🍂#তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা 🍁
#পর্ব-১৩
#Jannatul_ferdosi_rimi
তার মানে তুই আমার ছেলের জন্য এখানে আসিস নি? কি মতলোব তোর? কন্ঠস্বরটা শুনে পিছনে ঘুরে তাকায় পায়েল পিছনে ঘুরে দেখে মিসেস নিশি পায়েল কি করবে কিচ্ছু বুঝতে পারছিনে নিজেকে যথাসম্ভব আটকে রেখে বলে উঠলো
—খালামনি তুমি এখানে??
মিসেস নিশিঃ তুই আমাকে বল মুখপুরি তুই এখানে কেন?? কেন এসেছিস???তুই অন্য কোনো মতলব এ এসেছিস??বল??
পায়েলঃ আমি বলতে পারবো না🥺
মিসেস নিশি ঠাস করে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো
—মুখপুরি বল তুই কি মতলবে এসেছিস আমার অয়নের ক্ষতি করতে এসেছিস তাই না??
পায়েল এর চোখে পানি টলমল করছে
পায়েলঃবিশ্বাস করো আমি অয়নের ক্ষতি করতে আসিনি শুধু অয়ন আর রিমিকে আলাদা করতেই….
মিসেস নিশিঃ বল মুখপুরি তুই কার কথায় এইসব করছিস??
পায়েল কান্না করতে করতে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো মিসেস নিশি অনেক বার পায়েলকে ডাকলেন কিন্তু পায়েলকে আটকাতে পারলেন না পায়েল জানেনা সে কোথায় যাচ্ছে কিন্তু তার মস্তিস্ক বলছে তাকে যে করেই হোক অয়ন আর রিমির কাছে পৌছাতে হবে অনেক বড় ভুল করেছে সে রিমি আর অয়নকে বলে সেই ভুলের পাসচিত্ব করতে হবে এসবের পিছনে মুলে কে? তা অয়ন আর রিমিকে বলতেই হবে…..(লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
🍁
🍁
বেচারা অয়ন ভাইয়া পা টিপতে টিপতে কখন যে বেডের কিনারে ঘুমিয়ে পড়েছে তার হুশ নেই না বাবা থাক অনেক টিপেছে আর না জ্বালাই বেচারার বাসর রাতের বারোটা বাজাইছি😁😁😁 নাহ এই বিয়ের সাঁজটা ছাড়তে হবে কিন্তু এখানে কি আমার কোনো ড্রেস আছে যাক দেখি আলমারি খুলে দেখি অনেক শাড়ি দেখেছো এই অয়ন ভাইয়ার কান্ড আলমারি ভর্তি শাড়ি একটা ড্রেস ও নেই কি আর করার একটা মেরুন কালারের শাড়ি বের করলাম ওয়াসরুমে গিয়ে চেন্জ করে নিলাম শাড়িটা আমি বেশ পড়তে পারি কাকিমনিই আমাকে শিখিয়েছিলো যদি কোনোদিন কাজে লাগে আমারও আজ লেগে গেলো আমি শাড়িটা পড়ে বারান্দার উদ্দেশ্য রওনা হলাম (লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি) যতদুর দেখছি গাছপালা নীচে অয়ন ভাইয়ার গার্ডসরা পাহাড়া দিচ্ছে আন্দাজ করতে পারি এইটা অয়ন ভাইয়ার কোনো ফার্ম হাউজ কিন্তু এই ফার্ম হাউজের কথা তো অয়ন ভাইয়া কোনোদিন বলেনি আমাদের কবে কিনলো? চারপাশে প্রকৃতি দেখতে ব্যস্ত আমি সত্যিই আল্লাহ মহান আমার ভালোবাসার মানুষটার সাথেই আমার বিয়েটা হয়ে গেলো যদি আমার আমানের সাথে বিয়েটা হতো তাহলে আমি আমার অয়ন ভাইয়াকে হারিয়ে ফেলতাম আমানের কথা দিয়ে মনে পড়ে গেলো ডুব দিলাম অতীতে…..
