#তুমি_আছো_মনের_গহীনে 💞
#পর্ব- ৫
#Jannatul_ferdosi_rimi
‘মেহেভীন শুধু আমার ব্যবহার করার বস্তু ছিলো শুধুমাত্র। মেহেভীনকে শুধু ব্যবহার করাই যায়, ভালোবাসা নয়। আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। আমার ডার্লিং। ‘ কথাটি বলেই অভ্র মায়রাকে জড়িয়ে ধরে। মেহেভীন কিছুক্ষন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে।
অভ্রের কাছে অনেক আশা-ভরসা নিয়ে সে এসেছিলো,কিন্তু মূহুর্তেই তা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো। আচ্ছা মেহেভীনকে কখনোই ভালোবাসা যায়না? সে কি শুধু ব্যবহারের একটা বস্তু?
মায়রা অভ্রকে আরেকটু টাইট করে জড়িয়ে ধরে বললো,
‘আমি বাইরে থেকে স্পষ্ট শুনলাম। আশফুল বললো তুমি নাকি মেহেভীনের জন্যে কিছু ফিল করো। এইসব এর মানে কি? ‘
অভ্র মায়রার গালে হাত রেখে বলে,
‘মানেটা খুবই সিম্পাল। তোমাকে তো বললাম মায়রা। আমি শুধু মেহেভীনকে ব্যবহার করেছি। ভালোবাসার অভিনয় করার জন্যে, মেহেভীনের প্রতি
আমার একটা অপরাধবোধ জন্ম নিয়েছে আর কিছুই না। কোন ফিলিংস টিলিংস আমার নেই। তুমি কিনা শেষমেষ মেহুর জন্যে জেলাস ফিল করছো। মেহু আদোও আমার ভালোবাসার যোগ্য? অনাথ মেয়ে একটা। আমাদের বাড়িতে একপ্রকার আশ্রিতা হয়েই থাকে। মেহু একটু মডার্ন ও না। সারাদিন কিসব সাধারণ জামা-কাপড় পড়ে থাকে।
এইরকম আশ্রিতা বেহেনজী টাইপ মেয়েকে কে ভালোবাসবে বলো? এই অভ্র আহমেদের রুচিটা এতোটাও খারাপ হয়ে যায়নি। ‘
অভ্রের কথা শুনে, মায়রা যেন নিশ্চিন্ত হলো। মেহেভীন আর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো। সে ভিতরে গিয়ে বললো,
‘তুমি আগে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করুন। তুমি নিজে আমার যোগ্য মিঃ অভ্র আহমেদ। ‘
মেহেভীনকে এইসময় দেখে, অভ্র মায়রার থেকে দূরে সরে গিয়ে বললো,
‘তুই এইসময় কি করছিস? ‘
মেহেভীন মুচকি হেঁসে বললো,
‘আসলে প্রাইভেট টাইমে চলে আসার জন্যে সরি। এসেছিলাম একটা নিউজ দিতে, কিন্তু এখন তোমাকে কিছু দিবো। ‘
অভ্র সরু চোখে তাঁকিয়ে বললো,
‘কিরকম নিউজ? ‘
মেহেভীন হাত ভাজ করে বললেন,
‘সেই খবর পাওয়ার কোনরকম অধিকার কিংবা যোগ্যতা তোমার নেই মিঃ অভ্র আহমেদ। আর একটু আগে কি বললে? আমি তোমার অযোগ্য।
বেহেনজী টাইপ। কিন্তু এই বেহেনজী টাইপ মেয়েকেই কিন্তু একদিন এইভাবেই বুকে জড়িয়ে রেখেছিলে।
যেমনভাবে আজ তুমি মায়রাকে জড়িয়ে ধরে ছিলে?
তখন তোমার স্ট্যাটাস টা ঠিক কোথায় ছিলো? ব্যবহার করার জন্যে যখন তুমি অনাথ আশ্রিতা মেয়েটাকে বিয়ে করেছিলে,তখন তোমার সেই সো ক্লড স্ট্যাটাস কোথায় ছিলো? ‘
অভ্র রাগে মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলে। মেহেভীনের বড্ড বেশি সাহস হয়ে গেছে। অভ্র আহমেদকে এই মেয়ে কথা শুনাচ্ছে আজ-কাল।
‘দেখো মেহেভীন তুমি কিন্তু….
