উপন্যাসের শেষ পাতায় তুমি পর্ব -২৯+৩০

#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_29

কপি নিষিদ্ধ ❌

আজ শুক্রবার,
ওসমান ওর রুমে আর জেসমিন ওর রুমে রেডি হচ্ছে।

ওসমানের রুমে,

ওমর : ভাইয়া বিয়ে কিভাবে ভা!ঙ্গ!বে,

ওসমান : জানি না।

ওমর : কোনো প্ল্যান করবে না?

ওসমান : না আমাদের শুধু জেসমিন আর ওর বয়ফ্রেন্ডের উপর নজর রাখতে হবে।

ওমর : ওকে।

ওসমান : এনগেজমেন্ট হচ্ছে তো কি হয়েছে বিয়ে হবে না।
________

জেসমিন : ওসমান তোমার আমার কথা জেনে গেছে।

সিহাব : কিভাবে?

জেসমিন : সেটা আমি জানি না। আমারতো ভয় হচ্ছে ও যদি আমাদের প্ল্যানের কথা জেনে যায়।

সিহাব :তুমি ওদের সাথে নরমাল বিহেব করো,চিন্তা করো না আমাদের প্ল্যান সাকসেসফুল হবে।
_______

সবাই লিভিং রুমে বসে আছে,

অবান্তিকা : ওসমান এই নাও রিং মামনির হাতে পরিয়ে দেও।

ওসমান জেসমিনের অনামিকা আঙ্গুলে রিং পরিয়ে দিল।

জেরিন : জেসমিন এবার ওসমানের হাতে পরিয়ে দাও।

জেসমিনও ওসমানের হাতে রিং পরিয়ে দেয়।

সবাই একসাথে আলহামদুলিল্লাহ বলে।

এনগেজমেন্ট শেষে ওসমান বাসা থেকে বেরিয়ে যায় ওর সাথে ওমরও বেরিয়ে যায়।

দেখতে দেখতে পাচঁদিন কেটে যায়,
অবান্তিকা ওসমানের রুমে আসে,

অবান্তিকা : কি পারলে না তো জেসমিনের বি’রু’দ্ধে কিছু প্রমাণ করতে,দেখলে তো আমার সিদ্ধান্তই ঠিক, জেসমিনই তোমার বউ হওয়ার যোগ্য।
নাও এই পাঞ্জাবিটা কাল পরবে।

ওসমান : তোমার সিদ্ধান্ত ঠিক না ভুল সেটা বিয়ের দিনই বুঝতে পারবে।তোমার ইচ্ছে মতো এনগেজমেন্ট হয়েছে, কাল হলুদ সন্ধ্যা হবে,কিন্তু আমার ইচ্ছে মতে বিয়ে হবে না।

অবান্তিকা : তুমি কেন বিয়ে করতে চাইছো না।

ওসমান : সেটাতো বিয়ে দিনই জানতে পারবে।আমি ঘুমাবো তুমি এবার যাও।

অবান্তিকা ওসমানের রুম থেকে চলে আসে।

অবান্তিকা ভাবছে,
ওসমান বিয়ে করতে চাইছে না কেন,কি সমস্যা জেসমিনের মধ্যে,ওদের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তটা কি তবে ভুল ছিল?

পরদিন,
ঘরবর্তী মানুষ জেসমিনের রিলেটিভ ওসমানের রিলেটিভিটরা এসেছে।
জেসমিনের হাতে মেহেদী আর্টিস্টরা মেহেদী পরিয়ে দিচ্ছে।
সন্ধ্যায় ওদের হলুদের আয়োজন করা হবে।
জেসমিনের হাতে মেহেদী দেওয়া শেষ এখন পায়ে দিয়ে দিচ্ছে।
জেসমিন :[মনে মনে]: উফফ আর কতক্ষণ বসে থাকতে হবে,মেহেদি দিতে চাইনি তবুও আন্টির কথায় দিতে হল ডিজগা’স্টিং।

সন্ধ্যায়,
ছাদে স্টেজ তৈরি করা হয়েছে,স্টেজে ওসমান জেসমিন বসে আছে। সবাই ওদের একে একে হলুদ লাগিয়ে দিচ্ছে সবাই মিলে নাচ গান করে,
অবশেষে অনুষ্ঠান শেষ করে ওসমান ওর রুমে আসে।
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ভাবচ্ছে কিভাবে জেসমিনের কথা সবাইকে বলবে।ও যখন এগুলো ভাবছিলো তখন জেসমিন ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
ওর ছোঁয়াতে ওসমানের রাগ উঠে যায়।
ওসমান : কি সমস্যা তোমার বারবার আমার রুমে কেন আসো?

