#ইংলিশ_টিচার
পর্ব-৪
মিলি শুভর দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসি দিচ্ছে আর তা দেখে শুভ বললো
-আর কি শয়তানি করা বাকি আছে? সেগুলা করে ফেলো।
-স্যার আসলে আপনার জন্য মায়া হচ্ছে, কত আশা করেছিলেন আজ আপনার বাসররাত হবে আপুর সাথে।আহারে স্যার মায়া হচ্ছে।
-মিলি তুমি ঠিক চাও টা কি? আর এমন কেনো করলে?
-স্যার আপনি তো জানেন আমি মিথ্যা বলি না, আসলে আপনি খারাপ মানুষ আর আমি এটা জেনে শুনে আমার বোনকে আপনার সাথে কিভাবে বিয়ে দেয় বলুন?
-তো নিজে করলে কেন?আমি খারাপ মানুষ।
-আপনার বাবা রিকুয়েস্ট করছে যেন আপনাকে ভালো মানুষ বানিয়ে দিয়ে যায় তাই আর শ্বশুর আংকেল এর কথা ফেলতে পারিনি।
-মিলি এইটা কি কথা? শ্বশুর আংকেল আবার কি?
-সে আগে ছিলো আংকেল পরে হলো শ্বশুর তাই শ্বশুর আংকেল।
-তুমি মানসিক ভাবে অসুস্থ।অসহ্য লাগছে সব আমার মিলি।
এই কথা বলে শুভ রুম থেকে বের হয়ে যায়।মিলি শুভ আসবে ভেবে বসে ছিলো কিন্তু শুভ আসেনি। মিলি তো এবার ভয় পেয়ে গেছে এমনি বেচারি জ্বিন আছে এ বাসায় মনে করছে।মিলি তার ফোন থেকে শুভ কে কল দেয় অনেকবার কিন্তু রিসিভ হচ্ছে না। মিলি উপায় না দেখে ফেইসবুকে খুঁজ নেয় শুভ এক্টিভ কিনা।শুভ কে অনলাইন দেখে ম্যাসেজ দেয় মিলি ” প্লিজ স্যার রুমে আসেন।”
১০ মিঃ পর উত্তর না পেয়ে আবার ম্যাসেজ দেয় “প্লিজ শুভ রুমে আসেন।”
শুভর ফোন সাইলেন্ট মুড এ ছিলো তাই সে আর খেয়াল করেনি প্রায় ১ ঘন্টা পর শুভ যখন ফোন টা হাতে নিলো দেখলো ১ টা নাম্বার থেকে অনেকগুলো ফোন, অনেক রাত বলে শুভ আর কল ব্যাক করেনি। শুভ ডাটা কানেকশন অফ করবে এমন সময় একটা ম্যাসেজ দেখে আর, সেটা মিলির ম্যাসেজ।
শুভ অবাক হয়ে আছে! কিভাবে মিলি তার বন্ধু তালিকায় আসতে পারে। এমন একটা পাগল মেয়ে তার সাথে এড কিভাবে থাকতে পারে সে ভাবছে।
ম্যাসেজ দেখে শুভ রুম এ গিয়ে দেখে মিলি ঘুমাচ্ছে।
মিলির ঘুম থেকে শুভ ভাবছে এই পাগলী মনে হয় আমার বলা জ্বিন এর গল্প শুনে ভয় পেয়ে আমাকে কল আর ম্যাসেজ দিয়েছে,আমাকে এত্ত জ্বালাচ্ছে তার একটু জ্বলার দরকার আছে।
শুভ নিজের অজান্তেই মিলির দিকে তাকিয়ে আছে
কি আশ্চর্য ঘুমের মধ্যে মিলির মুখটা কত পবিত্র লাগছে আর কত মায়াবতী মনে হচ্ছে।
শুভ খেয়াল করলো যে নাম্বার থেকে মিলি কল দিয়েছে এটা থেকে মাঝেমধ্যে কল আসতো। শুভর স্পষ্ট মনে আছে কেউ একজন কল দিয়ে আর কথা বলতো না।
এইটা তাহলে মিলি ছিলো তা ক্লিয়ার হলো শুভর কাছে।
ঠিক তখনি শুভ মিলির ফেইসবুক প্রোফাইল যায়।
শুভ তার প্রোফাইল এ গিয়ে চুপ হয়ে আছে, এই সে মিলি যে এখন তার বেড এ ঘুমাচ্ছে।
মিলি খুব ভালো গল্প লিখে আর তার প্রত্যেক টা গল্প শুভ পড়েছে।মিলির গল্প পড়ে কেউ বুঝতেই পারবেনা সে এই পাগলী যে তার বোনকে স্লিপিং পিল খাইয়েছে।
মিলি একটা রহস্যময় মেয়ে যার রহস্যভেদ করা সহজ না।
মিলি পুরো খাট নিয়ে শুয়ে আছে, শুভ তাই ছুফায় বসেই ঘুমিয়ে গেছে।
ফজর এর আজান দিতেই শুভ উঠে নামাজ পড়লো আর সেটা মিলি চোখ খুলে দেখছে কিন্তু বুঝতে দেয়নি শুভকে ।
শুভ এবার একটা বই পড়তে বসে গেলো আর তখন মিলি উঠে সোজা চলে গেলো শুভর বাবার রুমে।
গিয়েই তার রুম থেকে তাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে বললো
-শ্বশুর আংকেল আপনি আমার সাথে এইটা কি করলেন??
