#অনুরক্তি_অন্তরিক্ষ [২৬ পর্ব]
তাসনিম তামান্না
কথা মতো মুষলধারা বৃষ্টি মাথায় বাড়ি ফিরল শান আর জারা। বৃষ্টির পানিতে শহরতলী পানিতে টইটম্বুর। বাড়ি এসে দেখলো জারার চিন্তায় শান্তি বেগমের প্রেসার লো হয়ে গেছে। তিনি বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছেন না। শান্তির এমন অবস্থা দেখে জারা কেঁদে ফেললো।
-‘ মনি তোমার এমন অবস্থা কেনো? আমার জন্য তাই না সব আমার দোষ তোমাকে বলে যাওয়া উচিত ছিল। সব আমার দোষ ‘
-‘ পাগলি মেয়ে এভাবে না বলে গেলে আমার টেনশন হয় না জানিস না তুই তোর ফোনটাও বন্ধ তোর একটা খবর জানি না ‘
-‘ সরি মনি আর কোথাও যাবো না তোমাকে ছেড়ে। ‘
-‘ আচ্ছা হয়েছে যা ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নে কিছু ‘
-‘ তুমি খেয়েছ কিছু? দাড়াও আমি তোমার জন্য কিছু বানিয়ে আনি ‘
কথাটা বলে জারা দৌড়ে রান্না ঘরে এলো। শান্তি স্যুপ খেতে পছন্দ করে না তাই সুজি বানালো। বানিয়ে নিজের হাতে খাইয়ে দিলো।
—-
তারপরের দিন গুলো আলাদা হলেও আবার নিত্যদিনের মতোই। শান একটু একটু করে পাল্টাতে লাগল। জারাও ব্যস্ত হয়ে গেলো। পুতুলের কেসটা ওপরমহল থেকে স্থগিত রাখার আর্দেশ দিয়েছে। এটাতে জারা কেঁদে ফেলেছিল। মেয়েটার মৃত্যুর শাস্তি দিতে পারল না বলে। পুতুলের মা আর ছোট ভাই শহর ছেড়ে গ্রামে গিয়েছে।
আজ ছুটির দিন বাড়িতে সকলে। শান্তি বেগম সুস্থ হয়ে গেছে এখনো আগের মতো হাঁটা-চলা করতে পারে। জারা রুটি বেলছে আর শান্তি সেগুলো ভাজছে। সেদিনের পর জারা বাসা থেকে চলে যাওয়া নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন করে নি।
-‘ জারা শান এতো চুপচাপ হয়ে গেলো কেনো? আগের মতো চিল্লাপাল্লা করে না ‘
-‘ তোমার ছেলে পাগল তো সেজন্য পাগলের ডক্টর দেখিয়েছে তাই চেজ্ঞ হচ্ছে আস্তে আস্তে ‘
শান্তি বেগম অবাক হয়ে বলল
-‘ কি বলিস এগুলা ‘
-‘ তোমার ছেলের কাছেই শুনো ‘
শব্দ করে ফ্রিজ লাগানোর শব্দে জারা শান্তি চমকে উঠল। জারা রেগে বলল
-‘ ওটা আছাড় দেওয়ার জিনিস না নিজের টাকায় কেনা না তো বাপের টাকায় কেনা সেজন্য মায়া লাগছে না নিজের টাকায় কেনা হলে মায়া লাগত মনি তুমি কিছু বলতে পারো না সারাদিন এখানে ওখানে না ঘুরে তো অফিসে বসতে পারে ‘
শান্তি বেগম চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো। শান রেগে বলল
-‘ আমি কেনো কিছু করবো আমার বউ বড় এডভোকেট তার টাকায় হয়ে যাবে ‘
-‘ ওহ গুড আইডিয়া তাহলে আপনি বাসার সব রান্না ঘরের কাজ সবটা করবেন আর আমি বাইরেটা সামলাবো যদি রাজি থাকেন তাহলে জানাবেন ‘
শান রেগে চলে গেলো। শান্তি বেগম মুখ চেপে হাসলো।
