দৃষ্টিকোণ
শেষ পর্ব – ৩
রাইটার আদিল_খান
।
।
মিম সোহানকে তার রুমে ডেকে নিয়ে আসে।
।
সোহান মনে মনে ভাবে,,,
এটাই তো আমি চাই।
।
মিম সোহানকে তার রুমে নিয়ে এসে
কিছুক্ষণ দাড়িয়ে থাকার পর নিজের বুকের থেকে উরনা সরিয়ে নিয়ে বললো।
।
নিন,,,,, আমাকে ভোগ করেই যদি আপনি সুখ পান।
তাহলে করুন আপনার যা মন চায়।
আপনি তো আমার জন্য এখন আপুর সাথেও খারাপ ব্যাবহার করছে।
নিন শুরু করুন।
।
সোহান নিরব হয়ে দাড়িয়ে আছে।
।
সোহানের দাড়িয়ে থাকার পর মিম বলল
কি হলো…?
এখন দাড়িয়ে আছেন কেন?
।
এমনি
।
মিম আবার বলতে শুরু করলো,,,,
আপনি কি ভাবছেন আমি টাকার জন্য এসব করতে রাজি হচ্ছি??
নাহ
টাকার জন্য নাহ।
।
মিমের মুখে কথাটা শুনে একটু অবাক হয় সোহান,,,
তহলে কি মিম সব জেনে গেছে??
আমার সব প্লান তাহলে মাটি??
।
কি হলো,,, দাড়িয়ে আছেন কেন?
টাকার জন্য হোক আর যে জন্যই হোক,,,
আমিতো এখন রাজি,,,
।
তাহলে তুমি এসবে রাজি হলে কেন??
।
সেটা জেনে আপনি কি করবেন?
।
বল শুনি
।
আপুর জন্য
।
কিহ!!!
।
হুমমম,,,
আপনি যখন আপুকে গালাগালি করতেছিলেন তখন খুব খারাপ লাগতেছিলো আমার।
কারণ আমি জানতাম আপনার গালাগালি করার কারণ কি।
তাই রাজি হয়ে গেলাম।
কারণ আমি চাই না,,,,
আমার জন্য আমার অসুস্থ আপুটা কষ্ট পাক।
আপনাকে একটা কথা বলবো?
।
হুমমম বলো
।
আজকের পর থেকে আর কোন মেয়ের দিকে তাকাবেন না প্লিজ।
কারণ আপু আপনাকে অনেক ভালোবাসে।
আপনাকে আপু একটা ফেরেস্তা ভাবে।
ওর বিশ্বাস টা ভাঙ্গিয়েন না।
আর…..আমি.?
(কথা গুলো বলতে বলতে চোখ মুছে নিলো মিম)
।
আর…তুমি?
।
আমি আপনাকে নিজের বড় ভাই ভাবতাম,,,,
জানেনে আমার কোন বান্ধবী যদি বলতো আপনি আমার কে হন,,, তাহলে বলতাম বড় ভাই।
।
*নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”*
সোহান কথাটা শুনে কিছুক্ষণ নিরব থাকার পর,
মাটি থেকে মিমের উরনা টা তুলে ওর বুকে দিয়ে বললো,,,
“সরি”
।
সরি কেন?
(অবাক হয়ে)
।
ধন্যবাদ
।
কি হলো আপনার,,, একবার সরি,, একবার ধন্যবাদ।
সরি কিসের জন্য আর ধন্যবাদ কিসের জন্য
?
সরি এই জন্য যে তুমি আমার চোখ খুলে দিয়েছো।
আর ধন্যবাদ এই জন্য তুৃমি আয়শাকে আবার নতুন করে চিনতে সাহায্য করেছো।
।
ওহহহ
।
হুমমম,,,, আমি তোমাকে একটা কথা বলবো?
।
একটু অবাক হয়ে মিম বলল
হুমম বলেন
।
আমার রাজিবের সাথে কথা হয়েছে।
।
কিহ!!!
।
হুমমম,,, আজ অফিস থেকে আসার সময় ও এসে আমাকে ওর পরিচয় দিয়ে তোমার আর ওর ব্যাপারে সব বলেছে।
।
কিন্তু…..?
