#আমার_পূর্ণতা
#রেদশী_ইসলাম
পর্বঃ ২২
” এমন ভাব করছো যেনো আজ নতুন জানছো? ”
” আমি সত্যিই আজকে জানছি, এই মাত্র জানছি। ”
” কেনো তাফসির তোমাকে কিছু বলে নি? ”
” না তো। ও বিয়ে করলোই বা কবে? ”
” এবার বাংলাদেশে গিয়ে ”
ওদের কথার মধ্যেই তাফসির কথা বলা শেষ করে সেখানে উপস্থিত হলো। প্রাচুর্যের সাথে কথা বলে মনটা হালকা লাগছে বেশ তার। তাফসির শাহিন এবং উইলসনের দিকে তাকিয়ে বললো—
” কি নিয়ে কথা বলছো তোমরা? ”
উইলসন অভিমানী স্বরে বললো—
” তুমি বিয়ে করেছো তাফসির অথচ আমাদের একবারও জানালে না? ”
তাফসির হেসে উইলসনের কাঁধে হাত দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বললো—
” আরে বলবো কখন তোমাদের সাথে তো ঠিক মতো কথায় হয় নি। আর বিয়ে টা হুট করেই হলো। আসার দু’দিন আগেই। জানানোর মতো সময় ও হয় নি। ”
” তো নাম কি তোমার ওয়াইফের? কি করে সে? ”
” ওর নাম প্রাচুর্য। পড়ালেখা করছে সে। আই মিন স্টুডেন্ট। ”
প্রাচুর্য নামটাকে কয়বার মনে মনে আওড়ালো উইলসন। কিন্তু কিছুতেই উচ্চারণ করতে পারলো না সে। অসহায় কন্ঠে তাফসিরের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো—
” তোমার ওয়াইফের নাম কি বললে? প্রিটুরজা? ”
উইলসনের উচ্চারণে শব্দ করে হেঁসে উঠলো শাহিন। হাসতে হাসতে রীতিমতো গড়িয়ে পরবে এমন অবস্থা তার। কোনো মতে হাসিটা চেপে রেখে বললো—
” ভাই কি বলে এই সাদা চামড়া? প্রাচুর্যের নামের এমন উদ্ভট উচ্চারণ যদি প্রাচুর্য শুনতে পাই তাইলে আমি সিওর অকালে অক্কা পাবে সে। আহারে ভাগ্যিস শোনে নি মেয়েটা। ”
উইলসনের উচ্চারণে তাফসির ও হাসলো তবে শাহিনের মতো এতো নয়। স্বাভাবিক যেমন হাসে তেমন। এর মধ্যে উইলসন বলে উঠলো—
” তোমরা হাসছো কেনো? আর কি বলছো? ইংলিশে বলো শাইন। ”
উইলসন নামটা বুঝতে পারে নি বলে বোঝার সুবিধার্থে তাফসির প্রাচুর্যের নামটা কে ভেঙ্গে ভেঙ্গে আবার বললো—
” ওর নাম প্রিটুরজা নয় উইলসন। ওর নাম প্রা চুর যো। বুঝেছো? ”
উইলসন মাথা চুলকে কেমন বোকা বোকা হাসি দিয়ে বললো—
” তোমাদের নাম গুলো এতো কঠিন হয় কেনো বলো তো? আমার তো সামান্য নামটা উচ্চারণ করতেই দাঁত ভেঙে যাওয়ার জোগাড়। না জানি তোমাদের ভাষা কতোটা কঠিন। ”
পাশ থেকে শাহিন বললো—
” ছেড়ে দে ভাই। প্রাচুর্যের নাম উচ্চারণ করতে হলে ওকে আগে অ, আ ভালো করে শেখাতে হবে। ”
.
.
.
