#প্রেম_ছোয়ালে
Part:16+17+18+19
Writer:Suvhan Årag (ছদ্মনাম)
তিন বছর পার হয়ে যায়
কিন্তু আহসান একবার এর জন্য ও তার মোনাজাত থেকে নীলিকা কে সরাতে পারেনি।তার মন জুড়ে ছিল তার হলদে পাখির আনা গনা
নিজের সততা আর কাজে র মাধ্যমে আহসান প্রমোশন পেয়ে পেয়ে ম্যানেজার পদে যায়
নীলিকা তখন অনার্স চতুর্থ বর্ষ
বার বার ফিরে আসা অপমান জনক
তবুও ছেলের কথা ভেবে আহসান এর মা যান নীলিকা দের বাড়ি তে
–কেমন আছেন ভাবী?
–আলহামদুলিল্লাহ ।আপনি?
–জি আলহামদুলিল্লাহ ।আজ আবার আসলাম।আশা করি এবার আর ফেরাবেন না
আহসান এর মায়ের কথা শুনে নাবিল সাহেব আর তার স্ত্রী মুখ চাওয়া চাওয়ি করছিলেন
–ভাবী আমার ছেলে এখন ব্যাংকের ম্যানেজার, এবার কি,,,
–ভাবী আমরা আপনাদের কষ্ট দিতে চাই নি।কিন্তু কি করব বলুন।বুঝতে পারে নি মেয়ে এই কাজ করবে
–মানে
–নীলিকা র সাথে এক বছর ধরে একটা ছেলের সম্পর্ক ।আর দু মাস পরে ওদের বিয়ে
কথাটি শুনে আহসান এর মা কি বলবেন বুঝতে পারছেন না।বাকরুদ্ধ তিনি
–ক্ষমা করবেন ভাবি
–না ক্ষমা চাইছেন কেন ।আপনাদের ও তো পছন্দ অপছন্দ আছে।দোআ করি নীলিকা মা ভালো থাকুক।আজ তবে উঠি
— না ভাবী কেবল আসলেন একটু চা,,,,
–ভাই পরে একদিন আসব।একটু তাড়া আছে
বলেই আহসান এর মা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন
নাবিল সাহেব চুপচাপ বসে অছেন
–কি গো কি ভাবছো
–ভদ্রমহিলা খুব ভালো ছিল।পাঁচ বছর ধরে নিজের ছেলের জন্য শুধু এই এক মেয়ে ই দেখে চলেছেন।ছেলেটা ও অনেক ভালো
–হুম।কি আর করব।নীলিকা র তো আশফি কে ভালোবাসে
–ঐ ছেলে আর ঐ পরিবার আমার পছন্দ না।শুধু মেয়ে টার দিকে তাকিয়ে ই,,,,,,
একটি দীর্ঘ শ্বাস ছারলেন নাবিল সাহেব
অজান্তেই চোখের পানি গরিয়ে পরছে।অনেক কষ্ট না পেলে ছেলেরা কাঁদে না
–বাবা থাক।হয় তো মেয়ে টি তোর ভাগ্য এ নেই
–হুম
–আর না।কাল থেকে তো র জন্য মেয়ে দেখা শুরু করবো।আর এভাবে থাকতে হবে না তোর।অপেক্ষা করেছিস অনেক
–মা আমি সময় নিতে চাই।আমাকে কিছুদিন স্বাভাবিক হওয়ার সময় দেও ।আর আমি এতদিন ধরে একজন পরনারী কে মনে মনে ভালোবেসেছি ।অনেক বড় পাপ হয়ে গেছে।এরপর মেয়ে যদি দেখতেই হয় তো আমি আগেই আমার অতীত তাকে জানাব।কারন আমি চাই না একটা মেয়ে র জীবন নষ্ট করতে।কোন মেয়ে ই তার স্বামীর অতীত জানলে খুশি হবে না।তা যাই করব সকলকে জানিয়ে।কিন্তু আমাকে কিছু সময় দিও
বলেই আহসান ঘরে চলে গেল
–আমার ছেলেটা র সাথে কেন এমন হলো
–কেঁদো না আহসান এর মা।ও ঠিক বলেছে।আমাদের উচিত ওকে সময় দেওয়া
নামাজের পাটিতে বসে মোনাজাত এ চোখের পানি ফেলছে আহসান
—আল্লাহ্ কেন তবে সেদিন ইস্তিখারা তে এরকম ইঙ্গিত দিয়ে ছিলে।আমি যে পরনারী র প্রতি আসক্ত হয়েছি।ক্ষমা করো আমাকে।
এর মধ্যে তো ঘটে যায় অনেক কিছু নীলিকা র জীবন এ
আশফি যাওয়ার চার মাস পর
আহসান এর মা কিভাবে যেন খবর পান নীলিকা র ব্যাপারে
–আল্লাহ্ মেয়ে টা এরকম পরনতী কেন হলো
–মা
–বল
–তুমি আবার প্রস্তাব নিয়ে যাবে
ছেলের কথাতে অবাক চোখে তাকান আহসান এর মা।কিন্তু তার মনে মায়া হয়।এ কদিনে ছেলেটা অনেকটা শুকিয়ে গেছে।চেহারা চাও কেমন ।যেন কতো রাত ঠিক মতো ঘুমায় না
–কিন্তু বাবা ওর,,,,
–মা একটা ছেলের অনেক অতীত থাকে।কিন্তু তাও তাকে বিয়ে দেওয়া র সময় সব কিছু লুকানো হয় মেয়ে পক্ষ এর কাছে।এতে মেয়ে টা কে কতো বড় ধোকা দেও য়া হয় বলোতো।সেখানে নীলিকা র কি দোষ মেয়ে বলে।আমি ওর সব জেনেই রাজি হচ্ছি মা
–ঠিক আছে
আহসান এর মা ভাবলেন আসলেই।ছেলের কথা ঠিক।
আরেকবার মাথা নিচু করে তিনি গেলেন নীলিকা দের বাড়ি
কিন্তু এবার আর খালি হাতে ফেরেন নি তিনি
বিয়ের পর ও নীলিকা র পাগলামি থেকে যায় আশফির জন্য
আহসান তবুও সব মেনে নিয়ে ছিল।কারন নীলিকা তাকে বার বার বলেছিল সে আশফি কে ভুলতে পার বে না।সে তার স্মৃতি নিয়ে ই থাকবে
সব শর্ত রাজী হয়ে তবেই আহসান নীলি কা কে বিয়ে করেছিল
