#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#part:4
#Suraiya
আরিশ আরুকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরল…..
ঘরে এসি চলা সত্বেও আরু দর দর করে ঘামছে, গলা যেন ক্রমশ শুকিয়ে আসছে৷ এত রাতে নিজের বাড়িতে থেকেও আরিশের বিরুদ্ধে কোন স্টেপ নিতে পারছেনা আরু ৷
আরিশ: আমি চলে গেলে কি তোমার প্রেমিক অভ্র কে ডাকবে না কী?
আরুশি : আপনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে, আপনি এসব কি যা তা বলছেন নির্লজ্জের মতো! একের পর এক ভুল অভিযোগ করছেন আমার উপরে৷
আরিস: ওহ রিয়েলি ! তাহলে শপিংমলে ও যখন শরকম নোংরামো করতে যাচ্ছিল তুমি তখন প্রটেস্ট করলে না কেন ? আমি যদি ওখানে না থাকতাম তাহলে তো বেশ ভালই হতো তাইনা?
আরিসের চোখ দুটো লাল হয়ে রয়েছে আর আরু ভয়ে গুটিসুটি হয়ে গেছে…..সত্যিই তো আরিশকে ও না দেখলে অভ্রকে ধাক্কা মারার সাহস পেত না তখন কি হতো?
আরু: তারমানে ওটা আপনি ছিলেন?(তোতলাতে তোতলাতে)
আরিস : কেন আমি না থাকলে খুশি হতে বুঝি!
আরুশির গাল দুটো চেপে ধরে বলল : দ্বিতীয় বার যদি ওকে তোমাকে স্পর্শ করতে দেখেছি তো প্রথমে ওকে নয় আগে তোমাকে শেষ করবো আমি এটা মনে রেখো ৷
আরিশ ওর মুখ চেপে ধরায় আরুশি কোন কথা বলতে পারছেনা ৷
আরিশ আরুশিকে ছেড়ে দিতেই আরূ বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে ৷ আরুশি মুখের যে অংশে আরিশ চেপে ধরেছে সেই জায়গায় আঙ্গুলের ছাপ বসে গেছে , লাল হয়ে রক্তবর্ণ ধারণ করেছে জায়গাটা…
আরুশি : (জোরে শ্বাস নিয়ে )আপনি প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন , আর আমাকে একটু সুখে শান্তিতে থাকতে দিন ৷
আরূশির কথা শুনে আরিশ হো হো করে হেসে উঠলো তারপর বলল : শান্তি তাই না ! যদি আমি তোমাকে না পাই তাহলে শান্তি কেন শান্তির বাপ মা ও তোমার পাশে আসবে না এটা মনে রেখো ৷
আরু চুপ করে আছে আরিশের কাছ থেকে পজেটিভ কিছু শোনার আশায়,কিন্তু তা আর হচ্ছে কই ! বিভিন্ন সময় আরিশ বিভিন্ন রকম ব্যবহার করছে,তাই আসলে আরিশ কি চাইছে তা বোঝা মুশকিল….
আরিশ নরম কন্ঠে বলল: সরি আরুপাখি, এতো রাতে তোমার ঘুমের ডিস্টার্ব করার জন্য ৷ কিন্তু কি আর করবো বলো , তোমার ওই প্রেমিক তোমাকে স্পর্শ করছিল আর আমি কি করে তা সহ্য করি বল? তাই তোমাকে দেখতে চলে এলাম আর একটু সাবধান করে দিলাম ৷ তাছাড়া কালকে তো আমাদের গায়ে হলুদ তাই রেডি থেকো আরুপাখি ৷
আরু : আমাদের গায়ে হলুদ মানে !
আরিশ : আমাদের মানে বুঝলে না? আমাদের মানে আমার আর তোমার || বিয়েটা তো অনেক আগে থৈকেই হয়ে আছে , আর কালকে হলুদ হবে….
