#এক_চিলতে_রোদ-২
#Writer_Nondini_Nila
১৫.
রিকশায় ইহানের সাথে বসে আছি। রাগে আমার শরীর কাঁপছে। ঘাড় ঘুরিয়ে ইহানের দিকে তাকালাম ইহানের কোন হেলদোল নাই। ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ফোন টিপে যাচ্ছে। আমি চোখ সরিয়ে নিলাম। আমার এখন কি করা উচিত! মন চাচ্ছে এখান থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় এই বদমাইশ টাকে। পেটে পেটে এই ছিল। কিছু আগে ওনার সাথে দেখা এসেছিলাম।
‘ এইযে মিস্টার আমার জিনিস আমাকে ফেরত দিন।’
‘ তোমার তো এই জিনিসটার কথা মনে ছিল না। আমি না বললে বোধহয় মনে পড়তো না। এক সপ্তাহ তো তোমাকে জিনিসটা খুঁজতে দেখি নি। মানুষ কিছু হারালে তো 2 সেকেন্ড পর থেকেই পাগল হয়ে যায় খোঁজে। আর তুমি এই সপ্তাহে কিছুই করনি। ভেরি ইন্টারেস্টিং।এইটা যে তোমার কাছে খুব একটা মূল্যবান না আমি বুঝে গেছি। তাই আমি ভেবে নিয়েছি তোমার দ্বারা আমার কাজ হবে না।’
‘দেখুন আজেবাজে কথা বাদ দিয়ে আমার জিনিস ফেরত দিন। এটা আমার কাছে মূল্যবান নাকি না সেটা আমি বুঝে নেব এখন এই জিনিসটা আমার দরকার।’
‘তোমার কাছে এটা এতোটা ও মূল্যবান না তাই আমি ভাবছি এটা তোমাকে দেবো না তাইতো আমি জিনিসটা নিয়ে বের হয়নি।’
‘ কিহহহ চিৎকার করে উঠলাম। পাগল নাকি আপনি।আমার জিনিস আমি নিতে চাইবো না এটা কেমন কথা।আর যদি নিতে নয় চাই এটা যদি আমার কাছে এতটাই ফেলনা হয় তাহলে আমি আপনার সাথে দেখা করতে আসলাম কেন?’
‘আমি তোমাকে যা বলিস তাতে কি তুমি রাজি আছো? রাজি না হলে ও আমার সমস্যা নাই। তোমার জিনিস তোমাকে দেবো না আর আমার কাজের লোক আমি পেয়ে গেছি। তাই তোমাকে আমার এখন লাগবে না। আমি এটা জানানোর জন্যই এসেছি।’
রাগে আমি সামনের কফির কাপটা ধাক্কা দিয়ে ফ্লোরে ফেলে দিয়ে বললাম, ‘আপনি কিন্তু এখন বেশি বেশি করছেন। আমি কালকে ওসবে রিয়েক্ট করেছিলাম। কিন্তু আমি আপনার শর্তে রাজি আছি সেটা বলার জন্য এসেছি। আর নূপুর নিতে এসেছি। আর এখন বলছেন সেটা আপনি আমায় দিবেন না। আর অন্য লোক পেয়ে গেছেন কাজের জন্য। এটা কিন্তু আমার সাথে অন্যায় করছেন! একই আমার জিনিস ফিরিয়ে দিতে আপনার কোন শর্ত দেওয়া উচিত হয়নি। তার উপর এখন বলছেন দিবেন না। আগে বলতেন তাহলে তো আর আমি আম্মুকে বলতাম না যে আমি নূপুর তুলিকে দিয়েছে আর তাঁরা তারি নিয়ে আসবো। এখন এটা আমি না নিলে আম্মু আমাকে কতো কথা শুনবে জানেন? একেতে টা হারিয়ে ফেলেছি তারপর আবার আমমুকে আমি মিথ্যে বলেছি।’
রেস্টুরেন্টে এর সবাই তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি উত্তেজিত হয়ে এতগুলো কথা বললাম তখন খেয়াল করে নিয়ে এসব। এখন সবাইকে নিজের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে লজ্জা পেলাম খুব। একজন এসে তো ইহান কে বলে বসলো,
‘ ভাই আপনার গার্লফ্রেন্ড তো খুব রাগী। দুজনের ঝগড়া হয়েছে তাই না? আমার গার্লফ্রেন্ড ও খুব রাগী। রাগ উঠলে এমন জিনিস ছুড়াছুরি করে আমাকে মারে অব্দি। আপনার গার্লফ্রেন্ড তো শুধু জিনিসের উপর রাগ দেখালো। আপনাকে মারল না আমার গার্লফ্রেন্ডের থেকে তাও ভালো আছে.
