স্বামী পর্ব -১৬

###__স্বামী__###
পর্ব-১৭
#Nirzana(Tanima_Anam)

-কে??
-কেন চিনতে কষ্ট হচ্ছে বুঝি??
-তুমি!!
-অনু I am Sorry।
-(…)
-অনু প্লিজ আমি তোমার সাথে মিট করতে চাই!!অনেক কিছু বলার আছে তোমাকে
-(…)
-অনু শুনছো??
-আবার কি চাই আপনার??
-কেন তোমাকে চাই!!
-রাখছি!!
-অনু অনু তোমাকে অনেক কিছু বলার আছে।অনু নির্ঝর…..

ওয়াশরুমের দরজা খোলার শব্দে অনু চমকে গিয়ে দুম করে ফোনটা কেটে সাইলেন্ট মুড অ্যাকটিভ করে দেয়।

সকাল সকাল নির্ঝরের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে অনু ওয়াশরুমে চলে যায়।একটু পর নির্ঝরও ওঠে গিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।বেঁচারা অনু তো লজ্জায় নাজে হাল অবস্থা।কোনো রকমে সাওয়ার নিয়ে বাহিরে বের হতেই দেখে নির্ঝরের ফোনটা বাজছে।ফোনটা বেশ কয়েকবার বাজতেই অনু কি মনে করে ফোনটা তুলে হ্যালো বলতেই অপর প্রান্তের লোকটার গলা শুনে থমকে যায় অনু!!

“সায়ন” এ যে সায়নের গলা….

সায়নের সাথে কোনো রকমে কথা শেষ না করতেই নির্ঝর ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে পরে।অনু নির্ঝরকে দেখে ফোনটা বিছানায় ছুড়ে দেয়।তারপর উল্টো দিকে মুখ ফিরে দাড়িয়ে পরে।চোখে যে তার পানি টলমল করছে…..

নির্ঝর ফোন ছুড়ে মারা দেখে অবাক হয়ে দাড়িয়ে আছে।
কি মনে করে নির্ঝর মুচকি হাসি দেয়….
-কি ম্যাডাম আপনিও কি বাঙ্গালী বউদের মতো বরকে সন্দেহ করা শুরু করলেন??
-না মানে
-এই যে বরের ফোন চেক করছেন!!কি ব্যাপার হুম্ম??
(পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।।
-(…..)
-কি হলো??আমার ফোনে কিন্তু গোপন কিচ্ছু নেই!!
-(…)

অনুকে সামনের দিকে ফেরালে নির্ঝর দেখে অনুর চোখ লাল হয়ে আছে…
-অনু তুমি কাঁদছিলে??
-না মানে
-কেনো??

-কি গো তোমরা আজকে দরজা খুলবে না কি সারা দিন ঘরের ভেতর দোড় দিয়ে রোমান্সই করবে??

সিমির ডাকে বেশ থতমত খেয়ে যায় দুজন।
অনু একরকম নির্ঝরের থেকে পালিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দেয়।
তখনই সিমি আর নীরা হুরমুর করে ঘরে ঢুকে যায়।কিন্তু বেঁচারা নির্ঝর পরে যায় বিপদে।
নির্ঝর ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে প্যান্ট পরলেও শার্টটা পরে নি।অনু সেদিকে হুস না করেই সিমিকে দরজা খুলে দিয়েছে।

সিমির চোখ যায় নির্ঝরের লোমশ বুকের দিকে।এমন একটা বুকই তো সে আশ্রয়ের জন্য চেয়েছিলো।শুধু সে কেন পৃথিবীর প্রত্যেকটা মেয়েই তো এমন একটা বুক চায়, এমন একটা নিরাপদ আশ্রয় চায় অবশ্য সে তো পেয়েও গিয়েছিলো কিন্তু ধরে রাখতে পারে নি!!

সিমি চোখে চোখ পরতেই নির্ঝর লজ্জা পেয়ে যায় দ্রুত টি-শার্টটা হাতে নিয়ে বারান্দায় চলে যায়।।।

এদিকে নীরা অনুর সাথে বকবক করেই যাচ্ছে কিন্তু সিমির সে দিকে হুস নেই বার বার সিমির চোখ আটকে যাচ্ছে অনুর গলায় আর ঘাড়ে হালকা লাল হয়ে যাওয়া দাগ গুলোর দিকে…..
চোখটা কেমন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে।

নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে….
-অনু আমারা সবাই সপিং মলে যাচ্ছি তুমি যাবে??
-না আমার ভালো লাগছে না

(বারান্দা থেকে নির্ঝরকে আসতে দেখে)
-সারা দিন কি বরের সাথে রোমান্স করলে চলবে দুদিন পর তোমার ননদীনীর বিয়ে একটু তো তাকেও সময় দাও….

