🍂#তুই_আমার_অন্যরকম_নেশা 🍁
#পর্ব-১৭(রহস্য উন্মোচন)
#Jannatul_ferdosi_rimi[Writer]
সবাই দরজার দিকে তাঁকায় আমি অবাক দৃস্টিতে তাঁকিয়ে আছি কেননা এইটা আর কেউ না বরং আদি ভাইয়া অয়ন চোখমুখ শক্ত করে বলে
—বিশ্বাসঘাতক
আমার মাথা ঝিম ধরে আসছে আদি ভাইয়া এইসব এর পিছনে?আদি ভাইয়া তো অয়ন এর বেস্ট ফ্রেন্ড তাও কেন করলো এইসব আমানের চোখেও প্রশ্নের সমাহার আদি ভাইয়া বাঁকা হেঁসে পায়েল আপুর চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে বলল
—বেইবি তুমি বলো তার থেকে এই ভালোনা যে আমিই সবাইকে সত্যিটা বলি
পায়েল আপু আদি ভাইয়ার দিকে ঘৃনার দৃস্টি নিক্ষেপ করে বলল
—এতো কিছু করেছো তাও সামান্য পরিমান লজ্জাটুকু তোমার মধ্যে নেই না
অয়ন কিছু করতে যাবে তার আগেই আমি বলে উঠে
—অয়ন ভাইয়া থামুন আমরা আদি ভাইয়ার মুখেই শুনি তাহলে যদি আমানের ভুল ধারনাটা ভেন্গে যায়
অয়ন আমার কথা শুনে চুপ মেরে গেলো আদি ভাইয়া আমার কাছে এসে বলল
—দেখ অয়ন তোর বউ বুদ্ধিমুতি আছে বলতে হবে যদিও আমার বোন তাই একটু বেশিই
বোন কথাটা শুনেই সবাক অবাক হয় আমিও অবাক দৃস্টিতে তাঁকিয়ে আছি আদি ভাইয়ার দিকে কি বলতে চাইছে কি আদি ভাইয়া
আদিঃ গাইস আমি বুঝতে পারছি তোমাদের সবার মনেই অনেক প্রশ্ন সো আমি সবকিছু সভল্ড করে দেই
আদি ভাইয়া টেবিলে ছোয়া আপুর ছবি টা হাঁতে নিয়ে বলল
—প্রথমেই জানাই আমার ছোয়াবেবির আমার ভালোবাসা
অয়ন ছাড়া আমরা সবাই অবাক হলাম আমরা কেউ কিছু বুঝতেই পারছি না
আদিঃ কিরে অয়ন তুই বল
অয়ন দাঁতে দাঁতে চেপে বলল
—ছোয়া তোর জিএফ ছিলো আর আমার ভালো ফ্রেন্ড ছিলো আমিওকে ভাবি বলে ডাকতাম আমেরিকা তে আদিই আমাকে ছোয়ার সাথে দেখা করাই কিন্তু একদিন শুনলাম ও নাকি সুইসাইড মরেছে সেদিন আদি আমার কাছে অনেক কান্না করেছিলো আমিও করেছিলাম কিন্তু
আদি অয়নকে থামিয়ে দিয়ে বলে
— ও মরেনি ওকে আমি মেরেছি আর বেচারা অয়নকে ফাঁসিয়েছি
সবার মাথার উপর যেন আকাশ ভেনগে পড়লো আমান আদি দিকে তেড়ে আসতেই আদি বলে উঠলো
—নো ব্রো এসে লাভ নেই তোমার আগে জানা উচিৎ সব কিজন্য আমি আমার ভালোবাসাকে৷ নিজের হাতে মারলাম(বাঁকা হেঁসে)
আমানঃ তুই তুই আমার ফুলের মতো বোনটাকে কেন মেরেছিস অমানুষ? আর তুই অই সুইসাইড নোট বানিয়েছিস যাতে আমি অয়ন কে ভুল বুঝি
আদিঃ ইয়াপ ব্রো
অয়নঃ বাট তুই এইসব কেন করলি তুইনা ছোয়াকে ভালোবাসতি ছোয়াও তো তোকে ভালোবাসতো তাহলে কেন এমন করলি
আদিঃআরে ওয়েট ব্রো চিল হো বলবো বলবো সব বলবো
আমি আমেরিকায় শুধুমাত্র অয়নের ক্ষতি করতে গিয়েছিলাম আর সেইটা কোনোভাবে অই আমানের বোকা বোন জেনে যায় আর এইটাও জেনে যায় আমানকে আমরাই মার্ডার কেস এ ফাসিয়েছি আর রিমিকে আমাদের লোক ই ইনফরমেশন দিয়ে ভুল বুঝিয়েছে তাই সেইটা ছোয়া প্রেস+অয়ন কে সব বলে দিবে এতে আমাদের এতোদিনের প্লেন বেস্তে যাবে সেইটা খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছিলাম
আমি অবাক হয়ে বললাম
।—আমাদের মানে?