-কি করলাম মা?
-আপনি জেনে শুনে আমাকে এই ভুতুড়ে বাড়িতে নিয়ে আসছেন।
-কি বলো এসব মা? আমাদের বাসা ভুতুড়ে কেন হবে?
-স্যার সব বলে দিছে, আপনার বাবা তো জ্বিন পোষাত।
-মা শুভ এসব বলছে? আরে পাগলী মেয়ে তোমাকে সে বোকা বানিয়েছে।
-কি বললেন আপনি শ্বশুর আংকেল। এত্ত দিন তো সে আমাকে মিথ্যাবাদী বলতো এখন সে নিজে কি করলো।
শুভর বাবা মিলিকে বললো তুমি শান্ত হও।আজকে আর কিছু করো না আপাতত চুপ থাকো পরে এর প্রতিশোধ নিও।
এরপর মিলির শাশুড়ি এসে মিলিকে বললো আজ মিলিকে রান্না করে খাওয়াতে হবে আর তাও সেটা মাগুর মাছ আলু দিয়ে, এইটাই রান্না করতে হবে কারণ এইটাই এই পরিবার এর নাকি নিয়ম।
মিলি নখ কামড়াতে কামড়াতে রান্নাঘর এর গেলো আর এটা শুভ জানতে পারলো আর তখনি শুভ দেখতে গেলো মিলি কি কাহানী করে।
মিলি মাগুর মাছ ধরতে যায় আবার যায় না।একবার সাহস করে যেয়ে মাছটাকে ধরে আবার ভয় পেয়ে ছেড়ে দেয়।
শুভ গিয়ে মিলিকে বললো
-কি ব্যাপার মিলি? মানুষ কে কল দিয়ে দিয়ে বিরক্ত করতে পারো আর মাছ ধরতে পারো না?
মিলি বুঝে গেছে গতরাতে সে নিজের নাম্বার দিয়ে কল দিয়ে কি বোকামি করেছে। আর তখনি মনে পড়েছে ভয় এর জন্য তার সেন্স ও ঠিকমতো কাজ করেনি যার জন্য এখন শুভ তার আইডি টাও জেনে গেলো।
আজ মিলির কপালটাই খারাপ আজ সারাদিন তার সাথে কি কি হবে কে জানে।STOP.
বিঃদ্রুঃযারা গল্প পড়তে ভালোবাসেন তারা আমার বন্দু হতে পারেন,,আপনার রিকুঃদিতে কষ্ট হলে আমাকে কমেন্টে বলবেন,,তাহলে আমি রিকুঃদেব,,,তবে আমার রিকুঃ একসেপ্ট করতে হবে।। START…
মিলি শুভর কথার কোনো উত্তর দিচ্ছেনা আর তাই শুভ আর এই প্রসঙ্গ কথা বলেনি।
মিলির মাছ ধরতে হবে বলে মন খারাপ দেখে শুভ বললো
-সাহায্য লাগবে কি?
-আর যায় হোক আমি আপনার সাহায্য নিবো না।খারাপ মানুষ সাহায্য করে নিজ স্বার্থে
-ওকে তা হলে গেলাম।দুপুরে খাবার টেবিলে দেখা হচ্ছে।
দুপুর হয়ে গেলো সবাই খাবার টেবিলে এসেছে আজ নতুন বউ রান্নাবাড়া করেছে। শুভ শিওর যে আজ মিলি তার মায়ের কাছে বকা শুনবেই।
সবাই আসার পর মিলি যখন খাবার পরিবেশন করলো শুভ জাস্ট হা হয়ে ছিলো।
শুভ ঠিক বুঝতেই পারছেনা যে মেয়ে মাছটাই ধরতে পারছিলনা সে কিভাবে এই রান্না করলো।শুভর প্রশ্ন একটাই মিলি কিভাবে পারলো?
চলবে