:
#ভালোবাসার_অনুভূতি
#লেখিকাঃতানিশা_তিশা_মনি
#পর্বঃ51
কথাটা বলে মেঘ আর এক মুহুর্তও দাড়ালো না।রুমের দরজা খুলে হনহন করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।বাইরে এসে দ্রুত পায়ে হাটতে হাটতে হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা খেলো।মেঘ মাথা উঠিয়ে সামনে তাকাতেই ওর ভয়ে হাত পা কাপতে লাগলো।এতোক্ষন যে ভয়টা পাচ্ছিলো সেটাই হলো।এখন কি হবে?ওর সামনে আহির দাড়িয়ে আছে।আহিরের চোখে মুখে স্পষ্ট রাগের ছাপ।মেঘ একটা শুকনো ঢোক গিলে কাপাকাপা স্বরে আহিরকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“ভ-ভাইয়া ত-তুই এইসময় এ-এখানে কি করছিস?”
আহির মেঘের প্রশ্নের অ্যান্সার না দিয়ে আদেশের স্বরে মেঘকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“মেঘ তুই এখান থেকে যা।আমি একটু পর আসছি।”
“এ-একটু প-পর আসবি মানে?এক্ষুনি চ-চল আমার স-সাথে।সবাই হয়তো আমাদের জ-জন্য অপেক্ষা করছে।”
আহির আবারও একই ভঙ্গিতে বললো
“মেঘ আমি তোকে এখান থেকে যেতে বলেছি।”
এই মুহূর্তে আহিরকে দেখে মেঘের ভিষন ভয় লাগছে।’ও’ ভালো করেই বুঝতে পারছে ওর সামনে বসে আহির নিজের রাগটা কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।’ও’ এখান থেকে চলে গেলে হয়তো আজকে আবিরের আর রক্ষা থাকবে না।মেঘ মনে একটু সাহস যুগিয়ে আহিরের কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর হাত ধরে বললো
“আমি তো যাবোই,তুইও আমার সাথে চল প্লিজ।”
মেঘের কথা শেষ হতেই আহির মেঘের হাতটা ওর হাতের উপর থেকে সরিয়ে দিলো।তারপর রক্ত চক্ষু নিয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে রাগি কন্ঠে বললো
“তোকে আমি এখান থেকে যেতে বলেছি মেঘ।কথা কানে যাচ্ছে না?তুই এক্ষুনি এখান থেকে চলে যাবি।যা বাইরে সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে।”
আহির এর আগে কক্ষনো মেঘের সাথে এভাবে কথা বলেনি।আহিরের এই রূপ দেখে কেনো যেনো ওর ভিষন ভয় লাগছে।কিন্তু যতোই ভয় লাগুক মেঘ মনে মনে ঠিক করে নিলো ‘ও’ আহির কে সাথে না নিয়ে এখান থেকে একপাও নড়বে না।’ও’আহিরের রাগ ঠান্ডা করার কোনো উপায় না পেয়ে সোজা গিয়ে আহির কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।তারপর আহিরের বুকে মুখ গুজে অসহায় কন্ঠে বললো
“প্লিজ ভাইয়া একটু শান্ত হ।এখন উল্টাপাল্টা কিছু করিস না।দেখ বাড়ি ভর্তি মেহমান আছে এর মধ্যে ঝামেলা হলে আমাদের মান সম্মান সব শেষ হয়ে যাবে।”
মেঘ আহিরকে জড়িয়ে ধরলেও আহির ওকে জড়িয়ে না ধরে একদম সোজা হয়ে দাড়িয়ে আছে।ওর হাত দুটো মুঠো বন্ধি করে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।আহির শক্ত কন্ঠে বললো
“মেঘ আমি তোকে এখান থেকে যেতে বলেছি।তুই জানিস এক কথা বারবার বলতে আমার ভালো লাগে না।”
আহিরের কথা শুনে এইবার মেঘের রাগ উঠে গেলো।’ও’ আহিরকে ওভাবে জড়িয়ে রেখেই ওর বুক থেকে মাথা তুলে রাগি চোখে ওর চেহারার দিকে তাকালো।তারপর ঝাড়ি মেরে বললো
“ওই তুই ভালোয় ভালোয় এখান থেকে আমার সাথে যাবি নাকি তোর সব চুল টেনে ছিড়ে দিবো?আরেহ হিয়ান ভাইয়া আর আলিশা আপুর এতো বছরের সম্পর্ক টা সবেমাএ পূর্নতা পেতে চলেছে।তুই কি চাস এখন একটা ঝামেলা করে সবকিছু শেষ করে দিতে?ওদের এতো দিনের স্বপ্ন ভেঙে গুড়িয়ে দিতে চাস?”
মেঘের কথা শুনে আহির জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করতে লাগলো।তারপর একহাত মেঘের পিঠে রেখে অন্য হাত দিয়ে ওর মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললো
“ওকে আমি এখন কোনো ঝামেলা করবো না।তোর সাথে অনুষ্ঠানে যাবো।তবে আমার একটা শর্ত আছে।”
আহিরের কথা শেষ হতেই মেঘ প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে আহিরের দিকে তাকালো।মেঘকে এভাবে তাকাতে দেখে আহির বেশ শান্ত স্বরে বললো
“এতোক্ষন কি কি হয়েছে সবটা শুরু থেকে আমাকে খুলে বল।ওই আবির তোকে এমন কি বলেছে যার জন্য তুই এভাবে রিয়্যাক্ট করেছিস?”
কথাটা শেষ হতেই মেঘ চোখ বড় করে করে আহিরের দিকে তাকিয়ে অবাক কন্ঠে বললো
“তারমানে তুই কিছুই শুনিস নি?তাহলে এতো রেগে আছিস কেনো?”
” সবটা শুনিনি।তবে তোর শেষের কথা গুলো শুনেছি।সেগুলো শুনে যা বুঝলাম তাতে আবির নিশ্চয়ই তোকে খুব খারাপ কিছু বলেছে তাই তুই ওই ভাবে রিয়েক্ট করেছিস।আর নাহলে যেই মেয়ে কারো সাথে উচু গলায় কথা বলে না,সে একটা ছেলের ওভাব কলার ধরলো?এইবার কথা না পেচিয়ে সোজা ভাবে বল কি হয়েছিলো।”
মেঘ আহিরকে ছেড়ে দিয়ে এতোক্ষন যা যা ঘটেছে শুরু থেকে সবটা বললো।মেঘ ভেবে ছিলো সবটা শুনে আহির আরো রেগে যাবে।কিন্তু আহির মেঘের ভাবনাকে ভূল প্রমান করে হো হো করে উচ্চস্বরে হেসে দিলো।আহির কে এভাবে হাসতে দেখে মেঘ ভিষন অবাক হলো।আহির রকম হাসি থামিয়ে বিদ্রুপের স্বরে বললো
“বুঝলি বনু বাংলায় একটা প্রবাদ বাক্য আছে।পিপিলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে।যেমন আবির আজকে নিজের জিবনের শেষ্ঠ ভুলটা করে ফেললো।আর ওর সাথে আমি কি ঝামেলা করবো?এটা শোনার পর ওর জন্য আমার ভিষন কষ্ট হচ্ছে।আহারে বেচারার জন্য যে কি অপেক্ষা করছে সেটা হয়তো আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।”
আহিরের কথা শুনে মেঘ ভ্রু কুচক বললো
“মানে?ওর জন্য তোর কষ্ট হচ্ছে কেনো?”