জেসমিন মুচকি হেসে ওসমানের পাঞ্জাবিতে আঙ্গুল দিয়ে আঁকিবুঁকি করতে করতে বলে,
বারবার আমার হ্যান্ডসাম হাসবেন্ডকে দেখতে আসি।

ওসমান : নাতো আমি তোমার হাসবেন্ড নাতো তুমি আমার ওয়াইফ।

জেসমিন : কালই হয়ে যাবো।

ওসমান : সেটা দেখা যাবে।

জেসমিন মুচকি হেসে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।

পরদিন দুপুরে,
সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়ার পর্ব মিটিয়ে,
ওসমান জেসমিনকে স্টেজে বসানো হয় সবাই একসাথে ছবি তুলে,একটু পর কাজিসাহেব আসেন,
দোয়া দুরুদ পড়েন,
ওসমান বিয়ে করছে দেখে অবান্তিকা অনেক খুশি।
অবান্তিকা মনে মনে ভাবছে,
আমার ছেলেও বুঝে গেছে আমিই ঠিক তাইতো ও জেসমিনকে বিয়ে করছে,আল্লাহ বিয়েটা ভালো ভাবে হলেই হবে।
জেসমিন মনে মনে ভাবছে,
কি মি. ওসমান শেষমেশতো বিয়ে করতেই হলো, এখন দেখবে তোমার আর তোমার পরিবারের সাথে কি কি হয়।

কাজি সাহেব ওসমানকে কবুল বলতে বলেন,
ওসমান : এক মিনিট কাজি সাহেব কবুল পরে বলছি আগে আমার সুন্দরী হবু বউয়ের কিছু সুন্দর সুন্দর ছবি সবার সামনে দেখাতে চাই।
কি তোমরা দেখতে চাও?
সবাই জোরে হ্যাঁ বলে।
ওসমানের কথা শুনে জেসমিন ভাবছে ওসমান কোন ছবি দেখাতে চাইছে।

ওসমান : সবাই পূর্বপাশে তাকান।

সবাই সে পাশে তাকালে দেখতে পায়,প্রোজেক্টরে ওসমান, ওমর,জেসমিনের ছোট বেলার ছবি ভেসে উঠে,এই ছবিগুলো দেখে জেসমিন স্বস্তির নিশ্বাস নেয়।
একে একে ওদের ছোট বেলার ছবি দেখাচ্ছে,
তারপর ওরা যখন ঘুরতে গিয়েছিল তখনকার ছবি গুলো দেখাচ্ছে।
ওসমান : এখন আমার ওয়াইফের সবচেয়ে সুন্দর ছবি দেখাবো।
ওসমানের কথা শুনে সবাই আগ্রহ নিয়ে তাকায়।
ওসমান ওমরকে ইশারায় কিছু বোঝায়।
আর প্রোজেক্টরে ভেসে উঠে,
একছবিতে জেসমিন ড্রি’ং’ক করছে,আরেকটাতে বা’রে ছেলেদের সাথে নাচাচ্ছে,অন্যটাতে একটা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আছে,আরেকটাতে ছেলেটা ওকে কোলে নিয়েছে, এরকম ছবি দেখাচ্ছে।
এই ছবি দেখে সবাই হতভম্ব হয়ে গেছে।
ওসমান : কি দেখলেতো, আরো কিছু ছবি আছে বাট সেগুলো তোমাদের দেখানো যাবেনা,এই যে কাজি সাহেব আপনি এখন আসতে পারেন আপনার কাজ শেষ,
ওর কথা শুনে কাজি সাহেব বেরিয়ে যান।
ওসমান : কি এতোটুকু দেখেই সবাই হতভম্ব হয়ে গেছো, এখনো তো অনেক কিছু বাকি আছে,
ওমর ওকে ভেতরে নিয়ে আসো।
ওমর একটা ছেলেকে ভেতরে নিয়ে আসে,
ছেলেটাকে দেখে জেসমিন ঘাবড়ে যায়।

ওয়াহিদ : কে এই ছেলে?

ওসমান : জেসমিনকে জিজ্ঞেস করো।

জেরিন : জেসমিন কে এই ছেলে তুমি কি এই ছেলেকে চিনো?

জেসমিন কিছু বলছে না দেখে ওসমান বলে,

ওসমান : জেসমিন তোমার মনেহয় বলতে কষ্ট হচ্ছে
ওকে সমস্যা নেই আমিই বলে দিচ্ছি,ও জেসমিনের
বয়ফ্রেন্ড সিহাব, ছবিতে থাকা ছেলেটাও সিহাব,
ওরা দু’জন মিলে প্ল্যান বানিয়েছে আমাদের বর’বাদ
করার জন্য।

ওসমানের কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে যায়।

ওসমান : তোমাদের কিছু শুনাই তবেই তোমরা বুঝতে পারবে।
ওসমান একটা রেকর্ডিং প্লে করে,
রেকর্ডিং এ জেসমিন সিহাবের কথাকোপন শুনা যাচ্ছে,
জেসমিন : উফফ কি ঝা’মেলা এখন ঐ ওসমানকে বিয়ে করতে হবে।

সিহাব : ওহহো রেগে যাচ্ছো কেন,বিয়ে না করলে আমরা আমাদের কাজে সফল হবো কিভাবে।

জেসমিন : আচ্ছা ঠিক আছে তুমি চিন্তা করো না আমি প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করবো।

সিহাব : আমি ভাবছি তোমার নামে সম্পত্তি লিখে দিতে যদি ওসমান মানা করে তখন,

জেসমিন : এটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না এমনিতেও ওসমানকে বিয়ে করলে ওর সম্পত্তির ৫১% মালিক হবো আমি আর সুযোগ বুঝে পুরো সম্পত্তির মালিক হবো আমি।আর যদি ওরা আপোষে দিতে না চায় তবে আমরা ওদের মে!রে ফেলবো।

সিহাব : ডক্টর ওয়াহিদকেও ভুল ঔষধ দেওয়ার কারণে জে’লে পাঠাবো,হাহা সবাই হবে মিথ্যা বানোয়াট।