১বছর আগের এক সকালে…
রাস্তা দিয়ে আনমনে হেঁটে যাচ্ছিলাম আজকে গাড়ি নেইনি আজকে ভার্সিটিতে আমার ফার্সট ডে তাও মন খুব খারাপ অয়ন ভাইয়া আজ আমেরিকা চলে গিয়েছে তাও এক বছরের জন্য সত্যিই আমার খারাপ লাগছে কেন?? আমি তো চাই অয়ন ভাইয়া দূরে থাকুক সারাদিন আমাকে জ্বালায় আমি তো তাই চাই কিন্তু তাও আমার কস্ট হচ্ছে কিন্তু কেন??কেন? অয়ন ভাইয়া আমার থেকে দূরে যাওয়াতে আমার কস্ট লাগছে কেন এইসব ভেবেই ভার্সিটিতে ঢুকছিলাম তখনি আমার বেস্টু তিথি হাজির তিথি কেবলা মার্কা হাঁসি দিয়ে বলল
–প্লিয দোস্ত রাগ করিস না দেখ একটু দেরি হয়েগেছে তাই তোকে বাসা থেকে ড্রপ করতে পারি নি আমি শান্তগলায় বললাম।
–দুর বাদ দে
তিথি আমার শান্তভাব থেকে অবাক হলো
–কিরে তুই এতো শান্ত কেন? তোর তো রাগ করার কথা।
আমি জোড়পুর্বক হাঁসি ফুটিয়ে বললাম।।
—জানিস ই তো অয়ন ভাইয়া চলে গিয়েছে ১ বছরের এই কয়দিন অনেক শান্তিতে থাকবো তাই অনেক হেপ্পি এই হেপ্পি মুডে রাগ করতে চাই না।।
তিথিঃওহ।।
আমি আর তিথি ভার্সিটির এর দিকে যাচ্ছিলাম তখনি কারো সাথে আমার ধাক্কা লাগে একটুর জন্য আমি পরিনি সামনে তাকিয়ে দেখি ফর্সা লম্বা চোখে চশমা এইরকম টাইপের একটা ছেলে আমার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে আমি বেশ রেগেই ছেলেটা কে উদ্দেশ্য করে বললাম।।
—ভার্সিটি কি আপনার কেনা?
ছেলেটা আমার প্রশ্নে ছেলেটা কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বললো।
—যদি কেনা হয়েও থাকে প্রবলেম কি?
আমি রেগে বললাম
—চোখ কই থাকে আপনার মেয়ে মানুষ দেখলেই ধাক্কাতেই ইচ্ছা করে তাই না।।
—ওয়াট?।
তিথি আমাকে বারবার আটকাতে চাচ্ছে কিন্তু আমি তো রিমি খান সহজে কাউকে ছাড়ি না
—এইযে দেখুন আমি কে জানেন আমি জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি খান আপনার নামে এমন বিচার দিবো না এই ভার্সিটিতে কেম্নে থাকেন আমিও দেখবো
— ওহ লাইক সিরিয়াসলি? রিমিপাখি?।।
আমার এইবার রাগ সপ্ত আসমানে
—এই এই কে রিমিপাখি?
—তুমি আজ থেকে আমার রিমিপাখি জানো তোমার মতো ধনিলংকাকার অপেক্ষায় আমি এতোদিন ছিলাম তোমাকে প্রথম দেখাইতেই আমি তোমার প্রেমে পড়ে গেছি আই লাভ ইউ এই বলে ছেলেটা শিস বাজাতে বাজাতে চলে যায় আমি আর তিথি বোকা৷ বোনে গেলাম কি বলে কি লোকটা প্রথম দেখায় প্রেম??
।
তিথিঃ দোস্ত তোর ভাগ্য সেই রে ভার্সিটির ডেরেক্টার + প্রতিসঠাতার ছেলে আমান শিকদার তোর প্রেমে পড়ে গেলো? বাহ তাও তুই এতো কিছু বললি
আমি পুরাই বেকুব হয়ে গেলাম
—এই ছেলেটা এই ভার্সিটির ডেরেক্টার? তাও কিচ্ছু বললোনা?
সেইদিন ছিলো আমার আর আমানের প্রথম পরিচয় তারপর থেকে আমান আমাকে প্রতিদিন প্রপোজ করতো আমি প্রতিদিন রিফিউজ করতাম একদিন
আমি বারান্দায় দাড়িয়ে গান গাচ্ছিলাম আস্তে আস্তে।।
আমানঃ বাহ আমার রিমিপাখি তো অনেক ভালো গান গায় আমি আমানের কন্ঠ পেয়ে ভরকে গেলাম
।–এইযে মিঃ আমার আমার নাম রিমি রিমিপাখি আমি পাখির মতো উড়ি?যে রিমিপাখি বলেন?