মেঘের কথা শুনে আহির এক হাত মেঘের কাধে রেখে বললো
“এসব তুই বুঝবি না।চল আমরা এখন ফাংশনের ওখানে যাই।আর যেতে যেতে আমরা দুই ভাই বোন মিলে আবিরের জন্য একটু দোয়া করি।”
কথাটা বলতে বলতে আহির মেঘকে নিয়ে বাইরে চলে গেলো।আর কেউ একজন আড়াল থেকে আহির আর মেঘের জড়িয়ে ধরার পিক তুলে রাখলো।শুধু এটাই না,,তখন যে আবির মেঘের অনেক টা কাছে এসেছিলো সেই পিকও তুলেছে।আর সবচেয়ে বড় কথা আহানের সাথে মেঘ যখন ক্লোজ হয়েছিলো তখন ওদের শুধু অভিই দেখেনি।ওখানে আরো একজন ব্যাক্তি ছিলো যে ওদের স্পেশাল মোমেন্ট টা ক্যামেরা বন্ধি করে নিয়েছে।
_____________________________
মেঘ আর আহির ফাংশনের ওখানে আসার পর আহির গিয়ে মিহিরের পাশে বসে পড়লো।তবে এতোক্ষন যা যা ঘটেছে সেই বিষয়ে কিছুই বললো না।কারন আহির নিজেও চায়না এখন কোনো বাজে ঘটনা ঘটুক।’ও’ চায় বিয়েটা ভালোয় ভালোয় মিটে গেলে সবটা আহান আর মিহির কে বলবে।তবে ও বাইরে থেকে নিজেকে যথা সম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলেও,ভিতরে ভিতরে রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে।ইচ্ছে করছে এক কোপে আবিরের শরীর থেকে ওর মাথাটা আলাদা করে দিতে।আহির নিজেকে শান্ত রাখতে পকেট থেকে ফোন আর ব্লুটুথ বের করে তাতে কানেক্ট দিয়ে গান শুনতে লাগলো।
এদিকে মেঘ এসে দেখলো পার্লারের লোকেরা সাড়িকা,সাঈফা,আলিশা কে মেহেন্দি পড়াচ্ছে।দিশা শুধুমাত্র এক হাতের উপরের পিঠে দিয়ে বসে আছে।মেঘ আলিশার কাছে এগিয়ে গেলো ওর হাতের ডিজাইন দেখার জন্য।কিন্তু গিয়ে যা দেখলো তাতে ওর পেট ফেটে হাসি আসলো।আলিশা আর হিয়ানের বাম হাত এবং ডান হাতের তালু একসাথে মিশিয়ে দুজনের হাতে একটা ডিজাইন আকছে।আর হিয়ান রাগি চোখে আলিশার দিকে তাকিয়ে আছে।হিয়ানের এসব হাতে মেহেদি টেহেদি আকা একদম পছন্দ নয়।কিন্তু আলিশার ন্যাক্যা কান্না শুনে নিজের হাতেও মেহেদি দিতে বাধ্য হচ্ছে।তবে সব দোষ যে মেয়েটা মেহেদি আকছে ওই মেয়েটার।ওই মেয়েটাই আলিশাকে এই ডিজাইন টা আকানোর বুদ্ধি দিয়েছে।হিয়ান দাতে দাত চেপে বললো
“শালা বিয়ে করতে এসে এখন কি সব সহ্য করতে হচ্ছে।শেষ পযর্ন্ত কিনা মেয়েদের মতো হাতে মেহেদি দিচ্ছি?এর থেকে তো ভালো ছিলো পাএীকে তুলে নিয়ে গিয়ে কাজি অফিসে গিয়ে বিয়েটা সেরে ফেলে সোজা হানিমুনে চলে যেতাম।তাহলে আর সং সেজে আমাকে এখানে বসে থাকতে হতো না।”
মেঘ এতোক্ষন হাসি টা চেপে রেখে ছিলো।কিন্তু হিয়ানের কথা শুনে ফিক করে হেসে দিলো।মেঘকে হাসতে দেখে হিয়ান মৃদ্যু ধমক দিয়ে বললো
“আমাকে এখানে এরা দুজন মিলে টর্চার করছে আর তুই আমার বোন হয়ে এভাবে চুন্নির মতো হাসছিস?লজ্জা করে না তোর ভাইয়ের কষ্ট দেখে এভাবে ভুতের মতো হাসতে?”
হিয়ানের কথা শুনে মেঘ হা হা করে হেসে দিয়ে বললো
“নাহ একদমই লজ্জা করে না।”
হিয়ান রেগে মেঘকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই পার্লারের মেয়েটা অনুরোধের কন্ঠে বললো
“স্যার কথা বলবেন না প্লিজ।আপনি কথা বলছেন আর আপনার হাতটা নড়ছে।এভাবে নড়লে আমি ডিজাইন টা ঠিক ভাবে আকতে পারবো না।”
হিয়ান রাগি কন্ঠে বললো
“প্রথমে আপনি আমার নড়াচড়া বন্ধ করেছেন।তারপর এখন আবার কথা বলাও বন্ধ করতে বলছেন?আপনাকে তো আমি মেরে বস্তায় ঢুকিয়ে নদীতে ফেলে দিয়ে আসবো।”
হিয়ানের কথা শুনে মেয়েটি বিরক্তির কন্ঠে বললো
“স্যার আমাকে আপনার বস্তায় ভরে পানিতে ফেলতে হবে না।আপনি বললে আমি নেজেই গিয়ে ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাপ দিবো।কিন্তু তার আগে আপনি আমাকে মেহেদি আকাটা শেষ করতে দিন।আপনার এই বকবকের জন্য আমি ডিজাইন ভুলে যাচ্ছি।”
মেয়েটার কথা শুনে মেঘ আরো জোড়ে জোড়ে হাসতে লাগলো।আলিশা ঠোট চেপে হাসছে।চারপাশে লোক থাকার কারনে জোড়ে হাসতেও পারছে না।আর হিয়ান নাক ফুলিয়ে একবার মেঘের দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার আলিশার দিকে তাকাচ্ছে।
_____________________________
অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে।হাসি মজায় সন্ধ্যাটা যে কখন কেটে গেলো কেউ টেরই পেলো না।মেঘ চেয়ারের উপর বসে নিজের হাতের তালুর দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।ওর ঠোটের কোনে মুচকি হাসি।ওর বাম হাতের তালুর ঠিক মাঝখানে মেহেদীর ডিজাইনের মধ্যে আহান লেখা।এটা মেঘ লিখতে বলেনি,আহান লিখতে বলেছে।মেয়েটা যখন ওকে মেহেদি পড়াচ্ছিলো তখন আহান এসে মৃদুৎ স্বরে মেয়েটা কে মেঘের হাতে নিজের নাম লিখতে বলে গেছে।মেঘ যখন আহানের নামটা দেখায় ব্যাস্ত ছিলো ঠিক তখনই অভি ষ্টেজে উঠে গিয়ে গান গাওয়ার জন্য আহানের নাম এনাউন্স করলো।অভির এনাউন্সমেন্ট কানে আসতেই মেঘ চমকে অভির দিকে তাকালো।দেখলো অভি আহানের দিকে তাকিয়ে একটা চোখ মারলো।আর আহান রাগি চোখে অভির দিকে তাকিয়ে আছে।চার পাশ থেকে ইয়ং জেনারেশন যারা আছে তারা সবাই এক প্রকার চিল্লাচিল্লি শুধু করে দিয়েছে আহানের গান শোনার জন্য।মেঘ মুখটা বাংলার পাচের মতো করে বসে আছে।কারন যেই ছেলেকে কখনো গুনগুন করতেও শোনেনি সে নাকি আবার গান গাইবে।এতো গম্ভীর আর সিরিয়াস টাইপের ছেলে কোনো গানের সুর তুলতে পারবে কিনা সেটা নিয়েও মেঘের যঠেষ্ট ডাউট আছে।
