#প্রেমের_বর্ষন
#পর্ব_০৫
#লেখিকা_আয়ানা_আরা (ছদ্মনাম)
( বিঃদ্রঃ পড়ার অনুরোধ রইলো)
পড়ার টেবিলে বসে মুখ গুজে বসে আছি আমি। আমার সামনে ফারিশ ভাইয়া বসে ফোন গুতাচ্ছে। ব্যাটা খাটাশ আমাকে পড়ার মধ্যে বসিয়ে ফোন টিপছে হুহ!
কিভাবে জানি ফারিশ ভাইয়ার হাতে আমার পরীক্ষার রুটিন চলে যায় তাই ফারিশ ভাইয়া আমাকে পড়াচ্ছে+গার্ড দিচ্ছে।
আমাকে পড়তে না দেখে ফারিশ ভাইয়া বলেন,’কিরে পড়ছিস না কেনো?’
আমি ন্যাকা কান্না করে বলি,’পারি না তো কি পড়বো!!’
ভাইয়া আমার দিকে ভ্রুকুচকে তাকিয়ে বলে,’পারিস না মানে?এতোদিন কি পড়েছিস?’
আমি একটা শুকনো ঢোক গিলে বলি,’পড়ি নি এতোদিন।’
ফারিশ ভাইয়া চোয়াল শক্ত করে বল,’আমি তোকে জেনো স্টাডি টেবিল থেকে উঠতে না দেখি!গট ইট!’
আমি উনার কথা শুনে ভয়ে চুপসে যাই। উনি যাওয়ার আগে বলে যান,’তোর ফোনটা আমাকে দিয়ে দিবি!!’
এই বলে হনহন করে বেরিয়ে পড়েন রুম থেকে। আমি বই নিয়ে নিজের কপালে বারি দিতে দিতে বলি,’ফাটা কপাল!’
দেখতে দেখতে এক সপ্তাহ কেটে গেলো আজ আমার ফাইনাল পরীক্ষা এই কয়েকদিন ভাইয়া আমাকে পড়ার টেবিল থেকেই উঠতে দেয় নি। ভাইয়া আমাকে রেডি থাকতে বলেছে। আমিও ভদ্র মেয়ের মতো রেডি হয়ে নিচে দাঁড়িয়ে আছি। ভাইয়া গাড়িতে বসে আমাকে বলে,’পরীক্ষা যেনো ভালো হয়।’
উনার কথায় আমি মাথা নাড়িয়ে সমত্তি জানালাম। ভাইয়া আমাকে কলেজ পৌছে দিয়ে চলে যায়। তখনই একটা মেয়ে এসে আমাকে বলে,’উনি কে?’
‘আমার খালাতো ভাই।’
‘অনামিকা প্লিজ তোমার খালাতো ভাইয়ের সাথে আমার সেটেল করিয়ে দেও না!!’
মূহুর্তেই আমার মুখ রক্তিম বর্ণ ধারণ করলো।নিজেকে কন্ট্রোল করে মেকি হেসে বললাম,’আরে না আমার ভাইয়া বিবাহিত।’
‘তোমার ভাইয়াকে দেখে তো মনে হয় না।’
‘আরে কিভাবে মনে হবে যখন ভাইয়ার বিয়ে আমার সাথেই হয়েছে।’
এই বলার সাথে সাথে মেয়েটা মুখ কালো করে চলে গেলো। আমিও ডেভিল স্মাইল দিয়ে ক্লাসে গেলাম। এই কয়দিনে ভাইয়ার সাথে অনেক ভালোই জমেছে আমার।
|৯|
আমি পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে দেখি ভাইয়া দাঁড়ানো আমি তাকে দেখে হেসে তার কাছে যাই। ভাইয়া আমাকে দেখে বলে,’পরীক্ষা কেমন হয়েছে?’
আমি বলি,’আলহামদুল্লিল্লাহ ভালো হয়েছে।’
‘ঠিকাছে বউ!’
উনার কথায় আমি চোখ বড় বড় করে উনার দিকে তাকালাম তা দেখে উনি বাকা হেসে বলেন,’কেনো তোর না আমার সাথে বিয়ে হয়েছে?’
আমি শুকনো ঢোক গিলে আমতা আমতা করে বললাম,’মানে?’
‘আরে তুই না তোর ফ্রেন্ডকে বলেছিস তুই আমার বউ তাই তো বললাম বউ!’
‘তুমি কিভাবে জানলা।’
‘আমি শুনে ফেলেছিলাম। তা জেলাস হওয়ার কারণ কি মিস অনামিকা?’