তাই কখনো সে এসব নিয়ে নীলিকা কে প্রশ্ন করেনি।বিয়ের প্রথম এক বছর নীলিকা তাকে কষ্ট দিলেও পরে তাদের সম্পর্ক আসতে আসতে বন্ধু র মতো হয়ে যায়
আহসান এর মনে কোন আফসোস নেই
“”না হয় পেলাম তোমাকে
আমার রাতের চাঁদ দেখার সাথী হয়ে
না হয় পাওয়া হলো তোমাকে
তোমার সর্বস্ব নিয়ে
তুমি শুধু সামনে থেকো
তাতেই আমি রাজী
শুধু দেখে যাব তোমাকে
দুচোখ ভরে””
সত্যি কারের ভালোবাসা তো এমন ই হয়।চাহিদা কখনো ভালোবাসা হতে পারে না।
কিন্তু সব কিছু হঠাত্ এলো মেলো হয়ে যায়
তাদের এই তৃতীয় বিবাহ বার্ষিকী র মাস দুই আগে
–শুনুন ম্যানেজার আমি কিন্তু আইসক্রিম খাবোই
–তোমার না ঠান্ডা,,,,
–বলেছি না।যান আপনার সাথে কথা নেই
–না না।আনছি।কিন্তু বেশি খাবে না।আজ একটা ই পাবে।নয়তো তোমার আবার জ্বর আসবে
–কিন্তু
–কোন কিন্তু না
–আচ্ছা
–তুমি দাঁড়াও আমি আনছি
শপিং করতে গিয়ে ছিল সেদিন দুজনে।আহসান আইসক্রিম নিয়ে যখন রাস্তা পার হচ্ছিল
তখন হঠাত্ চোখ যায় নীলিকা র দিকে।সে তাকিয়ে দেখে নীলিকা র চোখ ছলছল করছে।হঠাত্ করেই পানি ও পরলো।নীলিকা তাড়াতাড়ি সেটা মুছে ফেললো
আহসান কারন জানার জন্য এদিক ওদিক তাকাতেই আহসান এর বুক কেঁপে ওঠে।শপিং মলের একটু দূরে সামনে একটা দোকানে আশফি দাঁড়িয়ে অন্য দিকে ফিরে ফোনে কথা বলছিল
সেদিন আশফি কে চিনতে আহসান এর দেরী হয় নি।কারন বিয়ে র প্রথম বছর আশফির ছবি নিয়ে নীলিকা যেভাবে কাদতো তাতেই তার চেনা হয়ে গেছে
আহসান এর মনে একটু হলেও আশা ছিল তাদের এই বন্ধুর সম্পর্ক ই একদিন নীলিকা র কাছে ভালোবাসা তে রূপ নেবে।কিন্তু আশফি র দিকে তাকিয়ে নীলি র চোখের পানি আহসান এর সব কিছু এলোমেলো করে দিয়েছিল
সেদিন এর পর ই আহসান নীলি কে না জানিয়ে আশফির সাথে যোগাযোগ এর চেষ্টা করে ।অতঃপর
আজকের সার প্রাইজ।নীলিকা কে না জানিয়ে এই সে আজ আশফির কাছে তাকে তুলে দিয়েছে।
সে চায় না তার হলদে পাখিটা বিবাহ নামক বন্ধ নের জন্য বাধ্য হয়ে তার কাছে থাকুক ।সে বুঝেছি ল তার হলদে পাখিটা ভালো নেই।মুখে হাসি রেখে চললে ও আছ ও সে আশফি র অপেক্ষা করে
বর্তমানে
চোখের পানি ফুরাচ্ছে না আহসান এর।অনবরত ঝরেই যাচ্ছে
—কিভাবে থাকব আমি।কতো অপেক্ষা র পর তোমাকে পেয়েছিলাম।আজ আবার হারিয়ে ফেললাম ।হারিয়ে ফেলেনি।নিজের ইচ্ছে তে হারিয়েছি।আমি জানি তুমি মুখে আশফির কথা বলতে না।আমি না চাইলে তুমি আজ আশফির কাছে যেতে পারতে না।কি করব হলদে পাখি।বড্ড ভালোবাসি ।তোমার চোখের পানি আমি দেখতে পারব না।ভালো থেকো হলদে পাখি
বলেই আহসান ড্রাইভিং করছিল।সে খেয়াল করে নি সে রং সাইড এ চলে এসেছে।
এদিকে একটা স্পিডি ট্রাক আহসান এর সামনে চলে এসেছে
চলবে———–
#প্রেম_ছোয়ালে
Part:17
Writer:Suvhan Årag (ছদ্মনাম)
এদিকে নীলিকা বলা শুরু করলো
–তুমি গল্প এর সমাপ্তি করে ছিলে আশফি।কিন্তু ঐ টা তে সূচনা হলো আমার
–মানে
নীলিকা বলা শুরু করলো
সেদিন অনেক কেদেছিলাম ।এয়ারপোর্ট এ যখন তোমার মা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেললো আমি তোমার মুখে দিকে তাকিয়ে ছিলাম ভেবেছিলাম হয় তো তুমি আসবে।কিন্তু না
তুমি চলে যাওয়া র পর আশে পাশের মানুষ আত্মীয় স্বজন সবাই অপয়া অলুক্ষনে বলে অনেক অপমান করতো।
জানো
কলেজে আমার ডিপার্টমেন্ট এ আমি টপার ছিলাম।কিন্তু তোমার কারনে আমার জীবন এ কিছু ভালো হয় নি
তোমার সাথে প্রেম করার পর থেকে রেজাল্ট এমনিতেই খারাপ হতে থাকে ।তারপর তুমি চলে যাওয়া র পর মাস্টার্স এর প্রথম পরীক্ষা ।ফেল করি পরীক্ষা তে।
জীবনে কখনো ফেল করিনি।কিন্তু সব তোমার জন্য হলো।তুমি চলে যাওয়া র পর থেকে নিজেকে ঘরে আটকে রাখতাম।পাগল হয়ে গিয়েছিলাম প্রায় ।মানসিক ডাক্তার ও দেখাতে হয়েছিল।একটু একটু সুস্থ হলে বাবা জোর করে কলেজে পাঠায়।যাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসি
হঠাত্ তোমার যাওয়ার চার মাস পর একদিন সন্ধ্যা তে বাবা মা দুজনে আমার ঘরে আসে