মায়রার কথার মাঝেই, মেহেভীন তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,
‘এই অভ্র আহমেদ যাকে তুমি অনেক ভালোবাসো।
দেখবে একদিন সেই অভ্র আহমেদই তোমাকে ছুড়ে ফেলে দিবে। আসল কথা কী জানো? এই অভ্র আহমেদ শুধু আমার ভালোবাসাই নয়,বরং এই অভ্র আহমেদ কারো ভালোবাসা ডিসার্ভ করে না। ‘
কথাটি শুনামাত্র অভ্র মেহুর দিকে এগিয়ে এসে বলে,
‘আর কিছু? তোর লেকচার শেষ?’
‘লেকচারের কি দেখেছো তুমি? আমি যদি লেকচার শুরু করি তাহলে তো দিন পেরিয়ে রাত হয়ে যাবে। লেকচারই শেষ হবেনা। ‘
মায়রা আর না পেরে বললো,
‘মেয়ে তুমি থামবে?’
মেহেভীন আনমনে হেঁসে ‘এক সেকেন্ড ওয়েট করো। আমি আসছি। ‘ কথাটি বলে উপরের সিড়ি বেয়ে, নিজের ঘরের দিকে যায়। মেহেভীন ঘরে গিয়ে, একটি খাম বের করে খুলে দেখে,তাতে অভ্রের দেওয়া ডিভোর্স পেপারটা। চোখ থেকে আবারো দুফোটা চোখের জল বেড়িয়ে গেলো। ডিভোর্স পেপারটা দেখলেই শুধু তার কান্না পায়। এই কান্না যে বড্ড কষ্টের কান্না।
মেহেভীন নিজেকে শক্ত করলো। নিজের সন্তানের জন্যে হলেও তাকে শক্ত হতে হবে। তার মনে শুধু একটাই চিন্তা, তার সন্তানকে একটি সুন্দর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেওয়া। তার জন্যে মেহেভীন অভ্র নামক মানুষটিকেও নিজের মন থেকে দূরে সরিয়ে দিবে। অনেক দূরে। মেহেভীন জানে এই বাড়িতে থাকলে, খালা কিংবা অভ্র কেউ তার সন্তানকে বাঁচতে দিবে না। তাই অনেকটা কঠোরতার সাথেই, মেহেভীন একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো। আজ অভ্রের বিয়ের দিনেই, সে অভ্রকে ডিভোর্স দিয়ে, অনেক দূরে চলে যাবে। মেহেভীন নামক রমনী আবারো কেঁদে উঠে, কিন্তু নিজেকে সামলিয়ে নেয়। বড় বড় পা ফেলে অভ্রের ঘরের দিকে যায়।
অভ্র এবং মায়রা এখনো ঘরে দাঁড়িয়ে আছে। মেহেভীন ঘরে ঢুকে, টেবিলটায় ডিভোর্স পেপারটা রাখে। তারপর কলম বের করে নেয়। মেহেভীনের এই মুহুর্তে ঠিক কি করতে চাইছে, তা মায়রা এবং অভ্র উভয়ের কাছেই স্পষ্ট। মায়রা তো অনেক খুশি। অভ্র নির্বিকার ভাবে তাঁকিয়ে থাকে, মেহেভীন নামক রমনীর দিকে। মুখশ্রীতে আজ অঢেলা মায়া যেন উপছে পড়ছে। অন্যরকম মায়া।যা এতোদিন অভ্রের নজরে না আসলেও আজকে ঠিকই এসেছে।
হয়তো কান্না করার ফলে এতো মায়া এসেছে মেহেভীনের মুখশ্রীতে। মেয়েরা কাঁদলে তাদের মুখে আশ্চর্য মায়া চলে আসে। যেই মায়াকে উপেক্ষা করা বড় কষ্টসাধ্য।
