আমি_শুধুই_তোমার পর্ব ৪

গল্পের নামঃ- #আমি_শুধুই_তোমার❤️🖤
writer:-আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ০৪

বিকেলে বৃষ্টি হওয়ার ফলে এখন বেশ ঠান্ডা লাগছে। আর বিকেলের সেই সময়েরটা কথা ভেবে ব্লাসিং করছি,দিনটা সুন্দর করে আমার ডায়রির পাতায় লিখে রাখবো, কিন্তু এটা কেমন হলো শুনেছি ছেলেরা নাকি আগে কিস করে কিন্তু আমি মেয়ে হয়ে, তো কি হইছে মেয়েরা ছেলেদের থেকে কোনো দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই, যা করছি ভালো করছি। আমার পাতী হাঁস আমার হুতুম পেঁচা আমারইতো সব একটা কিসই তো করছি এনিয়ে এতো ভাবার দরকার নাই, কিন্তু এখন আমার কালা গরম পানি ইয়ে মানে ব্লাক কফি খেতে ইচ্ছে করছে। তাই ড্রয়িং রুম থেকে দৌড়ে গেলাম কিচেনে, আর বানাতে লাগলাম আমার কফি। আহহ কি যে সুন্দর সুবাস, যাই হোক কফি তো বানালাম সবার জন্য সবাইকে দিয়েও আসলাম, শুধু বাকি আমি আর আমার উনি, মানে আমার নিরামিষ নামক হুতুম পেঁচা টা। যাই হোক লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে রুমে গেলাম দেখি ফোনে কি যেন করছে, আমাকে দেখে ফোনটা রেখে দিয়ে আমার দিকে মনযোগ দিলো ব্যাপারটা আমার ভালোই লাগছে, আমি কফির মগটা তার দিকে এগিয়ে দেই কিন্তু সে বলে

—–আপনি আবার কিছু মিশিয়ে নিয়ে আসছেন? আমি দুইদিকে মাথা নারালাম যার মানে না সে তাও ভ্রু কুচকে লো না না খা হুতুম পেঁচা তোর পেটে সহ্য হবে না এইসব, সকালে তিতা করল্লা খাওয়াইছি বলে এখনও খাওয়াবো। আমি আমার কফির মগে চুমুক দিলাম উনি হুটকরেই আমার মগটা হাতে নিয়ে বলে।

—-আমি এটা খাবো আপনি আমারটা খান। এর মানে আমি ঠিকই বুঝতে পেরেছি বেটা ওফফ সরি হুতুম পেঁচা ভয়ে ছিল যাইহোক খাও, শুনেছি খাওয়াটা খেলে নাকি মহব্বত বাড়ে, দেখি আমাদের ব্যাপারটা কি হয়। আল্লাহ তুমি এই নিরামিষটাকে হেদায়েত দান করো,

(সবাই আমিন বলেন😑😑 নয়তো আল্লাহ ফারিদার দোয়া কেমতে কবুল করব) ইভান কফির মগটা নিয়ে কফি খাচ্ছে আরকে হাত দিয়ে ফেসবুক স্ক্রলিং করছে, মাঝে মাঝে ফারিদাকে দেখছে। ফারিদা এত সময় খুশি ছিল যখন দেখে ইভান ফোন নিয়ে বসে আছে তখনই তার মাথায় আস্ত একটা তাল গাছ ভেঙে পরে। কি খারাপ মনে মনে তারিফ করতে না করতেই সে নিজের রূপ দেখানো শুরু করছে। হারামি বিয়ের পর বউয়ের সাথে ভালো করে কথা পর্যন্ত বলিসনি,এখন এত সুন্দর একটা মূহুর্ত তাও সে ফোন নিয়ে বসে আছে। ধূর, আর বললেও কি হবে এতো নিরামিষ নামক হুতুম পেঁচা, তাই এর মনের মধ্যে ফিলিংস বলতে কিছু নেই। ফাউল একটা, মনেতো চাচ্ছে গ্লাসের কফি তার মাথায় ঢেলে দেই। বেয়াদবের আছারি একটা। ইভান জানতো যে ফারিদা এবার কিছু মিক্সড করেনি কিন্তু সে চাচ্ছিল ফারিদার খাওয়া কফিটা খেতে তাই এতো নাটক আর এখন সে বুঝতে পারছে ফারিদা তার সাথে গল্প করতে চায়, কিন্তু সে নিজে থেকে কিছু বলবে না। ফারিদা কফি শেষ করে বলে
—-আপনার খাওয়া হয়নি? ইভান কফিটা একদম চেটেপুটে শেষ করে তারপর কফির মগটা এগিয়ে দেয় ফারিদার দিকে। ফারিদা বলে

