প্রণয়ে তুমি পর্ব -১৬

#প্রণয়ে_তুমি
#পর্ব_১৬
#writer_nahida_islam

আমি চাই আমার তুমিটা যেনো সারাজীবন আমার ই থাকে। এমন সকাল প্রতিদিন কাম্য। ভবিষ্যতে আমাদের যেনো একটা ফুটবল টিম হয় এ দোয়া ও করি।

ইফাজকে ধাক্কা দিয়ে কিছুটা দূরে সরিয়ে বেড থেকে নামে রাগি চোখে তাকাতে ই ইফাজ নেমে এসে আমার সামনে দাড়ায়।

-কীসের ফুটবল টিম?

-আমি তুমি আর আমাদের বাচ্চারা। তুমি রাজি থাকলে আমি আর তুমি বাদ। আমাদের বেবি দিয়ে ই একটা ফুটবল টিম বানিয়ে ফেলবো।

ইফাজে বুকের উপর কয়েকটা কিল বসিয়ে দিয়ে ধাক্কা দিতে থাকলাম।

-এই টিয়াপাখি কী করছো এসব।

-এসব অসভ্য কথা বিচার করি।

ইফাজকে ধাক্কা দিতে দিতে রুম থেকে বের হয়ে বাহিরে বৃষ্টির মধ্যে নিয়ে গেলাম।

-অতসী ভিজে যাবো তো।

-আরো এসব কথা বলবেন?

-হে বলবো,

-তাহলে আমি ও আপনাকে রুমে যেতে দিবো না।

-অতসী বৃষ্টিতে ভিজলে ঠান্ডা জ্বর হবে।

-তো আমি কী করবো।

–অতসী রুনে এসো, হঠাৎ বৃষ্টি ভিজলে ঠান্ডা লাগেবে।

অনিতা বেগমের কন্ঠ শুনতে ই অতসী ইফাজের থেকে কিছুটা দূরে দাড়ালো।

-ইফাজ অতসীকে নিয়ে রুমে চলে আস।

ইফাজ এগিয়ে গিয়ে বললো,

-চলো।

অতসীর ইচ্ছে না থাকর শর্তে ও উঠে রুমে চলে গেলো।

-আমি বললে তো আসতে না এখন ঠিক বিচার হইছে।দেখতো তো তোমার জন্য কতটা ভিজে গিয়েছি।

-বেশ হয়েছে।

ইফাজ কথা না বলে ওয়াশরুমে ডুকে গেলো।
দুজনে ফ্রেশ হয়ে ইফাজের বড় চাচার রুমে চলে গেলো।

-কি রে নতুন বউ পেয়ে কি আমাদের ভুলে গেলি ইফাজ।

-কাকিমা তোমার এমন কেনো মনে হলো?

-দূরে দূরে থাকিস তাই বললাম।

মাত্র তো আসলাম এখনই এ কথা বলে দিলা।

ইফাজের বড় চাচি সামনে চা এনে দিলো। অতসী চুপচাপ বসে তাদের কথা শুনছিলো।

-এমন ভাব করছো যেনো লজ্জায় তুমি মরে যাচ্ছো।

-আপনার সমস্যা কী।

-তোমার মতো বদ মেয়ে এমন চুপ করে বসে থাকাটা মানে সামনে ঝড়ের লক্ষণ।

-হে একটু পর আপনার মাথা চিবিয়ে খাবো।

-এখন খাও না কে নিষেধ করছে।

-চুপ করুন, ঝগড়া করা ছাড়া আর কোনো কাজ আছে আপনার।

-ভুতের মুখে রাম রাম।

-আপনি আমার সাথে কথা বলবেন না।

-আমার বউ আমি কথা বলবো তোমার কী?

-আমি আপনার কেউ না।

-কাবিনামা দেখাবো নাকি।

অন্তু দুইটার এমন ঝগড়া দেখে ইফাজের সাথে গিয়ে বসে,

-তোদের কি শান্তি নাই।

-হেই তো সব বকা আমাকে ই দিবি জানি আমি, অতসী আমাকে মেরে ফেললে ও সে ভালো।

-এই আমি আপনার….

-অতসী চুপ।

-আসো যতদিন না এখান থেকে যাচ্ছি তুমি ইফাজের সাথে থাকবে না। আসো আমার সাথে।

অতসী উঠে অন্তুর সাথে চলে গেলো, যাওয়ার আগে ইফাজের দিকে তাকিয়ে ভেংচি কেটে গেলো।

____________________________

বেশ কিছুক্ষণ ইফাজ ছাদে হাটাহাটি করছে। অতসীকে সেই সকাল থেকে এখন পর্যন্ত আর সামনে দেখেনি। হঠাৎ ছাদে ইফাজের চাচাতো বোন তনু কাপড় নিতে আসে,এটা দেখে ইফাজ তনুর কাছে যায়।

-তনু

-হে ভাইয়া বলো,

–তোর ভাবিকে গিয়ে বলবি আমি ডাকি। কিন্তু অন্তু আপুর সামনে বলবি না।

তনু মাথা নাড়িয়ে দৌড়ে গেলো অতসীকে ডাকতে। কিন্তু বেশ কিছু সময় যাওয়ার পর ও তনু তো আসলো ই না সাথে অতসীর ও কোনো দেখা নাই।

