এক খণ্ড কালো মেঘ পর্ব -২৮

#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_২৮
#নিশাত_জাহান_নিশি

“হা হা হা এই স’ন্ত্রা’স ছেলেটিই হলো রাদিফ!”

তাৎক্ষণিক অয়ন্তীর বিস্ফোরক দৃষ্টি পড়ল তার থেকে কিঞ্চিৎ দূরে অপরাধী ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকা রাফায়াতের দিকে! দু’চোখের কোটর জুড়ে যেন রাফায়াতের দ্বিধার জল! এই মুহূর্তে অয়ন্তীকে কিছু বুঝাতে না পারার যন্ত্রণা তার ভেতরটাকে ক্রমশ গ্রাস করে তুলছে। ধৈর্য্যধারণ করার ক্ষমতা টুকুনিও গতানুগতিক ভাবে লোপ পাচ্ছে। অয়ন্তী যেন তার কান দুটিকে বিশ্বাস করতে পারছেনা! শোঁ শোঁ বেগে এক বিদঘুটে আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে তার দুই কর্ণকুহর জুড়ে। মনে হাজারো প্রশ্নেরা উঁকি দিচ্ছে৷ তার। সন্দেহরা দানা বাঁধছে। দোটানা কাজ করছে তার সমস্ত ধ্যান জ্ঞান জুড়ে। এই স’ন্ত্রা’স ছেলেটি কী করে রাদিফ হতে পারে? তার সাথে তো রাদিফের না আছে চেহারার কোনো মিল, না আছে স্বভাবচরিত্রের মিল!

নিষ্পলক দৃষ্টিতে অয়ন্তী কিয়ৎক্ষণ রাফায়াতের ছন্নছাড়া মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। কিছু একটা ভেবে হঠাৎ পিছু ঘুরে তাকালো। লুটোপুটি খেয়ে হাসতে থাকা ইয়াদের দিকে সে সন্দিহান দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। অবিশ্বাস্য গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,

“এই লোকটি কী করে রাদিফ ভাই হতে পারে? এর সাথে তো রাদিফ ভাইয়ার চেহারার কোনো মিল নেই।”

পুনরায় কাশি ওঠে গেল ইয়াদের! কাশতে কাশতে নাকমুখ বেয়ে র’ক্ত গড়াতে লাগল তার। দীর্ণ বিদীর্ণ গলায় সে হেলেদুলে বলল,,

“আরে ভাই তুমি দেখি কিছুই জানো না। আমার দলের নেতা মিন্টু ভাই আছে না? উনি তো সেই দুই বছর আগেই তোমার জানে জিগার রাদিফ ভাইকে মে’রে কে’টে মুখটা একদম থে’তলে দিয়েছিল! যার ফলস্বরূপ তার সাধের মুখটাকে প্লা’স্টিক সা’র্জারী করতে হয়েছিল! আমরা তো ভেবেছিলাম এই জা’নো’য়ারটা বাঁচবেই না! কিন্তু এর জান দেখো? কৈ মাছের প্রাণ নিয়ে ঠিক বেঁচে ফিরেছে!”

