#ধূসর_রঙের_প্রজাপতি
#ফাতেমা_তুজ
#part_51
দুপুরের তীব্র রোদ ভেদ করে যখন বিকেলের মিষ্টি রোদ উঁকি দেওয়া শুরু করলো তখনি হাওর যেন নতুন রূপে ধরা দিলো। সে অনুভূতির কথা প্রকাশ করা কষ্ট সাধ্য। মৃদু বাতাসের সাথে পাখির গুঞ্জন পরিবেশ টাকে মধুর করে যাচ্ছে। বোট চলছে টেকের ঘাটের উদ্দেশ্যে। মাঝে একটা সবুজ ঘাসে ঘেরা চরের মতো স্থান পরিলক্ষিত হয়। কিছুক্ষণের জন্য বোট থামানো হয় সে চরে। সবাই নেমে গেল। ঝিল আর অভিনব লম্বা করে দম নিয়ে মুক্ত সমীরন গ্রহন করে। অভিনবর মাথায় উদ্ভট এক চিন্তা এসে ধরা দেয়। এতো বড় সবুজে ঘেরা মাঠ টা উপেক্ষা করতে পারলো না সে। ঝিলের হাত ধরে বলল
_ দৌড়ানো যাক ?
_ দৌড়াবো কেন ?
_ পাখির মতো ফিলিংস নেওয়ার জন্য। দু হাত মেলে দিয়ে এক দমে দৌড়াতে থাকলে পাখির মতোই উড়ে যাচ্ছো মনে হবে।
বিষয় টা বেশ মনে ধরলো। মাথা কাত করে সম্মতি জানালো ঝিল। অভিনবর হাতে এক হাত আর অন্য হাত মেলে দিলো। অভিনবর হাসি মাখা মুখ টা বুঝিয়ে দিলো এখনি দৌড়াতে হবে।
সবুজের মাঝে দুই মানব যেন মিশে গেছে। পাখির মতো ডানা ঝাপটে দৌড়াতে লাগলো দুজনে। বিশাল মাঠ টা চক্কর কেঁটে দুজনেই ক্লান্ত হলো বেশ । তবু ও অধরে হাসি যেন রয় না। হাসতে হাসতে সবুজেই শুয়ে পরলো। আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো বেশ কিছুটা সময়। অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছে। হাঁপাতে হাঁপাতে ঝিল বললো
_ দারুন ছিলো এটা। ইসস যদি আরেকটু দৌড়ানো যেত , তাহলে আরো ভালো হতো ।
_ আমার সমস্যা ছিলো না। তবে তোমার পা ব্যথা করবে। তুমি তো নিয়মিত এক্সারসাইজ করো না।
_ এখন থেকে করবো।
_ আচ্ছা। এখন চলো উঠা যাক ।
অভিনব উঠে বসলো। ঝিল এখনো ক্লান্ত। ঝিল কে বুকে টেনে নিলো অভিনব । মিনিট দুয়েক জড়িয়ে ধরে তারপর উঠে পরলো দুজনেই । মোটা মোটি সবাই বোটের কাছে চলে এসছে। বোটে উঠতেই বোট চলা শুরু করলো। ক্লান্ত ঝিল অভিনবর গাঁয়ে সমস্ত ভর ছেড়ে বলল
_ এই ট্যুর টা বেশি ভালো । কোনো নিয়ম নেই। শুধু শান্তি আর শান্তি।
_ কে বলেছে নিয়ম নেই ? আলবাত আছে।
_ আমার চোখে তো কিছু পরলো না।
অভিনব পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে ইশারায় পড়তে বললো। ঝিল ভদ্র মেয়ের মতো কাগজ টা পড়তে লাগলো।
[ তাহিরপুর উপজেলায় অবস্থিত টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট, বারেকাটিলা, নীলাদ্রিসহ পর্যটন এলাকায় জনসমাগমের ওপর ১০টি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। ২৫ আগস্ট থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে । নির্দেশনাগুলো হলো-
* হাওর কিংবা নদীতে যাত্রা শুরুর অন্তত ছয় ঘণ্টা আগে নির্ধারিত ফরমে তাহিরপুর থানা ও উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নৌযানের নাম, পর্যটকের সংখ্যা, যাত্রা ও ফেরার সময় উল্লেখসহ লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে।
* টাঙ্গুয়ার হাওরে চলাচলকারী কোনো নৌযান অতিরিক্ত পর্যটক বা যাত্রী বহন করতে পারবেন না।
* ভ্রমণের সময় নৌযানের চালক ও পর্যটকদের অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে। বিশেষ করে হাওরে কিংবা নদীতে কোনো পর্যটক লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নামতে পারবেন না।
* বিরূপ আবহাওয়া থাকলে হাওর কিংবা নদীতে ভ্রমণ করা যাবে না।
* করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ভ্রমণের সময় সবাইকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
* প্রতিটি নৌযানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ডাস্টবিন স্থাপন করতে হবে।
* নির্ধারিত স্থান ছাড়া হাওর বা নদীর কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না।
* পর্যটকবাহী নৌযানে উচ্চস্বরে মাইক বা লাউড স্পিকার ব্যবহার করা যাবে না।
* প্রতিটি নৌযানে পর্যটকদের জন্য মানসম্মত পরিবেশ, পরিচ্ছন্নতা ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
* ভ্রমণকালে পর্যটকরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিজ দায়িত্বে সংরক্ষণ করবেন এবং নিজেদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সচেষ্ট থাকবেন। ]
** লাইন গুলো সংগ্রহিত **
কাগজ টা অভিনবর হাতে দিয়ে সটান হয়ে বসলো ঝিল। অভিনবর দিকে না তাকিয়েই বলল
_ মোট কথা সমস্ত দায় ভার এজেন্সির সাথে। আমাদের তো শান্তি ই !