তার কারণ আহসান এর বাড়ি থেকে প্রস্তাব
–মা সে তোমার সাফল্য এর জন্য একটু অপেক্ষা করতে পারে নি।উল্টে তোমার জায়গা নিয়ে দিব্যি সে গেছে নিজের স্বপ্ন পূরন করতে
–আমি অপেক্ষা করব বাবা
–মা সেদিন তুমি আমার কথা শোনোনি।আজ বাবা র কথা শোনো।যে তোমার জন্য অপেক্ষা করতে পারল না সেখানে তুমি তার জন্য অপেক্ষা করবে।আর তুমি ভাবলে কি করে সে তোমার কাছে ফিরে আসবে।ফিরে যদি আসার ই হতো তাহলে চার মাস হয়ে গেল একবার কি ফোন করতে পারত না আশফি।আর তার পরিবারের কথা নাই বললাম
–,,,,,,,
— মা এই বাবা র কথা শোন।তুই রাজি হয়ে যা।আমি তোর খারাপ চাই না রে।তোর কষ্ট দেখতে পারছি না আর
সেদিন বাবা র কথাতে আমি ভাবতে শুরু করি।বেশি অবাক হই এটা ভেবে যে এর আগে তিন বার আহসান রা প্রস্তাব নিয়ে এসেছে।এমনকি আমার জীবনের এই দুর্ঘটনা শুনে যেখানে মানুষ আমার দোষ না থাকা সততেও অলুক্ষনে বলছে তখন তারা আবার প্রস্তাব নিয়ে এসেছে
রাজী হই আহসান এর সাথে কথা বলার জন্য
–আসসালামু আলাইকুম
–,,,,,,,,
–সালামের উওর দেওয়া ওয়াজিব
–ওয়া লাইকুম আসসালাম
–কেমন আছো?
–দয়া দেখাতে এসেছেন।নাকি তামাশা
–মানে
–আশে পাশে র লোকজন এতো কিছু বলছে তারপর ও আপনি আপনার মা বাবা কে নিয়ে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন।আপনি ব্যাংকের ম্যানেজার হয়ে পরেছে ন বলে কি এখন টাকা বেশি হয়ে গেছে যে দয়া দেখাতে এসেছেন
–যদি বলি ভালো বেসেছি তাই
অবাক চোখে নীলিকা আহসান এর দিকে তাকিয়ে পরে।হুট করে আহসান এমন কথা বলবে তা সে ভাবতে পারে নি।নীলিকা আরো অবাক হয় যে আহসান মাথা নিচু করে কথা বলছে।তার দিকে তাকিয়ে ও না
–ফাজলামি করছেন আমার সাথে
–জীবনের মানে স্থির হওয়া না।ক্রমান্বয়ে ধেয়ে চলা।জীবন ও বৃক্ষ গল্প টি নিশ্চয়ই পড়েছেন
–আমি আশফিকে ভালোবাসি।আমি শুধু ওকে নিয়ে ই থাকব
–সে তো চলে গেছে
–স্মৃতি নিয়ে থাকব
–স্মৃতি নিয়ে থাকা যায় ।কিন্তু ভাঙা কাচ নিয়ে থাকতে নেই
–আপনি তো ভারী অসভ্য
–তাতে কি।অসভ্য টাকে সভ্য করে নেবেন
–চোখ নামিয়ে কথা বলছেন কেন।চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস নেই
–চোখে চোখ রেখে কথা বলা টা সম্মান এর।কিন্তু আপনি পর নারী ।দু পলকের বেশি তাকানো গুনাহ
–ওহ
–তো কি সিদ্ধান্ত নিলেন
–কিসের
–বিয়েতে কি পরবেন তাই
–মানেহহ ।আপনি কি এখনো এতো কিছুর পরে মনে করেন আমাকে বিয়ে করবেন
–আচ্ছা সবাই কে বলে দিচ্ছি আপনি রাজী
–আরে মানে কি
–আল্লাহ্ হাফেজ ।ম্যানেজার ডাকটা ভালো লাগলো
আহসান উঠে চলে গেল।আর নীলিকা থ মেরে বসে আছে।নীলিকা ভাবছে এ কেমন লোক
–আজব
হঠাত্ আহসানের কথা গুলো মনে করতেই নীলিকা হাসতে থাকে
এ সময় সাওদা রুমে আসে
–কি রে আপু একা একা হাসছিস যে
–আরে দেখ না ঐ লোক কি বলে,,,
নীলিকা সাওদা কে সব বলে হাসতে থাকে।সাওদা হাসার বদলে নীলিকা র দিকে তাকিয়ে থাকে।আশফি যাওয়ার পর একদিন ও সে নীলিকা কে হাসতে দেখেনি।আজ প্রথম ।
সাওদা খুশি হয়।হ্যাঁ আহসান এর কাছেই তার বোন ভালো থাকবে
সত্যি বলতে কি তুমি যাওয়ার পর অসুস্থ থেকে সুস্থ হওয়ার পর আমি তোমাকে ঘৃনা করতে শুরু করি।
এজন্য আহসান এর সাথে বিয়ে তে রাজি হই
জানো বিয়ে র পর বাসর রাত থেকেই মানুষ টাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ছি।কিন্তু মানুষ টা কখনো আমাকে ছারে নি।হাসি মুখে সব মেনে নিয়ে ছে।কিন্তু আমি বুঝতাম,,নামাজের পাটিতে সে আমার থেকে একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কাঁদে
বিয়ের প্রথম বছর ইচ্ছে করে তোমার ছবি নিয়ে ওর সামনে কাদার নাটক করেছি।সত্যি বলতে তোমাকে আমার বিন্দুমাত্র মনে পরত না।এতো ই ঘৃনা করতাম।
আমি শুধু দেখতাম মানুষ টা আমাকে ছেড়ে যায় কি না।ঐ একটা বছর নাটক করে শুধু ওর পরীক্ষা নিয়ে ছি।কি করবো।ভালোবেসে একবার ঠকেছি।কিন্তু আর চাই নি ঠকতে ।মানুষ টা যতোই ভালো হোক না কেন তবুও আমার মনে সন্দেহ থাকত।তোমার মতো যদি সে ও আমাকে ছাড়ে ।