ছেলেটার কথা শুনে আমি আর ইহান দুজনেই অবাক হয়ে নিজেদের দিকে তাকালাম। আমি ছেলেটাকে পাগল বলছি মনে মনে। অসভ্য ছেলে কি যা তা বলছে। আমি নাকি ওনার গার্লফ্রেন্ড পাগল নাকি। যতসব ফালতু কথা।
আমি গলা উঁচিয়ে বললাম, ‘আপনি কী বলছেন এসব! আপনি জানেন আমাদের সম্পর্কে? কি যা তা বলছেন এসব কিছু..
ইহান ফট করেই আমার হাত ধরে টেনে রেস্টুরেন্টে এর বাইরে নিয়ে এলো। আমি হাত ছাড়িয়ে বললাম, ‘কি হলো এমন করে টেনে আনলেন কেন?’
‘ আর ইউ ম্যাড? কি করছিলে তুমি সবাই কেমন করে তাকিয়ে ছিলো দেখেছো?’
‘ আপনি আমার জিনিস দিবেন কিনা বলেন নাহলে আমি আরো সিনক্রিয়েট করব।’
‘ ওকে বাবা দেবো। আরে তোমার জিনিস আমি নিয়ে কি করবো বলতো। আমি কি মেয়ে যে তোমার জিনিস পরে ঘুরে বেড়াবো। আমি জাস্ট মজা করেছিলাম। কিন্তু এসব করার জন্য এখন তুমি নূপুর পাবে না আমার কাজটা করার পরই পাবে।’
‘ অসম্ভব আমি কিছু করবো না।’
‘ তাহলে বাসায় চলে যাও গুড বাই।
বলেই ইহান চলে যায়। আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। একটু পর ইহান রিকশা নিয়ে আসে। আর আমার পাশে থামায় আমি ইহানের দিকে তাকায়। তারপর কিছু না বলেই উঠে বসে। তারপর থেকেই এইভাবে বসে আছি।
বাসার সামনে আসতেই নেমে যায়। ইহান একবার ও আমার দিকে তাকালো না আর না কথা বললো। রিকশা চলে যাবে তখন আমি চেঁচিয়ে উঠলাম,
‘ দাঁড়ান।’
রিকশা ছেড়ে দিয়েছিলো। আমি দৌড়ে গেলাম। ইহান এবার আমার দিকে তাকালো ভ্রু কুঁচকে।
আমি বললাম, ‘ কালকে আমার নূপুর নিয়ে আসবেন।’
‘ কেন?’
‘ আমি রাজি। কিন্তু বাবাকে রাজি করাবো কিভাবে বুঝতে পারছি না।’
‘ সেটা তোমার মাথা ব্যাথা আমার না।’
‘ এতো ত্যারা কথা বলেন কেন? রাজি তো হয়েছি। আব্বু কেও রাজী করাবো নি। কিন্তু নূপুর কালকেই চাই।’
‘ ট্রিপে থেকে এসে পাবে সব।’
‘ না আমার কালকেই চাই। আমি রাজি তাও কেন দেবেন না?’
‘ পরে পাল্টি খাবে না তার কি গ্যারান্টি?’
‘ আপনি আমাকে সন্দেহ করছেন? আমি ওমন না ওকে। আমি কথা দিলে তা রাখি’
‘ ওকে আমাকে ছুঁয়ে প্রমিজ করো?’
বলেই ইহান হাত বাড়িয়ে দিলো।
রাগে দুঃখে হাত ছুঁয়ে বললাম। প্রমিজ।
তারপর গটগট করে বাসায় চলে এলাম। পরদিন ইহান কলেজে এলো তখন আমরা ক্লাসে ছিলাম। আমাদের ইংরেজি ক্লাস হচ্ছিলো। তখন ইহান ও ওর সাথে আরো দুজন ছেলে ও হেডমাস্টার এলো।আমরা সবাই দাঁড়িয়ে গেলাম।
হেডমাস্টার যা বললো শুনে চমকে উঠলাম। আমাদের শিক্ষাসফরে নিবে। যারা যেতে চায় এই সপ্তাহে নাম দিতে হবে। তুলি তো লাফিয়ে উঠলো ক্লাস শেষ হতেই,
‘আমি তো যাবোইইই। ঊষা ইহান ভাইয়ের কতো বুদ্ধি দেখছিস? তোকে টেনশনে রেখে এখন যাওয়ার জন্য বাড়িতে রাজি করানোর সঠিক চাল দিলো। আমার তো মন খারাপ হয়েছিলো তুই একা যাবি আমি যেতে পারবো না।আমি বেড়াতে কতো পছন্দ করি জানিস তো। এমন একটা সারপ্রাইজ ভাবা যায়।’
আমি হাঁ করে বসে আছি। ইহানের উপর আমার রাগ আকাশ সমান ছিলো। তার উপর মাথার উপর টেনশন বাবাকে কিভাবে রাজি করবো সাজেক যেতে। এখন তো রাজি করানো সহজ হবে স্কুলে থেকে যাচ্ছি জানলে খুব একটা রিয়েক্ট করবেনা।বাঁচা গেলো।
