উপন্যাসের শেষ পাতায় তুমি পর্ব -৩৯+৪০

#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_39

কপি নিষিদ্ধ ❌

ওসমানের কথা শেষ হতেই ওরা বি’ক’ট এক শব্দ শুনতে পেল।

ওরা দেখলো দেয়ালে ছিদ্র,কেউ দেয়ালে গু’লি করেছে,
মূলত গু’লিটা তিশার গায়ে লাগতো কিন্তু ওসমান হাত ধরে টান দেওয়ায় গু’লিটা তিশার গায়ে না লেগে দেয়ালে যেয়ে লাগে,যদি ওসমান ওকে টান না দিতো তবে গু’লিটা তিশার মাথা বরাবর লাগতো।ওসমান দ্রুত উঠে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকায় কিন্তু কাউকে দেখতে পায় না।
তিশা থ হয়ে বেডে বসে আছে,ওসমান দ্রুত ওর কাছে আসে,
জানপাখি তুমি ঠিক আছো তো।

তিশার গলা কাঁপছে তবুও কষ্ট করে কাঁপা কাঁপা স্বরে বলে,
হ্যাঁ,তুমি যদি আমার হাত ধরে টান না দিতে তবে হয়তো আমি ম…

তিশার কথা শেষ হওয়ার আগেই ওসমান ওকে জড়িয়ে ধরে,
হুসসস চুপ চুপ,আমি বেঁচে থাকতে তোমার কিচ্ছু হতে দিবো না,কিচ্ছু হতে দিবো না।

তিশা ওসমান দুজনেই ভয় পেয়েছে,একে অপরকে হারানোর ভয়।

ওসমান তুমি এই ব্যাপারে কাউকে কিছু বলো না।

কেন বলবো না জানপাখি?

আমি চাইনা কেউ আমাকে নিয়ে চিন্তা করুক,
এমনিতেই সিলেটের ঘটনা নিয়ে সবাই চিন্তিত ছিল,
আমি চাই না কেউ আমাকে নিয়ে আর কোনো প্রকার টেনশনে থাকুক,তুমি প্লিজ কাউকে কিছু বলোনা।

আচ্ছা ঠিক আছে কাউকে কিচ্ছু বলবোনা,তুমি শান্ত হও।

ওদের কথার মাঝে কেউ দরজায় নক করে।
কে?

আমি আয়েশা।

ওহ আয়েশা,আয় ভেতরে আয়।

আয়েশা দরজা ঠেলে ভিতরে আসে।
ভাইয়া মামনি লাঞ্চের জন্য নিচে যেতে বলেছে।

আচ্ছা আসছি আমরা।

ওরা দুইজন আয়েশার সাথে নিচে আসে,
সবাই একসাথে লাঞ্চ করতে বসে,
ওসমান খাওয়ার মাঝে বলে,
বাবা আমি আর ওমর মিলে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

কি সিদ্ধান্ত?

আমি আর ওমর চাই তোমরা আমাদের সাথে লন্ডনে থাকবে।

কিন্তু এটা কিভাবে হয়,আমার হসপিটালের কি হবে?

বাবা দেখো হায়াত ম’ওতের কথা বলা যায় না,আজ আছি কাল নেই,আমি চাইনা আর দূরে দূরে থাকতে সবাইকে নিয়ে একসাথে শান্তিতে থাকতে চাই,প্লিজ তুমি না করো না,৬ টি বছর আলাদা ছিলাম কেউ কি শান্তি থাকতে পেরেছি বলো,চলোনা বাবা আমরা সবাই একসাথে থাকি।

কিন্তু ওসমান আমার হসপিটালের কি হবে?

বাবা হসপিটাল আর আমাদের ফার্মহাউজগুলো আমরা বিক্রি করে দিব আর তুমি আমি আর ওমর মিলে আমাদের লন্ডনের হসপিটালটা আরো উন্নত করবো,মাঝে মাঝে যখন দেশে আসবো তখন এই বাড়িতে থাকবো,বাবা তোমার এতে কি মতামত?

আচ্ছা ওসমান আমি তোমার কথা বুঝতে পেরেছি ঠিক আছে তুমি যেমনটা বললে ঠিক তেমনটাই হবে,তোমরা দূরে থাকলে আমাদেরও ভালোলাগে না,তোমার মামনি আর আমিও চাই তোমাদের সাথে বাকি জীবনটা কাটাতে।

থ্যাঙ্ক ইউ বাবা আমাদের আবদারটা রাখার জন্য,
আমরা চার মাস এখানেই থাকবো,চার মাস পর তোমাদের নিয়ে একসাথে লন্ডনে ফিরবো।এই কদিনে ফার্ম হাউস আর হসপিটালটা বিক্রি করার ব্যবস্থা করবো।