ভয় হতো।এক বছর হওয়ার পর আসতে আসতে বন্ধু র মতো হতে থাকি ওর সাথে।সত্যি বলতে আহসান এর ভালোবাসা টাকে ভালোবেসে ফেলেছি লাম।
আমি শাড়ি পরা শুরু করি সব সময় ।কারণ আহসান আমাকে শাড়ি তে দেখতে খুব পছন্দ করতো।কিন্তু কি বলবো ম্যানেজার টা আস্ত বলদ।ওকে আমি বলতাম আশফি এটা পছন্দ করে তাই পরি।আশফি র এই রঙ পছন্দ ।কিন্তু সত্যি বলতে আমি তো জানি আশফি শাড়ি পছন্দ করে না।
আর ঐ পাগল টা সব বিশ্বাস করত।তুমি চলে যাও য়ার পর থেকে কখনো নিজে নীল রঙের কিছু পরিনি ।এতো ই ঘৃনা করতাম তোমাকে ।
দুই বছর হয়ে গেলে আসতে আসতে মানুষ টাকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছি।কি করবো।এতো কষ্ট পাওয়া র পরেও সব সময় আমার খেয়াল রাখতো
কিন্তু ম্যানেজার সবচেয়ে বড় ভুল করেছে ।আমার সব কিছুর খেয়াল রাখতে রাখতে ও একবার ও আমার মনের খেয়াল নেয় নি।তাহলে আজ আর এখানে অন্য একজন এর কাছে তুলে দিতে না।
এতো ই ভালোবাসে যে নিজে চোখের পানি ফেলবে কিন্তু আমাকে ফেলতে দেবে না
বর্তমানে
–আজকে চেয়ে ছিলাম ঐ বলদ ম্যানেজার টাকে মানুষ করব।ব্যাটা একটু আমার মনের খবর রাখলো না।এর মধ্যে তুমি উটকো ঝামেলা কোথ থেকে আসলে বলোতো
বিরক্তি নিয়ে নীলিকা আশফি র দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো।আশফি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে
আজ আশফি উটকো ঝামেলা ।নীলিকা র বলা কথা গুলো ও আশফি ভাবছে ।
নীলিকা তাকে ঘৃনা করে
চলবে———–
#প্রেম_ছোয়ালে
Part:18
Writer:Suvhan Årag (ছদ্মনাম)
আশফির আজ বড্ড অচেনা লাগছে নীলিকা কে।নীলিকা র চোখে আজ শুধু ঘৃনা দেখতে পাচ্ছে আশফি
–আমি ভুল করেছি নীলিকা ।আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না
–ভুল।এটা ভুল।আর ক্ষমা হাসালে
–জানো নীলিকা আমার ভুলের শাস্তি আমি পেয়েছি
–ও তাই।কিভাবে শুনি
আশফি বলা শুরু করলো
বাবা মা অশিক্ষিত ।আমি যাচ্ছি পড়তে আর তারা ভেবে ছিল কি না কি।আমি বিদেশ গিয়ে থাকব ।এরপর তারাও সেখানে চলে যাবে ।
আমি যাওয়ার পর পর ই বাবা আমাদের পুরানো ধানের জমি বাড়ি র কিছু জমি সব বিক্রি করে দিয়ে আমরা যেখানে থাকতাম তার থেকে একটু দূরে বিশাল জমি কিনে ।আমাকে একবার ও জানায় নি।সেই জমি তেই দশ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে বাবা রীতিমতো বিল্ডিং এর কাজ শুরু করে।
আমি তো ওখানে পড়াশোনা র পাশাপাশি কাজ করতাম।কারন বিদেশ এ তো ওটাই নিয়ম।প্রথম মাসেই বাবা কে ভালোই টাকা পাঠাই।কারন বাংলাদেশের চেয়ে বিদেশে সামান্য কাজের চেয়ে পারিশ্রমিক বেশি।
বাবা সেদিন আমাকে সব বলে।আমার তো মাথা খারাপ হওয়ার মতো অবস্থা ।দশ তলা বাড়ি কিভাবে কি করবো আমি।
কথাতে আছে না পরের অনিষ্ট করলে নিজের ও নষ্ট হয়।মাইশা র ঠিক সেটাই হয়েছিল।ও টাকার লোভ এ অন্ধ হয়ে গেছিল।সারা মানুষ কে বলে বেরাতে থাকে ওর ভাই বিদেশে থাকে সেখানে সেটেলড ।ওদের টাকার অভাব নেই।
এই সব খবর ছরিয়ে বেশ বড়লোক বাড়ি র একটা ছেলে কে প্রেমের ফাঁদে ফেলে।অবশেষে বিয়ে ও হয়।বিয়ের দু মাস যেতে না যেতেই ওর শশুর বাড়ি থেকে এটা ওটা চাইতেই থাকে।বড়লোক হলে কি হবে ওরা ছোট মানসিকতার ।ইদের সময় তাই প্রায় এক লাখ টাকা র তত্ত্ব পাঠাতে হবে ওর শশুর বাড়ি তে।
এদিকে আমার পরীক্ষা চলে আসে।টাকা আর পাঠাতে পারি না।বাবা বাড়ি করবে বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা ধার নিতে থাকে।বলে পরে আমি শোধ করবো।তারপর মাইশা র শশুর বাড়ি তে ঐ অবস্থা।ওর স্বামী রীতিমতো ফকিন্নি বলে ওর গায়ে তাই হাত তোলে
আমার যাওয়ার চার মাস পর
বাবা খুব অসুস্থ হয়ে পরে।কারন দেনাদার রা টাকা নিয়ে প্রেসার দিচ্ছিল।বাবা কে রীতিমতো হুমকি দিতে থাকত।
তার মধ্যে মায়ের ক্যান্সার ধরা পরে।আমি পুরো দিশেহারা হয়ে যাই ।পড়াশোনা বাদ দিয়ে টাকা রোজগার এর পিছনে দৌড়াতে থাকি।