ভেতরটা ধক করে কেঁপে উঠল অয়ন্তীর। ধীরে ধীরে যেন তার সকল চেতনাশক্তি লোপ পেতে লাগল! গাঁয়ের প্রতিটা লোমকূপ তার হুড়মুড়িয়ে দাঁড়িয়ে গেল। আশপাশ সব ঝাপসা হয়ে এলো। মাথাটা কেমন যেন ঘুরেও এলো। দুনিয়ার সমস্ত বিষাদ যেন একান্তেই তার বুকের ভেতর এসে ভর করল। অতি শীঘ্রই দৃষ্টি জোড়া ঘোলাটে হয়ে এলো তার। গলা ফাঁটিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে হলো। কাছে থেকেও এতদিন ভালোবাসার মানুষটিকে চিনতে পারার যন্ত্রণা তাকে ধুকেধুকে শেষ করে দিচ্ছিল! এ কেমন ভালোবাসা তার? যে ভালোবাসায়, ভালোবাসার মানুষটিকে চিনতে পারার তেমন কোনো গাঢ় গভীর অনুভূতিই ছিলনা! পাশাপাশি থেকেও মনের মানুষটির মনের খবর রাখার কোনো ইচ্ছাশক্তি ছিলনা! শ্বাস-প্রশ্বাস পাল্লা দিয়ে ভারী হয়ে উঠতেই অয়ন্তী রাফায়াতের উদ্দেশ্যে পিছু ঘুরে দাঁড়ালো। তবে রাফায়াতকে তার দৃষ্টির সীমানায় দেখতে পেলনা! হুট করে যেন পেছন থেকে ইয়াদের আত্নচিৎকার তার কর্ণকুহরে ভেসে এলো। ঘোর আতঙ্ক সমেত পেছন ঘুরে তাকাতেই অয়ন্তী দেখতে পেল ভয়ঙ্কর হিংস্র রূপ ধারণ করে রাফায়াত ইয়াদের মেইন পয়েন্টে জোর এক লাথ বসিয়ে দিয়েছে! দাঁত গিজগিজিয়ে বলছে,,

“তোদের প্রত্যেককে আমি দেখে নিব ইয়াদ৷ আমার লাইফটাকে তোরা প্রত্যেকে মিলে ধ্বংস করে দিয়েছিস। যতদিন অবধি না আমি তোদের ধ্বংস করতে পারব ততদিন অবধি আমার শান্তি নেই।”

সবকিছু এত দ্রুত ঘটে গেল যে অয়ন্তী কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই রাফায়াত দৌঁড়ে এসে খপ করে অয়ন্তীর ডান হাতটি চেপে ধরল! অয়ন্তীকে নিয়ে সে প্রাণপনে দৌঁড়াতে লাগল। কিছু বলার বা করার পরিস্থিতিতে রইল না অয়ন্তী। রাফায়াত তাকে যেভাবে চালনা করছিল অয়ন্তী ঠিক সেভাবেই চলতে লাগল। ঝট করে বাইকের পেছনে অয়ন্তীকে বসিয়ে দিলো রাফায়াত। অয়ন্তীও নিজেকে সামলে বাইকে বসে পড়ল! কেবল নিথর দৃষ্টিতে রাফায়াতকে দেখতে লাগল। ভালো/ মন্দ কিছু জিজ্ঞেস করার জায়গাটিতেও রইল না। তখনি হঠাৎ পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা চঞ্চলকে রাফায়াত ইশারায় বলল,,

“ফলো আচ।”

চঞ্চল আর এক মুহূর্ত সময় ব্যয় করলনা। রাফায়াতের ইশারা বুঝে পেছনের সি.এন.জি টিতে ওঠে পড়ল। দ্রুত বেগে বাইক ছেড়ে দিলো রাফায়াত। তাল সামলাতে না পেরে অয়ন্তী ঝাঁকি দিয়ে রাফায়াতের গাঁয়ে এসে ছিটকে পড়ল। বাধ্য হয়ে রাফায়াতকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরল! হাওয়ার তালে তালে অয়ন্তীর চুল এবং গাঁয়ে থাকা ওড়নাটি উড়তে লাগল। অস্বস্তিবোধ হতে লাগল তার। সম্বিত ফিরে পেতেই সে মৃদু আওয়াজে রাফায়াতকে বলল,,

“আমরা কোথায় যাচ্ছি রাদিফ?”

অয়ন্তী কৌতূহল জনিত প্রশ্নকে আমল দিতে চাইল না রাফায়াত। প্রসঙ্গ পাল্টে উল্টো খরতর গলায় বলল,,

“চুপ করে বসে থাকো। একটা সাউন্ডও করবেনা।”

“অনেক হয়েছে রাদিফ। আমি আর চুপ করে থাকতে পারব না। প্লিজ সত্যিটা এবার আমার কাছে ক্লিয়ারলি বলুন।”

অয়ন্তী এহেন হাঁসফাঁস অবস্থা দেখে রাফায়াত মুখ খুলে সত্যিটা বলতে বাধ্য হলো। রূঢ় গলায় বলল,,

“আমরা এখন প্রিয়াকে খুঁজতে যাচ্ছি ওকে?”