আচ্ছা ঠিক আছে।

অবান্তিকা বলে,
সরি বাবা আমার জন্য তোমাদের আমাদের থেকে দূরে থাকতে হয়েছে।

ওসমান বলে,
ওহ মামনি তুমি কেন সরি বলছো সরি তো আমার বলা উচিত আমি তোমার সাথে অনেক বে’য়া’দ’বি করেছি,
না বুঝে তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি সরি মামনি,
আমার জন্য সবাইকে দূরে দূরে থাকতে হয়েছে।

অবান্তিকা ওসমানের মাথায় চুমু দিয়ে বলে,
না বাবা সরি বলতে হবে না,আমরা যে এখন একসাথে আছি আমার কাছে এটাই অনেক।

ওমর বলে,
ভাইয়া মামনি বাদ দাও ঐ সব কথা,পিছনে সব কথা ভুলে যাও,চলো সব কিছু নতুন করে শুরু করি।আমি তো আজ ভিষণ খুশি অবশেষে আমরা সবাই মিলে একসাথে থাকতে পারবো,এই খুশিতে আজ সবাইকে আমি ফেমাস রেস্টুরেন্ট থেকে ডিনার করাবো।

তিশা আয়েশা মিলে একসাথে,
ইয়াহু……

সবাই ওদের কান্ড দেখে হেসে দেয়।

ওসমান তিশা রুমে চলে আসে,তিশা রুমের দরজা লাগিয়ে,ওসমানের হাত ধরে জোরে জোরে ঘুরছে আর বলছে,
লাভ ইউ লাভ ইউ লাভ ইউ লাভ ইউ লাভ ইউ লাভ ইউ লাভ ইউ লাভ ইউ সো মাচ হাসবেন্ডজ্বী।

ওসমান তিশাকে কোলে তুলে বলে,
বাহ্ আজ এই অসহায় স্বামীটার প্রতি এতো ভালোবাসা দেখানো হচ্ছে যে,কারন টা কি জানপাখি?

তোমাকে আমি ভিষণ ভালোবাসি,অবশেষে আমার ইচ্ছে পূরণ হবে,সব সময় চাইতাম আমার শ্বশুর,শ্বাশুড়ি
দেবর,জা,স্বামী নিয়ে একসাথে থাকবো,আমাদের ছোট একটা সাজানো সংসার থাকবে।আজ মনে হচ্ছে আমার ইচ্ছে খুব শীগ্রই পূরণ হবে,থ্যাঙ্ক ইউ ওসমান থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ,তুমি আসলে আর আমার জীবনে খুশির বাহার চলে আসলো,তোমাকে অনেক ভালোবাসি।

এতো কেন ভালোবাসো জানপাখি?

জানি না কেন ভালোবাসি,শুধু এতোটুকুই জানি আমি তোমাকে ভালোবাসি,আর ভালোবাসতে কারণ লাগে না।

ওসমান তিশাকে বেডে শুইয়ে তিশার ওপর ঝুকে তিশার অগোছালো চুলগুলোকে গুছিয়ে দিচ্ছে আর বলছে,
তোমার এই অগোছালো চুলের মতোই তোমাকে নিজের কাছে গুছিয়ে রাখবো,অগোছালো তুমিটাকেই যে ভিষণ ভালোবাসি।

ওসমান তিশার খুব কাছে চলে আসে,ঠোঁটের ভাজে ঠোঁট ডুবাবে তখনই ফোন বেজে উঠে।

হাহাহা তুমি না আমার কাছে এসোনা,বুঝচ্ছো, যখনই তুমি আমার খুব কাছাকাছি চলে আসো তখনই তোমার ফোন বেজে উঠে,ডক্টরদের রোগী সামলনোই উচিত বউয়ের সাথে রোমান্স করা নয়।

তিশা উঠতে নিলে ওসমান ওকে হালকা করে ধা’ক্কা দিয়ে শুইয়ে দেয় আর বলে,
আজ ফোন বাজুক আর যাইহোক না কেন,তোমাকে তো আমি ছাড়ছি না জানপাখি।
ওসমান দুষ্টু হাসি দিয়ে তিশার ঠোঁটের ভাজে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।

৫টায় ওসমানের একটা ওটি আছে তাই তো চারটার দিকে হসপিটালে চলে যায়,ওয়াহিদ ওমরও চলে আসে,
অপারেশনটা একটু জটিল তাই ওরা বার বার পেসেন্টের রিপোর্ট গুলো রিচেক করছে,ব্লা’ড প্রেশার চেক করছে,সব কিছু চেক করে পেশেন্টকে ওটিতে নেওয়া হয়।
অপারেশন শুরু করা হয়,দীর্ঘ দেড় ঘন্টা পর অপারেশন শেষ হয়,আলহামদুলিল্লাহ পেশেন্ট এখন বি’প’দ মুক্ত।
ডক্টররা যার যার কেবিনে চলে যায়।
ওসমান ফ্রেস হয়ে চেয়ারে বসে,তিশাকে কল করে,
হ্যালো জানপাখি কি করছো?

কিছু না বসে বসে টিভি দেখছিলাম,অপারেশন সাকসেসফুল?