।
হুমমম,,,, আমি জানতাম তুমি কিছু প্রশ্ন করতে চাচ্ছো,,, যার প্রথমটা হলো,,,
আমি তোমাকে কেন এসব বলছি,,,,,,এই সময়।
।
মিম চুপ
।
সোহান আবার বলতে শুরু করলো,,,,
আমি যখন সোহানের সাথে কথা বলি তখন ও এসে বললো
ও আমার ছোট বোনকে ভালবাসে।
ছোট বোনের কথা শুনে আমি তো অবাক,,,
তারপর বললাম ছোট বোন মানে?
আমার তো কোন বোন নেই।
।
তারপর রাজিব বলল,,,
কেন মিম আপনার ছোট বোন না?
মিম তো সবসময় বলতো আপনি ওর বড় ভাই।
।
তখন ওর মুখে কথাটা শুনে একটু অবাক হই।
আর ভাবি,,
যে মেয়েকে আমি সব সময় খারাপ চোখে দেখি, সব সময় প্রেশারের মধ্যে রাখি,,, সেই মেয়ে আমাকে এতো সম্মান দেয়??
কিন্তু পরক্ষণেই সেটা ভুলে যাই,,,,
কারণ তখন তোমার নেশার ডুবে ছিলাম।
কিন্তু এখন যখন তুমি বললে,,
তুমি আমাকে নিজের ভাইয়ের মতো দেখো।
বিশ্বাস করো,,,
সেই নেশাটা আর কেন জানি কাজ করছে না। তুমি আমার দৃষ্টিকোন পরিবর্তন করে দিয়েছো।
আজ বুঝতে পারছি,,, শালি কখনো বোনের থেকে কম হয় না।
আমায় ক্ষমা করে দিও মিম।
(বলেই মিমির হাত ধরলো সোহান)
নাহ এটা কোন খারাপ উদ্যেশে নয়।
একজন ভাই যে মানসিকতায় তার বোনের হাত ধরে সেই মানসিকতায়।
।
ছিঃ এসব কি করছেন?
আমি না আপনার ছোট বোন?
।
হুৃমমমমমম
।
হুমমম
বলে মিম কান্না মিশ্রিত একটা হাসি দিলো।
সাথে সোহান ও
।
কিছুক্ষণ এভাবে চলে যাওয়ার পর সোহান বলল
আমি তো তোমার বড় ভাই তাই না?
।
হুমমমম,,,,,
।
তাহলে আমি যা বলবো তা শুনবে তো?
।
হুমম শুনবো বলেন।
।
কাল রাজিবকে ডাকবে আমাদের বাসায়।
।
কেন?
।
ভায়রা ভাইয়ের সাথে একটু কথা বলবো। একটু বারিয়ে দেখতে হবে না,,, হাজারো হলেও আমার শালিকার হবু বর
।
হুমমমম
,,,
(লজ্জায় মাথা নিচু করে)
।
হুমমম কি?
।
ডাকবো
কিন্তু রাজিব আপনার দেখা করে কি বলেছিলো?
।
কি আর বলবে বেচারা।
তার প্রেমিকা সবসময় মন খারাপ করে থাকতো।
কিন্তু কেন সেটা বলতো না।
প্রেমিকের তো টেনশন হবেই।
তাই জানতে চাইছিলো যে আমাদের ফেমিলিতে কিছু হয়েছে কি না।
।
ওওওও
।
যাও এখন ঘুমাও।
।
আচ্ছা,,, আপনি জান
।
জান?
।
আরে যাইতে বলছি
।
ওওও ওকে
শুভ রাত্রি
।
হুমমমম,,,, যান তো আমি ঘুমাবো।
।
সোহান চলে গেলো।
।
মিম দরজা লাগিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।
আজ মিমের নিজেকে খুব হালকা লাগছে।
বুক থেকে যেন খুব ভারি একটা পাথর সরে গেলো।
।
মিম মনে মনে ভাবছে,,,,
সোহান ভাইয়া আসলে অনেক ভাল মানুষ।
আপু সত্যিই অনেক লাকি।
কিন্তু আমার কপালে আল্লাহয় যে কি লিখেছে
সেটা উনিই ভালো জানেন।
।
এসব ভাবতেই রাজিবের কথা মনে পরে গেলো।
।
তাই মোবাইলটা হাতে নিয়ে
রাজিবকে কল দিলো মিম।
একবার রিং হতেই রিসিভ
।
হ্যালো(রাজিব)
।
সব সময় মোবাইল নিয়ে বসে থাকো নাকি?