কিছু একটা মনে পরতেই আমি দৌড়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে এলাম। তারাতাড়ি সিঁড়ি বেয়ে নামছি। সারা স্কুল ইহানকে খুঁজলাম পেলাম না।উপরে এসে গেটের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ইহানরা চলে যাচ্ছে। আমি রাগী চোখে তাকিয়ে রইলাম। বাসায় এসে কল করেও কাজ হলো না।ইহান মেসেজ এ বলেছে ট্রিপে থেকে আসার আগে দেবে না। রাগে দুঃখে কান্না পাচ্ছে এখন আমার। গন্ডার একটা। আব্বুকে খুব সহজেই রাজি করতে পারলাম। স্কুল থেকে যাবে তাই ঝামেলা হয় নি। সামনে সপ্তাহে যেতে হবে তার আগে তুলি আমাকে নিয়ে মার্কেটে এলো। কিছু কেনাকাটা করবে আসবো না তাও জোর করে ধরে এনেছে আমাকে।
আজকে ও অনেক সময় নিয়ে শপিং করলো তুলি। আজকে কেনাকাটা ভালোই করলো সব কিছুই ঘুরতে যাওয়ার জন্য। আমাদের তিনদিনের ট্রিপ।
আমাকে তুলি কিনবো কিনা জিজ্ঞেস করলো আমি না বলে দিলাম। আম্মুর সাথে আমি কয়েকদিন আগেও শপিং করেছি। আমার একা করতে ভালো লাগে না।
কেটে গেলো পাঁচ দিন। আজ সেই যাওয়ার দিন তুলি সাতসকালে চলে এসেছে বাড়িতে। দুজনে একসাথে বের হলাম বাসায় থেকে।
#এক_চিলতে_রোদ-২
#Writer_Nondini_Nila
১৬.
জ্বরের জন্য রিমা আমাদের সাথে যেতে পারলো না। কাল বিকেলে আমরা ফ্রেন্ডরা গিয়েছিলাম ওকে দেখতে। বিছানা থেকেই উঠতে পারছে না। খারাপ লাগছে ওর জন্য কিন্তু কি করবো আর। অসুস্থতার জন্য তো কারো হাত নেয়। আর এই অবস্থা কোথায় যাওয়ার উপায় নাই। রিমা ও মুখটা একটু খানি করে রেখেছিলো। আমি আর তুলি আজ রিকশায় উঠে ওর কথা ভাবলাম। আবার কল ও করে কথা বললাম। অভিমান করে কথা বলছিলো।
‘ তোরা সবাই আমাকে রেখে চলে যাচ্ছিস।’ রিমা বললো।
‘ তো আর কি করবো। তুই তো সময় মতো বিছানায় পরেছিস।’ তুলি বললো।
‘ আমি কি ইচ্ছে করে অসুখ বানিয়েছি নাকি। হয়ে গেছে কি করবো। আমার যে কতো আফসোস হচ্ছে তোদের বুঝাতে পারবো না।’
‘ আচ্ছা রাখি রে এসে পরেছি।’
‘ রাখ।’
বলেই খট করে ফোন কেটে দিলো।
‘ বাবাগো কি রাগ। বলতে বলতেই কেটে দিছে।’ আমার দিকে তাকিয়ে বলল তুলি।
আমি কিছু বললাম না। ইহান দের ভার্সিটিতে আসতেই রিকশা থেমে গেলো। ব্যাগ হাতে নেমে পরলাম। ভাড়া মিটিয়ে তুলিও আমার পাশে দাঁড়ালো। পাঁচটা বাস। আমাদের ক্লাসের আরো স্টুডেন্ট আছে তাদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। চার ইয়ারের চারটা বাস আর একটা আমাদের স্কুলের যারা যাবে তাদের জন্য। সবার সাথে বাসে উঠে বসলাম। বাম সাইডের তিন নম্বর সিটে বসলাম আমি আর তুলি। আমি জানালার কাছে বসেছি তুলি পাশে বসে ঝগড়া করে যাচ্ছে আমিয় নরছি না
‘ আমি কিন্তু উঠে অন্য সিটে বসবো। ‘ বলে উঠলো তুলি।
‘ এমন করছিস কেন? আমি জানালা পাশে ছাড়া বসতে পারি না জানিস তো।’ অসহায় মুখ করে।
তুলি বললো, ‘আমি ও তো পারিনা।’
‘ আচ্ছা অর্ধেক রাস্তা আমি থাকবে বাকি অর্ধেক রাস্তা তুই বসবি।’
‘ আচ্ছা।’
বলে স্কাপ ঠিক করে নিলাম। জানালা ভালো করে খুলে দিলাম। অনেকে আসে নি এক এক করে আসছে সবাই অনেক সেজেগুজে এসেছে দেখছি। আমি আর তুলি সবাকে দেখছি তুলি এটা ওটা বলছে আমি উওর দিচ্ছি।
আরো আধা ঘন্টা বসে থাকার পর গাড়ি ছাড়ার সময় ঘনিয়ে এলো। এর মাঝে একবার ও ইহান কে দেখি নি।
ওর কথা আমি ভুলেই গেছিলাম। তুলি বলতেই মনে পরলো।
‘ এই ঊষা ইহান ভাইকে দেখলাম না ত। তুই কি দেখছিস?’