আমান আমার কথা শুনে মুচকি হেঁসে বললো
আমানঃ সেই যাই বলো আমি তোমাকেই রিমিপাখি বলে ডাকবোইইইইই।এই একটা নাছড়বান্দা আমার কথা শুনতোই না দিন গুলো ভালোই যাচ্ছিলো হঠাৎ একদিন আমার ফোনে একটা ফোন আসে
রিমিঃ হ্যালো
একটা মেয়ে ভিতু স্বরে বললো
।
—আপু আপু আমাদের বাঁচাও অই আমান শিকদার আমাদের মেরে ফেলছে
আমি তো সেই অবাক
—মানে? কি বলতে চাচ্ছো তুমি?
মেয়েটিঃ আপু বেশি সময় নেই আমি তোমাকে একটা এড্রেস বলছি তাড়াতাড়ি আসুন নাহলে আমান আমাকে মেরে ফেলবে মেয়েটা কিছু বলবে তার আগেই গুলির শব্দ পাই
রিমিঃ হ্যালো হ্যালো??
মেয়েটা আর কিছু বললো না।।
আমি অনেক ভয় পেয়ে যাই পুলিশ নিয়ে৷ আমি সেই ঠিকানায় যাই একটা পুরোনো গুডাউন আমি
পুলিশ নিয়ে ভিতরে যেয়ে যা দেখে তাতে পুরো বাকরুদ্ব হয়ে যাই ৫টা মেয়ের মৃতদেহ তার পাশেই মেশিং গান নিয়ে আমান দাড়িয়ে আছে তার শার্টে রক্তের দাগ আমান আমার সাথে পুলিশ দেখে অবাক হয়ে যায় হয়তো আমাকে এখানে এইভাবে আশা করিনি আমান কিছু বলবে তার আগেই আমি বলে উঠি
—আমান আপনি একজন খুনি
আমানঃ দেখো রিমি তুমি যা দেখছো তা ঠিক না আমি খুনি না
রিমিঃ একদম মিথ্যে বলবেন না অই মেয়েটাও আমাকে আপনার নাম বলেছেন তার ভয়েস রেকর্ড আছে আমার কাছে
আমানঃ তুমি আমার বিশ্বাস করো প্লিয।।
পুলিশ অফিসারঃ আপনাকে বিশ্বাস করার মতো কিছু আছে কি??আপনি আমাদের সাথে চলুন আর ম্যাডাম(আমাকে উদ্দেশ্য করে) আপনি সাক্ষি দিবেন তো?
রিমিঃ অবশ্যই একজন খুনি কে তার উপযুক্ত শাস্তি পেতেই হবে(আমানের দিকে তাকিয়ে)
আমান আমার দিকে অসহায়ের দৃস্টিতে তাঁকিয়ে বলে
—তুমি আমাকে অবিশ্বাস করছো?তোমার মনে হয় আমি এই কাজ করতে পারি
কেন জানি আমার মন সাই দিচ্ছিলো না কিন্তু যা শুনলাম যা দেখলাম তা অবিশ্বাস করি কীভাবে
অফিসার আমানকে এরেস্ট করে আমানের মন বলছিলো তার রিমিপাখি ঠিক আসবে কিন্তু আমানকে ভুল প্রমান করে দিয়ে রিমি তার বিপক্ষে সাক্ষি দিয়েছে
মিজান সাহেব রিমিকে অনেক বুঝানোর চেস্টা করেছে কিন্তু রিমি তার সিকারক্তি ফিরত নেইনি
সেদিন আমানের চোখে আমার জন্য ভালোবাসা না ত্রীব্র ঘৃণা আমান জেলে যাওয়ার আগেই একটা কথাই বলেছিলো
—কোনো জেল এই আমান শিকদার কে ফিরত আনতে পারবে না শুধু একটা কথা শুনে রেখো রিমি খান আমি ফিরবো আর তুমি শেষ হবে (বাঁকা হেসে)
হঠাৎ কারো স্পর্শ এ অতীত থেকে বেড়িয়ে আসি কেউ আমাকে জড়িয়ে আমার ঘাড়ে গভীরভাবে চুমু খায় আমি কেঁপে উঠি
চলবে কি???
(