#প্রণয়
#পর্বঃ৩৮
#তানিশা সুলতানা
এতো জোরে দরজা ধাক্কানো শব্দে বাড়ির সবাই এক জায়গায় হয়ে যায়। এখন নানুবাড়ির সবাই তানহার দরজার সামনে দাঁড়ানো।
“তানহা দরজা খোল।
দরজা ধাক্কাতে বলে সৈকত।
একে একে সবাই দরজা ধাক্কানো শুরু করে দিয়েছে। সূচক ভীষণ বিরক্ত। তানহা কাচুমাচু হয়ে বসে আছে। ভয়ে একদম চুপসে গেছে। সবাই জানা জানি হয়ে গেলে কি হবে?
সূচকের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা ঘটিয়েই ছাড়বেই।
” তোর নাগর এসে গেছে তোকে ডাকতে।
সূচক নিচু হয়ে তানহার পাশে বসে বাম হাতে তানহার গাল ধরে বলে। তানহা চোখ বন্ধ করে ফেলে। এক পলক তাকিয়েছিলো সূচকের দিকে। চোখ দুটো পুরো টকটকে লাল হয়ে গেছে। চোয়াল শক্ত। রাগে থরথর করে কাঁপছে লোকটা।
কপালে জ্বালা করছে। একবার শক্ত করে গাল ধরাতে ব্যাথা হয়ে গেছিলো এখন আবার ধরাতে আরও ব্যাথা করছে। তবুও তানহা সূচকের হাত সরানোর চেষ্টা করে না।
দরজা ধাক্কানো শব্দ বেরেই চলেছে। সূচক ছেড়ে দেয় তানহার মুখ। তানহা জোরে জোরে শ্বাস টানে। এতোখন যেনো শ্বাস বন্ধ ছিলো।
সূচক উঠে দাঁড়ায়। দুই হাতে চুল টানে।
দরজার দিকে এগোতে গেলেই তানহা হা টেনে ধরে। সূচক থেমে যায়। ঘাড় বাঁকিয়ে ভ্রু কুচকে তাকায় তানহার দিকে।
“প্লিজ
তানহা অস্ফুটস্বরে বলে। কাঁদতে কাঁদতে গলা বসে গেছে মেয়েটার।
” খুব জ্বলছে না?
তোর নাগর এখন জানতে পারবে তুই ম্যারিড। তার জন্য বুকে জ্বালা পোড়া করছে?
শান্ত গলায় তানহার দিকে তাকিয়ে বলে সূচক। ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নেয় তানহা। ছেড়ে দেয় সূচকের হাত। এই লোকটা মানুষ হতেই পারে না। একটা মানুষের ভাষা এতোটা খারাপ কি করে হয়?
“তোর নাগরকে আমি দেখে নেবো।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে দরজা খুলতে যায় সূচক। তানহা উঠে দাঁড়ায়। দুই হাতের উল্টো পিঠে চোখের পানি মুছে ফেলে। ওড়না দিয়ে কপালের রক্ত মুছে মুখে হাসি আনার চেষ্টা করে।
কিন্তু লাভ হয় না। বুক ফেটে কান্না আসছে। চোখের পানি থামছেই না।
সূচক দরজা খুলে দেয়। হুরমুর করে রুমে ঢুকে পড়ে সবাই। সূচক এক পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। সৈকত সবার আগে তানহার কাছে যায়।
তানহার হাত ধরে। মুহুর্তেই সূচকের মেজাজ আবার বিগড়ে যায়।
বাকি সবাই দুজনের দিকে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে।
