#আমার হৃদয়ে তুমি
#পর্বঃ৫
#Tanisha Sultana (Writer)
পান্ত মারুকে নিয়ে পান্তর হাসপাতালে আসে। সবাই মারুর দিকে তাকিয়ে আছে
“ফাইনালি বউ দেখাতে নিয়ে আসলি
সুমা হেসে বলে।
” তুই ওকে নিয়ে আমার কেবিনে যা আমি আসছি
সুমা মারুকে নিয়ে পান্তর কেবিনে যায়।
“জানো মারুফা তুমি খুব লাকী
মারু পান্তর চেয়ারে বসতে বসতে বলে
” কেনো?
“এতো ভদ্র ভালো ছেলে কয়টা মেয়ের কপালে জোটে
” ভদ্র না ছাই। আমার হাত মাংস জ্বালিয়ে খেলো
মারু বিরবির করে বলে
“কিছু বললে
” না
“জানো পান্ত সিগারেটের গন্ধ সয্য করতে পারে না। একবার আমরা সব ফ্রেন্ডরা মিলে জোর করে সিগারেট খাওয়াতে গেছিলাম। নাকের জল চোখের জল এক হয়ে গেছিলো।
” কিহহহ😱😱
“হুম আর মদ তো কিভাবে খেতে হয় সেটাই জানো না
” এসব কি পান্ত বলেছে
“নাহহ তো আমি জানি
মারুর ফোন বেজে ওঠে। মারু সুমাকে
এক্সকিউ মি বলে ফোনটা রিসিভ করে
” হেলো
“আমি তোমার বরের হাসপাতালের নিচে ওয়েট করছি তুমি আসো
” বাফিন বলছিলাম
“যা বলবে এখানে এসে বলো
রাফিন ফোন কেটে দেয়
” মারু এনি পবলেম
মারু মুচকি হেসে বলে
“পাঁচ মিনিটে আসছি
মারু চলে যায়। সুমা পান্তকে ফোন করে বিষয়টা জানায়।
রাফিন আর মারুফা হাসপাতালের কাছে একটা কফিশপে পাশাপাশি বসে আছে
” মারু আই এম সরি
“কিসের জন্য
” তোমার খারাপ দিনে আমি তোমাকে হেল্প করতে পারলাম না
মারু রাফিনের হাত ধরে
“কপালে যেটা থাকবে সেটা হবেই৷ এতে তোমার আমার কোনো হাত নেই।
” এখন বলো কি করবো
“পান্ত যেরকম সাইকো ও কখনোই আমাকে ডিভোর্স দেবে না
” উপায়
“পালাবো
” কি বলছো
“ঠিকি বলছি
” তোমার পরিবার
“ওরা তো আমার কথা ভাবে নি তাহলে আমি কেনো ভাববো
” মারু সময় নিয়ে ভাবো
“রাফিন আমি ভেবে চিন্তে বলছি। ওই ছেলেটা পাগল। এতো এতো সিগারেট খায়। ওর সাথে থাকলে আমি পাগল হয়ে যাবো
” আমাকে ভাবতে দাও
বউ
রাফিন মারু দুজনেই চমকে তাকিয়ে দেখে পান্ত দাঁড়িয়ে আছে। মারু ভয় পেয়ে যায়
“আআআপনি এখানে
পান্ত মারুর হাত ধরে
” মিস্টার রাফিন মারুফা আমার বউ। বিয়ে করা বউ। কিছুদিন পরে আমাদের বেবিও হবে। সো আশা করবো আমার বউয়ের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেবেন।
পান্ত শান্ত গলায় কথা গুলো বলে মারুর হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। ফুল স্পীডে গাড়ি চালাচ্ছে পান্ত। মারুফা চুপচাপ বসে আছে।
জোরে ব্রেক করে পান্ত। পান্ত সিটবেল পরে নি যার ফলে পান্ত মাথায় বারি খায় আর বেশ খানিকটা কেটে যায়।
“পাগল আপনি? এভাবে কেউ গাড়ি চালায়
মারুর চোখ যায় পান্তর কপালের দিকে
” আপনার তো মাথা ফেটে গেছে
(প্রথম পর্বে একটু ভুল হইছে মারু ইন্টার ফাস্ট ইয়ার না অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে এ পরে)
“আমি ভাবতাম সব মানুষই বদলায়। কিন্তু তুমি বদলানে না মারু। আজও সেইরকমই রয়ে গেলে যেমটা ছোট বেলায় ছিলে। আজও আমাকে ঘৃণা করো। কেনো বলো তো?