আরূশি:দেখুন আপনি এসমস্ত পাগলামি বন্ধ করুন৷
আরিশ : চিন্তা করো না,আগে বিয়েটা বিয়েটা করি তারপর সব পাগলামি বন্ধ করে দেবো , শুধু তুমি দেখতে থাকো কি কি করি ৷ আর হ্যাঁ বলে রাখি কালকে হলুদের জন্য আমি তোমাকে যেই শাড়িটা পাঠাবো সেই শাড়িটাই তুমি পরবে , যদি অন্য শাড়ি পরতে দেখেছি তো আমি আবার নতুন করে পরিয়ে দেবো আরূপাখি চিন্তা করোনা ৷আমি কিন্তু বেশ ভালো শাড়ি পরাতে পারি ৷ (চোখ মেরে )
আরিশ :আচ্ছা বউ এখন আসি, অনেক রাত হয়েছে তুমি ঘুমাও ৷ আমার সাথে বিয়ের পর এমনিতেও ঘুমাতে পারবে কি তার গ্যারান্টি আমি দিতে পারছিনা৷বলে আরিশ ব্যালকনির দিকে এগিয়ে যেতেই আরু অবাক হয়ে গেল ৷
আরু আর না বলে থাকতে পারলো না : আপনি ওদিকে কোথায় যাচ্ছেন ?
আরিশ : কেন যেখান দিয়ে এসেছি সেখান দিয়েই যাচ্ছি ৷
আরুশি : আপনি তার মানে ……অবাক হয়ে ৷
আরিশ: হ্যাঁ ঠিকই ভেবেছো, পাইপ দিয়ে উঠেছি, আরে ভালোবাসায় সমস্ত কিছু যায়েজ ৷ আরুশির দিকে চোখ মেরে ৷
আরিশ ব্যালকনির দিকে গিয়ে আবার ফিরে এসে আরুশির কাছে এসে হালকা করে একটা কিস করে চলে যেতেই আরুশি যেন হাফ ছেড়ে বাচল, তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না , আরিশ আবার এসে ডিপলি কিস করে চলে গেল ,যাওয়ার আগে জোরে একটা কামড় ও দিয়েছে ৷
আরিশ : কালকের জন্য রেডি থেকো বউ…
আরিশ চলে যেতেই আরু বিছানায় বসে কাঁদতে লাগল ৷
আরুশি: আমার সঙ্গে ওনার কোন জনমের শত্রুতা যে উনি আমার সাথে এরকম করছেন , আর আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি?
তখনই ওর ফোনে ফোন আসতেই আরিশের কলটা না চাইতেও ধরল আরুশি ৷
আরিস: তোমার কি দোশ সেটা পরে জানতে পারবে আরুপাখি , এখন একদম কাঁদবে না, আর একবার যদি দেখেছে তুমি কেঁদেছো তাহলে আবার কিন্তু আমি তোমার কাছে চলে যাবো ৷
আরুশি: আপনি জানলেন কি করে আমি কাঁদছি?(নাক টেনে) ৷
আরিশ : সেটা যখন তুমি জানো না তো এখন আর জানার চেষ্টাও করো না ৷
আরূশি রূমের চারিপাশটা একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে দেখতে লাগল যে সিসিটিভি জাতীয় কিছু আছে কি না , কিন্তু কোথাও কিছু দেখতে পেল না ৷
আরিশ : ভুলেও কিছু বোঝার চেষ্টা করো না, যেটুকু জানো সেটুকুতেই খুশি থাকো ৷আর তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো,এক মিনিটের মধ্যে ৷ তোমাকে যেন আর জেগে থাকতে না দেখি ৷
আরুশি ভয়ে ভয়ে ফোনটা কেটে ঘুমিয়ে পড়ল ৷
পরের দিন,,,,,,
সেদিন সারারাত আরুশি ঘুমাতে পারেনি ৷ কোন একটা অজানা ভয় কাজ করছিল ওর ৷ তাহলে কি যা যা বলেছে সত্যিই কি তাই করে দেখাবে….
আরুশি মনমরা হয়ে বসে আছে কারন কিছুখন আগে আহানের ফোন এসেছিল,
আহান: সরি রে আরূ আজকে আমি থাকতে পারছি না তোর হলুদে ৷
আরু: কেন ভাইয়া তোর আবার কি হলো?