জেসমিন : হ্যাঁ আমরা আমাদের প্ল্যানে সফল হবোই।
_________

ওসমান : শুনেছো ওদের প্ল্যান সম্পত্তির জন্য ওরা
আমাদের মে!রে ফেলতেও দ্বি’ধা বোধ করতো না।

অবান্তিকা ঠা’স করে জেসমিনের গালে থা!প্পড় মারে,
অবান্তিকা : ছি তুমি এমন এতোটাই নিচ,তোমাকে আমি মেয়ের মতো আদর করেছি ভালোবেসেছি,
আর তুমি সম্পত্তির জন্য আমাদের মারতে চাইছিলে
আমার স্বামীকে জে’লে পাঠাতে চাইছিলে।

ওয়াহিদ : তুমি আমাকে জে’লে পাঠাতে চাইছিলে কেন?

সিহাব : আমি জামাল শেখের ছেলে।

ওয়াহিদ : আমার কর্মচারি জামাল শেখ?

সিহাব : হ্যাঁ যাকে আপনি ষড়’যন্ত্র করে জে’লে পাঠিয়ে ছিলেন।

ওয়াহিদ : ওকে আমি ষড়’যন্ত্র করে নয় ওর অপ’কর্মের জন্য জেলে পাঠিয়েছি।

সিহাব : মানে?

ওয়াহিদ : তোমার বাবা টাকার লো’ভে একটা নিষ্পাপ বাচ্চাকে মে!রে ফেলেছে।

সিহাব : কি!

ওয়াহিদ : হ্যাঁ আমরা এটা জানতে পেরে জামালকে জে’লে দেই।

ওয়াহিদ কথা শুনে সিহাব নির্বাক হয়ে গেল ওকে ওর বাবা ওয়াহিদের নামে মিথ্যা বলেছিল।

ওসমান : বাহ এতো প্রতি’শো’ধের খেলা ছিল, এবার এই খেলা বন্ধ করা যাক,অফিসার ভেতরে আসুন।

ওর কথা শুনে কয়েকজন পু’লি’শ ভেতরে আসে,
ওসমান : আপনারাতো সব কিছু শুনলেন,আপনাকে সব প্রমাণও দেওয়া হয়েছে, এবার ওদের নিয়ে যান।
কন’স্টে’বল ওদের হাতে হ্যা’ন্ড’কাপ পরায়।
জেরিন জাবেদ কিছু বলে না ওরা ভাবতে পারেনি ওদের মেয়ে এমন।
ওরা নিঃশব্দে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়।
সিহাব জেসমিনকে জো’র করে নিয়ে যাওয়া হয়।

অবান্তিকা ধপ করে চেয়ারে বসে পরে,ও পারছেনা কারো চোখে চোখ মেলাতে,ওকে অপ’রাধ’বোধ কুড়েকুড়ে খা’চ্ছে।

ওসমান : ওমর রুম থেকে আমার লাগেজ নিয়ে আয়।

ওয়াহিদ : লাগেজ কেন আনবে?

ওসমান : কারণ আমি লন্ডন চলে যাবো।

অবান্তিকা ও ওয়াহিদ : কি!

ওসমান : হ্যাঁ।

অবান্তিকা : তুমি কোথায় যাবো না।

ওসমান : যেতেতো হবেই তোমাকে সেদিন বলে
ছিলাম,আমি যেমন তোমাকে ভালোবাসি ঠিক তেমনই নিজেকেও খুব ভালোবাসি, জেনে শুনে কোনো বা’জে মেয়েকে নিজের জীবনসঙ্গীনী করবো না,তোমাকে কথা দিয়েছিলাম বিয়ের দিনই জেসমিনের মুখোশ তুলে ফেলবো প্রমাণ করে দিব এবার তুমি ভুল আমি সঠিক, আর যদি প্রমাণ করতে পারি তবে তোমার থেকে অনেকদূরে চলে যাবো তুমি চাইলেও আমাকে আর কখনো ফিরে পাবেনা, যদি তোমার কাছে আসিও তবে তুমি আমার কাছে অচেনাই থাকবে,দেখেছো আমি প্রমাণ করে দিয়েছি সবসময় তোমার সিদ্ধান্ত ঠিক থাকলেও এবার তোমার সিদ্ধান্ত ভুল।নাতো তুমি তোমার কথা রাখতে পারলে নাতো তুমি আমাকে কাছে পাবে।

ওসমান ওর লাগেজ নিয়ে বের হতে নিলে অবান্তিকা ওর হাত ধরে,
অবান্তিকা : সরি বাবা প্লিজ তুমি আমাকে ছেড়ে যেওনা।

ওসমান : সরি মামনি আমাকে যেতেই হবে।তুমি জেসমিনের জন্য আমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছো তোমার সামনে থাকলে কষ্ট বাড়বে কমবে না তাই আমাকে যেতে দাও।

অবান্তিকার হাত ছাড়িয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়।

অবান্তিকা কাঁদতে কাঁদতে ওয়াহিদকে জড়িয়ে ধরে,
তুমি কেন আমার ছেলেটাকে আটকালে না।ও আমাকে ছেড়ে চলে গেল।

ওমর ওর লাগেজ নিয়ে ওদের সামনে দাঁড়ায়,
বাবা,মামনি আমিও ভাইয়ার সাথে যাচ্ছি,ভাইয়াকে একা ছাড়তে চাইনা তাই আমাকে যেতে হবে যদি পারো তাহলে আমাদের মাফ করে দিও।

