ত কাটিয়েছে? তেমনি অনেক ভালো মুহূর্তও কাটিয়েছে। সে ভালো মুহূর্তগুলোই তাকে বেশী যন্ত্রণা দিচ্ছে! শাস্তি দিচ্ছে। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে তার! বন্ধু হারানোর যন্ত্রণা অনেক। যা তাকে ধুঁকে ধুঁকে মা’র’ছে। বন্ধু খারাপ হোক বা ভালো, “বন্ধু বন্ধুই হয়!”

মা”র্ডা”র স্পটে পৌঁছাতেই রাফায়াত অতিরিক্ত লোকজনদের সমাগম দেখতে পেল। সবাই বেশ আতঙ্ক নিয়ে খু;ন সম্পর্কিত ব্যাপারে হরদম বলাবলি করছে। যে রুমটিতে অনিককে খু;ন করা হয়েছে সে রুমটি আপাতত সিল করে রাখা হয়েছে। রুমের মধ্যে শুধু কয়েকজন পুলিশ, সি. আই.ডি অফিসার এবং ফরেনসিক অফিসাররা রয়েছেন। সোফার উপর পড়ে থাকা অনিকের ম’রা লা’শ”টি বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছে! গলা থেকে এখনও টাটকা র’ক্ত গড়িয়ে পড়ছে তার! গাঁয়ের লোম হুড়হুড়িয়ে খাঁড়া হয়ে উঠল রাফায়াতের। চোখদুটো এখনও কেমন পাকিয়ে আছে অনিক। দেখে মনে হচ্ছে যেন রাফায়াতের দিকে সে বড়ো বড়ো চোখে ক্ষুব্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে! এই প্রথম কোনো ম’রা লা’শ দেখে রাফায়াত ভয়ে এতটা আঁতকে উঠল! এই সময়ে আবার তার কাঁধে হাত পড়ল চঞ্চলের। ভয়ে হঠাৎ গোঙ্গিয়ে উঠল রাফায়াত! ভ’য়া’নক দৃষ্টিতে পাশ ফিরে চঞ্চলের দিকে তাকালো। অবাক হলো চঞ্চল। ভ্রু কুঁচকালো রাফায়াতকে দেখে। সন্দিহান গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“কী রে? কী হয়েছে তোর? ভয় পেয়ে গেছিস মনে হচ্ছে?”

শুকনো ঢোঁক গিলল রাফায়াত। চঞ্চলের দিকে ঘাবড়ানো দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। ভীরু গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“খু;ন হলো কীভাবে?”

“গলায় ছু’রি’কা’ঘা’ত করা হয়েছে। অতিরিক্ত র’ক্ত’ক্ষরণের ফলে মৃ’ত্যু হয়েছে।”

“কে খু’ন করেছে এখনো জানা যায়নি?”

“না। মাত্র তো লা’শ উদ্ধার করা হলো। আইনের লোকজন এলো। এত সহজে কী জানা যাবে কে খু’ন করেছে?”

“ভেতরে যাওয়া যাবে?”

“প্রশাসনের লোক ছাড়া কেউ এলাউড না।”

“বাট আমাদের একবার ভেতরে যাওয়া উচিৎ।”

“বাট হুয়াই? ভেতরে আমাদের কাজ কী?”

“ওকে। এখন চল তাহলে। আমরা আবার পরে আসছি।”

উদ্ভট কিছু ভাবনাচিন্তা যেন রাফায়াতের মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগল। চঞ্চলকে নিয়ে সে ঘটনাচক্র থেকে বের হয়ে গেল। রাস্তার পাশে পার্ক করে রাখা বাইকটিতে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো সে। গভীর চিন্তায় মশগুল হয়ে উঠল। কিছু একটার সমীকরণ মিলিয়ে সে উত্তেজিত গলায় চঞ্চলকে বলল,,

“আচ্ছা? এই খু;নের সাথে আবার প্রিয়া জড়িত নয় তো?”

“হোয়াট? এসব তুই কী বলছিস বলছিস? প্রিয়া কেন এই খু;নের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে?”

“আই ডোন্ট নো। বাট আমার মনে হচ্ছে।”

“প্রিয়াকে সরাসরি জিজ্ঞাসা কর তাহলেই তো হয়ে গেল।”

“প্রিয়াকে খুঁজে পেলে তো জিজ্ঞাসা করব!”