।
হুমমম,,, কারো কলের জন্য ওয়েট করছো কোন দিন?
।
হয়েছে,,,,, আর ওয়েট করতে হবে না।
।
কেন?
।
তুমি দুলাভাইকে কি বলেছো?
।
কই কিছু না,,,, আর উনি নাকি তোমার ভাইয়া না?
।
কে বললো
।
উনি
।
কি জানি
।
কেমন আছো
।
ভালো নেই
।
কেন,,, কি হয়েছে?
।
ঝামেলা পাকিয়ে বলো কি হয়েছে?
।
মানে? আমি কি করলাম
।
কি করছো জানো না?
।
আজিব
।
হো আজিব,,,, তুমি ভাইয়ার সাথে দেখা করে সব বলে দিয়েছো কেন?
।
টেনশনে ছিলাম তাই,,,, আর বলেছি তো কি হয়েছে?
।
ঘোড়ার ডিম হয়েছে,,, এখন আমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিবে বললো।
।
কিহ!!!
।
জ্বি,,, এখন বসে বসে আঙ্গুল…..
*নতুন নতুন রোমান্টিক গল্প পেতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: “নিঃস্বার্থ ভালোবাসা”*
।
ওনার নাম্বার টা দাও
।
পারবো না
ওনি কাল বাসায় থাকবে,,, কোন ছেলে পক্ষ নাকি দেখতে আসবে তাই।
।
মানে?
।
মানে টানে বুঝি না,,,,,যদি ওনার সাথে দেখা করতে চাও তো কাল চলে এসো আমাদের বাসায়।
বলেই কলটা কেটে দিয়ে একটা মুসকি হাসি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো মিম।
।
রাজিবের কি আর ঘুম হয়…..?
।
পরের দিন সকালে মিম ঘুম থেকে উঠে ফরজের নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে পড়লো।
।
সকাল ৭ টার দিকে আবার ঘুম ভাঙ্গে ওর,,,
তারাতারি করে কিচেনে গিয়ে নাস্তা রেডি করছে ও।
এসন সময় মিম মিম বলে কারো ডাক শুনতে পেলো।
।
রুম থেকে বেরিয়ে দেখে রাজিব।
।
চোখ দুটো দেখে যে কেউ বুঝতে পারবে ব্যাডা সারা রাত ঘুমায় নি।
মনে হয় সিগারেট ও খাইছে।
।
এসব দেখে মিম মনে মনে ভাবতে লাগলো
।
এই ছেলেরা ছ্যাকা খাইলে সিগারেট খায়
কিন্তু কেন খায়?
শুধু মুখ দিয়ে ধোয়া ছাড়লেই কি কষ্ট কমে?
যদি কমে তাহলে শীত কালেও তো মুখ দিয়ে ধোয়া বের হয়।
তখন?
কি আজব।
।
মিম এসব ভেবে তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,,,
কি কি হয়ছে?
সকাল সকাল কেউ কাউকে এভাবে ডাক?
।
তোমার দুলাভাই না ভাইয়া কোথায় উনি,,, ডাকো
।
হো তোমার মতো বেকার তো সবাই,, কাজ কাম নাই,,, এতো সকালে ঘুম থেকে উঠবে।
উনি অফিস থেকে লান্ত হয়ে ফিরেছেন কাল,,, তাই আজ উঠতে একটু লেট হবে।
তুমি পারলে ঐ খানে(সোফার দিকে দেখিয়ে দিয়ে)
বসে ওয়েট করো না পারলে…..
।
না পারলে…?
।
চলে যাও,,,, সিম্পল
।
হহহ হায় রে মানুষ,,,, বির বরি করে কথাটা বলে সোফায় গিয়ে বসলো রাজিব।
।
কিছুক্ষণ পর,,, মিম এক কাপ চা আর একটা বিস্কুট নিয়ে এসে রাজিবকে দিয়ে বললো
হুমমম খেয়ে নাও,,,, সকাল থেকে কিছু খেয়েছো কিনা কে জানে।
।
কোন কথা না বলে চা আর বিস্কুট টা নিয়ে খেয়ে শুরু করলো রাজিব।
।
আর মিম সোহানের রুমে চলে গেলো।
।
গিয়ে দেখে সোহান ঘুম থেকে উঠেছে।
।
তাই বললো,,,, দুলাভাই রাজিব চলে এসেছে
।
কি!!! এতো সকালে?