‘ নাহ।’ সাথে সাথেই উত্তর দিলাম।
‘তারা তো থার্ড ইয়ারে পড়ে তাই না। তাদের গাড়ি আমাদের পেছনের টা।’
বলেই আমার উপর দিয়ে জানালা দিয়ে পেছন এ তাকালো। আমি ধাক্কিয়ে সরিয়ে বললাম, ‘ কি হচ্ছে আমার উপরে ঝাপিয়ে পরছিস কেন?’
‘ আরে দেখলাম গাড়িটা। ইহান ভাই তোর সাথে দেখা করতে এলো না। উনার কাজ বোধহয় কথা লাগবে না তোর। বেঁচে গেলি।’
তুলির কথা শুনে ওর দিকে তাকালাম। এটা হলে তো বেঁচে যেতাম যাই হোক উনার সব খারাপ এর মধ্যে ও একটা দিক খুব ভালো লেগেছে তা হলো ওনার জন্য বেড়াতে যেতে পারছি।
গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার আগে স্যার ও ম্যাম গুনে দেখলো সবাই এসেছে নাকি। দেখে নিজেদের সিটে বসে পরলো। আমি জানালার বাইরে নিজের দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম। তখন ইহানকে দেখে চমকে উঠলাম। আকাশী রঙের শার্ট ও ব্রাউন প্যান্ট পড়ে আছে। চোখে কালো সানগ্লাস। অ্যাটিটিউড নিয়ে দাঁড়িয়ে সামনের জনের সাথে কথা বলে যাচ্ছে। আমি তাকিয়ে আছি ইহান তাকাবে ভাবলাম কিন্তু ভুল করেও তাকালো না। গাড়ি চলে গেলো আমি চোখ সরিয়ে সামনে তাকালাম। ভালোই হয়েছে আমাকে দেখে নি আর না আমাকে ওইসব নিয়ে কিছু বলেছে উনি মনে হয় সব ভুলে গেছে তাহলে তো খুব ভালো। আমার আর ঝামেলা পোহাতে হবে না।
এক জোড়া চোখ তীক্ষ্ণ নজরে বাসটার দিকে তাকিয়ে ছিলো যা আমার নজরে পরলো না।
গাড়ি চলতে লাগলো। আমি বাইরের কোলাহল বিহীন রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছি। সকাল বলে মানুষের আনাগোনা খুবই কম। শুধু অফিসের লোক রা রাস্তা দাড়িয়ে আছে আর কিছু টিউশনির ছাত্র-ছাত্রী। আর আছে রিকশা, অটো মালামালের গাড়ি। সব কিছু পাস করে যাচ্ছি। পার্সের ভেতর থেকে ফোনটা বেজে ওঠলো। আব্বু কল করেছে। বাস ছেড়েছে কিনা জিজ্ঞেস করলো। তারপর রেখে দিলো নিজের খেয়াল রাখতে বলে।
সকালের ঠান্ডা বাতাসে ভালোই লাগছে বসে থাকতে। তুলির সাথে গল্প, ইয়ারফোন কানে লাগিয়ে গান শুনছি। এভাবেই সময় কাটছে। আমি ব্যাগ ভর্তি করে চকলেট, চিপস, সেন্টার ফুট নিয়ে এসেছি সেগুলো বের করে খাচ্ছি তুলিকে নিয়ে। দুই ঘন্টা পার হতেই তুলি একপ্রকার জোর করে আমাকে ঠেলে জানালার পাশে গিয়ে বসলো। আমাদের সিটের সোজা পাশের সিটে বসেছে আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে স্টাইলিশ মেয়ে মারুফা বসেছে সেখানে। হাহাহা করে হাসেন ঠোঁটে টকটকে লাল লিপস্টিক দেওয়া। বিয়ে বাড়িতেও মানুষ এতো সাজে না ওর মতো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম তখন মারুফার বান্ধবী শিলা আমার দিকে তাকালো। সাথে মারুফা ও। আমি ঠোঁটে হাসি টেনে বললাম,
‘ হাই তোমাদের অনেক সুন্দর লাগছে।’
আমার কথা শুনে মারুফা খুশিতে গদগদ কন্ঠে বলল, ‘ থ্যাঙ্কস।’
আমি চোখ সরিয়ে নিলাম। তুলি আমার দিকে টেরা চোখে তাকিয়ে আছে আমি ওর দিকে তাকিয়ে হেসে উঠলাম। আর বললাম, ‘ ঢপ মারলাম।’
তুলিও হেসে উঠলো।
একটার দিকে গাড়ি থেকে নামতে হলো সবার। খাওয়া-দাওয়া করার জন্য। রেস্টুরেন্টে গিয়ে বসলাম। খাওয়া শেষ করে ওয়াশরুমে থেকে বের হলাম। তখন ইহানকে দেখলাম আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমি ভ্রু কুটি করে চলে আসতে যাব ইহান আমাকে থামিয়ে দিলো। আর বললো,
‘ গাড়ি চেঞ্জ করতে হবে তোমার।’
আমি বললাম, ‘ মানে কি গাড়ি চেঞ্জ কেন করবো?’
