#মনের_উঠোন_জুড়ে
#পর্ব_০৭
#লেখনীতে_নূন_মাহবুব
-” তুই দিগন্ত আগারওয়াল হোস বা আগারবা’ ল হোস , বাট আই ডোন্ট কেয়ার।তোকে ভয় পাবার কোনো প্রশ্নই আসে না। খুব তো বলছিলি আমার কলিজা কে’টে কু’কু’র কে খাওয়াবি।তো এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছিস কেন? তোর সাহস দেখা?কাম অন দিগন্ত আগারবা’ল।”
-“দিগন্ত এক দৃষ্টিতে শিক্ষার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। শিক্ষা দিগন্তের থেকে কোনো রেসপন্স না পেয়ে আবারো বললো, কিছুক্ষণ আগে তুই কি জানি বললি? ওহ্ হ্যাঁ মনে পড়েছে।একটা মেয়ে হয়ে আমি অন্য একটা মেয়েকে প্রোটেক্ট করতে এসেছি বলো হো হো করে ব’দ’মা’শ’দের মতো হেসেছিলি তুই।তোর তো দেখছি মেয়েদের ক্ষমতা সম্পর্কে কোন ধারনায় নেই।মেয়েরা চায়লে অনেক কিছু করতে পারে। একটা কথা কান খুলে শুনে রাখ দিগন্ত আগারবা’ ল। মেয়েদের কে কখনো দূর্বল ভেবে ভুল করবি না। মেয়েরা যেমন পুরুষের পা টিপতে জানে, তেমনি সেই পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিতে ও জানে। আজকের পর থেকে তোকে যদি আবৃত্তি আপুর দিকে চোখ তুলে বাজে নজরে তাকাতে দেখি , উফ্ সরি শুধু আবৃত্তি আপু নয় , কোনো মেয়ের দিকে যদি মা ,বোনের নজরে ছাড়া অন্য নজরে দেখিস, তোর চোখ তুলে আমি রাস্তার কু’কু’র কে দিয়ে খাওয়াবো।মাইন্ড ইট মিস্টার দিগন্ত আগারবা’ল ?”( লেখিকা নূন মাহবুব )
-” ও মাই গড! এ দেখি মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। চারিদিকে শুধু মিষ্টির ছড়াছড়ি।এতো মিষ্টির সংস্পর্শে এবার নিশ্চয় আমি ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে যাবো। তুমি কি জানি বললে? ও হ্যাঁ আমি যেন অন্য কোনো মেয়ের দিকে চোখ না তুলে তাকায়। তুমি একদম টেনশন করো না সুইটহার্ট।আমি এক নারী তে আসক্ত পুরুষ।এখন থেকে আমি শুধু মাত্র তোমার দিকে তাকিয়ে থাকবো। বিশ্বাস করো ভুলে ও অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাবো না।আর যদি তাকাতে যাই , তুমি আমার চোখ উপ্রে দিও কেমন। বাই দ্যা ওয়ে মে আই নো এবাউট ইউ সুন্দরী?”
-” ভুলে ও শিক্ষা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবি না।এর ফলাফল খুব একটা ভালো হবে না ।”
-” শিক্ষার কথা শুনে আবৃত্তি এসে শিক্ষা কে এক সাইডে নিয়ে গিয়ে বললো, মা’রা’মা’রি করার জন্য একবার তোকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলো। তুই কি চাচ্ছিস এই ভার্সিটি থেকে ও তোকে তাড়িয়ে দিক? কাকে কি বলছিস সেই সম্পর্কে আদৌ কোনো ধারণা আছে তোর?ও একটা ব’দ’মা’শ সাইকো। ওর বাবার অনেক ক্ষমতা।বাবার টাকা আর ক্ষমতার জোরে এ পর্যন্ত কতো মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে তার ঠিক নেই। মেয়েরা ওর কাছে টিশার্ট এর মতো।যা ও ক্ষণে ক্ষণে চেন্জ করে।আর তুই ওর মতো একটা সাইকো কে থা’প্প’ড় দিলি?ঘুমন্ত বাঘকে জাগ্ৰত করে দিলি?”
