আমার হৃদয়ে তুমি পর্ব ৪

#আমার হৃদয়ে তুমি
#পর্বঃ৪
#Tanisha Sultana (Writer)

মারু কোমরে আচল গুঁজে প্রস্তুতি নিচ্ছে চুরি করার। রাত বারোটা বাজে। পান্তর রুমে দরজা হালকা ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে যায়

“যাক বাবা ফাস্ট স্টেপ ভালোভাবেই পার করলাম। এবার ভালোই ভালোই চুরি করতে পারলেই হয়। আল্লাহ দেখো ধরা যেনে না পরি।

মারু রুমে ঢুকে করে। এবার কথা হলো টাকা খুঁজবে কি করে? রুম তো অন্ধকার। মারাক্তক অন্ধকার। মারুর এবার নিজেরই ভয় করছে। যায় হোক ভয় পেয়ে চলবে না। সফল হতে হবে।

মারু এবার কানাদের মতো হাত দিয়ে ধরে ধরে সামনে এগোয়। কিন্তু আলমারি পায় না। আলমারি যদি পেয়েও যায় চাবি পাবে কোথায়? চাবি না হলে তালা খুলবে কি করে?

এতোখন মারুর মাথায় এসব আসে নি। এবার রুম থেকে বের হবে কিভাবে? দরজা কোনদিকে তাও বুঝতে পারছে না মারু।

” আল্লাহ আমরে নেও একেবারে না এই রুমের বাইরে। পান্তাভাত টের পেলে না জানি কি করবে আমার সাথে।

মারু মনে মনে এসব বলছে আর দরজা খুঁজছে। হঠাৎ কিছু একটার সাথে পা লেগে পরে যায় মারু খাটের ওপর। ধাপ করে পান্তর ওপর পরে যায়। পান্ত খাটেই শুয়ে ছিলো।

“আল্লাহ কোনো হাতি পরলো না কি আমার ওপর।

পান্ত মারুকে হাতি বলায় মারুর রাগ হয়। মারু উঠার চেষ্টা না করে বলে

” আমাকে হাতি বললেন?

“শরীর টা তো হাতির মতো। আমার কোমরটা গেলো

মারু পান্তর বুকে কয়েকটা থাপ্পড় মারে
” আমাকে মারছো ঠিক আছে। আমি মারলে সয্য করতে পারবে না

মারু এবার মারা বন্ধ করে উঠতে চায়। পান্ত কোমর জড়িয়ে ধরে

“বারবার তুমিই আমার কাছে আসো মারু। আমি একবারও যায় না।

” এই যে হেলো আমি ইচ্ছে করে আসি নি
“এসেছো তো

” বাধ্য হয়ে

“একই হলো।

” এক হলো না

“আমি কিন্তু বাধ্য হয়েও একবারও তোমার কাছে যায় না

” ছাড়ুন তো। আর কখনো আসবো না

“এসেছো নিজের ইচ্ছায় যাবে আমার ইচ্ছার।

” আমার মুখোশ আমি সবার সামনে খুলে দেবো আই প্রমিজ

পান্ত শব্দ করে হাসে
“সিরিয়াসলি

” আজব এভাবে দাঁত কেলানোর কি হলো

“আগেও যেমন আমার খারাপ দিক গুলো

মারুফা ছাড়া কেউ দেখে নি এখনও দেখবে না। চেষ্টা করতে পারো

পান্তর হাতের বাধন আলগা হতে থাকে। মারু এই সুয়োগে উঠে পরে। লাইট জ্বালিয়ে দেয়। মারু সরু চোখে পান্তর দিকে তাকিয়ে আছে।

পান্ত লাফ দিয়ে উঠে বসে বলে
” চুরি করতে এসেছিলে রাইট

মারু হকচকিয়ে যায়। আমতাআমতা করে বলে
“আমাকে কি আপনার চোর মনে হয়?
” কিছু টা

“😡😡

” আমার একটা ক্যামেরা আছে ওইটা দিয়ে তুমি ছবি তুলতে পারো

পান্ত মুচকি হেসে বলে। মারু এবার ভয় পেয়ে যায়
“আপনি

” তোমার মন পরতে পারি। আমার পিচ্চি মারুফা আমার ছবি তুলতে চায় আমি কি করে তার ইচ্ছে অপূর্ণ রাখি বলো তো

“গুড। তো ক্যামেরা কখন পাবো
পান্ত মারুর কোলে মাথা রেখে বলে

” বিলি কেটে দিলে এখনই
“জ্বালিয়ে মারবেন

পান্ত মুচকি হেসে চোখ বন্ধ করে নেয়। মারু বিলি কাটছে আর ভাবছে

” ওনার কথা বলা বিহেব আমার অতি পরিচিত কারো সাথে মিলে যায়৷ কিন্তু এ সে হবে কি করে? ধুর আমিও না।

