ভাগ্যবতী বেশ্যা

‘ ভাগ্যবতী বেশ্যা ‘

রেডি থাকিস আইজকা! ভালোমতো সাজবি! নামীদামী অল্প বয়সের পোলা পাবি! পোলা ডারে কিন্তু একদম খুশি কইরা দিবি! কচিকচি মাইয়াগো দেহাইলাম অথচো ওগুলোরে থুইয়া পোলাডা তোরে না দেইক্কা কিল্লাই রাজি হইলো! কইলাম ও যে ওয় পুরাতন মাল! বয়স ২৮ এর কাছাকাছি! তাও কয় ” পব্লম, পব্লাম নাই ” আরে কি জানো কইলো ইংরাজি তে? [ চিল্লিয়ে ] কিরে সাথি কি জানো কইছিলো?
~ পব্লেম নাই!
আনোয়ারার কথায় ইম্রিবা চোখ উল্টিয়ে বিষন্ন মুখ নিয়ে বলল..
~ প্রব্লেম ! মানে সমস্যা নাই!
আচ্ছা আজকে লোকটারে অন্যকাউর কাছে পাঠাও! আমার শরীর ভালো না!
~ তোর বা*! চুপচাপ পা মেইলা দিবি! রাত্রি ১২ টায় আইবো কইছে! যা সাজুগুজু কর!

ইম্রিবা সিল্কি চুলগুলো প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে উপড়ের রুমের দিক হাটা ধরলো! তার শরীর ক্লান্ত! এতোক্ষন সে চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন! কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, আজ একজন কাস্টমার ও পেলো না! প্রতিদিন ওখানে দাঁড়ালে তিন_চারটে তো চোখ বুঝে পেয়ে যায়! কিন্তু আজ? উল্টো পাশের বেশ্যা গুলো কাস্টমার নিয়ে ফুরুত! তাকে দেখেও না দেখবার মতো অবস্থা! আজ মনে হয় বেশি খারাপ লাগছিলো দেখতে!