-“ঐ আগারবা’ল আপনাকে টিজ করছিলো,আর আপনি কিছু না বলে চুপ করে মুখ বুজে সহ্য করেছিলেন। এমনকি আপনার ওড়না ধরে টান দিয়েছে। আপনি আমাকে ভালোবাসেন বা নাই বাসেন আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি।আপনাকে যথেষ্ট সম্মান করি।আর আমার সামনে আপনার সম্মান নষ্ট করতে দিতে পারি না আমি। আমি তো আপনার জন্য….
-” আমার টা আমি বুঝে নিতাম। তুই এর মধ্যে নাক গলাতে গেলি কেন?এখন চল এইখান থেকে বলে শিক্ষার হাতে ধরে নিয়ে যাওয়ার আগেই দিগন্ত এসে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে বললো, তুমি চায়লে একটা না আরো হাজার টা থা’প্প’ড় মারতে পারো সুন্দরী। আমি ভালোবেসে সেটা গ্ৰহন করে নিবো। তোমার ঐ নরম হাতের থা’প্প’ড় খেয়ে আমি হাসতে হাসতে ম’রে যেতে পারবো।”
-” দেখো দিগন্ত, ও বাচ্চা একটা মেয়ে ভুল করে ফেলেছে। ওর আজকে ভার্সিটির প্রথম দিন। তুমি প্লিজ ওকে যেতে দাও। আমি প্রমিজ করছি ও আর কখনো এমন ভুল করবে না।”
-” দিগন্ত শিক্ষার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে বললো, ইউ আর লুকিং সো প্রিটি।আ’ম সো ইমপ্রেসড টু সি ইউ। এতো দিন তুমি কোথায় ছিলে সুন্দরী? তুমি এসে আমার মনে তুফানের সৃষ্টি করে দিয়েছো।এখন আমি কি করবো বলো তো সুন্দরী?আই কান্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ।”
-” শিক্ষা কিছু বলার আগেই আবৃত্তি শিক্ষার হাত ধরে ক্যাম্পাসে ভেতরে নিয়ে এলো।”
-” শিক্ষার যাওয়ার পানে তাকিয়ে দিগন্ত বললো, আই লাইক ইউর এটিটিউট । এই দিগন্ত আগারওয়ালের চোখে একবার যাকে ভালো লাগে সে এতো সহজে নিস্তার পায় না সুন্দরী।আই নিউ ইউ ইভেন ফর ওয়ান নাইট। কিন্তু এই সুন্দরীর যে ঝাঁঝ মনে হয় না এতো সহজে আমার খাঁচায় বন্দী হবে। কিন্তু আমার তো তোমাকে চাই বেবি এট এনি কস্ট। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব ? ইয়েস আইডিয়া। কথায় বলে কান টানলে মাথা আসে।আমাকে ও কান টানতে হবে।তাহলে শিকার নিজেই বাঘের খাঁচায় ধরা দিবে।হা হা হা।”
__________________________________
-” আবৃত্তি শিক্ষা কে হিসাববিজ্ঞান ডিপার্টমেন্টে নিয়ে গেল।আজ যেহেতু ফাস্ট ইয়ারের ভার্সিটি তে প্রথম দিন,তাই তাদের জন্য নবীন বরণের আয়োজন করা হয়েছে। অনেক মেয়েরা শাড়ি চুড়ি পরে সাজগোজ করে এসেছে। আবৃত্তি শিক্ষা কে ডিপার্টমেন্টের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে প্রিয়ার কাছে গিয়ে বসলো।প্রিয়া আবৃত্তির মন খারাপ দেখে জিজ্ঞেস করলো, কি হয়েছে আবৃত্তি ?”
