ধূসর রঙের রংধনু পর্ব -০২+৩

#ধূসর_রঙের_রংধনু -২+৩
#তাসনিম_তামান্না

প্রাণপ্রিয় বোনের হাতে এমন চ ড় খেয়ে আর তার তি*ক্ত বি*ষা*ক্ত কথাগুলো শুনে নিপা হতবিহ্বল হয়ে পড়লো। ক্রু*দ্ধ হয়ে পপি নিপার হাত ঝাঁকিয়েই বলল

— এমন করলি কেনো? তুই জানতিস না আমি আমি রুদ্র কে পছন্দ করি ইনফ্যাক্ট ভালোবাসি

পপির হাত ঝাঁকানোই নিপা পেটে চিনচিনে ব্যথা শুরু হলো। কিন্তু সে ব্যথা এই মূহুর্তে বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারলো না। পপির কথায় বিষ্ময় চোখে তাকিয়ে অস্ফুটস্বরে বলল

— তুই যে রুদ্রকে ভালোবাসিস আমাকে কখনো বলিস নি। শুধু বলেছিলি তোর ভালো লাগে

— হ্যাঁ তখন পছন্দ করতাম এখন ভালোবাসি। আর রুদ্র ও আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু মাঝখান থেকে তুই আর তোর মেয়ে এসে সবটা শেষ করে দিলি। সবটা

নিপা চুপ করে রইলো। কিইবা বলবে ও এসবের কিছুই ও জানতো না। আর রুদ্র সব জেনে বুঝে এসব কি শুরু করলো? রুদ্রের রাগান্বিত কণ্ঠে ভেসে আসলো

–হাও ডেয়ার ইউ? বাসায় এসে ভাংচুর করছ কোন সাহসে?

পপি রুদ্রকে দেখে দৌড়ে রুদ্রকে জড়িয়ে ধরে বলল

–রুদ্র রুদ্র তুমি এসেছ? চল আমরা আজই বিয়ে করবো ওরা তোমাকে জোর করে বিয়ে দিসে না? আমি বুঝেছি আমরা চলে যায়।

রুদ্র পপিকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল

–হোয়াট? তোমার সাথে আমার এমন কোনো সম্পর্ক নেই যার জন্য তোমাকে আমার বিয়ে করতে হবে!

–নেই কিন্তু হবে। তুমি তো জানো আমি তোমাকে ভালোবাসি তুমি তো বলেছিলে ভেবে দেখবে। তুমি তো আমাকে আশায় রেখে ওকে বিয়ে করে নিলে? আমি তো জানতাম তুমি আমাকে ভালোবাসো

–ভুল ভেবে দেখবো বলেছিলাম বাট ভাবার সময় পাই নি। তুমি এখন আসতে পারো।

পপি রাগে অপমানে দাঁত কিড়মিড়ে দাঁড়িয়ে রইলো। রুদ্র পপিকে পিছনে রেখে নিপার কাছে গিয়ে বলল

–বাবুকে সাওয়ার…

রুদ্র নিপার ফর্সা গালে লাল রঙের তিনটা আঙ্গুলের ছাপ দেখে থেমে গেলো। ধুপ করে মাথার অগ্নি কুন্ডলী পাকিয়ে ঠেলে বের হতে চাইলো। রুদ্র দেরি না করে পপির গালে চ ড় মারলো। পপি আর নিপা ভড়কে গেলো। রুদ্র রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে বলল

–এক্ষুনি আমার চোখের সামনে থেকে বের হয়ে যাবি না হলে তোর গা ল আর গা লের জায়গায় থাকবে না। আউট

রুদ্রের ধমকে পপি নিপা কেঁপে উঠল। বাবু কেঁদে উঠলো। পপি রাগে অপমানে আর দাঁড়ালো না কাঁদতে কাঁদতে বেড়িয়ে গেলো। পপি যেতেই নিপা বলল

— আপনি ওকে মারলেন কেনো?

রুদ্র কাবাডের দিকে যেতে যেতে বলল

— উত্তর দিতে বাধ্য নই
–অবশ্যই বাধ্য। আপনি ওকে ভালোবাসে ওকে আশায় রেখে আমাকে কেনো বিয়ে করলে? পপিকে কেনো ঠকালেন আপনি? আমাকে কেনো অ প*রা ধী বানালেন?