” বাবু কি হয়েছে? তানহার কাঁদছে কেনো? আর তুই আসছি কখনো? কখনো তো আসিস না।
তমা বেগম সূচকের থুতনিতে হাত দিয়ে বলে। সূচক কাকিমার হাত ধরে বিছানায় বসিয়ে দেয়। তারপর ফ্লোরে বসে কাকির কোলে মাথা রাখে।
“আমি তানহাকে বিয়ে করে নিয়েছি। ওকে ছাড়া থাকতে পারছিলাম না তাই চলে এসেছি।
মুহুর্তেই পুরো রুমটা স্তব্ধ হয়ে যায়। সবার দৃষ্টি এখন সূচকের দিকে। সে নিশ্চিতে চোখ বন্ধ করে আছে।
” ভাইয়া মজা করছেন আপনি তাই না। আপনিও না ভালোই মজা করতে পারেন।
সৈকত হাসার চেষ্টা করে বলে।
সূচক চোখ খুলে। ধাপ করে উঠে পড়ে। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলে।
তমা বেগম এখনো ঘোরের মধ্যে আছে। তানহা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
“তোমার কথা আমি বুঝতে পারলাম না।
তানহার নানা ভাই বলে।
” আমি তো হিন্দিতে কিছু বলি যে বুঝতে পারবেন না। খালি বাংলা ভাষাতে বলেছি। তানহাকে আমি বিয়ে করে নিয়েছি। আমরা বিবাহিত।
সবাই স্তব্ধ হয়ে গেছে। বিয়েটা মানতে সবারই সমস্যা হচ্ছে। এটা তো হতেই পারে না। খুব ছোট বেলা থেকেই তানহাকে সৈকত পছন্দ করে। আর এটা এই বাড়ির সবাই জানেও। তারা ঠিক করে ছিলো ইন্টার শেষ করার পরে সৈকতের সাথে বিয়ে দিয়ে দেবে।
সৈকত তানহার দিকে তাকিয়ে আছে। এটা বিশ্বাস করার মতো?
“আমার রেস্টের প্রয়োজন। কাকিমা রুমটা খালি করে দিতে বলো।
সূচকের স্পষ্ট ভাষা। তমা বেগমের ঘোর কাটে। সে তাকায় সূচকের মুখের দিকে। ভয়ে ওনার বুক কাঁপছে। এই কথা যদি বাড়ির সবাই জানতে পারে কি হবে অবস্থা?
সূচককে নিজের মেয়ের জামাই হিসেবে পেয়ে একদম অখুশি না তমা বেগম। বরং তার খুশিই লাগছে। মেয়েটা তো সারাজীবন তাদের কাছেই থাকবে। কিন্তু বাকি সবাই কিভাবে নেবে এটা?
” কাকিমা তাহলে কি আমি ওকে নিয়ে চলে যাবো।
চমকে ওঠে তমা বেগম। বাকি সবাই বিরক্ত সূচকের প্রতি। সৈকতের মুখে কোনো কথা নেই। ও কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। তানহার লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে। এতো নিলজ্জ মানুষ হয়?
“চলো সবাই।
তমা বেগম রিনরিনিয়ে বলে দরজার দিকে হাঁটা শুরু করে। বাকিরাও দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বেরিয়ে যায়।
শুধু সৈকত দাঁড়িয়ে আছে। ভীষণ রাগ হচ্ছে সৈকতের।
” তোমাকে কি যাওয়ার জন্য পালকি ভাড়া করে দিতে হবে?
