#লাবণ্যর_সংসার
#পর্ব_9
#কৃ_ষ্ণ_ক_লি
বেশ কিছুক্ষণ পর নিবিড় লাবণ্যকে নিজের বুক থেকে তুলে কপালে গাঢ় চুম্বন করলো। লাবণ্য পুনরায় নিবিড়ের বুকে মাথা রাখলো।
—“ দেখো লাবণ্য আমি চাই একটা নতুন সুন্দর সম্পর্ক শুরু করতে। যেখানে কোনও ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না। শুধু তুমি যদি আমার পাশে থাকো , আমায় সহযোগীতা কর।”
—“ বেশ তো আমি ও তাই চাই। আর আমি কোনও পুরনো কথা ভাববো না। পুরনো ঘটে যাওয়া কাহিনী আর আপনার সামনে বা নিজের মনেও বলবো না।”
—“ এই তো গুড গার্ল বুঝেছো তাহলে। ”
নিবিড় হাসি মুখে কথাগুলো বলে বেশ কিছুক্ষণ নিরব থাকে। লাবণ্য নিবিড়ের বুকে এক আঙুল দিয়ে আঁকিবুকি কেটে চলেছে।
—“ তুমি কিন্তু এখনও , চাইলেই আজকের রাতটা স্পেশাল করতে পারো! ”
—“ কিভাবে? ”
লাবণ্যর স্বাভাবিক কন্ঠের প্রশ্ন। নিবিড় লাবণ্যকে সরিয়ে উঠে দাঁড়ায়।
—“ আমি নীচে গেলাম , তুমি দ্রুত ডাইনিং রুমে চলে আসো। ”
নিবিড় দ্রুত পায়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়। লাবণ্য ভাবনায় পড়ে যায়। এই তো মানুষটা বেশ সুন্দর ভাবে কথা বলছিলো! তাহলে ওর করা প্রশ্নে কি রেগে গেলো! তবে কি এই মানুষটাকে বোঝা লাবণ্যর সাধ্যের বাইরে! পরক্ষণেই লাবণ্যর চোখ ঘড়ির কাঁটায় যায়। এখন সময় রাত দশটা বেজে পনেরো মিনিট। এতো কিছুর পর ওর এবার মনে হয় ওদের তো এখনো রাতের খাবারটাই খাওয়া হয়নি। মানুষটার নিশ্চয়ই ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে। আর ও মনের ভুলে সব কিছু ভুলে গল্প করতে বসে পড়লো! আজব!
নিজের মনকেই বকতে বকতে নীচে নামে লাবণ্য। গুটি গুটি পায়ে ডাইনিং রুমে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু এখানে তো অন্ধকার , উনি তো এখানেই আসতে বললেন। নিজের মনে কথাগুলো ভেবে দেওয়ালের গা ঘেঁষে সুইচ বোর্ড খোঁজার জন্য হাত বাড়ায় লাবণ্য। কিন্তু ও অন করার আগেই লাইট জ্বলে ওঠে। আবার এক রকম চমকে উঠে লাবণ্য।
—“ এই ভাবে! ”
লাবণ্যর কানে ফিসফিসিয়ে কথাগুলো বলে উঠে নিবিড়। এভাবে হঠাৎ করে কানের মধ্যে কথা বলায় লাবণ্য ভয় পেয়ে যায়। নিজের বুকে হাত রেখে চোখ বড়ো করে তাকায় নিবিড়ের দিকে। নিবিড় গলা জড়িয়ে ধরে লাবণ্যর।
—“ কি হয়েছে ভয় পেয়েছো?”
—“ এমন কেউ করে বলুন তো! প্রথমত তো অন্ধকার ছিলো , হঠাৎ করে আলো জ্বলে উঠলো।তারপর আপনি এভাবে কথা বলে উঠলেন! আমার তো জীবনটাই বেরিয়ে আসছিলো!”
—“ আচ্ছা সরি বাবু । ”
নিবিড়ের মুখে বাবু কথাটা শুনে লাবণ্য ভ্রু যুগল কুঁকড়ে থাকে। নিবিড় লাবণ্যকে চেয়ারে বসিয়ে দেয়। লাবণ্য সামনে তাকিয়ে দেখে রিসোর্টে দেখা ওর পছন্দের খাবার গুলোই এখানে আছে। তফাৎ শুধু ওখানে সুইমিং পুলের পাশের টেবিলে খাবার গুলো ছিলো। আর এখানে ডাইনিং রুমের টেবিলে।
লাবণ্য নিবিড়ের দিকে তাকালে নিবিড় মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,
—“ তোমার পছন্দের খাবার কি , তুমি কি খেতে ভালোবাসো সব তোমার ভাইয়ার থেকে জেনে নিয়েছি। ”
লাবণ্য যেনো বিস্ময়ের চরম পর্যায়ে পৌঁছে যায়। সত্যি ওর পছন্দের সব খাবার গুলোই তো টেবিলে সাজানো। তার মানে ওর ভাইয়া ওর খাবার প্রতি খেয়াল রাখতো! জানতো কি খেতে ভালো বাসে ওর বোন!