উত্তরার একটি ছোটো খাটো রেস্টুরেন্টে বসে আছে রিয়া ও আরফান। না আগের দিনের মতো হঠাৎ দেখা হয় নি তাদের। আজ দু’জনের প্ল্যান করেই আসা। অফার টা আরফানই দিয়েছিলো। রিয়া প্রথমে একটু নাকচ করলেও পরে আরফানের জোরাজুরিতে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু তবুও মন সায় দিচ্ছিলো না তার। কারন আরফান না জানালেও সে তো বোঝে আরফানের আর্থিক অবস্থা। তবে এদিক দিয়ে বলতে গেলে রিয়া এখনো নিজের পরিপূর্ণ পরিচয় দেয় নি। কে জানে দিলে হয়তো আরফান তার সাথে সম্পর্ক তো দুরেরই কথা বন্ধুত্বের কথাও মাথায় আনতো না। এতোদিনে রিয়া অন্তত এটুকু বুঝেছে যে আরফান একজন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। তবে আরফান যে তার পরিবার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে নি ব্যাপার টা এমন ও না। বহুবার জিজ্ঞেস করেছে কিন্তু প্রতিবারই রিয়া কোনো না কোনো ভাবে এড়িয়ে গিয়েছে। সে চাই না তাদের মধ্যে ভেদাভেদ আসুক। আর সো অফ টা কোনো কালেই পছন্দ ছিলো না তার। সে সাধারণ ভাবেই চলাচল করে। খুব একটা বিলাসিতার ব্যাপার স্যাপার নেই। আর এটা শুধু তার একার না, তার সব ভাই-বোনদের মধ্যেই এটা ভালো দিক। কারন তারাও অতোটা সো অফ করে না। সবাই সাধারণ ভাবেই জীবন যাপন করে। কিন্তু রিয়া কিছু না বললেও আরফান আন্দাজ করেছে যে তার থেকে রিয়ার আর্থিক অবস্থা বেশ সচ্ছল।
দোকানে কর্মরত একজন মোটাসোটা লোক এসে খাবার দিয়ে চলে যেতেই আরফান পূর্ণ দৃষ্টিতে রিয়ার দিকে তাকালো। রিয়ার চোখ, নাক, ঠোঁট খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো। এটা তার প্রিয় কাজ। মেয়েটাকে দেখতে ভালো লাগে তার। কেনো লাগবে না? গোটা আঠাশটি বছর কেটে যাওয়ার পর অবশেষে কাউকে পছন্দ হলো তার। পছন্দ? না শুধু পছন্দ তে সীমাবদ্ধ থাকলেও কথা ছিলো কিন্তু সে তো শুধু পছন্দ করে না। বরং ভালো ও বাসে। এখন শুধু অপরদিক থেকে একটি সিগন্যাল পাওয়ার অপেক্ষা।
নিজেকে এমন খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখাতে একটু আধটু অস্বস্তি হলো রিয়ার। জীবনে কারও সাথেই তেমন ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক নেই তার। আর এখন যখন হলো একবারে পুরুষের সাথেই। কিন্তু তার ও বা কি করার! সামনে বসা পুরুষটিকে তো তার ভালোই লেগেছে তাই বন্ধুত্ব করেছে। নাহলে তো জীবনেও এসবের কথা মাথা তেই আনতো না। আর সাহস ও পেতো না।
” কি দেখছেন? “__প্রথমে রিয়ায় প্রশ্নটি করলো। উত্তরে আরফান চোখ না সরিয়েই হালকা হেঁসে বললো—
” কি আর দেখবো বলুন। সামনে যদি এমন সুন্দর রমনী বসে থাকে তখন কি আর অন্য কিছুর দিকে চোখ যায়? ”
রিয়া চোখ ছোট ছোট করে বললো—
” এই এই আপনি কি আমার সাথে ফ্লার্ট করছেন? ”
” মোটেও না। ফ্লার্ট কেনো করবো? জাস্ট একটু কমপ্লিমেন্ট দিলাম। এখন এটাকে যদি আপনার ফ্লার্ট মনে হয় তবে আমার তো কিছু করার নেই তাই না? ”
” তো আজকে ট্রিট দেওয়ার কারন? ”
” স্পেসিফিক কোনো কারন নেই। তবে বেতন পেয়েছি কাল। বলতে পারেন তার জন্যই ভাবলাম রিয়া ম্যাডামকে একটা ট্রিট দেওয়া দরকার। কখনো তো কিছু দিলাম না?”