চোখ ছোটছোট করে বলে সূচক।
“ও মাথায় ব্যাথা পেয়েছে। রক্ত পড়ছে।
সৈকত তানহার দিকে তাকিয়ে বলে। হাত বাড়িয়ে তানহার কপালে হাত দিতে যায় দুই পা পিছিয়ে যায় তানহা।
এতোখনে শান্তি পেলো সূচক।
” বউ আমার, আঘাত টাও আমারই দেওয়া, আর সারানোর দায়িত্বও আমার। সো তোমার এখানে কোনো প্রয়োজন নেই।
ওই যে ওই দিকে দরজা। যেতে পারো।
শান্ত গলায় অপমান যাকে বলে। সৈকত দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।
নিঃশব্দে বেরিয়ে যায়। সূচক গিয়ে দরজা আটকে দিয়ে আসে। তানহা এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ইচ্ছে করছিলো সবার সাথে চলে যেতে কিন্তু এই লোকটা আরও বেশি সিনক্রিয়েট করবে বলেই গেলো না।
“সৈকতের আশেপাশে তোকে দেখতে চাই না আমি।
বলতে বলতে ড্রয়ার থেকে স্যাভলন আর তুলো বের করে সূচক।
” আপনার কথা আমি শুনবো না।
তানহা বিরবির করে বলে। জোরে বললে আবারও মারতে পারে।
সূচক খাটে বসে। তানহার হাত ধরে টান দিয়ে বসিয়ে দেয়।
“কি করে কথা শোনাতে হয় সেটা আমি ভালো করেই জানি।
তুলোয় স্যাভলন মাখাতে মাখাতে বলে সূচক। তানহা শুধু নাক ফুলায়। এতোখন কান্না করার ফলে ফুঁপানো কমছে না। একটু পরপরই ফুঁপিয়ে উঠছে।
সূচক তানহার মুখ নিজের দিকে ফিরিয়ে ঠেসে ধরে তুলোটা হ্মত স্থানে। ব্যাথা চোখ মুখ খিঁচে ” আহহহ ” করে ওঠে তানহা।
“কেমন লাগছে? সৈকতের সাথে তোকে দেখলে আমারও এমনই লাগে। বা এর থেকে বেশি লাগে।
দাঁতে দাঁত চেপে বলে সূচক। তানহা দাঁতে দাঁত চেপে সয্য করে কিছুই বলে না।
ভালো করে পরিষ্কার করে দেয় সূচক। তারপর আবার স্যাভলন আর তুলা জায়গা মতো রেখে বিছানায় পা মেলে দিয়ে বসে। তানহা এখনো খাটের এক কোণায় বসে আছে।
” আমার পাশে আয়।
চোখ বন্ধ করে ডাকে সূচক। তানহা না শোনার ভান করে থাকে।
তানহা আসছে না দেখে সূচক চোখ খুলে তাকায়।
সূচক দাঁতে দাঁত চেপে এক টানে তানহাকে নিজের কোলের ওপর বসিয়ে দেয়। তানহা দাঁতে দাঁত চেপে চোখ বন্ধ করে থাকে। একদম কথা বলবে না এই লোকটার সাথে।
“একদম ভাব দেখাবি না আমাকে। তোর ভাব দেখার টাইম আমার নাই।
তানহার মাথাটা বুকের ওপর ঠেসে ধরে বলে সূচক৷ তানহা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। বয়েই গেছে এই হনুমানকে ভাব দেখাতে।
” কোচিং এ আমি টিচার। সেখানে সবাই পড়তে যায়। নিশ্চয় আমার বউ দেখতে কেউ পাঁচশো টাকা মাস দিয়ে আমার যায় না।
সেখানে যাওয়া তোর ভুল ছিলো। সেখান থেকে সোজা বাড়ি না ফিরাটা আরেকটা ভুল ছিলো।
সৈকতের গায়ের ওপর ঢলে পড়াটা আরো একটা ভুল ছিলো।
এখন বল এতো গুলো ভুলের শাস্তি কি দেওয়া যায় তোকে?
তানহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে সূচক। তানহা চুপচাপ শুনছে।
“তোকে অন্য কারো সাথে সয্য হয় না আমার। মাথা ঠিক রাখতে পারি না একদম।
তানহাকে বুকের ওপর রেখেই শুয়ে পড়ে। বা হাত এগিয়ে লাইট অফ করে দেয়।
🥀🥀🥀
রাত এগারোটা বাজে। এই সময় বাড়ির কলিং বেল বেজে ওঠে। আগে কলিং বেল ছিলো না। ইদানীং সূচক লাগিয়েছে। তমাল, তাহের বসেই শুয়েছে। ইভা তোহা আর ইরা অনেক আগেই শুয়ে পড়েছে। সাদিয়া বেগমও সবে শুয়েছে।
এমন সময় কলিং বেল বাজায় বেজায় বিরক্ত হয় সাদিয়া বেগম। উনি ছাড়া যে অন্য কেউ আর দরজা খুলবে না এটা জানা আছে।
গায়ের ওপর থেকে কম্বল সরিয়ে উঠে বসে লাইট অন করে।
সূচক আজকে বাড়ি ফিরবে না তমা ফোন করে জানিয়েছে। তাহলে কে এসেছে?