এদিকে অভি,হিয়ান,রিয়ান এসে আহানকে জোড় করে টেনে হিচরে ষ্টেজে উঠালো।আহান রাগি চোখে সবার দিকে তাকিয়ে রইলো।কিন্তু ওরা আহানের রাগটাকে পাএা না দিয়ে ওর হাতে গিটার ধরিয়ে দিয়ে গেলো।আহান গিটার টা হাতে নিয়ে এলোমেলো ভাবে টুং টাং শব্দ বাজালো।
আহানকে এভাবে গিটার বাজাতে দেখে মেঘ মাথাটা নিচু করে বিরবির করে বললো
“আজকে মনে হচ্ছে মান সম্মান সব শেষ।এই ছেলেকে দেখে তো মনে হচ্ছে ইনি গান তো দূরে থাক গিটারও বাজাতে পারে না।”
মেঘের কথাটা শেষ হওয়ার সাথে সাথে ষ্টেজের লাইট টা অফ হয়ে গেলো।আর একটা স্পট লাইট এসে আহানের উপরে পড়লো।তখনই মেঘের কানে ভেষে এলো
Subhan allah, subhan allah
Subhan allah, subhan allah
Subhan allah, subhan allah
Subhan allah, subhan allah
Chand sifarish jo karta hamari
Deta woh tumko bata
Sharm-o-haya ke parde gira ke
Karni hain humko khata
এইটুকু শুনে মেঘ মাথা তুলে সামনে তাকালো।অবাকে ওর চোখ দুটো রসগোল্লার মতো হয়ে গেছে।আহান মেঘের দিকে তাকিয়ে গাইলো……
Zid hain ab to hai khud ko mitana
Hona hain tujhmein fanaa
Chand sifarish jo karta hamari
Deta woh tumko bata
Sharm-o-haya ke parde gira ke
Karni hain humko khata
Teri adaa bhi hain jhonke wali
Chhu ke ghuzar jaane de
Teri lachak hai ke jaise daali
Dil mein utar jaane de
Aaja baahon mein karke bahana
Hona hai tujhmein fanaa
Chand sifarish jo karta hamari
Deta woh tumko bata
Sharm-o-haya ke parde gira ke
Karni hain humko khata
Subhan allah, subhan allah
Subhan allah, subhan allah
Subhan allah, subhan allah
Subhan allah, subhan allah
মেঘ চোখ বন্ধ করে গানটা ফিল করছে।ও যেনো এখন নিজের মধ্যে নেই একটা ঘোড়ে চলে গেছে।আহান আবারও গাইলো
Hain jo iraade bata doon tumko
Sharma hi jaaogi tum
Dhadkanein jo suna doon tumko
Ghabra hi jaaogi tum
Humko aata nahi hai chhupana
Hona hai tujhmein fanaa
Chand sifarish jo karta hamari
Deta woh tumko bata
Sharm-o-haya ke parde gira ke
Karni hain humko khata
Zid hain ab to hai khud ko mitana
Hona hain tujhmein fanaa,….
আহানের গান গাওয়া শেষ হলে সবাই ক্লাপ দিতে লাগলো।মেঘ এখনো চোখ বন্ধ করেই আছে।চারা পাশের এতো চিল্লাচিল্লির শব্দও যেনো মেঘের কানের মধ্যে ঢুকছে না।আহান ষ্টেজ থেকে নামতে নামতে মেঘের অবস্থা দেখে মুচকি একটা হাসি দিলো।
_____________________________
সাড়িকা সাঈফা নিজেদের রুমে এসেছে হাতে লাগানো মেহেদি ধোয়ার জন্য।ওরা একটু পরই ডিনার করে বেড়িয়ে পড়বে অভিদের বাড়ির উদ্দ্যেশে।অলরেডি অনেকেই ডিনার করে চলে গেছে।ওরা যাষ্ট কয়েক জনই এখানে আছে।সাড়িকা হাত ধোয়ার জন্য ওয়াশরুমে ঢুকছিলো ঠিক তখনই আহির হনহন করে রুমে ঢুকে এসে খপ করে সাড়িকার হাত চেপে ধরলো।তারপর সাঈফার দিকে তাকিয়ে বললো
“ওই হবু শ্বশুরের মেজ কন্যা যাহ রুম থেকে বের হ।”
আহিরে এমন হঠাৎ করে আসায় সাঈফা আর সাড়িক দুজনের মুখই হা হয়ে গেলো।সাঈফা ভ্রু কুচকে বললো
“একে তো পারমিশন না নিয়ে রুমে ঢুকে পড়েছো।তার উপর আবার আমাকে আমার রুম থেকেই বের হতে বলছো?”
আহির ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে জবাব দিলো
“হ্যা বলছি!যাহ এক্ষুনি রুম থেকে বের হ।আমার কাজ আছে।”
সাঈফা মুখ বাকিয়ে বললো
“আমি কোথাও যাবো না।কাজ থাকলে সেটা আমার সামনে বসে করো আর না করলে যেতে পারো।দরজাটা ওই দিকে আছে।”
সাঈফার কথা শুনে আহির এক হাত নিজের পকেটে ঢুকিয়ে ওয়ালেট বের করলো।তারপর সেখান থেকে এক হাজার টাকার একটা নোট বের করে সাঈফার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো
“দেখ যদি এক্ষুনি দশ মিনিটের জন্য রুমটা ছেড়ে বেড়িয়ে যাস তাহলে এই হাজার টাকার নোট টা তোর।আর যদি না বেরোস তাহলে তোর দুই গালে গুনে গুনে দশটা থাপ্পর দিবো।এইবার দেখ কোন অফারটা চুজ করবি?”