ইয়াহ জানপাখি।

তো আসবে কখন?

৯ টার দিকে।

আর কোনো কাজ আছে?

না আজ আর কোনো কাজ নেই।

আচ্ছা তাহলে তুমি একটু রেস্ট করো,রাখি?

আচ্ছা।

তিশা কল কেটে দেয়।
ওসমান চেয়ারের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে,
একটুপর ওর ফোন বেজে উঠে,ও ফোন হাতে নিয়ে দেখে অচেনা নাম্বার থেকে কল এসেছে,ও কল রিসিভ করে,
হ্যালো কে বলছেন?
……..

তুই কেন আমাকে কল দিয়েছিস?
……..

তার মানের তুই ঐ কাজটা করেছিলি?
………

শুন আমি তোর হাতের পুতুল না যে তোর কথা শুনবো।
…….

জাস্ট সাট আপ,আমি তোর কথা শুনতে বাধ্য নই।
………

আমার ফেমেলি থেকে দূরে থাকবি।
………..

না তো আমি তোর কথা শুনবো,না তো তোর কথা মতো চলবো,আর কখনো আমাকে কল দিবি না।

ওসমান রেগে কল কেটে দেয়,ওসমান কপালে হাত ঠেকিয়ে বসে আছে,ও বুঝতে পারছে না কি করবে,
রাগে বিড়বিড় করে বলছে,
ওর সাহস কি করে হয় আমাকে কল দেওয়ার,ও কি ভেবেছে ও যা বলবে আমি তাই শুনবো,ওকে সামনে পেলে আমি খু!ন করবো,বা’স্টা’র্ড।

ওসমান সব কিছু মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়।আজ আর কোনো কাজ নেই তাই গাড়ি নিয়ে বের হয়,গাড়ি চালাতে চালাতে ওর চোখ পরে শপিংমলের দিকে কিছু একটা ভেবে শপিংমলের পার্কিংলডে গাড়ি পার্ক করে শপিংমলের ভিতরে যায়,
ওসমান তিশার জন্য শাড়ী দেখছে,কিন্তু কোনো শাড়ীই পছন্দ হচ্ছে না,শেষে ওর একটা কালো শাড়ি পছন্দ হয়,শাড়ীটা খুব সুন্দর,ও বিল পে করে আবার গাড়িতে উঠে বসে।

এশার আজান দিয়ে দেয় তাই তিশা টিভি অফ করে অযু করে নামাজ পড়ে নেয়,হঠাৎ তিশার মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়,মাথা ব্যাথার য’ন্ত্র’ণায় তাকাতেও পারছে
না।ও ভাবলো গোসল করলে হয়তো একটু ভালো লাগবে যেই ভাবা সেই কাজ ও গোসল করতে চলে যায়
তিশা ওয়াশরুমে ঢুকে ওসমানও রুমের ভিতরে আসে ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ শুনে বুঝতে পারে তিশা গোসল করছে।
তিশা গোসল শেষ করে বেরিয়ে আসে চোখ যায় খাটের উপর ও দেখে ওসমান শুয়ে শুয়ে ফোন চালাচ্ছে।
তুমি কখন আসলে?

তুমি যখন গোসল করছিলে তখন।
ওসমান উঠে তিশার হাত থেকে টাওয়াল নিয়ে তিশাকে বেডে বসিয়ে তিশার চুল মুছে দিচ্ছে।
চুল মুছে টাওয়ালটা বারান্দায় রেখে আসে।
তিশার দিকে একটা প্যাকেট বারিয়ে দিয়ে বলে,
দেখোতো পছন্দ হয়েছে কি না?

ওয়াও ভিষণ সুন্দর,বলতে হবে তোমার চয়েস অনেক সুন্দর।

তাইতো তোমাকে চয়েস করেছি।

ওসমানের কথায় তিশা মুচকি হাসে।

আজ আমার জানপাখিকে নিজ হাতে সাজাবো,হয়তো আর কখনো এভাবে সাজানোর সুযোগ পাবো না।

তুমি যখন ইচ্ছে তখনই আমাকে সাজাতে পারবে,
এভাবে বলছো কেনো,কিছু কি হয়েছে ওসমান?

আব না আমি ঐভাবে বলতে চাইনি মানে আগামী কদিন তো ব্যস্ত থাকবো তাই আর কি।

ওহহ।

ওসমানের কথায় তিশার কেমন যেন খটকা লাগলো, তবুও এই ব্যাপারে মাথা ঘামালো না।

ওসমান তিশাকে খুব সুন্দর করে শাড়ী পরিয়ে দিচ্ছে,
আর প্রতিবারের মতো আজও ওসমানের স্পর্শে তিশা বার বার কেঁপে উঠছে,শাড়ীটা পরিয়ে তিশাকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসিয়ে দেয়,
ওসমান ওকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিচ্ছে।সাজাতে সাজাতে বলে,
জানপাখি তোমার জন্য যে আর কি কি শিখতে হবে আল্লাহই জানে,প্রথমে মেহেদী পরানো শিখলাম,তারপর
শাড়ী পরানো,তারপর আবার সাজনোও শিখে গেলাম।