-” কিছু না রে। এমনিতেই ভালো লাগছে না।”
-“দেখ যা হবার হয়েছে শুধু শুধু মন খারাপ করে কি হবে? দিগন্ত আগে শুধু তোকে বিরক্ত করতো।আর এখন ওর নজর তোদের দুজনের উপর পড়েছে।”
-” আমি আমার কথা ভাবছি না।আমি ভাবছি শিক্ষার কথা। মেয়েটা কে উপরে উপরে যতটা শক্ত মনের দেখা যায়, ভেতরে ঠিক ততটাই নরম মনের।আমি ওকে সবসময় অপমান করি । তবু ও মেয়েটা কখনো আমার মুখের উপর কথা বলে না। মেয়েটা ছোটবেলা থেকেই অনেক কিউট ছিলো। চেহারার মধ্যে মায়া মায়া ভাব লুকিয়ে ছিলো। দেখলে মনে মতো কাছে নিয়ে আদর করি। কিন্তু আমার ইগো আমাকে ওর কাছে যেতে বাধা দিতো।পাপা সবসময় ওকে বেশি আদর করতো। ছোটবেলা থেকেই ওর অনেক লম্বা চুল ছিলো।পাপা কে দেখতাম ওর চুলে তেল দিয়ে দিতো,চুলে বেনি করে দিতো।যা আমার সহ্য হতো না।আমি এক রাতে রাগের বশে চুল বেঁধে দেওয়ার নাম করে বাচ্চা মেয়েটার কোমর পর্যন্ত লম্বা চুলগুলো কে ‘টে দিয়েছিলাম। যখন বুঝতে পারে আমি তার চুল কে’টে দিয়েছি, সে কি কান্না করেছিলো মেয়েটা। তবু ও পাপা কে আমার কথা বলেছিলো না যে আমি ওর চুল কে’টে দিয়েছিলাম। মেয়েটা কে কতো ভাবে অপমান করেছি তার ঠিক নেই। কিন্তু সেই মেয়েটা আজ আমার সম্মান রক্ষা করলো।”
-” আমি একটা বিষয় বুঝতে পারি না। তুই সবার সাথে এতো ভালো ব্যবহার করিস। বড়লোক বাবার মেয়ে হয়েও শুধুমাত্র আমার জন্য এমন একটা ভার্সিটি তে ভর্তি হয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েদের মতো চলাফেরা করিস। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করিস। কিন্তু শিক্ষার প্রতি এতো রাগ, ক্ষোভ , অপমান , অবহেলা কেন?”
-“তোর ভালোবাসার মানুষ যদি আমাকে ভালোবাসে তখন তোর কেমন লাগবে প্রিয়া? তুই পারবি চোখের সামনে নিজের ভালোবাসার মানুষ কে অন্য কারো হতে দিতে? নিজের ভালোবাসার মানুষের #মনের_উঠোন_জুড়ে অন্য কেউ বিরাজ করুক এটা সহ্য করতে? নিজের ভালোবাসার মানুষের চোখে অন্য কারো প্রতি ভালোবাসা দেখতে?”
-” মানে?”
-” মানে আমার ভালোবাসার মানুষ ওকে ভালোবাসে।”
চলবে ইনশাআল্লাহ।।।
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবে।।#মনের_উঠোন_জুড়ে
#পর্ব_০৮
#লেখনীতে_নূন_মাহবুব
-“কি নেই আমার বল তো প্রিয়া? আমি যথেষ্ট সুন্দরী, শিক্ষিত, বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে। তবু ও নির্জন ভাই আমাকে ছেড়ে ঐ বাইরের একটা মেয়েকে তার মনের উঠোনে জায়গা দিলো,তাকে ভালোবাসলো। কেন প্রিয়া? আমি কি নির্জন ভাইয়ের ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য নয়?কি এমন আছে ঐ শিক্ষার মধ্যে যা আমার মধ্যে নেই? কেন নির্জন ভাই আমাকে ভালোবাসতে পারলো না??