বাবা ও অনেকটা দেনা শোধ করেন।কিন্তু তারা উচ্চাভিলাষী জীবন যাপন করতেই থাকে।আর মাইশা র সংসার এর অশান্তি তো আছেই।
এর মধ্যে আমার যাওয়ার এক বছর হতে চললো তখন ঐ ভারসিটি থেকেই আমাকে বরখাস্ত করা হয়।কারন স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে গিয়ে ছি।একটা নির্দিষ্ট পয়েন্ট পর্যন্ত রেজাল্ট এর শর্ত থাকে।নাহলে ওরা ফেরত পাঠাবে ।আমার রেজাল্ট খারাপ হয়।আমি ও বাংলাদেশে ফিরে আসি।আর বিদেশে গিয়ে পড়ালেখা শেষ করা হয় না ।
আমি আসার পর পর ই মা মারা যায়।মা মারা যাওয়ার সময় তোমার নাম নিয়ে ছিল।বলেছিল তোমার সাথে অন্যায় করার শাস্তি এটা।এদিকে মাথার ওপর অনেক ঋনের বোঝা।আমি ও বেকার।চাকরি র খোঁজ করতে থাকি।
তার মধ্যে নির্দিষ্ট সময় এ টাকা শোধ না করার জন্য ব্যাংক থেকে আমাদের বাড়ি শেষ সম্বল টুকু বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হয়।এ সব দেখে বাবা ও হার্ট আযাটাক এ মারা যায় ।তার মধ্যে এসব শুনে মাইশা র শশুর বাড়ি র লোকরা ওর বর কে চাপ দিয়ে ডিভোর্স দিয়ে দেয়
–তারপর
–তারপর এই তিন বছর ধরে রাত দিন এক করে কাজ করে সব ঋন শোধ করেছি।আর মাইশা আমার কাছেই আছে।ওর বিয়ে র জন্য ছেলে দেখছি ।কিন্তু ডিভোর্সি শুনে কেউ রাজী না।দুই ভাইবোন মিলে থাকি।এখন ভালো একটা চাকরি ও করছি।কিন্তু শান্তি নেই।শাস্তি পেয়েছি নীলিকা
নীলিকা উঠে দাঁড়ালো
–আর আমার খবর শুনবে ।সাওদা র বিয়ে হয়েছে।ওর এক বছরের একটা বাচ্চা ও আছে ।খুব ভালো আছে ও।আমার মা বাবা ও অনেক ভালো আছে।আমি ও সুখে আছি।শশুর শাশুড়ি আমাকে মাথায় করে রাখে
–চলো নীলিকা সব নতুন করে শুরু করি।ফিরে চলো
–জানো আশফি আমি না খেয়ে থাকতে রাজী ছিলাম কিন্তু তুমি আমাকে ধোঁকা দিলে ।আমাকে বলতে পারতে।অথচ তুমি কি করলে।বিয়ের দিন পুরো বাড়ি র মানুষ এর সামনে আমাকে অপমান করলে।এখন বলো আহসান এর সাথে তোমার কিভাবে দেখা হলো?
–আমি এসব ঝামেলা র মধ্যে ও তোমার খোঁজ নেই।জানতে পারি তোমার বিয়ে হয়ে গেছে।এই কিছুদিন আগে আমার অফিসে আহসান আসে।ও নাকি আমাকে শপিংমল এ দেখেছিল।তারপর আমার ফেসবুক আইডি থেকে কিভাবে অফিসে র ঠিকানা পায়।তাঁর পর বলে তুমি আজ ও আমাকে ভালো বাসো।ও হয়তো তোমাকে ভালো রাখতে পারিনি।তাই,,,এসব।আর আমি ও রাজী হয়ে যাই।তোমাকে আবার ফিরে পাব তাই ।নীলিকা চলো সব ভুলে শুরু করি।এবার আর তোমাকে ছারব না
–এক কাপ কফি অর্ডার করোতো
আশফি নীলিকা র কথা মতো কফি অর্ডার করলো।কফি চলে এসেছে
–আশফি আমার পার্স না নিয়ে আসিনি।সাথে আহসান ছিল তো এজন্য ।তিনশ টাকা দেও তো
–কেন
–থাক দেওয়া লাগবে না
–না এই নাও
নীলিকা আশফি য থেকে টাকা নিয়ে আশফির হাত টা ধরে গরম কফির মধ্যে ডুবালো
–আআআ আ নীলি কি করছো
–এই হাত দিয়ে আমাকে টাচ করতে এসেছিলে না তাই।তোর জন্য সেজেগুজে এদিক ওদিক ঘুরে আগে নিজেকে প্রদর্শন করে নষ্ট করেছি ।আর আমার আহসান আমাকে কি শিখিয়েছে জানিস সৌন্দর্য টাকে রক্ষা করতে।আজ ওর সাথে ঘুরতে যাব বলে সেজেছি।না হলে কি ভেবেছিস তোর জন্য সাজব।এই যে দেখছিস এই হলুদ শাড়ি আমার আহসান এর পছন্দ তাই পরেছি ।
–কি বলছো নীলিকা
নীলিকা আশফির থেকে ডিভোর্স পেপার টা নিল।তারপর ওর সামনে ছিরে ফেলল
–ডিভোর্স ।তুই ভাবলি কি করে আমার আহসান কে রেখে তোর মতো ঠকবাজ এর কাছে যাব আমি
বলেই নীলিকা আশফিকে কষে দুই থাপ্পড় দিল।আশফি মুখে হাত দিয়ে নীলিকা র দিকে তাকিয়ে আছে
–নীলি
–তোকে জুতো খুলে পিটাতাম ।কিন্তু তোর মা বাবা মারা গেছে তাই অনাথ কে মেরে আমি পাপী হতে চাই না।তুই আমার জীবনের এক অভিশাপ।তোকে মুড়ো ঝাটা দিয়ে পেটালেও আমার শান্তি হবে না
নীলিকা পথের দিকে হাঁটা ধরলো।আবার কি ভেবে পেছনে ফিরলো
–তোর পেছনে অনেক টাকা খরচ করেছি।এখন তোর এই তিনশ টাকা দিয়ে কি করব জানিস ।পঞ্চাশ টাকা দিয়ে অটো করে বাড়ি ফিরবো।বাকি টাকা দিয়ে ফুল কিনবো।আমার আর আহসান এর বাসরের জন্য