তো এটা তো ভালো কথা আমি না হয় সব পারি,আমি ম’রা’র পর অন্য আরেকজনকে যে বিয়ে করবা সে তো এগুলো নাও পারতে পারে তাই শিখেছো ভালো,পরে কাজে দিবে।

ওসমান রেগে বলে,
তুমি আবারও ম’রার কথা বলছো।

ওহ হো রেগে যাচ্ছো কেন,আচ্ছা ঠিক আছে আর বলবো না,কই মজা করতে চাইলাম তুমি তো সিরিয়াস হয়ে গেলে।

তিশা আমার এরকম মজা পছন্দ না।

ওসমান যখন রেগে যায় তখন ওকে তিশা বলে ডাকে,
ওসমান যে ভিষণ রেগে আছে তা তিশা বুঝতে পেরেছে,

তিশা বাচ্চাদের মতো করে বলে,
আচ্ছা আচ্ছা সরি আর কখনো এসব বলবো,প্লিজ রাগ করে থেকো না।

তিশার এভাবে কথা বলা দেখে ওসমানের রাগ মাটি হয়ে যায়,ও তিশার মাথায় চুমু দিয়ে বলে,
প্লিজ জানপাখি আর কখনো ম’রার কথা বলবে না,এ কথা শুনলে যে আমার ভিষণ কষ্ট হয়।

আচ্ছা সরি।

হুম।

সাজটা তো কমপ্লিট করো।

হুম করছি করছি।

ওসমান তিশাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়ে,চুল আচঁড়িয়ে দেয়,কানে দুল পরিয়ে দেয় আর হাতে চুড়ি পরিয়ে দেয়।

ওসমান আলমারি থেকে একটা ছোট্ট বক্স নিয়ে আসে।
দেখো তো পছন্দ হয় কি না?

ভিষণ সুন্দর অনেক পছন্দ হয়েছে,পরিয়ে দাও না।

ওসমান মুচকি হেসে তিশার গলা খুব চিকন একটা চেইন পরিয়ে দেয়,চেইনের সাথে লকেটও ছিল,
লকেটটি ওদের নামের অক্ষর T,O দিয়ে তৈরি করা,
সুন্দর করে O এর মাঝে T খো’দাই করা,লকেট টা
দেখতে ভিষণ সুন্দর।

ওমরদের রুমে,

ওমর কুঁচিটা ঠিক করে দাও না।

ওমর আয়েশার শাড়ীর কুঁচিগুলো ঠিক করে দিচ্ছে।

আয়েশা মুচকি হেসে বলে,
আমাকে কেমন লাগছে?

ওমরের মায়াবতীর মতো।

এ্যাহ।

ওমর আয়েশার কোমড় জড়িয়ে ধরে,
এ্যাহ নয় হ্যাঁ,একদম ওমরের মায়াবতীর মতো অসাধারণ রূপবতী লাগছে।

তাই না কি?

হুম তাই।

তো এই কথাটা এমনই তো বলা যায়,জড়িয়ে ধরেছো কেন।
নিজের কোমড় থেকে ওমরের হাত সরিয়ে,
সব সময় কাছে আসার ধা’ন্দা তাই না।

আয়েশা সরতে নিলেই ওমর হাত ধরে টান দিয়ে নিজের একদম কাছাকাছি নিয়ে আসে ওদের মাঝে বিন্দুমাএ দুরত্ব নেই।

মায়াবতী তোমার কাছে আসার জন্য আমার কোনো ধা’ন্দা বা অজুহাত লাগে না,আমি যখন তখন তোমার কাছাকাছি আসতে পারি তোমাকে গভীর ভাবে ছুঁতেও পারি বিকজ ও গার্ল ইউ আর মাই।

আয়েশা ওমরের কথা হেঁসে দেয়।

এভাবে হেঁসো না গো আমি যে প্রেমে পরে যাবো।

সে তো আগেই পরেছো।

এবার নাহয় উদ্ধার করো।

ওমর আয়েশার ঠোঁটের ভাজে ঠোঁট মিলাবে তার আগেই কেউ ওদের রুমের দরজায় নক করে,এতে ওদেরও ঘোর কাটে।

ধ্যাত মুডটাই নষ্ট হয়ে গেল।

হয়েছে আর রাগ করতে হবে না দেখি কে এসেছে।

আয়েশা দরজা খুলে দেখে,

চলবে কি?

[কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাবেন,কোনো প্রকার ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]#উপন্যাসের_শেষ_পাতায়_তুমি
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_40

কপি নিষিদ্ধ ❌

আয়েশা দরজা খুলে দেখে ওসমান তিশা দাঁড়িয়ে আছে
ওমর ওসমানকে দেখে বিরক্ত হয়ে বলে,
ভাইয়া আরেকটু পর আসতে পারলে না।

ওসমান ওমরের কথার অর্থ বুঝতে পেরে বলে,
এবার বুঝলি তো রং টাইমে আসলে কেমন লাগে,
এখন মুখ না ফুলিয়ে নিচে চল।

ওরা নিচে চলে আসে,ওয়াহিদ অবান্তিকাও ওদের রুম থেকে বেরিয়ে আসে,ওরা এক গাড়িতে করে যাবে,
ওসমান ড্রাইভিং সিটে বসে আর তিশা ওর পাশে,
ওরা রেস্টুরেন্টে যেয়ে পৌছায় সবাই গাড়ি থেকে নেমে আসে,ওসমান গাড়ি পার্ক করে আসে,ওরা একসাথে রেস্টুরেন্টের ভিতরে প্রবেশ করে,ওমর আগে থেকেই টেবিল বুক করে রেখেছে,ওরা ওদের টেবিলে যেয়ে বসে
খাবার অর্ডার দেয়।
কিছুক্ষণ পর খাবার চলে আসে।ওরা কথা বলছে,
হাসাহাসি করছে আর খাচ্ছে।
ওদের খাওয়ার সময় ওয়েটার এই পাশ দিয়ে জুস নিয়ে যাচ্ছিল ভুলবশত তিনি তিশার শাড়ীতে জুস ফেলে দেয়,
সরি ম্যাম সরি।

ওহ নো এটা করলেন।

সরি ম্যাম আমি ইচ্ছে করে ফেলেনি বিশ্বাস করুন।

আচ্ছা ঠিক আছে আপনি যান।

তিশার কথা মতো ওয়েটার ওকে সরি বলে চলে যায়।

আমি শাড়ীটা ওয়াশ করে আসছি,নাহলে দাগ বসে যাবে।

আমি হেল্প করবো?

না ওসমান,হেল্প লাগবে না,আমি একাই পারবো।

আচ্ছা যাও।

তিশা উঠে ওয়াশরুমে চলে যায়,ও পানি দিয়ে আঁচলে লেগে থাকা জুস ক্লিন করছে।তিশা জুস ক্লিন করে হাত ধুয়ে বের হবে তখনই ওয়াশরুমের সব লাইট অফ হয়ে যায়,তিশা অন্ধকারে কিছু দেখতে পারছেনা ফোনও ওসমানের কাছে,তবুও তিশা আস্তে আস্তে পা বাড়িয়ে দরজার কাছে যায় কিন্তু দরজা খুলছে না কেউ বাহির থেকে দরজা লক করে দিয়েছে,তিশা খোলার চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই খুলতে পারছেনা।
একটু পরই ওয়াশরুমের লাইট গুলো জ্বলে উঠে,
তিশারও চোখ পরে আয়নার উপর,
আয়নার লেখাটা পরে তিশা আঁতকে উঠে,
আয়নায় মার্কার দিয়ে বড় বড় করে লেখা,
“You Will D’i’e”.

তিশা মনে মনে বলে,
কে লিখলো এটা,আয়না তো পরিষ্কারই ছিল আর আমি ছাড়া কেউই তো এখানে ছিল না,তবে কে লিখলো?

তিশা লক খোলার আওয়াজ পায়,ও আর কিছু না ভেবে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে,আর হঠাৎ তিশার সামনে ওসমান এসে দাঁড়ায়,আর তিশা ওকে দেখে ভয় পেয়ে যায়।
কি হলো জানপাখি?

না কিছু না।

তোমার আসতে লেট হচ্ছিল তাই আমি আসলাম,
তোমাকে এমন লাগছে কেন?

কই কেমন লাগছে?

তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি কোনো কিছু দেখে ভয় পেয়েছো।

আব.. তুমি হঠাৎ সামনে আসাতে ভয় পেয়েছি।

ওহ।

চলো।

হুম।

ওরা টেবিলে যেয়ে বসে।
ওসমান লক্ষ্য করলো তিশা চামচ নাড়ছে কিছু খাচ্ছে না।
কি হলো জানপাখি খাচ্ছো না কেন?

খাচ্ছি তো।

কিছুই তো খাচ্ছো না।

খাচ্ছি।
তিশা খাবার মুখে দেয়,ওর গলা দিয়ে খাবার নামছে না তবুও কষ্ট করে খাচ্ছে।
খাওয়া দাওয়া শেষে ওরা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে
আশেপাশে একটু ঘুরে,গাড়িতে উঠে বাসায় চলে আসে।এতো কিছুর মাঝেও তিশা ওয়াশরুমে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা ভুলতে পারছেনা,সারাক্ষণ চিন্তার জগৎে ছিল,
সবার সাথে নরমাল বিহেব করলেও ও যে কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত আছে তা ওসমান বুঝতে পেরেছে।
সবাই টার্য়াড ছিল তাই যার যার রুমে চলে যায়।

তিশা রুমে এসে ওর ব্যাগটা ড্রেসিং টেবিলের উপর রেখে চেয়ার বসে কানের দুল হাতের চুড়ি খুলে রাখছে,
তিশা কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে কাজ করছে,আর ওসমান বেডে বসে তিশাকে দেখছে,হঠাৎ তিশা আয়নায় তাকিয়ে দেখে ওসমান ওর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
এভাবে কি দেখছো?