‘ আমাদের গাড়িতে যাবে তাই।’
‘আমি আপনাদের গাড়িতে যাব কেন?’
‘ আমি বলেছি তাই যাবে। এখন স্যার দের গিয়ে রাজি করাও।’
‘ আপনার মাথা কি খারাপ হয়ে গেছে। কি যাতা বলছেন? আমি এটা কেন করবো আর বললেই স্যার রাজি হবে এমনটা আপনার কেন মনে হলো?’
‘ দেখো রাজি করানোটা তোমার ব্যাপার’
‘ আপনি কিন্তু রীতিমতো আমাকে টর্চার করছেন।’
‘ আমাকে ছুঁয়ে কথা দিয়েছিলে তুমি। এখন কি কথা
না রাখার ফন্দি আকছো নাকি?’
‘ আমি কথা দিলে রাখি ওকে। আর আপনার কাজটা করতে আমার এখন ওই গাড়িতে কেন যেতে হবে।’
‘ না গেলে করবে কি করে?’
‘ বলির পাঁঠা আমাকে না করলে হতো না আপনার!’
‘ রাগারাগী পরে করো।আগে ম্যানেজ করে আসো কুইক।’ বলেই তাড়া দেখাতে লাগলো ইহান।
আমি বললাম, ‘ আপনি বুঝার চেষ্টা করেন আপনাদের গাড়িতে আমাকে কেন ছাড়বে? যেখানে আমাদের গাড়িতে সিট ফাঁকা আছে। আমি কি করে রাজি করাবো?’
ইহান দুই সেকেন্ড চুপ থেকে আমাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘ তুমি কি জানালার পাশে বসেছো?’
‘ বসেছিলাম কিন্তু এখন তুলি সেখানে। আমাদের দুজনের ই জানালার পাশে বসতে চাই তাই হাঁফ করে নিয়েছি। কিন্তু ও আগে চলে গেছে।’
‘ তুলি কি বমি করে গাড়িতে? আর তোমার কি এমন অভ্যাস আছে?’
‘ না না আমার নেই। আমার তো গাড়িতে যাতায়াতের অভ্যাস আছে। তুলি আছে বেশি না ও নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে।
‘ তোমার এখন মিথ্যে বলতে হবে।’
‘ মানেএএ?’
ইহান তারপর আমাকে বললো স্যারদের কিভাবে ম্যানেজ করবো। কিন্তু এতে কি হবে?
‘ আমি যদি আপনার কথা মতো বলিও তা ও তো স্যার আপনাদের গাড়িতে আমাকে পাঠাবি না। আমাদের গাড়ির অন্য কোন সিটে ব্যবস্থা করে দিতেই পারে।’
‘ দিলেও তোমার পাশে কেউ বসবে না। তুমি খালি বলো তোমার গাড়িতে অনেক বমি হয় শত চেষ্টা করেও কন্ট্রোল করতে পারো না। যেতে তোমার অনেকবার বমি হবে এবং এখন ও করেছো নেমে। এসব শুনলে কেউ তার পাশে তোমাকে বসাবে না কারণ বমি দেখতে কেউ পছন্দ করে না সবাই নাক ছিটকায়।’
‘ আপনার জন্য আমি এই ঘোর মিথ্যা বলতে পারবো না।’
‘ বলতে তো তোমাকে হবেই।’
‘ বলবো না কিছুই।’
‘ওকে এইটা আমি যাওয়ার সময় জানালা দিয়ে ফেলে দেবো।’ বলেই নূপুর জোরা বের করে দুলাতে দুলাতে চলে গেলো। বাধ্য হয়ে আমাকে এই মিথ্যার আশ্রয় নিতে হলো। আমার কথা শুনে ইহান এগিয়ে এসে বললো ওদের গাড়িতে একটা এক্সট্রা সিট আছে সেখানে আমাকে বসিয়ে দেবে। আমার এসব কথার মাঝে তুলি এগিয়ে আসলো। আর বললো,
‘না না ঊষা তুই ওই গাড়িতে যাস না। তুই আমার সাথে থাক। আমি আর জোর করে জানালার পাশে বসবো না। তুই বস তোর যে এত গাড়িতে বমি পাই আমি তো বুঝিনি। এতোক্ষণ তো ভালই দেখ…
ইহান এসে তুলিকে থামিয়ে দেয় আর চোখের ইশারায় কিছু বলে তাতেই তুলি পাল্টি খেলো।
‘ না না থাক আমার ও তো বমি হয়। দুজন এক