দু দিকে মাথা কাত করে সম্মতি জানায় অভিনব। বার বার হাই তুলছে ঝিল। তাই অভিনব শুধাল
_ কফি খাবে ?
_ আচ্ছা।
নিজ হাতে কফি বানিয়ে নিলো অভিনব। ঝিলের ইচ্ছে তে এক কাপ কফি বানিয়েছে। দুজনে নাকি এক কাপ থেকে কফি খাবে। এতে দুজনে ভালোবাসা বাড়বে। অভিনবর কাছে ও বিষয় টা ভালো লেগেছে। এমনি তেও স্ত্রীর সাথে বসে এক প্লেটে খাওয়া কিংবা পানির পাত্রে স্ত্রীর ঠোঁট লাগানো স্থানে ঠোঁট লাগিয়ে পানি পান করা সুন্নত।
*
বেশ অনেকক্ষণ জার্নি করার পর টেকের ঘাটের দেখা মিলে। সবাই দাড়িয়ে ছিলো। না চাইতে ও মুখ দিয়ে ওয়াও শব্দ টা উচ্চারিত হয়। নীলাদ্রি লেকের বড় বড় টিলা চোখে পরে। এটি মূলত লাইমস্টোন বা চুনাপাথরের খনির পরিত্যক্ত লেক। মেঘালয়ের সীমান্তবর্তী তে এর অবস্থান। পর্যটক রা নীলাদ্রি লেক নামে জানলে ও স্থানীয় দের কাছে টেকের ঘাট পাথর কোয়ারি নামে পরিচিত।
ঘন নীল জলের এক পাশে মেঘালয়ের পাহাড় , তার চারপাশে ছড়ানো ছিটানো পাথর। অনেকেই একে বাংলার কাশ্মীর নামে অভিহিত করে । মোহনীয় এই লেকের সৌন্দর্য হৃদয়ে দাগ কাটবে।
ঘাটে বোট থামানো হলেই সবাই নেমে যায়। অভিনবর চোখ চার দিকে উঠা নামা করছে। নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে পরেছে সে। প্রতি টা সৌন্দর্য ওকে নতুন ভাবে সম্মোহন করে। ঝিলের কাঁধে ডান টা দিয়ে একটু কাছাকাছি হয়ে হাঁটে। অভিনবর স্পর্শ ঝিল অনুভব করে নি। কারন সে মত্ত রয়েছে প্রকৃতিতে। অভিনব শুধাল
_ এখানে একটা বাড়ি বানালে কেমন হয় বলো তো ?
_ খুব ভালো। আমি রোজ মেঘালয় থেকে আসা সূর্যোদয় দেখবো। কি সুন্দর তাই না ?
অভিনব ডান হাত উঁচু করে নীলাদ্রি লেক বরাবর নির্দেশনা দেয়। ঝিল প্রশ্ন নিয়ে তাকায়। অভিনব বলে
_ লেকের এপাশ টা বাংলাদেশ আর অন্য পাশ টা ভারত।
_ ওয়াও , এটাই বাংলাদেশের শেষ সীমান্ত ?
_ হুম।
_ চলো না ঐ পাশ টা যাই !
কথা টা অতি আবেদনময়ী স্বরে বলে ঝিল। অভিনব হাসে , ঝিলের দিকে একটু ঝুঁকে বলে
_ যেতেই পারি যদি আমার ক্রস ফায়ারে আপনি খুশি হোন।
ভ্রু কুটি করে তাকায় মেয়েটা। অভিনবর কথাটা যেন মাথার উপর দিয়ে গেল। অভিনব একটু এগিয়ে হাঁটে। পেছন থেকে ঝিল প্রশ্ন ছুঁড়ে
_ ক্রস ফায়ার কেন হবে ?