তোমাকে।

আমাকে দেখার কি আছে।

তুমি কি নিয়ে চিন্তিত?

মানে,

রেস্টুরেন্টের ওয়াশরুম থেকে বের হওয়ার পর থেকে দেখছি তুমি কোনো বিষয় নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তিত,
বলো কি হয়েছে?

না আসলে,

একদম মিথ্যে বলবে না,তুমি না বলেছিলে কখনো আমাকে মিথ্যে বলবে না আমার থেকে কোনো কিছু লুকাবেনা,কি বলেছিলে তো?

হুম।

তো এখন লুকাচ্ছো কেন,বলো আমাকে কি নিয়ে তুমি চিন্তিত।

তিশা ওসমানকে তখনকার ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা সব বলে।

আমি তোমাকে বলতে চাইনি কারণ তুমি শুধু শুধু চিন্তা করতে তাই।

আমি বুঝতে পেরেছি,শুনো কেউ হয়তো অন্য কারো সাথে প্রাঙ্ক করেছে।

কিন্তু ওয়াশরুমে আমি ছাড়াতো আর কেউ ছিল না।

ওসমান মনে মনে,
ছিল জানপাখি আর আমি বুঝতে পেরেছি কে ছিল সে।

কি ভাবছো?

এটাই ভাবছি আমি বউ কতো বোকা,আরে বুদ্ধু তোমার সাথে কে প্রাঙ্ক করবে,হয়তো কেউ তোমার মতো শাড়ী পড়েছিলো,আর এফবিতে দেখো না ফ্রেন্ডরা কিভাবে প্রাঙ্ক করে,হয়তো কেউ ভুলে তোমার সাথে প্রাঙ্কটা করেছে।

সত্যি বলছো,প্রাঙ্ক ছিল?

হ্যাঁ জানপাখি প্রাঙ্কই ছিল না হলে কে তোমার সাথে এমন করবে,বলো তো।

হুম তাও ঠিক।

এখন এসব মাথা থেকে ঝেরে ফেলে দাও।

হুম,আচ্ছা আমি ড্রেস চেঞ্জ করে আসি।

হুম যাও।

তিশা ওয়াশরুমে চলে যায়।আর ওসমান ভাবনায় পরে যায়,
তাহলে কি আমার ওর সব কথা শুনতে হবে?কিন্তু এভাবে তো আমি ওর হাতের পুতুল হয়ে যাবো,কি করবো এখন আমি?নাহ আমি বেঁচে থাকতে কেউ আমার পরিবারের ক্ষতি করতে পারবে না,আমার পরিবারের জন্য আমি সব করতে পারি,সব।

ওমরদের রুমে,

আয়েশা বেলকনির গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে,ওমর ওকে পেছন থেকে কোমর জড়িয়ে ধরে ওর ঘাড়ে মুখ গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে,চারপাশে পিনপিন নিরবতা শুধু ওদের নিশ্বাসের শব্দ শুনা যাচ্ছে।ওমর আয়েশার ঘাড়ে একটু গভীর ভাবে মুখ ডুবিয়ে ঘাড়ে চুমু একেঁ দেয়,
ওমর।

হুম মায়াবতী।

অনেক দিন ধরে তোমার গান শুনি না,আজ গান গেয়ে শুনাবে?

কি গান শুনবে?

তোমার যেটা ইচ্ছে।

আচ্ছা আমি গিটার নিয়ে আসছি।

ওমর ওকে ছেড়ে রুম থেকে গিটার নিয়ে আসে,
বেলকনিতে রাখা দোলনায় বসে,আয়েশা ওমরের কোলে বসে আর আয়েশার কোলে গিটার রাখে,ওমর আয়েশাকে একহাতে জড়িয়ে ধরে,আয়েশা গিটার ধরে রাখে,ওমর গিটারে টুঙ টাঙ শুর তুলছে,গিটার শব্দ শুনে আয়েশা চোখ বন্ধ করে ওমরের বুকে হেলান দেয়,
ওমর গিটারে শুর তুলে গায়,

“তোমার এলোমেলো চুলে
আমার সাদা মনে
হারিয়ে যেতে চাই
কোনো হুটতোলা রিক্সায়।”

আয়েশা চোখ বন্ধ করে ওমরের গান শুনছে,

“এক মুঠো প্রেম এড়িয়ে
আমার শূন্য পকেটে
হারাতে দ্বিধা নাই
অচেনা গলিতে
এক শহর ভালোবাসা দিতে…. চাই
এই নরম বিকেলে
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে
শুধু বলতে ভয়
ভালোবাসতে চায়
দ্বিধার আদরে
আমি খুব সাধারণ
সাদা মাটা একজন
ম’রতে পারি,বাঁচতে শিখি
তা দ্বিধা ছাড়াই”।

রাত ২ টা বাজে,
তিশা ওসমান বারান্দায় বসে ধোঁয়া ওঠা কফি খাচ্ছে,
আর আকাশ দেখছে,আজ আকাশে চাঁদ দেখা যাচ্ছে না,মেঘের আড়ালে চাঁদ চুপটি করে লুকিয়ে আছে।

জানপাখি কফিটা কেমন হয়েছে?