—-গ্লাসটা রাখছেন কেনো? এটাও ব্লান্ড করে দেই খেয়ে ফেলেন। বলেই চলে যায় আর ইভান তো হা হয়ে আছে কি বললো ফারিদা সেটাই বুঝার চেষ্টা করছে। ইভান একা একা বোর ফিল করছে, ফারিদাও সেই কখন গেলো। সে যায় ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে দেখে, অনেক কসমিটিক হয়ার বেন, হিজাব পিন, ৩/৪ ফাউন্ডেশন, কানসিলার,কাজল আরো কতো কি। ইভান একটা ফাউন্ডেশন নিয়ে দেখতে থেকে তখনই ফারিদা রুমে আসে দেখে ইভান কি যেনো করছে তার জানটুস গুলোর সাথে। ফারিদা জলদি গিয়ে ইভানের হাত থেকে সেটা নিয়ে বলে
—–এই আপনি কি করছেন এগুলার সাথে। ইভান বলে

—–ভাবছি দেশে আর কয়দিন পর আটা ময়দার অভাব পরবে। যেই হার আপনারা আটা ময়দা মাখো। ফারিদা ভেংচি কেটে বলে

—–আপনি মেবি নকল করে ডাক্তারি পাশ করছেন। ইভান বলে

—-কেনো, আপনার এমন মনে হওয়ার কারণ? ফারিদা ফাউন্ডেশন টা রাখতে রাখতে বললো

—-যেখানে আপনি মেকাপকে আটা ময়দা বলেন সেখানে তো এটাই প্রমাণ হয় আপনি কিছু পারেন না। বলে ফারিদা দৌড় দেয় ইভান বলে

—-তবে রে। সেও ফারিদাকে ধরার জন্য তার পিছন পিছন দৌড়াতে লাগলো শেষে যখন ফারিদা রুমে দরজা খুলে যায় কিন্তু বাইরে যাবার আগেই ইভান ফারিদাকে ধরে ফেলে আর দরজার সাথে চেপে ধরে। At the moment। ফারিন দরজা খুলে ফেলে সে এসেছিল তাদের খেতে ডাকতে। আর এমনি ফারিদা ঠাস করে ফ্লোরে পড়ে যায় আর ফারিদাকে পরতে দেখে ফারিন সাইড হয়ে যায় আর ফারিদা পরে যায় আর তার উপর ইভান। ফারিদা কোমড়ে হালকা ব্যাথা পায়। ইভান আর ফারিদা মটেও এই পরিস্থিতিতে পরবে ভাবেনি। ফারিন এইদিক ঐদিক তাকিয়ে বলে

—-সরি সরি। আম্মু খেতে ডাকছে। বলেই নিচে নেমে চলে গেলো। ইভান উঠে দাড়ায় আর ফারিদাকেও তোলে। তারপর দুজনই নিচে যায় কিন্তু বিকেলের নাশতা, তারপর কফি খাওয়াতে এখন ফারিদা আর ইভান দুনজনেরই পেট ভরা। তাও কোনো রকম খেয়ে নিলো। আর ফারিন তো মুখ টিপে হেঁসে চলছে। ইভান ফারিনকে উদ্দেশ্য করে বলে

—-কি শালিকা এতো মুচকি মুচকি হাসির কারণ কি? ফারিন দুষ্ট হাসি দিয়ে বলে

—-আরে জিজু, আমি রোজ আর জ্যাকের কথা ভাবছি কি রোমান্টিক জুটি তাই না? ইভান খেতে খেতে বলে