পান্ত ভাবছে
“অনেক কাঁদিয়েছো মারু তুমি আমাকে। তার শোধ আমি নেবো। তোমাকে ঠিক ততোটাই কষ্ট দেবো যতটা তুমি আমাকে দিয়েছো

প্রায় একঘন্টা হয়ে গেছে মারু পান্তর মাথার ওপর মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে পরেছে। পান্ত মারুকে ভালো করে শুয়িয়ে দেয়। তারপর বেলকনিতে গিয়ে সিগারেট ধরায়।

সকালে সূর্যের আলো চোখে পরায় মারুর ঘুম ভেঙে যায়। পাশে তাকিয়ে দেখে পান্ত নেই। মারু বিছানা থেকে নেমে বেলকনিতে যায়। গিয়ে দেখে ফ্লোর জুড়ে সিগারেটের বাকি আংশ ধোঁয়া

” এই ছেলে তো ফুসফুসের ক্যান্সার হয়ে মরবে। এতো সিগারেট কেউ খায়? কি এমন কষ্ট এর?

গোটা দুনিয়া জানে পান্ত চৌধুরীর মতো মানুষ হয় না শুধু এই মারুফা জানে এ কতো খারাপ।
মারু পান্তর কাছে গিয়ে

“এই যে হেলো উঠুন।
পান্ত নরেচরে ওঠে

” এইরকম সোফায় বসে মানুষ এতো আরাম করে কি করে যে ঘুমায় আমি বুঝি না।

মারু পান্তর হাত ধরে টান দেয়। পান্ত চোখ কচলে ওঠে
“কি হয়েছে?

” মেয়ে

“আমি তো কিছু করি নি। তাহলে

” অসভ্য। আমার ক্যামেরা দিন। এই গুলোর ছবি তুলবো

পান্ত টান দিয়ে মারুকে কোলে বসিয়ে নেয়। মারুফা তো অবাক। পান্ত মারুফার ঘাড়ে কিছ করে

“কি হচ্ছে

” হ্যাপি ভ্যালেনটাইন ডে

“ক্যামেরা চেয়েছি

” বারবার খারাপ খারাপ না বলে ভালো করার দায়িত্বটা নিলেই তো পারো

“বয়েই হেছে

পান্ত ধাক্কা দিয়ে মারুকে সরিয়ে দেয়। তারপর উঠে রুমে চলে যায়

” এই লোকটার হুটহাট এ্যাটাকে আমি সত্যি মরে যাবো।

পান্ত হাতে ক্যামেরা নিয়ে এসে মারুর হাতে দেয়

“হুম ছবি তোলো

মারু খুশিতে নাচতে নাচতে ছবি তুলে নেয়। তারপর বিশ্ব জয়ের হাসি দেয়

” এবার সবাইকে দেখাবো
“ওকে

পান্ত চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলের সামনে যায়

” মারু

মারুকে জোরে ডাকে। মারু ছুটে চলে আসে

“কি হয়েছে

” খাবো কি

“আমি কি জানি

” একজন বউয়ের দায়িত্ব সকালে রান্না করা
“আমি পারবো না

” বিয়ে করার আগে মনে ছিলো না

“দেখুন

” দশ মিনিটে আমার খাবার চায়। খাবার খেয়ে তারপর যা দেখাবে তাই দেখবো

পান্ত চলে যায়।
“কাজের মেয়ে পেয়েছে না কি আমায়?
পান্ত আবার ঘুরে আসে

” খাবারে কিছু মেশালে তোমাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখবো।

মারু পান্তকে বকতে বকতে চলে যায়। নুডলস রান্না করে টেবিলে রাখে

“আপনার খাবার

পান্ত এসে খেতে বসে। মারু ফ্রেশ হতে চলে যায়। ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে পান্ত মাথা আচরাচ্ছে

” তারাতাড়ি রেডি হয়ে নাও

“আমি কোথাও যাবো না

” জোর করিও না

“আমি যাবো না

পান্ত লাগেজ খুলে কালো একটা জরজেট শাড়ি বের করে।

” যাও এটা পরে এসো

“বললাম তো যাবো না

” আমি কি শাড়িটা পরিয়ে দেবো

মারু শাড়িটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। শাড়ি পরে এসে দেখে পান্ত বসে আছে।

“তারাতড়ি কোনোরকম সাজুগুজু করো

” গেলে এভাবেই যাবো না গেলে নাই

পান্ত মারুকে বসিয়ে সাজাতে থাকে। মারু নরানরা করছে

“নরলে বেধে রাখবো

সাজানো শেষে মারুকে আয়নার সামনে দাঁড় করায়

” দেখো কেমন সাজিয়েছি

যদিও সাজটা ভালোই হয়েছে তারপরও মারু বলে

“মোটামুটি

” ভালোকে ভালো বলতে শেখো মোটামুটি কোনোরকম এসব কি?

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here