মনের মধ্যে খানিকটা ভয় ঢুকে যায় ওনার।
” হ্যাঁ গো শুনছো? চলো দেখে আসি কে এসেছে?
স্বামীকে ডেকে বলেন। তমাল ঘুমায় নি। তাই চট করে উঠে বসে।
দুজন মিলে গিয়ে দরজা খুলে। দরজা খুলতেই দুজনই অবাক হয়ে যায়।
ওনাদের সামনে ইমন দাঁড়িয়ে আছে।
“তুমি এখন এখানে?
তমাল জিজ্ঞেস করে।
” ভেতরে এসে বলি?
ইমন রিনরিনিয়ে বলে। এতোখনে তোহা ইরা ইভাও ঘুম থেকে উঠে গেছে।
ওরাও চলে আসে বসার ঘরে।
ইমন অনুমতির অপেক্ষা না করে সুর সুর করে ভেতরে ঢুকে সোফায় বসে পড়ে। আর সামনে তমালকে বসতে বলে। সাদিয়া বেগম দরজা আটকে এসে স্বামীর পাশে দাঁড়ায়।
এতোরাতে ইমনকে দেখে তোহার চোখ কপালে উঠে যায়। ইরা খুশি হয়। আজকে সরাসরি কথা বলবে ইমনের সাথে।
“আংকেল বসুন না।
ইমন রিকোয়েস্ট করে বলে। তমাল সাদিয়া বেগমের দিকে এক পলক তাকিয়ে বসে পড়ে।
” আংকেল আমি আপনার মেয়েকে ভালোবাসি। বিয়ে করতে চাই ওকে। আমার বাড়িতেও বলেছি। ওনারা বলেছে কাল আসবে। কিন্তু আমি অপেক্ষা করতে পারছিলাম না বলে এখনই চলে এসেছি।
একদম না বলবেন না কিন্তু আংকেল। আমি তোহাকে সত্যিই খুব ভালোবাসি। এই যে আপনাদের সোফা ছুঁয়ে বললাম।
মিথ্যে বললে এতোখনে সোফা ভেঙে যেতো।
#প্রণয়
#বোনাস পর্ব
#তানিশা সুলতানা
সবাই চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে ইমনের দিকে। তোহা চোখ মুখ খিঁচে দাঁড়িয়ে আছে। এরকম একটা কিছু ঘটবে এটা কল্পনারই বাহিরে। ইরার চোখে পানি চিকচিক করছে। এটা কি হয়ে গেলো ও ভাবতেও পারছে না।
“এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো আমার দিকে? আমি একদম সত্যি কথা বলেছি। আপনার মেয়েকে একদম সুখে রাখবো। খুব ভালো রাখবে। এতো ভালো রাখবো এতো ভালো রাখবো যে আপনার মেয়ের মুখে সারাক্ষণ ইমন আর ইমন থাকবে।
এক গাল হেসে বলে ইমন। তমাল খুক খুক করে কেশে ওঠে। তোহা আস্তে আস্তে নিঃশব্দে নিজের রুমে চলে যায়। সাদিয়া বেগম মাথা নিচু করে ফেলে।
” ও আংকেল বিয়ে দেবেন না? না করবেন না কিন্তু। না করলে আমি এখানেই বসে থাকবো।
পা দুটো তুলে একদম গোল হয়ে বসে দুই গালে হাত দিয়ে বলে ইমন। ইরার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।
“কে এসেছে ভাই?