_ গার্ড রা আছে তো ! সীমান্তবর্তী নিরাপত্তা বলে ও তো কিছু হয় ? এতো সহজে সব কিছু তো পাওয়া যায় না। তবে একটা কাজ করা যায় তুমি আর আমি ইন্ডিয়ান আর্মি তে জয়েন করি তারপর সীমান্ত পারাপার করবো না হয় ?
রসিকতায় গা জ্বলে উঠে মেয়েটার। কিছু অজানা থাকা টা স্বাভাবিক । তাছাড়া সবাই তো ওর মতো অতি বিজ্ঞ নয়। অভিনবর আড়ালে ভেঙ্চি কাঁটে ঝিল। একদিন ওর ওহ সময় আসবে।
সবাই লেকে নামার প্রস্তুতি নেয়। গার্ড সবাই কে লাইভ জ্যাকেট পরে নিতে বলেন। লেকের গভীরতা প্রায় 300 ফিট। অভিনব ধরে ধরে কোমর অব্দি পানিতে নামিয়ে নেয় ঝিল কে। সব থেকে মজার বিষয় হচ্ছে যত এগোচ্ছে ততো ঠান্ডা পানি অনুভব হচ্ছে। ঝিলের মনে পরে গেল বিখ্যাত সাত রঙের চায়ের কথা। এটা কে ও তেমনি ধরা যায়। তবে এটাকে টেম্পারেচার আপ ডাউন।
সন্ধ্যার ভিউ টা চোখে ধাঁধানো সুন্দর। বড় বড় পাহাড় গুলো কে ছায়া মানবের মতো লাগে। মনে হয় এই লেকেই ডুবে যেতে।
পায়ে পাথরের স্তর অনুভব হয়। অভিনবর বাহু ধরে সাঁতার কাটে ঝিল। তাঁর সাঁতারের সীমা শুধু হাত পা ছড়ানো। অভিনব হঠাৎ করেই আরো গভীরে নিয়ে যায়। এতে ভয় পেয়ে যায় ঝিল। বিরক্ত প্রকাশে অভিনব বলে
_ সেফটি জ্যাকেট পরে আছো না ?
_ যদি ফুটো হয়ে যায় ?
_ আমি আছি তো ! আশ্চর্য মানবী তুমি , আমাকে ভরসা করে ও করো না।
_ ভয় লাগে।
কথা টা মিনমিনিয়ে বলে ঝিল। অভিনবর মনে ব্যথা লাগে। ঝিল কে এক হাত জড়িয়ে নেয়। মাথা টা বুকে চেপে ধরে বলে
_ বাঁচলে এক সাথেই বাঁচবো, আর মরলে এক সাথেই মরবো।
.
সন্ধ্যা নেমে গেছে। একটু পাড়ের দিকে এসে সকলে সমস্ত ভর ছেড়ে দেয়। পানি টাকে বিছানার মতো আলিঙ্গন করে চোখ বুঁজে । পরম আবেশে শরীর কেঁপে উঠে। অদ্ভুত ভালো লাগায় সর্বাঙ্গে বিদ্যুৎ চমকে যায়। মৃদু সমীরন এসে শরীরের প্রতি টি লোম কূপ স্পর্শ করে। ঠিক তখনি রক্তে শীতল তরল নেমে যায়। কি অসাধারন অনুভূতি তে ভাসতে থাকে। পানির উপর এভাবে শুয়ে থাকা যেন অমৃত স্বাদ। ঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে । প্রতি টি বিন্দু কনা চোখ মুখ নাকে এসে লাগছে। ঝিল পিট পিট করে তাকায় আবার চোখ নিভে যায়। আনমনেই হেসে উঠে। অভিনবর দিকে তাকাতেই পরিলক্ষিত হয় এক জোড়া গভীর দৃষ্টি তাঁকে দেখে যাচ্ছে।
