#অপেক্ষারা
৫৬
লেখা : অতন্দ্রিলা আইচ
“আমরা এখানে এসেছি কেন?” কিঞ্চিৎ বিরক্তি নিয়ে বলল নাজ।
সায়েম শান্ত ভঙ্গিতে বলল, “জানি না। তোমার ডক্টর ফোন করে আসতে বললেন। কী যেন জরুরি কথা আছে।”
নাজ কঠিন গলায় বলল, “তো জরুরি কথাটা ফোন বললেই তো হতো। শুধু শুধু ফোন নম্বর নিয়ে রেখেছে কেন?”
“আহ্! শান্ত হও নাজ। কয়েক মিনিটেরই তো ব্যাপার।”
নাজ অসহায় গলায় বলল, “এই জায়গাটা আর অসহ্য লাগে সায়েম। কেমন যেন দমবন্ধ হয়ে। এখানেই তো ওর চেকআপের জন্যে আসতাম, আর এখানেই…”
কথাটা শেষ হবার আগেই নাজকে থামিয়ে দিয়ে সায়েম কোমল স্বরে বলল, “হয়েছে। আর বলতে হবে না। সারাটাদিন শুধু মনমরা হয়ে থাকা। তোমাকে না বলেছি, এখন থেকে রেগুলার ক্লাস করতে? ওই ঘটনার পর থেকে নিজেকে একেবারে ঘরবন্দী করে রেখেছ। এভাবে কি জীবন চলে?”
“আমার ইচ্ছা করে না ক্লাসে যেতে। কী হবে লেখাপড়া করে? আমি তো নিজের সন্তানকেই বাঁচাতে পারলাম না।”
সায়েম সান্ত্বনা দিয়ে বলল, “আবারও একই কথা! সত্যিটা মেনে নাও নাজ, প্লিজ। আল্লাহ চাইলে খুব শীঘ্রই আমরা বাবা-মা হবো, আমদের কোল আলো করে ফুটফুটে একটা বাবু আসবে।”
নাজ কৌতূহলী গলায় বলল, “কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন আছে।”
“আবার কী প্রশ্ন?”
“আমার বাচ্চাকে আমি হারালাম কেন? ও পেটে আসার পর কি আমি খুব বাইরে বেরিয়েছে? মা কি তাহলে ঠিকই বলেন? আমি ছোটাছুটি করে বেড়িয়েছি এরজন্যেই কি ও চলে গেল?”
“মায়ের কথাগুলো সিরিয়াসলি নিয়ে মন খারাপ করো না। আমাদের মতো উনিই তো ভেঙ্গে পড়েছেন। শোনো নাজ, একটা মেয়ে প্রথমবারের মতো কনসিভ করলে মিসক্যারেজের একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়।”
নাজ নিচু গলায় বলল, “আমাদের ক্ষেত্রেই কেন সম্ভাবনাটা সত্যি হলো?”
সায়েম ছোট্ট দীর্ঘশ্বাস গোপন করে বলল, “হয়ে গেছে, আমাদের হাতে তো আর কিছুই নেই। তুমি এবার একটু স্বাভাবিক হও প্লিজ!”
নাজ কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই শোনা গেল ডক্টর রেহেনার অ্যাসিস্টেন্টের কণ্ঠস্বর, “মিস্টার অ্যান্ড মিসেস চৌধুরী, ম্যাডাম আপনাদের সঙ্গে দেখা করার জন্যে তৈরি।”
সায়েম নাজের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোণে বিচিত্র এক হাসির আভাস নিয়ে বলল, “চলুন মিসেস চৌধুরী, শুনি আসি আপনার ডক্টর কী বলে!”
অতি ক্ষীণ এক হাসির রেখা ফুটে উঠলো নাজের ঠোঁটের কোণেও। ভাগ্যিস মানুষটা এসেছিল তার জীবনে। জীবনের এই কঠিনতম সময়ে তার পাশে কেবল একটা মানুষই কাছে। সান্ত্বনা ছায়ায় ঘিরে রেখেছে, নানান অজুহাতে কষ্টগুলো ভুলিয়ে দিচ্ছে।
ডক্টর রেহানার চেম্বারে এর আগেও বেশ কয়েকবার এসেছিল দুজনে। তবে প্রতিবারই চোখে চকচকে স্বপ্ন আর ঠোঁটে প্রচ্ছন্ন হাসি নিয়ে। তবে আজ সেসবের কিছুই নেই। বাবুটাও যে নেই। চেম্বারে ঢোকার পর থেকেই নাজের মাথার দুপাশের রগ দপদপ করে জ্বলে উঠছে। মনে পড়ে যাচ্ছে বাবুকে ঘিরে ডাক্তারের দেওয়া প্রতিটি পরামর্শগুলো।
ডক্টর রেহানা পৃথিবীর সরলতম নারীদের একজন। খুব একটা মারপ্যাঁচ যে তার মস্তিষ্কে খেলে তার ছাপ চেহারাতেই ফুটে উঠেছে। নাজ আর সায়েম চেম্বারে আসার পর থেকেই অনবরত ঘামছেন তিনি। বারবার টিসু দিয়ে মুছছেন হাতের তালুতে জমে থাকার ঘামের বিন্দুগুলো।
নাজের বিধ্বস্ত মুখটা দেখে ডক্টর রেহানা উদ্বিগ্ন গলায় বললেন, “আপনি ঠিক আছেন তো মিসেস নাজনীন?”
