❤বসন্তের ছোঁয়া❤
লিখাঃ Ayesha Ariya Afiya
পর্বঃ ১২/১৩
,
,
সারাঃ ইশশশ খুব লেগেছে না কোথায় লেগেছে এখানে বুঝি( পা মুচড়ে দিয়ে)
,
রাজঃ আহহহ।
,
সারাঃ এইটা তো মাত্র ট্রেইলার দিলার কলিজার টুকরা মুভি আসছে যতবার তুমি আমায় মারতে চাইবে ততবার নিজের ফাঁদে নিজেই পড়বে, তোমার ভাবনা যেখানে শেষ আমার ভাবনা ঠিক সেখান থেকেই শুরু কেমন দিলাম মিস্টার রাজ চৌধুরী ভুলে যেও না, আমি সাবিনা ইয়াসমিন সারা সারা চৌধুরী ( শয়তানি হাসি দিয়ে)
,
রাজঃ আহহহ ফুপি কোথায় তুমি রেহেনা আপু( ব্যাথায় কুকিয়ে উঠে)
,
সারাঃ সামনে তোমার জলজ্যান্ত বউ তাকে না বলে ফুপি কে আর আপুকে ডাকার কি প্রয়োজন বলত কলিজার টুকরা দাঁড়াও আমি তোমার পা ভালো করে দিচ্ছি।
,
রাজঃ নাহহহ( চিল্লিয়ে)
,
সারা বাড়ির কাজের লোক মিলে রাজকে বেডে বসিয়ে পা ম্যাসাজ করে দিচ্ছে সারা মুচকি মুচকি হাসছে অতপর ফোন বের করে অনিককে ফোন দিল, অনিক এসে পায়ের অবস্থা দেখে একটা মলম আর কিছু মেডিসিন দিয়ে যায় নিয়মিত খাওয়ার জন্য।
,
রাজের ফুপিঃ তুই কি ছোট বাচ্চা যে এভাবে সিড়ি থেকে পড়ে গেলি।
,
রাজঃ ফুপি সারা আমায় মেরে ফেলার জন্য ফাঁদ পেতে রেখেছিল! তুমি এতটা নিচ সারা আমি ভাবতে পারছি না!
,
সারাঃ তাই নাকি গো কলিজার টুকরা আমি তোমায় মেরে ফেলতে চেয়েছি বিষয় টা বেমানান লাগছে না! মিথ্যা বলতে ভালোই পরো যাই হোক তুমি নিজের ফাঁদে নিজেই ফেঁসেছো আমার কিন্ত এতে কোনো হাত নেই।
,
রেহেনাঃ রাজ মিথ্যা কথা বলাটা যত তাড়াতাড়ি ছাড়বি ততই তোর জন্য মঙ্গল আমি নিজের চোখে দেখেছি তুই ডিটারজেন্ট পাউডার ছিটিয়ে দিয়েছিস যাতে সারা সিড়ি তে পা রাখতে না রাখতে ই পড়ে মারা যায়।
,
রাজঃ আপু তুমিও?
,
রেহেনাঃ হুম আমিও কি ভেবেছিস আমরা থাকতে তুই সারার কোনো ক্ষতি করতে পারবি, পারবি না আমরা হতে দিব না, হুম সারা নির্ঘাত লান্চ করা হয়নি টেবিলে খাবার রেডি এসে খেয়ে যাও।
,
সারাঃ ওকে আপু( রাজের দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি হেসে)
,
রাজঃ ভালো করলে না সারা তুমি এর জন্য তোমায় চরম মূল্য দিতে হবে ( রাগী গলায়)
,
সারাঃ( একটু ঝুঁকে) তাই কিরকম মূল্য দিতে হবে কলিজার টুকরা?
,
রাজঃ হোয়াট! কলিজার টুকরা?