” কেনো দেবেন? আমি কি আপনার গার্লফ্রেন্ড? ”
রিয়ার কথায় আরফান দুষ্টু হেঁসে দু ভ্রু নাচিয়ে বললো—
” হবেন নাকি? ”
আরফানের এমন কথায় থতমত খেয়ে গেলো রিয়া। এদিক ওদিক তাকানোর ভান করে বললো—
” ক.কি বলছেন? কি হবো? ”
আরফান চেয়ারে হেলান দিয়ে হাসতে হাসতে বললো—
” ওইযে গার্লফ্রেন্ড? ”
” আপনি কি মজা করছেন আমার সাথে? ”
” মজা করবো কেনো? আমি সিরিয়াস। ওভার হান্ড্রেড পার্সেন্ট। ”
.
.
.
.
ছাঁদের একপাশে নতুন দোলনা লাগানো হয়েছে। কালো রং করা এই লোহার দোলনাটি প্রাচুর্যের আবদারেই লাগানো হয়েছে। এইতো তাফসির যাওয়ার পাঁচদিন পরের কথা যখন বাতাসে বাতাসে বিরহের গন্ধ ভাসছিলো তখন প্রাচুর্যের সময় কাটতো না। সারাক্ষণ মনে হতো কি নেই বা কিছু একটা অসম্ভব রকম মিস করছে এমন। তাফসির আসার আগের জীবন সম্পূর্ণ আলাদা ছিলো তার কিন্তু মাঝের একমাসে জীবনে যা যা হয়ে গেলো এখন তাফসির যাওয়ার পরের জীবন টা আলাদা লাগছে। তার কিশোরী মন সঙ্গ চাই ভালোবাসার মানুষটির যে কিনা সদ্য স্বামী রুপে পদার্পণ করেছে। আর এ বয়সে এসব চাওয়া অস্বাভাবিক কিছু না।
বর্তমানে সেই নতুন কেনা দোলনা টায় শুয়ে আছে প্রাচুর্য। দোলনাটা ইশতিয়াক চৌধুরী কিনে দিয়েছে তাকে। যদিও চেয়েছিলো ইনসাফ চৌধুরীর কাছে কিন্তু কোনোভাবে সেটা ইশতিয়াক চৌধুরীর কানে যেতেই রাতে তিনি দোলনাটা নিয়ে এসে দিয়েছিলেন প্রাচুর্যকে।
প্রাচুর্য আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে দোলনায় দুলছিলো। বুকের ওপর বই উল্টে রাখা। তার মতো ছোটো খাটো মানুষের অনায়াসেই পুরো শরীর এঁটে যাচ্ছে এই দোলনায়। সময়টা বিকেল বলে আকাশে চড়া রোদ নেই। তবে এখন যেই রোদটা আছে সেটা খুব ভালো লাগে প্রাচুর্যের। এ রোদে তাপ নেই কোনো। মিষ্টি আলো। এর মধ্যে সেখানে হাজির হলো মিসেস ফারাহ। মিসেস ফারাহকে আসতে দেখে উঠে বসে পাশে বসার জায়গা করে দিতে দিতে প্রাচুর্য বললো—
” বড়’মা তুমি এসময়? ”
” ছাঁদের কাপড় নিতে এসেছিলাম তা দেখলাম তুই এখানে শুয়ে আছিস। আচ্ছা তোর কি মন খারাপ? নাহলে এভাবে শুয়ে আছিস কেনো? ”
” মন খারাপ না বড় মা। এমনিই ভালো লাগছিলো না বলে এখানে আসলাম। ”
” তা কি করছিলি? ”
” উপন্যাসের বই পড়ছিলাম একটা। আচ্ছা সেসব ছাড়ো। তাফসির ভাই কবে আসবে? তোমাকে কিছু বলেছে? ”
” ও কি আর আমার সামনে সেসব বলা মানুষ? তুই তো জিজ্ঞেস করতে পারিস। ”
” সকালে ফোন দিয়েছিলাম তখন বলেছিলো তাড়াতাড়িই আসবে। তবে সেটা কবে তা বলেনি। ”