যে চোখ প্রেম নিবেদন করছে। যে নয়নে নিজের মৃত্যু দেখে ঝিল। হতচকিয়ে যায় মেয়েটা। সন্তর্পণে কাছে টেনে নেয় অভিনব। নেশাক্ত চাহনি আর মাদকতাময় কন্ঠে বলে ” ভালোবাসি ”
সন্ধ্যায় ফিরে এসে ক্লান্ত সবাই। ছাঁদের উপর খাবার সার্ভ করা হয়। পুরো হাওর অন্ধকার।থেকে থেকে ছোট ছোট আলো দেখা যাচ্ছে। হন্টেড প্লেস বললে ও ভুল হবে না। পাখির হিস হিস ফোঁস ফোঁস শব্দ রোমাঞ্চকর অনুভূতি দিয়ে যাচ্ছে। ডিনারের জন্য ছিলো , ভাত , হাঁসের মাংস , সবজি , ডাল , আর লেমন ট্রি। পেট পুরে খেয়ে সবাই হালকা গান বাজনা করে নিলো।
গানের তালে প্রেম নিবেদন। প্রতি টা কাঁপল ই নিজেদের পুরনো দিন গুলো অনুভব করছে। না জানি কত বাঁধা পেরিয়ে আজ এতো টা স্বস্তি। প্রেম বড় কঠিন ব্যধি ।
বোট হাওরে ভাসতে থাকে। অর্থাৎ নোঙর বাঁধা হবে না। এতে নাকি আরো বেশি মজা পাওয়া যায়।
সবাই ক্লান্ত থাকাতে বিছানায় গা এলাতেই ঘুমিয়ে পরে। তবে রাতে বৃষ্টি হওয়াতে অদ্ভুত আনন্দ মিলেছে। বৃষ্টির আওয়াজের সাথে ঠান্ডা শিরশির বাতাসে ঘুম এতো ভালো হয় তা কারোই জানা ছিলো না। আসলে ক্লান্ত দেহ শুধু একটু স্বস্তি চায়।
*
দ্বিতীয় দিন
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে এক কাপ চা খেয়েই নেমে গিয়েছে টেকের ঘাটে। দোতলা লাল দালান দেখে ঝিলের মনে কৌতুহল জাগে। অভিনব হলো তাঁর এক মাত্র ডিকশনারি। তাই অভিনবকেই প্রশ্ন করলো ” এটা কি ? ”
তবে অভিনব উত্তর দিতে পারলো না। ঝিল ভয়ঙ্কর চোখে তাকালো। আসলেই মানুষ কখনো ডিকশনারি হতে পারে না। পরিশেষে ট্রাভেল এজেন্সি র সাথে কথা বলে জানতে পারলো লাল রঙা দালান টা টেকের ঘাটের এক মাত্র ক্লিনিক।
বোটের কাছ থেকে চেঁচামেচির শব্দ কানে এলো। অভিনবর সাথে ঝিল ওহ এক প্রকার দৌড়ে সে দিকে যায়। রোহন বাচ্চাদের মতো চিৎকার করছে। তাঁর ই সাথে হাসছে গগন কাঁপিয়ে। এতো খুশির হেতু খুঁজে পায় না ঝিল। মৌনতার কাঁধে ধাক্কা মেরে বলে
_ তোর দিওয়ানা এতো খুশি কেন ?
_ আরে বোয়াল মাছ পেয়েছে !
_ বোয়াল মাছ ?
_ বোটে জাল ছিলো ভোর থেকেই জাল ফেলে বসে ছিলো। আমার সাথে বাজি ধরেছে মাছ ধরে দেখাবে। দুই ঘন্টা পর এই বোয়াল মাছের দেখা মিলেছে।
ঝিল ঠোঁট দুটো প্রসারিত করে। রোহনের পিঠে এক প্রকার চাপড় মেরেই বলে
_ বাহহ কি উন্নতি হলো। এক বার মাছ ধরতে বলেছিলাম আমি। সারাদিন পরে দুটো চুনো পুঁটি নিয়ে ফিরেছিলো তুমি আর আহনাফ ভাইয়া। আজ গার্লফ্রেন্ড এর জন্য একে বারে বোয়াল মাছ ?