-‘ মনি তুমি হাসছ? তোমার ছেলেকে আদর দিয়ে দিয়ে বাদর বানিয়ে ফেলছ সেদিকে খেয়াল আছে? এবার তো লাগাম টেনে ধরো? ‘
-‘ বউ আছে তো আমি কেনো বলবো তুই বলবি ‘
-‘ তোমার ঔ আদধামড়া ছেলেকে আমি মানুষ করতে পারবো না আমার ওতো ঠেকা পড়ে নাই বুঝলে? ‘
-‘ তাই বুঝি। ‘
-‘ হ্যাঁ তাই ‘
৪ জনে খেতে বসলো। শান তার বাবা আসলামকে বলল
-‘ বাবা আমি কাল থেকে অফিসে বসতে চাই ‘
-‘ ভালো কথা। আমি ও তোমাকে বলবো ভাবছিলাম তুমি সব দায়িত্ব নিলে আমার ছুটি। কাল ম্যানেজারকে বলে দিবো সব বুঝিয়ে দিবে তোমাকে ‘
জারা খেতে খেতে বিরবির করে বলল
-‘ মানুষ হচ্ছে তাহলে? ‘
শান তাকালো জারার দিকে মেকি হাসি দিয়ে মুখ ভেংচি দিলো।
—-
রাতের মিশমিশে কালো আঁধার রাত ছাদের চারিদিকে রংবেরঙের বাল্বগুলো জ্বলচ্ছে। ছাদের পানি জমছে অল্প। জারা ছাদের দোলনায় বসে মেঘযুক্ত আঁধার আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো উদ্দেশ্যহীন আজ চাঁদ তারার দেখা নেই কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে। মৃদু শীতল বাতাস কাঠগোলাপ গাছের ফুল নেই বললেই চলে। হাতে স্পর্শ পেতেই জারা চমকে কেঁপে ওঠেল। পাশ ফিরে শানকে দেখে বলল
-‘ আপনি এখানে? ‘
-‘ আমি ও তো প্রশ্ন করতে পারি তুই এখানে? ‘
-‘ আমি প্রায় আসি ‘
-‘ আমিও প্রায় আসি ‘
-‘ আপনি আমাকে কপি করছেন? ‘
-‘ কখন কপি করলাম আমি তো জাস্ট বললাম ‘
-‘ কপি না তা কি আমি যা বলছি আপনি তাই বলছেন কেনো? ‘
-‘ উত্তর একই তাই বলছি ‘
-‘ একদম মিথ্যা বলবেন না ‘
-‘ আমি যখন মিথ্যা বলছি তাহলে তুই সত্যিটা বলে দে ‘
জারা চুপ করে গেলো। যতকথা বলবে ততই কথা বাড়বে চুপ থাকায় শ্রেয়। শানও চুপ জারাও চুপ। জারা আড়চোখে তাকালো শানের দিকে শানও তাকিয়ে ছিল দু-জনের দৃষ্টি এক হলো। জারা চোখ সরিয়ে নিলো। শান তখনো জারার দিকে তাকিয়ে আছে জারা না তাকিয়েও বুঝতে পারছে। শান কিছুক্ষণ পর গান ধরল
ডুবেছি আমি তোমার চোখের অন্যন্ত মায়ায়
জারা শুনলো। জারা এই মূহুর্তে হঠাৎ একটা অদ্ভুত ইচ্ছে হলো শানের কাঁধে মাথা রাখতে। কিন্তু জারা নিজেকে দমিয়ে নিলো। মনে মনে বলল ‘ সম্ভব নয় ‘
জারা চট করে গানের রিলিক্সের দিখে খেয়াল হলো। মনে মনে বলল ‘ আমার চোখে সত্যি কি মায়া আছে? নাকি ওনি অন্য কারোর জন্য গায়ছে? ‘
জারা গানের মধ্যে চট করে প্রশ্ন করলো
-‘ আপনি কার জন্য গান গাইছেন? ‘
শান ঘাড় ঘুড়িয়ে এদিক সেদিক তাকালো শানের দেখা দেখি জারাও তাকালো। বলল
-‘ কি? এভাবে কি খুঁজছেন? ‘
-‘ তুই ছাড়া এখানে কেউ আছে? ‘
-‘ কই না তো ‘
-‘ তাহলে আমি কার জন্য গাইবো? ‘
-‘ আপনি আমার জন্য গাইছেন? কিন্তু আমার চোখে কি মায়া আছে ‘