-” মানুষ যা চায়, কখনো তা পায় না।আর যা পায়, কখনো সে তা চায় না। চাওয়া পাওয়ার এই দন্ধ আমাদের চিরন্তন থেকে যাবে।ধর আমি যাকে পছন্দ করি সে পছন্দ করে তোকে। কিন্তু তোর কাছে তার ফিলিংসের কোনো দাম নেই। তুই নির্জন ভাই কে চাস। কিন্তু নির্জন ভাই তোকে চায় না।তার #মনের_উঠোন_জুড়ে অন্য কারো বসবাস। তোর তাকে ভালোবাসা উচিত,যে তোকে ভালোবাসে।মরিচিকার পিছনে ছুটে কোনো লাভ নেই আবৃত্তি।”
-” নির্জন ভাই শুধু মাত্র শিক্ষার জন্য আমাকে ইগনোর করে। শিক্ষা না থাকলে নির্জন ভাই ঠিক আমাকে ভালোবাসতো। শিক্ষা আমার চরম শত্রু।আর একজন শত্রুর সাথে আর কতো ভালো ব্যবহার করতে বলছিস তুই? ও এটাই ডির্জাভ করে।”( লেখিকা নূন মাহবুব )
-” তোর কোথাও ভুল হচ্ছে আবৃত্তি। আমি শিক্ষাকে যতোটুকু চিনি, আমার মনে হয় না শিক্ষা নির্জন ভাই কে পছন্দ করে। ইনফ্যাক্ট আমি শিক্ষার চোখে নির্জন ভাইয়ের প্রতি কোনো ভালোবাসা দেখি নি। দেখেছি সম্মান, শ্রদ্ধা।দেখ আবৃত্তি নির্জন ভাই যদি শিক্ষা কে ভালোবাসে এতে শিক্ষার দোষ কোথায়? শিক্ষা নির্জন ভাই কে ভাইয়ের নজরে দেখে।এমন ও তো হতে পারে যে শিক্ষা নিজেও জানে না নির্জন ভাই ওকে এতোটা ভালোবাসে।”
-” আবৃত্তি চোখের পানি মুছে বললো,বাদ দে প্রিয়া। ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। নাও টাইম টু গো।”
” হুম চল।”
___________________________________
-” নবীন বরণ উপলক্ষ্যে সকল ছাত্র-ছাত্রীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। যেহেতু আজ প্রথম দিন তাই শুভেচ্ছা বিনিময় আর পরিচয় পর্বের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে প্রথম দিনের ক্লাস। ইতিমধ্যে শিক্ষার তুবা নামের একটা মেয়ের সাথে বেশ ভাব হয়েছে। যদিও মেয়েটার গায়ের রং একটু চাপা,তবে দেখতে ভারী মিষ্টি। অনেক সহজ ,সরল মিশুক প্রকৃতির। ক্লাস রুম থেকে হওয়ার সময় তুবা জিজ্ঞেস করলো, তুমি কিভাবে বাসায় ফিরবে শিক্ষা? একা একা যাবে নাকি কেউ নিতে আসবে? শিক্ষা ভাবছে , আবৃত্তি আপু নিশ্চয় এতোক্ষণে বাড়ি পৌঁছে গিয়েছে।যে আমাকে দুচোখে সহ্য করতে পারে না,সে কখনো আমার জন্য অপেক্ষা করবে না । শিক্ষা নিজের মতো করে ভেবে কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই আবৃত্তি এসে বললো, শিক্ষা আমার সাথে যাবে।ও আমার কাজিন। শিক্ষা অবাক হয়ে গেল আবৃত্তির মুখে তাকে কাজিন সম্বোধন করায়। আবৃত্তি এসে বললো, কেমন লাগলো ভার্সিটি লাইফের প্রথম দিন?”
-” অনেক ভালো লেগেছে। কিন্তু আপনি এখনো বাড়ি ফিরে যান কি কেন?”
-” তোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ভাবছিলাম একা একা কি করবি না করবি? কিন্তু এখন তো দেখছি প্রথম দিনেই ফ্রেন্ড বানিয়ে নিয়েছিস।”
-” শিক্ষা তুবা কে দেখিয়ে বললো,ও তুবা। খুবই ভালো মনের একটা মেয়ে।”
-” আবৃত্তি তুবা কে বললো, নাইস টু মিট ইউ।শিক্ষার সাথে অবশ্যই একদিন আমাদের বাসায় আসবে ।”
-” সেম টু ইউ আপু।”
-” বাই , সি ইউ লেটার বলে আবৃত্তি শিক্ষা দুজনেই নিজেদের গন্তব্যে ছুটে চললো। ঘন্টাখানেক পরে আবৃত্তি, শিক্ষা বাসায় পৌঁছে কলিং বেল দিলে সাদ্দাম শিকদার দরজা খুলে দেয়। আবৃত্তি, শিক্ষা দুজনেই সাদ্দাম শিকদার কে অবাক হয়ে যায়। সাদ্দাম শিকদার কে দেখে অনেক রাগান্বিত মনে হচ্ছে। শিক্ষা সাদ্দাম শিকদার কে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করলো, তোমার তো শহরের বাইরে থাকার ছিলো। তুমি এই সময়ে বাড়িতে কেন বড় আব্বু?”
-” তুমি নাকি আজ ভার্সিটি গিয়ে একটা ছেলেকে থা’প্প’ড় দিয়েছো?”
-” তুমি তো জানো বড় আব্বু অন্যায় দেখলে আমি স্থির থাকতে পারি না।যদি ও অনেক সময় পরিস্থিতির চাপে পড়ে স্থির থাকতে হয়। কিন্তু তাই বলে সবসময় আমি ছেঁড়ে কথা বলতে পারি না।”
-” এই লাস্ট বার তোমাকে ওয়ার্ণিং দিচ্ছি। এরপর যদি আর কখনো আমার কর্ণপাত হয় যে তুমি মা’র’পিট করেছো, তাহলে তোমার ভার্সিটি যাওয়ার সাথে সাথে বাড়ির বাইরে যাওয়াও বন্ধ হয়ে যাবে। ভাগ্যিস সাহিত্য এসব ব্যাপারে কিছু জানে না।জানলে নিশ্চিত তোমাকে দু চার ঘা দিয়ে দিতো।ভেবো না তোমাকে অনেক ভালোবাসি বলে তুমি যা নয় তাই করে বেড়াবে।আমি ভালোর ভালো খারাপের খারাপ।”
-” আবৃত্তি এই প্রথম শিক্ষার পক্ষ নিয়ে বললো, পাপা ও বাচ্চা মেয়ে। প্লিজ ওকে কিছু বলো না।ও আর কখনো এমন ভুল করবে না।আমি ওকে অনেক বকা দিয়েছি। তুমি আর কিছু বলো না প্লিজ।”
-” হ্যাভ ইউ চেন্জ ইউর মাইন্ড আবৃত্তি? আমি ভাবতে ও পারছি না তুমি শিক্ষার হয়ে কথা বলছো। ঠিক আছে আমি আর কিছু বলছি না।তবে নেক্সট টাইম আর কারো কথা শুনবো না আমি।যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।”
-“সাদ্দাম শিকদারের ব্যবহারে শিক্ষার চোখে পানি চলে এলো। শিক্ষা মন খারাপ করে নিজের রুমে এসে ফ্রেশ না হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। ক্লান্তির কারণে কিছুক্ষণের মধ্যে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো শিক্ষা।”
__________________________________
-” সাহিত্য নিজের ডেস্কে বসে কিছু ফাইল চেক করছে এমন সময় নম্রতা এসে বললো, সাহিত্য স্যার আগামীকাল আমার ভাইয়ের জন্মদিন। সবাইকে ইনভাইট করেছে পাপা।আপনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলে আমার খুব ভালো লাগতো।না মানে পাপা খুব খুশি হবে।”
-” দেখ নম্রতা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব এই কেস টা আমাদের সলভ করতে হবে। উপরমহল থেকে বারবার ওয়ার্ণিং দিচ্ছে।এখন এসব অনুষ্ঠানে আনন্দ করে বেড়ানোর সময় নয়।”
-” প্লিজ স্যার আমি আপনাকে … বাকিটা বলার আগে এসিপি সাইফুজ্জামান এসে বললো, কি হচ্ছে নম্রতা? নিজের ডেস্ক ছেড়ে তুমি এইখানে কেন?”