,
সারাঃ আমি বরং খেয়ে আসি তারপর তোমার সাথে কথা হবে কেমন।
,
সারা খাবার নিয়ে এসে সোফায় বসে শার্টের হাতা ফোল্ড করে রাজকে দেখিয়ে দেখিয়ে খাচ্ছে চিংড়ি মাছের মালাইকারী এটা রাজের ফেভারিট ডিশের মেধ্য একটা।
,
সারাঃ ফুপির রান্না আহহ এত মজা কেন? শুধু মন চাই খেতে চিংড়ি মাছের মালাইকারী টা হেব্বি হয়েছে কেউ যদি খেতে চাই তো খেতে পারে।
,
রাজঃ বয়েই গেছে আমার খেতে।
,
সারাঃ ওকে আমি তো তোমায় বলিনি বিড়ালকে বলেছি এই রুমে একটা মস্ত বড় বিড়াল আছে তো তাকে বলেছি।
,
রাজঃ কিহহহ আমি বিড়াল( কপালের রগ খাড়া করে)
,
সারাঃ আমার খাওয়া শেষ তোমার পা ব্যাথা করছে আমায় বলবে তো নাকি কলিজার টুকরা পা মালিশ করে দেয় কেমন।
,
রাজঃ একদম না আমার কাছে আসলে তোমার খবর আছে সারা।
,
সারাঃ ওকে যাব না, কিন্ত তুমি আমার গলা নামিয়ে কথা বলবে কেমন, গলা উঁচু করবে তো তোমার পা টাও আমি একটু আগের মত মুচড়ে দিব।
,
সারা ল্যাপটপ অন করে অফিসের কাজ করছে ড্রেস চেঞ্জ করেনি এখনো এমন সময় ফোন আসে রাজের ফোনে সারা একটান দিয়ে ফোন রিসিভ করে।
,
রাজঃ সারা এটা আমার ফোন।
,
সারাঃ তো হ্যালো।
,
মেহেরিমাঃ ডারলিং তুমি কোথায় গো আমার সাথে প্লিজ একটু দেখা করবে প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
,
সারাঃ ওকে সুইট হার্ট তুমি সরাসরি আমাদের বাড়িতে চলে আসো কেমন।
,
মেহেরিমাঃ তোমার গলাটা কেমন যেন মেয়ে মেয়ে লাগছে কি হয়েছে তোমার ডারলিং? প্লিজ বল আমায় অসুস্থ তুমি?
,
সারাঃ জি জান আমি তো অসুস্থ আমায় এসে দেখে যাও এই মেহেরিমা ডাইনী পেত্নী আমি সারা বুঝলি তোর ডারলিং না, চুপচাপ ফোন রাখ আর যদি কখনো তোকে দিতে দেখি রাজের ফোনে খুন করে ফেলব।
,
ফোনটা কেটে একটা আছাড় দিয়েছে দেওয়ালে ফোন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
রাজঃ সারা এটা তুমি কি করলে আমার আই ফোন টা ভাঙ্গলে কেন?
,
সারাঃ আমার ইচ্ছা হয়েছে ভেঙেছি তাতে তোমার কি?
,
রাজঃ জানো এটার দাম কত?
,
সারাঃ টাকার গরম দেখাচ্ছ আমায় একটা ভেঙেছি আরেক টা কিনে দিব কেমন বটগাছের পেত্নী যাতে তোমায় ফোন না দিতে পারে তাই এমন করলাম বুঝলে জান পাখি।
,
রাজ শুধু দাঁত কিরমির করছে রাগে কপালের রগ খাড়া হয়েছে কিন্ত সারার কিচ্ছু আসে যায় না এতে কিছু আসে যায় না, সারা ওর মামার সাথে এবং মায়ের সাথে কথা বলে এসে বই নিয়ে পড়তে বসলো সামনে অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা যথেষ্ট ভালো ছাত্রী সারা একটু পড়তেই সব মনে থাকে।