তাহের হাই তুলতে তুলতে বসার ঘরে আসে। ইমনকে দেখে হামি দেওয়া থেমে যায়। গোল গোল চোখ করে তাকায় ইমনের দিকে।
ইমন তাহেরের দিকে তাকিয়ে এক গাল হাসে।
” আংকেল ভালো আছেন? বাড়িতে বিয়ে লেগে যাচ্ছে। জানেন না কি?
খুশিতে গদগদ হয়ে বলে ইমন। তমাল কপালে হাত দিয়ে বসে। তাহের একটা ধাক্কা খায়। এখন আবার কার বিয়ে? চুপচাপ গিয়ে ভাইয়ের পাশে বসে পড়ে তাহের।
“আপনারা কনফিউজড হয়ে গেছেন? হওয়ারই কথা। বাবাও বলেছিলো এমনটাই হবে। তার জন্য আমিও একটা আইডিয়া পেয়েছি।
আমি বরং ছোট আংকেলের সাথে ঘুমিয়ে পড়ি কেমন? আপনারা সারা রাত ভাবেন। সকালে উঠে যদি দেখেন সোফা আনাম আছে তাহলে হ্যাঁ বলে দেবেন। ওকে?
বলতে বলতে উঠে দাঁড়ায় ইমন। সবার চোখ বড়বড় হয়ে যায়।
” আংকেল আসুন। ঘুমিয়ে পড়ি। আমার তো বিয়ের চিন্তায় ঘুম আসবে না। আপনারা বরং ঘুমিয়ে পড়ুন।
ইমন তাহেরের হাত ধরে টেনে তুলে হাত ধরে এক প্রকার টেনেই নিয়ে যায়।
তমাল কপালে হাত দেয়। সাদিয়া তামালের পাশে বসে।
“হ্যাঁ গো
ছেলেটা কি পাগল হয়ে গেলো না কি?
” তুমিও যেখানে আমিও সেখানে। জানবো কি করে?
🥀🥀
তোহা রুমের মধ্যে পায়চারি করে যাচ্ছে। বাইরে কি হচ্ছে আল্লাহ জানে। ওই পাগলটা আবার আবোলতাবোল বলে দিচ্ছে না তো?
তখনই ইভা আর ইরা রুমে ঢোকে।
“এসব কি হচ্ছে তোহা?
ইরার চোখে এখনো পানি টলমল করছে।
তোহা চমকে ওঠে৷
“আমি কি করে জানবো আপু?
চোখ মুখ কুঁচকে বলে তোহা।
” আপু কথা বাড়াস না। চল ঘুমিয়ে পড়ি।
হামি দিতে দিতে বলে ইভা। তোহা ইরার দিকে এক পলক তাকিয়ে শুয়ে পড়ে। তোহার পাশে ইভাও শুয়ে পড়ে। আর ইরা জানালার কাছে চলে যায়। ঘুম ওর এমনিতেও আসবে না।
🥀
“তানহা
নরম গলায় ডাকে সূচক। তানহা কথা বলে না। লেপ্টে পড়ে থাকে সূচকের বুকে।
” সরি রে মাথা ঠিক ছিলো না আমার। তোকে অন্য কারো সাথে জাস্ট সয্য করতে পারি না আমি।
যখন দেখলাম তুই সৈকতের হাত ধরেছিস ট্রাস্ট মি ভেতরটা পুরে যাচ্ছিলো। আর সেই রাগটা তোর ওপর ঝেড়েছি।
তানহার মাথায় চুমু দিয়ে বলে সূচক। তবুও তানহা কিছু বলে না। একটু নরে চরে সূচককে একটু গভীর ভাবেই জড়িয়ে ধরে।
“তোর খুব অভিযোগ আমি নিরামিষ। তো আজকে একটু আমিষ হতে চাইছি। তুই কি বলিস?