” ওকে আসার জন্য জোর করবি। প্রয়োজনে ইমোশনাল ব্লাক মেইল করবি। ”
” কি বলছো বড় মা? এসব কেনো করবো? ”
” মা হলে বুঝতিস সন্তান দুরে থাকার কষ্ট। দু দু’টো ছেলে মেয়ে অথচ দেখ একটা ও কাছে নেই। মেয়েটা তো শ্বশুর বাড়ি আছে। রোজ রোজ তো আর আমার কাছে আসা সম্ভব নয়। তার ও তো সংসার আছে। কিন্তু ছেলেটাকে দেখ। পরে আছে সেই ভিন দেশে। তাহলে কি লাভ হলো দুটো সন্তান জন্ম দিয়ে? ”
প্রাচুর্য পাশ দিয়ে মিসেস ফারাহ কে জড়িয়ে ধরে বললো—
” থাক বড় মা কষ্ট পেয়ো না তুমি। আমি চেষ্টা করবো ওনাকে ফিরিয়ে আনার। আচ্ছা বড় মা একটা প্রশ্ন করবো?”
” অনুমতি নেওয়া লাগে? কর। ”
” তাফসির ভাই কানাডায় কেনো চলে গিয়েছিলো? ”
প্রাচুর্যের কথায় মলিন হেসে মিসেস ফারাহ বললেন—
” সেটা নাহয় তোমার স্বামীর কাছে জিজ্ঞেস করো কেমন? সেই ভালো জানে। ”
” উনি যদি রাগ করে? আচ্ছা তেমন সিরিয়াস কিছু হলে বলা লাগবে না। বাদ দেও। ”
” না তেমন সিরিয়াস কিছু না। আচ্ছা শোন তাহলে। তখন তোর মনে হয় বয়স এগারো বা বারো হবে। তাফসিরের তখন ইন্টারমিডিয়েট শেষ। এক্সাক্ট কোন ক্লাসে পরে মনে নেই আমার। তবে ভার্সিটিতে ছিলো এতটুকু মনে আছে। তো ওর ভার্সিটিতে একটা মেয়ে ছিলো নাম শিমলা। মেয়েটা দেখতে অসম্ভব রূপবতী ছিলো। দুধে আলতা গায়ের রং। শিমলা আর তাফসির আবার ক্লাসমেট ছিলো। তাই মাঝে মাঝেই ওরা পড়ালেখার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করতো। কিন্তু বান্ধবী ছিলো না। কারন তাফসিরের বাবা আগেই বলে রেখেছিলো যেনো কোনো মেয়ে বান্ধবী না হয়। তাই তাফসিরও আর সে সাহস করে নি। শুধু ক্লাসমেট হিসাবেই সীমাবদ্ধ ছিলো। কিন্তু মেয়েটার মনে অন্য কিছু ঘুরছিলো। সে শুরু থেকেই তাফসিরকে পছন্দ করতো। তবে তাফসির করতো কিনা জানি না। যদি তোর বড় বাবার নিষেধাজ্ঞা না থাকতো তাহলে হয়তো সম্পর্কে জড়াতেও পারতো। তো ওই শিমলা বিভিন্ন ভাবে তাফসিরকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করতো। তাফসির সেটা বুঝতে পেরে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলো। কিন্তু তারপরও মেয়েটা গায়ে পড়ে কথা বলতো। একদিন তো সব সীমা অতিক্রম করে ভরা প্লেসে তাফসিরকে প্রপোজ করে বসে। তখন তাফসির রিজেক্ট করেছিলো। বলেছিলো ” আমি তো তোমাকে আগেই বলেছি এসব রিলেশন টিলেশন আমি করবো না। এসবে ইন্টারেস্ট নেই আমার। তাছাড়াও এখন সম্পর্কে জড়ালে আমার পড়ালেখায় ক্ষতি হবে