— জাস্ট সাট আপ। তোমাকে কে বলল আমি তোমার ঔ আ ধ মে ন্টা ল ছে ছ ড়া মেয়েকে ভালোবাসাবো? আমার দিন এতোটাও খারাপ হয় নি।

–একদম আমার বোনকে নিয়ে আজেবাজে কথা বলবেন না। বিয়ে যখন করবেন না তখন আমার বোনকে কেনো ঠ কা লে ন?

— বোনের হাতে মা র খাওয়ার পর ও বোনের হয়ে দরদ উতলে উঠছে? সাফাই গাইতে তোমার লজ্জা করছে না?

নিপা চিৎকার করে বলল

— না করছে না। কেনো জানেন নিজের প্রতি ঘৃ ণা আসছে এটাই ভেবে যে বোনের ভালোবাসার মানুষ কে আমাকে বিয়ে করতে হলো। ছিঃ এভাবে আমি বেঁচে না থেকে ম রে গেছে শান্তি পেতাম

রুদ্র নিপার মুখে ম রার কথা শুনে নিপার দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে বলল

–তুমি চলে গেলে বাবুকে কে দেখবে? একটা বাচ্চা বাবা-মা ছাড়া কতটা অসহায় কতটা কঠিন সেটা তোমার ধারণার বাইরে। একদিন রাস্তায় গিয়ে পথশিশুদের কাছে গিয়ে শুনো কিংবা এতিমখানায় গিয়ে ঘুরে এসে তখন আর মরতে ইচ্ছে হবে না। বাবুর জন্য হলেও বাঁচতে ইচ্ছে হবে

নিপা রাগে গজগজ করতে করতে বলল

–সবসময় এতো জ্ঞান দিতে আসবেন না আপনার জ্ঞান শুনলে আমার পিত্তি জ্বলে যায়। এইতোই যখন বোঝেন তখন আমাকে বিয়ে করলেন কেনো? একটা মেয়ের মন ভাঙলেন কেনো?

রুদ্র নীরবে হাসলো। সে চমৎকার হাসি। নিপা দেখলো অভ্র হাসছে কিন্তু জানে এটা অভ্র না এটা রুদ্র। অভ্র তার কৃষ্ণপুরুষ। আর রুদ্র ফর্সা। দু-ভাইয়ের মধ্যে ফেসের মিল থাকলেও তারা জমজ নয়। রুদ্র অভ্রর চেয়ে তিন বছরের ছোট। দুজনের স্বভাব ও আকাশ পাতাল তফাৎ। অভ্র প্রাণউচ্ছল হাসি মজা করতে ভালোবাসত মিশুকে ছিল। কিন্তু রুদ্র শান্তশিষ্ট ইন্ট্রভার্ট কিছুটা চাপা স্বভাবের। দুজনের মধ্য আরোও একটা মিল আছে সেটা হচ্ছে দুজনই কাজের প্রতি বেশ সিরিয়াস। দুজনই মায়ের মতো দেখতে হয়েছে। নিপার ধ্যান ভাংলো রুদ্রের কথায়

— এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে না থেকে বাবু কান্না করছে সামলাও। আমাকে তুমি পরেও দেখতে পারবে

রুদ্রের এমন রসিকতা পূর্ণ কথা শুনে নিপার ইচ্ছে হলো নিজের গালে নিজেই ঠাস ঠাস করে কয়টা চ ড় মা র তে। কিভাবে তাকিয়ে ছিলো। নিশ্চয়ই রুদ্র ওকে ছেঁ চ ড়া মেয়ে ভাবছে। রুদ্র মুচকি হেসে ওয়াসরুমে চলে গেলো। নিপা বাবুকে নিয়ে নিচে এসে নীলিমা কে বলল

— মা বাবুকে সাওয়ার নেওয়াবো গরম পানি করি

নীলিমা ধমকে উঠে বলল

— গরম পানি করবে মানে পা গ ল হয়ে গেছো? বাচ্চাদের রোদের গরম করা পানিতে সাওয়ার নেওয়াতে হয়