সাঈফা ছো মেরে আহিরের হাত থেকে টাকাটা নিয়ে খুশীতে গদগদ হয়ে বললো
“অবশ্যই টাকা টাই নিবো।একহাজার টাকার জন্য রুম থেকে বের হওয়া তো অনেক সহজ কাজ,এর জন্য তো আমি রুমের বাইরের দারোয়ান হওয়ার জন্যও রাজি আছি।”
কথাটা বলেই সাঈফা বাইরে চলে গেলো।সাঈফা যেতেই সাড়িকা পিছনে থেকে চিল্লিয়ে বললো
“সাঈফুর বাচ্চা তুই বোন নামের কলঙ্ক।”
আহির সাড়িকার হাত চেপে ধরে রেখে দরজার কাছে গিয়ে দরজাটা মধ্যে থেকে লক করে দিলো।তারপর সাড়িকার দিকে ঘুড়ে ওর এক হাত পিছনে মুচড়ে ধরে বললো
“তোর সাহস হয় কিভাবে আমার অবাধ্য হওয়ার?মেঘের কাজিনের বিয়ের দিন যে থাপ্পর গুলো গালে পড়েছিলো ওইগুলোর টেষ্ট কি ভুলে গেছিস?”
আহির সাড়িকার হাত মুচরে ধরায় সাড়িকার হাতে থাকা সব মেহেদি লেপ্টে যাচ্ছে।সাড়িকা আহিরকে উদ্দ্যেশ্য করে ঝাড়ি দিয়ে বললো
“আমি কখন তোমার কথার অবাধ্য হয়েছি?আজকে তো কোনো পিকও আপলোড দেইনি এফবি তে।তাহলে?”
আহির সাড়িকার হাত আরো জোড়ে মুচরে ধরে দাত কিড়মির করে বললো
“তোর হাতে যখন মেহেদি পড়াচ্ছিলো ওই সময় আমি ওই মেয়েটাকে বলেছিলাম তোর হাতে আহির লিখে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তুই ওই মেয়েটা কে লিখতে মানা করেছিস।বলেছিস আমি তোর কেউ হইনা তাই তুই আমার নাম কিছুতেই হাতে লেখবি না।কেনো বলেছিস এই কথা?সবার সামনে আমাকে অপমান করতে খুব ভালো লাগে তোর তাইনা?”
এতো জোড়ে হাত মুচরে ধরায় সাঈফার চোখের কোনে পানি এসে পড়েছে।ও ছটফছ করতে করতে বললো
“অপমানের তো কিছু নেই।যেটা বলেছি একদম সত্যি বলেছি।তুমি শুধু আমার কাজিন হও এর বাইরে কিছু না।তাহলে আমি তোমার নাম আমার হাতে কেনো লিখবো?কখনো শুনেছো কেউ হাতে মেহেদি দিয়ে কাজিনের নাম লিখে?”
আহির সাড়িকার হাত ছেড়ে দিয়ে নিজের ঘুড়িয়ে ওর বাহু শক্ত করে চেপে ধরে নিজের একদম কাছাকাছি নিয়ে আসলো।তারপর সাড়িকার চোখে চোখ রেখে বললো
“তুই আমার নাম হাতে লিখবি কারন আমি তোকে ভালোবাসি।খুব ভালোবাসি তোকে।আর সেটা আজকে থেকে না যখন থেকে ভালোবাসার মানেই বুঝতাম না তখন থেকে।সেই ছোট্ট বেলা থেকে তুই অন্য কাউকে ফ্রেন্ড বানালে আমার সহ্য হতো না।অন্য ছেলেদের সাথে কথা বললে আমার রাগ হতো।আর সেই রাগ আমি তোর উপরে ঝারতাম।তোকে ধরে মাইর দিতাম।”
সাড়িকা আহিরের কথা শুনে একটুও অবাক হলো না।’ও’ আহিরের হাব ভাব দেখে আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলো আহির ওকে পছন্দ করে।আহির নিজের মুখটা আরেকটু সাঈফার দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে বললো
“তুই সব সময় আমার রাগটাই দেখেছিস।কখনো আমার ভালোবাসা টা বুঝতে চাস নেই।হ্যা মানছি আমি রাগের মাথায় এসে তোকে হার্ট করি কিন্তু রাগ কমে গেলে আবার সরিও তো বলি।তুই তো জানিস বল রেগে গেলে আমার মাথা ঠিক থাকে না।”
সাড়িকা চোখ বন্ধ করে আহিরের বুকের ঢিবঢিব শব্দ শুনছে।ওর হাত পা জমে গেছে।আহির সাড়িকার কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে অসহায় কন্ঠে বললো
“তুই আমাকে কেনো বুঝিস না সাঈফা?কেনো সব সময় আমি যেটা বলি তার উল্টোটা করিস?জানিস তোর এই অবাধ্যতা আমাকে কতোটা পোড়ায়?কতোটা কষ্ট পাই তোর এমন ব্যাবহারে।আমার সেই কষ্ট গুলো রাগ হয়ে তোর উপরে আঘাত হানে।তোর অবহেলা গুলো আমাকে নির্দয় বানিয়ে দেয়।তাই আমি না চাইতেও আমি তোকে কষ্ট দিয়ে ফেলি।তুই কবে আমাকে বুঝতে পারবি সাড়িকা?”
শেষের কথাটা বলার সময় আহিরের গলাটা ধরে এলো।সাড়িকা অনুভব করলো ওর গালের উপরে তরল কিছু পড়েছে।’ও’ চট করে চোখ টা খেলে ফেললো।দেখলো আহির ওর কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।আর ওর চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পড়ছে।আহিরের এতক্ষনের বলা কথা শুনে সাড়িকা অবাক না হলেও ওকে কাদতে দেখে অবাক না হয়ে পারলো না।আহির কে এই প্রথম ‘ও’ কাদতে দেখছে।আচ্ছা আজকে কি ও একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে?হ্যা হয়তো ওই মেয়েটার সামনে বসে আহিরকে এভাবে বলাটা ওর ঠিক হয়নি।আহির ওকে ভালোবাসে জেনেও কেনো ওর দূর্বল জায়গায় এভাবে আঘাত করতে গেলো?সাড়িকা আলতো হাতে আহিরের চোখের পানি মুছে দিয়ে ওর ঠোটের সাথে নিজের ঠোট মিলিয়ে দিলো।হঠাৎ সাড়িকার এমন কান্ডে আহির জট করে চোখ খুলে সামনে তাকালো।’ও’ ভাবতেই পারেনি সাড়িকা এমন কিছু একটা করে ফেলবে।আহির কিছুক্ষণ ষ্টাচু হয়ে দাড়িয়ে থেকে সাড়িকার কোমরে হাত দিয়ে শক্ত করে নিজের সাথে মিশিয়ে ধরে রেসপন্স করতে লাগলো।
#ভালোবাসার_অনুভূতি
#লেখিকাঃতানিশা_তিশা_মনি
#পর্বঃ52