নিবিড় লাবণ্যর চোখের সামনে তুড়ি মেরে বলে,,
—“ এই , কোথায় হারিয়ে গেলে লাবণ্যময়ী! ”
ঘোর কাটে লাবণ্যর। ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা প্রসারিত করে দু দিকে মাথা হেলায়।
সামনে থাকা প্লেট গুলো সোজা করে নেয়। নিবিড়ের প্লেটে খাবার দিতে যাওয়ার সময় লাইট অফ হয়ে চারদিকের ক্যান্ডল লাইট জ্বলে উঠে।
—“ ভেবেছিলাম সুইমিং পুলের ধারে খোলাকাশে মৃদুমন্দ বাতাস খেতে খেতে ডিনার করবো! কিন্তু তুমিই তো… ”
লাবণ্য নিবিড়ের ঠোঁটে আঙুল ছুঁইয়ে দেয়। তারপর দ্রুত নিজের হাতটা সরিয়ে নিয়ে চটপট বলে উঠে,,
—“ বাড়িতেও তো সুইমিং পুল আছে। এক কাজ করি আমরা সেখানে যাই। এখানেও তো মৃদুমন্দ বাতাস খেতে পারবেন। সাথে চাঁদের আলো পুরোপুরি ফ্রি.. চলুন যাই। ”
লাবণ্য আনন্দে আপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলে উঠতে গেলে নিবিড় ওর হাত ধরে পুনরায় বসিয়ে দেয়।
—“ থাক আমরা না হয় অন্য একদিন সুইমিং পুলের বাতাস আর চাঁদের আলো খাবো। আজ বরঞ্চ এখানেই এই খাবার গুলো খাই। ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছে বিশ্বাস করো ।”
—“ আমি ও তো জানি আপনার ক্ষুধা পেয়েছে। তাই জন্যই তো আপনাকে তাড়াতাড়ি খাবার দিতে গিয়েছিলাম কিন্তু আপনিই তো.. ”
—“ আচ্ছা বাবা ঠিক আছে। চলো খাওয়া শেষ করি। কিন্তু একটা কান্ডিশন আছে! ”
—“ আবার কি হলো? ”
—“ তুমি খাইয়ে দিবে? ”
লাবণ্যময়ী চোখ বড়ো করে ফেলে। ও সঠিক শুনছে তো!
—“ তখন স্পেশাল ডিনারটা স্পয়েল করেছিলে। তাই তোমায় একটা মিষ্টি শাস্তি দিলাম। ”
লাবণ্য নিবিড়কে খাইয়ে দিতে থাকে। তার মাঝে মাঝে নিবিড়ও নিজের হাতে তুলে লাবণ্যকে খাইয়ে দিতে থাকে।
খাওয়ার পর্ব শেষ করে লাবণ্য আর নিবিড় দুজনে নিজেদের রুমে চলে আসে। রুমে এসেই লাবণ্য আলমারি থেকে শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায়। ঠিক তখনই ওর সেলফোনটা বেজে উঠে। বেড সাইড টেবিলে থাকা ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে ওর মায়ের নাম্বার থেকে আসা কল। ও রিসিভ করতে গিয়েও করলো না। মুহুর্তের মধ্যেই মনে পড়ে যায় ওর মায়ের বলা কথাগুলো… । মাথা ঝাঁকিয়ে ফোনটা কেটে সুইচড অফ করে দেয়।
—“ কি হয়েছে? কে ফোন দিয়েছিলো? ”
নিবিড়ের ডাকে ছোট্ট একটা হুম বলে সাড়া দিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় লাবণ্য।
—“ ক.. কেউ না। ওই কাস্টমার কেয়ারের নাম্বার ছিল। আমার ফোনটা চার্জে বসাতে হবে। আমার চার্জার টা…। ”
লাবণ্য এদিক ওদিক তাকাতে থাকে। ড্রেসিং টেবিলের ওপরে থাকা চার্জারটা নিয়ে নিবিড় লাবণ্যর হাতে ধরিয়ে দেয়। লাবণ্য কাঁপা হাতে নিজের ফোনটা চার্জে বসায়।
নিবিড় এতোক্ষণ লাবণ্যকেই লক্ষ করছিলো। তাই লাবণ্যর ফোন চার্জে বসানো শেষ হয়ে গেলে নিবিড় লাবণ্যকে ধরে নেয়। লাবণ্যর চিবুকটা দু আঙুলে তুলে ধরে নিবিড়।
—“ কি হয়েছে লাবণ্যময়ী? ফোনটা বাজার পর থেকে দেখছি তোমার মুডটা অফ হয়ে গেলো?”