হেসে বলে সূচক। তানহা তবুও কথা বলে না। সূচক দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। এই মেয়েটার অভিমান ভালোবাসার চেয়েও বেশি গভীর।
প্রেমিকার অভিমান হওয়াটাই ভালো। সম্পর্কে রাগ অভিমান অভিযোগ ভালোবাসা সবটারই প্রয়োজন আছে।
তবে প্রেমিককেও অভিমান ভাঙানোর হ্মমতা রাখতে হবে। তবে সূচকের একমাস প্রেমিকা যে অভিমান করে নেই সেটা বুঝতে পারছে সূচক। বরং মহারানী ইচ্ছে করেই কথা বলছে না। অভিমান করলে এতোখনে বুক থেকে সরে যেতো।
সূচক এবার দুষ্ট হেসে তানহার কোমরে হাত রাখে। তানহা একটু নরে ওঠে। মুচকি হাসে সূচক। এবার সূচকের ছোঁয়া গুলো অবাধ্য হয়ে ওপরে উঠতে থাকে। তানহা ছিঁটকে সরে যায় সূচকের থেকে৷ কাঁপছে মেয়েটা। জোরে জোরে শ্বাস টানছে। সূচক ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।
“কি হলো তোর?
কপাল কুঁচকে জিজ্ঞেস করে সূচক।
” আআমি মায়ের সাথে ঘুমবো।
তানহা ফাঁকা গলায় ঢোক গিলে এদিক ওদিকে তাকাতে তাকাতে বলে।
“কখনোই না। আমি এতো কষ্ট এখানে এসেছি কি মশা মারতে?
তানহাকে টেনে শুয়িয়ে দেয় সূচক। তারপর তানহার দুই পাশে হাত রেখে তানহার দিকে ঝুঁকে।
তানহা চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে আছে।
সূচক খানিকক্ষণ তাকিয়ে থাকে তানহার কুঁচকানো মুখ টার দিকে তাকিয়ে থাকে। সূচকের শ্বাস তানহার চোখে মুখে আঁচড়ে পড়ছে।
সূচকের সাথে তানহার একটুও ছোঁয়া লাগছে না। জাস্ট ছুঁই ছুঁই হয়ে আছে।
” সসরুন প্লিজ
চোখ বন্ধ রেখেই কাঁপা কাঁপা গলায় বলে তানহা।
সাথে সাথে সূচক মিশে যায় তানহার সাথে। আঁকড়ে ধরে তানহার কোমল নরম ওষ্ঠদ্বয়। হাত ঢুকিয়ে দেয় তানহার কামিজের ফাঁকে।
তানহা বন্ধ করা চোখ দুটো একদম খিঁচে ফেলে। দুই হাতে সূচকের চুলগুলো মুঠো করে ধরে।
“লাভ ইউ তানহা। আই লাভ ইউ সো মাচ।
ঠোঁট ছেড়ে তানহার কপালে কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস টানতে টানতে বলে সূচক। তানহার যেনো শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। ও সমানে শ্বাস টানছে। এতোখন কি হলো ভাবতেই শরীর জারিয়ে যাচ্ছে।
” আই নিড ইউ তানহা। খুব করে তোকে চাইছি আমি। এতোদিন কন্ট্রোল করে রাখা অনুভূতি আজকে কন্ট্রোল করতে পারছি না।
কি করবো বল তো?
তানহার কপালে চুমু দিয়ে বলে সূচক। কথা গুলো জরিয়ে যাচ্ছে।
তানহা কোনো কিছুই চিন্তা ভাবনা না করেই সূচককে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে। সূচকের এরকম কন্ঠ একদম নিতে পারছে না ও। থামানো উচিত ছিলো সূচককে। মুচকি হাসে সূচক।
এতোখন যেনো এটারই অপেক্ষায় ছিলো।
“আজকে থেকে জীবনটা নতুন ভাবে শুরু হলো।
চলবে
চলবে