মারু পান্তর দিকে ভালো করে তাকিয়ে বলে
” ওহহহ তাহলে তুমিই সেই পান্ত যে আমাকে ছোট বেলায় জ্বালিয়ে মারতো। সব সময় পিছু পিছু ঘুরতো। আমার প্রথমেই তোমাকে চেনা চেনা লেগেছিলো।
পান্ত হাত দিয়ে রক্ত মুছে৷ মারু শাড়ির আচল এগিয়ে দেয় পান্ত নেয় না
“পান্ত এখন আর দুর্বল না মারু। অনেকটা স্টং হয়ে গেছে। আর তুমি সব সময় আমাকে খারাপ খারাপ বলো না। আমার খারাপ হওয়ার মুল উদ্দেশ্য কিন্তু তুমি। তাই আমার খারাপ দিক গুলো শুধু তোমাকেই দেখাই।
পান্ত গাড়ি থেকে নেমে চলে যায়। মারুর চোখ দিয়ে দুফোটা পানি গড়িয়ে পরে। হয়ত পান্তর রক্ত দেখে নয়ত পান্তকে ঠকানোর জন্য।
পান্ত রুমে এসে মদ নিয়ে বসে। ঢকঢক করে মদ গিলে। অনেক দিন পরে পুরোনো হ্মতে আঘাত লেগেছে। আবার রক্ত ঝরতে শুধু করেছে। “দিন শেষে বেইমানরাই ভালো থাকে”
মারু দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে যাওয়ার সাহস নেই। অপেক্ষায় আছে কখন পান্ত ডাকবে।
পুরো এক বোতল মদ শেষ করে পান্ত ফ্লোরেই শুয়ে পরে। মারু এগিয়ে গিয়ে পান্তর মাথায় ব্যান্ডেস করে দেয়। জুতো খুলে টেনে টুনে কোনোরকম বিছানায় শুয়িয়ে দেয়।
তারপর মারুও চেঞ্জ করে এসে পান্তর পাশে শুয়ে পরে। মাঝরাতে পান্ত গড়গড় করে বমি করে দেয়। মারু জেগেই ছিলো বমি করার শব্দে লাইট জ্বালিয়ে দেয়। মারু পান্তর গায়ে হাত দিয়ে চমকে ওঠে। জ্বরে গা,পুরে যাচ্ছে।
কম্বল দিয়ে মারু পান্তকে ঢেকে দিয়ে বমি পরিষ্কার করে। পরিষ্কার করে পান্তর কাছে এসে দেখে ঠকঠক করে কাঁপছে। আরও একটা কম্বল দেয়। তারপর মারুও শুয়ে পরে।
সকালে পান্তর ঘুম ভাঙতেই পান্ত দেখে মারু ওকপ জাপ্টে ধরে শুয়ে আছে। পান্ত আরও একটু অবাক হয় কারণ পান্তর গায়ে শার্ট নেই।
পান্ত লাফ দিয়ে উঠে। মারুরও ঘুম ভাঙে যায়।
“এসব কি?
মারু মাথা নিচু করে আছে
” না মানে আপনার
পান্ত ঠাস করে মারুর গালে একটা থাপ্পড় দেয়।
“এসব করে কি তুমি এটা বুঝাতে চাচ্ছ তুমি অন্যায় করেছো এখন সব ঠিক করতে চাও। লিসেন আমার আর তোমার মধ্যে কিছুই কখনো ঠিক হবে না। তুমি ছলনাময়ী বেইমান। আমাকে খুন করতে গেছিলে তুমি।
পান্ত উঠে ওয়াশরুমে চলে যায়। মারু কাঁদতে থাকে।
পান্ত ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে মারু এখনো ওখানেই বসে আছে
” আমার এখানে কোনো কাজের লোক নেই সো সব কাজ তোমাকেই করতে হবে। আমি খাবো। আর রোজ রোজ নুডলস খেতে পারবো না।
মারু খুশি হয়ে তারাহুরো করে উঠে দুই মিনিটে ফ্রেশ হয়ে রান্না করতে যায়।
চটপট লুচি আর আলুর দম রান্না করে। পান্ত খেতে আসে।
“আপনার মাথার ব্যেন্ডিস কই?
” খুলে ফেলছি
“কেনো
” চাপ নিও না আমার গার্লফ্রেন্ডরা বেধে দেবে। ভালো না বাসুক ওরা আমাকে ঘৃণা করে না। খুন করতে চাইবে না
মারু চুপসে যায়। পান্ত খেতে থাকে। মারু তাকিয়ে আছে।
“এভাবে নজর দিও না কালো হয়ে যাবো
মারু চোখ সরিয়ে নেয়। খাওয়া শেষে পান্ত যেতে যেতে বলে
” সন্ধায় গার্লফ্রেন্ড নিয়ে বাড়ি আসবো। তুমি চাইলে তোমার নাগর নিয়ে ফসটিনসটি করতে পারো সারাদিন। কিন্তু আমি বাড়ি আসার পরে কারো ফোন আসলে আমি কি করবো নিজেই জানি না
চলবে