-‘ কি জানে আছে হয়ত যে মায়ায় একজন বারে বারে পা পিচ্ছলে পড়ে ‘
-‘ কি সত্যি কে সে? ‘
শান বাঁকা চোখে তাকিয়ে বলল
-‘ কিছু বুঝিস না তুই? আমি বলতে পারবো না খুঁজে নে ‘
শান গম্ভীর মুখে জারার দিক থেকে মুখ ঘুড়িয়ে ওপর পাশে তাকিয়ে রইলো। জারা শান আর জারার হাতের দিকে তাকিয়ে রইলো। আসা থেকে এখন পর্যন্ত এখনো শান জারার হাতটা একই ভাবে ছুঁয়ে আছে।
নিরবতাবিচ্ছিন্ন করে শান বলল
-‘ কাল সন্ধ্যায় রেডি থাকিস ‘
জারা হাতের ওপর দৃষ্টি রেখেই বলল
-‘ কেনো? ‘
-‘ একটা জায়গায় নিয়ে যাবো ‘
-‘ কোথায়? ‘
-‘ গেলেই দেখতে পাবি ‘
-‘ এতো ত্যাড়াম করেন কেনো? সরাসরি বলে দিলেই হয় ‘
শান উত্তর দিলো না জারা আবার বলল
-‘ কাল না আপনার অফিসের ফাস্ট ডে তাহলে আবার কাল কই যাবেন? ‘
-‘ তো? ‘
-‘ দূর থাকেন আপনি আমি যায় ‘
জারা যেতে নিলেই শান হাত ধরে থামিয়ে দিলো। জারা থেমে গিয়ে বলল
-‘ আপনি আমার থেকে দূরে থাকবেন ‘
-‘ তোর কথা শুনতে আমি বাদ্ধ্য নয় ‘
জারা চুপ করে থেকে বলল
-‘ হাত ছাড়ুন ‘
-‘ যদি না ছাড়ি ‘
কথাটা বলে শান জারাকে ঘুড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। জারার নিশ্বাস ভারি হয়ে উঠলো। বলল
-‘ এসব কি করছেন? আপনি কি ফাজলামো পাইছেন ‘
-‘ আমার বউয়ের সাথে আমি যা ইচ্ছে করবো তোর কি? ‘
জারা শান্ত চোখে তাকিয়ে বলল
-‘ আমি কিন্তু এখনো আগের কোনো কথা ভুলি নি ‘
শান থেমে ছেড়ে দিলো। জারা পিছু না ফিরে চলে গেলো।
#অনুরক্তি_অন্তরিক্ষ [২৭ পর্ব]
তাসনিম তামান্না
সোনালী রোদের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। জারা সকাল থেকে অস্থির হয়ে আছে শান জারাকে কোথায় নিয়ে যাবে ভেবে ভেবে চিন্তায় অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে পারছে না আমার অদ্ভুত এক্সাইটমেন্ট ও হচ্ছে এই প্রথম শানের সাথে কোথাও ব্যাড়াতে যাবে। অবশেষে কাক্ষিত মুহূর্তটা আসলো। জারা খুঁজে খুঁজে কালো রংয়ের স্টোনের কাজ করা একটা থ্রি পিচ পড়ে নিলো। আয়নায় এসে নিজেকে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখল জারা নিজেকে বলল
-‘ ওতোটাও খারাপ লাগছে না চলবে ‘
জারা চুল গুলো সামনে এনে পিছনের জামার ফিতায় হাত দিতেই কারোর ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলো চমকে আয়নায় দেখলো শানকে দুজন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে। জারা নিজেকেই প্রশ্ন করলো ‘ মানিয়েছে কি দুজনকে? ‘