-ইফাজ।

তনুকে দেখে দাত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে সামনে তাকিয়ে বললো,

-জ্বি

-অতসীকে ডেকেছিস।

-আরে আমি তো তনুকে…

-তোকে জিজ্ঞেস করেছি অতসীকে ডেকেছিস কিনা।

-হে

-আবার ডাকলে তোকে বাসায় পাঠিয়ে দিবো।

-তোদের শাস্তি না দিলে জীবনেও ঠিক হবি না।

অন্তু কিছুক্ষন বকা বকি করে চলে গেলো।

লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে। সবার সাথে বসে গল্প করছিলাম হঠাৎ তনু এসে বললো,

-ভাবি ইফাজ ভাই আপনাকে ডাকছে, এটা অন্তু আপুর সামনে বলতে নিষেধ করেছে।

ছোট বাচ্চা মেয়ে এর আর কী দোষ দিবো। ইফাজকে সামনে পেলে এখন কতগুলো থাপ্পড় বসিয়ে দিতাম।

-তাহলে ছেলে আমাদের বউকে চোখে হাতড়াচ্ছ। বউ আজকে শাড়ি পড়েছে এটা ইফাজ জানে তো।

-কাকিমা তেমন কিছু না।

-তাহলে কী বউমা।

কি তা তো আমি ও জানি না, নির্লজ্জ বেহায়া ছেলেকে একবার সামনে পাই তারপর মজা দেখাবো।

-কি বিরবির করছো অতসী।

-কিছু না।

ঘড়ির কাটায় টিকটিক করে জানান দিচ্ছে রাত এগারোটা বেজে গেছে। অতসী জানালা পাশে বসে আছে অন্তু বসে বসে রুপমের সাথে কথা বলছে।

অতসী উঠে রুমে থেকে বের হলো পানি আনতে। হঠাৎ ইফাজ সামনে এসে মুখ চেপে ধরে বললো,

-একদম চেঁচিয়ে সবাইকে জাগাবে না টিয়াপাখি।

মুখ ছেড়ে অতসীকে কোলে নিয়ে নিলো। মুহুর্তে অতসী চুপ হয়ে গেলো, অনেক কথা বলার থাকলে ও অতসী কোনো কথা ই বলতে পারছে না।

ইফাজ ছাদে নিয়ে নামিয়ে দিলো,
চারদিকে অঝড়ে বৃষ্টি পড়তে। এতো রাতে গ্রামের সব মানুষ ঘুমিয়ে পড়ে। বৃষ্টি পড়ার শব্দ ছাড়া কিছু ই শুনতে পাচ্ছি না। বৃষ্টিতে ভিজে কাপড় লেপটে গেছে শরিরে সাথে। ইফাজ আমার খুব কাছে এসে বললো,

সকালে তো ভিজতে চেয়েছিলে টিয়াপাখি তা আমি বুঝতে পেড়েছি। সকালে তোমার ইচ্ছে টা পূরণ করতে না পরলে ও এখন তোমার ইচ্ছে পূরণ করতে নিয়ে আসলাম।
ইফাজ প্রতিটি কথা অতসীর কানে ঠোঁট স্পর্শ করে বললো,
-শোন,শাড়ি পড়ে কিন্তু খুব সুন্দর লাগছে।

ইফাজের প্রতিটি কথায় কেপে উঠলাম, বাম হাত দিয়ে ইফাজের শার্টে চেপে ধরেতে ই ইফাজ বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়।

__________________________

সকালে ঘুম থেকে উঠে ই অতসী ইফাজের দিকে তাকিয়ে বললো,

-এখন অন্তু আপুকে কি উওর দিবো।

অন্তু আপুকে উওর দিতে হবে না রেডি হয়ে নেও। আমার ছোট বেলার বন্ধু অনিকের বাসায় যাবো। অনিকের মা রাতে কল দিয়েছিলো তোমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বৃষ্টির দিন তো চলো ইলিশ খিচুরী খেয়ে আসি। আন্টির হাতের রান্না সেই মজা। একবার খেলে ভুলতে পারবে না কখনো।

অনিক নামটা শুনে ই অতসী ভয় পেয়ে যায়। সব সময় অতীত কেনো মনে হয়।

আরে চলো এতো না ভেবে।।

অতসী রেডি হয়ে নিলো। ইফাজ তার ছোট চাচার বাইক নিয়ে অতসীকে নিয়ে অনিকদের বাসায় যায়। গাড়িতে থেকে নেমে অতসী ভেতরে ডুকে অনিককে দেখে থমকে দাড়ায়। তাহলে কী এবার আর শেষ রক্ষে হলো না। কারণ অনিকের কারণে ই আজ অতসী নিজের গ্রাম ছেড়ে দূরে চলে গেছে, অতীস বাবার অসুস্থতার কারণ ও অনিক। অনিকের জন্য কী এবার সংসার টা ভাঙ্গবে…..

চলবে,

[ভুলক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here