আগের দিন রাতে দেড়ি করে ঘুমানোর জন্য বেশ বেলা করে ঘুম থেকে উঠলো মেঘ।প্রথমে ভেবেছিলো ‘ও’ একাই হয়তো দেড়ি করে উঠেছে।কিন্তু পরে শোয়া থেকে উঠে বসতেই দেখলো সাড়িকা,সাঈফা,দিশা তিনজনই এলোমেলো হয়ে ফ্লোরে পড়ে ঘুমিয়ে আছে।মেঘ কতোক্ষন কপালে হাত দিয়ে বসে রইলো।কারন মেঘ ওদের তিনজনের জন্য বেড ছেড়ে দিয়ে নিজে এসে সোফায় শুয়েছে।আর তিনজনকে এতো বড় একটা বেড দেওয়ার শর্তেও সবগুলো বেড থেকে ফ্লোরে পড়ে গেছে।আর পড়েছে ভালো কথা।কিন্তু পড়ার পর আবার এভাবে মরার মতো পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে।মেঘ ফোস করে নিঃশ্বাস ফেলে বসা থেকে দাড়িয়ে ওদের কাছে গিয়ে ওদের তিনজনকেই ঘুম থেকে তুলতে লাগলো।কিন্তু ওদের উঠার কোনো নামই নেই।অবশেষে বহু কষ্টে প্রায় আধ ঘন্টা পর মেঘ ওদের তুলতে সক্ষম হলো।ওরা ফ্রেস হয়ে নিচে এসে ব্রেকফাস্ট করে নিলো।এখন দুপুর সাড়ে বাড়োটা বাজে।কালকে অনেক রাতে হিয়ানদের বাড়ি থেকে ওরা অভিদের বাড়িতে ফিরে এসেছে।আসার পর সবাই মিলে বেশ কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে তারপর প্রায় সকালের দিকে ঘুমিয়েছে।
সাড়িকা,সাঈফা,দিশা,মেঘ ব্রেকফাস্ট করে উপরে এসে আবার রেডি হতে লাগলো।আজকে সন্ধ্যায় আলিশার গায়ে হলুদ।সন্ধ্যা বেলা বর পক্ষের সবাই এই বাড়িতে আসবে।বর কনের গায়ে হলুদ এক সাথেই হবে।তার আগে মেয়ের বাড়ির লোকেরা ছেলের বাড়িতে গায়ে হলুদের তত্ব নিয়ে যাবে।আর ছেলের বাড়ির লোকেরা মেয়ের বাড়িতে তত্ব নিয়ে আসবে।মেঘ,সাড়িকা,সাঈফা আর অভিদের কিছু কাজিন মিলে হিয়ানদের বাড়িতে যাবে তত্ব দিতে।আর দিশা আলিশাকে নিয়ে প্রথমে টুকিটাকি শপিং করবে তারপর লাঞ্চটা রেষ্টুরেন্টে করে ওখান থেকে পার্লারে চলে যাবে।
_____________________________
দুপুরঃ02:00
কিছুক্ষন আগেই মেঘরা চৌধুরী বাড়িতে এসেছে।এখানে এসে ওরা গেষ্টদের সাথে ড্রইংরুমে বসে আছে।নিজেদের বাড়িতে এভাবে গেষ্ট হয়ে আসায় সাড়িকা,সাঈফার ভিষন হাসি পাচ্ছে।ওরা কোনো রকম দাতে দাত চেপে হাসিটা কন্ট্রোল করে রেখেছে।কিছুক্ষন বসে থাকার পর সার্ভেন্টরা এসে মেঘদের জন্য হালকা পাতলা স্নাক্স, ফ্রুটস দিয়ে যায়।মেঘ মিষ্টির বাটি হাতে নিয়ে একটা মিষ্টি মুখে দিতেই ওর চোখ দুটো রসগোল্লার মতো বড় বড় হয়ে যায়।ওর মনে হচ্ছে কান দিয়ে ধোয়া বেরোচ্ছে।মিষ্টিটা গলার কাছে আটকে গেছে।মেঘ হাতে থাকা মিষ্টির বাটিটা টেবিলের উপর রেখে সবাইকে খাওয়ার জন্য মানা করতে যাবে।তার আগেই কোথা থেকে আহান উড়ে এসে মেঘের পাশে ধপ করে বসে পড়লো।তারপর মেঘের রাখা মিষ্টির বাটি টা নিয়ে চামচ দিয়ে আরেকটা মিষ্টি মেঘের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো
“একটা মিষ্টি এতোক্ষন বসে খেলে হবে বেয়াইন সাহেবা?মুখেরটা তাড়াতাড়ি শেষ করে আরেকটা নিন।”
বাকিরাও ততোক্ষনে মিষ্টি নিয়ে খাওয়া শুধু করলো।কিন্তু এক বাইট দেওয়ার পর কেউই আর দ্বীতিয় বাইট দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।সবাই মুখের মধ্যে মিষ্টি নিয়ে বসে আছে।না পারছে গিলতে আর না পারছে ফেলতে।অবশ্য এটাকে মিষ্টি বলা চলে না।মিষ্টিতে তো চিনি দিয়ে সিড়া দেওয়া হয় কিন্তু এটাতে শুধু লবন দিয়ে শিড়া দেওয়া হয়েছে।অতিরিক্ত লবন দেওয়ায় মিষ্টি টা একদম তেতো হয়ে গেছে।মেঘ গিলছে না দেখে আহান এক গ্লাস সাদা পানি মেঘের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো
“বেয়াইন সাহেবা নিজেই একটু বেশিই সুইট তো,তাই হয়তো এই এক্সটা সুইট ওনার ঠিক হজম হচ্ছে না।আচ্ছা কোনো ব্যাপ্যার না,পানিটা খেয়ে নিন বেটার ফিল করবেন।”
আহান পানির গ্লাস টা বাড়িয়ে দেওয়ার সাথে সাথে মেঘ টান দিয়ে ছো মেরে আহানের হাত থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেতে লাগলো।কিন্তু কয়েক ঢোক পানি খাওয়ার পরে মেঘ আর স্থির হয়ে সেখানে বসে থাকতে পারলো না।গ্লাসটা হাত থেকে ফেলে দিয়ে মুখ চেপে ধরে এক দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।ওকে ওভাবে বের হতে দেখে সাড়িকা,সাঈফা সহ অভির বাকি কাজিনেরা বসা থেকে দাড়িয়ে গেলো।সবার চোখে মুখে ভয়ের ছাপ।আহানের ঠোটের কোনে ফুটে উঠেছে বাকা হাসি।আহান যে পানির গ্লাস মেঘকে খাওয়ার জন্য দিয়েছিলো ওটাতেও লবন গোলানো ছিলো।সাড়িকা কাপা কাপা কন্ঠে আহান কে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“ভাইয়া আমাদের তো এখানের সব কাজ শেষ।তাহলে আমরা এখন আসি।”
কথাটা বলে সাড়িকা সামনে এগোতে নিবে তার আগেই আহির এসে খপ করে সাড়িকার হাত ধরে ফেললো তারপর একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বললো
“এক যাএায় পৃথক ফল কেনো হবে ছোট বেয়াইন?ওনাকে যখন ফ্রেস পানি খাওয়ানোই হয়েছে তখন আপনাকে নাহয় ভালোবেসে একটু জুস খাওয়ালাম।”