ওমরও ওদের কোনো কথা না শুনে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়।

অবান্তিকা কাঁদতে কাঁদতে বলে,
আজ আমার ভুলের জন্য আমার দুই ছেলে আমার
থেকে দুরে সরে গেল,কেন আমি তোমার কথা শুনলাম না,কেন এমনটা করলাম কেন কেন।

ওয়াহিদ : কেঁদোনা অবান্তিকা,দেখবে ওরা খুব তাড়াতাড়ি তোমার কাছে ফিরে অাসবে।

অবান্তিকা অঝোরে কাঁদছে।
__________

গাড়িতে,

ড্রাইভার গাড়ি চালাচ্ছে, ওসমান,ওমর পেছনে বসেছে,

ওসমান : [মনে মনে] : আমাকে কষ্ট দিয়েছো তার জন্য তোমাদের ছেড়ে যাচ্ছি না,জেসমিনের জন্য নিজের ম’রা মুখ দেখার কথা কিভাবে বলতে পারলে,কষ্ট কি তোমার একার হচ্ছে আমার কি হচ্ছে না, আমি চাইনি তোমাকে ছেড়ে যেতে কিন্তু কি করবো বলো যেতে তো হবেই,তোমার সামনে থাকলে বারবার সেই কথা গুলো মনে পরবে, আমি চাইনা সে কথাগুলো মনে করতে, সরি মামনি সরি।
ওসমানের ডান চোখ থেকে একফোঁটা জল গড়িয়ে
পরলো।

ওমর ওসমানের দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে,
জানি ভাইয়া তোমার অনেক কষ্ট হচ্ছে, আজ সবাই মামনি কষ্ট দেখতে পারলেও তোমার কষ্ট কেউ দেখতে পারছেনা।জানি না তোমাদের মাঝে এই দুরত্ব কবে মিটবে।

ওদের কাল ফ্লাইট থাকায় আজ ওরা হোটেলে থাকবে।
ওসমান না ঘুমিয়ে কোনোমতে রাতটা পার করে,
সকালে উঠে নাস্তা করে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে,
এয়ারপোর্টে পৌঁছায় সব কাগজপএ চেক করা হয়,
কিন্তু কিছু কারণে ফ্ল্যাট ৩ ঘন্টা পেছানো হয়েছে।

ওমর : ভাইয়া ফ্ল্যাট যেহেতু ৩ ঘন্টা পর তুমি না হয় আশে পাশে থেকে ঘুরে আসো তোমার মুডটাও ভালো হবে।

ওসমান : ওকে তুইও চল আমার সাথে।

ওমর : না আমি এখানে থাকি তুমি যাও কোনো প্রয়োজন হলে তোমাকে কল করবো।

ওসমান : ওকে।

ওসমান সিএনজি করে এয়ারপোর্ট থেকে কিছুটা দুরে নিরব পরিবেশ আসে,জায়গায়টা খুব সুন্দর,ঠান্ডা পরিবেশ।ওসমান সিএনজির ভাড়া মিটিয়ে হেঁটে হেঁটে সামনের দিকে এগিয়ে যায়,আরো কিছুটা সামনে যেতেই ছোট বাচ্চাদের চেচামেচির আওয়াজ শুনতে পায়।ও আরো সামনে যেয়ে দেখতে পেলো বাচ্চারা কানামাছি খেলছে বাচ্চাদের সাথে দুটো মেয়ে ছিল।
একটা মেয়ের চোখ কালোকাপড় দিয়ে বাঁধা,মেয়েটা
কাউকে ধরতে পারছেনা,ধরতে গেলেই হাত ফসকে চলে যাচ্ছে,মেয়েটা হাঁটতে হাঁটতে ওসমানের সামনে চলে আসে,ওসমান মেয়েটাকে দেখায় ব্যস্ত থাকায় কখন যে মেয়েটা ওর কাছে চলে এসেছে বুঝতেই পারেনি,হঠাৎ মেয়েটা ওকে জড়িয়ে ধরে,
মেয়েটি : ধরে ফেলেছি ধরে ফেলে…
মেয়েটা হঠাৎ মনে হয় বাচ্চারা তো এতো বড় নয়,তাহলে ও কাকে জড়িয়ে ধরেছে,
মেয়েটা ছিটকে সরে এসে চোখ থেকে কাপড়ের বাঁধন খুলতেই ওসমানের বুক ধক করে উঠে।
এতো ছোটাছুটি করায় চোখে কাপড় বাঁধা থাকায়
ওসমান মেয়েটার চেহারা দেখতে পারেনি,
মেয়েটার চুল বেশ বড় হাটু থেকে একটু উপরে,চোখ দুটো অসম্ভব সুন্দর,সুন্দর ঠোঁট,মায়াবী চেহারা,
ওসমানের কানে মিষ্টি স্বরে ভেসে এলো,
সরি আসলে বাচ্চাদের সাথে খেলতে খেলতে কখন যে আপনাকে জড়িয়ে ধরেছি বুঝতে পারিনি।
ওসমান কিছু বলবে তখন ওর ফোন বেজে ওঠে,
ফোন থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকাতেই দেখতে পায় মেয়েটা বাচ্চাদের নিয়ে চলে যাচ্ছে,ওসমান ডাকতে চেয়েও ডাকতে পারে না,ও চলে যেতেই নিলেই চোখ পরে মাটিতে পরে থাকা কানের দুলের উপর কানের দুলটা হাতে নিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে মেয়েটা পেছনে ঘুরে ওর দিকে তাকিয়ে চলে যায়।
ওসমান কি মনে করে কানের দুলটা না ফিরিয়ে দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেয়।
ওসমান মেয়েটার যাওয়ার পানে তাকিয়ে ভাবছে,
কে ছিল এই মেয়ে যে এক মিনিটেই আমার বুকের ভেতরে ঝ’ড় উঠিয়ে চলে গেল।
ওর ভাবনার সুতো ছিড়ে ফোনের আওয়াজে,
ওসমান : হ্যাঁ ওমর বল।

