#প্রমত্ত_অঙ্গনা
#লেখিকা_আরোহী_নুর
(১৯)
হাসপাতালে এসে একটা ক্লাস এটেন্ড করে নিজের কেবিনে বসে আছে আঁখি,আদৃতের বর্তমানে কোনো ক্লাস নেই,অন্য কাজও নেই তেমন তাই আঁখির কেবিনে চলে আসলো।
″মে আই কাম ইন হিটলার?″
″আরে ডা.সাহেব আপনি?আসুন।তা হিটলার ডাকটা কবে ছাড়বেন?″
″হিটলারকে হিটলার ডাকব না তো কি ডাকব?″
″কি হিটলারি করলাম আপনার সাথে আমি? ″
″তা তুমিই তো ভালো জানো।″
″ছয় বছর আগের কথাগুলো এখনও মনে নিয়ে বসে আছেন।এমনও তো হতে পারে হিটলার আঁখি এখন বদলে গেছে।″
″হিটলার আঁখি কখনও বদলাতে পারে না,পরশু সকালেই রিপোর্টার লিজানকে ভরা সমাজে থাপ্পড় মেরে তাকে সঠিক জবাব দিয়ে এসে যদি আজ বলে সে বদলে গেছে তবে কি করে মানা যায় বলো?″
″আরে কিছু কিছু লোক এমন আছে যাদের উপস্থিত মূহুর্তে সঠিক জবাব না দিলে তারা সায় পেয়ে মাথায় ওঠে, যা আমি কখনও মেনে নেই না।″
″এটাই তো হিটলার আঁখি,আমার মতে প্রতিটা মেয়েকে তোমার মতো হওয়া চাই।″
″বাহ,ডা.নিরামিষও কারো প্রশংসা করতে পারেন আমি জানতাম না,এত বড় পরিবর্তনের কারণ জানতে পারি এবার?″
″এটা কোনো পরিবর্তন না,মানুষ কখনও কখনও নিজের পছন্দের মানুষের খুশির জন্য তার রঙে রেঙে যায়,আমার ক্ষেত্রেও এমনই কিছু মনে করতে পারো।″
″তা সেই মানুষটা কে জানতে পারি? ″
″আছে একজন,যাকে খুব করে চাই আল্লাহর কাছে রোজ মোনাজাতে।″
আঁখির চোখে গভীর চাহনি স্থির রেখে মনের গহীনের লুকানো সত্য যেন তাকে বুঝানোর চেষ্টা করে গেল আদৃত,আঁখিও অপলক চাহনিতে তাকিয়ে আদৃতের মুখে না বলা সত্য তার চোখের মধ্যে দিয়ে বোধগম্যে নেওয়ার সম্ভবপর চেষ্টা করতে লাগল,যেখানে নিজের জন্য অসীম ভালোবাসার গভীরতাই খোঁজে পাচ্ছে আঁখি,যার হয়ত কোনো শেষ নেই।তবে তাতে বিশ্বাস করে উঠার সক্ষমতা নেই তার।বড্ড অস্বাভাবিক অনুভুতি হলো আঁখির এতে,তাই আদৃতের উপর থেকে চোখ সরিয়ে নিল,কেবিনে তখন প্রবেশ করল ইন্সপেক্টর জিসান তার ফোর্স সহিত।আঁখি বেশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল তাকে।
″আরে ইন্সপেক্টর জিসান আপনি?″
″হ্যাঁ আমি ডা.আঁখি,আপনার সাথে কিছু দরকারি কথা ছিলো।বসতে পারি?″
″হ্যাঁ, অবশ্যই।″
″জিসান বিচক্ষণ এক দৃষ্টি আদৃত আর আঁখি উভয়ের উপর বুলিয়ে আদৃতের পাশের চেয়ারে বসল।এবার বলা শুরু করল।
″হ্যাঁ তো মিস আঁখি,আমার আবার সময় কম তাই সোজা পয়েন্টে আসি।আপনি গত পরশু রিপোর্টার লিজানকে পাবলিক প্লেসে থাপ্পড় মেরেছেন,উনার সাথে আপনার সমস্যা হয়েছিল আর কাল রাতেই তাকেও নির্মমভাবে হ*ত্যা করা হয়,কলি আর লিজান মা*র্ডা*র কেসে আপনি বর্তমানে মেইন সাসপেক্ট,তাই বলুন কাল রাত ১১ টার সময় আপনি কোথায় ছিলেন?″