“মানে?”

“মানেটা পরে বলছি।”

“প্রিয়া কোথায়? প্লিজ বলুন?”

“প্রিয়াকে খুঁজে পাচ্ছিনা।”

“কেন খুঁজে পাচ্ছেন না? কী হয়েছে প্রিয়ার?”

“তুমি একটু চুপ করে বসে থাকবে প্লিজ?”

“না। আমি আর চুপ করতে পারব না রাদিফ। অতীতের সব সত্যি আমি জানতে চাই। বাইকটা প্লিজ এখানেই থামান রাদিফ। না হয় আমি বাধ্য হব বাইক থেকে ঝাঁপ দিতে!”

চিন্তায় পড়ে গেল রাফায়াত। অয়ন্তীর জেদ সম্পর্কে সে আগে থেকেই অবগত! এমনিতেই তার উপর ক্ষেপে আছে অয়ন্তী। এখন আবার অয়ন্তীর কথামত কাজ না হলে বড়ো সড়ো একটি অঘটন ঘটে যেতে পারে। অয়ন্তীকে আর কোনো আঘাত করতে চাইছেনা রাফায়াত। তাকে আর অন্ধকারেও রাখতে চাইছেনা। সত্যের মুখোমুখি এনে দাঁড় করাতে চাইছে। সত্যিটা জানার পর যদি অয়ন্তী চায় তাকে ছেড়ে দিতে তো ছেড়ে দিবে! জোর করে আটকে রাখতে চাইবেনা অয়ন্তীকে। এমনিতেও রাফায়াত চায়না তার অনিশ্চিত জীবনের সাথে অয়ন্তী কোনোভাবে জড়িয়ে পড়ুক।

বাধ্য হয়ে রাফায়াত তার বাইকটি একটি নিরিবিলি জায়গায় দাঁড় করালো। চঞ্চলও তখন রাফায়াতকে অনুসরণ করে সি.এন.জি থেকে নেমে পড়ল। পায়ে হেঁটে তাদের দুজনের পিছু পিছু বড়ো একটি খোলা মাঠের কাছে হেঁটে এলো। হিংস্র বাঘিনীর ন্যায় রাফায়াত এবং চঞ্চলের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অয়ন্তী। মাথা নুইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দুই সহযোদ্ধার দিকে তার তীক্ষ্ণ নজর। রাগী রূপ ধারণ করে অয়ন্তী হুট করে এসেই রাফায়াতের শার্টের কলার চেপে ধরল! ঝাঁজালো গলায় তার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বলল,,

“কেন আপনি এই স’ন্ত্রা’সী জীবনের সাথে জড়ালেন রাদিফ? দু’বছর আগে কী ঘটেছিল? কীসের জন্য আজ আপনার এই অবস্থা?”

এরমধ্যেই চঞ্চল হঠাৎ গলা ঝাঁকালো। শুকনো ঢোঁক গিলে সে অস্থির চাহনিতে দো’মনা অয়ন্তীর দিকে তাকালো। আতঙ্কিত গলায় বলল,,

“এসব কথা পড়ে হবে অয়ন্তী। এখন তোমরা আমার ফ্লাটে চলো। প্রিয়ার মুখোমুখি বসে ফেস টু ফেস কথা হবে!”

