#তোমার_আসক্তিতে_আমি_আসক্ত
#নুশা_আহমেদ
#পর্ব_৪
ড্রইং রুমটা ঘুটঘুটে অন্ধকারে ডুবে আছে । এটাই পালানোর সঠিক সময় কেউ দেখবে না । যা ভাবা তাই কাজ রুম থেকে বেরিয়ে মেন দরজা খুলতে যাবো ঘড়ির ঘন্টার কাটাটা বেজে উঠলো মানে চারটা বাজতে শুরু করে দিছে, আর সময় নষ্ট না করে ধীরে ধীরে রুম থেকে বাহিরে বেরিয়ে আসলাম, দরজাটা অটু লক কথা তাই বন্ধ হয়ে গেছে ভিতর থেকে । রুম থেকে বের হয়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে লাগলাম জানিটা আমি এখন কয় তালায় আছি যেহেতু আমি তাদের জিজ্ঞেস করিনি আর আসার সময় দেখিনি আর যেটুকু সময় এই বাসায় ছিলাম দেখিওনি। দু’তালা নেমেই দেখলাম নিচে থেকে শেষ দেখা যাচ্ছে মানে সাদিয়ারা তিন তালায় থাকে। নিচে নেমে দেখি মেইন গেটে দারোয়ান বসে আছে হাতে লাঠি নিয়ে এখন কিভাবে বের হবো , উনার সামনে দিয়ে তো আমি কোনো ভাবেই যেতে পারবো না কারন উনি তো আমায় চিনে না দেখেনি কখনো উনার সামনে গেলে বেপার টা বেশ ঘাপলা হয়ে যাবে প্রশ্নের মুখে পরতে হবে কি করা যায় কোনো ভাবেই তো এখন থেকে বের হতে পারবো না । আমি কি এই চালাকি করে পালানো টা ভুল করলাম। এসব ভাবতে ভাবতেই দেখি দারোয়ানের মোবাইলটা বাজতেছে, মোবাইলের শব্দে আমার মোবাইলের কথাও মনে পরলো সাইলেন্ট করা দরকার কোনো শব্দ হলেই বড়সড় একটা ক্যালংকারি হয়ে যাবে। সামনে তাকিয়ে আমি অবাক উনি গেট থেকে কোথায় যেনো যাচ্ছে এই সুযোগ এখান থেকে বের হওয়ার আমিও আর দেরি না করে বের হয়ে গেলাম। শীত বাহিরে প্রচুর পরিমানের শীত, শরীরে থ্রী-পিছ, বোরকা আর মরিয়মের দেওয়া চাদর ছাড়া আর কোনো কিছুই সম্বল নেই৷। শীতে সারা শরীর ঠান্ডা বরফ হয়ে যাচ্ছে শ্বাস নেওয়া কষ্ট হয়ে যাচ্ছে কোনো রকম শরীর টাকে ডেকেই হাটতে লাগলাম রাস্তা দিয়ে কেউ নাই রাস্তায় কোনো কুকুরও নাই সব শীতের কারনে যার যার আস্তানায় আরাম করে ঘুমাচ্ছে, এক হিসেবে এই শীত হয়ে ভালোই হইছে রাস্তায় কোনো মানুষ জন নাই কেউ ডিস্টার্বও করবেনা আমার এই প্রথম সিলেট শহর আসা কোথায় যাবো নিজেও জানি না জিবনটা কেমন হয়ে গেলো দুই দিনে নিজেও জানি না সব কিছু তো ভালোই ছিলো এসব ভাবছি তখনই দেখি সামনে থেকে একটা গাড়ির লাইট দেখা যাচ্ছে মানে গাড়িটা এদিকেই আসছে তাড়াতাড়ি লোকাতে হবে । তা