ওমর : কোথায় তুমি?

ওসমান : এয়ারপোর্ট থেকে একটু দূরে।

ওমর : আচ্ছা তাহলে চলে এসো।

ওসমান : আসছি।

ওসমান এয়ারপোর্টে চলে যায়, তারপর সময়মতো তারা প্লেনে উঠে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

ওসমান : এই ছিল ৬ বছর আগের কাহিনি।ছবিতে থাকা মেয়েটা জেসমিন,বলতে গেলে জেসমিনের জন্যই মামনি আমার মধ্যে দুরত্ব,সেদিন নিরব জায়গায় আমার দেখা অসম্ভব সুন্দর মেয়েটি ছিলে তুমি,
সেদিনের পর থেকে আস্তে আস্তে করে তোমাকে ভালোবাসতে শুরু করি।তোমাকে রং তুলি দিয়ে আকিঁ।আমার মনে হতো তুমি সব সময় আমার আশে পাশে আছো।

তিশা : সেদিন আমি আর আয়েশা বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে যায়,বাচ্চারা কানামাছি খেলতে চাইলো আমরাও খেললাম,খেলতে খেলতে হঠাৎ একজনকে জড়িয়ে ধরি পরক্ষণে বুঝতে পেরে লোকটার কাছ থেকে ছিটকে দুরে সরে আসি,তখন তুমি মাক্স পরে ছিলে তাই তোমাকে চিনতে পারিনি,গাড়িতে উঠে বুঝতে পারি আমার এক কানের দুল কোথাও পরে গেছে,পরে আর এই ব্যাপার নিয়ে বেশি মাথা ঘামাইনা, কিন্তু তুমি এখনো পর্যন্ত সেই দুলটা যত্ন করে রেখে দিয়েছো।

ওসমান : কারণ তখন এই একটামাএ স্মৃতিই ছিল আমার কাছে।

তিশা : অনেকতো হলো এবার মামনিকে মাফ করে দাও,তোমার সাথে কথা না বলে মামনির ভিষণ কষ্ট হয়।

ওসমান : তোমরা সবাই শুধু মামনির কষ্টটাই দেখলে,
আমার কষ্ট কারো চোখে পরলো না,মামনিকে ছেড়ে আমিকি শান্তিতে ছিলাম আমার কি কষ্ট হয়নি,
আফসোশ তোমরা কেউ আমার কষ্টটা বুঝলে না।

ওসমান দোলনা থেকে উঠে ছাদ থেকে বেরিয়ে যায়।

তিশা : অবশেষে তোমার মুখ থেকে সব কথা বের করেই ছাড়লাম,তোমার আর মামনির মাঝে ভুল বোঝাবুঝিও আমিই মেটাবো,তোমাকে আগের রুপে ফিরিয়ে আনবো কথা দিলাম।
#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_30

কপি নিষিদ্ধ ❌

তিশা রুমে যেয়ে দেখে ওসমান শুয়ে আছে,ও আর কিছু না বলে ওসমানের পাশে শুয়ে পরে,
শুয়ে শুয়ে ভাবে,
জেসমিন সব তোমার জন্য হয়েছে,এখনও তুমি আমাকে আর ওসমানকে আলাদা করতে চাইছো,
কিন্তু তোমার উদ্দেশ্য আমি সফল হতে দিব না।

পরদিন,
আজ ওমর মাথা ব্যথার কারণে হসপিটাল যায়নি,
তিশা ওমরের রুমের সামনে এসে দরজায় টোকা দেয়,
তিশা : আসবো দেবরজ্বী?

ওমর : হ্যাঁ ভাবিজ্বী আসো।

তিশা : মাথা ব্যথা কমেছে?

ওমর : হুম কিছুটা।

তিশা : দেবরজ্বী তোমার সাথে আর আয়েশার সাথে আমার কিছু কথা আছে।

ওমর,আয়েশা : হ্যাঁ বলো।

তিশা : আমি জানি ৬ বছর আগে কি হয়েছিল।

ওমর : ভাইয়া তোমাকে সব বলেছে?

তিশা : হুম,আয়েশা তুই কি জানিস?

আয়েশা : হুম আমিও জানি ওমর আমাকে সব বলেছে।

তিশা : তাহলেতো ভালোই,শুনো আমাদের কিছু করতে হবে।

আয়েশা,ওমর : কি করবো আমরা?