″আমার বাড়িতে, কেনো?″
″তার কি কোনো প্রমাণ আছে আপনার কাছে?″
″অবশ্যই,আপনি আমার বাড়ির সিসিটিভি ফোঁটেজ চেক করতে পারেন,রাত ১১ টায় আমি আমার খাবার টেবিলে বসে ডিনার করছিলাম,আপনার বিশ্বাস না হলে সেখানকার ফোঁটেজ আপনি চেক করে নিতে পারেন আমার বাড়ি গিয়ে।আমি আমার কাজের লোক আর গার্ডদের বলে দিচ্ছি,আপনি নির্ধিদায় যান।″
কথাগুলো বলেই আঁখি তার একজন গার্ডকে ফোন করল।
″আমির একজন ইন্সপেক্টর আসবেন,নাম জিসান হাসান,উনাকে আমার বাড়ির সকল স্থানের সিসিটিভি ফোঁটেজ দেখিয়ে দিবে,উনি যেদিনের আর যে ক্ষণের দেখতে চাইবেন সব।″
″ওকে ম্যাম।″
ফোন কেটে এবার বলল আঁখি।
″এবার আপনি যেতে পারেন।″
″ধন্যবাদ, আপনি না বললেও আমি তা করতে যেতাম,আর তা করতে আপনি আমাকে আটকাতেও পারতেন না,কিন্তু ভাবলাম এর আগে আপনাকে বলে নেওয়া যাক,আমি আবার অপরাধীদের সবসময় একটা সুযোগ দিতে পছন্দ করি।″
″আপনি এতো আত্নবিশ্বাসের সাথে কিভাবে বলতে পারেন যে আঁখিই অপরাধী?ভুলে যাবেন না প্রমাণ ব্যতীত আপনার কাউকে মন গড়া অপরাধী বলার কোনো ক্ষমতা নেই।″
″ক্ষমতা নিয়ে আমার সাথে কথা বলতে আসবেন না ডা.আদৃত।আপনি আপনার কাজ করুন,আমাকে আমার কাজ শেখাতে না আসলে খুশি হবো।″
আদৃত আরও কিছু তাকে বলবে এর আগেই আঁখি বলল।
″ইট’স ফাইন ডা.আদৃত,উনাকে উনার কাজ করতে দিন,আমি জানি আমি কে আর আমি কি করতে পারি। বাকি তো সন্দেহ যে সেই করতে পারে,করতে দাও,প্রমাণ ব্যতীত কারোই কিছু করার থাকে না,এখন সে পুলিশ হোক বা কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী।″
″অভার কনফিডেন্ট ভালো না ডা.আঁখি।প্রমাণ সহিত কথা বলতে আসব আপনার সাথে।″
″আমিও অপেক্ষা করব আপনার।″
আঁখি নির্ভয়ে ইন্সপেক্টর জিসানের জবাব দেয়,ইন্সপেক্টর জিসান প্রস্থান করেন সাথে সাথে,আঁখি এবার টেবিলে রাখা গ্লাস থেকে গ্লাস ভর্তি পানি এক টানে খেয়ে নেয়।আঁখির হাবসাব দেখে আদৃতের কেমন জানি লাগল,যেন আঁখিকে স্বাভাবিক দেখা যাচ্ছে না,আদৃত কিছু বুঝে উঠার আগেই আঁখি জ্ঞান হারিয়ে ফ্লোরে পরে গেল।
বেশ চিন্তিত হয়ে বসে আছে জিসান,আঁখির বাড়ির সিসিটিভি ফোঁটেজ চেক করে এসেছে,লিজানের মৃ*ত্যু*র সময় আঁখি তার বাড়িতেই ছিল,এমনকি কলির মৃ*ত্যু*র সময়ও আঁখি তার বাড়িতে ছিল সিসিটিভি ফোঁটেজ মোতাবেক।তবে কে খু*ন করল এদের!সবকিছু তো আঁখিকেই ইশারা করে,কিন্তু সে একসাথে দুই স্থানে কিভাবে থাকতে পারে!কলি আর লিজানের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের মৃত্যুর সময় তো আর ভুলও দেখাতে পারে না।কিছু ভেবে মিলাতে পারছে না জিসান,হঠাৎ তার একজন কনস্টেবল আসলো তার কাছে।