শাড়ি পরে, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক দিয়ে! চুলগুলো খোঁপা করে নিলো! চুলগুলোর জন্য নাকি কাস্টমার দের ভেজাল লাগে! তাই খোঁপা করে রাখতে হয় সদা! বাহিরে তিব্র বৃষ্টি হচ্ছে! বিছানায় হেলান দিয়ে ফেইসবুকে নিউসফিড ঘুড়ছিলো! হঠাৎ ধারাম দরজা খুলতেই দ্রুতো ঠিক হয়ে দাঁড়ালো! ইম্রিবা ভ্রু-কুচকে রইলো! ২০_২১ বয়সের এক যুবক ছেলে! যুবক ছেলে তার কাছে কি জন্য আসবে? তাও এমন ভয়ংকর সুন্দর যুবক?
~ আপ..
ইম্রিবা আপনি বলতে যেয়েও বলল না! আপনি টা একদম মানাচ্ছে না! বাচ্চা ছেলের সাথে এগুলো ভাবতেও কেমন আজিব লাগছে! বয়সী লোক আসে ঠিকাছে! কিন্তু, এমন যুবক ছেলে?
~ তুমি কিন্তু টাকা নিয়ে ফিরত যেতে পারো? টাকা ফিরত দিয়ে দেবো!
ইম্রিবার সামনে দাঁড়ানো ছেলেটা ঘড়ি খুলে বিছানার পাশের টেবিলে রাখলো! ইন করা হালকা ভেজা শার্টের হাতের বাটন খুলতে লাগলো ! কলার থেকে বাটন খুলতে খুলতে বলল..
~ জানালা টা খুলে দিন!
ছেলেটার আওয়াজ কেমন মেইনলি টাইপের! শরীরের পশম দাঁড়িয়ে যাওয়ার মতো! ইব্রিমের পা আপনা_আপনি বিছানায় উঠে গেলো! বিছানার সাথে লাগানো জানালাটা খুলে দিলো! ঠান্ডা শো শো বাতাসের সাথে বৃষ্টির ফোঁটাও আসছে! বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালো একি যায়গায়! তার আজ আওয়াজ ই আসছে না! কাস্টমার আসলে সে দ্রুতো বলতো ~ নে দ্রুতো কাজ শেষ করে বিদেয় হ! কিন্তু আজ? কোনো আওয়াজ কেনো আসছে না? ছেলেটা শার্টটা সম্পুর্ন খুলে বিছানায় ফেলে দিলো! ফোর্সা বডিটা ক্লিয়ারলি চোখের সামনে! পায়ের বোর্ড শু দু’টো খুলে সাইডে রাখলো! ভেজা চুলগুলো ঝাড়া দিতে থাকলো! ইম্রিবা শুধু দেখে যাচ্ছিলো! এইবার তার রাগ লাগলো! এমন অল্পবয়সের ছেলের সাথে এগুলো করতে বেশ বিবেকে বাধবে তার! না করে দেওয়াটাই ভালো!
~ তুমি টাকাটা নিয়ে অন্যকাউকে দেখো! আমি পারবো না!
এইবার ছেলেটা তিক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে ইম্রিবার দিক তাকালো! সেকেন্ডেই ইম্রিবার সামনে দাঁড়ালো! ছেলেটা ইম্রিবার থেকে ৫_৬ ইঞ্চি লম্বা হবে! সে একটু সরে গেলো! বিছানার সাথে একদম লেগে! ছেলেটা তার বুড়ো আঙুল দিয়ে ইম্রিবার ঠোঁটের লিপস্টিক মুছে দিলো! যার ফলে লিপস্টিক সম্পুর্ন গালে ছড়িয়ে!
~ এগুলো লাগাতে হবে না! [ শাড়ির আচল টান মেরে খুলে দিয়ে! ] শাড়িও পরতে হবে না! [ চুলের খোঁপা টান মেরে খুলতেই ইম্রিবা ‘ উঁহু ‘ করে উঠলো ব্যাথায়! ] চুল নিয়ে কিচ্ছু করতে হবে না!

ইম্রিবার সিল্কি চুলগুলো ঝরঝর করে কোমরে লুটিয়ে পরলো! সে এখনো অবাক হয়ে তাকিয়ে নিচে! এতোটুকু ছেলের কাহিনী তার মাথায় ধরছে না! গলা শুকিয়ে যাচ্ছে! তার এতো ভয় করছে কেনো? একজন রাগী বেশ্যা হয়ে সে এই পুছকে ছেলেকে ভয় পাচ্ছে! আওয়াজ আসছে না কেনো? ছেলেটার হাত তার কোমরে যেতেই তার মুখ দিয়ে ‘ উঁহু ‘ আপনা আপনি বেরিয়ে এলো! একটানে শাড়ি ঘুড়িয়ে খুলে ফেলল! ছেলেটার এক ধাক্কায় সে দেওয়ালে ধ্রিম করে বারি খেলো! ব্যাথা পেয়েও তার মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হয় নি, কারন ততক্ষণে ছেলেটার মুখ তার ঠোঁটে! কামড়ে ঠোঁট ছুলে দিচ্ছে! ব্লাউজের বোতাম গুলো মিনিটেই খুলে গেলো! ইম্রিবা শুধু চাঁপাস্বরে আওয়াজ করেই যাচ্ছিলো! ছেলেটা যে রাগে এমন করছে তা বুঝতে সময় লাগে নি ইম্রিবার!

আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ভালোভাবে দেখছে ইম্রিবা! কামড়ের দাগ গুলো স্পষ্ট লাল হয়ে আছে! পুরো শরীর তার চিনচিন হয়ে জ্বলছে সাথে ব্যাথা! মুখেও লালচে দাগ গুলো স্পষ্ট! ঠোঁটে হাত দিতেও ভয় করছে তার! ভোরের ছ’টা বাজছে! অথচো ছেলেটা এখনো তার বিছানায় উল্টিয়ে শুয়ে আছে! কাম শেষ হলেই তো চলে যাওয়ার কথা! তাহলে ছেলেটা যাচ্ছে না কেনো? বা সেও কেনো বের করে দিচ্ছে না? তার বলতেও গা ঘিনঘিন করছে যে ” তার প্রচন্ড লজ্জা লাগছে “! একজন বেশ্যা হয়েও তার লজ্জা লাগছে! প্রচন্ড লাগছে! এই শরীর নিয়ে সে কোনো কাস্টমার পাবে নাকি সন্দেহ! বা ৪_৫ দিন কাজে যেতে পারবে নাকি সেটাও ভাবার বিষয়! বাহিরে গেলে সবাই বুঝে যাবে তার শরীরের দাগের কারন! সে কি বলবে? তাদের তো নিয়ম আছে! শরীরে দাগ বসানো নিষেধ! রাত ৩ টার আগে রুম থেকে বেড়িয়ে যাওয়া ! অথচো এ তো এখনো শুয়ে আছে! ইম্রিবা আড়চোখে বিছানায় তাকিয়ে নিজের ঘাড়ে ছুঁয়ে দিলো! বড্ড জ্বলছে! সব জ্বলছে!

গোসল করে কামিজ পরে দাঁড়িয়ে! সাহস ও পাচ্ছে না ডেকে দেওয়ার জন্য! ৮ টা বেজে যাচ্ছে! অনেকে দরজায় বারি দিয়ে গেলো! কি করবে সে? ছ’টা থেকে ছেলেটার মোবাইল বেঁজে যাচ্ছে ! আবার বাজতেই ছেলেটা নড়ে উঠলো! ইম্রিবা দ্রুতো অন্যপাশে ঘুড়ে গেলো! আড়চোখে দেখছে! মোবাইল টা কানে দিলো সে ! ঘুম জড়ানো ভাঁড়ি কন্ঠে কথা বলতে বলতে বিছানায় হেলান দিয়ে বসলো! চুলগুলো উপড়ে উঁচু করে দিলো!
~ ইয়ে’স ম্যানেজার!
~………?
~ ইয়াহ! গুড মর্নিং! হোয়াট এবাউট ইনভেস্ট?
~…….?
~ টু মাচ! ১২ লাখ ৫০ হাজার হলে সাইন দেবেন! আদারওয়াইস ক্যান্সেল!
~…….?
~ গিভ মি টু আওয়ার অ্যান্ড আই’ল বি দ্যায়ার!