নাজ স্বভাবসুলভ হেসে হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়লো।
ডক্টর রেহানা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, “সতেরো বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ার আমার। আমার এই হাতদুটো ধরে যে কত শিশু পৃথিবীতে এসেছে, তার হিসাব নেই। অসংখ্য বাবা-মায়ের মুখে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ হাসি ফুটে উঠতে দেখেছি। সেই সাথে দেখেছি হাসিটা ফুটে ওঠার আগেই নিভে যাওয়ার কষ্ট। দুর্ভাগ্যবশত আপনাদের হাসিটা দেখা হলো না।”
ডক্টরের উচ্চারিত প্রতিটা বাক্যের সঙ্গে সঙ্গে নাজ যেন হারিয়ে যাচ্ছে অন্য একটা জগতে। যে জগতের পুরোটাই অন্ধকারাচ্ছন্ন।
ব্যাপারটা বুঝতে পেরে পরিস্থিতি সহজ করার জন্যে সায়েম বলল, “আমরা বরং ওই বিষয়ে আর কথা না বলি।”
ডক্টর রেহানা ইতস্তত করে বললেন, “জি অবশ্যই। আসলে আজ আপনাদের দুজনকে ডেকেছি বিশেষ একটা কারণে। আবার ঠিক বিশেষও বলা যায় না।”
সায়েম চিন্তিত গলায় বলল, “কোন ব্যাপারে ম্যাম?”
“চাইলে যেদিন উনাকে হসপিটাল থেকে রিলিজ করে দেওয়া হলো সেদিনই বলতে পারতাম কথাটা। আসলে ওই সময়টায় আপনারা এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যে আর বলা হয়ে ওঠেনি। তবে অনেক ভেবে দেখলাম আর বেশি দেরি করা হলে মিসেস নাজনীনেরই ক্ষতি।”
সায়েম উদ্বিগ্ন গলায় বলল, “ওর ক্ষতি মানে? ম্যাম কী হয়েছে, একটু ক্লিয়ারলি বলবেন প্লিজ?”
“অবশ্যই। আসলে মিসক্যারেজের পর আমরা বেশ কিছু টেস্ট করি। টেস্টের রিপোর্টগুলোও আপনাকে দেওয়া হয়েছিল। তবে একটা টেস্টের রিপোর্ট আমি নিজের কাছেই রেখে দিয়েছিলাম।”
“কোন টেস্ট?”
“একটা আল্ট্রাসাউন্ড। আমরা কয়েকজন ডক্টর মিলে ওই আল্ট্রাসোনোগ্রাফিটা অনেক অ্যানালাইসিস করেছি।”
সায়েম ব্যাকুল হয়ে বলল, “আপনি প্লিজ ধোঁয়াশা না করে বলুন কীসের আল্ট্রাসাউন্ড? আর সবাই মিলে অ্যানালাইসিস করারই বা কী আছে?”