স্যার,আপনি বলেছিলেন প্রমত্ত অঙ্গনা নামের ৬ বছর আগের ফাইল বের করতে,কিন্তু তা বের করতে গিয়ে বেশ পুরাতন একটা আলমারি থেকে প্রমত্ত অঙ্গনা নামের আর একটা ফাইল বেড়িয়ে আসে,যেটা প্রায় ১৩ বছর পুরোনো।
কথাটা শুনে অনেক আশ্চর্য হলো জিসান,কন্সটেবল এর হাত থেকে ফাইলটা নিয়ে নিল টান দিয়ে। ফাইলটা খোলে কৌতূহল ও মনোযোগ সহকারে পড়তে শুরু করল।
ফাইলের লেখাগুলো পড়ার পর বাকরুদ্ধ হয়ে গেল ইন্সপেক্টর জিসান,১৩ বছর আগে একজন পুরুষ খুন হয়েছিল যার লা*শে*র পাশে প্রমত্ত অঙ্গনা নামটা পাওয়া যায়,তারপর আরও ১৫ টা খুন হয় সব কয়টা লা*শে*র পাশে একই নাম ছিল,কিন্তু আলাদা বিষয় সেই সকল লা*শে*র পাশে প্রমত্ত অঙ্গনা নামটা লিখা থাকার সাথে কয়েকটা বাক্যও লিখা ছিল।সেগুলো এই ফাইলে এতো বিস্তারিত ভাবে দেওয়া না থাকলেও জিসান লক্ষ করল আলাদা একটা বিষয়।৬ বছর আগে যখন একজন পুরুষের খুন হয়েছিল তখন তার লা*শে*র পাশে প্রমত্ত অঙ্গনা লেখাটার সাথে লেখা ছিল।
কারো অকাল মৃত্যুর আসল কারণ জীবিত অবস্থায় মানায় না।
৪ বছর আগেও তিনটে খু*নের প্রথম একজন পুরুষের মৃত্যু হয় যার লাশের পাশে লিখা ছিল,
ইচ্ছের বিরুদ্ধে নারীর লাজ হরণকারী বেঁচে থাকার অধিকার রাখে না,
প্রমত্ত অঙ্গনা।
কিন্তু এর পরবর্তী দু’ইটা লা*শে*র পাশে প্রমত্ত অঙ্গনা নাম ব্যতীত অন্য কোনো বাক্য পাওয়া যায় নি, ১৩ বছর আগের ফাইল অনুযায়ী প্রমত্ত অঙ্গনা তার নামের সাথে খু*নে*র কারণ বলে দেয়।কিন্তু ৪ বছর আগের শেষ সেই দুই খু*ন আর এখন কলি আর লিজানের খুন এই চারটে লা*শে*র পাশে প্রমত্ত অঙ্গনা নাম ব্যতীত কিছুই পাওয়া যায় নি,এর মানে কি হতে পারে!এই প্রমত্ত অঙ্গনা ১ জন,না দু’জন। এমনও হতে পারে কেউ আসল প্রমত্ত অঙ্গনার নাম নিয়ে নিজে খু*ন করে বেড়াচ্ছে। সব কিছুই যেন মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে জিসানের,অনেক ভাবনার পর জিঙ্গেস করল হাবিলদার ফয়েজকে জিসান।
″ফয়েজ সাহেব ১৩ বছর আগে প্রমত্ত অঙ্গনা কেস কে দেখছিল আপনি জানেন?আপনি পুলিশ ফোর্সে অনেক আগ থেকে আছেন,আপনি জানতে পারেন বলে মনে হয় আমার।″
″স্যাঁর যতটুকু জানি ইন্সপেক্টর ইশতিয়াক কেসটা দেখছিলেন,কিন্তু আমি শুনেছি এ বিষয়ে, জানিনা তেমন কিছু।″
″ইশতিয়াক সাহেবের বাড়ির এড্রেস জোগার করে দিতে পারবেন আমায়?″
″ইয়েস স্যার,আমি দেখছি।″
স্যালাইন চলছে আঁখির,অচেতন হয়ে পরে আছে একটা কেবিনের বেডে,পাশে আদৃত বসে আছে।খুব ইচ্ছে হলো তার আঁখির মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার,তার হাতটা ধরার,তবে হাতটা ধরতে গিয়েও ধরল না।ব্যাথাভরা স্বরে বলল।