দাঁত কেলিয়ে হাসে রোহন। এতো বড় মাছ ধরতে পারবে কল্পনা ও করতে পারে নি। ঝিলের চুল টেনে দেয় । তাঁরপর মৌনতার চুল এলোমেলো করে দেয়। মৌনতা রাগে গজগজ করে উঠে। ঝিল অবাক হয়ে দেখে সে দৃশ্য। রোহন বরাবর ই শান্ত স্বভাবের , কিন্তু আজ যেন নিজের সমস্ত সত্তা উজার করে দিয়ে নতুন রূপে ধরা দিয়িছে সে। এটা কি প্রেমের মিল বন্ধন। ঝিলের কাছে এসে অভিনব দাঁড়িয়ে ছে বেশ অনেক ক্ষন। অথচ ঝিলের ধ্যান নেই। অভিনবর ভারী নিশ্বাস কানে আসে। সে নিশ্বাস লক্ষ্য করে বা পাশ মুরে তাকাতেই এক চিলতে হাসি ফুটিয়ে অভিনব বলে
_ প্রতি টি মানুষের জীবনেই সঠিক প্রেমের প্রয়োজন রয়েছে। সেটা যখনি হোক , টিনেজার বয়সে কিংবা বিয়ের পরে। সঠিক প্রেম আর আপন মানুষের প্রয়োজন অনেক ।
ঝিল আবেগে আপ্লুত হয়ে নয়ন ভরিয়ে ফেলে। অভিনব দু হাতের আঙুলি দিয়ে সে জল মুছে দেয়। সময় নিয়ে কপালে চুমু খেয়ে বলে ” চলো ”
#ধূসর_রঙের_প্রজাপতি
#ফাতেমা_তুজ
#part_52
নীলাদ্রি লেকের পাশে পরিত্যক্ত প্লেসে সবার আড্ডা চলছে। সকালের আবহাওয়া প্রান কে সচ্ছ অনুভূতি তে ঘুরপাক খাওয়াচ্ছে। রোহন বেশ ভালো গিটার বাজাতে পারে। সৌখিনতার বসেই গিটার বাজানো হয় তাঁর । দু এক লাইন গাইলে ও লজ্জায় আর গাইতে পারলো না। মৌনতার সাথে মিল রেখে সবাই পিঞ্চ করে যাচ্ছে। পরিশেষে বেশ কিছুটা সময় সবুজ ঘাসে বসেই আড্ডা চললো। সকালের নাস্তা টা এখানেই করা হলো। নাস্তা তে ছিলো ফল , জেলি পাউরুটি। আশে পাশে ঘুরে ঘুরে দেখছে সবাই। মৃদু হাওয়াতে উড়ছে চুল। চারপাশে পরিত্যক্ত মেশিন পরে আছে।
ট্রাভেল কর্মকর্তা জানালেন মূলত খনি তে ব্যবহার করা হতো এগুলো। এক সময় বেশ মূল্যবান ছিলো এ যন্ত্র যা এখন অতি নগণ্য।
অসাবধানতার কারনে কঙ্কর লেগে উল্টে পরে গেলো ঝিল। অভিনবর কপালে সূক্ষ্ম ভাঁজ সৃষ্টি হলো। চিন্তিত হয়ে ঝিলের পায়ে হাত দিয়ে শুধাল
_ তুমি ঠিক আছো ঝিল ?
চুলের কারনে ঝিলের মুখ দেখা যাচ্ছে না। তারউপর মাথা নিচু , অভিনব ব্যস্ত হয়ে পরলো। ভয়ে বুক ভারী হয়েছে । হঠাৎ চমকে গেল ছেলেটা। কারন খিল খিল করে হাসছে ঝিল। ফোঁস করে দম ফেলে অভিনব। মুখের অভিব্যক্তি পাল্টে ক্রুদ্ধ নয়নে তাকায়। ঝিল নুইয়ে যায়। অভিনব হাঁটু তে হাত রেখে হাসতে থাকে। এক টা সময় পর হাসতে হাসতে কচি ঘাসে শুয়ে পরে। ঝিল ভ্যবলার মতো তাকিয়ে প্রশ্ন করে
_ এটা কি হলো?
_ রিভেঞ্জ! তুমি আমাকে ভয় পাওয়াতে চেয়েছিলে তাই আমি ও একটু ভয় পাইয়ে দিলাম। যাকে বলে যে যেমন তাঁর সাথে তেমন।
ঝিলের রাগ হয়। আশে পাশে তাকিয়ে কিছু পায় না। অভিনবর মাথা টা ফাটিয়ে দিতে পারলে শান্তি হতো। হঠাৎ হাতের দিকে চোখ যায়। হাত দিয়েই কার্য সম্পূর্ন করে সে। কোনো মতে উঠে বসে অভিনব। একটু অভিনয়ের সুরে বলে
_ এতো জোড় কবে থেকে আসলো। মেয়ে দের হাত তো নরম তুলতুলে হয় তোমার হাত পাথরের মতো শক্ত কেন ?
কিছুক্ষণ পর ঝিল উল্টো পথে যায়। বিরবির করে বলে
_ কপালে বউ জুটেছে যে তাই তো ভাগ্য। এমন অসভ্য লোকের কপালে আমি যে জুটেছি তাই তো বেশি।
অভিনব ঝিলের দিকে ছুটে গেল। ঝিল কে স্পর্শ করবে তাঁর আগেই বলল
_ একদম আমাকে স্পর্শ করবে না। অন্য কাউ কে বিয়ে করে তাঁর নরম তুলতুলে হাতের ছোঁয়া গ্রহন করো।
_ বাহ বেশ ভালো আইডিয়া দিলে তো। তুমি ই একমাত্র বউ যে তাঁর সতীন কে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছো।
অভিনবর খাপছাড়া ভাবে ঝিলের কান্না পেলো। অভিনব মুখ টিপে হাসছে। ঝিল কিছুতেই অভিনবর নিছক মজা টা গ্রহন করতে পারলো না। উল্টো পথে দৌড় লাগালো। বিস্ময়ে হতবাক অভিনব এক মুহুর্ত ও দেড়ি করলো না।
ঝিলের হাত খপ করে ধরলো। ব্যাথাতুর কন্ঠে বলল
_ আম স্যরি । ভেরি স্যরি ঝিল। আমি শুধুই মজা করেছি। প্রমিস আর কখনো মজা করবো না।
ঝিল এবার কেঁদেই দিলো। কেন ছোট বিষয় টা মানতে কষ্ট হচ্ছে ওর। নিছক মজা টা ও বুকে রক্ত ক্ষরন করছে। ফুঁপিয়ে কেঁদে মেয়েটার নাজেহাল অবস্থা। ঝিলের মুখে পর পর কতো গুলো চুমু খেয়ে বুকে চেপে নিলো। তাঁতে ও ঝিলের কান্না থামে না।
অভিনব শপথ করলো এ কথা আর কখনোই বলবে না। যে মেয়েটা সাধারন মজা ও মেনে নিতে পারে না যদি এমন কখনো ঘটে নির্ঘাত উল্টো কিছু করে বসবে।
ভালোবাসার নতুন সমীকরন দেখালো ঝিল।
.