তিশা : জেসমিনের ব্যাপারে শুনলাম তাতে বোঝা যাচ্ছে সে ছবি,এসএমএস,ভিডিও জেসমিন পাঠিয়ে আমাদের আলাদা করার জন্য।

আয়েশা : আমিও ওনাকে সন্দেহ করেছি।

ওমর : আমার আর ভাইয়ারও তাই মনে হয়েছে।

তিশা : আমি সিউর জেসমিন আবারও আমাদের লাইফে ফিরে আসবে।

ওমর : আমারও তাই মনে হচ্ছে।

তিশা : ওর ব্যাপারে পরে ভাববো এখন আমাদের মামনি আর ওসমানের মধ্যেকার দুরত্ব মেটাতে হবে।

আয়েশা : হুম।

তিশা : দেবরজ্বী তোমাকে একটা কাজ করতে হবে।

ওমর : কি কাজ?

তিশা : আমাদের দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

ওমর : ওকে আমি দেখছি।

তিশা : হাসবেন্ডজ্বী এবার দেশে যেয়েই তোমার আর মামনির মধ্যেকার দুরত্ব মিটিয়ে দিব।

দুপুরে,
ওসমান হসপিটাল থেকে এসে ফ্রেশ হয়ে খাটে বসে,
তিশা রুমে এসে ওসমানের হাত থেকে টাওয়াল নিয়ে ওসমানের হাতে শরবতের গ্লাস ধরিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে ওসমানের চুল মুছছে,
ওসমান : মন খারাপ?

তিশা : না।

ওসমান : দেখে তো মনে হচ্ছে মন খারাপ,কিছু হয়েছে?

তিশা : না।

ওসমান ওর হাত থেকে টাওয়াল নিয়ে চেয়ারের ওপর রেখে ওকে বেডে বসিয়ে হাত ধরে বলে,
কি হয়েছে বলো আমাকে?

তিশা : কিছু হয়নি।

ওসমান : বলতে বলেছি বলো।

তিশা : আমি মামনি বাবার কাছে যাবো,এখানে আর ভালো লাগছে না,চলো না দেশে যাই।

ওসমান : তোমাকে তো আমি আগেও বলেছি আমাদের দেশে ফিরতে সময় লাগবে।

তিশা : ঠিক আছে যেতে হবে না।

তিশা অভিমান করে রুম থেকে বেরিয়ে যায়,
ওসমানও ওর পেছন পেছন যায়,
ওসমান : আচ্ছা আমার কথা শুনো।

তিশা : কিছু শুনার দরকার নেই।

ওসমান : আচ্ছা ঠিক আছে দেশে যাবো।

তিশা : হুহ্ যেতে হবে না।

ওসমান : আমার বউটা এতো রাগ করে আছে কেন বললাম তো যাবো,আমরা আগামী সপ্তাহে যাবো।

তিশা : সত্যি?

ওসমান : তিন সত্যি।

তিশা : ইয়াহু… উম্মাহ লাভ ইউ।

ওসমান : লাভ ইউ টু।

তিশা : দেবরজ্বী তোমার জন্য ওয়েট করছে।

ওসমান : আচ্ছা চলো।

ওরা টেবিলে যেয়ে বসে,
তিশা সবাইকে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে,

তিশা : একটা গুড নিউজ আছে।

আয়েশা : ইয়ে.. আমি খালামনি হবো।

ওসমান পানি খাচ্ছিল আয়েশার কথা শুনে ওর কাশি উঠে যায়।

তিশা : আস্তে আস্তে,এখন ঠিক আছো?

ওসমান : হুম।

তিশা : আরে বোকা তুই খালামনি হবি না,আমরা আগামী সপ্তাহে মামনি বাবার কাছে যাবো।

আয়েশা : তো এটা আগে বলবি না,কই ভাবলাম খালামনি হবো,ধ্যাত দিলি সব এক্সাইটমেন্ট নষ্ট করে।

তিশা : তুই তো সব সময় উল্টো পাল্টা চিন্তাই করিস।

ওমর : ভাইয়া তাহলে তো আমাদের তাওহিদকে সব কিছু বুঝিয়ে দিতে হবে।

ওসমান : হুম,আমরা না থাকলে ওই তো সব কিছু দেখে রাখে,আমি কাল ওকে সব বুঝিয়ে আসবো।

ওমর : আচ্ছা।

ওসমান : তুই আমাদের দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করিস।

ওমর : আচ্ছা।

তিশা : শুনো কেউ বাবা মামনিকে কিছু বলবা না আমরা তাদের সারপ্রাইজ দিব।

ওমর,আয়েশা,ওসমান : ওকে।

লাঞ্চ শেষ করে,একটু রেস্ট নিয়ে ওসমান হসপিটালে চলে যায়।

তিশা : দেবরজ্বী একটা প্ল্যান বানিয়েছি।

ওমর : কি প্ল্যান?

তিশা : আর ৬ দিন পর তোমার ভাইয়ার জন্ম দিন,আর জন্ম দিনের দিনই……………..বুঝেছো?

ওমর : হুম,বুঝেছি।

তিশা : গ্রেট।

চারদিন পর,

ওসমান : ফ্লাইট কখন?