কথাটা বলেই আহির এক হাতে জুসের গ্লাস নিয়ে অন্য হাত দিয়ে সাড়িকার ঘাড় চেপে ধরে গ্লাস টা ওর মুখের সামনে ধরলো।এমন ভাবে মাথাটা গ্লাসের সাথে চেপে ধরেছে যে সাড়িকা কোনোদিকে ঘাড় টা নাড়াতেই পারছে না।অনেক ছোটাছুটি করেও যখন কোনো লাভ হলো না তখন বাধ্য হয়ে সাড়িকা কে নাক চোখ বন্ধ করে জুসটা গিলতে হলো।’ও’ এক ঢোক গিলছে আর ওর মনে হচ্ছে এক্ষুনি ওর পেট থেকে সব নাড়ি ভুড়ি বেড়িয়ে আসবে।কারন এটা কোনো ফলের জুস না।এটা হচ্ছে হলুদের গুড়া আর কাচা ডিমের জুস।সাড়িকা পুরো জুস টা খেয়ে গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে আহির কে একটা ধাক্কা দিয়ে এক দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।ধাক্কা খেয়ে আহির তাল সামলাতে না পেরে ধপ করে সোফায় বসে পড়লো।সাড়িকা দৌড়ে যেতেই সাঈফা আর অভির বাকি কাজিনরাও চোখ বন্ধ করে দিলো এক ভো দৌড়।কিন্তু দৌড়ে বেশি দূরে যেতে পারলো না।দরজার কাছে আসতেই হিয়ান আর মিহির দুজন দুপাশ থেকে এক এক বোতল করে তৈল ওদের সামনে ঢেলে দিলো।টাইলসের উপরে তৈল পড়ে জায়গাটা একদম পিচিল হয়ে গেলো।আর ওরা সবাই দৌড়ে এসে একেক জনের গায়ের উপর একেক জন ধপাস করে ফ্লোরে পড়ে গেলো।সবাই হাতে পায়ে ভিষন ব্যাথ্যা পেলো।কিন্তু সেদিকে পাএা না দিয়ে সবাই কোনো রকম বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে নিজেদের প্রান নিয়ে দৌড়ে বাইরে চলে গেলো।যাওয়ার আগে সাঈফা চিল্লিয়ে বললো
“এর প্রতিশোধ যদি তোদের থেকে না নিয়েছি তাহলে আমি আমার নাম পাল্টে ফেলবো।”
এদিকে ওদের এমন কান্ড দেখে আহির,আহান,রিয়ান হেসে সোফায় গরাগরি খাচ্ছে।মিহিরও দরজার পাশে দাড়িয়ে হাহা করে হেসে যাচ্ছে।হিয়ান হাসতে হাসতে দরজার কাছ থেকে আহানদের কাছে যাচ্ছিলো,ঠিক তখনই অসাবধানতাবশত তেলের উপর পা পড়ে ‘ও’নিজেই ঠাস করে চিৎ হয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলো।ওকে পড়ে যেতে দেখে আহান,রিয়ান,আহির,মিহির হাসি থামিয়ে দিয়ে হিয়ানের দিকে চোখ বড় বড় করে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আবার হাহা করে হেসে দিলো।আহান বসা থেকে উঠে হিয়ানের কাছে আসতে আসতে বললো
“দেখলি একেই বলে কর্মের ফল।পরের জন্য কুয়া খুড়লে সেই কুয়ায় নিজেকেই পড়তে হয়।”
হিয়ান কোমরে হাত দিয়ে দাতে দাত চেপে বললো
“শালা তাহলে তো সবার আগে এখানে তোর পড়া উচিৎ ছিলো।এই সব কিছুর মাষ্টার মাইন্ড তুই।এগুলো সব তোর প্লান ছিলো।আমরা তো শুধু তোকে সাপোর্ট করেছি।”
আহান এসে হিয়ানের দিকে এক হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো
“কি করবো বল ম্যাড্যামদের কনে পক্ষের হয়ে বিয়ে এ্যাটেন্ড করার খুব শখ জেগেছিলো তাই হালকার উপর করে একটা কড়া ডোজ দিয়ে দিলাম।”
_____________________________
এদিকে মেঘরা সবাই বাড়িতে একদম নাজেহাল অবস্থায় ফিরে এলো।মেঘ আর সাড়িকা বমি করতে করতে কাহিল হয়ে পড়েছে আর বাকিরা কেউই ঠিকঠাক মতো সোজা হয়ে দাড়াতেই পাড়ছে।ওরা কোনো রকম নিজেদের সামলে নিয়ে সবাই মিলে বরপক্ষের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য প্লান করতে লাগলো।ওদের প্লানে অভিও সামিল হলো।
__________________
সন্ধ্যার পর বর পক্ষের সবাই একে একে আসতে লাগলো।একদম সবার শেষের গাড়িতে হিয়ান,আহান,মিহির,আহির,রিয়ান আসলো।ওরা গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকছিলো তখনই অভি ওদের দিকে এগিয়ে এসে হিয়ান কে উদ্দ্যেশ্য করে গম্ভীর মুখে বলে
“হিয়ান তোর সাথে আমার জরুরি কথা আছে।আমার সাথে একটু অন্য সাইডে চল।”
অভিকে এতোটা সিরিয়াস মুখে কথা বলতে দেখে হিয়ান আর কথা বাড়ালো না।চুপচাপ অভির পিছনে পিছনে অন্য সাইডে চলে গেলো।ওদের যেতে দেখে রিয়ান,আহান,আহির,মিহির বেশ চিন্তায় পড়ে গেলো।অভি আর হিয়ান কিছু দূর যেতেই হঠাৎ করে উপর থেকে আহানদের গায়ে তরল জ্বাতীয় কিছু একটা পড়লো।ওরা তাকিয়ে দেখলো এটা পানিতে গোলা লাল রং।ওরা রেগে চিল্লিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই মাথার উপরে আবার তারল টাইপের কিছু একটা পড়লো।গন্ধ শুকে বুঝতে পারলো এটা গোবরের পানি।আহান রেগে জোড়ে আআআআআআ বলে একটা চিল্লানি দিলো।আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওদের মাথায় তরকারির ছোলা,ডিমের খোসা,মাছের আশ,হাড়,কাটা,ফাষ্ট ফুডের প্যাকেড মানে রান্না ঘরের যতো ময়লা আছে সব পড়লো।ওখানে উপস্থিত সব মানুষ হতবম্ভ হয়ে আহানদের দিকে তাকিয়ে আছে।চারপাশটা বিশ্রি গন্ধে ভরে গেছে।সবাই নাকে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে।আহান,আহির,মিহির,রিয়ান রাগে হাত মুঠ করে সোজা হয়ে দাড়িয়ে আছে।হিয়ান আল্লাহর কাছে শূকরিয়া আদায় করছে এটা ভেবে যে ‘ও’ একটুর জন্য বেচে গেলো।বেচে যায়নি অবশ্য অভিই প্লান করে আগে থেকে ওকে ওখান থেকে সরিয়ে এনেছে।হঠাৎ চারপাশের পিনপতন নিরবতার মধ্যে কেউ একজন স্টেজে উঠে মাইকের সামনে গিয়ে জোড়ে সিটি বাজালো।সিটির শব্দ শুনে সবাই ষ্টেজে দিকে তাকিয়ে দেখলো সাইফা মাইক হাতে দাড়িয়ে আছে।সবাইকে তাকাতে দেখে সাঈফা একটু গলা ঝেড়ে বললো
