#তারে_আমি_চোখে_দেখিনি
#পর্বঃ১২
#Mst_Liza
মায়া মন খারাপ করে সারাদিন রুমে বসে আছে, নিজেকে বন্দী করে। না কিছু খাচ্ছে আর না কারও সাথে কথা বলছে। এদিকে সোহাগও মায়াকে জোড় করে চলেছে কিছু খেয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু মায়া সোহাগের কোনো কথা শুনছেই না।
সোহাগঃ ওই মাহিরকে আমি পরে দেখে নেবো।সারাদিনে কিচ্ছু খাস নি! এখন একটু খেয়ে নে মা!
মায়ার কিছুই ভালো লাগছে না।এতো অশান্তির মধ্যে কি খেতে ইচ্ছে করে? কাঁদতে কাঁদতে মায়া সোহাগের দিকে তাকায়।
মায়াঃ আচ্ছা আংকেল আমি কি খুব খারাপ?
সোহাগঃ কে বলেছে তুই খারাপ?
মায়াঃ আমি সত্যিই খারাপ আংকেল। আমার জন্যই এতোকিছু হচ্ছে।
সোহাগঃ তোর জন্য কেন হবে সবই তো মারিরের…
মায়াঃ না আংকেল উনার কোনো দোষ নেয়।
সোহাগঃ কিসব বলছিস?
মায়াঃ ঠিকই বলছি! বাসর রাতে আমি উনাকে এতো শীতে আর মশার মধ্যে বাইরে রেখে নিজে রুমে ঘুমিয়েছিলাম তারপর সকালে উঠে নাটক করেছিলাম উনাকে অপমান করবো বলে।শুধু তাই নয় আমার জন্যই উনি এবাড়ি থেকে চলে গেছে।আর আমার বাবা আজ আমার জন্যই আবার অসুস্থ হয়ে পরেছে।সব অশান্তির মূলে আমি।
সোহাগ মায়ার কথাগুলো শুনে চুপ হয়ে যায়।মায়া আবার বলতে শুরু করে।
মায়াঃ আমার বাবার হার্টের প্রবলেম উনি হয়তো যানে না সেটা।তাই বাবার কাছে গিয়ে যা ভালো মনে হয়েছে বলেছে।আর বাবা সহ্য করতে না পেরে হার্ট অ্যাটাক..
কথাটা বলেই জোরে জোরে কাঁদতে থাকে মায়া।
সোহাগ মায়ার কাঁধে হাত রেখে বলে,
সোহাগঃ সত্যিই তুই অন্যায় করে ফেলেছিস মায়া। তবে এই পরিস্থিতিতে তোকে আমি কিছু বলবো না। তুই তোর ভুলটা যে বুঝতে পেরেছিস এটা ভেবে তোর প্রতি আমার রাগ থাকলেও ভালো লাগছে।কিন্তু এসব তুই কেন করতে গেলি মা?
মায়া কাঁদতে থাকে কিছুই বলে না।
সোহাগ কিছুক্ষণ বসে থেকে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
,
,
,
সময়টা রাত তিনটা।আজ আর অনুভব আসে নি।মায়া অনেক অপেক্ষা করেছিলো।ভেবেছিলো অনুভবকে শুনলে কিছুটা মন হালকা হবে।মায়ের বলা প্রত্যেকটা কথা আর বাবাকে না দেখতে পারার যন্ত্রণা ভেতর থেকে মায়াকে যেন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।প্রতিদিনের মতোন আজও মায়া ডায়েরী আর পেন হাতে নিয়ে বসেছিলো আর সেই অবস্থাতেই কাঁদতে কাঁদতে বিছানার উপর ডায়েরী রেখে তার উপরে মাথা দিয়ে মেঝেতে বসে ঘুমিয়ে যায়।
ওদিকে সোহাগ মাহিরের সাথে কথা বলে সব ঠিক করে নেয়। মাহির নিজের ব্যাগপত্র গুছিয়ে আবিরের বাড়ি থেকে আবার মির্জা প্যালেসে চলে আসে।রুমে ঢুকতেই মায়াকে এভাবে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে নিজেরও খারাপ লাগতে থাকে। ভাবে, মায়া সবকিছু শিকার করে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছে তারজন্য একটা ধন্যবাদ দেওয়া উচিৎ। সেই সাথে সকালের ব্যাবহারের জন্য ছরিও বলবে।
মাহির এটা ভেবে এগিয়ে মায়ার কাছে এসে বসে।তারপর যেই মায়াকে ডাকতে যাবে সেই মায়ার হাতের নিচের ডায়েরীটা মাহিরের চোখে পরে।মাহির আস্তে করে মায়ার হাতের নিচের ডায়েরীটা হাতে তুলে নিয়ে তার প্রতিটা পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে পরতে থাকে।যেখানে শুধুই অনুভবকে নিয়ে লেখা আর অনুভবের বলা প্রত্যেকটা কথা।
,
,
,
,
চলবে,,,,
আজ এটুকুই,,,,,,