“মানে? প্রিয়া বাড়িতে নেই?”

“না। তোকে বলতে ভুলে গেছি। আসলে সকাল থেকেই প্রিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। যাওয়ার সময় শুধু একটি চিরকুট রেখে গেছে। চিরকুটটিতে আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে গেছে ব্যস এতটুকুই।”

“সাংঘাতিক ব্যাপার তো। তবে প্রিয়ার পক্ষে কী আদো সম্ভব কাউকে খু;ন করা?”

“আঘাত পাওয়া মানুষদের পক্ষে সব সম্ভব চঞ্চল। ঘাঁ যতক্ষণ না শুকায় ততক্ষণ মানুষ তার ক্রোধ ভুলতে পারেনা। মাথায় কিছু কাজ করছেনা আমার। বের হবি একটু আমার সাথে? প্রিয়াকে খুঁজতে?”

“এতবড়ো শহরে কোথায় খুঁজবি তুই প্রিয়াকে?”

ইতোমধ্যেই হঠাৎ ফ্লাটের সামনে রাফায়াতের বিরোধি দলীয় নেতাদের কয়েকটি গাড়ি এসে থামলো! অনিক যার দলের হয়ে কাজ করত সেই দলের নেতা স্বয়ং ঘটনাচক্রে এসে হাজির! তাদের দেখতে পাওয়া মাত্রই রাফায়াত এবং চঞ্চল আস্তে করে তাদের জায়গা থেকে সরে এসে তাদের থেকে অনেকটাই দূরে এসে দাঁড়ালো। রাফায়াতের দিকে একবার সেই দলের নেতা এবং চ্যা’লা’ফ্যা’লারা আক্রোশিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করল! দেখে মনে হচ্ছিল যেন এখনই তারা রাফায়াতের গলার টুটি চেপে ধরবে! কঠোর বিদ্রোহী ভাব তাদের চোখে-মুখে। সময় এবং পরিস্থিতি কেবল তাদের হার মানিয়ে রেখেছে। অপর দিকে তাদের এসব বিস্ফোরক ভাবমূর্তি তুচ্ছজ্ঞান করল রাফায়াত! ভাবশূণ্য দৃষ্টিতে সে তাদের দিকে একবার চোখ তুলে তাকালো। শার্টের কলারটা বেশ ভাবসাব নিয়ে ঝাড়ল। মোট কথা তাদের এড়িয়ে যাওয়ার শতভাগ চেষ্টা করল!

রোষানলের এক পর্যায়ে এসে বিরোধী দলীয়রা রাফায়াত এবং চঞ্চলকে ডিঙিয়ে ফ্লাটের ভেতর ঢুকে পড়ল৷ এর পিছু পিছু আবার রাফায়াতের দলের নেতাও তার চ্যালাফ্যালা নিয়ে হাজির হয়ে গেল! একে একে সব নেতার আগমন ঘটল ঘটনাচক্রে। রাফায়াত এবং চঞ্চল যেন এবার বুকে সাহস খুঁজে পেল। নেতার পাশাপাশি হেঁটে তারাও আবার ফ্লাটের ভেতরে রওনা হলো। রাফায়াতের কাঁধে নেতা তার হাত রাখলেন। তৎপর গলায় হঠাৎ ফিসফিসিয়ে বললেন,,

“খু;নটা কী তুই করেছিস রাফায়াত?”

ভড়কে উঠল রাফায়াত। নিষ্ক্রিয় দৃষ্টিতে সে চোখ ঘুরিয়ে তার নেতার দিকে তাকালো! নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না সে। এসব কী বলছে নেতা? তার এতটা বিশ্বস্ত মানুষ হয়ে নেতা কীভাবে পারল তাকে এতটা অবিশ্বাস করতে? অহেতুক তার দিকে আঙুল তুলতে? রাফায়াতের এহেন বিশৃঙ্খল চাহনি দেখে নেতা হঠাৎ বাঁকা হাসলেন! ঝেড়ে কেশে তিনি রাফায়াতের কানে ফিসফিসিয়ে বললেন,,

“আ’ম জাস্ট জোকিং রাফায়াত। প্লিজ ডোন্ট টেইক ইট সিরিয়াসলি।”