রাতে খাবার খাওয়া শেষে বেলকনিতে কফির মগ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ওর বাবার কবর দূর থেকে দেখা যাচ্ছে রাহাত চৌধুরী লেখা।
রাজ উঁকি ঝুঁকি মারছে বাট সারার আসার নাম নেই পছন্দ না করুক কিন্ত একসাথে তো থাকে ঝগড়া করে আবার সারার পাগলী সব কিছু রাজ কে ভীষণ ভাবে ভাবায়।
,
রাজঃ কেউ কি আছে আমি একটু ওয়াশরুমে যেতাম।
,
সারা ধরে ধরে ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে বাহিরে দাঁড়িয়ে আবার ও বেডে নিয়ে বসিয়ে কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে দেয় ঘুমিয়ে পড়তে, সারাও লাইট অফ করে নিত্য দিনের ন্যায় রাজকে আষ্টেপৃষ্ঠে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।
,
,
সকালে সারা রেডি হচ্ছে আর রাজ বেডে বসে আড় চোখে দেখছে ওর পায়ের অবস্থা ভালো না সেজন্য অফিসে আপাতত কয়দিন সারা যেতে দিবে না বাড়িতেই রাখবে রাজকে।
আজকে পড়েছে হোয়াইট কালারের প্যান্ট, পেঁয়াজী কালার টি শার্ট হাতাটা ফোল্ড করে নিয়েছে, ঠোঁটে গোলাপী লিবস্টিক, চোখে হালকা কাজল, শার্টের সাথে জুতো ম্যাচিং করা, সিল্কি চুলগুলো ছাড়া ভেজা তাই, সানগ্লাস টা মাথার উপরে রেখেছে।
,
সারাঃ আজকে মিটিং আছে সো আমি যাচ্ছি টাইম মাফিক খেয়ে ট্যাবলেট খেয়ে নিও কেমন না হলে তোমার ওপর পা টা আমি মুচড়ে দিব।
,
রাজঃ( আমতা আমতা করে) না মানে বলছিলাম যে এসব প্যান্ট টি শার্ট হাই হিল না পড়লে হয় না।
,
সারাঃ না হয় না যতদিন পর্যন্ত তুমি নিজ থেকে আমায় মেনে নিচ্ছ ততদিন পর্যন্ত আমি এসবই পড়ব, যেদিন স্বীকৃতি দিবে রাজ চৌধুরীর ওয়াইফ সামিনা ইয়াসমিন সারা সেদিন এইসব না, বউ সেজে সব সময় তোমার সামনে থাকব, আর তুমি তো কোনো দিন বলবে না তাই আমার ও শাড়ি পড়া হবে না বাই কলিজার টুকরা।
,
,
অফিসে এসে কার থেকে নেমে কার পার্কিং প্লেসে রেখে লিফট দিয়ে নিজের কেবিনে ঢুকে কাজ শুরু করে দিল সব স্টাফরা এসে হাজির কেউ এখন এক মিনিটও লেট করে আসে না।
,
দীনাঃ May i coming mam.
,
সারাঃ Why not?( ল্যাপটপের দিকে মনোযোগ রেখে)
,
দীনাঃ ম্যাম এই ফাইলটা কমপ্লিট হয়েছে কালকে দিতে চাইছিলাম বাট আপনি ততক্ষণে বেরিয়ে গিয়েছিলেন।
,
সারাঃ ফাইলটা রেখে আপনি যেতে পারেন।
,
দীনাঃ ম্যাম একটা রিকুয়েস্ট ছিল? যদি পারমিশন দিতেন?
,
সারাঃ হুম মিস দীনা বলতে পারেন।
,
দীনাঃ স্যার তো কয়ক দিন আসবে না, প্রতি বছরই আমাদের নিয়ে স্যার ট্যুরে যায় তো এই বছর কি যাওয়া হবে।
,
সারাঃ কোথায় যায়?