ওমর : কাল রাত ১০টায়।

ওসমান : ওকে।

বেলকনির দোলনায় ওসমান তিশা বসে আছে,

তিশা : সময় কতো দ্রুত কেটে যায়,তাই না।

ওসমান : হুম।

তিশা : প্রথমে আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হলো,তারপর ভালোবাসা,তারপর বিয়ে।জানো আল্লাহর কাছে সবসময় চাইতাম আমাকে বুঝবে আমাকে ভালোবাসবে এমন একটা মানুষ যেনো আমার জীবনসঙ্গী হয়,আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমার কথা শুনেছে তোমাকে আমার জীবনে পাঠিয়েছে।

ওসমান : আমি আল্লাহর কাছে সবসময় চাইতাম আমার দেখা ঐ মেয়েটাই জেনো আমার স্ত্রী হয়,
দেখো আল্লাহ আমার কথা শুনেছে তোমাকে আমি পেয়েছি,আমার প্রত্যেক মোনাজাতে তোমার নাম ছিল,তোমাকে না খুব করে চাইতাম,আর আল্লাহর বান্দা আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চাইলে আল্লাহ তাকে ফিরিয়ে দেন না,আলহামদুলিল্লাহ অনেক অপেক্ষার পর তোমাকে আমি পেয়েছি।

ওসমান তিশার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে একহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে।

তিশা : আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া কখনো জেনো তোমার আমার মাঝে দুরত্ব সৃষ্টি না হয়।

ওসমান : আমারও একই চাওয়া।

পরদিন সন্ধ্যায় ওরা এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে,সময় মতো প্লেনেও উঠে পরে,দীর্ঘ ২২ ঘন্টা পর
বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়।
বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে ১২ টা বেজে যায়,
ওরা বাসার কলিংবেলটায় চাপ দেয়,কিন্তু কেউ দরজা খুলছেনা,ওরা আবারও চাপ দেয় এবারও ফলাফল শুন্য,
এদিকে কলিংবেলের আওয়াজে অবান্তিকা,ওয়াহিদের ঘুম ভেঙে যায়,
অবান্তিকা : এত রাতে কে আসলো।

ওয়াহিদ : চলো যেয়ে দেখি।

ওরা বেড ছেড়ে উঠে মেইন গেটের সামনে যায় দরজা খুলতেই,
ওমর,আয়েশা,তিশা একসাথে,
“সারপ্রাইজ”
ওদের এই মুহূর্তে এখানে দেখে অবান্তিকা,ওয়াহিদ অবাক।
ওরা অবান্তিকা,ওয়াহিদকে জড়িয়ে ধরে,

তিশা : বলেছিলাম না খুব তাড়াতাড়ি আমরা তোমাদের কাছে আসবো,দেখলে হঠাৎ করে এসে তোমাদের চমকে দিলাম।

অবান্তিকা : আমি ভাবতে পারিনি তোমরা এই সময় আসবে।

ওয়াহিদ : আসলেই তোমরা আমাদের চমকে দিয়েছো।

অবান্তিকা : এখন আর কোনো কথা নয় সবাইকে , টায়ার্ড লাগছে যাও ফ্রেস হয়ে ঘুমিয়ে পর।কাল সবাই মিলে আড্ডা দিব।

ওসমান,তিশা,আয়েশা,ওমর : ওকে।

ওরা যার যার রুমে চলে যায়,

তিশা ওর জামা কাপড় কাবার্ডে রাখছে,
তিশাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে চুমু দিয়ে,
আমার বউটাকে খুব খুশি খুশি লাগছে।

তিশা : হুম আমি অনেক খুশি থ্যাঙ্ক ইউ থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ।

ওসমান : ভালোবাসার মানুষকে থ্যাঙ্ক ইউ নয় আই লাভ ইউ বলতে হয়।

তিশা : তাই বুঝি?

ওসমান : জ্বী মহারানী।

তিশা : হাঁটু গেড়ে প্রোপোজ করো আমি লাভ ইউ টু বলছি।

ওসমান : ওকে।

ফুলদানির থেকে একটা ফুল নিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে,
আই লাভ ইউ হৃদয়হরণী।

তিশা : লাভ ইউ টু হাসবেন্ডজ্বী।

____

ওমর : আমার বিশ্বাস ভাবি এবার মামনি আর ভাইয়ার মাঝে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে ফেলবে।

আয়েশা : হুম।

[ In USA,
জেসমিন : বেবি একটুপর আমার ফ্লাইট।

সিহাব : ফ্লাইট মানে তুমি কোথায় যাচ্ছো?

জেসমিন : বাংলাদেশ।

সিহাব : বাংলাদেশ!

জেসমিন : হ্যাঁ বাংলাদেশ,আর লুকিয়ে নয় এবার সামনা সামনি মো’কা’বেলা হবে।]

পরদিন সকালে,
সবাই একসাথে নাস্তা করতে বসে,
ওয়াহিদ : হসপিটালে এখন আর কোনো সমস্যা নেইতো?

ওসমান : না আলহামদুলিল্লাহ এখন সব কিছু ভালো ভাবেই চলছে।

ওয়াহিদ : যাক ভালো।

আয়েশা : চলোনা সবাই মিলে ঘুরতে বের হই।

অবান্তিকা : আচ্ছা আমরা দুপুরে পর বের হবো।

আয়েশা : থ্যাঙ্ক ইউ মামনি।

ওরা দুপুরের পর সবাই ঘুরতে বের হয় অনেকক্ষণ ঘুরে রাতে ডিনার করে বাসায় চলে আসে,

রাত ১২:০০ টা বাজে,
ওসমান ঘুমিয়ে ছিল হঠাৎ ফোনের আওয়াজে ওর ঘুম ভেঙে যায়,ওসমান পাশে তাকিয়ে তিশাকে পেলনা,
ফোনের আওয়াজ বেড়েই চলছে ওসমান কল রিসিভ করে,
হুম জানপাখি কোথায় তুমি?