-” নম্রতা আমতা আমতা করে বললো, আসলে স্যার পাপা বলেছিলো আমার ভাইয়ের জন্মদিন তাই আপনাদের…..
-” মন্ত্রী মশায় আমাকে বলেছে এই ব্যাপারে।আই উইল ট্রাই মাই বেস্ট।”
-” থ্যাংক ইউ স্যার।”
-” সাইফুজ্জামান প্রতিউত্তরে কিছু না বলে সাহিত্যের কাছে এসে বললো, হ্যাঁ সাহিত্য কিছু পেলে ?”
-” হ্যাঁ স্যার। সাহিত্য নিজের ল্যাপটপ এগিয়ে দিয়ে বললো এই দেখুন স্যার।”
-” ও মাই গড! তার মানে আমার ধারণা সঠিক ছিলো। ফরেনসিক ডক্টর শাফওয়ান মাহমুদ যখন বলেছিলো খু’ন হয়ে যাওয়া প্রত্যেক টা মেয়ের বয়স ১৮-১৯ বছরের মধ্যে তখনই আমার সন্দেহ হয় এই কেসের সাথে আমাদের পূর্বের এসিপি রায়হান মীর আর তার পরিবারের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার সাথে কোনো না কোনো কানেকশন রয়েছে।”
-” এসিপি সাইফুজ্জামানের কথায় নির্জন জিজ্ঞেস করলো , কিন্তু কিভাবে স্যার?এসিপি রায়হান স্যার আরো দশ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছে।তাহলে স্যারের সাথে কি এমন কানেকশন থাকতে পারে?”
-” এসিপি যখন নিখোঁজ হয় তখন তার মেয়ে উষ্ণতার বয়স ছিলো আনুমানিক ৮-৯ বছর।আর এতো দিনে তার বয়স হয়েছে আনুমানিক ১৮-১৯ বছর।আর যে কয়টা মেয়ে খু’ন হয়েছে প্রত্যেকের বয়স ১৮-১৯ বছরের মধ্যে। তাহলে এর অর্থ কি দাঁড়ায় নির্জন?”
-” জ্বি স্যার। বুঝতে পেরেছি।দশ বছর আগে হয়তো খু’নি শুধু এসিপি স্যার আর তার ওয়াইফ কে হাতে পেয়েছে।হয়তো মে’রে ও দিয়েছে। কিন্তু ভাগ্যক্রমে উষ্ণতা বেঁচে যায়।আর খু’নি হয়তো এতো গুলো বছর পরে এইটা জানতে পেরেছে যে উষ্ণতা বেঁচে আছে।আর তার বয়স আনুমানিক ১৮-১৯ বছর হয়েছে। সেজন্য খু’নি সেসব মেয়েদের টার্গেট করছে যাদের বয়স আনুমানিক ১৮-১৯ বছরের মধ্যে।”
-” ইউ আর রাইট নির্জন।”
-” সবার কথা শুনে সাহিত্য বললো, স্যার আবার এমনটাও তো হতে পারে যে উষ্ণতা নিজেই এই খু”ন গুলো করছে?”
-” তোমার এমন টা মনে হবার কারণ কি সাহিত্য?”
-” স্যার হয়তো উষ্ণতা জানতে পেরেছে তার বাবা মায়ের নিখোঁজ বা খু’নের পেছনে যে মেয়েগুলো খু’ন হয়েছে তাদের পরিবারের কোনো সদস্য জড়িত রয়েছে।তারা যেমন উষ্ণতার থেকে ওর বাবা মাকে কেড়ে নিয়েছে, ঠিক তেমনি উষ্ণতা ও তাদের থেকে তাদেরকে মেয়েদের কেড়ে নিচ্ছে।”
-” না না এটা হবে না। একজন এসিপির মেয়ে কখনো এমন করতে পারবে না। আবার করতে ও পারে।তবে যায় হোক আমাদের সর্ব প্রথম এই খু’নি কে খু’ন করা থেকে বিরত করতে হবে। কিন্তু কিভাবে খু’নি কে বিরত করবো খু’ন করা থেকে??
চলবে ইনশাআল্লাহ।।