নীলাদ্রি লেকে নৌকা করে ঘোরাঘুরি হলো কিছুক্ষণ। শীতল বাতাসের সাথে টলটলে পানির মিল বন্ধন যেন স্বর্গীয় সুখ। সৃষ্টি কে উপভোগ করতে পারলে পৃথিবীর বুকের সেরা অনুভূতি সেটাই হবে। প্রতি নৌকার ভাড়া 300 টাকা করে। এগারোটার দিকে সবাই বোটে ফিরে আসলো। দুপুরের নাস্তা তে দেওয়া হলো মুরগির মাংসের খিচুড়ি , মরিচ ভর্তা , আর সালাত। এমন পরিবেশের জন্য পারফেক্ট খাবার। সবাই খানিক টা জিরিয়ে নিলো। অভিনব কথা বলে জানতে পারলো সাইট সিনে যাওয়া হবে।
ঝিল বায়না ধরে বললো
_ আমরা সবাই বাইকে করে যাই ? প্লিজ এটায় বেশি মজা হবে । তুমি বাইক রাইড করবে প্লিজ।
অভিনব একটু চিন্তিত হলো। বাইকে যাওয়া যেতেই পারে তবে রাস্তার অবস্থা যে তেমন ভালো না। তবু ও মানা করলো না। ঝিলের মুখে হাসি দেখার জন্য একটু রিক্স না হয় নিলো।
ঝিল প্রচন্ড খুশি হয়ে টুপ করে অভিনবর গালে চুম খেলো।
_ বাহহ এবারের ট্যুর টা সত্যি প্রয়োজনীয় ছিলো।
_ আমি রোমান্টিক এটাই প্রমান দিলাম। হুট হাট চুম খাওয়াতে ও ভালোবাসা বাড়ে। তবে বাড়াবাড়ি করলে কমে যায়। যেমন টা তুমি করো। বলা নেই কওয়া নেই সোজা লিপস টু লিপস ছিইই।
ঝিলের কথায় অভিনবর মুখের অভিব্যক্তি পাল্টে যায়। এখন সত্যি তাঁর কিস করতে ইচ্ছে হচ্ছে। নিজের ভাবনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিলো তবে পানি ঢেলে দিলো মাহের। ফ্যাল ফ্যাল করে তাকালো ছেলেটা। শিমুল বাগানে যাওয়ার জন্য ই ডাকতে এসেছে মাহের। দীর্ঘশ্বাস টেনে অভিনব মিনমিনে স্বরে বলল
_ ভাই আর বোন দুটোই আমার রোমান্টিক মুহুর্তে পানি ঢেলে দেয়।
বাইক ভাঁড়া করা হলো। পার বাইক 300 করে রাখা হয়। তবে অভিনব যেহেতু নিজে বাইক ড্রাইভ করবে তাই বাইক এর কস্ট টা বেশি পরলো। বাইকে উঠে হৈ হুল্লর শুরু হলো। অভিনবর শক্ত পিঠে মাথা এলিয়ে দেয় ঝিল। চোখ দুটো বন্ধ করে রাখে। অভিনব একটু সাবধান করে বললো
_ আমাকে জড়িয়ে ধরো প্লিজ। রাস্তা টা একটু আঁকা বাঁকা ।
_ আচ্ছা।
শিমুল বাগানের কাছে বাইক পার্ক করা হলো। যদি ও এখন শিমুলের সিজন না তবু ও ঘোরার জন্য সুন্দর এক জায়গা।ঝিল একটু আফসোস করে বলল
_শীত কালে আসলে শিমুলের বাহার ও দেখা যেতো।
_ তা যেতো তবে হাওরের আসল সৌন্দর্য তো এখনি।
শিমুল বাগানের বিশাল গাছ গুলো ছাউনির মতো দাঁড়িয়ে আছে। পরিবেশ টা ও শীতল। বিশাল বাগান ঘুরে চোখে পরলো ঘোড়া।
অভিনব একটা ঘোড়া ভাড়া করলো। ঝিল ভয় পাচ্ছে দেখে অভিনব আশস্ত করে বলল
_ আমি জকি না হতে পারি তবে ঘোড়া কন্ট্রোল করতে পারি।
_ যদি পরে যাই আমি !