সাথে কি ভাবে কি করবো তুই ওই গাড়িতেই যা। আমি একাই ভালো আছি। বলেই ভেতরে চলে গেলো। স্যার রা রাজি হতে চাইছিলো না একটা ছেলের সাথে আমাকে ছাড়তে পারে না। তখন ইহানের ফ্রেন্ড মুক্তা আপু এসে আমার কাঁধে হাত রেখে বলল,
‘স্যার চিন্তা করবেন না আমি আছি ঊষার সাথে।’
মুক্তাপুর কথা শুনে আমাকে ছাড়লো ইহান গিয়ে আমার ব্যাগ পত্র নিয়ে এলো। আমি তাদের সাথে তাদের বাসে গিয়ে উঠলাম। তখন ফারিয়াকে দেখে ঢোক গিললাম। আগুন চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আল্লাহ! এই চোখ দিয়ে আমাকে বষ্স করে দেবে। আমি চুপচাপ এগুতে লাগলাম। আমাকে বসতে দিলো লাস্টের দুই সিট আগে। জানালার পাশে বসলাম এবার। মুক্তা আপু আমাকে বসিয়ে দিয়ে চলে গেলো। আমি বড় আপু ভাইয়াদের দিকে এক বার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলাম।
বাস চলতে শুরু করলো। আমি একাই সিটে বসে আছি। তারমানে এখানে একাই বসতে হবে আমি ইয়ারফোন কানে লাগিয়ে চোখ বন্ধ করলাম। আবার চোখ খোলে বাইরে তাকালাম। শহর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি অনেক আগেই। বাইরে তাকিয়ে আমি গান শুনছি। তখন ধপাস করে কেউ আমার পাশে বসলো আমি ভয় পেয়ে গেলাম। আর তাকিয়ে দেখি ইহান বসেছে। আমি তাকাতেই দাঁত কেলিয়ে হাসলো। আমি চমকে উঠে দাঁড়ালাম।
‘ একি আপনি আমার পাশে বসেছেন কেন?’
‘ তো কোথায় বসবো এটা তো আমার সীট।’
‘ কি আপনার সীটে তাহলে আমাকে বসিয়েছেন কেন?’
‘ একসাথে বসবো তাই।’
‘মানে একসাথে বসবো কেন? আপনি উঠুন এখানে থেকে নাহলে আমি উঠে যাব।’
ইহান টান দিয়ে আমাকে বসিয়ে দিলো। আমি রেগে হাত ঝামটা দিয়ে ছাড়িয়ে বললাম,
‘ এইজন্য তাহলে এখানেই এনেছেন?’
‘ তুমি মনে হয় সব কথা ভুলে গেছো?’ বলেই আমার দিকে তাকালো। আমি কটমট চোখে তাকিয়ে আছি।
#এক_চিলতে_রোদ-২
#Writer_Nondini_Nila
১৭.
জোরে ধাক্কা খেয়ে সামনে ঝুঁকে পরলাম। ফল স্বরূপ সামনে সিটে ধপাস করে বারি খেলাম কপালে। সাথে সাথে আমার ঘুম ছুটে গেলো। আমি কপাল ঠলতে ঠলতে চোখ মেলে তাকালাম। ভালো জোরে আঘাত পেয়েছি। কপাল কুঁচকে সামনে তাকালাম। আমি গাড়িতেই আছি। ইহানের সাথে রাগ করে কখন ঘুমিয়ে পরেছিলাম খেয়াল নেই। পাশ থেকে হো হো করে হাসির আওয়াজ আসতেই পাশে তাকিয়ে দেখি ইহান দাঁত কেলিয়ে হাসছে। আমি চোখ মুখ কঠিন করে তাকালাম। খচ্চর ছেলে একটা। আমি এভাবে ব্যথা পেলাম আর উনি হা হা করে হাসছে। মজা নিচ্ছে। দাঁত কিড়মিড় করে বললাম,
‘ হাসছেন কেন?’
আমার কথা শুনে ইহান হাসির গতি বাড়িয়ে দিলো। তার এমন অসভ্যের মত হাসি দেখে আমার সারা শরীর জ্বলে উঠলো। আশ পাশের সিটের কয়েকজন উঁকি মেরে আমাদের দিকে তাকিয়ে রইল বোকার মতো।
‘ অন্যের আঘাতে দেখে সবসময় নিজের মুখে শয়তানের মতো হাসি ফুটিয়ে রাখে শয়তান একটা।’ বিরবির করে বললাম।
ইহান হাসি থামিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো, ‘ কি বললে বিরবির করে?’