আমি ছাদে।

রাত বারোটায় তুমি ছাদে কেন গিয়েছো?

একটু ছাদে আসোনা।

আচ্ছা আসছি।

ওসমান বেড ছেড়ে চোখ মুখে পানি দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে ছাদের দিকে যায়,
ছাদের দরজা লাগানো ছিল ও দরজা খুলে ভেতরে পা রাখা মাএই সবাই একসাথে বলে উঠে,
Happy Birthday To You.
ওসমান অবাক,ও ভুলেই গিয়েছিল ওর জন্মদিনের কথা,কিন্তু সবাই কতো সুন্দর করে ওকে সারপ্রাইজ দিল,তিশা ওর সামনে যেয়ে ওর হাত ধরে টেবিলেটার কাছে যেয়ে দাঁড় করায়,কেকের দিকে তাকিয়ে
ওসমানের মুখে হাসি ফুটে ওঠে,
কেকে ওর ছোট বেলার ছবি প্রিন্ট করা,
ছবিতে ওয়াহিদ অবান্তিকা ওকে ধরে রেখেছে,
ওসমান কেকে কেটে প্রথমে ওয়াহিদকে তারপর অবান্তিকাকে তারপর তিশা,ওমর,আয়েশাকে খাইয়ে দেয়,ওরাও ওকে খাইয়ে দেয়।

ওসমান : আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম,বাট তোমরা
মনে রেখেছো আর এতো সুন্দর করে সারপ্রাইজও দিলে থ্যাঙ্ক ইউ।

ওমর : থ্যাঙ্ক ইউ আমাদের না দিয়ে ভাবিকে দাও,
ভাবিই সবকিছু করেছে একা পুরো ছাদ সাজিয়েছে,
কেকের ডিজাইনও ভাবি সিলেক্ট করেছে।

ওসমান : থ্যাঙ্ক ইউ জানপাখি।

তিশা : ওয়েলকাম হাসবেন্ডজ্বী।কাল সন্ধ্যা তোমার ফ্রেন্ড,রিলেটিভ আর আমার ফ্রেন্ডদের ইনভাইট করেছি।

ওসমান : কাল আবার সবার সাথে দেখা হবে।

তিশা : হুম।

পরদিন সকালে ওসমান ঘুম থেকে উঠে দেখে তিশা চুপটি করে ওর বুকের উপর ঘুমিয়ে আছে,রাতের কথা মনে পরে ওসমান মুচকি হাসে,
ওসমান : [মনে মনে]: জানপাখি ঘুমিয়ে থাকলে কতো কিউট লাগে,কি সুন্দরভাবে আমাকে আঁকড়ে ধরে আছে যেন এটা তার সবচেয়ে নিরাপদ স্থান।
ওসমান তিশার কপালে ঠোঁট ছোঁয়ায়।
ওসমান দুষ্টু হাসি দিয়ে তিশার ঠোঁটে হাত বুলায়,
তিশা ঘুমের মাঝে বিরক্ত হয়ে আবার ঘুমিয়ে পরে,
ওসমান আবারও ওর গালে স্লাইড করে,
তিশা ঘুম ঘুম কন্ঠে বিরক্তির স্বরে বলে,
রাতভর জ্বা’লি’য়ে’ছো এবারতো ঘুমাতে দাও।

ওসমান : রাতে কি করেছি আমি?

তিশা : সারা রাত তুমি…
তিশার ঘুম ভেঙে যায় ততক্ষনাত ওসমানের বুক থেকে উঠে আবারও শুয়ে পরে,তিশার কান্ড দেখে ওসমান ফিক করে হেসে দেয়। হাসতে হাসতে,

ওসমান : তুমি আগে ডিসাইড করো তুমি উঠবে না কি শুয়ে থাকবে।

তিশা ওর দিকে রা’গি দৃষ্টিতে তাকিয়ে গায়ে চাদর পেচিয়ে নেয়,
তিশা : এভাবে হাসছো কেন?

ওসমান : তোমার কান্ড দেখে।

তিশা : হুহ্।

তিশা খাট থেকে উঠতে নিলে ওসমান ওর হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে বিছানায় ফেলে ওর দিকে ঝুকে তাকায়,

ওসমান : কোথায় যাচ্ছো আমার মর্নিং কিস কে দিবে।

তিশা : প্রতিদিন এতো মর্নিং কিস লাগবে কেন?

ওসমান : কারণ এটা আমার অধিকার।

তিশা : হুহ্ আসছে অধিকারওয়ালা কোনো মর্নিং কিস ফিস নেই।

ওসমান : তাই বুঝি।কিন্তু আমি তো আমার মর্নিং কিস নিয়েই ছাড়বো।

তিশা : ওসমান উমম…

ওসমান : এবার যেতে পারো।

তিশা বিছানা ছেড়ে উঠতে উঠতে,
তোমাকে কাঁচা চি’বি’য়ে খা’বো।

ওসমান : সমস্যা নেই তোমারই তো।

তিশা রা’গি দৃষ্টিতে তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।

ওসমান ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে।

চলবে কি?

[

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here