,
দীনাঃ কক্সবাজার।
,
সারাঃ( ল্যাপটপ অফ করে) কি বললেন আপনি কক্সবাজার স্যরি এই বছর কোথাও যাওয়া হচ্ছে না, এন্ড দেটস ফাইনাল।
,
দীনাঃ( মন খারাপ করে) ওকে ম্যাম।
,
সারাঃ কেন কক্সবাজারের নামটা আবার আমার সামনে পড়লো আমি সহ্য করতে পারব না না কি করে ভুলে গেলে রাজ আমি তো তোমায় ভালোবাসতাম তুমিও তাহলে কি করে উফফ আর ভাবতে পারছি না।
,
অস্বস্তি নিয়ে গ্লাস টা সরিয়ে দূরের আকাশটার দিকে তাকিয়ে আছে আর মনে পড়ছে রাজের পাগলামো গুলি।
,
,
ভার্সিটি থেকে কক্সবাজার ট্যুরে যাবে সো অনার্স প্রথম বর্ষ যারা তাদের কেও যেতে হবে বাধ্যতা মূলক। সবাই রওনা দিল বাসে করে ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্টদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক বাসে দুই তিনজন করে গার্ড দেয়ার রাজ ইচ্ছা করে সারার বাসে উঠে ওকে জ্বালানোর জন্য।
,
সারাঃ এই পিংকি দেখো না এই লোকটা আমার দিকে কিভাবে তাকিয়ে আছে আরে আমার দিকেই তো আসছে।
,
পিংকিঃ সারা ভার্সিটির ক্রাস রাজ ভাইয়া আর তুমি ও নাকে সহ্য ই করতে পারো না, আমায় প্রপোজ করলে প্রথম বারই রাজি হয়ে যেতাম।
,
সারাঃ কিহহহ তুমি ও যাও তোমার সাথে কোনো কথা নেই আমার।
,
পিংকিঃ তুমি যা সুন্দর ছেলেরা তো পেছন পেছন ঘুরবেই ম্যাম আর আজকে তো আমি নিজেও তোমার উপর ফিদা।
,
রাজঃ Excuse me.
,
পিংকিঃ আমায় বলছেন ভাইয়া( খুশি হয়ে)
,
রাজঃ না আপনার পাশের জনকে পিংকি তুমি আমার সিটে যাও আমি এখানে বসব।
,
পিংকিঃ ওকে ভাইয়া।
,
সারাঃ না না তুমি যেওনা প্লিজ এই যে আপি আমার পেছনে পাগলা কুকুরের মত কেন লেগে আছেন আমি তো বললাম আপনাকে আমার পছন্দ না তাও পেছন পেছন ঘুরেন ডিস্টার্ব করেন লজ্জা করে না আপনার।
,
রাজঃ( গা ঘেঁষে বসে) উহুম একটু না লজ্জা করবে কেন আমি তো তোমায় ভালোবাসি তাই।
,
সারাঃ উফফ অসহ্য।
,
রাজঃ ভালোবাসি।
,
সারা পাশ থেকে উঠে চলে যেতে নিলেই রাজ একটান দিয়ে নিজের সাথে এক হাত দিয়ে জোরে ধরে বসিয়ে দেয়।
সারাঃ Don’t touch me.
,
রাজঃ টাচ এখনো করিনি ম্যাম কিন্ত এখন এখান থেকে উঠে পড়লে কিন্ত সত্যি সত্যি ফুল টাচ করব সো চুপচাপ।
(সারা নড়ছে দেখে) এত অহংকার কেন তোমার?
,
সারা বলল,,,
” অহংকার তারাই করে
যারা হঠাৎ করে এমন কিছু পেয়ে যায়
যা পাওয়ার যোগ্যতা তাদের কোনো
দিনও ছিল না
( এ পি জে আবুল কালাম)
আর আমি জীবনে এমন কিছু পায়নি যাতে আমার অহংকার হবে, ছাড়ুন বলছি।
,
রাজঃ কথায় কথায় এত উদাহরণ দাও কেন বলত?