না হলে তারা দেখে ফেললে সমস্যা । আশে পাশে তাকিয়ে দেখি লুকানোর মতো কিছু আছে নাকি রাস্তায় পাশেই একটা গাছ ছিলো দৌড়ে গিয়ে গাছটার পিছনে গিযে লুকিয়ে গেলাম । আর দেখতে লাগলাম কিসের গাড়ি এটা সেনাবাহিনীদের গাড়ি পাহারা দিচ্ছে হয়তো এটা তো একেবারে সেনাবাহিনীদের এরিয়াই । গাড়িটা যাওয়ার পর রাস্তায় এসে আবার হাটতে লাগলাম কোথায় যাবো এখনোও জানি না দিনের আলো ফোঁটার আশায় আছি এখন যতোটুকু হাটা যায় আরকি, হাঁটতে হাঁটতে কানে যেন ধুপ ধুপ করে সুক্ষ্ম হাটার আওয়াজ আসছে, মনে হচ্ছে আমার পিছনে কেউ আছে। এক মিনিট মনে হচ্ছে কেউ আমার পিছনে আমাকে ফলো করে নিরিবিলি পায়ে সর্তক ভাবে হাঁটছে হটাৎ করেই ভুতের কথা মাথায় চলে আসলো এমনি তে ভয় না পেলেও এখন প্রচুর পরিমাণের ভয় হচ্ছে একা রাস্তায় কোনো ভুত যদি আমাকে ধরে তাহলে তো আমি শেষে আয়াতুল কুরসি পরছি আর মনে মনে সাহস জোগাচ্ছি পিছনে তাকানোর অবশেষে সাহস নিয়ে তারাতাড়ি করে পিছনে তাকিয়ে গেলাম ওমা কেউ নাই আর সেই সাথে হাটার সুক্ষ্ম শব্দ টাও নাই আমি কি ভুল শুনলাম নাকি । রাস্তার পাশে সোডিয়ামের আলো আছে তারপরও কুয়াশার কারনে বেশি দূর দেখা যায় না। মনের ভুল ভেবে আবার সামনে তাকিয়ে হাঁটতে লাগলাম, কিছুদূর হাঁটার পর আবারও সেই শব্দ কানে পেলাম এবার শব্দ টা খুব কাছে মনে হচ্ছে । উপরে সাহস নিয়ে থাকলেও ভিতরে আমার অবস্থা খুবই ভয়াবহ । আবারও মনে সাহস নিয়ে পিছনে সারা শরীর নিয়ে তাকাতে যাবো তার আগেই কেউ একজন আমাকে জাপ্টে ধরলো আমি তার সাথে প্রান পণে চেষ্টা চালাচ্ছি ছোটার জন্য কিন্তু আমি এক চুলও সরতে পারি নাই লোকটা কোনো ছেলে তার হাতের ছোঁয়াই বলে দিচ্ছে । অনেক ঝাঁপটা ঝাপটির মাঝেই আমার নাকের কাছে কোনো কিছু একটা সুগন্ধি কিছু ধরলো আর আমি ঐ লোকটির কোলে নেতিয়ে পরলাম, কিছুই দেখিনি আমি কে ধরলো আমায় তাকেও দেখিনি পিছন থেকে আক্রমণ করেছে ।
চোখের উপর পানি পড়ায় আস্তে আস্তে তাকিয়ে দেখি গতকালকের মতো আজকেও মাথার উপর স্থির ফ্যান । কিন্তু গতকালের রুমের সাথে এই রুম অনেকটাই অন্য রকম বড় বড় লাগছে, মনে হচ্ছে আমার নিচে তুলতুলে নরম কিছু যার উপর আমি শুয়ে আছে আর উপরে ব্লাংকেট। হঠাৎ পাশে তাকিয়ে ভুত দেখার মতো চমকে উঠে চিৎকার দিয়ে শোয়া থেকে উঠে বিছানার