—“ ক.. ক.. কই না তো। আমি ওয়াশরুমে যাবো এই শাড়িটা পাল্টে আসি। ”
লাবণ্য নিবিড়ের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে গেলেই নিবিড় ও কে পুনরায় আঁটকিয়ে দেয়।
—“ তুমি মিথ্যা বলছো লাবণ্যময়ী। আই নোটিশ ইউ কলটা আসার পর থেকেই তোমার মুডটা অফ হয়ে গেছে? সমস্যা কি বলো না লাবণ্যময়ী?”
নিবিড়ের হাজার জোরাজুরিতে লাবণ্য কাঁপা গলায় বলে উঠে,,
—“ ওই মা ফোন করেছিলো। ”
—“ তা বেশ তো কথা বললে না কেনো? ”
লাবণ্য শক্ত গলায় বলে উঠলো।
—“ ফোন ধরার প্রয়োজন মনে করিনি। ”
নিবিড় আর এই নিয়ে কথা বাড়ায় না। মা মেয়ের মান – অভিমানের মধ্যে নাই বা ও পড়লো। নিজের মনে কথাগুলো বলে মুচকি হাসে নিবিড়।
নিবিড় চট করে লাইট অফ করে দেয়। লাবণ্যকে টান দিয়ে বিছানায় নিয়ে শুয়ে পড়ে। লাবণ্য নিবিড়ের ওপর থেকে উঠার চেষ্টা করে,,
—“ কি করছেন , ছাড়ুন আমায় , আমি শাড়িটা পাল্টে আসছি করে শুতে আসছি। ”
—“ উহু পরণে যখন শাড়িই থাকবে না , তখন আর চেঞ্জ করা লাগবে না। ”
নিবিড়ের মুখে দুষ্টুমির হাসি ফুটে উঠেছে যা ব্যালকনি থেকে আসা চাঁদের মৃদু আলোতে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে। লাবণ্য লজ্জায় লাল হয়ে যায়। নিবিড় লাবণ্যর গালে নিজের নাকটা স্লাইড করতে থাকে।
সকালে আড়মোড়া দিয়ে ঘুম ভেঙ্গে পাশে লাবণ্যকে দেখতে না পেয়ে এদিক ওদিক তাকাতে থাকে নিবিড়। ঠিক তখনিই চায়ের কাপ হাতে নিয়ে লাবণ্য রুমের মধ্যে প্রবেশ করে। ঠোঁটে হাসির রেখা প্রসারিত করে লাবণ্য নিবিড়ের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় চায়ের কাপটা দেওয়ার জন্য।
—“ মা বললেন আপনার সকালটা চা নাহলে চলেই না। প্রত্যহ সকালে রং চা খালি পেটে না খেলে আপনার সারাদিনটা না কি ভালো কাটে না! মেজাজ ফুরফুরে হয় না! ”
নিবিড় মুচকি হেসে চায়ের কাপটা নিয়ে সাইড টেবিলে নামিয়ে রাখে। লাবণ্যর হাতটা ধরে টান মারে নিবিড়। লাবণ্য টাল সামলাতে না পেরে নিবিড়ের বুকে গিয়ে পড়ে। লাবণ্যর কপালে পড়ে থাকা চুল গুলো কানের পাশে গুঁজে দেয় নিবিড়।
লাবণ্যকে শক্ত করে চেপে ধরে নিবিড়।
—“ এখন আর চা না হলেও চলবে , তুমি আছো তো ! তোমায় খেলেই আমার মেজাজ ফুরফুরে থাকবে! ”
—“ উফফ আপনি তো বড্ড পাজি। এমন এমন কথা বলেন লজ্জায় ফেলে দেন। ”
—“ আমি তো তোমার স্বামী। আমার কাছে লজ্জা কিসের? আর কালকের পর তো তোমার আর লজ্জা পাবার কথা নয় লাবণ্যময়ী। ”
—“ উফফ আপনি না বড্ড অসভ্য। ছাড়ুন তো আমার অনেক কাজ আছে।”
—“ বাড়িতে এতোগুলো মেইড থাকতে তোমার কাজ করা কিসের দরকার শুনি। তুমি এখন আমাকে… ”
নিবিড় লাবণ্যর মুখটা নিজের কাছে টেনে এনে। লাবণ্যর ঠোঁটের কাছে ঠোঁট আনলে ও নিবিড়ের ঠোঁটটা চেপে ধরে।