“আসলে ব্যাপ্যার টা হয়েছে কি,আমরা যখন আজকে দুপুরে ওনাদের বাড়িতে তত্ব নিয়ে গিয়েছিলাম তখন ওনারা আমাদের বেশ সুন্দর করে খাতির যত্ম করে ছিলেন।তাই আমরাও ওনাদের একটু গ্রান্ড ভাবে ওয়েলকাম করলাম।ভালো করে ওয়েলকাম না করলে মেয়ের বাড়ির লোকেদেরই তো বদনাম হতো তাইনা?যাই হোক আপনারা চাপ নিয়েন না।নিজেদের মতো অনুষ্ঠান টা ইনজয় করুন।”
কথাটা বলে সাঈফা ষ্ট্রেজ থেকে নামতে নিলেই পায়েল হিলের সাথে ষ্টেজে থাকা কার্পেট লেগে পড়ে যেতে নেয়।তখনই কোথা থেকে অভির এক কাজিন এসে সাঈফা কে কোলে তুলে নেয়।আচৎমকা এভাবে হোচট খাওয়ায় সাঈফা ভয়ে ছেলেটার গলা জড়িয়ে ধরে ছেলেটার বুকে মুখ গুজে ।ছেলেটা সাঈফার দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিয়ে ওকে নিয়ে ষ্টেজ থেকে নিচে নেমে এসে ওকে কোল থেকে নামিয়ে দাড় করায়।মেঘ,দিশা,সাড়িকা দৌড়ে সাঈফার কাছে আসে।মেঘ হন্তদন্ত হয়ে বলে
“ঠিক আছিস?সাবধানে হাটবি তো আরেকটু হলেই তো পড়ে যেতি।”
মেঘের কথা শুনে সাঈফা কিছু বলতে যাবে তার আগেই ছেলেটা বললো
“আমি ওনাকে পড়তেই দিতাম না।ঠিক কোনো না কোনো ভাবে ছুটে এসে ওনাকে বাচিয়ে নিতাম।”
ছেলেটার কথা শুনে সাঈফা ব্রু কুচকে বললো
“মানে?”
ছেলেটা একটু থতমত খেয়ে ঠোটের কোনে জোড় পূর্বক হাসির রেখা টেনে বললো
“না মানে কিছু না।আরে মিস সাঈফা আপনি ষ্টেজে উঠে এতো সুন্দর ভাবে কথা বলতে পারেন অথচ ঠিক ভাবে সোজা হয়ে একটু হাটতে পারেন না?”
কথাটা বলেই ছেলেটা সাঈফার গাল হালকা টেনে দিয়ে বললো
“পরের বার থেকে একটু সাবধানে চলাফেরা করবেন।সব সময় তো আর আমি থাকবো না আপনাকে বাচানোর জন্য।”
বলেই ছেলেটা একটা তেডি স্মাইল দিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো।আর ওরা চারজন ছেলেটার যাওয়ার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে রইলো।
সাঈফার যে গালটা ওই ছেলেটা স্পর্শ করেছিলো সেই দিকে একজোড়া লাল রক্তিম বর্নের চোখ হিংস্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।মনে হচ্ছে পারলে এখনি সাঈফার শরীর থেকে ওর গালের মাংস আলাদা করে দিবে।
____________________________
বাইরে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেলো।আহান,রিয়ান,আহির,মিহির বাসার ভিতরে এসে চারজন চার রুমে সাওয়ার নিতে চলে গেলো।সবাই এদিকে কাজে বিজি আছে তাই অভি এসে সাঈফার হাতে চারটা টাওয়েল আর চারটা পাঞ্জাবীর সেট ধরিয়ে দিয়ে এগুলো আহানদের দিয়ে আসতে বললো।সাঈফাও ভালো মেয়ের মতো ওইগুলো হাতে নিয়ে বাসার ভিতরে এসে একে একে আহির,আহান,রিয়ানের রুমে ওগুলো রেখে আসলো।আর আসার আগে সবার ওয়াশ রুমের দরজায় নক করে বলে আসলো পাঞ্জাবী,টাওয়েল বাইরে রাখা আছে।
প্রায় পাচ মিনিট ধরে সাঈফা একটা রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে।বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে দরজাটা লক করা নেই।তাও ঠেলে ভিতরে যেতে ওর ভিষন ভয় করছে।কারন এই রুমে মিহির আছে।সাঈফা অনেক ক্ষন দাড়িয়ে থাকার পর মনে সাহস যুগিয়ে বুকে ফু দিয়ে দয়জায় হালকা নক করে ভিতরে ঢুকলো।’ও’ ভেবেছিলো মিহির হয়তো এখনো ওয়াশ রুমের মধ্যেই আছে।কিন্তু ওর ভাবনায় এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে কেউ এসে ঠাস করে দরজাটা লক করে দিলো।আচৎমকা দরজা লক করার শব্দে সাঈফা ঘুরে পিছনে তাকালো।তাকাতেই ওর চোখ দুটো রসগোল্লার মতো হয়ে গেলো।সাথে কয়েকটা হার্টবিটও যেনো মিস করে ফেললো।ওর সামনে মিহির দাড়িয়ে আছে।মিহিরের পড়নে শুধুমাত্র একটা হোয়াইট টাওয়েল।ওর ভেজা চুল থেকে টুপ টুপ করে পানির ফোটা গুলো ওর লোমহীন বুকে পিঠে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে।মিহিরকে এভাবে দেখে সাঈফা আবার কয়েক দফা ক্রাশ খেলো।পরক্ষনেই মনে মনে কড়া ভাষায় নিজেকে কয়েকটা গালি দিয়ে অন্য দিকে ঘুরে তাকালো।তারপর চোখ খিচে বন্ধ করে এক শ্বাসে বললো
“বিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছে করে এখানে আসিনি।অভি ভাইয়া আমাকে এই গুলো দেওয়ার জন্য পাঠালো (হাতে থাকা পাঞ্জাবী তাওয়েল দেখিয়ে)।ভেবে ছিলাম আপনি ওয়াশরুমে আছেন তাই পারমিশন না নিয়েই ভুল করে রুমের মধ্যে ঢুকে পড়েছি।কিন্তু আমি বাইরে দাড়িয়ে দরজায় নক করে ছিলাম বিশ্বাস করুন।কিন্তু ভিতর থেকে কোনো শব্দ পাইনি তাই আরকি এসে পড়েছি।আই অ্যাম ভেরি সরি।আর কখনো এমনটা হবে না।”
সাঈফার এমন গরগর করে কথা বলার ধরন দেখে মিহির একটা মুচকি হাসি দিলো।পরক্ষনেই কিছু একটা মনে পড়তেই মিহিরের চোখ মুখ শক্ত হয়ে গেলো।’ও’ একপা একপা করে সাঈফার একদম সামনে গিয়ে দাড়ালো।তারপর শক্ত কন্ঠে বললো
“তখন ওখানে ওটা কি হচ্ছিলো?”