যেটা আমি চাই না। ” কিন্তু তোর বড় বাবার কথা বলেনি। বললে হয়তো তখন অনেকেই আজেবাজে কথা বলতো। তো সেদিন সেই মেয়ে আর কোনো কথা বলেনি। তার দু’দিন পরে তোর বড় বাবার কানে এসেছিলো তাফসিরের জন্য একটা মেয়ে নাকি আ ত্ম হ ত্যা করতে চেয়েছে গলায় ফাঁ সি দিয়ে। তখন স্বাভাবিকভাবেই তোর বড় বাবা ভেবেছিলো ওই মেয়ের সাথে তাফসিরের সম্পর্ক আছে। সেদিন বিকালে আবার তাফসিরের ভার্সিটিতে বাস্কেটবল ম্যাচ ছিলো। তাফসির সেখানে খেলছিলো। আর তখনও পর্যন্ত তাফসিরের কানে এতোসব কথা যায় নি। কেউ বা কারা শয়তানি করে তাফসিরের নামে আরও অনেক বাজে কথা লাগিয়েছিলো তোর বড় বাবার কাছে। তোর বড় বাবা রাগে এতোটাই হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পরেছিলো যে কোনো কিছু যাচাই না করে ওই প্লে জোনে লোকভর্তি মানুষের মধ্যে আমার ওই বড় ছেলেটা কে বেধরম মেরেছিলো। পিঠে কেটে কেটে দাগ হয়েছিলো। সেদিনই রাতে আমার ছেলে বাড়িতে এসে কারও সাথে কোনো কথা না বলে সেই মুহুর্তে তার নানা বাড়ি চলে যায়। যতোদিন না পাসপোর্ট ভিসা হয়েছে ততোদিন সেখানেই থেকেছে। আর আমার ভাই মানে তিশার আব্বুকে তো চিনিসই। সে তো কানাডায় থাকতো তখন তাই তাফসির তার কাছেই চলে গিয়েছিলো। আমি কম চেষ্টা করি নি তাকে ফিরিয়ে আনার। তবে সে কোনোমতেই আসবে না। তার এক কথা বাবা কেনো কিছু না জেনে বুঝে তার গায়ে হাত তুললো? লোকভর্তি মানুষের মধ্যে এমন অপদস্ত করলো কেনো তাকে? সে কি এখনো বাচ্চা যে এমন মারলো তাকে। তার মান সন্মান সব ধুলোয় মিশিয়ে দিলো। ”
” তাহলে এখন কার কাছে থাকছে?
” বাড়ি কিনেছে ও আর শাহিন। আমার ভাইজান তো বছর তিনেক আগেই চলে এসেছে বাংলাদেশে। ভাইজান অনেক করে বলেছিলো তার বাড়িতে থাকতে। কিন্তু তাফসির থাকে নি। ”
” উনি যখন কানাডায় ছিলো তখন পড়ালেখার খরচ দিতো কে? ”
” তাফসির নিজেই চালিয়েছে। পার্ট টাইম জব করতো পড়ালেখার পাশাপাশি। ভাইজান চেয়েছিলো ওর খরচ চালাতে কিন্তু ওর এক কথা ‘ না আমি নিজের খরচ নিজেই চালাবো। ‘ কিন্তু আমি জানতাম তোর বড় বাবা প্রতি মাসে আমার ভাইজানকে এমাউন্ট পাঠাতো। বিদেশে এতো বড় একটা ছেলের থাকা খাওয়া তো মুখের কথা না। তোর বাবা ও চাইতো না যে ছেলে অন্যের টাকায় চলুক। পরে ভাইজান বাংলাদেশে চলে আসতেই ও আর শাহিন মিলে বাড়িটা কিনলো। সে বছরের মাথায়ই ওর চাকরিটা হলো। বেশ উঁচু পদেই। টাকা ও মোটা অংকের। এখন তো আর কারো কাছ থেকেই টাকা নেয় না। ”
#চলবে