ইম্রিবা মুখটা একটু হা করে দাঁড়িয়ে রইলো! তার হাত_পা কাঁপছে! বিছানার দিকে তাকানোর সাহস নেই! পিছনে এসে সে দাঁড়াতেই ইম্রিবা কুঁকড়ে গেলো! তার পা শুধু দূরে যেতে চাইছে! কিন্তু ছেলেটার হাত তার জামার নিচ দিয়ে পেট ছুঁয়ে দিতেই ইম্রিবা ঘুড়ে দাঁড়ালো! ছোটছোট চোখ করে তাকালেও চোখ নিচে চলে যাচ্ছে! তার থুতনি ধরে উপড়ে তুলে লালচে দাঁগ গুলো ছুঁয়ে দিচ্ছে বুড়ো আঙুল দিয়ে !
ছেলেটা যেতেই আনোয়ারা সহো ঘরে আরো কিছু মেয়েরা এলো! ইম্রিবা নিজ মনে মোবাইল টিপছে! আনোয়ারা এসেই চোখ বড়বড় করে বলল..
~ কি করছে পোলাডা তোরে! খালি কি কামড়াইছে নাকি কাম ও করছে!
আরেকজন বলল..
~ ছেলেটা কিন্তু চমৎকার দেখতে! আমরাও পিছেপিছে গেছিলাম যদি পছন্দ কইরা ফেইলা এতটাকা দিয়ে এক রাইত থাকে! কিন্তু বাবাহ পোলাডা যেই গাড়ি চালাইয়া মাথা উছা কইরা বাইরাইলো!
আনোয়ারা আবার বলল..
~ তা কি করলো তোরে নিয়া? নিশ্চই এক ঘন্টা পরেই ঘুমাইয়া গেছে!
ইম্রিবা থমথমে গলায় বলল..
~ সারারাত ঘুমাতে দেয় নি! পাচ’টা ত্রিশে ছাড়সে! ভগরভগর না করে, ঔষুধপাতি কিছু আনো!আমার শরীর ব্যাথা করছে! পুরো শরীরের দাগ গুলো জ্বালা করছে মলম দিতে বলো! আমার চুলগুলো ছিঁড়ে কিছু রাখে নি! চোখ দেখছো না আমার? লাল হয়ে ভয়ংকর দেখাচ্ছে! গলা ভেংগে গেছে! এটাকে পুছকে ভেবে পাপ করেছি! অনেক বড়! অসভ্য কোথাকার! আজকে যত কাস্টমার আসবে সব পাঠাবা! আমি সারাদিন কাজ করবো! কত টাকা দিলো আমাকে এমন হেনোস্তা করার জন্য? এই লোক আসলে বলবে আমি আর কাজ করবো না! বুঝেছো সোজাসুজি বলবে! করবো না মানে করবো না!
ইম্রিবার সারারাতের যন্ত্রণা পুরো বের করে ফেলল! কিন্তু সেটা করেও ঢোগ গিলছে! দরজায় সেই ছেলেটা পকেটে হাত ভড়ে দাঁড়িয়ে! হয়তো মোবাইল নিতে এসেছে যেটা বিছানায় পরে আছে! হালকা করে দাঁড়িয়ে গেলো ইম্রিবা! তার ভয় করছে! ছেলেটা হাত স্লোমো ভাবে নাড়িয়ে সবাইকে বেরোতে ইশারা করলো! ইম্রিবা মাথা দুলিয়ে না করলো আনোয়ারা কে! আনোয়ারা খুকখুক হেসে বলল..
~ তা স্যার টাকাকড়ি এগুলোর ব্যাপারে কিছু কথা কইতাম!
ছেলেটার থমথমে আওয়াজ!
~ আবদুল কে টাকা সহো সব বুঝিয়ে দিয়েছি! আপনাকে পুরো খুলে আপনার ভাষায় বুঝিয়ে দেবে! নাও আউট..
ইম্রিবা সেখানেই ঠাই দাঁড়িয়ে! তার মাথা ভনভন করছে! সবাই ঘড় থেকে বেরোতেই ছেলেটা দরজা লাগিয়ে বলল..
~ এইবার ডাবল দাগ হবে!

একঘণ্টা শুধু বিছানায় চোখ বুঝে শুয়েই ছিলো ইম্রিবা! অতিরিক্ত রাগ লাগছে! সে যে উঠে দাঁড়াবে শক্তি পাচ্ছে না! গোসল নিয়ে নিচে নামলো কাঠের সিঁড়ি দিয়ে ধীরেধীরে! তার পল্লির মেয়ে গুলো ছেলেদের ডেকে যাচ্ছে! আনোয়ারার রুমে যেতেই আনোয়ারা দাঁড়িয়ে গেলো! আনোয়ারার ম্যানেজার সহো সাথীরা সব দাঁড়ালো! আনোয়ারা খুকখুক করে হেসে উঠলো! একটুপর আওয়াজ করেই হেসে ফেলল!
~ এহন জ্বলতাছে না?
~ তুমি কিছু বললে না কেনো? এক_দু ঘন্টার যায়গায় সারারাত ছিলো! তারউপড় দিন_দুপুর বেলা তোমার সামনে কাহিনী করে গেলো আর কিছু বললে না?
~ তুই কিছু কইলিনা কেন?
~ কি বলতাম? দেখেছো না কিভাবে তাকাচ্ছিলো? আমি যে তার বড় সেটা সে না ভুললেও আমিই ভুলে গেছি! আর এখানে আসতে দেবে না ছেলেটাকে!
আনোয়ারা বিষন্ন মুখে বলল..
~ তোরে কিন্না নিছে!
বড়বড় চোখ করে, একটু হাসার চেষ্টা করে বলল..
~ মজা করছো না?
~ ছেড়ার ডাইবার আইবো তোরে নিতে বিকালে! মাঝেমাঝে আমাগো দেখতে আইবি তো?
~ কেনো? আমি ভুল শুনছি তাই না?
~ কচি ভার্জিন মাইয়াও এতো টিয়া দিয়া কেউ কিনে না! যতো তোরে দিয়া কিনতাছে! না করতে পারুম না রে!

