#আজও_ভালবাসি_তোমায়❤
#Writer_মাহিয়া_মিতু
#Part_5
🍁
🍁
মিতু গালে হাত দিয়ে অবাক চোখে ফারহানের দিকে তাকিয়ে আছে। মিতুকে ও মারতে দেখে দিনা সহ ওর বন্ধু রা ও খুব অবাক হয়।
ওরা এগিয়ে এসে বলে
—– আরে ফারহান কি করছিস ভাই, মিতুকে ও মারছিস কেন!!!
—– তো কি করবো, ওকে তো শুধু একটা চড় মেরেছি, ইচ্ছা তো করছে ওকে খুন করে ফেলতে😡
—— আমি আবার কি করলাম🙄😥
—— কি করেছো মানে, এসব কথা এতোদিন আমার কাছ থেকে লুকালে কেন, স্টুপিড কোথাকার😡
—–😫😫😫😫
——- তোমার কোনো ধারণা আছে এই কয়দিন আমার কিভাবে কেটেছে, তোমার সাথে একটা দিন কথা না বলে, তোমায় না দেখলে আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, আর তুমি ইচ্ছা করে আমার থেকে এতো দূরে থেকেছো।😠
——- কিন্তু আমি ইচ্ছা করে কিছু করিনি, আমি তো
——- অফকোর্স ইচ্ছা করে করেছো, তুমি যদি সেদিন আমাকে সবটা বলতে তাহলে আজ এদিন দেখতে হতো না, স্টুপিড। 😡
মিতু আর কিছু বললো না। কারণ ও বুঝতে পারছে যে ওর ফারহান কে সবটা বলা উচিৎ ছিলো, আর এখন কিছু বললে যদি আবার চড় মারে,😥, তাছাড়া ফারহানের এই রাগী চেহারার দিকে তাকিয়ে মিতুর যেন হাত পা কাঁপছে, কারণ ফারহানের এই ভয়ংকর রুপ ও আগে কোনোদিন দেখে নি। এ যেন এক নতুন ফারহান কে দেখছে ও।
——– কি হলো, এখন চুপ করে আছো কেন।
——- সরি😥, আর কোনো দিন এমন হবে না, আমাকে আর মারবেন না প্লিজ 😥।
মিতুর এমন কথা শুনে ফারহানের সব রাগ যেন এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। মিতুর এই ভিতু ভিতু চেহারা দেখে ওর খুব হাসি পাচ্ছে কিন্তু তবুও ও মুখে গম্ভীর ভাবে এনে বললো
——মনে থাকবে তো। আর কখনো আমার কাছে কিছু লুকাবে না তো।
——– একদম না।
——– ইয়াহুহহহহ, সব তো ঠিক হলে কিন্তু দোস্ত তুই তো ওকে প্রোপজ ও করলি না।এই নে ফুল আজকে সবার সামনে তুই মিতুকে প্রোপজ করবি, নে ধর।
ফারহান ও হেসে ওদের হাত থেকে ফুল টা নিয়ে হাঁটু গেড়ে মিতুর সামনে বসলো।
মিতুর তো লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু এই ছেলে দেখো কি সুন্দর সবাই বলার সাথে সাথে বলা শুরু করলো, কেমন ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে, যেন ওর আশেপাশে আর কেউ নেই।
তারপর ফারহান বলা শুরু করলো
——– জানিনা লোকে কিভাবে তার ভালোবাসা, অনুভূতি প্রকাশ করে, আমি এতো সাজিয়ে গুছিয়ে বলতে পারি না। আমি শুধু জানি প্রথম দেখাতে তুমি আমার হৃদয়ে যে ঢেউ তুলে দিয়েছো, তাতে তোমাকে না দেখে আমি একমুহূর্ত থাকতে পারবো না, বাঁচতে পারবো না আমি তোমায় ছাড়া, তোমায় ভালোবাসার জন্য আমার কাছে কোনো কারণ নেই, আমি শুধু এটা জানি তোমায় ছাড়া আমি নিশ্বাস ও নিতে পারি না, যার জন্য আমর তোমাকে প্রয়োজন, আমার প্রতিটা মুহূর্ত সুন্দর করতে তোমায় প্রয়োজন, মরে যাবো আমি তুমি হিনা, তাই আমার সুখ দুঃখ সবকিছু তেই তোমাকে প্রয়োজন, হবে কি তুমি আমার সুখ দুঃখের সাথি, থাকবে কি সারাজীবন আমার সাথে।
মিতুকে অবাক চোখে ফারহানের দিকে তাকিয়ে আছে আর এদিকে সবাই মিতুকে হ্যা বলতে বলছে।
তারপর মিতু মিষ্টি হেসে মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানিয়ে ওর হাত থেকে ফুল টা নিয়ে, আর ফারহান ও একটা তৃপ্তির হাসি দিয়ে উঠে দাড়ায় তারপর সবার সামনে মিতুর যে গালে চড় মেরেছিলো সেই গালে কিস করলো। মিতু তো লজ্জায় শেষ, কি শুরু করলো এই ছেলেটা।