অয়ন্তীর আগেই রাফায়াত হকচকানো দৃষ্টি নিক্ষেপ করল চঞ্চলের দিকে। এক ঝটকায় তার শার্টের কলার থেকে অয়ন্তীর হাতটি ছাড়িয়ে নিলো। সন্দিহান গলায় চঞ্চলের দিকে প্রশ্ন ছুড়ার পূর্বেই চঞ্চল কম্পিত গলায় রাফায়াতকে বলল,,

“আজ ভোরে যখন আমি তোকে রেখে আমার ফ্লাটে যাই না? তখন হঠাৎ আমার ফ্লাটের দরজায় দেখি প্রিয়াকে! কোনো প্রশ্ন করার আগেই প্রিয়া আমার হাতে-পায়ে ধরে ফেলে। কাঁদতে কাঁদতে অনুরোধ করে বলে আজকের দিনটার জন্য যেন তাকে আমার ফ্লাটে থাকতে দিই। কাল সকাল হলেই সে তার ফুফুর বাড়ি চলে যাবে! তার এই কান্নাকাটি দেখে আমার খুব মায়া হচ্ছিল রাফায়াত। তাই তার রিকুয়েস্টটা আমি ফেলতে পারিনি।”

মাথায় হাতে চলে গেল রাফায়াতের। বিরক্তি ভরা চাহনিতে সে চঞ্চলের দিকে তাকালো। কপালের ভাঁজে তিক্ততার ভাব ফুটিয়ে তুলল। মেজাজ বিগড়ে সে তিরিক্ষিপূর্ণ গলায় বলল,,

“আগে বললি না কেন এই কথাগুলো আমাকে হ্যাঁ? প্রিয়াকে এক্ষণি আমাদের একটা সেইফ জায়গায় রেখে আসতে হবে চঞ্চল। কাক পক্ষিটিও যেন প্রিয়ার খোঁজ জানতে না পারে!”

“মানে? কেন?”

“অনিকের ড্যা’ডব’ডির কাছে অয়ন্তীর গলার লকেট পাওয়া গেছে চঞ্চল! আমার স্পষ্ট খেয়াল আছে গতবছর প্রিয়ার জন্মদিনে মা এই লকেকটটিই প্রিয়াকে গিফট করেছিল। গতকাল রাতেও আমি প্রিয়ার গলায় লকেটটি দেখেছিলাম।একটু আগে সেই লকেটটিই আমি পুলিশের হাতে দেখেছি!”

“তোর কোথাও ভুল হচ্ছে রাফায়াত। প্রিয়াকে দেখতে আমার মোটেও অপরাধী মনে হয়নি! বরং তাকে শান্তশিষ্ট নিবিড় দেখাচ্ছিল।”

“আচ্ছা এসব কথা না হয় আমরা প্রিয়ার সামনাসামনি বসে ডিসকাস করি? এখন প্লিজ এখান থেকে চল।”

নির্বোধ অয়ন্তীর দিকে সুশৃঙ্খল দৃষ্টি নিক্ষেপ করল রাফায়াত। অয়ন্তীর হাতটা খপ করে ধরে বলল,,

“চলো অয়ন্তী।”

মুহূর্তেই রাফায়াতের হাতটি ঝেড়ে ফেলে দিলো অয়ন্তী! মেজাজ গরম করে রগচটা গলায় বলল,,

“না আমি যাবনা! প্রিয়ার মুখোমুখি আমি হতে চাইনা রাদিফ। তাছাড়া ডুবাই থেকে আমার জেঠা আসছে। অনিক ভাইয়ার মা’র্ডা’রের খবর শুনে। আমার এখন অনিক ভাইয়ার লা’শের কাছে যেতে হবে। বাবা-মায়ের পাশে থাকতে হবে।”

অয়ন্তীকে এই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে যেতে দেওয়াটা নিরাপদ মনে করলনা রাফায়াত। প্রিয়া যে এই খু;নের সাথে সম্পৃক্ত রাফায়াতের কথাবার্তায় এতক্ষণে কিছুটা হলেও আঁচ করতে পেরে গেছে অয়ন্তী! সন্দেহ থেকে অয়ন্তী প্রিয়ার বিষয়টা প্রসাশনকে বলে দিতে পারে। তাই এই বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে রাফায়াত প্রিয়াকে এসবের মধ্যে জড়াতে চাইছেনা। অয়ন্তীকেও এই মুহূর্তে ছাড়তে চাইছেনা। কথার জালে অয়ন্তীকে ফাঁসাতে চাইল রাফায়াত। কোমল স্বরে বলল,,

“তুমি জানতে চাওনা অয়ন্তী? অতীতে কী ঘটেছিল?”