বলে নীলিকা অটো নিয়ে চলে গেল।আশফি থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে
এদিকে
আহসান তাড়াতাড়ি গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়।একটু র জন্য আল্লাহ্ তাকঃ বাচিয়েছেন
আহসান পরে গাড়ি নিয়ে একটা পার্ক এ গিয়ে থামলো
এই জায়গা টা তা র খুব প্রিয় ।বিয়ের আগে নীলিকা র কথা মনে পরলে সে এখানে আসতো।আহসান গিয়ে চিতকার করে কাঁদছে
–কেন এমন হলো।আমি পারলাম না তোমাকে ভালোবাসতে।আমি হেরে গেছি।তাই তো তুমি আজ অন্য কারো
এদিকে
অটোতে বসে নীলিকা বিড়বিড় করছে
–অসভ্য ম্যানেজার একটা ।আজ ওর খবর আছে।কতো বড় সাহস নিজের বৌ কে আরেকজন এর হাতে তুলে দেয়।আবার ডিভোর্স
কিছুক্ষণ চুপ করে নীলিকা এক রহস্যময় ঈ হাসি দিল
–আজ তো ওকে শাস্তি পেতে হবে।প্রেম ছোয়ানোর শাস্তি
চলবে———-
#প্রেম_ছোয়ালে
Part:19 (last part)
Writer:Suvhan Årag (ছদ্মনাম)
নীলিকা বাড়িতে গিয়ে দেখে দরজাতে তালা ঝুলছে।দেখে শুধু নীলিকা একটু মুচকি হাসলো
–জানি বলদ টা এখন কোথায় থাকবে।নিশ্চয়ই পার্ক এ বসে কাঁদছে ।তাই ডুপলিকেট চাবি টাও নিয়ে গেছিলাম ।আর মা বাবা ও গ্রামের বাড়ি গেছে
নীলিকা দরজা খুলে ভেতরে চলে গেলো
রাত ১০ টা
সারাদিন পার্ক এ ছিল আহসান । এতোক্খন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছে।কি করবে নিজে কে খুব ছন্নছাড়া মনে হচ্ছে
বাড়ি র সামনে গাড়ি থামলো।আহসান ধীর পায়ে এগিয়ে গেল দরজা দিকে।কি ভেবে যেন থেমে গেল
আজ আর দরজা খুলেই কেউ বলবে না
—-আপনার না ৭ টার সময় আসার কথা।এখন এসেছেন কেন।আপনি জানেন না আপনাকে আমার একটুও সহ্য হয় না
এই শুনে মুচকি হেসে আহসান যখন ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেবে তখন ই আবার সেই একি কন্ঠ এ ভেসে আসবে আরেকটা কথা
—-৭ টা ১৫ বেজে গেছে।দেরী করে এলেন কেন।আপনি জানেন না আমার অন্ধকার এ ভয় করে।আপনি খুব খারাপ
অতীত টি ভাবতেই মুচকি হাসলো আহসান
–কি অদ্ভুত তুমি নেই তোমার স্মৃতি আছে।স্মৃতি নিয়ে ই বাচবো ।তোমাকে নিয়ে ই থাকব ।শুধু তুমি থাকবে অন্য কারোর বুকে আর আমার অনুভূতি তে
বলেই আহসান দরজা খুলতে যাবে তার আগেই দেখে দরজা লক করা নেই
–কি হলো।আমি তো যাওয়ার আগে দরজা লক করেছিলাম ।ওহ হয়তো ভুলে গেছিলাম
আহসান ঘরে ঢুকে দরজা লক করে ড্রয়িং রুমে র সোফাতে গিয়ে গা এলিয়ে দিল।চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরছে
–কি অদ্ভুত তোমাকে পেয়েও পেলাম না
হঠাত্ আহসান পানজাবি টা খুলতে যাবে তখন মনে পরলো নীলিকা র কথা—নীলিকা তার পানজাবি র বাম পকেট টা দেখতে বলেছিল
আহসান দ্রুত বাম পকেটে হাত দিয়ে দেখে একটা নীল খাম।সেটা খুলে দেখে তাতে হলুদ কাগজে লেখা চিঠি
আহসান চিঠিতা পড়তে শুরু করলো
“”””এই যে ম্যানেজার
নিজেকে কি মনে করেন হ্যাঁ ।খুব দায়িত্ব শীল স্বামী ।আপনি কি জানেন আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে দায়িত্ব জ্ঞান হীন লোক।নিজের বৌ এর মনের খেয়াল রাখতে পারেন না কেমন লোক আপনি ।আমি নিশ্চিত আপনি এ যাবত টুকলি করে পাশ করেছেন ।চাকরি ও টুকলি করে পেয়েছেন।যার নিজের বৌ এর মনের খেয়াল থাকে না তার পড়াশোনা র খেয়াল কিভাবে ছিল।
আপনাকে কিছু বলতে চাই
মনে পরে প্রথম বিবাহবার্ষিকী র দিন সকালে আপনি আমাকে একটা শাড়ি দিয়ে ছিলেন।সাত সকালে উঠে বলেছিলেন ঐটা পড়ে আপনার সাথে বেরোতে।সেদিন কিছু বলিনি।ইচ্ছে করে অন্য একটা শাড়ি পড়ে বেরিয়ে ছিলাম ।কি করতাম।বলদ একটা।ব্লাউজ পেটিকোট ছাড়া কিভাবে শাড়ি পড়ে শুনি।এইটা ও মগজে নেই।
এবার দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী তে গিফট করলেন একটি ছোট গলার হার।অথচ কিনে আনার সময় খেয়াল করেন নি তার আংটা ভাঙা।আর আমি না পরলে সেটা আমার দোষ ।
যাই হোক জানি না এইবার কি উদ্ভট উপহার দিবেন।