আহান: আর বলিস না, আসলে একটা এমারজেনসি অপারেশন আছে ৷
আরু: দেরি হলেও তুই আসতে পারবি না?
আহান: আমি চেষ্টা করব ৷ তাও হয়তো হবে না ৷
আচ্ছা বাবা তোকে আর কিছু বলেছে?
আরু:নাহ!আর কিছূ বলেনি,তবে আমি বাড়ি থেকে চলে গেলে উনি খুশি হবেন তা আমি জানি৷ (দীর্ঘশ্বাস নিয়ে )
আহান: মন খারাপ করিস না তোর ভাইয়া তোর পাশে সবসময় থাকবে ৷
আরু এবার কেদেই ফেলল আহনের কথা শুনে ৷
আহান:একদম কাদবি না,আমি তাড়াতাড়ি ফেরার চেষ্টা করব ৷
আরূ: আচ্ছা ৷
মনমরা হয়েই বসে আছে ছাদে,বাড়িতে মেহেমানরা সবাই আসতে শুরু করেছে, এত লোকের ভিড়ে আরুর যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে ৷ সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো তাও অভ্রর থেকে কোন ফোন আসেনি এখন ৷ আরূ অনেক ভেবেছিল যে অভ্রকে কালকে রাতের সব কথা জানাবে , কিন্তু সে সুযোগ এখনও হয়নি ৷
মাঝে মাঝে সকলের মাঝে নাজেকে তুচ্ছ বলে মনৈ করে আরু নিজেকে ৷
বাবা ও তাকে আর আগের মতো ভালোবাসেনা,সবসময় কথা শোনাতে থাকেন ৷ বিগত কয়েক বছরের এই ঘটনা গুলোর সাথে খুব ভালোভাবেই পরিচিত আরূ ৷
কারন টা ওর খুব জানতে ইচ্ছা করে যে উনি আরূর সাথে কেন এরকম ব্যবহার করেন ৷ আহান ওকে খুবই ভালোবাসে , কখনো দুঃখ পেতে দেইনি ৷
এসব কিছূ ভাবতে ভাবতেই সানার ফোন আসতেই মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে ফোন টা ধরল ৷
আরূ কিছু বলার আগেই সানা বলতে লাগল
সানা : তোর রিঙ সাইজ কত?
আরু:কেন বলতো?
সানা : আরে বলনা ৷
আরু :7.5 cm,বাট তুই এসব আমাকে কেন এসব জিজ্ঞাসা করছিস?
সানা : আরে বলিস না ,আজকে জানতে পারলাম যে ভাইয়ার নাকি একটা গার্লফ্রেন্ড আছে, তো তার জন্য রিং কিনবে,আর আজকেই নাকি তাকে দিতে হবে তাই জন্য ৷ আর তার আঙ্গুলের মাপ জানেনা,আর সে অনেকটা তোর মত তাই তোর কাছ থেকেই জানতে চাইছি,আর মাপটা নিতে বললো ৷
সানার কথা শুনে আরু চমকে গেল তার কারণ আরিশ ওকেই কি বুঝিয়েছে নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে…
আরূ: ওহহ৷
সানা : আচ্ছা রাখছি পরে কথা হবে ,আসছি জানু ৷
আরু:তাড়াতাড়ি আসিস আর তিথিকেও ও তাড়াতাড়ি আসতে বলিস ৷
সানা :ওকে বাবু ৷
_______
আরিশ: কি বলল তোর ফ্রেন্ড?
সানা : তুই যা আন্দাজটা করেছিলি সেটাই ঠিক৷
আরিশ: ঠিক তো হবেই৷
সানা :ভাইয়া তুই কি করে জানলি ওর আঙুলের সঠিক মাপ ?
আরিশ: সে তুই বুঝবি না….
চলবে,,,,,
আজকে এটুকুই লিখলাম ৷ সমস্যায় আছি ,তাই ছোট হয়ে গেছে লেখাটা ৷ পরশু থেকে বড়ো করে লিখব ইনশাআল্লাহ ☺৷