,
সারাঃ শয়তান যুক্তি দেয় আর আলেম উলামারা দলিল দেয় সো আমি দলিলে বিশ্বাসী যুক্তি তে না, আপনি আমায় ছাড়ুন প্লিজ নয়তো স্যারের কাছে কমপ্লেন করব।
,
রাজ ছেড়ে দিল সারা একেবারে পেছনের সিটে গিয়ে বসে ঘুমিয়ে পড়েছে কখন সেটা খেয়াল নেই যখন ভাঙ্গলো তখন দেখল রাজের ঘাড়ে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে ছিল এতক্ষণ রাজ মায়াবী দুটি চোখ দিয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে দ্রুত সরিয়ে নিল রাজের থেকে নিজেকে রাজ তো সেই খুশি শুধু মিটিমিটি হাসছে।
,
অতপর কক্সবাজার এসে পৌঁছে সবাই যে যার রুমে এসে কতক্ষণ বিশ্রাম করে দেখতে গেল সমুদ্র সৈকতের অপরুপ দৃশ্য রাজ একবার ও তাকায়নি ইগনোর করার শুরু করে দিয়েছে যেটা সারা মানতে পারছিল হ্যা এই তিনদিনে ভালোবেসে ফেলেছে। কালকেই ফিরে আসবে এমন সময় একটা মেসেজ ” একটা শাড়ি পাঠিয়েছি এটা পড়ে এনামুলের সাথে চলে আসো ”
,
সারা শাড়ি টা পড়ে যায় একটা রেস্টুরেন্টে বাট রাজ কোথাও নেই পুরো রেস্টুরেন্ট অন্ধকার।
তখনই একটা জায়গায় লাইট পড়ল লিখা
I
Love
You
Sara
লিখাটা দেখে মুচকি হাসলো,,,,sara
তখনই কেউ একজন পেছন থেকে গিটার হাতে গাইছে।
“Tere samne aa jaane se
Yeh dil mera dhadka hai
Yeh galti nahi hai teri
Kasur nazar ka hain
Jis baat ka tujhho durr hai
Woh karke dikha dunga
Tumko main chupa lunga tumse
Dil mein chupa lunga”
পেছন থেকে এসে সারাকে জরিয়ে ধরে চুলগুলো সরিয়ে গলায় একটা পেন্ডিং পড়িয়ে দেয়। যেটা এখনো সারার গলায় আছে। অতপর কানে কানে বলে I love you my heart
হাঁটু গেড়ে বসে প্রপোজ করে
রাজঃ জানি না কিভাবে প্রপোজ করতে হয়, কিভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করতে হয়, আমি খারাপ এটা জানি স্বীকার করলাম আমায় একটা সুযোগ ভালো হওয়ার প্লিজ তোমায় প্রথম যেদিন দেখেছি সেদিন ও ভোগ করার লোভ জেগেছিল বাট এখন না, প্লিজ আমায় একটা নতুন জীবন দান করবে সারা আই রিয়েলি লাভ ইউ আমি সত্যি ই তোমায় ভালোবাসি সারা আই লাভ ইউ।
সারাঃ লাই ইউ টু( মাথা নিচু করে)
রাজঃ সত্যি( খুশি হয়ে)
সারাঃ তো কি মিথ্যা আমিও আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি আই লাভ ইউ।
অতপর সারারাত রাজের কোলে বসে সমুদ্রের অপরুপ সৌন্দর্য দেখে সেদিন থেকেই শুরু হয় সারা আর রাজের রিলেশন শিপ রাজ একবারও সেদিন বাজে ভাবে সারাকে টাচ করেনি বরং বলেছে সে ওর পবিত্র ভালোবাসা কে অপবিত্র করবে না।
কিন্ত আজ শুধু সবকিছু অতীত কথা গুলো ভেবেই চোখ দিয়ে দুই ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়লো ভাবনায় ছেদ ঘটলো তখন কেউ একজন এসে বলল
মে আই কামিং
সারাঃ মিস্টার আফজাল আসুন।
চলবে………..।
❤বসন্তে ছোঁয়া ❤
লিখাঃ Ayesha Ariya Afiya
পর্বঃ ১৩
,
মে আই কামিং
সারাঃ মিস্টার আফজাল আসুন।
,
আফজালঃ অনেকক্ষণ সময় ধরে নক করছি বাট আপনার কোনো রেসপন্স নেই।
,
সারাঃ Sorry! Please take your sit.
,
আফজালঃ Yeah sure.
,
সারাঃ কি খাবেন বলুন আমি ওয়ার্ডার করি।
,
আফজালঃ আপনার ভাইয়ার তো পা মচকে গেছে তো মিটিং টা আপনিই করবেন।
,
সারাঃ জি।
,
আফজালঃ প্লিজ একটু যদি সময় দিতেন আমি কিন্ত আমার প্রপোজালের আন্সার এখনো পায়নি( গ্লোব ঘুরাতে ঘুরাতে মৃদু হেসে)
,
সারাঃ আজ হোক কাল হোক আন্সারটা নো ই হবে ( মুচকি হেসে)
,
আফজালঃ জানতে পারি কি কিসের জন্য আই মিন আমার কি এরকম নেই যে জন্য তিনটা মাস ধরে ঝুলিয়ে রেখেছেন? যদি বলতেন তো শুধরে নিতাম( মৃদু হেসে)
,
সারাঃ সব প্রশ্নের উত্তর সব সময় দেয়া যায় না, আর আপনি যথেষ্ট স্মার্ট তো পছন্দ হবে না যে বলবে সে একটা বলদ আর কোনো question.