অভ্র কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে সেই মুখশ্রীতে। মেহেভীন জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস নিয়ে, নিজের চোয়ালটা শক্ত করে অভ্রের দিকে তাকায়। সেই চাহনীতে ছিলো, একরাশ ঘৃণা। অদ্ভদভাবে এই চোখে অভ্র শুধু এক মুঠো ভালেবাসা দেখতে পেতো। আজ শুধুই ঘৃণা দেখতে পাচ্ছে।
মেহেভীন অভ্র নামক প্রতারকের দিকে তাকিয়ে নির্দ্বিধায়, ডিভোর্স পেপারটায় সাইন করে দিলো। সমাপ্ত করে দিলো, এক মিথ্যে বিয়ে ও ভালোবাসার অধ্যায়। মেহেভীন ডিভোর্স পেপারটা অভ্রের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,
‘তোমার বিয়ের উপহার টা। আজকে তোমাকে আমি
আমাদের মিথ্যে বিয়ের বন্ধন থেকে ছিন্ন করে দিলাম। আশা করি এর থেকে বড় উপহার আর হতে পারে না।’
অভ্র নামক যুবকটি চমকায়। এতো সহজেই তাদের ডিভোর্সটা হয়ে গেলো।
তখনি অভ্রদের বন্ধুরা এসে বলে,
‘কিরে অভ্র আর কতক্ষন? বিয়ে তো একটু পরেই শুরু হবে।
আরে মায়রা ও আছে। এখন হবে আসল মজা। বর এবং বউকে নিয়ে আমরা একসাথে বিয়ের সেন্টারে ঢুকবো। বেশ মজাদার এবং অন্যরকম হবে ব্যাপারটা।’
মায়রা মুচকি হেঁসে, অভ্রের হাত ধরে বলে,
‘চলো অভ্র। এখন তো আমাদের নতুন জীবন শুরু করার পালা। আমাদের সব পথের কাটা তো উপড়েই গেলো। এইবার আমরা আমাদের জীবনে অন্য কাউকে প্রবেশ করতে পারবে না। ‘
মায়রার প্রতিটা কথাই যেন মেহেভীনকে উদ্দেশ্য করে বলা। তা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে রমনী। সেও এইবার কটাক্ষতার সুরে বলে উঠলো,
‘জানো এইসব কথাতে আমার এখন কোন কষ্ট হবে না। কষ্ট পেতে পেতে এখন আর সামান্য কিছুতে কষ্ট পাই না।
তাই শুধু শুধু বলে লাভ নেই। যেই ভালোবাসা নিয়ে তোমার এতো গর্ব। সেই ভালোবাসা আদোও টিকবে? ভালোবাসার রং বদলায়। আজ অভ্র তোমার। আজ অভ্র তোমাকে পাওয়ার জন্যে মরিয়া হয়ে উঠছে, কিন্ত দেখবে এই অভ্রই কাল অন্য কাউকে পাওয়ার জন্যে মরিয়া হয়ে যাবে।
দেখবে যেই অভ্র আজ তোমাকে নিজের কাছে রাখার জন্যে সবরকম চেস্টা করছে, দেখবে
এই অভ্রই তোমাকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্যে সবরকম প্রচেস্টা করবে। কেননা ভালোবাসা রং বদলায়।’
মায়রা থেমে যায়, মেহেভীন এইরকম কটাক্ষ বানীতে। মেহেভীন এইবার উদ্দেশ্য করে বলে,
‘অভ্র আহমেদ জীবন সাপ সিড়ি খেলার মতো। জীবনের কোন সিড়িতে এসে, আমরা থেমে যাবো হঠাৎ করে তা কেউ জানে না। আজ যেই ভালোবাসাকে পুঁজি করে তুমি আমাকে ঠকিয়েছো, একদিন সেই ভালোবাসাকে পাওয়ার জন্যে তুমি তীব্রভাবে ছটফট করবে। তখন হাজারো চেস্টা করলেও, ভালোবাসাটা পাবে না। তোমার জীবন সব থাকবে, কিন্তু ভালোবাসা নয়। ‘