_ কিচ্ছু হবে না বোকা । আসো
এক প্রকার টেনে হেচরে ঘোড়ার পিঠে উঠায় অভিনব। ঘোড়ার নরম তুলতুলে শরীরে হাত বুলায় ঝিল। ঘোড়া টা পেছন ঘুরে তাকায় তাঁতে ভয় পেয়ে যায় ঝিল। কয়েক মিনিট ঘোড়ার পিঠে ঘোরা ফেরা করে নেমে যায়। অভিনব মুখ দিয়ে এক অদ্ভুত শব্দ করতেই ঘোড়া টা ঝিলের হাত চেটে দেয়। যাঁর ফলে চেচিয়ে উঠে ঝিল। অভিনবর ভীষন হাসি পায় তবু ও হাসে না। পরে দেখা যায় ঝিল নিজেই হাসছে। অভিনব ঝিলের হাত ভালো করে ওয়াস করে শিমুল বাগান থেকে বেরিয়ে আসে।
.
বারেক টিলার উদ্দেশ্য রওনা হয় সবাই। বারেক টিলায় উঠার কারন এখান থেকে পাহাড় আর জাদুকাটা নদীর ভিউ টা বেশ ভালো দেখা যায়। তবে টিলার রাস্তা একটু উঁচু হয়ে যায়। যাঁর কারনে বাইকের স্প্রিড কমিয়ে দেয় অভিনব।
বারেক টিলার উপরে এসে বাইক পার্ক করে।
এখন জাদুকাটা নদীর পানি খুব কম। পূর্ন বর্ষা তে পানি তে টুইটুম্বর থাকে। বারেক টিলায় দাঁড়িয়ে বেশ কিছু মুহূর্তু উপভোগ করে। সমীরনে গা শিরশির করে উঠে। অভিনবর গা ঘেঁষে দাঁড়ায় ঝিল।
নদীর পরে বালুর মোটা আস্তরন আর তারপর ই পাহাড়। আকাশ টা যেন খুব কাছে নেমে এসেছে।
ঝিলের তো যেতেই ইচ্ছে হচ্ছে না। অভিনব তাড়া দিয়ে বলল
_ দেরি হয়ে যাচ্ছে ঝিল।
_ আরেকটু প্লিজ ।
_ অনেক ক্ষন তো হলো। এবার যাই , আসো ।
মন খারাপ করে ঝিল। অভিনব দম ফেলে। ছোট ছোট বিষয়ে ঝিলের মন খারাপ হয়। আসলে মেয়েটা ছোট ছোট বিষয়ে আনন্দ খুঁজে নেয় তাই ছোট বিষয় গুলোই আঁকড়ে ধরে।
আজকের লাস্ট স্পর্ট হলো লাকমাছড়া। বেশ কিছুক্ষণ বাইক রাইড এর পর লাকমাছড়ার দেখা মিলে।
লাকমাছড়ায় এসে সবাই একটু লেমন জুস খেয়ে জিরিয়ে নেয়। শান্ত পরিবেশ টা বেশ উপভোগ করছে। অভিনব ঝিলের ক্লান্ত মুখ টা মুঠো বন্দি করে বলে
_ চলো ঝরনার পানি তে নামা যাক।
ঝিল সম্মতি জানায়। বিশাল পাহাড়ের কোন বেয়ে পানি নেমে যাচ্ছে। পাহাড়ের সাথেই ইন্ডিয়ান বর্ডার। একটা ব্রিজ দেখা যায় যেটা ইন্ডিয়ায় অন্তর্ভুক্ত। হয়তো ব্রিজের ভিউ টা আরো উপভোগ্য। কারন ব্রিজের গা ঘেঁষেই ঝর্নার পানি নেমে আসছে।
পাথরে পা রাখতেই পানি বেয়ে নেমে যায়। বেশ স্রোত রয়েছে। ঝিল বার বার উল্টে যাচ্ছিলো অভিনব টেনে ধরে। স্রোতের পানি তে ভিজে একাকার হয়ে যায়। মসৃন পানির সংস্পর্শে নতুন রূপে সজ্জিত হয় ঝিল। বাচ্চা দের মতো পানির সাথে বন্ধুত্ব গড়ে নেয়। অভিনবর দৃষ্টি ঝিলের সৌন্দর্য উপভোগে ব্যস্ত।
অভিনব হঠাৎ করে অনুভব করলো, প্রকৃতির সৌন্দর্য প্রিয় মানুষের থেকে বেশি নয়। অধর কোনে হাসি ফুটে উঠে। ব্যক্তিগত মানুষ টি সত্যি ই অপরূপ হয়। যে সৌন্দর্য মানুষ কে পাগল অব্দি করে ফেলে। তাই বোধহয় মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।
ঝিলের কাছে এসে দাঁড়ালো অভিনব। স্রোতে ভাসার জন্য ঝিলের এক হাত মুষ্টিবদ্ধ করলো। পাথরে গায়ে ঠেস দিয়ে বসলো।
_ চোখ বন্ধ করো ঝিল।
_ কেন?