রাফায়াতের নিবিষ্ট মুখের দিকে তাকিয়ে বরফের মত গলে গেল অয়ন্তী! আবেগঘন গলায় বলল,,

“চাই রাদিফ।”

“তাহলে চলো।”

_________________________________

চঞ্চলের ফ্লাট থেকে প্রিয়াকে উদ্ধার করে চট্টগ্রামের বাইরে একটি নিরাপদ জায়গায় আনা হলো প্রিয়াকে। রাত প্রায় এগারোটা বেজে গেল তখন! প্রিয়ার মুখোমুখি তিনটি টুল পেতে বসে আছে রাফায়াত, চঞ্চল এবং অয়ন্তী। কাঁদতে কাঁদতে নাক টানল প্রিয়া। চোখ-মুখ ফুলে ফেঁপে উঠেছে তার। হেঁচকি তুলে কেঁদে সে তাদের তিনজনকে উদ্দেশ্য করে বলল,,

“বিশ্বাস করো তোমরা। অনিককে আমি খু;ন করিনি। কালরাত থেকে তো অনিকের সাথে আমার কোনো যোগাযোগই নেই। সো তাকে আমি খু;ন করব কীভাবে?”

ভ্রু কুঁচকালো রাফায়াত। সন্দিহান দৃষ্টি নিক্ষেপ করল প্রিয়ার দিকে। প্রশ্নবিদ্ধ গলায় বলল,

“তাহলে তোর গলার ঐ গোল্ডের লকেটটা মা’র্ডা’র স্পটে গেল কীভাবে?”

“ভোরে যখন আমি লুকিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় উঠি না? ঠিক তখন মনে হলো পেছন থেকে কেউ এসে আমার মুখে স্প্রে পুশ করে! হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি আমি। এরপর আমার সাথে কী ঘটেছে না ঘটেছে কিছুই আমার মাথায় নেই রাফায়াত। চেতনা ফিরে পেতেই আমি নিজেকে চঞ্চল ভাইয়ার ফ্লাটের সামনে আবিষ্কার করি। এরপর নিরুপায় হয়ে চঞ্চল ভাইয়ার হেল্প নিই!”

ক্ষেপে উঠল অয়ন্তী। প্রিয়ার সব কথা তার মাথার উপর দিয়ে গেল। তুখোড় রাগের বশবর্তী হয়ে অয়ন্তী বসা থেকে ওঠে দাঁড়ালো। রাগ ঝেড়ে চিৎকার করে বলল,,

“কী হচ্ছে কী এসব? তোমাদের কথার আগামাথা আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা। প্লিজ আমাকে সব ক্লিয়ারলি বলো। এত প্যাঁচ ঘোঁচ আমার মাথায় ঢুকছেনা। প্রিয়া কেন অনিক ভাইয়াকে খু;ন করতে চাইবে?”

বসা থেকে ওঠে দাঁড়ালো রাফায়াত। ধীর পায়ে হেঁটে সে উত্তেজিত অয়ন্তীর মুখোমুখি দাঁড়ালো। কিয়ৎক্ষণ অয়ন্তীর অস্থির দু’চোখে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। সেই দু’বছর আগে হারিয়ে গেল সে। অয়ন্তীর চোখের মায়ায় টুক করে ডুব দিলো অতীতে। আচমকা সে আবেগপ্রবণ হয়ে উঠল। হুট করেই অয়ন্তীকে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো! স্নিগ্ধ গলায় বলল,,

“মনে আছে তোমার অয়ন্তী? সেই দু’বছর আগে যখন তোমাকে আমি অনিকের সাথে প্রথম দেখি? চট্টগ্রাম ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছিলে তুমি। সেই প্রথম দেখাতেই তোমার জন্য মনে মনে কিছু অসম্ভব সুন্দর অনুভূতি ফিল করি আমি….

#চলবে…?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here