(নির্ঝর একবার সিমির দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নেয়)

অনু মুচকি হেসে….
-বেশ তো চলো।তা রায় বাঘিনী ননদীনী কোথায় যাবে বলো??
-সপিং এ
-ওকে আমরা বরণ গিতাঞ্জলী সপিং কমপ্লেক্সে যাই!
-বেশ চলো…..

অনু নীরাকে নিয়ে ছুট লাগায় বাহিরে….
নির্ঝর ল্যাপটপ নিয়ে সোফায় বসে আছে।সিমি গুটিগুটি পায়ে নির্ঝরের কাছে এগিয়ে যায়
-নির বেশ ভালোই তো আছো!!
(নির্ঝর একবার সিমির দিকে তাকিয়ে)
-ভালোবাসার মানুষকে কাছে পেলে সবাই ভালো থাকে!!!
-কিন্তু আমি…
-নিচে তোর জন্য সবাই অপেক্ষা করছে….

সিমি আর কথা বারায় না
“যে কথা শুনতে চায় না তাকে শুনিয়ে কি লাভ!!
যে দুঃখ বুঝতে চায় না তাকে বুঝিয়ে কি লাভ।
সবই অপাত্রে কন্যা দান”

সপিং মলে বেশ করে ঘুরাঘুরি করছে সিমি,নীরা আর অনু।বেশ সপিংও করে নিয়েছে তারা।অনুও বেশ কেনাকাটা করেছে।

সকালে সায়নের কথা অনুর মাথা থেকে বেরিয়েই গেছিলো।তবে লিফ্টে ওঠার সময় কেন যেন অনুর মনে হচ্ছিলো সায়ন তাকে ডাকছে….

এটা মনের ভুল ভেবে বসে আছে সে।
বেশ ঘুরাঘুরির পর তিনজনই ক্লান্ত এখনো অনেক কেনাকাটা আছে।সিমির নাকি হটাৎ করেউ ওয়াশরুম পেয়েছে তাই সে অনুকে একটা ক্যাফে দেখিয়ে দেয়।আর বলে দেয়
-অনু তুমি ঐ ক্যাফেটাতে গিয়ে বসো আমি আর নীরা একটু ওয়াশরুম থেকে ঘুরে আসছি
-আমি ও যাবো আমি ওখানে একা একা কি করবো
-উহু তুমি ওখানে গিয়েই বসো এতোগুলো ব্যাগ নিয়ে শুধু শুধু দাড়িয়ে থাকবে কেন।যাও তুমি গিয়ে বসো আমরা আসছি।
-কিন্তু….আচ্ছা!!

অনু আপন মনে হেটে হেটে ক্যাফেতে ঢুকছিলো হটাৎ কেউ একজন অনুর হাত ধরে ফেলে…
অনু পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে নির্ঝর অনুর হাত ধরে আছে।
-আপনি☺☺☺☺

অনু ভালো করে নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে দেখে সে রক্ত বর্ণ চোখে অনুর দিকে তাকিয়ে আছে।দেখেই বোঝা যাচ্ছে বোধয় সে খুব রেগে আছে।
কিন্তু কেন???

অনু অবাক হয়ে নির্ঝের দিকে তাকিয়ে আছে।হটাৎই নির্ঝর অনুকে হ্যাচকা টান দেয়।অনু হুমড়ি খেয়ে পরে…
তারপর নির্ঝর একপলক অনুকে দেখে নিয়ে টানতে টানতে ক্যাফের দরজা থেকে বেরিয়ে যায়।
নির্ঝর অনুকে একই ভাবে টানতে টানতে গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসে।
অনু বার বার নির্ঝরকে জিঙ্গেস করছে কি হয়েছে কিন্তু তার মুখে তো কোনো কথায়ই নেই।কেউ যেন তার মুখটা সুই সুতো দিয়ে সেলাই করে দিয়েছে।

চলবে….

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here