‘ কিছু না।’ বলেই ভেংচি কেটে ঘাড় বাঁকিয়ে নিলাম। ঘুমের ঘোর এখনো কাটেনি।আমি আমার কাঁধের ব্যাগ থেকে বোতল বের করে চোখে মুখে পানি দিলাম জানালা দিয়ে। টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে নিলাম। হাঁটুর উপর বোতল ছিলো ব্যাগে ঢোকাতে যাব তার আগেই টান দিয়ে ইহান সেটা নিয়ে নিলো। আমি কিছু বলার আগেই বোতলে মুখ লাগিয়ে পানি খেতে লাগলো। আমি চোখ বড় করে তাকিয়ে আছি। আমিও একটু আগে মুখ লাগিয়ে খেয়েছি এখন ইহান। কি অবস্থা! রাগ লাগলো আমার আমি আবার কিভাবে পানি খাবো উনি মুখ কেনো লাগালো। রেগে হাত বাড়িয়ে বোতল নিয়ে নিলাম। আর গমগম গলায় বলে উঠলাম,
‘ আপনি কোন সাহসে আমার বোতলে মুখ লাগালেন! এটা কেমন ধরনের ভদ্রতা। এখন আমি কি ভাবে খাব এই পানি?’
‘ কেনো আমার মুখে কি আবর্জনা আছে নাকি যে মুখ লাগালে খাওয়া যাবে না? আমি মুখ না লাগিয়ে খেতে পারি না। না হলে আমার কোন ইন্টারেস্ট ছিলো না তোমার বোতলে মুখ লাগানোর।’
‘ একদম ভাব নিয়ে কথা বলবেন না। আপনার ইচ্ছা ছিলো না মানে কি আমি কি আপনাকে জোর করে দিয়েছি। আমার বোতল আমার কাছে পারমিশন না নিয়েই খেয়ে ফেললাম। আর এতোই যেহেতু মুখ লাগিয়ে খান তাহলে নিজে পানি নিয়ে আসতে পারে না। আমার টা নিলেন কেন?’
‘ সামান্য পানির জন্য এখন তুমি আমার সাথে ঝগড়া করবে? ছিঃ মেয়েরা এতো কৃপণ হয় জানা ছিলো না। যাও তোমাকে আমি ডাবল ওয়াটার কিনে দেবো।’
‘ দরকার নাই। অসহ্য কর একটা লোক।’ বিরক্তিকর মুখে বলে উঠলাম। ইহান কিছু বলবে সামনে থেকে কে যেনো ডেকে উঠলো চলে গেলো ইহান আমি উঁচু হয়ে দেখলাম তার ফ্রেন্ডের কাছে গিয়েছে আর কি যেনো বলে হাসাহাসি করছে।
রিসোর্টে গিয়ে পৌঁছালাম। ইহান আর আসেনি সিটে আমি শান্তিতে একা বসে ছিলাম। রিসোর্টের নাম মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট। দল বেঁধে সবাই ভেতরে ঢুকলাম। আমি খোঁজে খোঁজে তুলির হাত জাপ্টে ধরলাম। একেক রুমে পাঁচ ছয়জন করে থাকতে দিয়েছে। এক বেডে আমি আর তুলি নিলাম। বাকি গুলোতে ও আছে। এসেই বাথরুমে থেকে হালকা ফ্রেশ হয়ে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।
তুলি এসে আমার উপর পরলো আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলাম উপর থেকে।
‘ আমার উপরে পরছিস কেন?’
তুলি এগিয়ে এসে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, ‘ ইহান ভাই কি করলে রে তোকে নিয়ে গিয়ে?’
আমি ভ্রু- কুটি করে বললাম, ‘ হোয়াট কি করবে কি সব বলছিস?’
‘ তোরা একসাথে বসেছিলি তাই না?’ ঠোঁট টিপে হেসে।
‘ হুম। তো কি হয়েছে?’
‘ কিছুনা। ভাই আমাকে তখন কি বলেছে জানিস?’
আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালাম, ‘কি বলেছে?’
তুলি বললো, ‘ তুলি থ্যাঙ্ক ইউ। আমার ঊষার সাথে কিছু প্রাইভেট দরকার তাই ওকে ওই গাড়িতে নিলাম। মিথ্যে কথাতে সায় দেওয়ার ধন্যবাদ। তুই তখন মুক্তা আপুর সাথে চলে গেছিলি আমাকে তখন ভাইয়া এই কথা বলেছে। জিজ্ঞেস করেছি কি এসব তখন।’
‘ ওওও এতে কি সমস্যা? তুই এমন করে তাকিয়ে হাসছিস কেন তাহলে?’
‘ কি জানি আমার না খালি হাসি পাচ্ছে দোস্ত রাগ করিস না।’
‘ সব পাগল ছাগল আমার কাছে কেন আল্লাহ মাবুদ।’
বলেই পাশ ফিরে ঘুমিয়ে গেলাম। কাঁচা ঘুমে ষাঁড়ের মত চেঁচিয়ে টেনে তুললো তুলি। রাগে দুঃখে এখন আমার নিজের চুল টানতে ইচ্ছে করছে। সারা রাস্তা ঘুমাতে পারিনি। এতোটা জার্নি করে খুব ক্লান্ত আমি ঘুমাতে চাই কিন্তু না এই তুলির বাচ্চা আবার আমাকে টেনে তুললো কেন?