,
আফজালঃ ( হাঁটু গেড়ে বসে) আই লাভ ইউ আই রিয়েলি লাভ ইউ প্লিজ ফিরিয়ে দিয়েন না আমি আপনাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসি কেন বুঝতে চাইছেন না।
,
সারাঃ আরে কি করছেন উঠুন প্লিজ।
,
আফজালঃ আগে আপনি আমার প্রপোজাল একসেপ্ট করেন তারপর।
,
সারাঃ Sorry, I can’t because I am married.( অন্য দিকে তাকিয়ে)
,
আফজালঃ What! I can’t believe it.
,
সারাঃ But! It’s true.
,
আফজালঃ No Never kabi nehi, আপনি আমার সাথে মজা করছেন তাই না।
,
সারাঃ আমি মজা করছি না পানি খান( গ্লাস এগিয়ে দিয়ে)
,
আফজালঃ( ঢকঢক করে পানি খেয়ে) আমি সিউর আপনি আমার সাথে মজা করছেন।
,
সারাঃ আপনি চেয়ারে বসুন আমি এতদিন আপনার কাছ থেকে অনেক বড় একটা সত্যি লুকিয়ে গেছি আমি বিবাহিত আর আমার হাজবেন্ড। ( থেমে যেয়ে)
,
আফজালঃ কে আপনার হাজবেন্ড?
,
সারাঃ রাজ চৌধুরী।
,
আফজালঃ Are you jocking.
,
সারাঃ No I am serious.
,
আফজালঃ রাজ চৌধুরী আপনার আপন ভাই না?
,
সারাঃ আমার আপন চাচাতো ভাই জানতে চাইবেন না কেন গোপন করেছি।
,
আফজালঃ হ্যা বলুন।
,
সারাঃ(তারপর সারা শুরু থেকে সবটা বলল চোখের পানি মুছে) আশা করি ধর্ষিতা মেয়ে কে কেউ নিজের স্ত্রী হিসেবে মেনে নিবে না, হ্যা আমিও ধর্ষিতা আর কার কাছে হয়েছি নিজের আপন চাচাতো ভাই।
,
আফজালঃ( শকড হয়ে) আমি এতকিছু জানার পরও আপনাকে বিয়ে করতে চাই যদি আপনি রাজি থাকেন?
,
সারাঃ নাহ এটা সম্ভব না আমি রাজকে ভালোবাসি ওকে ছাড়া অন্য কাউকে কোনো দিন ভাবিনি আর আপনাকে আমি দোয়া করি আপনি যেন একজন ভালো এবং সুন্দর লাইফ পার্টনার পান।
,
আফজালঃ প্লিজ কান্না থামান আর এই যে ( রুমাল এগিয়ে দিয়ে) ওকেআপনি যখন চাইছেন না তাহলে আমিও জোরাজুরি করব না তবে আজকের পর থেকে আপনার একজন ভালো বন্ধু হয়ে থাকব যদি অনুমতি দেন( মৃদু হেসে)
,
সারা মাথা নাড়ালো
আফজালঃ তাহলে আমি আজকে আসি আবারও দেখা হবে বাই।
,
সারাঃ বাই।
,
রাজ সব টা দেখেছে সারার কেবিনে গোপন ভাবে একটা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো যেটার ফুটেজ রাজ বাড়িতে বসে দেখছে কারণ ওর সন্দেহ হয় সারা কার সাথে কথা বলছে না বলছে সবকিছু কিন্ত কান্না টা গায়ে গিয়ে বিধল। কি অভিনয় টায় না করলো সারার সাথে শুধুমাত্র দেহভোগ করার জন্য।
,
সারা কাজ শেষ করে বাড়ি তে গিয়ে মাথা টায় গরম হয়ে গেছে রাজের পাশে মেহেরিমাকে দেখে।
,
সারাঃ এই পেত্নী তোর সাহস কি করে হয় আমার স্বামীর গা ঘেঁষে বসে আছিস সর বলছি না হলে মাথায় চুল একটা ও থাকবে না।
,
মেহেরিমাঃ ( ন্যাকা কান্না কেঁদে) বেবী দেখেছো সারা কি বলছে আমার চুল বাকি মাথায় থাকবে না, আমি আর কখনো তোমার সাথে আসব না দেখা করতে।