দারুণ,আমি বরাবরই তোমার কফির ফ্যান।

তিশার কথা ওসমান মুচকি হাসে।

জানো ওসমান তুমি না আমার কাছে আমার সব রোগের মেডিসিনের মতো।

কিভাবে?

দেখোনা তোমার সাথে কোনো কিছু শেয়ার করলে আমার আর সে বিষয় কোনো চিন্তা থাকে না,তোমার সাথে কথা বললে আমার মন ভালো যায়,তুমি কাছা
কাছি থাকলে নিজেকে নিরাপদ মনে হয়,আমি অসুস্থ
হলে তুমি চটজলদি আমাকে সুস্থ করে দাও।
তাই তুমি হলে আমার সব রোগের মেডিসিন।

তিশার কথার উত্তরে ওসমান কেবল মুচকি হাসে।

ওরা কথা বলতে বলতে কফিটা শেষ করে।
তিশা লক্ষ্য করলো ওসমান ওর দিকে কেমন ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।তিশা এ দৃষ্টির মানে বুঝে আগেও এই দৃষ্টিকে উপেক্ষা করতে পারেনি আজও পারছেনা।
ওসমান তিশার হাত ধরে বলে,
জানপাখি আজ না তোমাকে খুব ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে,তোমাকে গভীর ভাবে ছুঁতে ইচ্ছে করছে,আমার ভালোবাসার চাদরে মোরাতে ইচ্ছে করছে,ভালোবাসার রঙে রঙিন করতে ইচ্ছে,বলোনা আমার ভালোবাসার রঙে রঙিন হবে কি?

ওসমানের কথা উপেক্ষা করা তিশার পক্ষে সম্ভব নয় ও লজ্জা পেয়ে ওসমানের বুকে মুখ লুকায়।
ওসমানও তিশাকে জড়িয়ে ধরে,আর আপনমনে ভাবে,
আজই হয়তো শেষবারের মতো তোমায় ভালোবাসতে পারবো,তোমায় ছুঁতে পারবো,নিজের সাথে জড়িয়ে রাখতে পারবো,আজকের পর আর হয়তো তোমার এই হাসি মুখ দেখতে পাবো না,পারবোনা ভালোবাসতে,
আমাকে মাফ করে দিও জানপাখি,তোমাকে বাঁচানোর জন্য আমি সব করতে পারি সব,তুমি চিন্তা করো না আমি বেঁচে থাকতে তোমার কিচ্ছু হতে দিবো না,
কিচ্ছুু না।

সকালের মিষ্টি রোদ চোখে পরায় ওসমানের ঘুম ভা!ঙে,
বুকের উপর ভারি কিছু অনুভব করে,ও চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে ওর উন্মক্ত বুকের উপর ওর জানপাখি ওকে জড়িয়ে ধরে চুপটি করে ঘুমিয়ে আছে,ওসমান তিশার চুলে হাত বুলাচ্ছে আর কোনো কিছু নিয়ে ভাবছে,ওর ভাবনার মাঝে তিশা নড়েচড়ে উঠে,
ও তিশাকে চোখ খুলতে দেখে নিজে চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর ভান করে,তিশা আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে ও ওসমানের বুকে উপর শুয়ে আছে,
ও মুচকি হেসে ওসমানের কপালে চুমু দিয়ে উঠে গায়ে জামা জড়িয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,তিশা চলে যেতেই ওসমান চোখ মেলে তাকায়।
তিশা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে ওসমান বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে,
উঠেছো,যাও গোসল করে আসো।

হুম।

ওসমান কাবার্ড থেকে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়
তিশা ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে চুল মুছছে আর গুন গুন করে গান গাইছে,ওসমান গোসল করে বের হয় তিশা ওর হাত থেকে টাওয়াল নিয়ে ওসমানের মাথা মুছে দিচ্ছে,
জানপাখি আমি কিছুদিন হসপিটালের কাজে ব্যস্ত থাকবো তোমাকে হয়তো বেশি সময় দিতে পারবো না।

ঠিক আছে।

তুমি রাগ করোনি তো?