নিপা মুখটা ছোট করে বলল

— কিন্তু পানি তো রোদে দি নাই এখান কিভাবে কি করবো

— তোমরা কাণ্ডজ্ঞানহীন হতে পারো আমি না দাও বাবুকে আমি ছাদে নিয়ে যাচ্ছি ওর টাওয়াল নিয়ে আসো

নীলিমা বাবুকে নিয়ে চলে যেতে নিপা হেসে ফেললো মানুষ টা যতই কঠিন হতে চাই কিন্তু পারে না সবদিকে ঠিকি তার খেয়াল। ঠিকি সবাইকে আগলে রাখছে। কিন্তু সন্তান ছাড়া তিনি ভালো নেই এটা বেশ করে বুঝতে পারে সবাই।
বাবুর গা মুছে দিচ্ছে আর বাবু পিটপিট করে তাকিয়ে আছে। নিপা বলল

— মা আপনি কি আমার ওপরে রেগে আছেন?
— হঠাৎ এমন প্রশ্ন?
— আমার সাথে আগের মতো কথা বলেন না। সবসময় কেমন গম্ভীর হয়ে থাকেন।
–তারমানে এই না যে আমি তোমার ওপরে রেগে আছি।
— আমার ভালো লাগে না আপনাকে এমন ভাবে দেখতে
নীলিমা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো। প্রথম সন্তান নিয়ে একটা মায়ের কত আশাভরসা থাকে। প্রথম সন্তান তাকে প্রথম মা বলে ডাকে প্রথম মাতৃত্বের স্বাদ দেয়। প্রথম সন্তান মানেই আলাদা একটা টান সবই স্বাভাবিক ভাবে চলছে কিন্তু তবুও কোথাও যেনো কি নেই ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আগের মতো অভ্র অফিস থেকে এসেই জড়িয়ে ধরে বলে না ‘মা কি করছো? কি রান্না করলে?’ মায়ের সাথে এখন আর রাগারাগি, চেঁচামেচি, দুষ্টুমি করে না। হারিয়ে গেছে ছেলেটা সাথে যেনো সব সুখ নিয়ে গেছে। নীলিমার সবটা চোখের সামনে ভাসে। পথ চেয়ে বসে থাকে এই বুঝি অভ্র আসলো। ‘মা’ বলে ডাকে জড়িয়ে ধরলো।
নিপা নীলিমাকে আর কিছু বললেন না। নীলিমা কে চুপ করে থাকতে দেখেই বুঝে গেলো অভ্রর কথা ভাবছে। অভ্র মানুষটাই যে এমন না চাইতেই মনে পড়ে যায় কিছুতেই ভোলা সম্ভব না।

চলবে ইনশাআল্লাহ

আসসালামু আলাইকুম। গল্পটাই ভালোবাসা দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। গল্প অবশ্য টুইস্ট আছে। তাই ধৈর্য্য হারা না হয়ে পড়বেন। ২ পর্ব পড়ে উল্টো পাল্টা মন্তব্য করবেন না।

#ধূসর_রঙের_রংধনু -৩
#তাসনিম_তামান্না

বাবুকে রুমে এনে জামা পড়িয়ে দিতে দিতে নিপা আদুরে কন্ঠে নানানরকমের বুলি আউড়াতে লাগলো। আর বাবু পিটপিট করে তাকিয়ে আছে মায়ের মুখের দিকে হয়তো বোঝার চেষ্টা করছে মা কি বলছে। রুদ্র সাওয়ার নিয়ে এসে বাবুকে কোলে নিয়ে বলল

— বাবুর নাম ঠিক করেছো?
— হ্যা অভ্র ঠিক করে ছিল হৃদি।
— সুন্দর নাম। তাহলে আকিকার অনুষ্ঠান করতে হয়।

নিপা মাথা হেলিয়ে সম্মতি দিলো। রুদ্র আবার বলল
— যাও সাওয়ার নিয়ে এসো আমি বাবুকে দেখছি।

নিপা চলে গেলো। রুদ্র বাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল
— শোন আমি তোর বায়োলজিকাল ফাদার নাই হতে পারি তাই বলে কি তুই আমাকে বাবা বলে ডাকবি না? মনে রাখবি আমি ই তোর বাবা তুই মানিস আর মানিস আমাকেই তোর বাবা বলে ডাকতে হবে।