এরমধ্যে হঠাৎ মিডিয়ার লোকেরা এসে চর্তুপাশ থেকে তাদের ঘিরে ধরলেন। অনিকের হত্যাকাণ্ডের লাইভ টেলিকাস্ট হতে লাগল। দুই দলের নেতা দুই পাশে দাঁড়িয়ে। তারা একে অপরের গাঁয়ে কাঁদা ছিটাছিটি করতে ব্যস্ত। রাফায়াত তার গাঁ বাঁচিয়ে কিছুটা দূরে সরে এলো! তার সামনে হতে থাকা হুড়োহুড়ি সামলে সে অনিকের ড্যা’ডব’ডির কাছে পৌঁছে গেল! মৃ’ত অনিকের মুখটার দিকে কিছুক্ষণ সে মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকালো। না চাইতেও আবেগপ্রবণ হয়ে উঠল সে। এরমধ্যেই হঠাৎ তার সর্তক দৃষ্টি পড়ল কিছু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা দুজন পুলিশ অফিসারের দিকে। হাতে একটি লাভ আকৃতির লকেট নিয়ে তারা কী যেন বলাবলি করছে। লকেটটির ভেতরে ইংরেজী একটি বর্ণ খোঁদাই করা রয়েছে। দূর থেকে রাফায়াত যতটুকু আন্দাজ করতে পারছে সেই খোঁদাই করা ইংরেজী বর্ণটি ছিল কেপিটাল লেটার ‘P’!

আর এক মুহূর্তও এখানে দাঁড়িয়ে থেকে সময় অপচয় করতে চাইল না রাফায়াত! ভেতরে তুমুল আতঙ্ক চেপে বসল তার। প্রিয়া নামক আতঙ্ক! খুবই দূ’র্ধ’র্ষ এক আতঙ্ক! বাইরে হতে থাকা সমস্ত দাঙাদাঙি ঠেলে রাফায়াত চঞ্চলকে নিয়ে দৌঁড়ে ফ্লাট থেকে বের হয়ে এলো। ফ্লাটের নিচে আসতেই চঞ্চল বিস্মিত গলায় রাফায়াতকে কিছু জিজ্ঞেস করার প্রস্তুতি নিলো। অমনি রাফায়াত উত্তেজিত গলায় চঞ্চলকে বলল,,

“এট অ্যানি কস্ট আমাদের প্রিয়াকে খুঁজে বের করতে হবে।”

“মানে? এখানের ঝামেলা ফেলে রেখে তুই প্রিয়াকে খুঁজতে যাবি এখন?”

“হ্যাঁ। কথা না বাড়িয়ে চল।”

“তুই পাগল হয়ে গেছিস রাফায়াত? এই মুহূর্তে আমাদের এখানে থাকাটা জরুরি।”

“এই মুহূর্তে আমাদের প্রিয়াকে খুঁজে বের করাটা জরুরী গবেট। মা-বাবাকে আটকানো উচিৎ। প্রিয়া মিসিং এই খবরটা যেন কোনভাবেই পুলিশের কানে না যায়।”

রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে রাফায়াত যেইনা চঞ্চলের হাতটা ছেড়ে চঞ্চলের মুখোমুখি দাঁড়ালো অমনি মনে হলো পেছন থেকে কেউ তার শার্টের কলার চেপে ধরল! শরীরের সমস্ত শক্তি ব্যয় করে আগন্তুকটি তাকে পেছন দিকে ঘুরিয়ে নিলো। আগন্তুকটির মুখ দেখার পূর্বেই চঞ্চল পেছন থেকে চিৎকার করে উঠল। ঝাঁজালো গলায় বলল,,

“ইয়াদ? কু”ত্তা* বাচ্চা।”

ইয়াদের মুখটিও এতক্ষণে রাফায়াতের হকচকানো দু’চোখে স্পষ্ট হলো। কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই ইয়াদ আক্রোশিত ভাব নিয়ে রাফায়াতের নাক বরাবর জোরে এক ঘু’ষি বসিয়ে দিলো! ঘু’ষি খেয়ে রাফায়াত কয়েক ফুট দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ল। নাক থেকে তার টপটপ করে র’ক্ত গড়াতে শুরু হলো। রাফায়াতের এই র’ক্তা’ক্ত অবস্থা দেখে চঞ্চল এবার ক্ষেপে গেল। অতিরিক্ত রাগে নিবিষ্ট হয়ে সে ইয়াদকে আক্রমন করার পূর্বেই রাফায়াত বিক্ষুব্ধ হয়ে ইয়াদের দিকে তেড়ে এলো। বিধ্বংসী রূপ ধারণ করল সো। রাগে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ইয়াদের বুকে, পিঠে, নাকেমুখে এলোপাতাড়ি কি’ল/ ঘু’ষি মারতে লাগল। রুষ্ট হয়ে থাকা চঞ্চলকে দু’হাত দ্বারা সরিয়ে দিয়ে সে চঞ্চলকে বলল,,