এক কোনায় ঘাপটি মেরে বসে পরলাম কারন সামনে আমার দিকেই কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে সায়ান ভাইয়া। তার চোখে কিছুই নাই না রাগ দেখা যাচ্ছে যা ভালোবাসা কেমন অদ্ভুত ভাবো যেনো তাকিয়ে আছে বিছানার কাছেই চেয়ারে বসা ছিলো এতোক্ষণ । কিছুক্ষণ চুপ থেকে বসা থেকে উঠে আমার দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বললো,
-কি এমন লাভ হলো এমন ঘুরাঘুরি করে। নিজেও দৌড়াইলা আর আমাকেও তোমার পিছনে দৌড়াইলা, অবশ্য আমি তোমাকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই ধরতে পারতাম ইচ্ছে করেই ধরেনি দেখতে চেয়েছি তুমি কতো টুকু দৌড়াতে পারো । কিন্তু কি হলো সেই আমার কাছেই আসতে হলো তাই না।
সায়ানের এমন কথায় নুশার অবস্থা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে কারন এই শীতের মাঝেও নুশার নাক আর নাকের নিচে ঘেমে যাচ্ছে তা ভালো করেই বুঝতে পারছে সায়ান তাই নুশার দিকে আর আগানো বাদ দিয়ে একটু পিছনে এসে বিছানায় বসে হালকা হেসে বললো,
-ভয় পাচ্ছো কেনো এখন , পালানোর আগে বুঝা উচিত ছিলো না তোমার যে আমার থেকে লুকিয়ে থাকতে পারবে না।
সায়ানের এবারের কথায়ও কিছু বললো না নুশা , সে তো এখন ভাবছে সায়ান এখন কি করবে, মেরে টেরে দিবে নাকি যেমন শান্ত ভাবে কথা বলছে এতে তো আরো ভয়ংকর লাগছে সায়ন কে ।
নুশার কোনো রেসপন্স না পেয়ে এবার খানিকটা ধমকের সূরে বলে উঠলো,
-কথা বলছো না কেনো এখন , ইস্টুপিটের মতো এমন চুপ করে বসে আছো কেনো , আর আমি কি বলি ইস্টুপিটে মতো কি তুমি তো একটা ইস্টুপিটই । ভালো হলে তো আর সবাই কে বলে বেড়াতে না আমি মাফিয়া আমি খারাপ মানুষ উপরে ভালো হলেও ভিতর খারাপ (ভেঙ্গিয়ে ভেঙ্গিয়ে কথা গুলো বললো সায়ান)
সায়নের ভেঙ্গানোর কথা শুনে নুশার হাজার ভয়ের মাঝেই হাসি পাচ্ছে কিন্তু সে তো এখন সায়নের সামনে কোনোমতেই হাসতে পারবে না তাই চুপ করেই সায়ানের দিকে তাকিয়ে থেকে তার কথা শুনছে ।
হঠাৎ করেই সায়ন নুশার সামনে ঝুকে গিয়ে বললো,
-কি এমন করেছি যে তুমি আমাকে মাফিয়া বলে ডাকছো আর এই মাফিয়া নামে সবাই কে চেনাচ্ছো, তুমি মাফিয়া যে কি তা জানো,? মাফিয়ারা খুন খারাপি করে আমাকে কি কোনো দিন দেখছো কাউকে খুন করতে। বলো চুপ করে আছো কেনো এখন ,,,,?