কথা গুলো বলে বাবুর ছোট্ট কপালে চু!মু খেলো।

— শুনেছি মেয়েরা না-কি বাবাকে ভালোবাসে তুই আমাকে ভালোবাসবি তো? জানিস আমার মা না আমাকে একটুও ভালোবাসে না। তুই আমার মা তো তুই আমাকে ভালোবাসবি তো নাকি তুই ও ঔ অভ্র কে ভালোবাসবি? কি আছে বলতো ঔ অভ্রর মধ্যে সবাই কেনো ওকে ভালোবাসে? আমাকে কেউ কেনো একটুও ভালোবাসে না? তোর মা ও অভ্রকে ভালোবাসে। আমি কি দোষ করেছি বলতো?

নিপা সাওয়ার নিয়ে এসো দেখলো। রুদ্র বাবু কেউ নেই। নিচ থেকে চেচামেচি আওয়াজ আসছে। নিপা একটু ভয় পেলো বাবুর কিছু হলো না তো? ভেবে দিশেহারা হয়ে ছুটলো নিচে।

— সবসময় অভ্র অভ্র জপতে থাকো কেনো? কান প চে গেছে এই নামটা শুনতে শুনতে এবার তো থামো। মানছি তোমার ছেলে। ম রে ছে তো অনেক দিন হলো এবার অন্তত স্বাভাবিক হও। এভাবে থাকলে তো সবকিছুর সমাধান হয়ে যাবে না যা হবার হয়ে গেছে।

নিপা নিচে এসে দেখলো রুদ্র বাবুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শ্বাশুড়ি কাঁদছে শ্বশুর মশাই এর কথা শুনে বোঝা যাচ্ছে ঝামেলাটা অভ্রকে নিয়ে। অভ্র কে নিয়ে এমন কথা শুনে নিপা অবাক না হয়ে পারলো না। বাবা হয়ে ছেলেকে নাম শুনতে শুনতে কান প চে গেছে? এটা কেমন কথা? নিপা তার শ্বশুর শ্বাশুড়িকে যথেষ্ট সম্মান করে এবং ভালোবাসে সেই শ্বশুর মশাই এর থেকে এমন কথা শুনে একটুও ভালো লাগলো না। নিপার হঠাৎ মনে হলো অভ্র কে তার শ্বশুর অভিজিৎ দেখতে পারে না। অভ্র বেচেঁ থাকতেও তেমন কথা বলতেন না। এদিকে রুদ্রকে তিনি প্রচন্ড ভালোবাসেন। এই কথা গুলো আগেও কয়েক বার ভাবিয়েছিলো। এই নিয়ে প্রশ্ন ও করেছিল অভ্র কে অভ্র বরাবর ই এড়িয়ে গিয়েছিলো। এর কারণ কি?

নিপা শ্বাশুড়ির পাশে গিয়ে বসলো। বলল
— মা কাঁদবেন না। এভাবে কাঁদলে আপনার শরীর খারাপ করবে।
অভিজিৎ তেতে উঠে বলল
— হ্যাঁ হ্যাঁ তোমার শ্বাশুড়ি কে বোঝাও ম রা মানুষ ফিরে আসে না।
নিপা শান্ত কণ্ঠে বলল
— প্লিজ বাবা আপনি বাবা হয়ে ছেলের ম রার কথা বলতে একটুও কি বুক কাঁপছে না আপনার খারাপ লাগছে না? কিন্তু বিশ্বাস করুন আপনার কথা গুলো বলতে খারাপ না লাগলেও আপনার মুখ থেকে এমন কথা শুনে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। প্লিজ বাবা আপনি থামুন
অভিজিৎ হুংকার দিয়ে উঠে বলল
— তোমার কাছ থেকে শিখতে হবে আমি কি কথা বলবো আর কি বলবো না?
অভিজিৎ এর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে হয়ত দমে যেতো কিন্তু অভিজিৎ দমলো না। নিপা বলল
— তেমনটা বলি নি বাবা। মা আপনি আসুন রুমে চলুন মেডিসিন নিবেন না হলে প্রেসার বাড়বে।