“তুই সামনে থেকে সরে যা চঞ্চল৷ আমার এসব মা’রধর খেয়ে অভ্যাস আছে। তোর এসবে অভ্যাস নেই। যা তুই।”

বিপরীতে এত মা’রধর খাওয়ার পরেও ইয়াদ বড়ো গলায় আর্তনাদ করে রাফায়াতকে বলল,,

“অনিককে তুই-ই খু;ন করেছিস বা”স্টা’র্ড! একবার তো আমাকেও খু;ন করার জন্য চেষ্টা করেছিলি। আর এখন খু;ন করলি অনিককে।”

“জাস্ট শাট আপ ইয়াদ। অনিককে আমি খু;ন করিনি।”

বলেই রাফায়াত তার হাতের কাছে পাওয়া একটি পাথর দিয়ে ইয়াদের মাথায় আঘাত করার পূর্বেই অপ্রত্যাশিতভাবে পেছন থেকে অয়ন্তী এসে রাফায়াতের হাতে থাকা পাথরটি টেনে ধরল! প্রচণ্ড আতঙ্ক সমেত সে আর্ত গলায় রাফায়াতকে বলল,,

“ছেড়ে দিন প্লিজ। ইয়াদ ভাইকে মা”রবেন না।”

হতভম্ব হয়ে রাফায়াত পিছু ঘুরে দাঁড়াতেই প্রিয়া দাঁতে দাঁত চাপল। ঠাস করে রাফায়াতের গালে জোরে এক চ’ড় বসিয়ে দিলো। চোখের পলক পড়ার পূর্বেই অয়ন্তী রাফায়াতকে ঠেলেঠুলে ইয়াদের বুকের থেকে উপর উঠালো। অকাতরে চোখের জল ছেড়ে দিলো সে। হাঁপিয়ে ওঠা গলায় আ’হ’ত ইয়াদকে লক্ষ্য করে বলল,,

“আপনি জানেন ইয়াদ ভাইয়া? রাদিফ ভাইয়া কোথায়?”

র’ক্ত বমি করে দিলো ইয়াদ। তাজ্জব বনে দাঁড়িয়ে থাকা রাফায়াত এবং চঞ্চলের দিকে অস্ফুটে দৃষ্টি নিক্ষেপ করল সে। রাফায়াতের চোখ রাঙানোকে অগ্রাহ্য করে ইয়াদ অধীর আগ্রহ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাতা অয়ন্তীর দিকে তাকিয়ে হেয় গলায় বলল,,

“নাটক করছ তুমি আমার সাথে না?”

“কীসের নাটক ইয়াদ ভাই? প্লিজ বলুন রাদিফ ভাই কোথায়?”

“তোমার পেছনে কে ওটা?”

পিছনে ঘুরে তাকালো অয়ন্তী। রাফায়াতের ভীতসন্ত্রস্ত মুখের দিকে একবার ঘৃণিত দৃষ্টি নিক্ষেপ করল! অয়ন্তীর এই ঘৃণাভরা চাহনি যেন রাফায়াতক ভেতরে ভেতরে ধ্বংস করে দিচ্ছিল। আচমকাই চোয়াল উঁচিয়ে তুলল অয়ন্তী। টপটপ করে চোখের পানি ছেড়ে রাফায়াতকে ধি”ক্কার জানিয়ে বলল,,

“রাফায়াত। এক নাম্বারের স’ন্ত্রা’স এই লোক!”

পৈশাচিক হাসি হাসল ইয়াদ! র’ক্তমাখা মুখেও তার তীব্র হাসির ঝলকানি। হাসতে হাসতে এক পর্যায়ে তার কাশি ওঠে গেল! অসুস্থ গলাতেই বলল,,

“হা হা হা। এই স’ন্ত্রা’স ছেলেটিই হলো রাদিফ!”

#চলবে….?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here