মিহিরের প্রশ্ন শুনে সাঈফা ঝট করে চোখ খুলে সামনে তাকালো।তাকিয়েই মিহির কে নিজের এতোটা কাছে দেখে ভয়ে দু’পা পিছিয়ে গেলো।মিহির ওকে পিছিয়ে যেতে দেখে নিজেও ওর দিকে দু”পা এগিয়ে গেলো।সাঈফা আরো পিছাতে যাবে তার আগেই মিহির ওর কোমরে হাত রেখে হেচকা টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বললো
“ছেলেটার সাথে তখন কি কথা বলছিলি?”
সাঈফা কাপাকাপ কন্ঠে বললো
“ক-কোন ছ-ছেলেটা?”
মিহির তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে সাঈফার দিকে তাকিয়ে হাত দিয়ে ওর গালে শ্লাইড করতে করতে বললো
“আরেহ বাহ এরমধ্যেই ভুলে গেলি?অন্য সবকিছু তো তোর বেশ ভালোই মনে থাকে।কিন্তু একটা ছেলে এসে তোকে কোলে নিলো,তোর সাথে এতো কথা বললো,তুই তার গলা জড়িয়ে ধরলি,সে তোর গালে টাচ করলো এইটুকু সময়ের মধ্যে এতো কিছু তোর মাথা থেকে সব বেরিয়ে গেলো?”
সাঈফা এবার বুঝতে পারলো মিহির কার কথা বলছে।’ও’ ভ্রু কুচকে বললো
“আরে ওটা তো রাজ ভাইয়া।আলিশা আপুর কাজিন।এতোদিন ইতালি ছিলো।বিয়ে এটেন্ড করতে বাংলাদেশে এসেছে।”
সাঈফার কথা টা শেষ হওয়ার সাথে সাথে মিহির ওর কোমর ছেড়ে দিয়ে ঠাটিয়ে ওর গালে একটা চড় বসিয়ে দিলো।চড় টা বেশ জোড়ে মারায় সাঈফা উপুর হয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলো।ওর মাথার মধ্যে কেমন ঝিমঝিম করছে।মিহির গিয়ে সাঈফার বাহু চেপে ধরে ফ্লোর থেকে টেনে তুলে চিল্লিয়ে বললো
“ওই ছেলের বিষয়ে এতো খোজ খবর নিতে তোকে কে বলেছে?এখানে এসেছিস কি ছেলেদের বিষয়ে খোজ নেওয়ার জন্য?আর তোর সাহস হলো কি করে ওই ছেলেটার কোলে উঠে ওর গলা জড়িয়ে ধরার?”
কথাটা মিহির এতো জোড়ে বললো যে সাঈফা ভয়ে ফুপিয়ে কেদে উঠলো।তারপর কাদতে কাদতে বললো
“আমি ওনার ব্যাপ্যারে কোনো খোজ খবর নেইনি।এগুলো তো আন্টিরা যখন বলাবলি করছিলো তখন শুনেছি।আর আমি তো ইচ্ছে করে ওনার কোলে উঠিনি,পড়ে যাচ্ছিলাম তাই উনিই এসে আমাকে কোলে তুলে নিলেন।”
মিহির সাঈফাকে থাক্কা দিয়ে বেডের উপর ফেলে দিয়ে ফ্লোর থেকে টাওয়েল আর পাঞ্জাবী টা উঠালো।তারপর দরজাটা চাবি দিয়ে লক করে সাঈফার দিকে তাকিয়ে বললো
“আমি চেইঞ্জ করে যতোক্ষন পযর্ন্ত না বের হচ্ছি ততোক্ষন পযর্ন্ত মুখ থেকে একটা টু শব্দও বের করবি না।চুপচাপ এখানে শুয়ে থাক।”
কথাটা বলেই মিহির ওয়াশরুমে চলে গেলো।মিহির চলে যেতেই সাঈফা দরজার কাছে গিয়ে দরজার লক খোলার চেষ্টা করতে লাগলো।কিন্তু খুলতে না পেরে জোড়ে জোড়ে ধাক্কাতে লাগলো আর মেঘ আপু,আহান ভাইয়া বলে ডাকতে লাগলো।কিন্তু লাউড মিউজিক চলার কারনে ওর চিৎকারের শব্দ কারো কানেই গিয়ে পৌচাচ্ছে না।
রাজ সাঈফা কে বাড়ির ভিতরে আসতে দেখে ‘ও’ নিজেও ভিতরে চলে আসে।মেয়েটাকে বেশ ভালো লেগেছে ওর।খুব মিশুকে সভাবের আর দেখতেও মাসাআল্লাহ অনেক সুন্দরী।ভাবছে আলিশার বিয়েটা মিটে গেলে সাঈফার বাড়ির লোকের কাছে নিজের বিয়ের প্রস্তাপ দিবে।রাজ করিডোর দিয়ে যাচ্ছিলো।ঠিক তখনই একটা মেয়েলি কন্ঠের চিৎকার শুনে দাড়িয়ে গেলো।চিৎকারের শব্দটা অনুসরন করে একটা রুমের সামনে গিয়ে থেমে গেলো।তারপর একটু কৌতুহলী কন্ঠে জিঙ্গেস করলো
“কে আছেন এখানে?”
একটা অপরিচিত ছেলের কন্ঠস্বর শুনে সাঈফা কাদো কাদো কন্ঠে বললো
“আমি সাঈফা।পাএের বোন হই।বাইরে গিয়ে মেঘ অথবা আহান নামের কাউকে পেলে এখানে একটু নিয়ে আসুন প্লিজ।আমি এখানে আটকে গেছি।”
সাঈফার ভয়েজ শুনে রাজের চিনতে একটুও অসুবিধা হলো না।’ও’ বাইরে থেকে জোড়ে দরজা ধাক্কা দিতে দিতে বললো
“মিস সাঈফা একদম ভয় পাবেন না।শান্ত হোন আমি কিছু একটা করছি।”
সাঈফা বিরক্তির স্বরে বললো
“আরেহ ধুর আপনি কিচ্ছু করতে পারবেন না।আহান ভাইয়া অথবা মেঘ আপিকে ডেকে আনুন প্লিজ।”
কথাটা বলেই সাঈফা পাশে তাকাতেই দেখলো মিহির ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে রাগি চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।মিহিরকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সাঈফা শুকনো একটা ঢোক গিললো।এখন যে ওর কানের নিচে আরেক টা পড়বে সেটা বুঝতে ওর আর বাকি রইলো না।কথাটা ভাবতে ভাবতে মিহির সত্যি সত্যি এসে ওর গালে আরেকটা চড় বসিয়ে দিলো।চড় খেয়ে সাঈফা আবার ভ্যা ভ্যা করে কেদে দিলো।মিহির ওর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে বেডের উপর বসিয়ে দিয়ে বললো
“চুপচাপ এখানে বসে কান্না করবি।এখান থেকে উঠলেই মেরে তোর ঠ্যাং ভেঙে দিবো।”
কথাটা বলেই মিহির গিয়ে দরজাটা খুলে ফেললো।খুলেই রাজ নামের ছেলেটাকে চোখের সামনে দেখে ওর মাথায় রক্ত উঠে গেলো।
#চলবে
#চলবে,,,,,,,