,
রাজঃ সারা।
,
সারাঃ Rai just keep your mouth, তোমার সাথে বুঝা বুঝি পড়ে হবে আগে পেত্নী টাকে দূর করে নিই কিরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন চুপচাপ বের হ আমার বেডরুম থেকে নয়তো মাথা ন্যাড়া করে ছাড়ব।
,
মেহেরিমাঃ ডারলিং দেখো না কি বলছে আমি তো তোমার জন্য স্যুপ রান্না করে এনেছিলাম নিজের হাতে খাওয়াব বলে কিন্ত সারা দেখো কি বলছে।
,
রাজঃ সারা বাড়াবাড়ি করবে না একদম মেহের সুইট হার্ট তুমি আমায় স্যুপটা খাইয়ে দাও তো।
,
মেহেরিমাঃ ওকে বেবী।
,
সারাঃ( মেহেরিমা স্যুপের বাটি টা এগিয়ে নিতেই সারা হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ফ্লোরে ফেলে দেয়) এসব ফালতু খাবার রাজ খায় না সো চুপচাপ বের হ আমার বেডরুম থেকে নয়তো ঠাস ঠাস করে কানের নিচে মেরে দিব।
,
মেহপরিমা ভয় পেয়ে এক দৌড়ে পালিয়ে গেল নয়তো সারা চুলগুলো কেটে দিত।
রাজঃ কাজটা তুমি একদম ঠিক করনি সারা।
,
সারাঃ( ভাঙা পা মুচড়ে দিয়ে) এবার ঠিক করেছি কলিজার টুকরা।
,
রাজঃ আহহহহহ( চিৎকার দিয়ে)
,
সারাঃ তোমায় আমি তিলে তিলে মারব এক বারে না, আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের শাস্তি তুমি পাবে এবং আমি নিজে দিব তোমায় পবিত্র ভালোবাসা কে অপবিত্র করবে না তাই না মনে রেখ আমি রাহাত চৌধুরী এবং সাবিনা ইয়ামিনের মেয়ে সামিনা ইয়াসমিন সারা।
,
,
এভাবে ই কেটে যায় আরো এক মাস সারার টর্চারে রাজ শেষ প্রতিদিন পা মুচড়ে দেয় আবার ম্যাসাজ করেও দেয় মলম দিয়ে।
,
রাজঃ তুমি কবে শান্ত হবে সারা আমি আর পারছি না।প্লিজ পেট ভরে গেছে আর খাব না।
জোর করে রাজকে খাওয়াচ্ছে সারা রাজের কথা না শুনে শুধু খাবার মুখে পুড়ে দিচ্ছে
” মহা বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দি হব শান্ত
যবে উৎপীড়নের ক্রন্দন – রোল আকাশে – বাতাসে ধ্বনিবে না।
অত্যাচারীর খড়গ -কৃপাণ -ভীম রণ -ভূমে রণিবে না।
বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত
( কাজী নজরুল ইসলাম)
সারাঃ কাজী নজরুল ইসলামের লেখায় নিপীড়িত মানুষের মুক্তির কথা ধ্বনিত হয়েছে তেমনই আমিও সেদিন শান্ত হব যেদিন তুমি নিজ থেকে আমায় মেনে নিবে আমায় ভালোবাসবে সারা আমি ভালোবাসি সেই দিন আমি শান্ত হব।নয়তো না রাত অনেক হয়েছে এবার ঘুমাও।
রাজের মুখে হঠাৎ করে একটা মরিচ ঢুকে যাওয়াতে ঝালে চোখ দুটো লাল আর মুখ টা শুকনো মরিচের মত দেখা যাচ্ছে সারা খেয়াল করেনি।
রাজ ঝাল কমাতে সারাকে একটান দিয়ে নিজের সাথে লেপ্টে ধরে ঠোঁট দিয়ে ঠোঁট চেপে ধরল সারা শকড চোখ দুটো বড়বড় করে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে।
চলবে………….. ❤❤❤❤❤❤