গাড়িতে বসে ইম্রিবা ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে! ওর সাথে এই বয়সে কি হচ্ছে ধারণা নেই! সাথে আবার কিচ্ছু নেই! শুধু শরীরে কামিজ আর কিছুই নিতে দেয় নি ড্রাইভার! ফোনটাও নিতে দেয় নি! এ কোন জ্বালা! এক দোতলা বাংলোর সামনে গাড়ি যেতেই দাড়োয়ান গেইট খুলে দিলো! ড্রাইভার এর মুখ কুচকানো দেখে খারাপ লাগছে! ড্রাইভারটা বারবার বিড়বিড় করে কি জেনো বলছে! স্বাভাবিক বেশ্যাদের দেখলে আর কি বা ভাববে! ছেলেটাকে দেখেই বুঝেছিলো ইম্রিবা বড়লোক হবে! বাড়ি দেখে আরো কুঁকড়ে উঠলো! ভয় করছে খুব! পরিবার থাকলে বাড়িতে? ভিতরে ঢুকতেই মাঝবয়সী এক মহিলা দৌড়ে আসলো! সোফায় বসতে দিয়ে কোথায় জেনো দৌড় দিলো! মিনিটে ফিরে এসে হাতে মলম দিলো!
~ সাহেব বলসে তোমারে এইটা দাগে দাগে লাগাতে ! তারপর খাবার খেয়ে ঔষুধ খাইতে! তোমার জন্য সাহেবের ঘড়ে ফোন রেখে গেছে! সেইটায় তার নাম্বার সেভ করা দিতে বলসে!