সায়ান নুশার এতোটাই কাছে মুখটা নিয়েছে যে সায়ান কথা বলার সময় নুশার সারা শরীর কেপে কেপে উঠছিলো যতোই তারা রিলেটিভ হোক এতোটা কাছে কখনো আসা হয়নি ছোট বেলা থেকেই নুশা কোনো কারন ছাড়াই ভয় পেতো সায়ান কে । সায়ান নুশার সাথে মিশতে চাইলেও নুশা সব সময় সায়নের কাছ থেকে দূরত্ব নিয়ে থেকেছে । আজ হঠাৎ এতো কাছে নুশা সায়ান কে নিতে পারছে না তার হার্ট বিট খুব দ্রুত হয়ে যাচ্ছে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে, দু’জনই দুই জনের দিকে তাকিয়ে আছে দুই জনের শ্বাস দুই জনের উপর গিয়ে পরছে । নুশা আর নিতে পারছে না তাই সায়ের বুকের কাছে হাত দিয়ে ঠেলে সামনে থেকে সরিয়ে দিলো সায়ান কে আর রাগী কন্ঠে চিৎকার করে বললো,
-একদম কাছে আসবা না ভাইয়া , তোমাকে আমার একদম সয্য হয় না। তুমি কি বললে আমি মাফিয়া চিনি নাকি হ্যাঁ আমি তোমাকে চিনি তুমি একটা মাফিয়া ।
সায়ানও এবার নিজের রাগ কন্ট্রোল না করতে পেরে চিল্লাইয়া বলে উঠলো,
-কয়টা খুন করছি আমি হে বলো কয়টা খুন করছি কার সাথে কখন গুন্ডামী করছি যে তুমি আমাকে একেবারে মাফিয়া ডাক্তার বানিয়ে দিলে কোনো প্রমান আছে আমি যে মাফিয়া । আরে যেখানে আমি ডাক্তারি পড়া পড়তে পড়তে শেষ ভালো করে ঘুমাতেও পারতাম না সেখানে আসি মাফিয়া হয়ে গেলাম কেমনে , মাফিয়া কি দুই এক দিনে হয়ে যায় নাকি । তুমি একবছর যাবৎ আমাকে এই মাফিয়া উপাধি টা দিয়ে যাচ্ছো এতো দিন কিছু বলি নাই আজ বলো আর প্রমান দেও আমি কোন দিক দিয়ে মাফিয়া । কি হলো দেও প্রমান এক মিনিট, তোমার কাছে প্রমান আছে তো যে আমি মাফিয়া ,,?
চলবে_?
গল্প লেখার মুড টাই নষ্ট হয়ে গেছে আমি মানি আমার একটা ভুল হইছে যে বয়স টা ঠিক করে লেখতে পারি নাই কিন্তু মাফিয়া প্লাস ডাক্তার বলছি বলে সস্তা গল্প হয়ে গেলো আরে ভাই প্রথম একটু পরেই সস্তা বলে দেন পুরা টুকু পরে পরে দেখতেন কেমন হয়। আমি জানি আমার লেখা খারাপ তেমন একটা গুছিয়ে লেখতে পারি না বানান ভুল হয় তাই বলে কি এটুকু মাথায় থাকবে না যে ডাক্তার মাফিয়া হবে কেমনে৷ আমি চেয়েছিলাম গল্পটা শুরু দিয়ে অন্য দের মতো করে লেখলেও শেষ দিয়ে অন্য রকম কিছু দিবো আয়ান মাফিয়া না এটা আরো পরে প্রকাশ করতাম কিন্তু কিছু মানুষের জন্য আর পারলাম না গল্পটাই বদলে গেছে। গল্প শেষ না করেই মন ভাঙ্গার মতো কমেন্ট করেন। নতুন গল্প লেখছি কই একটু শিখিয়ে দিবেন তা না করে বলছেন মা বাবা কে ভয় না পেয়ে মামাতো খালাতো ভাই কে ভয় পায় ডাক্তার মাফিয়া কেমনে হয় আরো কতো কিছু৷ কই উৎসাহ দিবেন তা না করে মন ভেঙ্গে দিচ্ছেন । শুনেন শুরুতে ভুল হতেই পারে তাই বলে এভাবে বলবেন না৷ প্লিজ খারাপ লাগে। আমার কথায় যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত না বলে পারলাম না কথা গুলো আমারও খারাপ লাগে এমন কমেন্ট দেখলে। পারলে উৎসাহ দিবেন আর না পারলে গল্প টা ইগনোর করবেন ।