সেইটা না হয় আমিই বলি তখনি দরজা দিয়ে মাঝবয়সী একটা লোক প্রবেশ করে আদি বাঁকা হেঁসে বলে
—হে গাইস মিট হিম মাই ফাদার
মেঘআপু অবাক হয়ে বলে।
—উনিই তো সেই অবৌধ ব্যাপসায়ী মিঃনীল
মিঃনীলঃ—বাহ এই মেয়েতো আমাকে চিনে
মেঘলাঃ চিনবো না সবাই শুনো আমান শুধুমাত্র ভার্সিটির ডিরেক্টার নাহ একজন সিক্রেট এজেন্ট
আমানঃ আর আমি জানতে পেরেছিলাম
এই লোকটা মেয়ে পাচারকারী আর সেইটা শুনেই চলে গিয়েছিলাম আর আমি যাওয়ার আগেই এরা ওদের মেরে ফেলে আর রিমিকে ভুল বুঝায়
আমি নির্বাক আমানের মতো একজন নির্দশকে আমি খুনী ছিহ ছিহ
আমানঃ কিন্তু আমার বোন কে কেন মারলি
আদিঃ অইযে বললাম না সব জেনে গিয়েছিলো আর ২দিন এর ভালোবাসার জন্য আমার বাবার এতো কস্ট কে কী করে ধবংশ করি?হাও? তাই ওকে গলায় টিপে মেরে সিলিং ফ্যান এর সাথে ঝুলিয়ে দেয় যাতে মনে হয় সেইটা মার্ডার আর অয়ন বেঁচারি আমার ছোয়া বেবি আল্লাহ ওর আত্বার শান্তি করুন আমিন(ন্যাকা কান্না কর)
পায়েলঃ আর এইসবে আমাকেও নেই যাতে আমি রিমি আর অয়ন কে আলাদা করি কী করতাম বলো আদিকে আমি ওনেক ভালোবাসতাম কিন্তু ও যে এতোটা নিচু মনের মানুষ তা কোনোদিনো বুঝিনি
আমানঃ অমানুষ তোকে আমি আজই শেষ করে দিবো আমান কিছু করতে যাবে তার আগেই অয়ন আমানকে আটকায়৷
–দাঁড়াও আমান আগে ওর থেকে সব জেনে নেই কেন ওরা বাপ ছেলে মিলে এইসব করেছে(দাঁতে দাঁত চেপে)আমান না হয় তোদের এইসব ব্যাবসা নস্ট করতে চেয়েছিলো৷ কিন্তু আমি বা রিমি আমরা তোদের কি করেছি? তুই আমেরিকায় আমার ক্ষতি করতে গিয়েছিলি কেন?
মিঃ নীল (আদির পাপা) চোখমুখ শক্ত করে বলল
—সেইটা না হয় আমিই বলি অই ইরা খান(রিমির আম্মু) আর আকাশ খান(রিমির আব্বু)আর অই সৈকত চৌধুরী(অয়নের আব্বু) এই তিনজন আমার জীবনটা নরকে পরিনত করেছে সেইদিন অই খান বাড়ি থেকে আমাকে আর স্ত্রীকে বের করে দিয়েছে কিন্তু সেই খান বাড়িতে সবথেকে বেশি অধিকার আমার কেননা আমি অই বাড়ির বড় ছেলে
মিঃনীল এর কথা আমরা কেউ কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা উনি কে হয় মিঃনীল আদিকে উদ্দেশ্য করে বলে
—এইযে আমার ছেলে তখন পৃথীবির আলোই দেখেনি আমার স্ত্রী অন্তসত্তা ছিলো সেই অবস্হায় আমাদের বাড়ি থেকে বের করেছে অই আকাশ খান সমস্ত সম্পত্তি নিজের নামে করার জন্য এইসব করেছে
আমি অবাক হয়ে বলি
—মানে?বাপি আপনার সাথে এইসব করবেই বা কেন
মিঃনীলঃ আমি আকাশ খান এর বড় ভাই নীল খান আর আদি আমার ছেলে আদিত্য খান
এই কথাটা শুনে যেন আমাদের মাথায় আকাশ ভেন্গে পড়লো আদি ভাইয়ার বাপি আমার বড় চাচা কিন্তু আমি যতটুকু জানতাম আমার বাপি ২ ভাই
মিঃনীলঃ আকাশের বরাবর এ আমার সম্পত্তির উপর নজর ছিলো তাই ও একটা প্লেন সাজাই আর আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়
—মিথ্যে–এই বলে
বাপি মামু কাকিমনি মামিমা আর কাকাই আসে।।
বাপিঃএকদম মিথ্যে বলবিনা দাভাই
মামুঃ তুই খুব ভালো করে জানিস তুই সেদিন কি করতে যাচ্ছিলি নীল
অয়নঃ বাবা এইসব এর মানে কি?