শুনুন পানজাবি টা নিজের হাতে সেলাই করেছি।লুকিয়ে লুকিয়ে ।আমি জানি সকালে যখন বিছানায় ওটা মেলে রাখব বিশ্বাস এর ঠেলাতে ঐটা দেখতে ও যাবেন না কি রেখেছি।চুপচাপ পরে চলে আসবেন।আর এটাও দেখবেন না যে ওটা নীল রঙের ।নিজের জীবনের নীল মুছে ফেলেছি কিন্তু ভালোবাসা টা আপনা কে দিয়ে ছি।তাই আপনাকে সাজাতে চাই আমার নীলে।
আমি নিশ্চিত এটাও খেয়াল করবেন না যে আমি বাসর রাতে আপনার উপহার দেওয়া সেই হলুদ শাড়ি টা পরেছি।আর আমার অতীত এর অতিত শাড়ি পছন্দ করতো না খোলা চুল পছন্দ করত না।কিন্তু তিন টা বছর ধরে আপনি একবার ও দেখতে যান নি আমি কার পছন্দ এর জন্য শাড়ি পরি আর খোলা চুলে থাকি।
আপনি অসভ্য ভারী অসভ্য ।আপনি কি মনে করেছেন ?আপনাকে ভালোবাসি?কখনো না।আপনি যদি প্রেমের প্রস্তাব দেন তবে ভেবে দেখতে পারি #প্রেম_ছোয়ালে প্রেম ছোয়াবো কি না।
তবে মনে রাখবেন মনের খবর না রাখায জন্য কঠোর শাস্তি দেব আপনাকে অসভ্য ম্যানেজার
ইতি
অসভ্য ম্যানেজার এর হলদে পাখি””””
আহসান চিঠি টা পরে থ হয়ে গেছে।আবার ও চোখের কোনা দিয়ে পানি গরিয়ে পরলো ।কিন্তু এটা সুখের
আহসান এর খেয়াল গেল।নিজের ঘরের দিখে।ঘরে আলো জ্বলছে।আহসান দ্রুত উঠে দাঁড়ালো
ঘরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে
বড্ড দেরী করে ফেলেছে।ভুল করেছে ।না জানি কি কঠোর শাস্তি পেতে হবে
আহসান ঘরে গিয়ে দেখে দরজা টা খোলা ।পুরো রুমে মোমবাতি জালানো।পুরো রুম গোলাপের পাপড়ি দিয়ে সাজানো
আহসান এর নজর গেল খাটের দিকে।পুরো খাটে ও গোলাপ এর পাপড়ি ছরানো।মাঝখানে হাঁটুর ওপর মুখ গুঁজে খোলা চুল গুলো ভাসিয়ে চুপচাপ বসে আসে তার হলদে পাখিটা
–হলদে পাখি
–,,,,,,,,,,,,,,,
— হলদে পাখি
নীলিকা র সাড়া না পেয়ে আহসান গিয়ে নীলিকা র কাধে হাত রাখলো।নীলিকা মাথা উঁচু করলো ।আহসান তাকিয়ে দেখে নীলিকা র চোখ এর কাজল লেপ্টে গেছে পানিতে
–হলদে পাখি।আমার অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে।কিন্তু ধরেছি ক্ষমা করে দেও।আর জীবন এ এমন হবে না
–অসভ্য ম্যানেজার একটা ।কোন কথা নেই আপনার সাথে।আমি ঐ আশফি র কাছেই যাব
আহসান এই কথা শোনা মাত্র ই তড়িত্ গতিতে নীলিকা কে জরিয়ে ধরলো
–পাগল পেয়েছো।আর হচ্ছে না ।ছারছি না আর মরা পর্যন্ত
–আপনি খুব খারাপ।আমার অন্ধকার এ ভয় করে জানেন না
–ক্ষমা করে দিও ।আর হবে না
–কোন ক্ষমা নেই আপনি অসভ্য
নীলিকা এই বলে বিছানা থেকে উঠে গেলে হঠাত্ আঁচলে টান পরে।পেছনে তাকিয়ে দেখে আহসান নীলিকা র আঁচল ধরে হাঁটু গেড়ে বসে আছে
—–তোমার আঁচলে সারাজীবন একটু বেধে রাখবে হলদে পাখি।বিশ্বাস করো এই অসভ্য টা খুব ভালোবাসে তোমাকে।এই অসভ্য টাকে সভ্য করার দায়িত্ব নেবে বলো না।আর পারছি না।হাঁপিয়ে গেছি
নীলিকা র চোখের পানি চলে আসলো।এদিকে আহসান ও কাঁদছে
–প্রপোজাল রিজেক্ট এড।
–কেন
–অসভ্য সব বোঝে মন বোঝে না
–এবার বুঝবে
আহসান উঠে নীলিকা কে জরিয়ে ধরলো।নীলিকা ও আঁকড়ে ধরলো আহসান কে।কতোদিন এর ভালোবাসা আজ পরিনতি পাচ্ছে
–আশফি কে কি বলে আসলে
–ওকে ভালো মতো ঝেড়ে দিয়ে এসেছি।বজ্জাত ছেলে একটা ।জানেন আরেকটা কাজ করেছি
–কি করেছো শুনি
–ওর থেকে তিনশ টাকা নিয়ে ছি।তা থেকে ৫০ টাকা দিয়ে অটো করে বাড়ি এসেছি
–আর বাকি টাকা
–আগের থেকে ফুল অর্ডার করেছিলাম ।কিন্তু গোলাপ কম ছিল।বাকি টাকা দিয়ে আরো গোলাপ কিনেছি।আর অন্য গোলাপ গুলো কে ফ্লোর এ সাজিয়ে ওর টাকার গোলাপে বিছানা সাজিয়েছি
–কেন
–এক্স গার্ল ফ্রেন্ড এর বাসর এর খাট সাজানো হলো বফ এর টাকাতে ।সুন্দর না হিহি
আহসান এর ও হাসি পেল ঐ কথা শুনে
–পাগলি একটা
‐-আপনি ও
— কি
–পাগল
আহসান এবার নীলিকা কে বুক থেকে উঠালো
–হলদে পাখি
–কি
–প্রতি দিন অসভ্য হব।আর তুমি সভ্য করবে ঠিকাছে
–মানে
–তোমাকে দেখে তো আজ খুব অসভ্য হতে ইচ্ছে হচ্ছে
নীলিকা লজ্জা পেয়ে আহসান এর থেকে নিজেকে ছারিয়ে নিতে গেলে আহসান আরো শক্ত করে নীলিকা কে আঁকড়ে ধরে