মেহেভীন কথাটি অভ্রের সোজা বুকে গিয়ে লাগে। তার অদ্ভুদ এক কষ্ট উপলব্ধি হয়।
‘এই তোরা এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? বিয়ে তো শুরু করতে হবে। ‘
অভ্রের মা মিসেস ইশরা বেগম, কথাটি বলে হন্তদন্ত হয়ে রুমে প্রবেশ করেন। অতঃপর মেহেভীনকে দেখে অবাক হন। তারমানে মেহেভীন পালিয়ে যায়নি বরং
অভ্রের কাছে এসেছে৷ কোনভাবে কি মেহেভীন কী অভ্র কি কিছু বলে দিয়েছে? ইশরা বেগমের অবস্হা বুঝে,মেহেভীন অভ্রের বন্ধদের কাছে গিয়ে বলে,
‘আচ্ছা আপনারা এখনো দাঁড়িয়ে আছেন কেন? তাড়াতাড়ি বর এবং বউকে বিয়ের আসরে নিয়ে যান।আমিও কিন্তু এই বিয়েতে পার্টিসেপেট করবো হুহ। ‘
মেহেভীনের কথা শুনে, সবাই আরেকদফা চমকে উঠে। অভ্রের বন্ধুরা আর কিছু না বলে, মায়রা এবং অভ্রকে নিয়ে যায়। সবাই চলে যেতেই, মেহেভীন মিসেস ইশরার কানে কাছে গিয়ে বললো,
‘একদম চিন্তা করো না খালা। তোমার ছেলেকে আমি কিচ্ছুটি বলিনি৷ তোমার ছেলের মতো প্রতারকের কোন অধিকার নেই আমাদের সন্তানের কথা জানতে পাওয়ার। আমার সন্তান শুধু আমারই। সে আমার পরিচিতিতে বেঁচে উঠবে, কোন প্রতারকের পরিচিতিতে নয়। ‘,
‘দেখ মেহেভীন তুই কিন্তু নিজের সীমা লঙ্গন করছিস। ‘
মেহেভীন চারপাশে তাঁকিয়ে বলে,
‘আস্তে খালা। চিৎকার করো না। চিৎকার কিন্তু আমিও করতে পারি৷ তোমাকে একটা নিউজ দেই। নিউজটা শুনলে তুমি অনেক খুশি হবে। আমি তোমার ছেলেকে ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছি। এখন থেকে আমরা আর স্বামী -স্ত্রী নই। এতে আমার বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই। কেননা আমি যে ওই প্রতারকটাকে
নিজের জীবন থেকে দূরে সরাতে পেরেছি, এইটাই আমার সব থেকে বড় স্বার্থকতা। ‘
কথাটি বলে মেহেভীন বিয়ের আসরের দিকে চলে যায়। কাজি সাহেব ইতিমধ্যে সেখানে চলে এসেছেন।
তিনি প্যাপারসগুলো নিয়ে, প্রথমে অভ্র এবং মায়রাকে দিয়ে সাইন করিয়ে নেয়। মায়রা প্রথমে সাইন করে দেয়। অভ্রের সাইন করতে গিয়ে, তার এবং মেহেভীনের বিয়ের কথা মনে পড়ে যায়। অভ্র মেহেভীনের দিকে তাকায়। আচ্ছা মেয়েটা এইভাবে কি করে দাঁড়িয়ে আছে? আর কেউ না জানুক অভ্র জানে মেহেভীনের কষ্ট হচ্ছে, তবুও ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। অভ্র আর কিছু না ভেবে সাইন করে ফেলে।