মাথা নেড়ে ইম্রিবাকে যা যা বলা হয়েছে সে তাই করলো! ফোন দেওয়ার সময় দু’বার ভেবে আর দিলো না! সোফায় মহিলাটার সাথে বসে রইলো! সামনে বড় দেওয়াল টিভি! মহিলা এইবার ঘুড়লো..
~ নাম কি তোমার?
~ ইম্রিবা! আপনার?
~ আকিয়া! বয়স কতো?
~ ২৮!
~ আমার ৪৫..! এখানে কাজ করি ২০ বছর যাবত!
~ জ্বি! উনার নাম কি?
~ ইহসাব মজুমদার!
~ বাড়িতে আর কেউ থাকে না?
~ আমি আর আরেকটা বুয়া আছে! দু’জন মিলে বাড়ি পরিষ্কার রাখি! আমি রেঁধেবেরে বিকেলে চলে যাই! কিন্তু সাহেব বলল সে না আসা পর্যন্ত তোমার সাথেই থাকতে!
~ মানে পরিবার নেই আপনার সাহেবের?
~ তার মা_বাবা মারা গুয়েছে প্ল্যান ক্রাশ খেয়ে! তখন সাহেবের বয়স ১৬! ভাই_বোন নেই সে একাই! এভাবে রিলেটিভ’স অনেক! সবাই সম্পত্তির লোভে! কিন্তু সাহেব অনেক ম্যাচুয়ের! সে তখন থেকেই নিজে সব সামলায়! কিন্তু বয়স কম হওয়ায় তার বিশ্বস্ত ম্যানেজার ও সামলাতো! এখন সেই সামলায়!
~ বয়স কতো তার?
~ ২১ হতে ৩ মাস বাকি!
~ পড়ালেখা?
~ মাস্টার’স কাম্পলিট!
~ এতো অল্পবয়সে.?
হালকা হেসে..
~ ক্লাস টপকিয়েছে! বললাম না সে একটু ছোট থেকেই বেশি ম্যাচুয়ের ছিলো! আর সেটা ম্যাডাম সারাদিন বলতেন! ৩ বছরেই তাকে স্কুলে দেওয়া হয়! দেখবেন কিভাবে কথা বলে! পুরো মেইনলি টাইপের! ভাবতেই পারবেন না সে ছোট! যখন রাগেন? সেদিন বাড়িতে আমরা কেউ থাকি না! থাকলে হাসপাতাল যেতেই হবে!
বলেই হেসে দিলেন! ইম্রিবা হালকা ভেবে বলল..
~ আপনি কি জানেন আমাকে কেনো আনা হইসে? মানে আপনি জানেন আমি কোথা থেকে এসেছি!
মহিলাটি দাঁত দেখিয়ে হেসে বলল..
~ সাহেব এসে পরবে! কাল বরং খুলে বলবো! তুমি বরং টিভি দেখো! আমি রান্না সেরে আসি!

দরজা দিয়ে ইহসাব কে ঢুকতে দেখেই দাঁড়ালো ইম্রিবা! তার হাতে অফিস ব্যাগ! পাশে বয়সী এক লোকের সাথে কথা বলে বলে ভিতরে আসছে! ইম্রিবা কে দেখেই ব্যাগটি সোফায় রেখে, গলার টাই খুলতে খুলতে বলল..
~ তোমায় বলে নি আমি কল দিতে বলেছিলাম?
ইম্রিবা মাথা নাড়ালো!
~ হ্যা বলেছে!
~ কল করো নি কেনো?
~ উমম.. ভু..ভুলে গিয়েছিলাম!
সোফায় পা উঁচু করে বসতে বসতে..
~ সমস্যা নেই! আর ভুলবে না! ব্যাগ নিয়ে ঘড়ে যাও!
ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার আগেই সেই লোকটার আওয়াজ..
~ আরে আমরা পরিচর হয়ে নেই! [ ইম্রিবা ঘুরতেই ] আমি ম্যানেজার আইয়ুব!
~ জ্বি আসসালামু অলাইকুম! আমি…
আইয়ুব আগেই বলে উঠলো..
~ ইম্রিবা! আমি জানি! তা..
আইয়ুব কিছু বলার আগেই ইহসাব থমথমে গলায় বলল..
~ রুমে যেতে বলেছি তোমায়!
ইম্রিবা দ্রুতো চলে গেলো!

পরেরদিন রুম থেকে আর বের হয় নি সে! তার শরীর অচল! ইম্রিবার উপড় এতো রাগ কেনো ছেলেটার ? তাকে কয়েকদিনেই মেরে ফেলবে! বিছানায় বসে ছিলো! কাজ শেষ আকিয়া আর তার সাথে আরেকটা মহিলা রুমে আসলো হাতে খাবার! আকিয়া হালকা হেসে বলল..
~ সাহেব কয়টায় বেড়িয়েছিলেন?
ইম্রিবা ভাংগা গলায় বলল..
~ ১২ টার দিক!
~ সাহেব কিন্তু ৬ টায় বাড়ি থেকে বের হন!
বলেই দুষ্টু হাসলো! তারপর ধীর আওয়াজে বলল..
~ তোমায় কিন্তু সাহেব ৪ বছর আগের থেকে চিনে!
এইবার অবাক না হয়ে থম হয়ে রইলো ইম্রিক!
আকিয়া হালকা ওয়ায়জে বলল..
~ আমাকে সব খুলে বলতো আইয়ুব! প্রতিদিন সাহেবের কাহিনী খুলে বলতো আর কি করা যায় পরামর্শ চাইতো!
~ কি কাহিনী?