এই সপ্তাহ পর
আহসান এর ফোনে ইমেইল আসে।আহসান হন্তদন্ত হয়ে অফিস থেকে বাড়ি তে যায়
নীলিকা দরজা খুলে অবাক
–একি ম্যানেজার আপনি এখন
–হলদে পাখি ঘরে চলো।একটা সারপ্রাইজ আছে।ক্ষমা করো।তৃতীয় বিবাহবার্ষিকী র উপহার টা আজ দিচ্ছি।একটু দেরী হয়ে গেল
–কি বলছেন টা কি
নীলিকা কে বিছানায় বসিয়ে আহসান ওর ফোন এর মেইল টা দেখালো
মেইল দেখে নীলিকা চোখের পানি আটকাতে পারলো না।আহসান কে জরিয়ে ধরলো
আসলে আহসান নীলিকা র সব ইনফরমেশন দিয়ে অনলাইন এ স্কলারশিপ এর আবেদন করেছিল ।আজ রেজাল্ট দিয়ে ছে।কানাডা র এক খ্যাতিমান বিশ্ববিদ্যালয় এ নীলিকা চান্স পেয়েছে
–আমি হাভারড প্রথম চয়েস দিয়ে ছিলাম ।কিন্তু,,,,,,
–আল্লাহ্ যা দিয়ে কেন আমি তাতে খুশি।এতো কেন ভালোবাসেন বলুন তো।আমি তো কিছুই দিতে পারি না আপনাকে
–কে বলেছে দিতে পারো না ।আজ দিতে হবে
–কিভাবে
আহসান উঠে গিয়ে আলমারি থেকে সেই শাড়ি টা বের করলো যেটা প্রথম বিবাহবার্ষিকী তে নীলিকা কে দিয়ে ছিল ।তার সাথে ম্যাচিং ব্লাউজ পেটিকোট অরনামেন্টস।আর নীলিকা র গলাতে সেই হারটা পরিয়ে দিল
–এতো কিছু কিভাবে
–হুম আংটা টা কাল ঠিক করে এনেছি।আর এগুলো তার আগের দিন নিয়ে এসেছি।এবার এগুলো পড়ে এসো।দেখি আমার হলদে পাখিটা কে আর কতো সুন্দর লাগে
নীলিকা লজ্জা মুখে আহসান কে জরিয়ে ধরলো
এক মাস পর
কাল নীলিকা আর আহসান এর ফ্লাইট।কানাডা তে আহসান এর চাচা থাকেন।সেই সুবাদে সে নীলিকা কে নিয়ে দিব্যি সেখানে সংসার করবে
হঠাত্ কলিংবেলের আওয়াজ
–এখন কে এলো
–দাঁড়াও দেখছি
আহসান গিয়ে দরজা খুলে দেখে আশফি।নীলিকা ও এলো
–আশফি তুমি
–হ্যাঁ ।তোমার আর আহসান এর কাছে ক্ষমা চাইতে এসেছি।আর আসব না কখনো তোমাদের জীবন এ
–চাইলেও আসতে পারবে না
–মানে
–আসলে নীলিকা র কানাডা র,,,,,,,,, এই বিশ্ববিদ্যালয় এ চান্স পেয়েছে ।কাল দুপুর ২ টাতে আমাদের ফ্লাইট
আশফি কি বলবে বুঝতে পারছে না
–এখন শুনেছো।এবার যাও।ম্যানেজার চলুন তো
–আহ নীলিকা কি করছো।আশফি এসো এক কাপ চা,,,,
–না থাক।ভালো থেকো।পারলে ক্ষমা করে দিও।আমার ও একটু তাড়া আছে আসছি
আশফি চলে গেল
পরের দিন দুপুর দুটোতে
প্লেটে বসে আসে আহসান আর নীলিকা ।নীলিকা দিব্যি আহসান এর কাঁধে মাথা রেখে আছে
–হলদে পাখি
–হুম
–তুমি খুশি তো
–অনেক
–আচ্ছা সেদিন শপিংমল এ তুমি নাকি আশফি কে দেখোনি।তাহলে কি দেখে প্রায় কেঁদে দিয়ে ছিলে
নীলিকা কি বলবে ভেবে পারছে না
–আসলে
–কি
–আসলে আমি দেখেছিলাম একটা কাপল।আর কোলে কি সুন্দর একটা বাচ্চা ।তারা কি সুন্দর ঘুরছে ।আর বিয়ে র এতো দিন এও আমি আপনাকে,,,,,
আহসান নীলিকা র হাত টা শক্ত করে ধরলো
–চিন্তা করো না।এবার আর ছারছি না।এক খাটে তিনজন ঘুমিয়ে ই ছারব
–অসভ্য একটা
–হুম সভ্য করে নেবে
এদিকে
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আশফি দেখে ২ টা ১০ বাজে।আশফি খোলামেলা একটা জায়গায় এসেছে।এয়ারপোর্ট এর কাছেই।
ইচ্ছে ছিল শেষ বারের মতো নীলিকা কে দেখার।কিন্তু অফিসে র কাজে আটকে গেছিল।আর আসা হয়নি।দেরী হয়ে গেছে
হঠাত্ উপরে শব্দ ।আশফি তাকিয়ে দেখে প্লেন ধীরে ধীরে উপরে উঠে যাচ্ছে।অরথাত টেক অফ করছে
আশফি ঘড়ি র দিকে তাকালো।হ্যাঁ এটাতে ই তার নীল পরী আছে।ভেজা চোখে আশফি আকাশের দিকে ঐ উড়ন্ত প্লেনের দিকে তাকালো
–ভালো থেকো নীল পরী
এদিকে
প্লেন চলছে
–হলদে পাখি
–কি
–তুমি করে বলো না আমাকে
–না হবে না
–হবে
–হবে না
–হবে
–আচ্ছা বলছি
–বলো
–,,,,,,,
–কি হলো বলো
–তুমি
–আরেকবার
–উহ বজ্জাত ম্যানেজার তুমি খুব খারাপ
আহসান হেসে নীলিকা কে জরিয়ে নিল।
কাঁচের বাইরে মেঘ ছুঁয়ে যাচ্ছে ।শুরু হতে যাচ্ছে কারোর ভালোবাসার সংসার ।পরিপূর্ণ পেতে যাচ্ছে আহসান এর ভালোবাসা ।আর শাস্তি পাঁচ্ছে আশফির মতো কিছু বিশ্বাস ঘাতক।
——————————-সমাপ্ত——————————-
“””””””””সবাই নামাজ কায়েম করুন “”””””””””
কেমন লাগল জানাবেন