অতঃপর কাজি সাহেব প্রথমে অভ্রকে কবুল বলতে বলেন। অভ্র কিছুক্ষন চুপ থাকে। মেহেভীনের কষ্ট হলেও, সে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। এই একটি মাত্র কবুলের মাধ্যমে সে এবং অভ্র বিয়ে নামক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলো। সেই বিয়ে অবশ্য এখন ভেঙ্গে গেছে। এখন আবারোও সেই কবুল শব্দের মাধ্যমেই অভ্র এবং মায়রা বিয়ের মাধ্যমে নতুন জীবন শুরু করবে। কথাগুলো ভাবতেই মেহেভীনের চোখ জলে ভরে উঠে। তবুও সে আজকে দাঁড়িয়েই থাকবে।
মেহেভীন খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে,তার দাঁড়িয়ে থাকার কারনে অভ্রের প্রচন্ড অস্বস্হি হচ্ছে।
তাইতো মেহেভীন দাঁড়িয়ে আছে।
অভ্র তার পাশে বসে থাকা মায়রার দিকে তাকায়। হ্যা এই মায়রাকেই অভ্র অনেক ভালোবাসে। যার পাশে অভ্রকে সবথেকে বেশি মানায়। মেহেভীন কখনো তার যোগ্য ছিলো না। অভ্র কবুল বলে ফেললো।
সবাই ‘আলহামদুলিল্লাহ ‘ বললো। মেহেভীন নিজের চোখে পাশে লেপ্টে থাকা জলটুকু মুছে, অভ্র এবং মায়রার কাছে গিয়ে বললো,
‘অভিনন্দন নব-দম্পত্তিকে। খুব সুখি হও তোমরা।
যদিও তোমাদের কপালে সুখ আছে কিনা, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। ‘
‘এই মেয়ে তুমি কি বলতে চাইছো?’
মায়রা ক্ষিপ্ত গলায় কথাগুলো বললো। মেহেভীন মুচকি হেঁসে বলে,
‘তা নয় সময়ের উপর ছেড়ে দেই। ঠিক আছি আসছি। ভালো থেকো সবাই।
আল্লাহ হাফেজ। ‘
কথাটি বলে একপ্রকার ছুটেই বেড়িয়ে গেলো মেহেভীন। মেহেভীনের কথার মানে বুঝতে অসুবিধা হলো না অভ্রের। তার মানে মেহেভীন চলে যাচ্ছে এই বাড়ি ছেড়ে। তাদের থেকে অনেকটা দূরে।
অভ্রের বুকটা ধক করে উঠে।
অভ্র উঠে দাঁড়িয়ে চলে যেতে নিলে,পিছন থেকে তার মা তার হাত ধরে বলে,
‘কোথায় যাচ্ছো তুমি? ‘
‘মা মেহু চলে যাচ্ছে। ‘
‘যাক। তোমাকে এতো ভাবতে হবে না। তুমি এখন মায়রাকে নিয়ে ভাবো। ‘
মায়ের কথায় অভ্র দমে গেলো।
_________
রাস্তায় এলোমেলো ভাবে হেঁটে যাচ্ছে মেহেভীন। কোথায় কার কাছে যাবে মেহেভীন জানে না। এই বিরাট ঢাকা শহরে তার তো কেউ নেই। মেহেভীন শুধু এইটাই জানে তাকে অনেক দূরে যেতে হবে। অভ্রের থেকে অনেক দূরে। যেখানে মেহেভীন এবং তার সন্তান ভালো থাকবে। সকাল থেকে কিছু না খাওয়ার জন্যে, মেহেভীনের শরীরটা প্রচন্ড দূর্বল। ঠিক মতো হাটতেও পারছে না। মাথা ঘুড়াচ্ছে। সামনে একটি বিশাল গাড়ি মেহেভীনের দিকেই এগিয়ে আসছে। গাড়িটা একটু আগালেই হয়তো মেহেভীনকে ধাক্কা দিয়ে চলে যাবে। রাস্তার লোকেরা গাড়ির সামনে থেকে মেহেভীনকে সরে যেতে বলছে,কিন্তু মেহেভীন পারছে না। হাটার শক্তিটুকুও সে পাচ্ছে না। তাহলে কী এখানেই শেষ হয়ে যাবে তার এবং তার সন্তানের জীবনের অধ্যায়?
মেহেভীন কী সঠিক সিদ্ধান্ত নিলো?
চলবে।।