উহুম রাগ করবো কেন,আমি তোমাকে বুঝি,মানুষ যখন কাজের সাথে জড়িয়ে যায় তখন সে তার প্রিয় মানুষ
টাকে বেশি সময় দিতে পারে না।তুমি সময় দিতে পারবে
না তো কি হয়েছে আমি তোমাকে সময় দিব।
টাওয়ালটা দিয়ে নিজে সহ ওসমানকে জড়িয়ে ধরে বলে,
এভাবে সবসময় ভালোবাসার চাদরে তোমায় জড়িয়ে রাখবো,কখনো আমার বাঁধন থেকে তোমাকে মু’ক্তি দিব না।

ওসমান তিশার কথার উত্তরে মুচকি হাসে।

ওসমান,ওমর,ওয়াহিদ নাস্তা করে হসপিটালে চলে যায়,
তিশা আয়েশা নিজেদের রুম গুছিয়ে অবান্তিকার ঘরে যেয়ে অবান্তিকার সাথে আড্ডা দিচ্ছে,আড্ডা শেষে তিনজন মিলে দুপুরের রান্না করে,গোসল করে নামাজ পড়ে নেয়,ওয়াহিদ ওমর ২ টার দিকে চলে আসে,কিন্তু ওসমান আসে না তিশা ওকে কল দেয় কিন্তু ও কল রিসিভ করে না,
ওয়াহিদ ওমর ফ্রেস হয়ে খাবার টেবিলে আসে,
অবান্তিকা ওদের খাবার দিতে দিতে বলে,
ওমর ওসমান কোথায়?

মামনি ভাইয়া তার এক বন্ধুর সাথে লাঞ্চ করবে তাই আর বাসায় আসেনি।

ওহ,আচ্ছা তোমরা খাও।

ওরা সবাই খেয়ে নেয়।

ওয়াহিদ ওমর আবার হসপিটালে চলে যায়।অবান্তিকার খুব ঘুম পাচ্ছিল তাই উনি ওনার রুমে যেয়ে ঘুমিয়ে পরে,আয়েশা ওর রুমে বসে গল্পের বই
পড়ছে,তিশা ওর রুমে বসে টিভি দেখছে,তিশা অনেক
বার ওসমানকে কল দেয় কিন্তু ওসমান একবারও কল রিসিভ করেনি,তিশার কেনো যেনো খুব টেনশন হচ্ছে,
আসরের আযান দেয় ও নামাজ পড়ে নেয়,তিশার সময় কিছুতেই কাটছে না,অনেকক্ষণ পর ওর কানে মাগরিবের আযানের শব্দ আসে ও অযু করে নামাজ পড়ে নেয়,তিশা ভাবে এভাবে বসে থাকলে টেনশন বাড়বেই কমবে না তার চেয়ে বরং কিছু করে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে যা ভাবা তাই কাজ চলে যায় রান্না ঘরে,ডিনার ও একাই রেডি করবে এতে করে সময় বেশি লাগবে নিজে ব্যস্তও থাকবে টেনশনও হবে না,ও রান্না করছে ইতোমধ্যে অবান্তিকা আয়েশা দুবার রান্না
ঘরে এসেছে কিন্তু তিশা ওদের কিছু করতে দেয় নি,
ওর একটাই কথা আজকের রান্না ও একাই করবে।
৯ টার দিকে রান্না শেষ হয়,আয়েশা খাবার গুলো টেবিলে সাজিয়ে রাখছে,তিশা ফ্রেস হতে ওর রুমে গিয়েছে,৯:৩০ টায় ওমর ওয়াহিদ বাসায় চলে আসে।এবারও ওসমান ওদের সাথে আসেনি,
ওমর ওয়াহিদ ফ্রেস হয়ে খেতে বসে,
তিশা ওমরকে জিজ্ঞেস করে,
দেবরজ্বী তোমার ভাই আসেনি কেন?

ভাবিজ্বী ভাইয়ার নাকি হসপিটালে কিছু কাজ আছে তাই সে ডিনার রেস্টুরেন্ট থেকে করবে।

ওহ।

সবাই খেতে বসে কিন্তু তিশার খাওয়ার ইচ্ছে নেই তাই ও ওর রুমে চলে যায়।

রাত ১২ টা বাজে,
ওসমান এখনো বাসায় ফিরেনি,তিশার টেনশন হচ্ছে কেনো না ওসমান কখনো এতো রাত করে বাড়ি ফেরে না,যদিও ওসমান ওকে কল করে বলেছে কিছু কাজের জন্য ওর আসতে দেরি হবে তবুও তিশার মন মানছে না
কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগছে রাতের খাবারও খায়নি,তিশা রুমে পায়চারি করছে কিছুক্ষণ পর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১ টা বাজে,পায়চারি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে বেডে যেয়ে শুয়ে ওসমানের অপেক্ষা করছে,
একটা সময় ওর চোখে ঘুম চলে আসে।
৩ টার দিকে তিশা ধড়ফড়িয়ে ঘুম উঠে,নিজের পাশে তাকিয়ে দেখে ওসমান ঘুমিয়ে আছে,
ও একগ্লাস পানি খেয়ে ওসমানকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরে।

চলবে কি?

[কেমন লেগেছে কমেন্টে জানাবেন,কোনো প্রকার ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here