—-টাইটানিক দেখছো? ফারিন হেচকেচিয়ে বলে

—-আরে না, আমি তো আমাদের স্কুলের পাশে কলেজের বড় আপু আর ভাইয়ার কথা বলছি। ফারিন আর কিছু বললো না খাওয়াতে মনযোগ দিলো। ইভান বলে।

—-জ্যাক বেশ তো নামটা।

ফারিদা আর না পেরে হুহু করে হেসে দিল। সবাি খাওয়া বাদ দিয়ে ফারিদার দিকে তাকিয়ে আছে। ফারিন বলে

—আপু তোর কি হয়েছে হাসছিস কেন ভূতটুত ধরছে নাকি তোকে? ইভান বলে

—-হ্যা আমারও তাই মনে হয় কালকে ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার পরও হাসছিল। কি ভয়ংকর হাসি। আল্লাহ। ফারিদা তো অবাক সে কি এমন করলে!! সে রাগী চোখে ইভানের দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় বলে, একবার ওপরে চলেন তারপর বুঝাচ্ছি মজা। তখন আর ফারিদা কিছু বলে না ইভান কে। খাওয়া শেষে ইভান রুমে প্রবেশ করে ওমনি ফারিদা দরজা বন্ধ করে ইভানের কাঁধে ভাওও বলে ঝাপিয়ে পরে। কিন্তু ইভান কিছু বলে না। তাই সে বলে

—–ভয় পান নাই? ইভান বলে

—-না আমি জানি আমার একটা বাদুর বউ আছে। ফারিদা ইভানকে বলে

—-আমি বাদুর হলে আপনি হুতুম পেঁচা। এখন শাস্তির জন্য তৈরি তো? ইভান মুচকি হাসি দিয়ে বলে

—-কি শাস্তি? ফারিদা কিছু না বলে তার ড্রেসিং টেবিল থেকে চিরুনি, আর বেশ কয়েকটা কিলিপ আর রাবার বেন নিয়ে আসে। তা দেখে ইভান বলে

—/নো। ফারিদা বলে

—-yess। ইভান না বলে কিন্তু ফারিদার জোরা জড়িতে সে আর পারলোনা তার মাথায় উৎপত্তি ঘটে ছোট ছোট তিনটা তাল গাছের তারপর কিছু কচ্ছপের। ফারিদা ইভানের মাথায় তিনটা ঝুটি করে আর কিলিপ লাগিয়ে দেয়। আর বলে

—কত কিউট লাগছে, ওয়েট পিক তুলবো, নড়লে ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে দিব খাবরদার। ইভান নিজের বউকে এই কয়দিনে ভালোই চিনেছে এটা তার জন্য ব্যাপার না। তারপর ফারিদা বেশ কেয়কটা পিক তুলে নিল আর ফেসবুক আপলোড করে দিলো। আর ইভানকে বলে

—–এই যে আপনার ফেসবুক আইডির নাম কি? হুতুম পেঁচা তারপর নিরামিষ সব দিয়ে খুঁজেছি পায় নাই। ইভান বলে

—-আমি হুতুম পেঁচা, নিরামিষ? কালকে রিমোট নেওয়ার সময় কি যেনো বলছিলেন, ও হ্যা আমাকে একটু টাইম দেন আমি এইসবের জন্য প্রস্তুত না। ফারিদা আমতা আমতা করে বলে

—–যাই হোক ঘুমান। বলেই আমি উঠতে যাবো তখনই ইভান আমার হাত ধরে ফেলে…..

চলবে

আর কমুনা অপেক্ষা করো। কালকে গল্পটার ইতি টানবো কি বলো তোমরা। একে তো রমজান তারওপর তোমরা কমেন্ট করে বলো না গল্পটা কেমন হচ্ছে। হাতে গনা দুই একজন গঠনমূলক কমেন্ট করে। 🌼🌼ধন্যবাদ সবাইকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here