_ করোই নাহ।
ঝিল চোখ বন্ধ করলো। অতি সাবধানতার সাথে ঝিল কে কোলে তুলে নিলো অভিনব। স্রোতের পানি তে বেশ কিছুটা পথ নেমে আসলো। ঝিল অনুভব করছে পানিতে ভেসে যাচ্ছে। চোখ খুলতে যেতেই অভিনব বলল
_ একদম না। ভয় পাবে তাহলে ।
ঝিল চোখ খুললো না। অভিনবর শরীরে মিষ্টি সুভাসের সাথে স্রোতে ভাসা উহুহ প্রেমের স্রোতে ভাসতে লাগলো। স্বর্গীয় সুখ কেমন তা জানা নেই। তবে প্রিয় মানুষের সান্নিধ্যে সেরা অনুভূতির একটি।
.
লাকমাছড়া থেকে সবাই বোটে ফিরে আসলো। টেকের ঘাট ছাড়তে কষ্ট হচ্ছে খুব। তবু ও কিছু তো করার নেই। লাঞ্চের সময় পাড় হয়ে যাচ্ছে।বোট থামানো হলো হাওরের মাঝ খানে গাছের ছায়া তে। পানি এতো টাই পরিষ্কার যে পাকা রাস্তা দেখা যাচ্ছে। ঝিল নামার জন্য বায়না ধরলো। অভিনব চেয়ে ও বারন করতে পারলো না। পরিশেষে ঝিল কে নিয়ে রোডে নেমে দাঁড়ালো। স্রোতের সাথে পানি তে থেকে রোড পিচ্ছিল হয়ে গেছে। একটু আগালেই পা পিচলে যাচ্ছে। তবু ওহ ঝিল হাঁটতে লাগলো। বেশ কিছুক্ষণ পর টেনে ধরলো অভিনব।
_ আর এক সেকেন্ড ওহ না। লাঞ্চ করা হয় নি , এখন লাঞ্চ করবে।
_ আর একটু।
_ সব কিছু তেই আর একটু আর একটু করো কেন বলো তো ?
_ অভিনব প্লিজজজজ !
_ কিহহ ? রোম্যান্স করবে আসো কাছে ?
হা হয়ে যায় ঝিল। দ্রুত গতিতে চলে আসে। ভ্যাগা স্বরে বলে
_ অসভ্য ।
রোহনের ধরা বোয়াল মাছ দিয়ে লাঞ্চ হবে আজ। সব থেকে বেশি এক্সাইটেড রোহন। বোয়াল মাছ মুখে তুলেই বললো
_ সেরা।
_ মাছ টা তুমি না ধরলে এতো সেরা হতো না ভাই।
অভিনবর কথাতে সবাই হেসে দিলো। রোহন সে দিকে পাত্তা দিলো না। নিজের ধরা মাছ, মানেই অন্য রকম ভালোবাসা।
লাঞ্চে ছিলো ভাত , বোয়াল মাছ , সবজি , টাকি মাছ ভর্তা আর ডাল।
খাওয়া শেষে সকলে ছাঁদে বসে পরে। কেউ বা শুয়ে পরে। পড়ন্ত বিকেল হওয়াতে রোদ নেই। তাই বেশ ভালোই ভিউ দেখাচ্ছে। বোট চলছে তাহিরপুরের উদ্দেশ্য।
তাহিরপুরে যে পথ দিয়ে আসা হয়েছিলো এখন সে পথ দিয়ে ফিরছে না। অভিনব ই বলেছিলো হাওরের মানুষের জীবনযাত্রার এক ঝলক দেখতে চায়। তাই ক্যানেলের মধ্য দিয়ে বোট চলছে।
ছাঁদে বসে অভিনবর কাঁধে মাথা রেখে হাওরের শেষ চিত্র উপভোগ করছে ঝিল।শান্তি ময় এক জার্নি ছিলো এটা। যে জার্নি তে হারানোর ভয় নেই বরং ছিলো প্রাপ্তির সমীকরন।