‘ সমস্যা কি তোর বলতো? এমন করছিস কেন? আমাকে কি একটু শান্তি তে ঘুমাতেও দিবি না। পার রাস্তা তো একা একা আড়ামসে ঘুমিয়ে এসেছিস আর আমি ওই হনুমান টার সাথে কতো কষ্ট এসেছি জানিস?’
‘ আরে ধুর আমার সাথে চিল্লাচিল্লি করছিস কেন? তারাতাড়ি উঠ। খাবি না খেতে ডেকে গেছে সবাই চলে ও গেছে। আমি আর তুই আছি খালি উঠ চল’
‘ আমি খাব না এখন আমার ঘুম পাচ্ছে।’
‘ দেখ ঊষা এখন এমন করিস না। পরে কিন্তু খিদে লাগলেও না খেয়ে থাকতে হবে। সারা রাত অবশ্যই না খেয়ে থাকতে পারবি না। তাই দয়া করে ঝামেলা না করে চল ডিনার করে আসি।’
‘ ধ্যাত।’
বিরক্তিকর মুখে উঠে চোখে মুখে পানি দিয়ে চুল আঁচড়ে ওরনা গলায় পেঁচিয়ে বেরিয়ে এলাম। সবাই খেতে বসে গেছে আমাদের ই দেরি হয়ে গেলো। ম্যাম কে সরি বলে খাবার খেতে বসে গেলাম। ভালোই খিদে পেয়েছিলো পেট পুরে খেয়ে উঠে দাঁড়ালাম। সবাই আগেই শুরু করেছিল তাই আগেই চলে গেছে আমরা কয়েকজন আছি রেস্টুরেন্টে। আম্মুকে কল ও করিনি রিংটোন বাজতেই কানে ধরে কথা বলতে বলতে বেরিয়ে এলাম। ইহান ও তার বন্ধুদের আমি দেখতে পেলাম তখন দল বেঁধে এগিয়ে আসছে আমাকে ক্রস করে চলে গেলো। আমি কথা বলতে বলতে ইহানের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। ওরা চলে যেতেই চোখ সরিয়ে নিলাম। ফোন কেটে দিতেই হাতে টান পরলো ইহান আমার হাত টেনে ধরছে।
‘ আরে কি করছেন ছাড়ুন আমার হাত।’ হাত ছাড়ানোর প্রাণপণ চেষ্টা করতে লাগলাম। সবাই মিলে যাচ্ছে কোথায় আর আমাকেই বা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আল্লাহ এ কোন পাগলের পাল্লায় পরলাম। নিশ্চিত উনার মাথায় সমস্যা আছে।
বাগানে এসে বাকিরা গোল হয়ে বসেছে আমাকে ও তাদের সাথে নিয়ে গিয়ে বসালো ইহান নিজেও বসে পরলো।
আমি রেগেমেগে উঠে দাঁড়াতে যাব। ইহান আবার টান মেরে ঘাসের উপর বসিয়ে দিল।
ইহান আমার দিকে ঝুঁকে ফিসফিসিয়ে বললো,
‘ উঠছো কেন বসো!’
‘ না আমি এখানে বসবো কেন? ছাড়ুন দেখি আমার হাত। এমন অসভ্যের মতো আমাকে টেনে আনলেন কেন আপনি?’ ইহানের মতো আমিও ফিসফিস করে বললাম।
ইহান কিছু বলতে যাব তার আগেই ফারিয়ার ককর্শ আওয়াজ কানে এলো।দুজনে তার দিকে তাকালাম,
‘ এই তোরা দুজন কি গুজুর ফুজুর করছিস? আর এমন চিপকে বলেছিস কেন দুজন? ইহান ওই মেয়ে এখানে কি করছে?’
‘ আমি নিয়ে এসেছে কেন কোন প্রবলেম?’
‘ হুম প্রবলেম তো আছে। ওই মেয়ে আমাদের ফ্রেন্ডস আড্ডাতে কেন এসেছে বল?’
‘ বললাম ই তো আমি এনেছি।’
‘ তুই ওকে কেন আনবি?’
‘ তো কে আনবে?’
‘ আমি তোর কোন কথা বুঝতে পারছি না। ও খানে কেন?’
‘ আমাদের সাথে আড্ডা দিবে তাই। আর আমি যেখানে থাকবে ঊষা তো সেখানেই থাকবে!’
‘ মানেএএএ
আমি কাচুমাচু মুখ করে তাকিয়ে আছি দুজনের দিকে।ওরা কথায় বিভোর এই সুযোগে আমি উঠে এক দৌড়ে ভেতরে চলে এলাম।
#চলবে……
#চলবে……
#চলবে…..