ডক্টর রেহানা প্রায় অনেকটা সময় চুপ করে থেকে বললেন, “আপনার স্ত্রীর দুটো ওভারিতেই সিস্ট পাওয়া গেছে, এন্ডোমেট্রিওসিস। সাধারণত প্রেগন্যান্সির আট সপ্তাহ পার হলেই আমি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দিই। উনার আট সপ্তাহ আসার আগেই মিসক্যারেজটা হয়ে যায় বলে ধরতে পারিনি।”
ভয়ঙ্কর বিস্ময়ে একে অপরের দিকে তাকালো নাজ এবং সায়েম। সবকিছু কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে। দুজনে কথাগুলো ঠিকই বুঝতে পারছে, কিন্তু মনে হচ্ছে যেন কিছুই বোঝেনি। ডক্টরের কথাগুলো কি আসলেই সত্যি? এও কি সম্ভব? চোখমুখে একরাশ প্রশ্ন নিয়ে আবারও তার দিকে তাকালো দুজনে। আরও কিছু শোনার আশায়। কী প্রশ্ন করবে তারা জানে না, তবে এতটুকু জানে রেহানার কাছ থেকে আরও কিছু জানার বাকি আছে তাদের।
“আমরা ডক্টরের টিম মিলে দীর্ঘ মিটিং চালিয়েছি। যেহেতু উনার কম বয়স তাই অনেক চেষ্টা করেছি অন্য কোনো উপায় খুঁজে বের করার। কিন্তু সিস্টগুলো দিনদিন ভয়ঙ্কর আকার ধারন করছে। সাধারণত পাঁচ সেন্টিমিটারের চেয়ে কম আকারের সিস্টের ক্ষেত্রে অপারেশন ছাড়াও চিকিৎসার একটা চেষ্টা করে থাকি। কিন্তু আপনার সিস্টটা তার থেকে অনেক বেশি বড়।”
সায়েম লক্ষ করলো কেমন এক ঘোরের জগতে হারিয়ে অদ্ভুতভাবে কেঁপে উঠেছে নাজ। তার হাত-পায়ের এই কম্পন যেন শক্তিশালী কোনো ভূমিকম্পকেও হার মানাবে। চোখমুখ রক্তশূন্য হয়ে উঠেছে। সায়েম শক্ত করে নাজের বাম হাতটা চেপে ধরলো। আকস্মিক এই স্পর্শে বিন্দুমাত্র ভাবান্তর হলো না নাজের। এখনো মেয়েটা হারিয়ে আছে কোথায় যেন।
ক্ষণিকের নীরবতা ভঙ্গ করে সায়েম অস্পষ্ট গলায় বলল, “তাহলে এখন?”
ডক্টর রেহানা পরিষ্কার গলায় থেমে থেমে বললেন, “আই অ্যাম সরি, অপারেশন ছাড়া আমাদের কাছে আর কোনো পথ খোলা নেই। অপারেশনের মাধ্যমে উনার ওভারি এবং ইউটেরাস বাদ দিতে হবে।”
মুহূর্তেই ঘোরের জগত থেকে ফিরে এলো নাজ। কম্পিত স্বরে বলল, “তার মানে? আমি আর কখনো মা হতে পারবো না?”
ডক্টর রেহানা চুপ করে রইলেন। নিরবতাই মাঝে মাঝে সরবতার অভাব পূরণ করে দেয়।নাজ চোখদুটো নিমিষেই ভর্তি হয়ে গেল অবাধ্য অশ্রুগুলোর দ্বারা। মেয়েটা কিছু একটা বলতে চাইছে, কিন্তু বলতে পারছে না। কিছু একটা করতে চাইছে, কিন্তু করতে পারছে না।
হঠাৎ কী যেন মনে করে চেয়ার ছেড়ে উঠে ছুটে বেরিয়ে গেল চেম্বার থেকে। নাজের বেরিয়ে যাওয়ায় তখনো কোনোপ্রকার ভাবান্তর হয়নি সায়েমের মাঝে। সেই তখন থেকে থ হয়ে বসে আছে ছেলেটা। হাত-পা কেমন যেন আসাড় হয়ে আসছে। হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিক গতিতে বেড়ে যাচ্ছে। এসব কী হচ্ছে তাদের জীবনে? একের পর এক দুর্যোগের কালো মেঘ কেন এসে নামছে তাদের জীবনে? কীসের শাস্তি দিচ্ছেন সৃষ্টিকর্তা তাদের? কী করে সামলাবে সায়েম নিজেকে? তার থেকেও বড় কথা কী করে সামলাবে নাজকে?
নাজের কথা মনে আসতেই সংবিৎ ফিরে পেল সায়েম। মেয়েটা হুট করে কোথায় গেল? আশেপাশে তো কোথাও নেই! ডক্টর বললেন কয়েক সেকেন্ড আগেই বেরিয়ে গেছে নাজ। আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা না করে সঙ্গে সঙ্গে চেম্বার থেকে বেরিয়ে গেল সায়েমও।
আশপাশে বিশাল ওয়েটিং এরিয়া। অসংখ্য মানুষ প্রতীক্ষমান হয়ে বসে আছেন তাদের কাঙ্ক্ষিত ডাক্তারের জন্যে। চারিদিকে এত মানুষ অথচ নাজকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। প্রচন্ড দিশেহারা বলে মনে হচ্ছে নিজেকে? কী করবে কিছুই বুঝতে পারছে না। কী অনুভব করবে তাও বুঝতে পারছে না। বুঝবে কী করে? প্রকৃতি তো এর থেকে বেশি কঠিন পরিস্থিতিতে কখনো এনে ফেলেনি তাকে।
হঠাৎ কানে ভেসে এলো ডক্টর রেহেনার অ্যাসিস্টেন্টের কণ্ঠস্বর, “স্যার, আপনার ওয়াইফকে দেখলাম ছুটে সিড়ি বেয়ে নিচে চলে যেতে। সব ঠিক আছে তো?”