‘কিসের কারণ কোনো কারণ নেই তো। ভাইয়া তুমি না একটু বেশিইই বুঝতেছো।’
ভাইয়া প্রতুত্তরে হাসে।
আমাকে বাসায় পৌছে দিয়ে ভাইয়া নিজের কাজে চলে যান। আমি বাসায় এসে দেখি খালামনি একটা মহিলার সাথে কথা বলছেন মহিলাটার পাশে একটা মেয়ে বসে আছে। মেয়েটা যে লজ্জা পাচ্ছে মেয়েটাকে দেখে বুঝাই যাচ্ছে। আমাকে আসতে দেখে খালামনি আমাকে বলেন,’অনি দেখ তোর ভাবী এটা।’
আমি অবাক চোখে খালামনির দিকে তাকিয়ে বলি,’ভাবী মানে?’
‘ফারিশের জন্য মেয়ে দেখেছি আজ ফারিশ আসলে ওকে জানাবো।’
আমি নিজের কানকে এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না ফারিশ ভাইয়ার বিয়ে ঠিক করেছে খালামনি। মাথাটা কেমন ঝিম ধরে গেছে। আমি নিজের রুমে এসে ধপাশ করে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। ফারিশ ভাইয়ার জন্য মেয়ে দেখেছে তা মানতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। ফারিশ ভাইয়া কি এই বিয়েতে রাজী হবে?এই সব চিন্তা করতে করতেই রাত হয়ে যায়। আমি ডিনার করে নিজের রুমে এসে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। হঠাৎই মাঝরাতে আমার মনে হলো কেউ আমাকে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করছে। আর আমার কানের কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলে,’অনি জলদি উঠ আমাদের তাড়াতাড়ি যেতে হবে।’
আমি চোখ খুলে দেখলাম স্বয়ং ফারিশ ভাইয়া দাঁড়ানো। আমি তাকে দেখে উঠে বললাম,’ভাইয়া তুমি এতো রাতে এইখানে কেনো?’
‘এত কিছু বলার সময় নেই আমাদের যেতে হবে উঠ জলদি।’
এই বলে টানতে টানতে নিয়ে গেলো। আমি হ্যাবলার মতো এখনো তার দিকে চেয়ে আছি। উনি আমাকে গাড়িতে বসিয়ে নিজেও বসে পড়ে। অতঃপর এক অজানা গন্তব্যের জন্য বেরিয়ে পড়ি আমরা। উনি একটা অফিসের সামনে নিয়ে এসে গাড়ি থামায় যে অফিসের সাইন বোর্ডে বড় বড় অক্ষরে কাজী অফিস লিখা।
আমি অবাক চোখে ফারিশ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলি,’এটা তো কাজী অফিস এইখানে কেনো এসেছি আমরা।’
ফারিশ ভাইয়া আমাকে ঝাড়ি দিয়ে বলেন,’ডাফার কাজী অফিসে মানুষ কি করতে আসে!’
‘বিয়ে করতে আসে। কিন্তু এখন কার বিয়ে।’
‘আমরা বিয়ে করবো।’
আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই সে বলে,’তুই আমাকে ভালোবাসিস আর নাই বা বাসিস আই ডোন্ট কেয়ার।’
এই বলে আমাকে নিয়ে হাঁটা ধরলো কাজী অফিসের দিকে।
#চলবে
( জানি আমি লেট করে দিচ্ছি দেখে আপনাদের ভালো লাগছে না। আমার আর গল্পটা কন্টিনিউ করতে ইচ্ছা করছে না তাই ভেবেছি ৩/৪ পর্বেই গল্পটা শেষ করে দিবো। যদি আপনারা বলেন আরো বড় করতে তাহলেও আমি করতে পারবো না। অনেকগুলোই কারণ আছে। কেউ একজন ইনবক্সে এসে বাজে কথা বলেছে।এইসব শুনতে নিশ্চয়ই আমার ভালো লাগবে না? তাই এই গল্প আমি তাড়াতাড়ি শেষ করে দিবো তাহলে কারো কোনো অভিযোগ থাকবে না। আর দিত্বীয় কারণ হলো পড়াশোনার চাপ। কলেজ থেকে এসে প্রতিদিনই আমার মাথা ব্যথা থাকে যার জন্য চাইলেও তাড়াতাড়ি দিতে পারছি না। তাই আপনারা একটু অপেক্ষা করুন। রিচেক দেওয়া হয়নি। ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি। হ্যাপি রিডিং)