তোমার অগোচরে কখনও তোমাকে স্পর্শ করি নি আর করবও না,আমার ভালোবাসায় যে কোনো অবিত্রতা নেই সুখপাখি।আমি যদি পারতাম তবে এক নিমিষেই তোমার সব অশান্তির কারণ দূর করে দিতাম, নিয়ে যেতাম তোমাকে এক নতুন সুখের ছোঁয়ায়,যেখানে দুঃখ তোমায় দূর থেকেও দেখে যাওয়ার সাহস জুটিয়ে ওঠতে পারত না।সেই স্বাধীন, চঞ্চল আঁখি কখনও আর দুঃখের সাগরে তলিয়ে যেতে পারত না,আমারই দোষ ছিল আঁখি সেদিন যদি ওভাবে চলে না যেতাম,জো*র করে নিজের ভালোবাসা নিজের কাছে ধরে রাখতে চাইতাম তবে হয়ত আজ আমাদের দু’জনেরই জীবন সুখে ভরপুর হতো।কিন্তু তুমি চিন্তা করো না,আমি ফিরে যখন এসেছি তবে আর তোমায় কোনো পিছুটানে পরতে দিব না।মিথ্যে হাসির আড়ালে আর কখনও তোমাকে লুকোতে দিব না সত্য ব্যাথা,তোমার চেহারার হাসিতে শুধু সত্য সুখ লুকিয়ে থাকবে তুমি দেখে নিও।
আঁখির দিকে তাকিয়ে আদৃত কথাগুলো বলছিল হটাৎ আঁখির জ্ঞান ফিরে,চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে সামনে আদৃত বসে আছে।
আঁখি ঝটপট উঠে বসলে আদৃত তাতে বাঁধা প্রদান করে।
″কি করছ?শুয়ে থাকো,তোমার শরীর অনেক দূর্বল, ইউ নীড রেস্ট। ″
″আই এম ফাইন ডা.আদৃত,তা আমাকে এখানে কে এনেছে?আর স্যালাইন কে দিলো?″
″সামনে বসে থাকা আসত এক জলজ্যান্ত মানুষ দেখতে পাও না?″
″তার মানে আপনি আমায় কোলে করে এখানে এনেছেন?″
″তো আমি তোমায় আর কিভাবে আনতে পারতাম?″
″তাই বলে আপনি আমাকে না বলে,আমার অগোচরে আমায় কোলে নিবেন!″
″প্রয়োজনে নিয়েছি আঁখি,এমন ভাব করছ যেন আর কখনও নেই নি,একসময় নিজে থেকেই কোলে চড়ার ধান্দা করতে যখন তখন আর এখন ক্ষেপে ওঠছ।″
″একসময় উঠতাম বলে আপনি আমায় রোজ কোলে নিবেন এখন?আর তখন আমি ১৮ বছরের তরুণী ছিলাম আর এখন ২৫ বছরের মেচোয়ার একজন নারী,তাছাড়া আমাদের সম্পর্ক এখন আলাদা।″
″কোন বইতে লিখা আছে ১৮ বছরের মেয়ে কোলে ওঠতে পারবে আর ২৫ বছরের নারী পারবে না।″
″আপনি খুব বেশি লজিক খোঁজছেন বলে মনে হয় না?″
″তুমি খুব বেশি লজিক দেখাতে চাইছ বলে মনে হচ্ছে না?″
″আপনি কিন্তু এবার অতিরিক্ত বিরক্ত করছেন।″
″তুমি কোথায় কম করছ?″
″আপনি যে আসত ঢেঁড়স ছিলেন সেই আসত ঢেঁড়সই রয়েছেন একটুও বদলান নি।″
″হ্যাঁ আর তুমি সেই ঢেঁড়সের পঁচা অংশ।″
কথাটা শুনে আঁখির হাসি চলে আসল,হাসতে হাসতে বলল।
″ঢেঁড়সের পঁচা অংশ এ কেমন উপাধী?হা হা হা।″
″বেশ করেছি তোমার সাথে কথায় জিতে উঠার ক্ষমতা আমি কোথা থেকে জুটাবো,মুখে তো কথার ফুলঝরি,এবার চুপ করে শুয়ে পরো,স্যালাইনটা শেষ না হওয়া অব্দি জায়গা থেকে নড়বে না।″
″আপনি বললেন আর আমি করলাম, তাই না?মোটেও এমনটা ভাববেন না,আমি একদম ঠিক আছি,কাজ আছে আমার।″