——- সরি, তখন চড় টা মারার জন্য।
এদিকে সবাই হাত তালি দিয়ে ওদের দুজন কে বাহোবা জানাচ্ছে।
এই ঘটনা গুলো দূর থেকে একজন দেখছে আর রাগে ফুসছে। সে আর কেউ নয়, টিনা।
——-টিনা তুই এতো অপমান মুখ বুঝে সহ্য করলি। কিছু ই বলবি না ওদের।
——- হ্যা টিনা তৃশা তো ঠিকই বলেছে, তুই সব কিছু এতো সহজে মেনে নিবি।
——- দাড়া না, কে বললো আমি সব কিছু মেনে নেবো। আমার এই অপমানের প্রতিশোধ তো আমি নিবোই, আমাকে অপমান করা তাই না, ওদের জীবন টাকে যদি নরক বানাতে না পেরেছি, তাহলে আমার নাম ও টিনা নয়।😈
তারপর ওরা সবাই ওখান থেকে চলে আসে।
মিতু বাড়ি এসে আজ খুব খুশি খুশি লাগছে ওকে, ওর এখনো বিশ্বাস ই হচ্ছে না এসব। ওর শুধু বারবার ফারহানের কথা ই মনে পড়ছে।
মিতুর বাবা মা ও এতোদিন পর মেয়েকে খুশি দেখে ওরা ও খুব খুশি। কারণ একয়দিনে ওরা মিতুকে হাসি তো দূরে থাক প্রয়োজন ছাড়া ওদের সাথে একটা কথা ও বলে নি। এই নিয়ে ওর বাবা মা দুজনেই খুব টেনশনে ছিলো, কারণ একমাত্র মেয়ে বলে মিতুকে ওরা অনেক যত্নে মানুষ করেছে, কখনো কোনো কষ্ট পেতে দেয় নি।
আর সেই মেয়ের কি এমন হলো যে সে এতোটা চুপ হয়ে গেছে, মুখে হাসি নেই এই নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলো।
কিন্তু আজ এতোদিন পর মেয়েকে আবার আগের মতো হাসি খুশি দেখে ওরা ও খুব খুশি।
মিতু রাতে ওর ঘরে বসে পড়ছিলো তখন ওর বাবা আসলো
——-মামনি, আসবো।
—— হ্যা বাবা।এসো, এতে পারমিশন নেওয়ার কি আছে🙂
মিতুর বাবা হেসে মেয়ের পাশে যেয়ে বসলো।
—— কিছু বলবে আব্বু।
——– তেমন কিছু না, দেখতে এলাম আমার মা টা কি করছে।
——- ওওওওও☺
——- তবে আজকে আমার মামনি যেন খুব খুশি।
——- হ্যা বাবা, আজকে আমি সত্যি ই খুব খুশি।
——- খুশি হলেই ভালো। আমরা ও চায় যে তুমি সব সময় এরকম হাসি খুশিই থাকো, তোমার কোনো কিছু তে মন খারাপ হবে, কষ্ট পাবে এটা যে আমরা সহ্য করতে পারবো না মা।
তুমি এখন বড় হয়েছে, তাই তোমার সব কিছুতে ইন্টারফেয়ার করতে পারি না আমরা, তাই সব কিছু জানতেও চায়বো না যে কেন এতোদিন তোমার মন খারাপ ছিলো, যদি তোমার বলতে তোমার বলতে আপত্তি থাকে।শুধু এটুকুই বলবো সব সময় এরকম হাসি খুশি থেকো মা, আর কোনো সমস্যা হলে নিদ্বিধায় আমাদের সাথে সেয়ার করতে পারো মা, ছোট বেলা থেকে তোমার কোনো ইচ্ছা ই অপূর্ণ রাখিনি, আর ভবিষ্যতে ও চেষ্টা করবো, হুম।
——– হুম, আমি জানি বাবা, তুমি আমার সব ইচ্ছাই পূরণ করবে, আমার বাবা মা পৃথিবীর বেস্ট ☺, আই লাভ ইউ বাবা। বলে ও ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরে।
——– লাভ ইউ টু সোনা।
এবার পিছন থেকে ওর মা এসে বলে
——- বাহ বাহ, বাবা মেয়ের কি ভাব দেখো, আর আমি যেন বানের জলে ভেসে এসেছি, আমাকে কেউ ভালোই বাসে না। 😣
——— আরে মাদার বাংলাদেশ, রাগ করছো কেন আমি তোমাকে ও ভালোবাসি কিন্তু বাবার থেকে একটু কম
—— এ্যাএএএএ
——- হা হা হা, লাভ ইউ মা। আমি তোমাদের দুজন দুজনকে ই খুব ভালোবাসি😚।
তারপর ওরা ডিনার করে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে উঠে আবার কলেজে যায়, ফারহানের সাথে ঘোরাঘুরি, এভাবেই বেশ অনেক দিন কেটে যায়। আর এদিকে…..
.
.
.
.
.
চলবে……
…
(রি- চেক করা হয়নি, তাই অনেক ভুল থাকতে পারে তার জন্য সরি, 🙂)