শান ফিতা বেঁধে দিয়ে ঘাড়ে ঠোঁট ছোঁয়ালো জারা নড়েচড়ে দাঁড়ালো বিমূঢ় হয়ে শানের কাছ থেকে সরতে চাইলো শান সরতে দিলো না। কোমড় থেকে পেট জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে থুঁতনি ঠ্যাকালো। আয়নার মধ্যে দিয়ে দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে জারার বিশ্বাস হচ্ছে না শান এমনটা করতে পারে তাও এখন। শান নেশাক্ত চোখে তাকিয়ে আছে জারার পানে জারা নড়াচড়া করতে করতে বেশ কিছুক্ষণ যাওয়ার বলল
-‘ কি করছেন ‘
-‘ দেখছি ‘
-‘ তোকে ‘
-‘ আমাকে দেখার কি আছে? আগে দেখেন নি? ‘
-‘ হুম দেখেছি তো কিন্তু ওড়না ছাড়া যে তোকে হ*ট লাগে সেটা এতো কাছ থেকে দেখি নি ‘
কথাটা বলে শান চোখ টিপ মারলল। জারা চমকে নিজের দিকে তাকালো চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে শানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দৌড়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো। জারার কান্ড দেখে শান হো হো করে হেসে উঠলো। জারা ওয়াসরুমের দরজা দিয়ে উঁকি মেরে বলল
-‘ শ-য়-তা-ন, লু-চ্চা-মি জায়গা পাস না বের হ আমার রুম থেকে ‘
-‘ যা দেখার তো দেখেই ফেলেছি এখন লুকিয়ে লাভটা কি? ‘
-‘ ছিঃ লু-ই-চ্চা ‘
-‘ শুধু বউয়ের কাছে অন্য কারোরর কাছে না রেডি হয়ে নে আমি ও যাচ্ছি রেডি হতে ‘
শান চলে যেতেই জারা যেনো হাফ ছেড়ে বাচলো দৌড়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে বিরবির করে শানকে বকতে লাগলো। আধ ঘন্টা পর শান জারাকে টেক্সট করে
-‘ লজ্জা সাজগোছ শেষ হলে তাড়াতাড়ি নিচে আসবেন আমি বাইরে ওয়েট করছি ‘
রেডি হয়ে নিচে এসে শান্তিকে বলল
-‘ মনি তোমার ছেলের সাথে বের হচ্ছি কই যেনো নিয়ে যাবে বলল ‘
শান্তি বেগম হেসে বলল
-‘ আচ্ছা সাবধানে যাস ‘
জারার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বলল
-‘ তোরা যে সবটা মেনে দুটোতে এক হয়েছিস এতেই খুশি দোয়া করে তোরা সুখি হ ‘
শান্তি বেগমকে বলে গাড়ির কাছে আসতেই জারা দেখলো শান ও ব্ল্যাক সুট পড়ছে। জারা হাসলো একটু আগের কথা মনে পড়তেই জারা লজ্জায় লাল হয়ে মাথা নিচু করে নিলো। জারাকে দেখে শান বলল
-‘ আসেন হয়েছে আপনার ‘
জারা ছোট করে উত্তর দিলো
-‘ হুম ‘
জারা গাড়িতে উঠে বসতেই শান জারার দিকে একপলক তাকিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বলল
-‘ এতো লজ্জা? বাবাহ! বি কম্ফোর্টেবল জারা ‘
শানের মুখে নিজের নাম শুনে জারার হার্ট বিট বেড়ে গেলো কবে যে শেষ নিজের নাম শানের মুখে এতো কিউট করে শুনেছে ও নিজেও জানে না। জারা চুপ করে বসে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলো হুট করে প্রশ্ন করলো
-‘ কোথায় যাচ্ছি বললেন না তো ‘
-‘ গেলেই দেখতে পাবি ‘
জারা চোখমুখ কুঁচকে বসে রইলো চারিদিকে অন্ধকার আচ্ছন্ন হয়ে গেছে কৃত্রিম আলোই সবকিছু স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। শান একটা বড় রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল
-‘ নাম এসে গেছি ‘
শান গাড়ি পার্ক করে জারার কাঁধ জড়িয়ে হাঁটা ধরলো জারা চমকে গিয়ে শানের মুখশ্রী তে তাকালো। হলদেটে মুখে খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে বড্ড মানিয়েছে শানকে। জারা শানের মুখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো শান বলে উঠলো
-‘ দেখা হয়ে থাকলে সামনের দিকে তাকা নাহলে হোটচ খেয়ে পড়বি ‘
জারা চোরা চোখে তাকিয়ে বলল
-‘ এহহ যেই না চেহারা নাম রাখছে পেয়ারা ‘
-‘ জারা মার খেতে না চাইলে ওফ হয়ে যা ‘
জারা মুখ ভ্যাংচি দিয়ে সামনে দিকে তাকিয়ে হাটতে লাগল। রেস্টুরেন্টের টপে আসতেই জারা দেখলো কতগুলো ছেলে মেয়ে বসে আছে। শানকে দেখে চিৎকার দিয়ে উঠলো শান জারার থেকে দুরত্ব রেখে দাঁড়ালো ছেলেগুলো এসে সকলে শানের ওপর ঝাপিয়ে পরলো। জারা মুখে হাত দিয়ে মনে মনে বলল
-‘ ওনি বেঁচে আছেন তো ‘
মনে ধক করে উঠলো। চোখ ছলছল করে উঠল কাঁদো কাঁদো ফেস নিয়ে তাকিয়ে রইলো। শান কিছুক্ষণ ওদের সাথে মা-রপিট করলো। শান ঠিক আছে দেখে জারা মুখ বাকালো। জারার দিকে খেয়াল আসতেই একজন বলল
-‘ জারা না? হ্যাঁ তো আ’ম রাইট ‘
জারা চমকালো। এরা চিনল কিভাবে তাকে? সে-তো এদের কখনো দেখেই নি। জারা অস্বস্তিতে পড়ে গেলো। সকলের সাথে পরিচিত হয়ে কুশল বিনিময় করল। সকলের মুখে ভাবি ভাবি শুনে জারা বড্ড লজ্জা পাচ্ছে। জারাকে লজ্জা পেতে দেখে ওরাও আরো লজ্জা দিচ্ছে। একজন বলে উঠলো
-‘ মিষ্টি ভাবি বিয়ে তো করছেন আগেই ফুপি ডাকটাও কিন্তু আগেই শুনবো ‘
জারা লজ্জায় গুটিসুটি মেরে গেলো। জারাকে লজ্জা পেতে দেখে শান দূর থেকে ওয়ইনে চুমুক দিচ্ছে আর দেখছে।
-‘ তুই খুশি শান ‘
-‘ দেখে কি মনে হয়? ‘
-‘ তুই খুশি নস ‘
-‘ এটা তোর ভুল ধারণা ও খুশি তো আমি খুশি ‘
-‘ আমি ভালোবাসি তোকে বুঝিস না তুই ‘
-‘ রিতা তোর হ্যাসবেন্ড আছে সংসার কর মন দিয়ে ‘
-‘ তুই বললে সব ছেড়ে চলে আসবো ‘
-‘ আমি জারাকে ছাড়া কখনোই কল্পনাও করতে পারি না ‘
-‘ কিন্তু আমার যে তোকে চাই ‘
-‘ আমার জারাকে চাই ‘
-‘ একদিন তুই খুব পচতাবি দেখিস ‘
শান কিছু বলল না জারার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। বেশ রাত করে ওরা বাসায় ফিরল শান জারার কাছে শুনল
-‘ আজকের সন্ধ্যা কেমন লাগলো? ‘
-‘ অনেক সুন্দর সবাই কত ভালো ‘
-‘ আর আমি? ‘
-‘ আপনি লুইচ্চা ‘
শান হেসে উঠলো বলল
-‘ বললাম না? সেটা শুধু বউয়ের কাছে অন্য কারোর কাছে না যদি অন্যর কাছে হই তাহলে তুই খুশি হবি? ‘
-‘ একদম মে-রে ফেলবো ‘
চলবে ইনশাআল্লাহ
চলবে ইনশাআল্লাহ