।
হাহা হুমমম (সব খুলে বললো ওকে)
।
কি মেয়েরে বাবা,,, প্রেমিককে কেউ এতো কষ্ট দেয়?
যদি ফসকে যায়?
।
আরে যাবে না,,,, কত দিন আমার পিছনে ঘুরেছে জানেন?
আর বিয়ের আগে একটু বাজিয়ে দেখা ভালো।
কি বলেন?
।
হুমমমম,,,, বুদ্ধি আছে। হাহা
ও কোথায়?
।
সোফায়,,, চা খাচ্ছে
।
ওও চা টা তো ঠিকই দিয়েছো,,,, ওদিকের মায়া ঠিক ই আছে।।
।
আয়শা এসব শুনে মিটমিট করে হাসতেছে।
।
কি যে বলেন না আপনি,,,,
যান তো এখন,,,,
ও অনেকক্ষণ হলো এসেছে।
।
দাড়াও আমিও একটু বাজিয়ে দেখি
বলেই চলে গেলো সোহান
।
রাজিব সোহান কে দেখে দাড়িয়ে সালাম দিলো।
।
সোহান সালামের জবাব দিয়ে বললো,,,
।
তোমাকে চেনা চেনা লাগছে,,,
কে তুমি?
আর এতো সকালে আমার বাসায়?
।
দেখুন আমি মিমকে ভালবাসি,,, ওকে বিয়ে করতে চাই।
।
কি বলো এসব?
মাথা ঠিক আছে?
আজ মিমকে দেখতে আসবে আর তুমি এসে কিনা এসব বলতেছো?
।
বিশ্বাস না হলো মিমকে প্রশ্ন করে দেখুন।
।
দেখো ভাই,,, প্রশ্ন করার সময় এখন নেই,,,,
আজ দেখতে আসবে। হয়তো ওর আংটি পরিয়ে যাবে।
ওর পরিক্ষা শেষ হলেই বিয়ে।
এখানে আর কি থাকে বলো…?
।
কেন,, আমাকে দিলো কি প্রবলেম?
আমি কি দেখতে খারাপ?
কোন সাইডে কম আছে আমার।
আর মিম,,, তুমি এরকম টা না করলেও পারতে।
ভালবাসতাম তোমায় তাই তোমার ডিপ্রেশনের কারণ জানার জন্য ওনার স সাথে সরাসরি কথা বলেছি।
কথা গুলো প্রচন্ড রেগে বলল রাজিব।
বলেই চলে যেতে লাগলো
তখনি সোহান পিছন থেকে ডেকে বললো।
।
আমার শালিকা কেও নিয়ে যাও ভাই।
।
সোহানের কথায় পিছনে ফিরে তাকায় রাজিব,,, আর বলে মানে?
।
মানে এতোক্ষণ তোমাকে বাজিয়ে দেখলাম।
তুমি মিয়া সাচ্চা প্রেমিক
।
কি!!!
।
হুমমমমমম।
।
রাজিব মিমের দিকে তাকালে মিম মুসকি একটা হাসি দিয়ে তার রুমে চলে যায়।
।
আসো আসো,,, ভায়রা ভাই,,, একটু বসো নাস্তা করে যেও।
।
নাহ ভাইয়া,,,, আমাকে এক্ষুনি যেতে হবে।
সবাইকে মিষ্টি খাওয়াতে হবে।
আম্মু কে বলতে হবে।
।
এটুকুতেই মিষ্টি??
বিয়া হলে কি করবা ভাই?
।
রাজিব আর সোহানের কোন কথার উত্তর না দিয়ে ওদের বাসা থেকে গেলো।
।
মিম রুমে গিয়ে আয়নার সামনে বসে আছে
এমন সময় তার মোবাইলের ম্যাসেস টোন বেজে উঠে।
।
ম্যাসেস টা ছিলো রাজিবের।
।
তারাতারি সিন করে দেখে তাতে ছোট্ট করে লেখা
।
“”” আজ কলেজ আসো,,, তারপর দেখবা মজা কাকে বলে”””
।
তারপর মিম ম্যাসেসর রিপ্লাই দিলো,,,,কি আমার বীর পুরুষ রে,,,, চিনি আমি তোমাকে।
।
।
>>>> সমাপ্ত <<<<
.
পুরো গল্পটা কেমন হয়েছে জানাবেন
ধন্যবাদ