আঁখি উঠে যেতে নিচ্ছিল,আদৃত আঁখিকে টান দিয়ে বসা থেকে বালিশে শুইয়ে দিল যাতে আদৃত বেশ ঝুকে আঁখির উপর চলে গেল,দু’জনের চোখে চোখ পরল,দু’জনের ঘন নিশ্বাস উপছে পরছে একে ওপরের উপর,হৃৎস্পন্দন দ্রুতগতির হয়ে গেল মুহুর্তেই দু’জনার,পুরাতন সেই সুপ্ত অনুভুতিগুলো নাড়া দিয়ে গেল দু’জনেরই মনে।তবে অল্প সময়ে আঁখি স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসলে আদৃতের বুকে আলত ধাক্কা দিল ওঠে যাওয়ার জন্য,ধাক্কাটাতে আদৃতও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসে আঁখির উপর থেকে উঠে বসল। বেশ শান্ত গলায় বলল আদৃত।
″সবকিছুতেই জেদ ভালো না আঁখি,আমার সাথে ঝগড়া করার ইচ্ছে, করো ইচ্ছেমতো কিন্তু নিজেকে কষ্ট দিয়ে না।ঘুমিয়ে থাকো,সুস্থ হয়ে গেলে ইচ্ছেমতো ঝগড়া করে নিও।″
″ঝগড়া আপনি শুরু করেন,আমি না।″
″না তুমি কেন শুরু করবে,ঝগড়া কাকে বলে তুমি তো জানোই না।″
আদৃতের কথায় দাঁত কেলিয়ে হাসি দিল আঁখি।আঁখির মুখের সে দুষ্টু হাসি মন ভুলালো আদৃতের,আঁখি ইচ্ছে করেই তার সাথে ঝগড়া বাঁধায় জানে আদৃত,আদৃতের সাথে ঝগড়া করা যে তার একসময়কার সব থেকে পছন্দের একটা অভ্যেস ছিল।অভ্যেসটা এখনও আঁখি যেতে দেয় নি জেনে মনে বেশ শান্তি পেল আদৃত,এবার বলল।
পারোও বটে তুমি,ঘুমোয় এবার, ঘুমের ঔষধ দিচ্ছি খেয়ে নাও, এমনিতেই ঘুম চলে আসবে।
রিয়াদ দেখা করতে এসেছে আজ আদ্রিশের সাথে,দু’জন বেশ সময় থেকে গল্পে মগ্ন একে ওপরের সাথে।আজ আদ্রিশ রিদিকাকে নিয়ে বাইরে যাবে বলেছিলে কিন্তু হঠাৎ রিয়াদ আসলেই যাওয়া কেন্সেল করে দিল সে।সেই কবে থেকেই রিয়াদকে নিয়ে পরে আছে,আদ্রিশ রিয়াদকে পেলে যেন দুনিয়া ভুলে যায় এমনটা মনে হয় রিদিকার,এখন থেকে নয় যবে থেকে এ বাড়িতে এসেছে রিদিকা তখন থেকে দেখছে এই রিয়াদকে নিজের জীবনের একটা আলাদা অংশ মনে করে আদ্রিশ,দু’জন ড্রয়িংরুমে বসে গল্প করছে দূর থেকে তাদের দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে তাকিয়ে আছে রিদিকা।
″রিয়াদ কি করব বল?আঁখিকে তো কোনোমতে আর ধরে রাখতে পারছি না।″
″আরে চিন্তা করিস না,এই মেয়েদের পিছন বেশি ঘুরলেই এমন,পাত্তা দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে দেখ এমনিই পিছন পিছন এসে ঘুরঘুর করবে।″
″আঁখি এমন না রিয়াদ।″
″আরে ঘুরে ফিরে সকল মেয়েরাই একই সেইম।″
চলবে……..
অনেকেই বলছেন রহস্য কেনো উন্মোচন করছি না,যেখানে রহস্য এখনও ভালো মতে গড়ে ওঠে নি,আমি হুটহাট সবকিছু ক্লিয়ার করে দিতে পারি কিন্তু এতে গল্পটা সৌন্দর্য হারাবে,তাই সবকিছু আসতে আসতেই সামনে আসবে।আসসালামু আলাইকুম সবাইকে।