বাপিঃ আমি বলছি আমার ভাই নীল ইরা(আমার মা)কে সবসময় পছন্দ করতো মানে ভালোবাসতো কিন্তু ইরা ওকে ভালোবাসে না আমাকে ভালোবাসতো তাই আমাকেই বিয়ে করেছিলো পরে নীল ভাইয়াও নীলা ভাবি(আদির মা)কে বিয়ে করে কিন্তু ওর ইরার প্রতি একটা দুর্বলতা থেকেই যায় ও চেয়েছিলো আমার আর ইরার মধ্যে
ভুল-বুঝাবুঝি তৈরি করতে সেদিন…
আমি যখন মৌ কে কলে করে ঘর থেকে বেরিয়ে ছাদে গিয়েছিলাম তখন ইরা ঘরেই ছিলো (লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
🍁
ইরা তার ঘরে কাপড় ভাজ করছিলো তখনি দরজা বন্ধের আওয়াজে পিছনে ঘুরে দেখে নীল
ইরাঃনীল ভাইয়া আপনি?
নীলঃ কেন বেইবি আমি আসতে পারিনা?
ইরাঃ ভাইয়া এইসব আপনি কী বলছেন?
নীলঃ খুব তো সুখে সংসার করছো আর এদিকে আমি আমি কি পেলাম (রেগে)
ইরাঃমানে?
নীলঃ মানে এইটাই আমি তোমাকে ভালোবাসি
ইরাঃ ভাইয়া আপনি ভুলে যাবেন না আমি শুধু আকাশকে ভালোবাসি আমি বিবাহিত আর আপনিই তো নীলা আপুর হাজবেন্ড তাহলে কেন?এইসব কথা তুলছেন?
নীলঃ কিন্তু ইরা বিশ্বাস করো আমি শুধু তোমাকেই এখন ভালোবাসি
ইরাঃ ছিহ ভাইয়া নীলা আপু প্রেগনেন্ট আর আপনি এইসব বলছেন চলে যান আমার ঘর থেকে নাহলে আমি কিন্তু সবাইকে ডাকতে বাধ্য হবো
নীলঃ ডাকো না বেইবি আই ডোন্ট কেয়ার এই বলে নীল ইরার দিকে আগাচ্ছিলো আর নীলা পিছাচ্ছিলো
উপায় না পেয়ে ইরা নীল কে জোড়ে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে সবাইকে ডাকতে থাকে
আকাশ এসে ইরাকে ধরলে ইরা কাঁদতে কাঁদতে সব বলে সৈকতও চলে আসে আকাশ রক্তবরণ ধারন করে আকাশ আর সৈকত মিলে নীলকে মারতে মারতে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
🍁
আকাশঃ তুই আমাদের এতো বড় ক্ষতি করেছিলি তাই তোকে সেদিন শাস্তি দিয়েছিলাম আর তুই সেই রাগ এখনো পুষে রেখেছিস (লেখিকা জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
নীলঃ বেশ করেছি অই খান ইন্ড্রাস্টির বেশিরভাগ সম্পত্তির মালিক আমি তাহলে? আমি কী পেলাম
রং(কাকাই)ঃতুই যেদিন সেইটা করেছিলে তোকে যে পুলিশে দেইনি এইটাই অনেক
মেঘলাঃ শুধু এইটাই নয় ইরা আন্টিকেও এই নীল খান এ মেরেছে সেটার প্রমানও আছে
আমরা সবাই হতভম্ব
নীলঃ হুম সেদিন রিমির জন্মের সময় ডক্টরদের ঘুষ খাইয়ে ইরাকে মেরে ফেলি আর রিজন দেই জন্ম দিতে গিয়ে মারা গেছে
রিমিঃ কেন কেন করলেন এমন?আমিই তো জন্মের পর নিজের মায়ের স্নেহ টুকু থেকে বঞ্চিত হলাম মায়ের খুনি টেগও পেয়েছিলাম সবসময় মানুষের কটু কথা শুনেই বড় হতে হলো আমাকে এই বলে কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়লাম অয়ন এসে আমাকে ধরলো
আকাশঃতুই আমার ইরাকেও মেরে ফেললি এতো প্রতিশোধের নেশা তোর দাভাই তারপর আমার রিমি আর অয়নেরও ক্ষতি করলি আমানকে টোপ করে
নীলঃ বেশ করেছি
অয়নঃ হুম এখন শাস্তি ভোগ করুন(রেগে)
আদিঃকিচ্ছু করতে পারবিনা তুই আমাদের
আমানঃ তোকে আমি মেরেই ফেলবো
আমান তেড়ে আসতে যাবে তার আগেই…..
চলবে কি?
(