সব যে ঠিক নেই তা বলার অবকাশ আর পেল না সায়েম। তড়িৎ গতিতে পা বাড়ালো সিড়ির দিকে। নিচতলাটা তন্ন তন্ন করে খুঁজলো, নাজ কোথাও নেই। তবে কি একা একা বাড়ি ফিরে গেল মেয়েটা? শরীর আর মনের যে অবস্থা, তাতে করে একা একা বাড়ি ফিরে যাওয়া তো নাজের পক্ষে অসম্ভব। কী করবে সায়েম? কিছুই বুঝতে পারছে না। হঠাৎ মনে পড়লো হসপিটালের বেজমেন্টের গ্যারেজে তাদের গাড়িটা পার্ক করা আছে। নাজ সেখানে যায়নি তো? সায়েম ছুটে গেল গ্যারেজের উদ্দেশ্যে।
সায়েমের ধারণাই সত্যি হলো। ক্ষীণ আলোয় ঘেরা বিশাল গ্যারেজটার এক কোণে মেঝেতে গুটিশুটি মেরে বসে আছে নাজ। দীর্ঘ খোঁজাখুঁজি শেষে মেয়েটাকে পেয়েও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারলো না সায়েম। নাজকে এক নজর দেখতেই বুকটা ধ্বক করে কেঁপে উঠলো। মেয়েটা কেঁদে আর্তনাদ করছে না। কেমন স্থির হয়ে বসে একদৃষ্টিতে মেঝের দিকে তাকিয়ে আছে। কষ্ট পেতে পেতে ব্যথাহীন হয়ে গেছে তার হৃদয়টা। যেকোনো অসহনীয় ব্যাথাকেও সহ্যাতীত মনে হয় না এখন আর। ভাবনা-চিন্তা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে নাজ। মস্তিকে নিস্তব্ধ এক শূন্যতা বিরাজ করছে কেবল।
নাজ দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেল নাজের দিকে।
তার সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়তে পড়তে উদ্বিগ্ন গলায় বলল, “নাজ? এখানে এসে বসে আছো কেন? তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে পাগল হয়ে গেছি আমি।”
নাজ শান্ত কিন্তু ভয়ঙ্কর বিষাদমাখা কণ্ঠে বলল, “কেন খুঁজছিলে?”
সায়েম অসহায় গলায় বলল, “কেন খুঁজছিলাম মানে? কী বলছো এসব নাজ?”
নাজ অস্থির গলায় বলল, “তুমি শুনতে পাওনি উনি কী বললেন? আমি আর কোনোদিন মা হতে পারবো না সায়েম।”
সায়েম দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল, “আমি জানি তোমার কষ্ট হচ্ছে নাজ। আমারও তো কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এভাবে ভেঙে পড়লে চলবে বলো? সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি আছি তো।”
নাজ বিলাপের সুরে বলল, “কিচ্ছু ঠিক হবে না। আমাকে কেউ কোনোদিন মা ডাকবে না। আমি কোনদিনও পারবো না তোমাকে বাবা ডাক শোনাতে।”
নাজের কণ্ঠস্বরে ভয়াবহ এক অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলো সায়েম। মেয়েটার অস্তিত্ব এ জগতে আর অবশিষ্ট নেই। শোকে আচ্ছন্ন এক জগতে আটকে গেছে তার সমস্ত অন্তরাত্মা।
“নাজ?”
নাজ বিড়বিড় করে বলল, “আমাকে কেউ কোনোদিন মা ডাকবে না সায়েম। কোনদিনও না।”
কথাগুলো বলতে বলতেই জ্ঞান হারিয়ে নাজ লুটিয়ে পড়লো সায়েমের বুকে। কয়েকটা মুহূর্ত নাজকে আঁকড়ে ধরে স্তম্ভিত হয়ে বসে রইল সায়েম। এই ভয়ানক বিপদ থেকে কী করে উদ্ধার করবে সে মেয়েটাকে?
(চলবে)