নীলিমা কে নিয়ে গিয়ে প্রেসারের সাথে ঘুমের ঔষধ ও খাইয়ে দিলো। নিপা জানে এখন না ঘুমালে টেনশন করে শরীর খারাপ করে ফেলবে। নিপার নিজেকে খুব দোষী মনে হলো কেনো ছাদে শুধু শুধু ঔ কথা গুলো বলতে গেলো? ওগুলো না বললে হয় তো নীলিমা এমন কাদতো না আর না অভিজিৎ এমন বিহেভ করতো। ইশ সব ওর দোষ। কেনো পাকনামি করতে গেলো? নিজেকে নিজে উল্টো পাল্টা বকে ওপরের অভ্র আর ওর রুমটার উদ্দেশ্য পা বাড়ালো। আসার সময় দেখলো রুদ্র অভিজিৎ সোফায় বসে আছে।

— বাবা তুমি মায়ের সাথে এভাবে কথা বলবে না।
— আমি জানি তোর কষ্ট হয় অভ্রের কথা বললে। তুই মুখ বুজে সব মেনে নিলে তো আমি সব মানবো না।
— বাবা অযথা এমন করছ হাইপার হয়েও না একটু মাথা ঠান্ডা করো
— কি মাথা ঠান্ডা করবো সারাক্ষণ যদি অভ্র অভ্র করতে থাকে তাহলে কার ভালো লাগবে
— বাবা প্লিজ থামো। মা নিপা শুনলে কষ্ট পাবে। আর আমি চাই না ওরা কষ্ট পাক।
— বিয়ে করে বড় হয়ে গেছিস? বাবার কথায় এখন তো সব দোষ খুঁজে পাবিই।
— বাবা তুমি ভুল বুঝচ্ছ। তুমি এখন তোমার মধ্যে নেই।
— হ্যাঁ আমার মধ্যে ভুত আছে।
রুদ্র অভিজিৎ এর কথা শুনে না হেসে পারলো না।

রুমটার যেনো প্রাণ নেই নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে আছে ধুলো জমতে শুরু করেছে প্রতিটা জিনিসপত্রে। নিপা ওর আর অভ্রর বিয়ের ছবিটা হাতে নিয়ে ওড়নার কোণা দিয়ে ধুলো মুছে অভ্রর ছবিতে চু!মু খেয়ে বলল

— কেমন আছো অভ্র? তোমাকে ছাড়া যে আমি মা কেউ ভালো নেই তুমি কি দেখছো না? খুব হাসছ তাই না? আমাদের কষ্ট দিয়ে খুব ভালো লাগছে তোমার? দুষ্টু তুমি! এই দুষ্টু তুমি টাকে খুব মিস করি বুঝো তুমি? কেনো চলে গেলে বলো তো?

নিপার চোখ দিয়ে টপটপ করে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। পিছন থেকে রুদ্র ডেকে উঠলো

— নিপা। বাবু কাঁদছে। ক্ষুদা লাগছে মনে হয়।

নিপা চমকালো। এই প্রথম রুদ্র তার নাম ধরে ডাকলো। রুদ্র কাজ নিপাকে খুব করে চমকে দিচ্ছে। রুদ্র কে এভাবে সবকিছু মেনে নেওয়ার পাত্র নয়। ওর ওপরে কারোর জোর খাটে না। তবে কি রুদ্র ওকে ইচ্ছে করে বিয়ে করলো? কিন্তু কেনো? নিপার নিজেকে পাগল পাগল লাগছে। কোন গোলোকের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে ও? এতো প্রশ্নের উত্তর ও কীভাবে পাবে?

নিপা চোখ মুছে ছবিটা জায়গা মতো রেখে চলে গেলো। রুদ্র সারা রুম ঘুরে ঘুরে দেখলো। অভ্র আর নিপার ছবি টা ফ্রেম থেকে বের করে দু খন্ড করে আলাদা করে দিয়ে কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো। রুম থেকে বের হয়ে রুম লক করে দিলো যাতে নিপা এ রুমে আসতে না পারে। ওর যে অভ্রকে সহ্যই হয় না।

চলবে ইনশাআল্লাহ

আসসালামু আলাইকুম। প্রথম পর্বে ছেলে লিখে ছিলাম দ্বিতীয় পর্বে মেয়ে লিখে ছিলাম ওটা আসলে মেয়ে হবে একটা আপু ভুলটা ধরিয়ে দিয়েছে ধন্যবাদ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here