—“ সকাল সকাল একদম অসভ্যতামি করবেন না বলে দিচ্ছি। ”
নিবিড় লাবণ্যর হাতটা ধরে ফেলে। ঠোঁটে শয়তানি হাসি দিয়ে বলে উঠে,,,
—“ আমার নিজের বউকে আমি চুমু দিব এতে অসভ্যতামি কোথায় আছে? ”
—“ উফফ আপনি ছাড়ুন তো। ”
লাবণ্য নিবিড়ের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চাইছে। কিন্তু নিবিড় ছাড়তে রাজি নয়। ফাজলামো করে হলেও লাবণ্যর কাছ থেকে আদায় করেই ছাড়বে চুমু (নিবিড়ের দাবি!)। কিন্তু লাবণ্য দেবে না। খুনশুটি তে মেতে উঠে দুজনেই।
অনেকক্ষণ থেকে ওদের দুজনকে দেখেই চলেছে মেঘলা। রাগে ফুঁসছে একপ্রকার। আর সহ্য করতে না পেরে গলা খাঁকরিয়ে উঠে।
নিবিড় আর লাবণ্য দুজনেই দরজার দিকে তাকিয়ে মেঘলাকে দেখে। লাবণ্য ঝটপট নিবিড়ের বুকের ওপর থেকে উঠে পরে।
—“ উপস্ সরি! আমি বোধহয় ভুল টাইমে চলে এসেছি! এক্সট্রিমলি সরি নিবিড় ভাইয়া..। ”
মেঘলা ধীর গলায় স্বাভাবিক ভাবেই কথাগুলো বলে উঠলো। লাবণ্যর দিকে তাকিয়ে মেঘলা মৃদু হেসে বলে,,
—“ আমি কি আসতে পারি! না কি পরে আসবো? ”
লাবণ্য কাছে এগিয়ে গিয়ে মেঘলা হাত ধরে রুমের মধ্যে নিয়ে আসে।
—“ না না তুমি এসো। কেমন আছো?”
—“ কেমন আছো তুমি? অবশ্য ভালোই আছো! আর কতোটা ভালো আছো তা তো তোমার চোখে মুখেই ফুটে উঠছে। ”
মেঘলার বলা কথাগুলো লাবণ্য স্বাভাবিক ভাবে নিলেও নিবিড় বুঝতে পারে মেঘলার কথাগুলো। বুঝে নেয় মেঘলা মেনে নিতে পারছে না ওদের সম্পর্কটা।
—“ যাই হোক মামী তোমায় ডাকছে। আমি কি গিয়ে বলবো তুমি এখন আসতে পারবে না? ”
—“ এ মা না না। আমি এক্ষুণি যাচ্ছি তো। ”
লাবণ্য চলে আসতে চায়। মেঘলা ওর হাত ধরে বলে,,
—“ নিবিড় ভাইয়া তোমাকে ছাড়বে তো! ”
লাবণ্য একবার নিবিড়ের দিকে তাকিয়ে মাথা নীচু করে নেয়। তার মানে মেঘলা সব শুনেছে! ইসস ওর তো লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে। সত্যিই এই মানুষটা লজ্জায় ফেলতে পারে। মেঘলা লাবণ্যর কাঁধে হাত রেখে তাচ্ছিল্যর সহিত বলে উঠে,,
—“ আমি সব কথাই শুনেছি। থাক তোমায় আর লজ্জা পেতে হবে না। স্বামী তো তার স্ত্রীকে আদর করবেই ইটস নরমাল অ্যান্ড ক্যারি অন।”
লাবণ্য আর কিছু বলে না। একছুটে রুম থেকে বের হয়ে যায়। লাবণ্য চলে গেলে মেঘলা দরজাটা লক করে দেয়। নিবিড় রাগী চোখে মেঘলার দিকে তাকিয়ে থাকে। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে।
—“ দরজা কেনো বন্ধ করলি? ”
—“ দেখছিলাম তোমার দরজার লক নষ্ট না কি! না মানে নিজের বউ কে আদর সোহাগ করছো ভালো কথা। তাই বলে দরজা খুলে রাখবে! না কি আমাকে দেখাতে চাও? ”
চলবে… ..
(লেখায় কোনও ভুল ত্রুটি থাকলে ক্ষমা করবেন 🙏)