________________________

~ সাহেব তখন অনার্স প্রথম বর্ষে পড়তেন! বয়স ও কম ছিলো! ম্যানেজার এর সাথে মিটিং শেষ করে আসার পথে তোমাকে দেখেছিলো রাস্তার মোড়ে! ম্যানেজার বেশ বুঝতে পারেন সাহেবের পছন্দ হয়েছিলো! প্রায় দেখতেন তোমাকে অন্যকারো সাথে চলে যেতে মোড় থেকে! বুঝতে পারেন তোমার কাজ! ওই পথ দিয়ে নাকি আর আসতেন না গাড়ি ঘুড়িয়ে আসতেন! ম্যানেজার বিয়ের ব্যাপারটাও বলতে পারতেন না কারন সে তখনো ছোট! মেয়েদের সাথে কথা বলতে বললে প্রচন্ড রেগে যেতো! সুইজারল্যান্ড গিয়েছিলো বছর পর ফিরেছিলেন! এসে প্রায় মাস খানিক পর নাকি তুমি যেখানে দাঁড়াতে ওই রাস্তা দিয়ে আসতো! ম্যানেজার বুঝতেন যে ” তোমার বয়স আর কাজকর্ম ” তাকে বাধা দিচ্ছিলো আগাতে! এভাবেই সে রাগ দেখিয়ে চলতো! তাও তোমার কাছে যেতো না! কষ্ট পেতো তাও বান্দা ঠাই ছিলো! কখনো ম্যানেজারকেও খুলে কিছু বলেন নি! হঠাৎ বছর খানেক পর শুনলাম তোমাকে নাকি কিনেছে! টাকা নাকি ম্যানেজারকে দিয়ে পাঠিয়েছিলো!
একটু থেমে আকিয়া হাসলো!
~ তোমার উপড় সেই রাত্রে রেগে ছিলো তাই না?

ইম্রিবা মিনমিন করলো ~ রেগে শুধু? আমাকে ৪ বছরের ঝাল এক রাত্রে দিয়েছে!

আচ্ছা ইম্রিবা নিজেকে কি ভাগ্যবতী ভাববে? তার চোখের জল গুলো কি খুশির? আচ্ছা, বেশ্যাদের ও কি ভালোবাসার মানুষ থাকে? নাকি সেই একমাত্র ভাগ্যবতী? চোখ বুঝে শুধু চোখের জল ফেলেছে সে সারাদিন!

______________________

ইহসাবের বাড়িতে এসেছে আজ ৩ মাস হচ্ছে! আজ তাদের বিয়ে হয়েছে! ধীরেধীরে জানলো কতোটা পাগলাটে ছেলেটা! বয়সের বাচ্চামো ভাব না থাকলেও পাগলাটে রয়েছে! সেটা হঠাৎ দেখা যায়! ইম্রিবা গাল ধরে রয়েছে তাকে থাপ্পড় মেরেছে তাও খুব জড়ে! মারার কারন ও ছিলো! ইম্রিবা বলেছিলো ~ আমি আপনার যোগ্য নই! একদম না! আপনি পরে পস্তাবেন! শুধু বেশ্যা করে রাখেন যখন ইচ্ছা ব্যাবহার করবেন!
থাপ্পড় মেরে ইহসাব এর জবাব ছিলো ~ তুই আমার বেশ্যা হবি!
আসলে আমি ভাগ্যবতী বেশ্যা! নাহলে কি আজ তার বিছানায় তার বউ হয়ে বসে থাকতাম? তাও তার থেকে ৮ বছরের বড় হয়ে?

সমাপ্ত..

নাবিলা ইষ্ক

[ কাল্পনিক ]♠

58 mins · Public

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here